এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  বিবিধ

  • চিনের সাথে ক্যাঁচাল

    দেব
    আলোচনা | বিবিধ | ২০ জুলাই ২০১৭ | ১৫৫২৩ বার পঠিত
  • ১৯৬২র পর ১৯৮৬-৮৭, তারপর এই ২০১৭ এ এসে আবার চিনের সাথে ভাল রকম ঝামেলা শুরু হয়েছে। সেই একই গপ্পো - জমি কার?

    ঘটনার স্থল সিকিম-তিব্বত-ভুটান এই তিনটি রাজ্য ও দেশ যেখানে এসে মিলেছে সেই বিন্দু এবং তার পূর্বদিকের কয়েক বর্গকিমি ক্ষেত্র নিয়ে। সিকিম এবং তিব্বতের সীমানা ১৮৯০ সালে ব্রিটিশ ভারত ও চিনের রাজার মাঝে হওয়া চুক্তিতে স্থির হয়েছিল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sswarnendu | 113.242.198.54 | ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৭:৩০367160
  • খুবই ইন্টারেস্টিং টই হয়েছে এইটা, শেষ পর্বের অপেক্ষায়।
  • সিকি | ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৮:০৩367171
  • দম বন্ধ করে পড়ছি।
  • pi | 57.29.194.121 | ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৮:১৭367182
  • দেব বাবুর সাথে যোগাযোগ করা যায় কীভাবে?

    guruchandali জিমেলে এ একটা মেইল ঠুকবেন?
  • শঙ্খ | 57.15.11.252 | ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৮:২৫367186
  • আরেকটু চলুক না, খুব জমেছে মশাই।
  • সিকি | ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৯:৪৯367187
  • হ্যাঁ মানে, এটা আরেকটু খোলতাই করে একটা মূল্যবান প্রবন্ধের রূপ দেওয়াই যায়।
  • dd | 59.207.62.189 | ৩০ জুলাই ২০১৭ ১০:০৭367188
  • দেবের লেখা সকলের'ই ভালো লাগছে কেনো না খুবি সহজবোধ্য ভাষায় লিখছেন। কোনো রকম পেডেন্ডাবাজী নেই। আরো লিখুন।

    একটাই অনুরোধ, অ্যাটম বোম হচ্ছে পারমানবিক বোমা, আণবিক তো হচ্ছে মলেকিউলার।
  • দেব | 135.22.193.149 | ৩১ জুলাই ২০১৭ ১১:৩৭367189
  • আগের পোষ্টে আরেকটা টাইপো - কেনিয়ার নতুন লাইনটিতে যাত্রীপরিষেবা চালু হয়েছে ২০১৭র জুন, ২০১৬ নয়।

    @পাই
    আইডিটা কি [email protected]?
  • pi | 57.29.253.182 | ৩১ জুলাই ২০১৭ ১২:১৬367190
  • হুম।
  • pi | 174.100.177.10 | ০৩ আগস্ট ২০১৭ ১০:৫৯367191
  • দেববাবু , ....
  • সিকি | 158.168.96.23 | ০৪ আগস্ট ২০১৭ ১৪:০৯367193
  • দেব - লেখাটা কি ফুরিয়ে গেছে?
  • দেব | 127.197.240.60 | ০৪ আগস্ট ২০১৭ ২১:০৫367194
  • না। শেষ খন্ডটা এই শনিবার দেবো।
  • দেব | 113.193.60.214 | ০৫ আগস্ট ২০১৭ ২৩:৩৮367195
  • অতীত ও বর্তমান, আকার, আয়তন ও সমাজসংস্কৃতির মাপকাঠিতে ভারতের সাথে শুধু একটা দেশেরই তুলনা হয় - চিন। এবং সেটা উল্টোদিকেও সত্যি। চিনের তুলনা সারা পৃথিবীতে একমাত্র ভারতই।

    দুটি দেশই, বিদ্যাধর নইপলের নিখুঁত মূল্যায়নে - উন্ডেড সিভিলাইজেশন - অভিমানী জাতি। ভারতের জাতীয় লজ্জা - একটা দেশলাই বাক্সের মতন পুঁচকে দেশের হাতে ১৫০-২০০ বছর বন্দী হয়ে থাকা। এই সুদীর্ঘ সময়ে ভারত ন্যূনতম চেষ্টাও করেনি মারপিট করে স্বাধীন হওয়ার। না ভুল হল। একবার করেছিল। ১৮৫৭ সালে। বেশ বড় চেষ্টাই। ব্যর্থ হয়। তারপর চুপ। শুধু আরেকবার একটু জ্বলে উঠেছিল ১৯৪৪-১৯৪৬ সালে। এক বাঙালী ভদ্রলোক চেষ্টা করেছিলেন একটু। কিন্তু সে এতই সামান্য যে ইতিহাসের বিচারে ওটাকে বদলা, এমনকি আংশিক বদলাও বলা চলে না। আর ১৯৪৬এ নৌসেনারা ১৮৫৭র সামান্য মাত্রায় পুনরাবৃত্তি ঘটায়। কিন্তু ততদিনে ব্রিটেনের দম শেষ। যবনিকাপাত আসন্ন। বিদ্রোহীরাও ব্যাপারটা বুঝে আর কথা না বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেয়। ততদিনে গৃহযুদ্ধ লাগার মুখে। আর এক বছরের মধ্যে রক্তে ডুববে পাঞ্জাব।

    দেশ স্বাধীন হল ঠিকই। কিন্তু অপরের বদান্যতায়। বদলা নেওয়া হল না। রক্তের বিনিময়ে মুক্তি না পেলে আত্মসন্মান ফিরে আসে না। তবে উপায়ও ছিল না। গান্ধী ঠিকই বুঝেছিলেন যে ভারত এতটাই বহুবিভক্ত ও ব্রিটেন এতটাই শক্তিশালী যে সোজাসুজি যুদ্ধ করা অসম্ভব। অহিংস আন্দোলন ছাড়া উপায় নেই। কয়েক বছর পরে সেই একই সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছোন মার্টিন লুথার কিং। আমেরিকার কুৎসিত বর্ণবিদ্বেষপ্রথার মোকাবিলা করতে তিনিও ঐ একই পথে হাঁটেন। নেলসন ম্যান্ডেলার এএনসিও দক্ষিণ আফ্রিকায় একই পন্থা নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু কংগ্রেসের প্রচেষ্টার প্রতি সম্পূর্ণ সন্মান রেখেও একথা না মেনে উপায় নেই যে ভারত স্বাধীনতা পেয়েছে মূলত জার্মানী ও জাপানের জন্য। অবশ্য সেটা পাঠ্যবইতে বাচ্চাদের পড়ানো সম্ভব নয়। অথচ কোনদিনই ভারত এই লজ্জা ঘোচাতে পারবে না। ব্রিটেন বিদেয় নিয়েছে মাঠ থেকে। তাহলে উপায়? উপায় একটাই। ঐ যুগটাকে ভুলে যাও। বাচ্চাদের শান্ত কর এই বলে ভারত নিজের চেষ্টায়, অহিংস আন্দোলন করে স্বাধীনতা পেয়েছে। এবং সেই কৃতিত্ব কংগ্রেসের, বিশেষ করে নেহেরুর। কিন্তু বেশী পড়াতে যেও না। হালকা করে ভাসিয়ে কেটে পড়।

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ না হলে অবশ্য একটা উত্তর পাওয়া যেত। হয় ব্রিটেন চাপের মুখে পড়ে ভারতকে ক্রমশঃ স্বশাসন দিয়ে দিত। আর না হলে ১৮৫৭র পুনরাবৃত্তি হত। অবশ্য সেক্ষেত্রে খুব সম্ভবত দেশটা পাঁচ ছয় টুকরো হয়েই বেরোতো। কিন্তু ব্যাপারটা এসপার ওসপার হত। কিন্তু গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত নিজের ডেসটিনি তৈরী করতে শুরু করার মুখেই ইতিহাস রাস্তা কেটে বেড়িয়ে যায়।

    সমস্যা এই যে মিথ্যে যতই মিষ্টি হোক, সত্যিটা বেড়িয়েই আসে। ভারত আজ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে। দুশ বছরের অসীম শোষণ, অন্যায়, অপমান ও হত্যাকান্ডের শোধ নিজের হাতে না তুলতে পারলে সেটা হবারই কথা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের অপমান ফ্রান্স এখনো ভোলে নি একই কারণে। কিন্তু ফ্রান্স দখলে ছিল ঠিক ৩টে বছর। আর ফ্রান্স নিজে বহুযুদ্ধে বিজেতা, সেটাও সম্প্রতিকালে, সুদূর অতীতে নয়। তাতেও ফ্রান্সের এই অবস্থা। ভারতীয়দের কি অবস্থা সেটা আপনাদের বলার কিছু নেই। আপনারা নিজেদের অন্তরাত্মায় জানেন আমি কি বোঝাতে চাইছি।

    এর ফল এই যে আজকে আমরা হিরো খুঁজছি। যে অল্প কিছু ভারতীয় হাতে বন্দুক তুলেছিলেন, ইংরেজদের কাছে 'টেরোরিষ্ট', আমাদের কাছে বিপ্লবী, তারা আছেন। নেতাজীও ঐ দলে পড়েন। মঙ্গল পান্ডেও। স্যার আশুতোষ একবার এক সাহেবকে কি বলেছিলেন জানেন? এই মুহূর্তে একটা সিনেমা চলছে 'রাগ দেশ'। আজাদ হিন্দ বাহিনীকে নিয়ে। গত ক'বছরে অনেক কটি সিনেমা হয়েছে এই ধাঁচে। অথচ গান্ধীকে নিয়ে শুধু মুন্নাভাই মনে পড়ে। কিন্তু আমরা জানি যে এই সিনেমাগুলোও 'সত্যি' নয়। এগুলো সবই ঐ স্যার আশুতোষের কীর্তির মতন। মন শান্ত হয় না। অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্রতিশোধস্পৃহা সহজে যায় না। চিনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের যুদ্ধংদেহি ভাব একই কারণে।

    আর চিন?

    -----------------------------------

    প্রকৃতি ফাঁকা জায়্গা পেলেই সেটাকে ভরিয়ে তোলে। আমেরিকাও প্রকৃতির মতন। সারা পৃথিবীর যেকোন কোথাও যেকোন ছোট দেশ যদি নিজের ধান্দায় থাকে, ওটি হচ্ছে না। তাকে 'ফ্রি ওয়ার্ল্ডে' যোগ দিতেই হবে। তাতে সে রাজী থাকুক বা না থাকুক। রাশিয়াও এককালে সেরকমই ছিল তবে ঐ মাত্রায় নয়। আশীর দশকের শেষে এসে রাশিয়া মুখ থুবড়ে পড়লে আমেরিকা পূর্ব ইউরোপে বাজার করতে বেরোয়। নব্বই এর দশকে থলেতে এক এক করে ঢোকে বাটা, ইলিশ, রুই, পোল্যান্ড, তিনটে পুঁচকে বাল্টিক দেশ, রোমানিয়া, চেকিয়া, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া। যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে যে কটা দেশ বেরিয়েছিল তার মধ্যে স্লোভেনিয়া ও ক্রোয়েশিয়া একটার সাথে একটা ফ্রি। তবে এই সমস্ত দেশগুলো নিজেরাই চেয়েছিল 'ফ্রি ওয়ার্ল্ডে' যোগ দিতে সেটা অনস্বীকার্য। যুগোস্লাভিয়ার বড় শরিক সার্বিয়া একটু চিঁচিঁ করেছিল। তাকে থাবড়িয়ে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। সার্বিয়ার একটা জেলা, কোসোভো মার্কিনি ম্যানেজমেন্টে আসে। সেখানে আজকে আমেরিকা পাকাপাকি ভাবে ঘাঁটি গেড়েছে। এক বিশাল সেনাঘাঁটি বানানো হয়েছে - ক্যাম্প বন্ডস্টিল। সার্বিয়া বাদে যুগোস্লাভিয়ার বাকি সবকটা টুকরোই আজ আমেরিকার হাতে।

    রাশিয়াকেই বা বাদ দিই কেন। নব্বইএর দশকে রাশিয়ার সমাজ ও অর্থনীতি ভেঙ্গে চুরমার। বিশাল বিশাল কারখানা, খনি, ব্যাঙ্ক সব জলের দরে মুষ্টিমেয় কিছু লোকের হাতে বিক্রি হচ্ছে। গড় আয়ু কমে ৫০ এর ঘরে! একটি বিশুদ্ধ ছ্যাঁচোড় দেশের সরকারের মাথায় ক্ষমতাসীন - বরিস ইয়েলৎসিন। তবে হ্যাঁ দেশে নিয়ম করে ভোট চালু হয়েছে বটে। এবং বরিসবাবুকে ভোটে জেতানোর জন্যে আমেরিকা মুক্তহস্ত। টাইম পত্রিকা গর্বের সঙ্গে জানালো - বরিসকে তো আমরাই ক্ষমতায় বসিয়েছি।

    http://content.time.com/time/covers/0,16641,19960715,00.html

    ইলেকশন মেডলিং? ছি ছি কি বলছেন। আমেরিকা কক্ষনো অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলায় না। তবে হ্যাঁ, সম্প্রতি ডোনাল্ডবাবু ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমেরিকানদের রাশিয়া-পুতিন-হ্যাকিং-চক্রান্ত-সেক্সটেপ-পিটিয়ে দেব-মেরে ফেলব শীৎকার দেখে রাশ্যানরা খিলখিল করে হাসছেন। দেখ কেমন লাগে।

    যাই হোক, রাশিয়াকে মায়ের ভোগে পাঠিয়ে বরিসবাবু বিদেয় নিলেন। দেশ তখন চালাচ্ছে সংগঠিত অপরাধীদের দল। তারা পদে বসাল এক অচেনা নতুন মুখকে - ভ্লাদিমির পুতিন। ভেবেছিলেন এটা আর কিই বা করবে। ও হরি। পুতিনবাবু চাকা ঘোরালেন। তিনি প্রথমেই করলেন কি, বাছাই করা কয়েকটা বড় চোরকে বেশ ফলাও করে জেলে ভরলেন। অবশ্য তখন রাশিয়ায় ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়। তিনি সবার পেছনে গেলেন না। কয়েকটা বড় হনুর ঘাড় মটকালেন। গড়পড়তা রাশ্যানরা অবাক। রাতারাতি বাকিরা বুঝে গেল জিনিস কোন দিকে যাচ্ছে। জনতা জনার্দনের সমর্থন অতি কঠিন জিনিস। আর মনে রাখবেন রাশিয়া তখন গণতন্ত্র। হুঁ হুঁ বাওয়া। সেই শুরু। রাশিয়া ঘুরতে শুরু করল।

    এদিকে পূর্ব ইউরোপ ততদিনে প্রায় পুরোপুরিই ন্যাটো অর্থাৎ আমেরিকার দখলে। তবে ভদ্রতা করে তেনারা বেলারুস ও ইউক্রেন, এই দুটি দেশের দিকে হাত বাড়ান নি। দিলে একেবারে রাশিয়ার গায়ে উঠে আসত ন্যাটো। বাল্টিক দেশগুলি অবশ্য রাশিয়ার গায়েই। কিন্তু ওগুলো পুঁচকে। এবং ওখানে ন্যাটো কোন স্থায়ী সেনাঘাঁটি বানায়নি রাশিয়া যাতে উত্তেজিত না হয়। আজও নেই। এবং বেলারুস ও ইউক্রেন পূর্ব ইউরোপের অন্য দেশগুলির মতন আমেরিকান ক্যাম্পে যোগ দিতেও খুব একটা ইচ্ছে দেখায় নি। রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক ভালই রেখেছিল দেশদুটির সরকার।

