এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  শনিবারবেলা

  • চ্যালেঞ্জারের দুর্ঘটনা ও প্রোফেসর ফাইনম্যানের মাইনরিটি রিপোর্ট

    যদুবাবু
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ১৯ মার্চ ২০২২ | ৩১৬২ বার পঠিত | রেটিং ৪.৮ (৫ জন)
  • অনেকদিন আগে যদুমাস্টারের নিজের যখন ছাত্রদশা, একদিন ক্লাসে এসে এক মাস্টারমশাই জিগ্যেস করেন, যে, সব পেশাতেই ভুলের সাঙ্ঘাতিক মাশুল দেওয়ার কথা তো অল্পবিস্তর জানা – রাশিবিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ আর রাশিবিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা না শোনার করুণতম পরিণতি কোনটা কেউ কি জানে? সেদিন সেই ক্লাসরুমে বসে যে গল্পটা শুনেছিলাম, আজকে সেইটেই বলব সামান্য বিস্তারে। শুরুতেই বলে দেওয়া উচিত, এই গল্পের আগাগোড়া-ই ট্রাজেডি এবং সে ট্রাজেডি থেকে আমরা সত্যিই কিছু শিখেছি কিনা, সে উত্তর যদুমাস্টারের জানা নেই।


    (১)

    ২৮শে জানুয়ারি, ১৯৮৬, সকাল ১১টা ৩৯ মিনিট। নাসার স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার উৎক্ষেপণের দিন। সাতজন মহাকাশচারীকে নিয়ে চ্যালেঞ্জার উড়বে ফ্লোরিডা-র কেপ ক্যানাভেরাল থেকে।

    স্পেস শাটল ইঞ্জিনিয়ার রজার বইসজলি কিন্তু দেখছেন না এই উৎক্ষেপণের ঐতিহাসিক দৃশ্য। আগের দিন-ই বইসজলি আর নাসার-ই আরেকজন কন্ট্রাকটর মর্টন থিওকল প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন নিজেদের ম্যানেজারদের, বসদের বোঝাতে – যদি কোনোভাবে পিছিয়ে দেওয়া যায় চ্যালেঞ্জারের লঞ্চ – ম্যানেজারদের বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, অতিরিক্ত ঠান্ডায় কীভাবে বিকল হয়ে যেতে পারে শাটলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কানে তোলেননি কেউ।


    চ্যালেঞ্জার, ওড়ার মুহূর্তে


    কেপ ক্যানারভালে সেদিন যেন একটু বেশিই ঠান্ডা পড়েছে; সাতজন মহাকাশচারী যখন স্পেস শাটলে উঠছেন, বাইরের লঞ্চপ্যাডের তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রি ফ্যারেনহাইট ( -০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। বইসজলি বারবার ফোনে খবর নিচ্ছেন ফ্লোরিডার সহকর্মীদের থেকে … কাউন্টডাউন শুরু হচ্ছে ওদিকে। চ্যালেঞ্জারের লঞ্চের এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত নাসা টিভি সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যামেরিকার সমস্ত পাবলিক স্কুলে, লক্ষ-লক্ষ শিশু-কিশোরের চোখ টিভির পর্দায়। কারণ, মহাকাশচারীদের মধ্যেই আছেন ক্রিস্টা ম্যাকলিফ, সোশ্যাল স্টাডিজ-এর শিক্ষিকা, এবং প্রথম সাধারণ নাগরিক-ব্যোমযাত্রী, প্রথম “টিচার-ইন-স্পেস”।

    উৎক্ষেপণের ঠিক ৭৩ সেকেন্ডের মাথায় চ্যালেঞ্জার ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বিস্ফোরণে – সাতজন নভচরের সকলেই প্রাণ হারান মুহূর্তেই। উৎক্ষেপণের ২ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের মাথায় চ্যালেঞ্জারের ধ্বংসাবশেষ যখন আছড়ে পড়ছে ফ্লোরিডার মহাসমুদ্র উপকূলে, ছিন্নভিন্ন শাটলের গতি তখন ২০৭ কিমি/ঘণ্টা, ইমপ্যাক্ট মাধ্যাকর্ষণের প্রায় ২০০ গুণ।


    চ্যালেঞ্জার, বিস্ফোরণের মুহূর্তে


    চ্যালেঞ্জারের দুর্ঘটনার প্রভাব সুদূরপ্রসারী বললেও কম-ই বলা হয় বোধহয়। নাসার বিশ্বাসযোগ্যতা যে সাংঘাতিক টাল খেয়েছিল তা-ই শুধু নয়, প্রায় ৩২ মাস শাটল প্রোগ্রাম পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গেছিল। সেই খাদ থেকে ফিরে আসতে সময় লেগেছিল আরও কিছু বেশি।

    দুর্ঘটনার প্রায় সঙ্গে-সঙ্গেই তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিগ্যান ১৪জন বিশেষজ্ঞ নিয়ে তৈরি করলেন “রজার’স কমিশন”, তাতে নভোচর নিল আর্মস্ট্রং, স্যালি রাইড যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন বোধহয় গত শতাব্দীর অন্যতম বিখ্যাত এবং বিতর্কিত বৈজ্ঞানিক রিচার্ড ফাইনম্যান। ফাইনম্যানের আয়ু তখন বোধহয় আর বছর দুয়েক বাকি।

    কমিটির রায় জানা গেল অল্পদিনেই। ফাইনম্যান ও সঙ্গীরা প্রমাণ করলেন যে দুর্ঘটনার প্রধানতম কারণ রাবারের তৈরি ও-রিং, রকেটের ফিল্ড জয়েণ্টে সেটি এমনভাবে লাগানো থাকে যে উৎক্ষেপণের সময় রিং-টি ঠিক জায়গায় আটকে থেকে ইগনিশনের প্রচণ্ড তাপমাত্রার গ্যাস পৌঁছতে দেবে না জ্বালানি ট্যাঙ্কের আশেপাশে। ফাইনম্যান সবার সামনে প্রায় ইস্কুলের সায়েন্স ফেয়ারের মতোই সহজ পরীক্ষায় এক গ্লাস বরফ-জলে একটি রাবারের ও-রিং চুবিয়ে দেখিয়ে দিলেন হিমাঙ্কের নীচে (০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে) গেলেই সেই রাবারের রিং কীভাবে ভঙ্গুর ও নষ্ট হয়ে যায়। আর সেই অভিশপ্ত দিনের কেপ ক্যানারভালের তাপমাত্রা আগেই লিখেছি, -০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
    ফাইনম্যান অবশ্য শুধু ঐ কার্যকারণ বের করেই থামেননি। নাসার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা নিয়ে বিস্তারিত একটি রিপোর্ট লিখে মতামত দেন, যে এই ভেঙে-পড়া ব্যবস্থা ঠিক না হওয়া অবধি মহাকাশযাত্রা স্থগিত থাকুক। বলেন, “For a successful technology, reality must take precedence over public relations, for nature cannot be fooled”। রজার’স কমিশনের ঘোর আপত্তি সত্ত্বেও সে রিপোর্ট শেষমেশ প্রকাশ পায়, তবে একেবারে শেষে অ্যাপেন্ডিক্স-এফ হিসেবে।

    অথচ, এই মারাত্মক প্রাণের ঝুঁকির কোনোই আভাস ছিল না ঐ অভিশপ্ত চ্যালেঞ্জার সেভেনের। থিওকল, বইসজলি আর তাদের সঙ্গীদের সমস্ত সাবধানবাণী ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে, নাসার ম্যানেজমেন্ট উৎক্ষেপণের আগে যে প্রি-লঞ্চ এস্টিমেটটি কষেছিলেন, তাতে বলা ছিল, লঞ্চে শাটল ফেল করার সম্ভাবনা ১০০,০০০এ মাত্র ১ – প্রায় নেই বললেই চলে।
    তাহলে?

    (২)

    তাহলে আর কী? অঙ্কে ডাহা ভুল, বলা ভাল, রাশিবিজ্ঞানের সাধারণ প্রয়োগের-ই গোড়ায় গলদ। এবং ছোটোখাটো নয়, ব্যাপক ভুল। ১৯৮৯ সালে তিনজন রাশিবিজ্ঞানী (সিদ্ধার্থ দালাল, এডওয়ার্ড ফোকস আর ব্রুস হোডলি) চ্যালেঞ্জার দুর্ঘটনার কারণ বিশ্লেষণ করে একটি পেপার লেখেন জর্নল অফ আমেরিকান স্ট্যাটিস্টিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে (অর্থাৎ জাসায়), “Risk Analysis of the Space Shuttle: Pre-Challenger Prediction of Failure” এবং সেই পেপারে ঠিকঠাক প্রোবাবিলিটির আঁক কষে দেখান যে ঐ ৩১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের লঞ্চ করলে ও-রিং বিকল হওয়ার সম্ভাবনা নেহাত কম নয়, প্রায় ১৩% – প্রায় ১/৮ ভাগ, আর একটু কয়েকদিন অপেক্ষা করে যদি উৎক্ষেপণ হত আরেকটু উষ্ণ দিনে? সিদ্ধার্থ দালালদের পেপারে বলা, “Postponement to 60°F would have reduced the probability to at least 2%”!

    প্রোবাবিলিটি বা সম্ভাবনা অবশ্যই কনটেক্সট – প্রসঙ্গের উপর নির্ভরশীল এবং কিছুটা ব্যক্তিবিশেষের উপরেও নির্ভর করে। মানে ১৩% বৃষ্টি পড়ার সম্ভাবনায় আপনি ছাতা না-ও নিতে পারেন, কিন্তু ধরুন আপনি গাড়ি নিয়ে লম্বা ট্রিপে বেরোবেন বা হাউইয়ে চড়ে মহাকাশে যাবেন, সঙ্গে আরও সাতজন মানুষ, আকাশে দৈবের বশে জীবতারা খসার সম্ভাবনা যদি হয় ১৩%, যাবেন? আর যদি হয় ১/১০০,০০০?

    সিদ্ধার্থবাবুরা জাসার সেই পেপারে কী করে প্রোবাবিলিটির অঙ্ক কষেছিলেন, সে বিস্তারিতভাবে দেখানোর সুযোগ বোধহয় এই প্রবন্ধে নেই, যদিও চক-ডাস্টার হাতে মাস্টারের হাত যে নিশপিশ করছে না – এ কথা ঠিক নয়। একটু বলব সে গল্প। তার আগে, সহজ করে নাসা-র সেই ম্যানেজার-রা কী রকমভাবে সাঙ্ঘাতিক ভুল অঙ্কটা করেছিলেন, তার একটু ধরতাই দেওয়া যাক।

    নীচের প্রথম ছবিটা দেখুন, উৎক্ষেপণের আগে নাসার ও-রিং পরীক্ষার ডেটা – x অ্যাক্সিসে তাপমাত্রা আর y-তে দুর্ঘটনার সংখ্যা। যদি খালি চোখে তাপমাত্রা আর দুর্ঘটনার মধ্যে একটা কোনো সম্পর্ক খুঁজতে বলি, বোধহয় খুব কিছু ধরা পড়বে না। সত্যি বলতে, মানসচক্ষে একটা মাঝ বরাবর লাইন টানলে (যদিও এরকম ডেটায় ওরকম সরলরেখা টানা উচিত নয় একেবারেই) কিন্তু তাও সাহস করে টানলে সেটা যে খুব উপর থেকে নীচের দিকে যাবে এমন হবে না।




    নাসার ম্যানেজমেন্ট (ইঞ্জিনিয়ার নয়, ম্যানেজার) এই ডেটা দেখেই লাখে এক চান্স ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ওঁদের মনে হয়েছিল তাপমাত্রা আর দুর্ঘটনার মধ্যে তেমন কোনো জোরদার সম্পর্ক নেই।

    কিন্তু সাংঘাতিক গোলমালটা এইখানে, যে ওঁরা পুরো ডেটাসেট দেখেননি, বা দেখতে হবে সে কথা মাথায় আসেনি। নাসার ম্যানেজাররা, শুধু যে শাটলগুলো বিকল হয়েছে পরীক্ষার সময়, সেইগুলো দেখছিলেন, যেগুলোর গোলযোগ হয়নি – সেইসব ডেটা পয়েন্ট ধর্তব্যের মধ্যে আনেননি ওঁরা। আর এইখানেই হয়ে গেছে প্রাণঘাতী একটা ভুল।

    এইবার এর পরের ছবিটি দেখুন। এইটি পুরো ডেটাসেটের – পরীক্ষায় পাশ আর ফেল দুইরকমের শাটল। এইবার যদি ভাল করে খেয়াল করে দেখেন, স্পষ্ট প্রতীতী হবে যে তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে দুর্ঘটনার সংখ্যা, অতএব সম্ভাবনা – দুই-ই কমছে। যেমন, দেখাই যাচ্ছে ৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপরে দুর্ঘটনার হার বেশ কম (প্রায় ১৫% মত) আর খুব ঠান্ডায়, মানে রেখচিত্রের বাঁদিকে, প্রায় ১০০% ফেল।




    এইবার ভেবে দেখুন, আপনি যিনি নাসার ম্যানেজার নন, যদি এই নীচের ছবিটি দেখতেন, কী সিদ্ধান্ত নিতেন? ফাইনম্যান তাঁর সেই রিপোর্টে এই ভুলের ব্যাখ্যা করে লিখেছিলেন, “When playing Russian roulette, the fact that the first shot got off safely is little comfort for the next!”

    (৩)

    এইবার শেষপাতে একটু শিশিবোতল।
    একটু আগে বলছিলাম যে ঐ প্লটের মাঝবরাবর লাইন টানলে মোটেও কাজের কাজ হবে না। কেন? একটু ব্যাখ্যা প্রয়োজন।

    সহজে বলতে গেলে, সোজা লাইন টেনে দিলে ইক্যুয়েশনের ডানদিক আর বাঁদিক মিলবে না। বাঁদিকে দুর্ঘটনার সংখ্যা, যাকে আমরা ব্যাখ্যা করতে চাইছি, বা যে জিনিসের পূর্বাভাস চাইছি, সেইটি ডিস্ক্রিট (বিযুক্ত, ছাড়াছাড়া, একটানা নয়)। দুর্ঘটনা তো ভগ্নাংশ হতে পারে না, সে সবসময়েই পূর্ণসংখ্যা এবং শূন্য বা তার বেশি, মানে যার ভ্যালু হতে পারে ০, ১, ২ ইত্যাদি। আর তাপমাত্রা কন্টিনিউয়াস স্কেল, মোটামুটি একটা রেঞ্জের মধ্যে যা ইচ্ছে তাই হতে পারে, মানে ধরুন, শূন্য থেকে আশি ফারেনহাইটের ভেতর সমস্তকিছু।

    প্লটের মধ্যিখান দিয়ে লাইন টানার কথা বলছিলাম, সে ক্যামন জিনিস? ছোটবেলার নব গণিত মুকুলের (নাকি কে. সি. নাগের?) সরলরেখার চ্যাপ্টার মনে করুন: y = a + b x সমীকরণের ছবি আসলে খাতার পাতায় আঁকা একটি সরলরেখা। আর সে পাতায় ছড়ানো-ছেটানো বিভিন্ন পয়েন্টের মধ্যে দিয়ে যদি এমন একটা সরলরেখা আঁকার চেষ্টা করি, যে সমস্ত পয়েন্ট-এর সবথেকে কাছ দিয়ে যাবে, সেই ‘বেস্ট ফিটিং’ লাইন টানার রাশিবিজ্ঞানের নাম লিনিয়ার রিগ্রেশন। সে এক দারুণ কাজের জিনিস, বলতে গেলে বেস্ট থিং সিন্স হট কচৌরিজ। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জারের ডেটায় তাকে তলব করা যাবে না। কারণ ঐ y = a + b x সমীকরণে বাঁদিকে বসানোর কথা দুর্ঘটনার সংখ্যা – ডিস্ক্রিট, আর ডানদিকে তাপমাত্রা ইত্যাদি প্রভৃতি – কন্টিনিউয়াস।

    তাই বলে আমরা কি মডেলিং করব না? মডেলিং করব না আমরা? অবশ্যি করব, কিন্তু আরেকটু অন্যরকম হাতিয়ার লাগবে, যেমন ধরুন লজিস্টিক রিগ্রেশন। তাতে কী করে? না, বুদ্ধি করে প্রথমে বাঁদিকের সংখ্যাটাকে ডিস্ক্রিট স্কেল থেকে কন্টিনিউয়াসে নিয়ে আসার জন্য, দুর্ঘটনার সংখ্যা না দেখে, সম্ভাবনা দেখে – যার মান ০ থেকে ১-এর মধ্যে যা ইচ্ছে হতে পারে। আর ডানদিকের ঐ a + b x সরলরৈখিক অংশের উপর চাপায় এমন একটা ট্রান্সফর্মেশন অথবা ফাংশন – যাতে সেও ঐ রেঞ্জ ছোটবড় করে ঠিক ওই ০ আর ১-এর মধ্যেই গিয়ে দাঁড়ায়।

    এরকম ফাংশন/ ট্রান্সফর্মেশনের কোনো অভাব নেই পৃথিবীতে, তবে সবচাইতে বিখ্যাত যেটি, সেটির নাম লজিস্টিক সিগময়েড। এমন একটা কার্ভ – যা গোটা রিয়েল অ্যাক্সিস অর্থাৎ সেই মাইনাস থেকে প্লাস ইনফিনিটি-কে চেপ্পে ধরে ০ আর ১ এর মধ্যে ম্যাপ করে দেয়, আকৃতি যেন ইংরেজি S এর মতো – তাই পদবি সিগময়েড। ব্যস, হয়ে গেল, এইবার আপনার মডেলে ইনপুট নেবে বাঁদিকে যা ইচ্ছে – তাপমাত্রা, প্রেশার ও অন্যান্য যা ইচ্ছে, আর ডানদিকে বেরোবে সম্ভাবনা, একেবারে সোজা প্রোবাবিলিটি স্কেলেই। সিদ্ধার্থ দালাল-দের পেপারের মডেলটি অবশ্য এর থেকে আরেকটু জটিল ও বিস্তৃত, এবং আগ্রহী পাঠকরা নীচের তথ্যসূত্রে দেওয়া লিঙ্ক থেকে পড়ে দেখতে পারেন। তবুও এর থেকেও দিব্যি বোঝা যায়, কম তাপমাত্রায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি কীভাবে বাড়ে!

    অঙ্কের ভাষায় সেই মডেলটির সহজতম রূপ লিখে ফেললে কেমনি দেখতে হয় নীচে দিলাম। এখানে exp() হচ্ছে অয়লারের এক্সপোনেনশিয়াল ফাংশন।


    P( দুর্ঘটনার সংখ্যা = অন্তত ১ | তাপমাত্রা = x) = logistic(a + bx) = 1 / ( 1 + exp(a + b x) )


    তা সেই কালবোশেখীর কান্না চেপে কলের মধ্যে মাড়ায়, বল তো সে কী দাঁড়ায়? নীচের ছবিটি দেখুন এইবার। এইবার y-axis, মানে উল্লম্ব অক্ষে (বাপস্‌!) প্রোবাবিলিটি: ০ থেকে ১, আর x-axis (অনুভূমিক অক্ষ?) বরাবর তাপমাত্রা, কিন্তু সেলসিয়াস স্কেলে। এক্কেবারে বাঁ-হাতে উপরের দিকের ডট-টি চ্যালেঞ্জার, শূন্যের সামান্য নীচে দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১ (অর্থাৎ ১০০%) ছুঁই-ছুঁই। এ কী নিছক দুর্ঘটনা না প্রাণঘাতী অবহেলা?




    ভাবতে আতঙ্ক হয়, যে, এই প্রায় নিশ্চিত মৃত্যুর সম্ভাবনার বিন্দুবিসর্গ জানতেন না সেই অভিশপ্ত চ্যালেঞ্জার সেভেন। তারা জানতেন ১/১০০,০০০। যথার্থ-ই বলেছিলেন ফাইনম্যান, “[T]his has had very unfortunate consequences, the most serious of which is to encourage ordinary citizens to fly in such a dangerous machine, as if it had attained the safety of an ordinary airliner”

    লিখতে ইচ্ছে করে, “এই ট্রাজেডির শেষ এখানেই”, কিন্তু ইতিহাস অন্য কথা বলে। চ্যালেঞ্জারের ফলে মহাকাশযাত্রার সুরক্ষা যে অনেক বেশি আঁটোসাঁটো হয়েছিল, সে সন্দেহাতীত, কিন্তু শেষ শাটল-দুর্ঘটনা আমরা অতীতে ফেলে এসেছি কিনা জানা নেই। চ্যালেঞ্জারের দুর্ঘটনার সময় এই লেখকের বয়স দুইয়ের-ও কম, কিন্তু এই লেখার বছর কুড়ি আগের কলম্বিয়া মহাকাশযান ভেঙে পড়ার দিন তার মনে আছে স্পষ্ট, কলম্বিয়ায় সওয়ার ভারতীয় বংশোদ্ভূত কল্পনা চাওলার মুখ এখনো স্মৃতিতে উজ্জ্বল ও দগদগে।

    রাশিবিজ্ঞানের ভুল প্রয়োগ দেখাব বলেছিলাম, কিন্তু এই ট্রাজেডির খলনায়ক শুধুই সে একা নয়, যেন আরও কিছু গভীর। অনেকে মনে করেন, চ্যালেঞ্জারের দুর্ঘটনার একটা বড় কারণ “গ্রুপথিঙ্ক”। আরভিং জ্যানিসের সংজ্ঞায়, গ্রুপথিঙ্ক সেই চেনা ঘটনা – যখন সবাই মিলে খুব কঠিন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হয়ে দাঁড়ায় সকলের সাথে এক সুরে গাওয়ার – ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করার তাগিদ, উর্ধ্বতনের কর্তৃত্বের ভয়ে যা হামেশাই যুক্তি-বুদ্ধি, সাধারণ বিবেচনা, ইত্যাদিকে অক্লেশে অতিক্রম করে যায়।

    পাঠক, এইবার ভেবে দেখুন থিওকলের কথা, বইসজলির কথা, দলের অন্য ইঞ্জিনিয়ার/বৈজ্ঞানিকদের কথা, যাঁরা জানতেন কী সাঙ্ঘাতিক ঘটনা ঘটতে চলেছে, ওঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বইসজলির বাকি জীবন কাটে ভয়াবহ ডিপ্রেশন, পোস্ট-ট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিসওর্ডারে। লঞ্চের আগের দিন থিওকল ইঞ্জিনিয়ারস-দের একজন, অ্যালেন ম্যাকডোনাল্ড, নাসা-র প্রোডিউসার-দের বারংবার বলছিলেন ঠান্ডায় “major malfunction”-এর সম্ভাবনার কথা। নাসার ম্যানেজার তাদের ধমকে দিয়ে বলেন, “My God, Thiokol, when do you want me to launch — next April?”!

    কিন্তু তাতেও কিছু পাল্টানোর না, কারণ মানুষ ইতিহাস থেকে শেখে না। সামনে ভয়ঙ্কর বিপদ জেনেও মানুষ না জানার ভান করে, ভাবে, হয়তো কোনোভাবে আর যার হোক, তার কিচ্ছুটি হবে না। কেউ কেউ সাহস করে বিপদ-ঘণ্টি বাজান, তাদের পরিণতি কী হয় – সে নিয়ে আর খবর হয় না।

    স্পেস শাটলের গল্প দিয়ে শুরু করেছিলাম। শেষ করব হ্যাঙ্ক পলসনের একটি উক্তি দিয়ে। ২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী মন্দা-র সময়ে যিনি ছিলেন সেক্রেটারি অফ ট্রেজারি।
    ২০১৪ সালের একটি ওপ-এড কলামে পলসন লিখছেন, “This is a crisis we can’t afford to ignore. I feel as if I’m watching as we fly in slow motion on a collision course toward a giant mountain. We can see the crash coming, and yet we’re sitting on our hands rather than altering course.”

    কী সেই অজানা পর্বত – যার দিকে অজান্তে, অলক্ষ্যে ধেয়ে যাচ্ছি আমরা? এইটা ভেবে বের করার দায়িত্ব ছেড়ে দিলাম আপনাদের উপর, পাঠক!



    সূত্র:

    1. ফাইনম্যানের সেই রিপোর্ট
    2. Dalal, S. R., Fowlkes, E. B., & Hoadley, B. (1989). Risk analysis of the space shuttle: Pre-Challenger prediction of failure. Journal of the American Statistical Association, 84(408), 945-957. [ পিডিএফ পাবেন এই ঠিকানায় ]
    3. রজার কমিশনের রিপোর্ট
    4. চ্যালেঞ্জার দুর্ঘটনার ডেটা আর কিছু R code পাওয়া যাবে এইখানে
    5. The Coming Climate Crash.
    6. ফাইনম্যানের লাইভ ডেমনস্ট্রেশন ও-রিং কীভাবে ঠান্ডায় ডিফর্মড হয়


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৯ মার্চ ২০২২ | ৩১৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Abhyu | 47.39.151.164 | ১৯ মার্চ ২০২২ ১২:০৫504990
  • খুব ভালো লেখা।
  • Abhyu | 47.39.151.164 | ১৯ মার্চ ২০২২ ১২:০৮504991
  • এটা কাজ করছে না
    • ফাইনম্যানের লাইভ ডেমনস্ট্রেশন ও-রিং কীভাবে ঠান্ডায় ডিফর্মড হয় (ইউটিউব লিংক)
  • dc | 122.164.209.179 | ১৯ মার্চ ২০২২ ১২:০৯504992
  • এই লেখাটা বড়ো করে লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। চ্যালেঞ্জার ডিসাস্টার নিয়ে অনেক স্টাডি হয়েছে, আর স্বয়ং ফাইনম্যান এই দুর্ঘটনার তদন্ত করেছিলেন, সেইজন্য বোধায় এটা নিয়ে আরও বেশী ইন্টারেস্ট তৈরি হয়েছে। 
    আচ্ছা, এই দুর্ঘটনা আর তার যথাযথ তদন্ত নিয়ে একটা লেখার সিরিজ করা গেলে হয় না? চের্নোবিল এর ডিসাস্টার স্টাডি, ফুকুসিমা, ডিপ ওয়াটার হরাইজন, প্রতিটারই টেকনিকাল রিপোর্ট আর ফল্ট ট্রি অ্যানালিসিস পড়তে ভারি ইন্টারেস্টিং লাগে। 
  • dc | 122.164.209.179 | ১৯ মার্চ ২০২২ ১২:১৩504993
  • চ্যালেঞ্জারের একটা এফটিএ এখানে পেলাম। তবে যদুবাবুকে আবারও ধন্যবাদ এরকম একটা ইন্টারেস্টিং বিষয়ে লেখার জন্য। 
  • Nirmalya Bachhar | ১৯ মার্চ ২০২২ ১৩:৫১504995
  • যদুবাবু, এটার একটা সিরিজ হোক। DC যেমন বলেছে, তাহলে বেশ একটা কেস স্টাডি মার্কা আইডিয়া পাওয়া যায়। যদিও ডিপ হরাইজেনের কেসটা সিমেন্টের গড়বড় ছিল। আর মেন্টেনেন্সের অভাব ছিল। সবগুলো স্ট্যাটিস্টিক্যালি সিগ্নিফিকেন্ট কিনা জানা নেই। তবে একটা ব্যপার হল, যদিও কেস গুলো সব ভারি ইন্টারেস্টিং, কিন্তু সবগুলোতেই একটা ফেইলইওরের গল্পই লিখছিস। সাকসেসের গপ্পোও লেখ একটা দুটো। নইলে তোর ছাত্ররা ভাবতে পারে কারেক্ট স্ট্যাট খালি ফেলিওর এর পরেই আসে। 
  • dc | 122.164.22.29 | ১৯ মার্চ ২০২২ ১৪:০১504996
  • খুব লার্জ স্কেল ফেলিওরগুলোর পেছনে টেকনিকাল আর ম্যানেজমেন্ট, দুটো কারনই থাকে। চ্যালেঞ্জারে যেমন রুট কজ ঠান্ডায় জমে গিয়ে ও রিং রাবারএর ইলাস্টিসিটি কমে গেছিল, তেমনি তার পেছনে ছিল নাসা ম্যানেজমেন্টের কমিউনিকেশানের ফেলিওর বা অর্গানাইজেশান কালচারের ফেলিওর। সেরকম, চের্নোবিলের রুট কজ ছিলো গ্রাফাইট রডের পয়জনিং, কিন্তু তার পেছনে ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়নের রিজিড হায়েরার্কিকাল স্ট্রাকচার, যেখানে কেউ ম্যানেজমেন্টকে খারাপ খবর দিতে চাইতো না। এই লার্জ স্কেল ইভেন্টগুলো নিয়ে একেকটা বিস্তারিত লেখা লিখলে ভারি ইন্টারেস্টিং হবে, হয়তো কমপারেটিভ অ্যানালিসিসেও কাজে দেবে :-)
  • Ranjan Roy | ১৯ মার্চ ২০২২ ২২:০৪505030
  • " কিন্তু তার পেছনে ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়নের রিজিড হায়েরার্কিকাল স্ট্রাকচার, যেখানে কেউ ম্যানেজমেন্টকে খারাপ খবর দিতে চাইতো না। এই লার্জ স্কেল ইভেন্টগুলো নিয়ে একেকটা বিস্তারিত লেখা লিখলে ভারি ইন্টারেস্টিং হবে, হয়তো কমপারেটিভ অ্যানালিসিসেও কাজে দেবে "। 
    --নিঃসন্দেহে; হোক যদুবাবু। একটু সময় নিন, কিন্তু হোক। আর হলে , আশা করব, গুরুচন্ডালি থেকে বই হয়ে বেরোক।
  • যদুবাবু | ২০ মার্চ ২০২২ ০০:১৬505047
  • সরি একটু দেরি হয়ে গেলো, জুতোয় পেরেক ছিলো। কিন্তু সবাইকে অনেক ধন্যবাদ পড়ার আর দারুণ সব কমেন্ট করার জন্য। 

    @ অভ্যুদাঃ এইটা ক্লাসেও পড়ালাম কালকেই। অবশ্য তাতে মেথডলজিতে ফোকাসিলাম। 

    @ dc: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, বিশেষ করে ঐ ফল্ট ট্রি-এর ছবিটার জন্য। হ্যাঁ আমার-ও দারুণ ইন্টারেস্টিং লাগে এইগুলো নিয়ে পড়াশুনো করতে, যেন ডকুমেন্টারি-র কাজ করছি মনে হয়। আর আমার হয়তো সোশিওলজিক্যাল দিকটা বেশীই ইন্টারেস্টিং লাগে, বা ডিসিশন মেকিং-এর হায়ারার্কি। মানুষ যে খুব র‍্যাশনালি কাজ করে না সব সময়, বা যারা লীডার তারা যে কথা না শুনে বেশী কথা বলেন বলেই লীডার এটা আমার প্রায়-ই মনে হয়। দাবড়ানি খাওয়ার ভয়ে চুপ করে থেকে যা হচ্ছে হতে দেওয়ার অভিজ্ঞতা তো প্রায় সবার-ই হয়েছে। 

    তবে আমি ঐ স্ট্যাটের গণ্ডীর বাইরে বেরোতে একটু ভয় পাই। আসলে, স্ট্যাটের গল্পগুলো অলরেডি জানি বলে একটু সহজ লেখার কাজ-টা। অন্য কিছু লিখতে গেলে আবার ঠিকঠাক রেফারেন্স জড়ো হবে ভেবেই জ্বর আসে। 
     
    @মাল্লোঃ পয়েন্ট টেকেন। হ্যাঁ স্ট্যাট/প্রোবাবিলিটির  সাকসেস স্টোরি-ও অনেক অনেক, কেন জানি না সেগুলো লেখার কথা ভাবিনি, কেন ভাবিনি শিওর নই। সম্ভবতঃ তোকে যা বললাম সকালে, ঐ বিশ্বজোড়া ডেটা সায়েন আর এয়াই এর জয়ডঙ্কা দেখে দেখে মনে হয়েছে যে না ঐসব গগনবিদারী তূর্যের আগে, একটু প্রথম চ্যাপ্টার থেকে শুরু করা যাক, 'স্যাম্পল বাজে হলে কী হবে?', 'মডেল কারে কয়' ইত্যাদি! 

    তবে এর পরে অবশ্যই সেরকম অন্ততঃ একটা সাফল্যের চাবি বা কাঠির গপ্পো লিখবো। 

    @রঞ্জন-দাঃ থ্যাঙ্ক ইউ! আমি তো খুব-ই সময় নিয়ে নিয়ে লিখি। গদাইলস্করী চাল যাকে বলে। :D (হ্যাঁ একটা দুমলাটের ইচ্ছে আমার-ও আছে। দেখি আরো কটা লিখি, তারপর ভাববো'খনে।) 

     
  • সুকি | 49.207.230.165 | ২০ মার্চ ২০২২ ০৮:৩০505056
  • যদু-বাবুর এই লেখা গুলি খুব ভালো লাগে। আচ্ছা, এই স্পীডের ব্যাপারটা, "ছিন্নভিন্ন শাটলের গতি তখন ২০৭ কিমি/ঘণ্টা", এখানে কি একটু টাইপো হয়ে গেছে? স্পীড তো প্রায় ২৩৭০ কিমি/ঘন্টা মতন ছিল মনে হয়।
     
    আর ডিসি যেটা বললেন, সেই "লার্জ স্কেল ফেলিওরগুলো" নিয়ে ইন্টারেশট আছে আমারও। কর্মক্ষেত্রে এই নিয়ে কাজ কর্মও করতে হয়। ইনফ্যাক্ট ও-রিং নিয়ে ফেলিওর অন্যালিসিস ও কমন যে কোন ফেলিওর অন্যানালিসিস ল্যাবের পক্ষে। সেই নিয়েও কাজ কর্ম করতে হয়। কিছু বড় ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ডিজাষ্টার নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে - একদিন লিখেছিলাম পাইপার আলফা নিয়ে- ইচ্ছে আছে বিপি-এর টেক্সাস সিটি রিফাইনারি, অষ্ট্রেলিয়ার এসো লঙফোর্ড গ্যাস প্লান্টের এক্সপ্লোশন, চুয়ানডংবেয়ী গ্যাস ওয়েল ব্লো-আউট, মকান্ডো ওয়েল ব্লোআউট, ইংল্যান্ডের বাউন্সফিল্ড টার্মিনাল এক্সপ্লোশন - আরো বেশ কিছু - দেখা যাক কবে হয়। 
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:116b:4acc:b8be:e8ab | ২০ মার্চ ২০২২ ০৯:০০505057
  • বোয়িং 737 ম্যাক্সের দুর্ঘটনাগুলোও ওই প্রোব‍্যাবিলিটির হিসেব না করা, গ্রূপথিংক, আর প্রফিট বাড়ানোর চেষ্টার জন্য। আইট্রিপলইর একটা ম্যাগাজিনে এই নিয়ে একটা ভাল লেখা বেরিয়েছিল।
  • dc | 122.164.26.90 | ২০ মার্চ ২০২২ ০৯:৫৮505062
  • "বোয়িং 737 ম্যাক্সের দুর্ঘটনাগুলোও ওই প্রোব‍্যাবিলিটির হিসেব না করা, গ্রূপথিংক, আর প্রফিট বাড়ানোর চেষ্টার জন্য"
     
    পলিটিশিয়ান, একদম ঠিক। ৭৩৭ ম্যাক্স দুর্ঘটনার রুট কজ বোধায় এস্টাব্লিশ করা হয়েছে মাত্র একটা অ্যাঙ্গল অফ অ্যাটাক সেনসর ব্যবহার করা (কস্ট কাটিং এর জন্য), যার ফলে সেই সেনসর ম্যালফাংশান করলেই MCAS বারবার প্লেনের নোজ ডাউন করে দিচ্ছিল। আর তার পেছনে ম্যানেজমেন্ট ফেলিওর ছিল কমিউনিকেশান ফেলিওর, অর্থাত খারাপ খবর কেউ ওপরতলায় দিতে চায়নি। কিউরিয়াসলি, চ্যালেঞ্জার এর মতো ৭৩৭ ম্যাক্স এর ইঞ্জিনিয়াররাও জানতেন যে এরকম দুর্ঘটনা হতে পারে কিন্তু ম্যানেজমেন্ট ওনাদের কথা শোনেননি বা শুনতে পাননি।  
  • dc | 122.164.26.90 | ২০ মার্চ ২০২২ ০৯:৫৯505063
  • কিন্তু আপনার লিংক টা কাজ করছেনা। 
  • যদুবাবু | ২০ মার্চ ২০২২ ২০:০৮505089
  • @সুকিঃ অনেক থ্যাঙ্কিউ ! :) আপনি লিখুন না লার্জ স্কেল ডিজাস্টার-গুলো নিয়ে একটা সিরিজ। খুব ভালো হয়। বিশেষ করে এই নিয়ে যখন কাজ করতেই হয়, একদম প্র্যাকটিক্যাল পারস্পেকটিভ থেকে গুছিয়ে বেশ একটু লিখুন। আর এমনিতেই চারিদিকে গ্রুপথিংকের যা রমরমা, একটু ঐদিকে আলো ফেললে ভালোই হয়। 

    আর ঠিক ধরেছেন ঐটা টাইপো, তবে ইউনিটের -- আমি মাইলের জায়গায় কিমি করেছি। মিশটেক, মিশটেক। নাসার সাইটে লেখা, "After vehicle breakup, the crew compartment continued its upward trajectory, peaking at an altitude of 65,000 feet approximately 25 seconds after breakup. It then descended striking the ocean surface about two minutes and forty-five seconds after breakup at a velocity of about 207 miles per hour." [https://history.nasa.gov/kerwin.html

    @পলিটিশিয়ান, @dc @ অভ্যুদাঃ ৭৩৭-এর লিঙ্কের জন্য থ্যাঙ্কিউ। আমি পড়লাম এই মাত্র। শিউরে উঠলাম। ফল্ট ট্রি অ্যানালিসিস নিয়ে আরও কিছু পড়ার মতো ভালো আর্টিকল (বা বই থাকলে) একটু সাজেস্ট করবেন। 

     
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:116b:4acc:b8be:e8ab | ২০ মার্চ ২০২২ ২৩:৩৩505102
  • "ম্যানেজমেন্ট ওনাদের কথা শোনেননি বা শুনতে পাননি।"
     
    খুবই চ্যারিটেবল টেক। একটা খ্যাকখ্যাকে হাসির স্মাইলি দিতে গিয়েও দিলাম না। কেননা এই না শোনার পরিণতিটা বড্ড ভয়ঙ্কর। একটা কথাই বলার। ওয়াল স্ট্রিটের চিৎকারে আর স্টক অপশন ভাঙিয়ে সোনার ঝনঝনে কান ভরে থাকলে অন্য কথা কি করে শুনতে পাবে?
     
    সরি ফর এ হার্শ কমেন্ট।
  • dc | 2a02:26f7:d6c0:680d:0:3604:b290:dd37 | ২১ মার্চ ২০২২ ০০:১৯505103
  • পলিটিশিয়ান, আবারও আপনার সাথে একমত। ওটা আমার বোঝাতে ভুল হয়েছে, আমি একেবারেই ম্যানেজমেন্টের রোলকে  সফট পেডাল করতে চাইনি। ইন ফ্যাক্ট আমার মতে বোয়িং ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল নেগলিজেন্সের চার্জ আনা উচিত ছিলো। 
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:116b:4acc:b8be:e8ab | ২১ মার্চ ২০২২ ০০:৩৭505104
  • একমত।
  • Amit | 121.200.237.26 | ২১ মার্চ ২০২২ ০৫:৫৭505111
  • খুব ভালো লাগলো পড়ে। স্ট্যাটিসটিক্স বেসড ​​​​​​​প্রেডিক্টিভ ফেইলিউর ​​​​​​​এনালাইসিস ​​​​​​​টা ​​​​​​​অনেক এগিয়েছে ​​​​​​​গত ​​​​​​​১০-১৫ ​​​​​​​বছরে। ​​​​​​​দুর্ভাগ্যক্রমে ​​​​​​​তাও ​​​​​​​এতো ​​​​​​​ডিফারেন্ট ​​​​​​​ফেইলিউর ​​​​​​​মেকানিসম ​​​​​​​এ ​​​​​​​কম্পোনেন্ট ​​​​​​​বা ​​​​​​​ইকুইপমেন্ট ​​​​​​​ফেল ​​​​​​​করে ​​​​​​​যে ​​​​​​​সবগুলোকে ​​​​​​​আগে ​​​​​​​থেকে ​​​​​​​প্রেডিক্ট ​​​​​​​করা খুবই ​​​​​​​শক্ত। ​​​​​​​দুর্ঘটনা থেকে লেসন্স ​​​​​​​লার্ন্ করে করে সেটাকে ​​​​​​​শোধরানো ​​​​​​​র ​​​​​​​প্রসেস ​​​​​​​প্রায় ​​​​​​​নন ​​​​​​​স্টপ। ​​​​​​​তার ​​​​​​​ওপর ​​​​​​​খরচ ​​​​​​​বাঁচাতে বা প্রফিট বানাতে ​​​​​​​সিঙ্গেল ​​​​​​​পয়েন্ট অফ ​​​​​​​ফেইলিউর ডিসাইন ​​​​​​​একসেপ্ট ​​​​​​​করে ​​​​​​​নেওয়াটা ​​​​​​​আরেকটা ​​​​​​​মেজর ​​​​​​​প্রব্লেম সব ইন্ডাস্ট্রিতে। ইন্ডাস্ট্রির ​​​​​​​টপ ​​​​​​​বসেরা ​​​​​​​অপারেশন্স ​​​​​​​বা মেনটেনান্স ব্যাকগ্রাউন্ড ​​​​​​​থেকে ​​​​​​​না ​​​​​​​আসলে ​​​​​​​বিপদ ​​​​​​​আরো ​​​​​​​বেশি। ​​​​​​​ডিসাইন ফল্টে একটা সার্ভার ​​​​​​​বা ​​​​​​​ল্যাপ্টপ ​​​​​​​খারাপ হওয়া ​​​​​​​আর ​​​​​​​একটা ​​​​​​​মেগা সাইজের প্লেন ​​​​​​​বা ​​​​​​​রকেট ​​​​​​​বা ​​​​​​​রিফাইনারি চলতে চলতে খারাপ ​​​​​​​হওয়াটা ​​​​​​​যে ​​​​​​​এক ​​​​​​​জিনিস ​​​​​​​নয় ​​​​​​​সেটা অনেক ​​​​​​​টপ ​​​​​​​লেভেলের ​​​​​​​লোকেরাই ​​​​​​​বোঝে ​​​​​​​না ​​​​​​​বা ​​​​​​​ইচ্ছে ​​​​​​​করেই ​​​​​​​বুঝতে ​​​​​​​চায়না। 
     
    আর ​​​​​​​বড়ো ​​​​​​​কোম্পানী ​​​​​​​গুলোর ​​​​​​​পলিটিকাল ক্লাউট ​​​​​​​এতো ​​​​​​​বেশি ​​​​​​​যে ​​​​​​​কোনো ​​​​​​​সরকারই  ​​​​​​​এদেরকে ​​​​​​​চটাতে ​​​​​​​চায়না। সব ​​​​​​​দেশে ​​​​​​​এক ​​​​​​​জিনিস। 
     
    তবে ​​​​​​​একটা খটকা ​​​​​​​লাগলো ​​​​​​​আমার যে ​​​​​​​জেনেরালি ​​​​​​​যেকোনো ​​​​​​​প্রসেস ​​​​​​​বা ​​​​​​​ইকুইপমেন্ট ফ্রন্ট এন্ড ​​​​​​​ডিসাইন ​​​​​​​বা ডিটেল ইঞ্জিনিয়ারিং শুরু করার আগে এ ​​​​​​​সাইট ​​​​​​​কন্ডিশনস - ম্যাক্স ​​​​​​​মিন ​​​​​​​টেম্পারেচার  , হুমিডিটি ​​​​​​​- গত ৩০-৫০ বছরের বেসিসে ​​​​​​​বেসিস ​​​​​​​অফ ​​​​​​​ডিসাইন ​​​​​​​এ ডিফাইন ​​​​​​​করা  ​​​​​​​হয়ে থাকে। ​​​​​​​তার ​​​​​​​পরেও ​​​​​​​তার ​​​​​​​নরমাল অপারেটিং ​​​​​​​কন্ডিশন , এবনরমাল ​​​​​​​কন্ডিশন ​​​​​​​এসব ​​​​​​​সমস্ত ধরে ​​​​​​​নিয়ে প্রসেস ফ্লো ডায়াগ্রাম এর ওপর ডিসাইন ​​​​​​​প্রেসার ​​​​​​​এন্ড ​​​​​​​টেম্পারেচার ​​​​​​​ডায়াগ্রাম ​​​​​​​বানানো ​​​​​​​হয়। ​​​​​​​তারপর ​​​​​​​সেটার ​​​​​​​বেসিসে ​​​​​​​তার ওপর মেটেরিয়াল ​​​​​​​সিলেকশন ডায়াগ্রাম ​​​​​​​বানানো ​​​​​​​হয়। এবার নেক্সট ফেজ গুলোতে ভেরিফিকেশন করা হয় বেশ কয়েকবার পুরো ডিসাইন এ কোনো কম্পোনেন্টই যেন সেই  সিলেকশন উইন্ডোর এর বাইরে নাহয়। 
     
    আমি ধরে নিচ্ছি হয়তো  নাসাও একই বা সিমিলার ভেরিফিকেশন প্রসেস গুলো ফলো করে। তাহলে এক ​​​​​​​যদিনা সেদিন ​​​​​​​এম্বিয়েন্ট টেম্পারেচার আবনর্মালী ​​​​​​​লো ​​​​​​​থাকে ​​​​​​​(ডিসাইন উইন্ডোর ​​​​​​​বাইরে), তাহলে কিভাবে ​​​​​​​এই ​​​​​​​ধরণের ​​​​​​​কম্পোনেন্ট ​​​​​​​ডিসাইন ​​​​​​​রিভিউর ​​​​​​​মধ্যে ​​​​​​​দিয়ে ​​​​​​​গলে ​​​​​​​গেল ?
     
     
  • যদুবাবু | ২১ মার্চ ২০২২ ০৬:৩৬505113
  • @অমিতঃ থ্যাঙ্ক ইউ। 

    হ্যাঁ, অনেক এগিয়েছে তো বটেই। আমি খুব সামান্য অভিজ্ঞতা থেকে যা দেখেছি তাতে মনে হয় নিশ্ছিদ্র। কিন্তু ঐ আর কি - যতো লম্বা চেইন অফ কম্যাণ্ড - ততো 'অ্যাকাউন্টেবিলিটি'-র ব্যাপারটা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে, এই আর কি। 

    চ্যালেঞ্জারের গল্পটা প্রথম শুনে আমার-ও অবিশ্বাস্য লেগেছিলো। মানে এতো সোজা জিনিষে ভুল? তাও আবার না-সা? এবং যেখানে ইঞ্জিনীয়ার-রা বলছেন কী হতে পারে - চোখের সামনে ডেটা দেখা যাচ্ছে। আর এমন কিছু প্রাচীন যুগ-ও নয়। তারপর দেখলাম এরকম আরও উদাহরণ আছে, উপরে অনেকে দিয়েছেন আর তা ছাড়াও যেমন GM Cars-এর গাড়ির সেই হুইসল-ব্লোয়ারের ঘটনা।  তাই ঐ একটু আগেই পলিটিশিয়ান আর dc যা বলেছেন (২১ মার্চ ২০২২ ০০:১৯) তার সাথে একমত। 

     
  • পলিটিশিয়ান | 76.174.114.1 | ২১ মার্চ ২০২২ ০৭:০৩505114
  • বোয়িংয়ের ঘটনায় আরো ব্যাপার আছে। এফএএ র নিজের কোন ইন্সপেক্টর নেই বোয়িংয়ের প্লেনগুলো ওড়ার জন্য অ্যাপ্রুভ করার জন্য। এফএএ কিছু বোয়িং ইঞ্জিনিয়ারকেই সেই দায়িত্ব দেয়। তারা বোয়িং প্লেনের সেফটি ইনস্পেকসন করে এফএএর হয়ে। কিন্তু এদের মাইনে দেয় বোয়িং, পারফরম্যান্স করে বোয়িং ম্যানেজাররা, প্রমোশন বোয়িংয়ের হাতে, ফায়ারিং ডিসিশনও বোয়িংয়ের। সবই রীতিমত আইন মেনে হয়।
     
    প্রফিট যেখানে প্রভু সেই ক্যাপিটালিজমে এসব হতে বাধ্য। আমার আপনার প্রাণের কী দাম আছে?
  • পলিটিশিয়ান | 76.174.114.1 | ২১ মার্চ ২০২২ ০৭:০৫505116
  • তারপর রিভলভিং ডোর আছে। এফএএ র কর্তাব্যক্তিরা রিটায়ার করে বা চাকরি ছেড়ে মোটা মাইনেতে বোয়িং জয়েন করে। ভাবী এমপ্লয়ারকে কেই চটাতে চায়।
  • Amit | 121.200.237.26 | ২১ মার্চ ২০২২ ০৭:০৬505117
  • হ্যা। কোম্পানি গুলোর সব জেনেবুঝেও হাড়বজ্জাতি তো আছেই। বোয়িং জিএম ভক্সওয়াগন বিপি - লিস্ট বানাতে বসলে এন্ডলেস একেবারে। আর বেশির ভাগ ​​​​​​​ক্ষেত্রেই হুইসিল ​​​​​​​ব্লোয়ার ​​​​​​​দের সাইড​​​​​​​লাইন করে ​​​​​​​দেওয়া ​​​​​​​হয়। 
     
    চুরি বিদ্যা মহা বিদ্যা যদি না পড়ে ধরা। ধরা না পড়ার জন্যে বা পড়লেও কাটিয়ে বেরোনোর জন্যে সব কোম্পানিগুলো এতো পয়সা দিয়ে  লিগাল সেল পোষে। 
  • পলিটিশিয়ান | 76.174.114.1 | ২১ মার্চ ২০২২ ০৭:১১505118
  • এবং সেই আইন যারা বানায় এবং এনফোর্স করে তাদের কোম্পানীগুলো পোষে।
  • π | ২১ মার্চ ২০২২ ০৭:৪২505119
  • আবার একটা দারুণ ক্লাস, মাস্টারমশায়! 
     
    একটু অন্য প্রশ্ন, মানে কৌতূহল। বেশি তাপমাত্রায় সে অল্প ক'টা ইন্সিডেন্ট এক্সপেরিমেন্টালি হয়েছিল, তার কারণ বিশ্লেষণ করে কী পাওয়া গেছিল। ও রিং সংক্রান্ত না হলে, সেটাও তো কিছুটা ইন্সাইট দেবে।
     আর কম তাপমাত্রারগুলোতে যদি প্রায় সবকটাতেই ও রিং ড্যামেজ হয়ে থাকে, তাহলে সেটাও।
  • dc | 122.164.124.189 | ২১ মার্চ ২০২২ ০৯:০৬505122
  • অমিত, চ্যালেঞ্জার ডিসাস্টার যেদিন হয়েছিল সেদিন সত্যিই অ্যাবনর্মালি লো টেম্পারেচার ছিল, বা বলা যায় আউটসাইড দ্য ডিজাইন এনভেলোপ টেম্পারেচার ছিল। উইকিদাদুর থেকে টুকে দিলামঃ 
     
    The air temperature on January 28 was predicted to be a record-low for a Space Shuttle launch.[4]: 47, 101  The air temperature was forecast to drop to 18 °F (−8 °C) overnight before rising to 22 °F (−6 °C) at 6:00 a.m. and 26 °F (−3 °C) at the scheduled launch time of 9:38 am.[1]: 87 [4]: 96  Based upon O-ring erosion that had occurred in warmer launches, Morton Thiokol engineers were concerned over the effect the record-cold temperatures would have on the seal provided by the SRB O-rings for the launch.
  • Amit | 193.116.193.114 | ২১ মার্চ ২০২২ ১৪:১২505135
  • আর একটা বোয়িং ৭৩৭-৮০০ একটু আগে চীন এ ভেঙে পড়েছে। 
  • lcm | ২১ মার্চ ২০২২ ১৪:৩০505136
  • আমি তো প্রথম চার্টটা দেখে তাপমাত্রা আর দুর্ঘটনার মধ্যে হেব্বি সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছি। চার্টে মোট ৭ টা দুর্ঘটনার পয়েন্ট রয়েছে, তার মধ্যে ৫ খানা হয়েছে ৫৫ থেকে ৭২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের এর মধ্যে। সুতরাং ঐ রেঞ্জটা ডেডলি। ব্যস, সহজ ব্যাপার।
  • যদুবাবু | ২১ মার্চ ২০২২ ২১:৫০505149
  • @π-দিঃ  খুব ভালো প্রশ্ন। যেটা আমি এখানে লিখিনি সেটা এই যে, ইঞ্জিনিয়ার-দের সামান্য দোষের মধ্যে এই যে ওঁরা স্ট্যাটিস্টিক্যাল অ্যানালিসিস করে দেখাননি ম্যানেজমেন্ট-কে। আর যা বাজে ভিজুয়ালাইজেশন তৈরী করেছিলেন সে দেখে কিচ্ছু বোঝার উপায় নেই। এইখানে যে প্লট ইত্যাদি সেগুলো সব ঐ রজার কমিশনের রিপোর্টের, দুর্ঘটনার আগের নয়। 
     
    "But prior to launch, the engineers couldn't provide a statistical analysis to back up their concerns. "I was asked to quantify my concerns," O-ring expert Roger Boisjoly told a NASA historian, "and I said I couldn't, I couldn't quantify it, I had not data to quantify it, but I did say I knew that it was away from goodness in the current data base." [https://www.vice.com/en/article/qkvvg5/how-mistakes-were-made, emphasis আমার] 

    যদিও এমন কিছু কঠিন কাজ ছিলো না, তবে ঐ জিরোগুলো বাদ দিলে আর এফেক্ট গুলো "সিগনিফিক্যাণ্ট" থাকে না মনে হয়। বাদ না দিলেও একটু এক্সট্রাপোলেট করতে হতো, কিন্তু তাহলেও খুব-ই অ্যাভয়েডেবল ট্র্যাজেডি। আর লসাগুদা যা বলেছেন সেও একেবারে ঠিক। কিন্তু তোমাদের দুজনের-ই স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনসাইট নাসার সেই যুগের ইঞ্জিনীয়ারদের থেকে ঢের ঢের ভালো। ঃ) 

    ঐ আর্টিকল থেকেই সেই ভিজুয়ালাইজেশনের ছবিটা এখানে লাগিয়ে যাচ্ছি। Tufte বলেছেন, "In the 13 charts prepared for making the decision to launch, there is a scandalous discrepancy between the intellectual tasks at hand and the images created to serve those tasks."  (যদিও, এটা ততোটা দোষ নয়, কারণ ওরা পরিষ্কার বলেছিলেন পোস্টপোন করতে।) 


     
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন