বড়ো মেয়ে শমরিতা রিতু পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়ার পর থেকে হায়দার আলীর স্বপ্ন মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবেন। তাঁর বংশে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েনি। এসএসসি, এইচএসসি’তে জিপিএ ফাইভ পেয়ে পাস করার পর হায়দার আলীর স্বপ্ন নতুন মাত্রা পায়। মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবেন তিনি। জেলা আদালতে করণিকের চাকুরি করেন। দুটো মেয়ে। স্বল্প বেতনে সুদূর উত্তরের জেলা শহর কুড়িগ্রামেও ভালোভাবে সংসার চালানো বেশ কষ্টকর। মেয়েকে ঢাকা কিংবা অন্য শহরে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর কথা শুনে রিতুর মা বরাবরই ভয় পেয়েছেন। ... ...
তখন প্লাষ্টিকের ব্যাগ আসে নি। আমাদের সকলের বাড়িতে চটের থলে নামের একটা জিনিস থাকত। আজকের দুনিয়ায় চারিদিকে প্লাষ্টিক বর্জ্য বিষয়ে অনেক চর্চা হচ্ছে। এতো আলাপ-আলোচনায় আমাদের সচেতনতা কি বাড়েনি? অবশ্যই আমরা এই নিয়ে ভাবছি, বিকল্প খুঁজছি। আমরা কাপড়ের আর কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করছি আজকাল, পরিবেশ সচেতনতার পরিচয় দিচ্ছি। আসুন, একটু তলিয়ে দেখা যাক। ... ...
সাড়ে পাঁচশ পৃষ্ঠার বই যখন শেষ হয়ে আসছে, মহারাজা যখন সমানে অসুস্থ হয়ে পরছেন তখন আমাদেরকে আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছিল এই লোকটা কী জিনিস ছিল। আমি সিনেমার হিসাব করছিলাম তখন, শুধু মনে হচ্ছিল না, এই অসুস্থতায় তিনি যাবেন না, এখনো তো আগন্তুক করা বাকি, এর আগে যাবেন কী করে? অসুস্থ অবস্থায় শেষ সিনেমা আগন্তুক তৈরি করলেন, উৎপল দত্ত তার জীবনের অন্যতম সেরা অভিনয় করলেন। আর শেষ সিনেমায় এসেও সত্যজিৎ দেখালেন তিনি কত বড় পরিচালক, কী দুর্দান্ত কাজই না করে গেছেন। আগন্তুক সিনেমার শুটিং শেষ হওয়ার পর, শেষ শট নেওয়ার পর তিনি বলে উঠেন, "যাঃ, আমার যা কিছু বলার ছিল সব ফুরিয়ে গেল, আমার আর কিছুই বলার নেই।" এই কথা শোনার পর বিজয়া রায়ের যেমন লেগেছিল, আমাদেরও তেমনি যেন লাগে। আমরা জানি তাই সত্য হয়েছিল। কিংবা বলা চলে উনার সময় ফুরিয়ে গেছিল, সত্যজিতের মত মানুষ কী কোনদিন ফুরিয়ে যায়? ... ...
কিন্তু প্রথম থেকেই যেটা লক্ষ্য করছিলাম, এই উপলক্ষ্যে মানুষ তিনটে জিনিষ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে - এক, কেরলের লিটারেসি রেট, দুই, মালাপ্পুরম মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল আর তিন, কেরলের মানুষের হিংস্রতা। ছকটা খুব কঠিন নয়। ... ...
একটি জাতি প্রায় সমষ্টিগতভাবে রেসিস্ট। রাজনৈতিক শুদ্ধতার বাইরে থেকে চাপানো কৃত্রিম জ্ঞান দিয়ে ফেসবুকে সচেতনতার সাময়িক পলেস্তারা নির্মিত পোস্ট রচনা করা যায়, রেসিস্ট মানসিকতার আগাছা তাতে নির্মূল হয়না। তাই এভাবেই মাঝে মাঝে পলেস্তারা খসে বেরিয়ে আসে রেসিজমের বয়ান, রেটরিক, ভাষা। সে ভাষায় সাহিত্য করে পুরস্কার লাভ হতে পারে, নিজেকে আ্যক্টিভিস্ট বা বামপন্থি বলে আত্মপ্রচার করা যেতে পারে, কিন্তু মানুষসভ্যতায় বিশ্ব-শিল্প-সাহিত্যে বা জাতিগতভাবে কোন সংযোজন সম্ভব হয়না। ... ...
এই যে ব্যাঙ্কগুলোর আক্যাউন্টে পয়সা রাখিস, এই টাকাটা তো ব্যাঙ্ক আবার অন্যকে ধার দেয়। সেই ধারের সুদটাই ব্যাঙ্কের মূল আয়। ২০১৯ সালে এই ধারের মোট পরিমাণ কত জানিস, প্রায় ৯৭ লক্ষ কোটি টাকা আর তাঁর মধ্যে প্রায় ৩৯ লক্ষ কোটি টাকাই আসে সেভিংস ব্যাঙ্কের ডিপোজিট থেকে, যাকে বলে CASA ডিপোজিট। ব্যাঙ্কগুলোর কাছে এটা খুব লোভনীয় কারণ এটার জন্য ব্যাঙ্কের সব থেকে কম খরচ হয়। এই মোট ধারের সব থেকে বেশি অংশ, ২২.৫% মানে ২১.৮ লাখ কোটি আসে এসবিআই এর থেকে। এসবিআই এই টাকার ৫০% পায় সেভিংস ডিপোজিট থেকে। অন্য দিকে ইয়েস ব্যাঙ্কের হিসেব টা দেখ, ওদের বাজারে যে টাকা লোন দেওয়া ছিল;সেভিংস ডিপোজিটের পরিমাণ তার মাত্র ১৯%। ... ...
সৎ দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে আমাদের গুরুদায়িত্ব সরকারেরব কথাকে বেদবাক্য বলে মেনে নেওয়া। এই পরিস্থিতিতে, নিজের স্বাস্থ্য নিজের সুরক্ষার দায় এক এবং একমাত্র নিজের, এমত সরকারি ঘোষণায় উদবুদ্ধ হয়ে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি বড় অংশ যদি বাড়িতে বসে থাকতে চান, তাহলে নিশ্চয়ই তাঁদের দোষ দেওয়া যায় না। তাই না?? তাহলে কী করবেন? কী আবার!!! আপনি হাত ধুচ্ছেন তো? আপনার সরকারও হাত ধুয়ে নিলেন। অতএব, আপনারা থালা বাজান। বাতি জ্বালুন। কোনো এক শুভদিনে সন্ধ্যা আট ঘটিকায় পরবর্তী ঘোষণার অপেক্ষায় থাকুন। ... ...
জঙ্গল না কাটলে, প্রকৃতিকে ধ্বংস না করলে "সভ্য" মানুষ বাঁচবে না। প্রান্তিকদের প্রান্তিকতর করে না তুললে উন্নয়ন থমকে যাবে। মানুষকে অত্যাচারে, বঞ্চনায় স্যাডিস্ট এবং নৃশংশ করে তুলতে পারলেও সভ্যতার অনেক লাভ। এইসব নৃশংশ হত্যার দায় সভ্যতাকে নিতে হয় না - নিজ গৃহকোণে চোখের জল ফেলে "অসভ্য নিষ্ঠুর" মানুষের প্রতি ঘৃণাবর্ষণ করে একটু স্বান্ত্বনা পাওয়া যায়। ... ...
কিন্তু ভিতরে বসে দেখলে অবস্থা এত আশাপ্রদ কিছু নয়। আমেরিকা কাঁপছে ঠিকই, কিন্তু ভেঙে পড়ার জন্য কিনা কেউ জানেনা। বহু শহরে রাত্রিকালীন কার্ফু। প্রেসিডেন্ট ন্যাশানাল গার্ড নামাতে বলেছেন সমস্ত গভর্নরদের। না নামালে নিজেই সৈন্য নামিয়ে দেবেন বলেছেন। আমেরিকায় বসে এই মুহূর্তে সেটা শুধু ফাঁকা আওয়াজ মনে হচ্ছেনা। কারণ প্রতিবাদের চেয়েও হিংসা ছড়াচ্ছে বেশি গতিতে। তার চেয়েও বেশি দ্রুত ছড়াচ্ছে 'খবর'। ছড়াচ্ছে ফোনে, ছড়াচ্ছে সোশাল মিডিয়ায়, ছড়াচ্ছে ফিসফিসিয়ে। আমাদের পাড়ার নেটওয়ার্কে মেয়রের সাবধানবাণী জ্বলজ্বল করছে। 'নির্ভরযোগ্য' সূত্রের খবর দিয়ে লোকজন পোস্ট করছে, আজ রাতে বাসে করে দাঙ্গাবাজরা আসছে। সতর্ক থাকুন। ইঙ্গিত ব্ল্যাকলাইভসম্যাটার আর অ্যান্টিফার দিকে। ... ...
অরিজিত চক্রবর্তী জঙ্গলে সামনাসামনি বাঘের কি রূপ! চোখ নাচায়, ভুরু নাচায়। দুমাস আগেই নাকি এগ্রামের একটা দল বাঘের খপ্পরে পড়েছিল। বুড়োর ছেলেও ছিল তাতে। ৬ জনের টিম। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বাঘের সাথে লড়ে নিজেরা ফিরেছে। তানা ৭-৮ ঘন্টা ধাওয়া করেছে বাঘটা। আম্ফানের মতই ৭-৮ ঘন্টা। হ্যাঁকাতে আছে বাঘটা। বুড়ো বলল আমার ছেলেটা তো একটু হ্যাঁকাতে। ৪টের পর বাঘ তাড়ালেও তখন ভাটা, নৌকা কাদায় আটকে। গভীর রাতে জোয়ার। ততক্ষণ নৌকাতেই বসে থেকেছিল। যেকোনো সময়েই বাঘ আস্তে পারতো। বাঘের মুখ থেকে খাবার ছিনিয়ে নিয়ে ফিরেছে। যদিও যাকে ধরেছিল সে বাঁচেনি। প্রবল রক্তক্ষরণে সে নৌকাতেই মারা গেছে। কাঁথা জামাকাপড় সব রক্তে ভেসে গিয়েছিল। তাও ফেরাতে পেরেছেটুকুই তাদের গর্বের। ... ...
আমাদের ইতিহাস পাঠ অনেকাংশেই ক্ষমতার ইতিহাস - এবং ক্ষমতাবানের ইতিহাস। ক্ষমতাহীন যে সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাঁদের নিয়ে চর্চার অভ্যেস, ইতিহাসবিদদের মধ্যেও, তেমন পুরোনো নয় - জনপ্রিয় ইতিহাসের ডিসকোর্সে সে বয়ান ঢুকতে বহু দেরী। ক্ষমতাবানের শাসনের চিহ্ন হিসেবে - যুগে যুগে শাসকের ক্ষমতার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে - রয়ে গিয়েছে অজস্র স্থাপত্য। এবং আমাদের ইতিহাস লিখনপ্রক্রিয়ায় সে স্থাপত্যের গুরুত্ব অনিবার্য। তারই সাথে সাথে নব্য শাসক পুরাতনের ক্ষমতার চিহ্ন মুছে ফেলতে গিয়ে ধ্বংস করেছেন পুরাতন স্থাপত্য - পুরাতনকে গড়েপিটে করে নিয়েছেন নতুন - এবং সেই নব্যরীতি নতুন ক্ষমতার প্রতি মানুষের সম্ভ্রম নতুন করে আকর্ষণ করেছে - এ নজির প্রত্যেক দেশে প্রতি যুগেই অঢেল। ... ...
প্রীতম বসু যেভাবে বাংলা তথা ভারতের জ্ঞান বিজ্ঞান জগতের বিশিষ্ট অর্জনগুলিকে একের পর এক তুলে আনেন, তার ধারাবাহিক চর্চার কথা বলেন – তা আমাদের জাতিগত গৌরবকে পুনঃনির্মাণের এক জরুরী চেষ্টা। আমাদের গণিতশাস্ত্র ও জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ব্যুৎপত্তিই হোক বা ভেষজ চিকিৎসাশাস্ত্রের বিষ্ময়কর বিকাশই হোক, অনেক পরিশ্রমসাধ্য গবেষণার মধ্যে দিয়ে প্রীতম তার স্বাদু পরিবেশন করেছেন এখানে। অনেক প্রচলিত ধারণাকে উলটে পালটে দিয়েছেন। অনেক নতুন তথ্যের সমাবেশ ঘটিয়ে আমাদের অতীতের প্রতি বিষ্ময়মুগ্ধ ভালোবাসার বোধ জাগিয়ে তুলেছেন, যা চৌথপীর চর্যাপদের অন্যতম অবদান। ... ...
প্রতিটি সাংসদের MPLADS এর টাকা, ₹১৩,৬২৩/- কোটি টাকা জিএসটির শেয়ার, রাজ্যের প্রাপ্য সমস্ত টাকাপয়সা মিটিয়ে দেবার দাবী তোলা হোক সর্বস্তর থেকে। ... ...
গোটা মানব জাতির অনেক ভাই বোন ছিল। বাকী ভাই বোনেরা এখন প্রয়াত। কেবল বেঁচে আছে হোমো সেপিয়েন্স প্রজাতিটি। অন্যান্য যে সব প্রজাতি ছিল আমাদের মানব জাতির তার মধ্যে আছে - ১) হোমো হ্যাবিলিস ২) হোমো ইরগাস্টার ৩) হোমো ইরেক্টাস ৪) হোমো ফ্লোরেসিয়েনসিস ৫) হোমো অ্যান্টেসেসর ৬) হোমো হাইডেলবার্গনেসিস ৭) হোমো নিয়ান্ডারথালেনিস এই সাতটি (এখনো অবধি জানা) প্রজাতির কেউ আর এখন বেঁচে নেই। বেঁচে আছে কেবল ৮) হোমো স্যাপিয়েন্স। এদের গল্পটা একটু শোনা যাক ... ...
আমরা এখনো যারা ধর্মের মালা জপতে জপতে, জানোয়ার কমিউনাল রাজনৈতিক নেতাদের প্ররোচনায় পা দিয়ে ওপাড়ায় গিয়ে ওদের ঘরে আগুন লাগিয় দিচ্ছি, বারবার কথায় কথায় ধর্মের কথা তুলে এনে ওদের গায়ে ভিনধর্মের ট্যাগ চাপিয়ে দিচ্ছি, ধর্মের দোহাই দিয়ে অশিক্ষিতের মত বলে চলেছি যে ওদের জন্যই আরও বেশি করে এই অতিমারি ছড়িয়ে পড়ছে তারা আসলে নিজেদের ধ্বজাধরা উগ্র জাতীয়তাবাদী মতকে প্রশয় দিয়ে ধর্মের মালা জপছি। আর মহম্মদরা রামেদের জন্য নিজেদের জীবনকেও বাজি রেখে দিচ্ছে। আর সুপ্রিম কোর্ট বলছে কারা রাস্তায় হাঁটবে সেটা তাদের দেখার কথা নয়। প্রধানমন্ত্রী কুম্ভিরাশ্রু ঝড়িয়ে বলছে তার ভুল হয়ে গেছে তিনি আগে শ্রমিকদের কথা ভাবেননি। এদিকে এখনও হাজার হাজার শ্রমিক হেঁটে বা ট্রাকের মাচায় ভেড়ার পালের মত ঘরে ফিরছে। ... ...
কোভিদ লকডাউন যুগের একটি পলায়ন কাহিনি ... ...
ঘনঘন টিভির পর্দায় ভেসে উঠছে, "লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় মৃত্যু সংখ্যা"।বিশ্বের ধনী, শক্তিশালী দেশ গুলি কুপোকাত, বিশ্বের অর্থনীতি দিশাহীন, কি হবে আগামী দিনগুলোতে এই চিন্তায় মানুষের ঘুম ছুটে গেছে... ঠিক এমনই সময় আপনার মুঠো ফোনে ভেসে উঠলো করোনা কে নিয়ে একটা কৌতুক ম্যাসেজ!!! মৃত্যুর আবহে কৌতুক?? এও কি সম্ভব? ... ...
লকডাউনের আড়ালে কী? ... ...