    এখানেই যদি আমেরিকা থেমে যেতে, লোভ সামলাতে পারত, তাহলে কোন ঝামেলা ছিল না। কিন্তু ঐ যে লিখলাম, আমেরিকা প্রকৃতির মতন। এবার নজর পড়ল রাশিয়ার দক্ষিণে, জর্জিয়ার দিকে। কন্ডোলিজা রাইস জর্জিয়াকে একটু টোপ দিলেন - ফ্রি ওয়ার্ল্ডে যোগ দিতে। জর্জিয়া ভাবল রাশিয়াকে একটু খোঁচাই। কিছু হলে আমেরিকা বাঁচিয়ে দেবে। ফল ভাল হল না। ২০০৮এ পুতিন একটু থাবড়ালেন জর্জিয়াকে। ১৯৯১এর পর ন্যাটোর ক্রমাগত পূর্বমুখী প্রসার এই প্রথম বাধা পেল। আমেরিকা বুঝে গেল এটা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। রাশিয়াকে একটু জায়্গা দিতে হবে। তো আমেরিকা চুপ করে রইল সেবারে। কিন্তু হলে কি হবে। ঘোড়া রোগ কি আর যায়। ২০১৪এ আবার একই ব্যাপার। এবার ইউক্রেনে। আগেই লিখেছি ইউক্রেনের সরকারের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালই ছিল। আমেরিকা টুকুস করে একটা ক্যু করিয়ে সেই সরকারকে ফেলে দিল। ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে ফার রাইটদের বেশ প্রতিপত্তি আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এরা জার্মানদের সাথে যোগ দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে। সঙ্গে হালকা করে স্থানীয় রাশ্যান ও ইহুদিদের কোতল প্রোগ্র্যাম - ফার রাইটদের যা রেসিপি। আশা করি ব্যাখ্যা করতে হবে না রাশ্যানরা এদের কি চোখে দেখে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে এদেরকে স্টালিন ডান্ডাপেটা করে আন্ডারগ্রাউন্ডে পাঠিয়ে দেন। ১৯৯১ এ ইউক্রেন স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এরা আবার মাথা তুলেছে। শুধু ইউক্রেনেই নয়, পূর্ব ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতেও ফার রাইটদের বাড়বাড়ন্ত আজকাল। এই নমুনাগুলিকে আমেরিকা ইউক্রেনে ক্ষমতায় বসাল।

    https://www.theguardian.com/commentisfree/2014/mar/28/why-putin-crimea-strategy-west-villain

    রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের গুরুত্ব বিশাল। আমেরিকার কাছে কানাডা যেমন। জর্জিয়া তো কিছুই নয়। ইউক্রেন আকার-আয়তন, অর্থনীতি ও জনসংখ্যায় অনেক বড়। তার ওপরে ঐ ইতিহাস। ভূরাজনৈতিক গুরুত্বের তো সীমাই নেই। রাশিয়া আয়তনে বিশালবিস্তৃত ঠিকই কিন্তু ৯০% জনবসতি উরাল পর্বতের পশ্চিম দিকে। অঞ্চলটিতে বিশেষ কোন প্রাকৃতিক বাধা নেই যেমন ভারত ও চিনের মাঝে হিমালয়। প্রায় সমতল। ইউক্রেন আমেরিকার তাঁবে চলে গেলে সর্বনাশ। ইউক্রেন থেকে ন্যাটোর ট্যাঙ্ক গড়গড়িয়ে ঢুকে আসতে পারে রাশিয়ায়। সুতরাং রাশিয়া যেকোন মূল্যে ইউক্রেনকে নিজের ও আমেরিকার মাঝে বাফার হিসেবে রাখতে চায়। ওবামার এটা বোঝা উচিত ছিল। এমন নয় যে আমেরিকা রাশিয়াকে আক্রমণ করবে। কিন্তু এইটুকু জায়্গা দিলেই রাশিয়া শান্ত থাকত, ছিলও।

    কিন্তু সে গুড়ে বালি। পুতিন বুঝে গেলেন আমেরিকানদের বোধবুদ্ধি আর হবে না। তিনি প্রথমেই দক্ষিণের ক্রিমিয়া জেলাটি ফেরত নিলেন। ফেরত, কারণ জেলাটি রাশিয়ারই ছিল। ১৯৫০এর দশকে ক্রুশ্চেভ জেলাটিকে ইউক্রেনের সাথে জুড়ে দেন। বাসিন্দারা মূলত রাশ্যান। কিয়েভে ক্ষমতাসীন ফার রাইটদের শাসনে থাকার কোন ইচ্ছে ছিল না এদের। একই সাথে ইউক্রেনের পূর্বপ্রান্তে ডনবাস জেলাটিও 'ফেরত' নিলেন। ক্রিমিয়ার মতন এই অঞ্চলেও অনেক রাশ্যানদের বাস। এরা বিদ্রোহ করল কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে। পুতিন সাহায্য করলেন। অল্প একটু বাফার রাশিয়া ফেরত পেল।

    এরপরের খেল আরো মারাত্মক। হাজার হোক ইউক্রেন রাশিয়ার স্থলসীমায়। এবং মুখে যাই বলুক আমেরিকানরা রাশিয়ার দিকটা বোঝে। কিন্তু সিরিয়া? সে তো অন্য জায়্গায়। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে সেনা অভিযান তো আমেরিকা করতে পারে। সিরিয়ায় ৪ বছর ধরে 'গণতন্ত্র' প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে আমেরিকা। রাশিয়া কোন সাহসে সেইখানে গিয়ে আমেরিকার সমর্থিত গুন্ডাবাহিনীদের প্যাঁদায়? রাশিয়া কি বোঝে না ঠান্ডা লড়াই শেষ হয়ে গেছে! এখন আর এসব রাশিয়াকে মানায় না। দাঁড়া এমন স্যাংশন বসাব দ্যাখ শুধু।

    পরের দিন ডোরবেল বাজল। দরজা খুলে পুতিনবাবু একগাল হাসলেন - "আসুন আসুন। কোন অসুবিধে হয় নি তো।"

    "না না। তারপর? কি শুনছি হে? তোমাদের ওপরে নাকি স্যাংশন বসিয়েছে শুনলাম" - মৃদু হাসলেন শি জিনপিং।

    -----------------------------------

    এটা ভেবেছিলাম এই খন্ডে শেষ করতে পারব কিন্তু মনে হচ্ছে আরেকটু বড় হয়েই যাবে।
  • de | 192.57.43.177 | ০৫ আগস্ট ২০১৭ ২৩:৪৮367196
  • সত্যি, এতো ভালো হচ্ছে না এই লেখাটা! এভাবে হালকা চালে এই বিষয় নিয়ে লিখতে দম লাগে! লিখে যান, দেব, খুবই ভালো লাগছে পড়তে -
  • PM | 113.52.254.238 | ০৫ আগস্ট ২০১৭ ২৩:৫৬367197
  • দারুন চলছে---
  • সিকি | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ০১:০২367198
  • মানে, জাস্ট অসাম হচ্ছে। বহুকাল বাদে আবার মন দিয়ে লাইন বাই লাইন একটা টই পড়ছি।

    লেখাটা শেষ হলে একটা মাস্টারপিস হবে। তখন এটা আমার ব্লগে নিতে পারি, দেব?
  • T | 113.211.20.200 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ০৬:১৬367199
  • অদ্ভুত বস অদ্ভুত। হোক হোক।
  • dd | 59.207.61.243 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ০৭:৫৬367200
  • এই লেখাটা পড়ে বুঝতে পারছি ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্সের খবর কতো কম রাখ্তাম/বুঝতাম।

    দেশী কাগজে খুব কমই এরকম অ্যানালিটিকাল লেখা বের হয়, আর যেগুলি থাকে সেগুলি এতো "বিদ্যে জাহির" করায় ব্যাস্ত থাকে যে ম্যাংগো পাবলিক দূরেই থাকে।

    খুব ভালো হচ্ছে। আরো লিখুন। সংগে আছি।
  • lcm | 109.0.80.158 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ০৯:৩৮367201
  • খুব ভালো।

    কিছু জায়গায় সলিড লিখেছেন, যেমন, স্বাধীনতা-উত্তর ভারত আজও হিরো খুঁজছে - জাতীয়তাবাদ চাগিয়ে ওঠে।

    তবে কিছু জায়্গায় পুরোনো চশমা, এক শব্দের উত্তর - আমেরিকা। মানে, পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি যে সোভিয়েতের সাম্রাজ্যবাদী মাছের জালে আটকে ছিল ৪০-৫০ বছর ধরে, তার থেকে রেহাই পেল সোভিয়েত পতনের পর - যেন, রোমানিয়া সেসেস্কুর আমলে ভালো ছিল, আমেরিকা গিয়ে বিগড়ে দিল - এই সব।
  • lcm | 109.0.80.158 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ০৯:৫৭367202
  • আর একটা ব্যাপার হল "বাফার" । অর্থাৎ, কোনো দেশ যখন অন্য দেশের ঘাড়ের কাছে এসে ঘাঁটি গড়ছে তখন একটা টেনশন -
    সেটা এড়াতে একটু বাফার রাখা। যেমন, নর্থ কোরিয়া হল বাফার - চীন আর আমেরিকা(সাউথ-কোরিয়া)র মধ্যে।

    তো, বিশেষজ্ঞরা বলছেন আজকের যুগে আর বাফারের আগের মতন ভূমিকা নেই। এখন যুদ্ধ মূলত - রিমোট যুদ্ধ। সৈনিক-ও লাগে না। সব অটোমেশন। তেমন বড় যুদ্ধ হলে বিশাল হিউম্যান ফোর্সের ডেপ্লয়মেন্ট নাকি কোনো অ্যাডভান্টেজ তো দেবেই না উল্টে নাকি প্রতিবন্ধক হয়ে উঠবে। তাই কে কার কত কাছে ভৌগলিকভাবে, তা আজকে নাকি তেমন ভয়ংকর ব্যাপার নয়। মহাশূণ্য থেকে স্যাটেলাইট পিকচারে নাকি দেশলাই বাক্সের ব্র্যান্ড পর্যন্ত পড়া যায়। অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ সেট করে বোতাম টিপেই কাজ হাসিল।
  • ন্যাড়া | 109.72.224.255 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ১১:০৮367204
  • ভাল লেখা হচ্ছে। তবে চীন ও রাশিয়া গোপাল আর অ্যামেরিকা-ভারত ভুবন - এই পজিশনটা ঠিক স্বস্তি দিচ্ছে না। আরটি ডট কম আর স্পুতনিকের (বা তাদের চীনে কাউন্টারপার্টের) খবর ধ্রুব সত্যি না ভাবলেই হল।
  • S | 126.206.222.19 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ১১:৪০367205
  • শেষ তিনটে কমেন্টের সাথে মোটামুটি একমত। তবে বড় যুদ্ধেও ফুট সোলজার হয়তো লাগবে। ইরাক যুদ্ধে যেমন লেগেছিলো, পজিশন সলিডিফাই করতে। তবে এটাও ঠিক যে ইরাক যুদ্ধের চরিত্র অন্য ছিলো।

    আর চীন খুব মিস্টি দেশ, এমন ভাবার কোনই কারণ নেই। তাছাড়া চীন রাশিয়া একদিকে আর আম্রিগা ভারত অন্যদিকে এমন সরলীকরণ করার সময় এখনো আসেনি।
  • দেব | 55.124.193.118 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ১২:৩৬367206
  • @সিকি - দিতে পারেন। কোন অসুবিধা নেই।

    @lcm, ন্যাড়া - লেখাটা একপেশে মনে হচ্ছে জানি কিন্তু তার কারণ এই মুহূর্তে পৃথিবীতে একটিই মহাশক্তি। আমেরিকা চাল দেয়। বাকিরা সেটাকে আটকানোর চেষ্টা করে। ব্যাপারটায় একটু সমান সমান হলে দুপক্ষকে নিয়েই লেখা যেত। অবশ্য কয়েক দশকের মধ্যে সেটাই হতে যাচ্ছে। চিন-রাশিয়া আদৌ গোপাল নয়। কিন্তু রাশিয়া রণে ভঙ্গ দিয়েছে আর এখনো পর্যন্ত চিন ঘাপটি মেরে আছে। দেং জিয়াওপিংএর অমোঘ বাণী - "ধৈর্য ধর। সময়ের আগে নিজের ক্ষমতা দেখাতে যেও না" - চিন অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে এসেছে এতদিন। কিন্তু আর বেশী দেরী নেই।

    একথা ঠিক যে এই যুগে বাফারের সামরিক ভূমিকা কমে এসেছে। বিশেষ করে যখন দু'পক্ষই শুধু মিসাইল ছুঁড়েই একে অপরকে শেষ করে দিতে পারে। কিন্তু সবকটা দিক যদি আপনি লক্ষ্য করেন -

    ১। আমেরিকা চাইলেই সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমানবাহিনীকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। রাশিয়া অতদূরে কিছু করতে পারবে না।কিন্তু রাশিয়ার তার বদলে বদলা নেবে ইউরোপে - বাল্টিক দেশগুলিতে। যদি ইউক্রেন ন্যাটোর দখলে চলে যায় তাহলে ন্যাটোও ইউক্রেন থেকে অনায়সে রাশিয়ার মধ্যে কিছুদূর ঢুকে এসে বাল্টিক অঞ্চলের পাল্টা দিতে পারে।

    ২। অতদূরেও যেতে হবে না। যদি ন্যাটো ইউক্রেনে বিশাল সেনাঘাঁটি বানিয়ে বসে থাকে সেইটাই ডিটারেন্স। আর রাশিয়া বাল্টিক অঞ্চলে আক্রমণ করার ঝুঁকি নেবে না। মোদ্দা কথা রাশিয়ার ঘাড়ের ওপর এসে উঠছে ন্যাটো।

    ৩। ইউক্রেন ন্যাটোর হাতে থাকলে ব্ল্যাক সিতে রাশিয়ার নৌসেনার পক্ষে যুদ্ধের সময় চলাফেরা করা প্রায় অসম্ভব। আপনি বলবেন আমেরিকা এতবড় ঝুঁকি নেবে না কিন্তু ঝুঁকি ঝুঁকিই।

    ৪। দিনের শেষে প্রতিবেশী দেশ যদি আপনার পক্ষে বা অন্তত নিউট্রাল থাকে সেটাই কাম্য। পাকিস্তান ভারতের জন্য কত বড় সমস্যা দেখতেই তো পাচ্ছেন। চোর ডাকাত, স্মাগলিং, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ এগুলো আটকাতে প্রতিবেশীর সাহায্য ছাড়া হয় না। রাশিয়ায় রাহাজানি করে ইউক্রেনে গিয়ে লুকোলো ইত্যাদি।

    -----------------------------------------

    পূর্ব ইউরোপ রাশিয়ার ওপরে চটা। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে এই দেশগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি রাশিয়ার ওপরে ঝাঁপিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের (মিথ্যে) ভরসায় পোল্যান্ড উসকেছিল জার্মানী ও রাশিয়াকে। রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরী, ফিনল্যান্ড, ইউক্রেনের ফার রাইটরা জার্মানদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাশ্যানদের কচুকাটা করেছিল। এদেরকে কেউ ছেড়ে দেয়? এরা যে সুযোগ পেলে আবার ঐ জিনিস করবে না এই ভরসা কি? এই দেশগুলিরও কারণ ছিল রাশিয়াকে আক্রমণ করার নিশ্চয়ই। কিন্তু যুদ্ধ যদি করেই থাকো তাহলে যুদ্ধে হারলে তার ফলের জন্যে প্রস্তুত থাকো। ২ কোটি লোক হারিয়েছিল রাশিয়া ঐ কালো সময়ে। ভাবতে পারেন কি মানসিক অবস্থা হয়।

    সুতরাং নৈতিকতার দিক দিয়ে না হলেও ভূরাজনৈতিক দিক দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার হক ছিল পূর্ব ইউরোপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার। যেখানে রাশিয়া ছড়াল সেটা হচ্ছে অর্থনৈতিক পরিসীমায়। নাহলে এখনও হয়ত টিকেই থাকত।
  • Arpan | 24.195.232.245 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ১২:৫১367207
  • এই দেশগুলির সাথে রশিয়ার বাওয়াল কয়েক শতাব্দীর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জাস্ট একটা ইম্পরট্যান্ট মাইলস্টোন মাত্র।
  • DP | 117.167.104.191 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ২২:৫৬367208
  • বহুদিন পর এরকম একটা লেখা পড়লাম। লেখাটা এত ব্যাপক যে সব কিছুর ব্যাপারে বলতে গেলে আরেকটা টই হয়ে যাবে। বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে খুব ভালভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যদিও চীনের প্রতি হালকা একটা বামসুলভ সফ্ট কর্নার চোখে পড়ল, তবে সেটা কখনই ফ্যাকচুয়ালিটিকে নষ্ট করেনি। বাকি কথা বরং অন্য কমেন্টে বলি।
  • DP | 117.167.104.191 | ০৬ আগস্ট ২০১৭ ২৩:২৯367209
  • একটা বিশ্বযুদ্ধ বাধবে বলে মাঝে মাঝেই মনে হয়, তবে কিছু হলে ২০২৫ এর মধ্যেই হবে। আর তদ্দিন যদি াব সামলে সুমলে রাখা যায় তো আরও কয়েক দশন নিশ্চিন্তি। নামে যতই সমাজতন্ত্র হোক, আর কমিউনিস্ট পার্টি থাকুক, আদবে চীনে ভারতের মতই বর্তমানে উগ্র জাতীয়তাবাদের ব্যাপক প্রাধান্য। এরই অঙ্গ হল সম্প্রসারনবাদ। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াকে আপাতত তারা প্রভাব বলয়ে আনতে চায়। আসলে ঠান্ডা যুদ্ধও এখনো শেষ হয়নি, যেমন শেষ হয়নি এশিয়ান রিসার্জেন্সের তত্ত্ব। শুধু জাপানের জায়গায় চীন নেতৃত্ব নিতে তৈরী। ওবামা চেয়েছিলেন চীনের বিরুদ্ধে ভারতকে ব্যাকিং করতে। ঠিক যেমনটা রুজভেল্ট চেয়েছিলেন জাপানের ক্ষেত্রে। কিন্তু তখন ব্রিটেন ভারতকে স্বাধীনতা দিতে রাজী হয়নি।

    ----------------

    পূর্ব ইওরোপে যেমন ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়া বিদ্বেষ আছে, তেমনি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে চীন বিদ্বেষ আছে। দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বিবাদের এটাও অন্যতম কারন। তবে ইওরোপে আরেকটা ব্যাপার যেটা লেখক উল্লেখ করেননি, তা হল জার্মানীর পুনরুত্থান। জার্মানী কিন্তু দ্রুত সামরীক ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। আমেরিকা এড়িয়েই বাকিদের সাথে কৌশলগত জোট তৈরী করছে। জার্মানীকে এখন পশ্চিম ইওরোপের নেতা বলা যায়। ভূরাজনীতিতে এর বড় প্রভাব পড়তে চলেছে।

    ---------------

    তবে সবশেষে একটা ব্যাপারে লেখকের সাথে একমত। আগামী দিন এশিয়ার। আর তাতে চীন, ভারত, জাপান, সকলেই থাকবে
  • S | 57.15.9.107 | ০৭ আগস্ট ২০১৭ ০০:১৭367210
  • "আদবে চীনে ভারতের মতই বর্তমানে উগ্র জাতীয়তাবাদের ব্যাপক প্রাধান্য।" খুব ঠিক কথা।

    "জার্মানী কিন্তু দ্রুত সামরীক ক্ষমতা বাড়াচ্ছে।" এটা মনে হয় করছে ন্যাটোর ভবিষ্যতের কথা ভেবে। আগামী দুয়েক দশকে ন্যাটো উঠে যাবে বলেই মনে হয়। অম্রিগা আর ইয়োরোপের সব দেশের ভার নিতে রাজী নয়। হয়তো অন্য কিছু দিয়ে রিপ্লেস্ড হবে, কিন্তু ন্যাটো থাকবে না বলেই মনে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে রাশিয়াকে সমলাতে জার্মানীকে শক্তিশালী হতেই হবে।

    রাশিয়া লাস্ট কয়েক বছরে যা খেল দেখালো, পুতিনের নির্দিষ্ট প্ল্যান আছে। ইউক্রেন কে আর বাকি সব ন্যাটো মুখি পুর্ব ইয়োরোপের দেশগুলোকে দেখিয়ে দিলো যে যাই করো তোমাদের একজিস্টেন্স ডিপেন্ড করছে আমার মর্জির উপরে। যেদিন ইচ্ছে আর দরকার হবে সেদিন গিলে নেবো। ঐসব ইয়ু ন্যাটো খেলা এখন খেলতে পারো। সিরিয়াতে আইসিসকে ঠান্ডা করে দিয়েছে। বন্ধু ইরান তো বেশ সুবিধেজনক জায়্গায়। তুরষ্ককে বোতলবন্দি করতে পারলেই নেকস্ট স্টপ বোধয় আফগানিস্তান বা ইরাক। ট্রাম্প যদি এর মধ্যে একটা দেশ থেকেও সৈন্য সরিয়ে নেয় তাইলেই কেল্লা ফতে।
  • দেব | 69.94.91.82 | ০৭ আগস্ট ২০১৭ ০২:৪২367211
  • @S, @DP

    "আদবে চীনে ভারতের মতই বর্তমানে উগ্র জাতীয়তাবাদের ব্যাপক প্রাধান্য।"

    অবশ্যই। এইটাই আসছে পরের খন্ডে। আমরা অর্থনীতি, সামরিক শক্তি, খনিজ সম্পদের যোগান এইগুলো নিয়ে ভাবি। কিন্তু সমান গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মনস্তত্ব। ভারতে ব্রিটিশ শাসনকে নিয়ে বাচ্চাদের খুব বেশী খোঁচানো হয় না। তাতেও লোকের রোষ লক্ষণীয়। চিনের পরিস্থিতি আরো মারাত্মক। ভারতে নিজেদের মধ্যেই মারপিট হয় ন্যারেটিভের দখল নিতে। কারণ ভারত প্রকৃত বদলা নেওয়ার সুযোগ পায় নি। এবং কোনদিন আর পাবে কি না সন্দেহ। আসল লড়াই হলে দুধ কা দুধ পানি কা পানি হয়ে যেত। কে যোদ্ধা কে কাপুরুষ সব লোকে নিজের চোখেই দেখতে পেত। সেটা হয়নি বলেই আজ গান্ধী বনাম নেতাজী বনাম সাভারকর বনাম ভগৎ সিং বনাম নেহেরু বনাম প্যাটেল কার চেষ্টায় স্বাধীনতা এসেছে এই নিয়ে ঝগড়া হয়ে চলেছে। উত্তর হচ্ছে এরা সকলেই নিজপন্থায় চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ১৯৪৭ এ ভারত স্বাধীনতা পেয়েছে মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য। কিন্তু সেটা বাচ্চাদের আমরা পড়াতে পারব না। এটাই আমাদের জাতীয় দুর্ভাগ্য। তার ওপরে ভারত যে শুধু অন্যের কারণে স্বাধীনতা পেয়েছে তাই নয়, পেয়েছে দু'টুকরো হয়ে। সেই দিকটা তো ছেড়েই দিলাম।

    চিন সেরকম নয়। চিন বদলা নেবার সুযোগ পেয়েছিল এবং নিয়েওছিল। খোদ আমেরিকাকে তুমুল ঠেঙিয়েছে চিন। সিদ্ধান্ত কে নিয়েছিলেন? মাও সে তুঙের নেতৃত্বে পলিটব্যুরো। বাস্তবায়িত কে করেছিলেন? পেং দে হুয়াইএর নেতৃত্বে পিপলস ভলান্টিয়ার আর্মী। ফলে ক্রেডিট কে পাবে সেটা চিনাদের কাছে পরিস্কার। কোন দ্বিমত নেই। কোন দড়ি টানাটানি নেই ভারতের মতন। প্রতিশোধের স্বাদ চিন পেয়েছে এবং আরো নেবে। কারণ প্রতিশোধ নেওয়া এখনো বাকি আছে। মোর ইম্পর্ট্যান্টলি, প্রতিশোধ নেবার সুযোগও আছে আনলাইক ভারত। ঠান্ডা মাথায় চিন সেদিকে হাঁটছে।

    শেষ করার আগে একটা কথা। মাও এর জায়গায় ইন্দিরা গান্ধী আর পেং এর জায়্গায় জগজিৎ সিং অরোরা বসিয়ে দেখুন তো কি পান। ইন্দিরার বিরুদ্ধে ঘরোয়া রাজনীতিতে অনেক অভিযোগ আছে। কিন্তু একটি গ্লানির হাত থেকে তিনি ভারতের হিন্দুদের মুক্তি দিয়েছেন কোন দ্বিমত নেই। এটা আমরা খোলাখুলি আলোচনা করি না, আমিও করবনা, করার দরকারও নেই (বাঞ্ছনীয়ও নয়)। আপনারা সকলেই বুঝবেন।

    সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি কালে ভারতের গ্লানী মুছিয়ে দেবে। কিন্তু পুরোপুরি ও তাড়াতাড়ি মোছাতে গেলে রক্ত ছাড়া সন্মান আসবে না। কিছু করার নেই।
  • S | 57.15.9.179 | ০৭ আগস্ট ২০১৭ ০৩:০২367212
  • "চিন বদলা নেবার সুযোগ পেয়েছিল এবং নিয়েওছিল।"

    কিসের বদলা? সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারে তো মুল প্রতিপক্ষ জাপান (চিরকালই), আর তার আগে দুয়েক শতাব্দীতে ইংরেজরা।
  • amit | 213.0.3.2 | ০৭ আগস্ট ২০১৭ ০৫:১৯367213
  • চীন আমেরিকা কে তুমুল ঠেঙ্গিয়েছে ? কবে ? কোথায় ? বাংলাদেশ এর যুদ্ধে ভারত বা ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা নিয়ে আলোচনায় আপত্তি কোথায় ? যেকোনো দেশ চায় তার হোস্টাইলে প্রতিবেশী দুর্বল থাকুক। তখন এর ভিত্তিতে ইন্ডিয়া সেটা চেয়েছে এবং করেছে, এর মধ্যে হিন্দু গ্লানি , তার মোচন ইত্যাদি টেনে কি হবে ?

    লেখাটার বিশ্লেষণ ভালো এবং তথ্য সম্মৃদ্ধ। কিন্তু যেটা নিয়ে এটা শুরু হয়েছিল , তার বিষয়ে মতামত কোথায় ? ভারতের ডোকলাম নিয়ে ঠিক করা উচিত ? চীনের হাতে ছেড়ে দেওয়া ? নাকি অন্য কিছু ? আলোচনার কথা যদি বলা হয় , সেটা হচ্ছে অলরেডি।
  • dd | 116.51.225.87 | ০৭ আগস্ট ২০১৭ ০৮:২১367215
  • "চীন আমেরিকা কে তুমুল ঠেঙ্গিয়েছে ? "

    সে কি? কবে? কোথায় ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন