এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  রাজনীতি

  • তুমি তো প্রহর গোনো, তারা মুদ্রা গোনে কোটি কোটি

    অতনু চক্রবর্তী 
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৭ জুলাই ২০২২ | ৯৯৭৪ বার পঠিত | রেটিং ৪.৪ (৭ জন)
  • রাজ্য রাজনীতিতে বিরাট  তোলপাড় তুলে উদ্ধার কোটি কোটি টাকা,  দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে গ্রেপ্তার  পার্থ চট্টোপাধ্যায় যিনি রাজ্য মন্ত্রীসভার দ্বিতীয় ব্যক্তি । শুধু প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীই নন, তিনি তৃণমূল দলের বিরাট মাপের এক নেতা, শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটির চেয়ারম্যান ও বটে । শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব যার উপর দল  সঁপেছিল তিনিই এতো বড় কেলেঙ্কারি, আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লেন --- নির্মম পরিহাসের এর থেকে বড় উদাহরণ সাম্প্রতিক সময়ে রয়েছে কিনা সন্দেহ আছে । তাঁর সাঙাততন্ত্রের  কদর্য চেহারাও  দেখলো গোটা রাজ্য। কিভাবে তাঁরই এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিলাসবহুল আবাসন থেকে উদ্ধার হল গুপ্তধন, কোটি কোটি টাকা,  অঢেল বিদেশি মুদ্রা ও সোনার অলঙ্কার! মিলল কি বিপুল স্থাবর  সম্পত্তির হদিশ । কুৎসিত বৈভবের নির্লজ্জ প্রদর্শনী চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিল ক্ষমতার অলিন্দে থাকা এই সমস্ত হোমরা চোমরা নেতা - মন্ত্রী কত বড় বহরের অন্যায় - অবিচার - কে গোপনে সংগঠিত করেছিল বছর বছর ধরে। এতোবড় দুর্নীতির সাথে নাম জড়ানো  সত্ত্বেও রাজ্য মন্ত্রীসভা থেকে পার্থবাবুকে বরখাস্ত করা হল না। বোঝাই গেল, দুর্নীতির প্রশ্নে শূন্য সহনশীলতার নীতি আমাদের নীতিবাগিশ  মুখ্যমন্ত্রীর না- পসন্দ। আর তারপরেও সবাইকে  অবাক করে  মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, তিনি নাকি এই সমস্ত কিছুর বিন্দু - বিসর্গ ও জানতেন না!!  

    কিন্তু, এতো বড় অন্যায়ের শিকার যাঁরা হলেন, তাঁদের কি হবে?  রাজ্যের সাধারণ ঘরের অগুনতি  ছেলে মেয়েরা বহু পরিশ্রম করে এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে মেধা তালিকায় নাম ওঠার পরও দেখলেন তাঁদের চাকরি হলো না। উল্টে তা বিপুল টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গেল।   এদিকে, ডাহা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে বাঁচাবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন।  বঙ্গ - সম্মান প্রদানের মঞ্চকে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের মঞ্চে পরিনত করে অবলীলায় জানালেন যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির বিষয়ে তিনি আগে কিছুই জানতে পারেননি। অথচ কে না জানে, ২০১৯ সালের এসএলএসটি - র মেধা তালিকায় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে- র নাম হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসল আর তিনি চাকরি পেয়ে গেলেন "যাদুকরী"  স্পর্শে।  গেজেট অনুযায়ী নিয়োগ না করার প্রতিবাদে ২০১৯ -র ২৮ শে ফেব্রুয়ারি কলকাতার মেয়ো রোডে প্রেস ক্লাবের সামনে ' যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ' এর ব্যানারে দুর্নীতি মুক্ত স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে শুরু হয় অনশন আন্দোলন। ২৯ দিনের মাথায় হঠাৎ অনশনস্থলে আবির্ভূত হলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি এসএসসি কে ঘুঘুর বাসা হিসাবে আখ্যায়িত করেন। তিনি সেখানে গঠন করেন একটা কমিটি ---- আর, সেখানে তাঁদেরই রেখে দিলেন  যাঁরা ইতিমধ্যেই দুর্নীতিবাজ হিসাবে চিহ্নিত।  কে না জানে, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর এসএসসি - র মাধ্যমে শিক্ষক ও অশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা অচিরেই বন্ধ হয়ে যায়। ২০১২ সালে যে পরীক্ষা হয়, তাতেও লেপ্টে ছিল দুর্নীতির বড়সড় অভিযোগ। টেট কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে যে এলো, তাও কি মুখ্যমন্ত্রী জানতেন না?  হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি - র নিয়োগ দুর্নীতি যাচাই করতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। এটাও কি জানতেন না মুখ্যমন্ত্রী? হাইকোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটি এসএসসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে আঙুল তুলেছিলেন, তাও কি শুনতে পাননি মুখ্যমন্ত্রী?  না কি শুনতে চাননি? একদিকে   ক্ষমতার দম্ভ ও দাপটের মিশেল, অন্যদিকে ঠগ খুঁজতে দল উজাড় হওয়ার আশঙ্কায় তিনি নীতিহীন আপোষ করেছেন দুর্নীতির সাথে। 

    ২০১৫ সালে সংঘটিত আপার প্রাইমারি প্যানেলের মধ্যে বিরাট অসঙ্গতি থাকায় আদালত নির্দেশ দিয়েছিল অবিলম্বে তা সংশোধন করতে।   আজও ওই প্যানেলের নিয়োগ সম্পন্ন হলো না। ফলে, প্যানেলের মধ্যে থাকা চাকুরিপ্রার্থীরা ২০১৫- ২০২২ - --- এই দীর্ঘ সাত বছর ধরে যে স্বপ্ন সযত্নে লালন পালন করেছিলেন, তার ভ্রূণ হত্যা হল। টেট কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসলেও তার সমাধান আজ পর্যন্ত হল না। এদিকে,  সংকট থেকে পরিত্রাণ খুঁজতে মুখ্যমন্ত্রী আদালতের দিকে দায় ঠেলে দিলেন। হাইকোর্ট ও শিক্ষা সচিবের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে কোন কোন শূন্যপদ পূরণ আদালতের রায়ের কারণ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, তা হলফনামা পেশ করে জানাতে। 

    সাম্প্রতিক দুর্নীতি কান্ডে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে রাজ্যে আতঙ্কজনক কর্মহীনতার ছবি। রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় ঘনিয়ে ওঠা সরকার - সৃষ্ট নৈরাজ্য, পড়ুয়া -পিছু শিক্ষকদের লজ্জাজনক ঘাটতি, রাজ্য সরকারি - আধা সরকারি - স্বশাসিত সংস্থাগুলোতে বছরের পর বছর বিপুল পরিমাণে শূন্যপদ না পূরণ করার আখ্যান। পড়ুয়া - শিক্ষক অনুপাতের চরম দৈন্যতা আজ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গিলে খাচ্ছে। সংবাদে প্রকাশ, মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে সাকার ঘাট জুনিয়ার হাই স্কুলে উচ্চ প্রাথমিকে ৭৭২ জন পড়ুয়া পিছু শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ১! এটা কোন ব্যতিক্রমী উদাহরণ নয়। বহু উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে মাত্র এক বা দু' জন শিক্ষকের উপর পঠন পাঠনের পুরো দায়ভারটি ন্যস্ত। এমনও দেখা যায়, সেই এক বা দু'জন শিক্ষক ছুটিতে গেলে স্কুলের গ্রুপ -  ডি কর্মীকে ক্লাস নিতে হয়। কখনও বা আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করে এই অবস্থার সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলে। শিক্ষার প্রতি এই নির্দয় অবহেলা অপরাধসম। শিক্ষার অধিকার আইনের পরিপন্থী। শিক্ষাকে জাতির মেরুদন্ড বলে ক্লান্তিহীন বিজ্ঞাপন যতই দেওয়া হোক না কেন, এই রাজ্য সরকার তিলে তিলে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকেই ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ছয় মাস পার হওয়া সত্ত্বেও  ২০২১ সালের টেট লিখিত পরীক্ষায় পাশ করা কর্মপ্রত্যাশীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুই করা গেল না। আরও উল্লেখ্য, এই নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে কোন ধরনের মামলাই দায়ের করা হয়নি।

    শুধু পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবই নয়, সরকার এবং সরকার - পোষিত স্কুলগুলোতে শিক্ষার ন্যূনতম পরিবেশ, পরিকাঠামো পর্যন্ত নেই। নেই পর্যাপ্ত স্কুল ঘর, কোথাও খোলা আকাশের নীচে চলছে পঠন পাঠন, কোথাও শিক্ষক নেই, নেই শৌচাগার - পরিশ্রুত পানীয় জল - এমনই করুন অবস্থা রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে। গোটা শিক্ষাক্ষেত্র জুড়ে কত শূন্যপদ রয়েছে ( শিক্ষক - অশিক্ষক পদে)  তার কোন সরকারি হিসাব আজ পর্যন্ত পেলনা রাজ্যবাসী। অথচ, তুমুল মস্করা করে, ২১ জুলাই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন রাজ্যে নাকি ৩০ হাজার চাকরি তৈরি! সরকার নাকি শুধুমাত্র নিয়োগ পত্র দেওয়ার অপেক্ষায়। আর, ঠিক ক'দিন আগে সংবাদে প্রকাশিত হল রাজ্যে কর্মসংস্থানের আরেকটি মর্মান্তিক ছবি। সংবাদে প্রকাশ, মালদায় সরকারি কর্মসংস্থান কেন্দ্র পরিচারিকাদের জন্য একটা প্রশিক্ষণ শিবির সংগঠিত করে, যাতে অংশ নেয় ৪০ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মহিলারা। 

    এতো বড় একটা ঘটনার পরও রাজ্যের নাগরিক  সমাজ নীরব নিশ্চল! ক্ষমতার উদ্ধত চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন তোলার মূল্যবোধ এ রাজ্যে যেন বড়ই বিষম বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, যে সমস্ত টগবগে প্রাণ কাউকে তোয়াক্কা না করে গান্ধী মূর্তির পাদদেশকে পরিনত করেছেন তাঁদের প্রতিবাদ প্রতিরোধের তীর্থস্থান, এক গণ আদালত, এক গণ সংসদে -- সেটাই আগামীতে রাত্রির গভীর বৃন্ত থেকে ছিঁড়ে আনবে এক ফুটন্ত সকাল! সেই অবিচল, অবিনশ্বর বিশ্বাসের উপর ভর করেই উত্তাল সমুদ্রে বেয়ে চলেছে নবজীবনের তরনী। সমস্ত বাধা বন্ধনকে উপেক্ষা করে।

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৭ জুলাই ২০২২ | ৯৯৭৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 2402:3a80:196c:1d95:5400:51c:3dec:4c81 | ১৭ অক্টোবর ২০২২ ০০:০৩512906
  • পশ্চিমবঙ্গে টাকা দেখি উড়ে বেড়াচ্ছে!
  • দীপ | 2402:3a80:196c:2094:1d1c:351:b930:ff50 | ১৭ অক্টোবর ২০২২ ২০:৪৭512926
  • চাকরির দাবিতে ছাত্রছাত্রীদের অবরোধ। শাসকের ঔদ্ধত্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ জয়ী হোক, এই কামনা করি!
  • দীপ | 42.110.147.85 | ১৮ অক্টোবর ২০২২ ১২:০২512947
  • দীপ | 42.110.147.85 | ১৮ অক্টোবর ২০২২ ১২:০২512948
  • গতকালের অবরোধ ও আন্দোলনের ছবি।
  • দীপ | 42.110.144.89 | ২০ অক্টোবর ২০২২ ০৮:৪৫513022
  •  
     
    টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লাগাতার আন্দোলন ও অনশন!
  • দীপ | 42.110.137.240 | ২১ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১১513058
  • উদ্ধত শাসক ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে!
  • দীপ | 42.110.137.240 | ২১ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৫৩513068
  • দীপ | 42.110.137.240 | ২১ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৫৯513069
  • দীপ | 42.110.137.240 | ২১ অক্টোবর ২০২২ ১৬:০০513070
  • বজ্জাতিতে সবকটা সমান!
  • দীপ | 42.110.145.105 | ২২ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১৪513092
  • দীপ | 42.110.145.105 | ২২ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১৬513093
  • মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এখন বিজয়া সম্মিলনী তে ব্যস্ত! আর গতকাল ই ওখান থেকে পুলিশি হামলায়  ছাত্রছাত্রীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে! 
    চোখের চামড়াও নেই!
  • দীপ | 42.110.145.105 | ২২ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১৭513094
  • দীপ | 42.110.145.105 | ২২ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১৮513095
  • রত্নের‌ কোনো কমতি নেই!
  • দীপ | 42.110.145.105 | ২২ অক্টোবর ২০২২ ১৫:২০513098
  • দীপ | 42.110.145.105 | ২২ অক্টোবর ২০২২ ১৫:২৩513099
  • গতকালের রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের কিছু ছবি। আশা করি সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরব হবেন।
  • দীপ | 42.110.136.234 | ২৩ অক্টোবর ২০২২ ২১:২৬513112
  • #প্রশ্নোত্তরে_তোলামূল

    কচি কচি চটিচাটা তোলুগুলো কিছু ওজর আপত্তি এদিক ওদিক লিখে বেড়াচ্ছে। এই ওজরের মুখে ঝামা ঘষে দিন -
    প্রশ্নঃ -
    ১। এতই যখন মেধাবি ৮বছর আগে টেট পাশ করেছে এতদিন চাকরি জোটেনি কেন?
    ▪️সিঙ্গুরে অনিচ্ছুক কৃষকদেরও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল, সেটা তৎকালীন বাজারমূল্যে যথেষ্ট ভালো ছিল। তাহলে সেদিন স্যান্ডউইচ খেয়ে অনশন নাটক করেছিল কেন? নিজের বাপ ঠাকুরদার জমিতে যদি অনিচ্ছুকদের চাষের অধিকার বৈধ হয় তবে ২০১৪র টেট পাশ আন্দোলনরতদের চাকরির জন্য আন্দোলন সম্পূর্ণ বৈধ;

    ২। টেট পাশ মানেই চাকরি নয়। ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে প্যানেলডদেরই চাকরি দেওয়া সম্ভব।
    ▪️তোদের তোলাবাজ দাদারা ছাড়া সবাই জানে সে কথা। যে টেট বৈধভাবে পাশ করতে পারে সে যথেষ্ট জানে চাকরিতে পৌঁছতে কটা ধাপ পেরোতে হবে। কিন্তু তোর তোলু দাদা দিদি যখন লোকের বাড়ি বাড়ি টাকা তুলেছে তখন বলে এসেছে কোন ইন্টারভিউয়ে কিছু হবে না, যদি না আমাদের তোলা দেওয়া হয়। এই টেট তালিকার পিছনে নাম থাকার বাড়ি অ্যাপোয়েন্টমন্ট লেটার এসেছে তোলা দিয়েছে বলে। সিপিআইএম আমলে ওয়েটিং ১/২ কোনদিন আন্দোলন করেনি। কারণ সে জানত চাকরি লিস্ট ধরে আসবে। নিজে সরকারে বসে নিয়ম ভঙ্গ করে অন্যকে নিয়ম দেখাতে আসার দুঃশাহস করিস না তোলু;

    ৩। মানছি অনিয়ম হয়েছে, তবুও কি -
    ▪️মানছি অনিয়ম হয়েছে মানে...  উদগান্ডু, অশিক্ষিত অনিয়ম মেনে নেওয়া মানে দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্ষদ সভাপতি, শিক্ষামন্ত্রীর ইস্তফা- দিয়েছিল?
     দায় স্বীকার করে মুখ্যমন্ত্রীর তদন্ত কমিটি গঠন, বৈধদের দ্রুত নিয়োগ এবং অপরাধীদের শাস্তি। জাস্টিস গাঙ্গুলী জুতোপেটা না করলে মানতিস অনিয়ম হয়েছে?

    ৪। আদালত বলেছে রাস্তা খালি করতে। করুণাময়ীর মতো এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ত রাস্তা আটকে রাখা সম্ভব নয়। পুলিস নিয়ম মেনেই কাজ করেছে।
    ▪️দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের চেয়ে করুণাময়ী বেশি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা? সল্টলেকে প্রত্যেক রাস্তার দশটা বিকল্প আছে। কোর্ট বলেছিল মাঝরাতে জবরদস্তি করতে? সরকারের তরফে কেউ গিয়েছিল আলোচনা করতে, অনশন ভাঙাতে? আদালতও বিশবার করে বলেছে তোর দলের চোরদের তদন্তে সহযোগিতা করতে... করেছিস?
    আজকে যে আদালতের হাওয়ালা দিচ্ছিস কাল সেই আদালত হয়েই সবকটাকে গারদে পোরা হবে। খেলা শুরু হয়ে গেছে, শেষ দেখে ছাড়ব।
     
    একদম ঠিকঠাক লেখা।
  • দীপ | 42.110.146.224 | ২৬ অক্টোবর ২০২২ ১১:৪০513191
  • শিক্ষাব্যবস্থার অনৈতিকতা ও চূড়ান্ত দুর্নীতির প্রতিবাদে প্রয়াত বিশিষ্ট সাহিত্যিক-অধ্যাপক প্রমথনাথ বিশীর ৮০ বছর বয়স্কা প্রাক্তন অধ্যাপক কন্যা চিরশ্রী বিশী চক্রবর্তীর খোলা চিঠি।
    ----------------------------------------------------------------
     
    দিল্লীর এক রোগশয্যা থেকে এই পত্র প্রেরণ করছি।
     
    আমার নাম চিরশ্রী বিশী চক্রবর্তী, প্রয়াত প্রমথনাথ বিশীর একমাত্র জীবিত সন্তান ও কন্যা। পশ্চিমবঙ্গে সম্ভবতঃ আমাকে কেউ চিনতে পারবে না, কারণ সেখানে আমি অপরিচিত। আমি কোন বুদ্ধিজীবী নই। দীর্ঘকাল দিল্লীবাসী, এখানকার কোন এক নামী কলেজে দীর্ঘ ত্রিশ বছরের বেশি অধ্যাপনা করেছি। শিক্ষাই আমার জগৎ। আমার বয়স ৮০ বছর পূর্ণ হয়ে গেছে, দেহের ক্ষমতা কমলেও আশাকরি হৃদয়ের ক্ষমতা ও কলমের ধার এখনও ভোঁতা হয়নি।
     
    আমার বাবা সম্ভবতঃ এই বয়সেই শিক্ষা জগতের এক মারাত্মক অনৈতিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তাঁর সহযোদ্ধা ডঃ সুকুমার সেন সহ বিদ্যাসাগর মূর্তির পাদদেশে অনশনে বসেছিলেন। আমার যদি শারীরিক ক্ষমতা থাকতো, তাহলে আমাকেও আপনারা কলকাতার ধূলি লুন্ঠিত রাস্তায় এই সমস্ত অত্যাচারিত, অবিচারগ্রস্ত, মা সরস্বতীর প্রতিনিধি ছাত্রবর্গের সঙ্গে দেখতে পেতেন। এরা আমার কেউ রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয় নয়, এরা আমার আত্মার অঙ্গ। দুর্ভাগ্যক্রমে আমার এখন সে ক্ষমতা নেই। তাই লিখিত ভাবে জানাই, যে এই শিক্ষা ও শিক্ষকজাতির প্রতি যে অপমান চলেছে, দীর্ঘদিন ধরে অবিলম্বে তার অবসান চাই। কেবল মুখের কথায় নয়, কাজে করে দেখানো হোক।
     
    এ যেন, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ! রাজনীতি আমি বুঝি না, বুঝতেও চাই না। আমি ওদেশের 'ভোটার'ও নই। কাজেই আমার কোন স্বার্থ আপনারা খুঁজতে চেষ্টা করবেন না। এটা আমার ধর্মনীতি, মনুষ্য নীতির প্রকাশ মাত্র।
     
    একি আমাদের চেনা সেই কলকাতা ? যাকে নিয়ে চিরকাল আমরা স্বদেশে, বিদেশে গর্ব করে এসেছি ? এখনকার এই মুন্ডহীন, রসনা- সর্বস্ব কবন্ধ জনতাকে আমি চিনি না। একি সেই পান্ডবদের রাজসভা ? যেখানে ভীষ্ম, কৃপ, দ্রোনাচার্য- মহা মহা হৃদয়বান, শক্তিমান পন্ডিতেরা নিজেদের বিচার বুদ্ধিকে এক গোপন ও মিথ্যা প্রতিজ্ঞার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এক একজন বিচারহীন দর্শক বনে বসে আছেন ??? কিন্তু কেন ? কেন ? কেন ? এখানেও কি পিতামহ ভীষ্মের আনুগত্যেও মত কোন প্রশ্ন আছে ? এটা আমরা বিশ্বের শিক্ষিত জনতা মুক্তকন্ঠে জানতে চাই।
    আমিও সম্ভবতঃ অশিক্ষিত নই। আমার সমস্তডিগ্রী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সম্মানের বিচারের আশায় ভূলুন্ঠিত ছাত্রদের পদস্পর্শ করে ক্ষমা চাওয়া এবং তাদের শিক্ষাজগতে ফিরিয়ে আনা। এদের যথার্থ স্থান হোক, ক্লাশরুমে, ব্লাকবোর্ডের সামনে। সম্মুখে থাকুক একদল তাজা কচি শালতরু, মাথা উঁচু করে। এটাই আমার একমাত্র স্বপ্ন।
     
    আর কলকাতার এই দর্শক কবন্ধ জনতা, তোমাদের জন্য ঘৃণার অন্ত নেই। এ কলকাতাকে আমি চিনি না। চিনতেও চাই না। "এ আমার এ তোমার পাপ!!"
     
    আর একটা কথা মনে রাখা দরকার, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনা, ক্ষমা করেনি। এবারেও করবে না। তার প্রাচীনতম উদাহরণ আমাদের "মহাভারত"!
     
    আমার করজোড় নিবেদন, আমার এই "খোলাচিঠি” আমি বিভিন্ন বৈদ্যুতিন মিডিয়াতে প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে কলকাতার প্রত্যেক নামী দামী সংবাদ পত্রেও পাঠাচ্ছি। আপনাদের "বুকের পাটা” থাকে তো এ পত্র ছাপিয়ে প্রকাশ করুন। তাহলেই বুঝবো মনুষ্য রক্ত এখনও আপনাদের বক্ষে প্রবহমান।
     
    এত পাপ ধরিত্রীও সহ্য করবেন না, সর্বংসহা তিনি সত্যই নন।
     
    নমস্কারান্তে
     
    চিরশ্রী বিশী চক্রবর্তী ।
     
    জে -২১৭, সাকেত, নতুন দিল্লী ১১০০১৭
     
    ৯৮১০০ ৮৮০৩০ ফোন নং
     
    (ঠিকানা লেখার কারণ, এটা কোন মেঘের আড়াল থেকে লেখা মেঘনাদের হুঙ্কার নয়। ঠিকানা যাচিয়ে দেখতে পারেন। )
  • দীপ | 42.110.147.114 | ৩১ অক্টোবর ২০২২ ২২:৫৫513377
  • দীপ | 42.110.147.114 | ৩১ অক্টোবর ২০২২ ২২:৫৫513378
  • উদ্ধত শাসকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রত্যুত্তর!
  • দীপ | 42.110.136.142 | ০২ নভেম্বর ২০২২ ১৯:২৯513404
  • দীপ | 42.110.136.142 | ০২ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৩০513405
  • একে একে সব প্রকাশিত হচ্ছে!
  • দীপ | 42.110.137.104 | ০৪ নভেম্বর ২০২২ ১৩:৩১513427
  • হটপস://ওওও।গুগল.কম/এমপি/স/ম.দেবীর.ইন/আর্টিকেল/পলিটিক্স/কেরালা-রিভাল্স-বিজেপি-স্পিড-মার্চ-তোগেথের-এগেইনস্ট-আদানী-পোর্ট-প্রোটেস্টার্স/এমপি 
     
     
    রাজনৈতিক দল যার যার, আম্বানি-আদানি সবার!
  • দীপ | 2402:3a80:1968:25a0:20a3:28d7:7f05:6380 | ০৯ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৩৪513639
  • উদ্ধত অসভ্য শাসক!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন