কাগজে কলমে রোমানিয়ার ইউক্রেন সীমান্ত প্রায় ছশো কিলোমিটার লম্বা কিন্তু তার মাত্র অর্ধেকটা স্থলপথ। বাকিটা জলপথ- পার হতে হয় দানিউব নদী অথবা কৃষ্ণ সাগরের ব দ্বীপ দিয়ে। ক্যালে থেকে প্রধান রোমানিয়ান চেক পয়েন্ট সিরেত প্রায় বাইশ শো কিলোমিটার, আবশ্যিক বিরতি সহ চব্বিশ ঘণ্টার ড্রাইভ। সেখান থেকে ইউক্রেনের ট্রেন বা রাস্তার যোগাযোগ তেমন ভালো নয়। আরেকটা সমস্যা রোমানিয়ার নিজের আভ্যন্তরীণ পরিবহন কাঠামো। দু দশক আগে হাঙ্গেরিতে বাণিজ্যের সূত্রে গিয়ে দেখেছি ভিয়েনা থেকে বুদাপেস্ত (এম ওয়ান) এবং বুদাপেস্ত থেকে রোমানিয়ান বর্ডার যাওয়ার চমৎকার অটোবান (এম সেভেন) তৈরি হয়ে গেছে। ... ...
যত গভীরে ঢুকব দেখব তত মজার ব্যাপার – যেহেতু শুরু করেছিলাম যদুবাবুর চ্যালেঞ্জার দুর্ঘটনা নিয়ে লেখাটি উল্লেখ করে, তাই আজকের পর্ব শেষ করি যদু বাবুর লেখা দিয়েই। ওই পর্ব একজায়গায় উনি লিখেছেন, “উৎক্ষেপণের ঠিক ৭৩ সেকেন্ডের মাথায় চ্যালেঞ্জার ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বিস্ফোরণে – সাতজন নভচরের সকলেই প্রাণ হারান মুহূর্তেই”। এই যে “মুহুর্তে প্রাণ হারানো ব্যাপারটা”, এটা চ্যালেঞ্জার দুর্ঘটনা নিয়ে অনেকে লেখাতেই দেখা যায় – আদপে এটা একটা মিথ। এমনকি যেটাকে ‘বিষ্ফোরণ’ বলে জেনারেলাইজ করা হয় সেটা ‘ক্রু কম্পার্টমেন্টের’ জন্য প্রযোজ্য নয় – স্পেস শাটলটা ভেঙে টুকরো হয়ে গিয়েছিল, বিস্ফোরণে ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে যায় নি। মহাসমুদ্রে আছড়ে পড়ার মুহুর্তেও ক্রু কম্পার্টমেন্টটি ছিল অক্ষত, এবং তার ভিতরে ক্রু এবং প্যাসেঞ্জারের অনেকেই বেঁচে ছিলেন তখনো! এই “মুহুর্তে প্রাণ হারানো” আর “মহাসমুদ্রের বুকে আছড়ে পড়ার পর মৃত্যু” এই দুই পৃথক তথ্য কি রুট কজ অন্যালিসিস-কে প্রভাবিত করতে পারে? পারে, প্রবল ভাবেই পারে। ... ...
আমাদের গ্রামে যে সব ইউক্রেনিয়ান পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হবে তাঁদের আজ এক লম্বা প্রশ্নোত্তরের ফর্ম ভর্তি করতে হচ্ছে – এই সব শিশু এবং তাঁদের মাতারা যে সন্ত্রাসবাদী বা অলিগারকের সন্ততি নন সেটি প্রথমে প্রমাণ করতে হবে। এই পদ্ধতির কেতাবি নাম ভেটিং। বিশ বছর আগে চেলসি ক্লাব এবং লন্ডন শহরে একাধিক অট্টালিকা কেনার সময়ে রোমান আব্রামোভিচকে ব্রিটেন কোন প্রশ্ন করে নি। আজ অন্তত মুখরক্ষার্থে ব্রিটিশ সরকার এইসব অপ্রিয় প্রশ্ন করছেন। মিখাইল ফ্রিডমান গত সপ্তাহে লন্ডনে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। তিনি নাকি সেই ডাক্তারের ২০০ পাউনডের ফি দিতে পারেন নি – সব টাকা আটকে আছে। ... ...
১৯৪৫ সালে রাষ্ট্রসঙ্ঘ চার্টারের অন্যতম ফাউনডার মেম্বার ইউক্রেন।সমীর সার আরও বলেছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নে যোগ দেবার সময়ে ইউক্রেনকে স্বতন্ত্র হয়ে যাবার (রাইট টু সিসিড) অধিকার দেওয়া হয়, সংবিধানের ৬৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী। মহান অক্টোবর বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়নে যোগ দেয় নি। দেশের মধ্যে বিবদমান নানা দলের লড়াই চলছে সেই সুযোগে সোভিয়েত ইউনিয়ন বন্ধুর হাত বাড়িয়ে বলল – আহা, আপোষে ঝগড়া ঝাঁটি করো না। এসো আমার ঘরে এসো। আমি তোমার বড়ো ভাই। গলে মিলো। সেটা ১৯২২। সেই আলিঙ্গন থেকে মুক্তি চাইছে ইউক্রেন। ... ...
পাশের গ্রাম বিসলি থেকে সাইমন এলেন কাল সন্ধ্যেয়। মা ইউক্রেনিয়ান, তাঁর বাবা জন্মেছেন মুসুরিতে, ইংরেজ , কলকাতার ডন বসকো স্কুলে পড়েছেন! সাইমনড় স্ত্রী ইরিনা ইউক্রেনিয়ান দিদিমা নাৎসিদের অগ্নি চুল্লী থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে ইংল্যান্ডে আসেন। সাইমন একদা বার্লিনে কাজ করেছেন ভালো জার্মান বলেন। আমাদের সংগ্রহশালা থেকে টিনের খাবার, জামা কাপড় নিয়ে গেলেন। জানা গেলো এতো সামগ্রী জড়ো হচ্ছে যে এবার যাত্রা হবে ট্রাকে। সারি সারি ট্রাক চলেছে পোল্যান্ডের দিকে। ওষুধ পত্র পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে ছোট প্লেনে। বালিগঞ্জের বিভিন্ন ফারমাসি থেকে আমার যোগাড় করা দুশো আমক্সিসিলিন উঠবে সেই প্লেনে। ঘড়ির কাঁটার মতো চলছে কাজ। ... ...
দৈনিক ভাস্কর সংবাদপত্র গোষ্ঠীর একটি সিদ্ধান্ত বর্ণ অর্থাৎ পাত্রীর গায়ের রং উল্লেখ থাকলে পাত্র চাই-পাত্রী চাই কলামে সেই বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে না।এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বহু মানুষ।কারণ আমাদের মতো দেশে ফর্সা পাত্রী খোঁজার প্রথা, অপরাধেরই সমগোত্র।তবে শুধুমাত্র দৈনিক ভাস্কর কেন,একই পদক্ষেপ কেন নেবে না দেশের অন্য সংবাদপত্রও।কেন বন্ধ হবে না এমন বিজ্ঞাপন? ... ...
নিছক আবেগ না। তখন প্রশ্নটা ছিল পেটে লাথি খাওয়ার। জীবন জীবিকার প্রশ্ন। রাষ্ট্র ভাষা উর্দু হলে কি হবে তা দেশ ভাগের অল্প দিনেই বুঝে গিয়েছিল বাঙালী। তাই আবেগের প্রশ্ন ছিল না, ছিল জীবনের প্রশ্ন। তৎকালীন বিচার বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সবাই বুঝে গিয়েছিল উর্দু রাষ্ট্র ভাষা হলে এই জীবনে আর পাকিস্তানের সাথে পেরে উঠা যাবে না। দেশ ভাগের পরেই যখন মানি অর্ডার ফরম, ডাক স্ট্যাম্প, চিঠির খাম সব উর্দু ভাষায় এসে হাজির হল তখনই বুঝা হয়ে গিয়েছিল উর্দু রাষ্ট্র ভাষা হলে আসলে কত বড় সর্বনাশ হবে। তাই ভাষা আন্দোলন ছাত্রদের আন্দোলন ছিল না। ছিল জনগণের আন্দোলন, যার নেতৃত্ব দিয়েছিল ছাত্ররা। তাই শহিদের তালিকায় এক বরকত ছাড়া আর কাওকে ছাত্র খুঁজে পাই না, সবাই কর্মজীবী, খেটে খাওয়া মানুষ। ... ...
বইয়ের রিভিউ ফেসবুকে কীভাবে লিখবেন (অথবা লিখবেন না)। ... ...
কিন্তু আসল সত্য হচ্ছে উপরে যে ভিডিওর কথা বললাম তা। আপনারা বাংলা সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন ইংরেজিতে! বাংলা আসলে কোথায় মারা যাচ্ছে তা বুঝতে রকেট সাইন্স জানতে হবে না, মাথাটা একটু নরম হলেই খুব বুঝতে পারতেন। ওই ভিডিওটা দেখার পরে আমি কল্পনা করার চেষ্টা করলাম যে ঢাকায় একুশে বই মেলা প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা হচ্ছে, বিষয় বাংলা সাহিত্য আর কোন এক বাঙালী বক্তা ইংরেজিতে কুস্তাকুস্তি করছেন! কল্পনা করে আমি শিউরে উঠেছি, বেশিদূর যেতে পারি নাই কল্পনাকে টেনে নিয়ে। ... ...
আর সে কারণেই এই পরিবারটি থাকেন ছায়াবৎ। কলকাতার হু'জ হুদের দরবারে তাঁদের তেমন ছায়া পড়ে না। হুগলি জেলার ইতিহাসেও ঠাঁই মেলে না এই প্রবাসী পরিবারের। উত্তরাখন্ডের কলোনিয়ান মেমরিতে এক সামান্য স্কুল মাস্টারের বা তাদের মেয়ের কথা ধরা পড়ার কোন কারণ নেই। আবার উত্তরাখন্ডের ক্রিশ্চিয়ান ইতিহাস যখন লেখা হয় তখনও সেখানে স্থানীয়দের ঠেলায় মিশনের কর্মী বাঙ্গালী পরিবারটি জায়গা পান না। সময়ের ঘুর্ণিতে হারিয়ে যাওয়াই তাঁদের ভবিতব্য। ... ...
দেখে মনে হবে আগুন লেগেছে, বা, তরল লাভা প্রবাহ। ... ...
কন্যা দিবস ... ...
অতিমারিতে অনলাইন পরীক্ষা পদ্ধতির অন্যায্যতা নিয়ে অনেকেই সামাজিক ও সংবাদমাধ্যমে সরব হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতায় দেখলাম এই "অ-ন্যায়" এক অন্য ধরণের ন্যায়ের জন্ম দিয়েছে। এই প্রবন্ধ সেই আলোচনা উস্কে দেওয়ার একটি প্রয়াস। ... ...
ভারতবর্ষ পৃথিবীর নবীনতমদের দেশ। এদেশে নবীন প্রজন্মের মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি। আবার ভারতবর্ষ পৃথিবীর অন্যতম আর্থিক বৈষম্যের দেশ। হিসেবমত তার বিরুদ্ধে নবীন প্রজন্মের কাছ থেকে যে প্রতিবাদ আসার কথা তা সেভাবে চোখে পড়ে না। অথচ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যতটুকু সদর্থক পরিবর্তন চোখে পড়ছে সেখানে নবীন প্রজন্মের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। সেখানে ভারতবর্ষ ব্যতিক্রম কেন? এ ব্যাপারে বামপন্থী দলগুলির দায়িত্ব কতটা? ... ...
.সন্দেহবাতিক ........... ক্ষমতায় এসেই দেশের সব নাগরিককে ‘চোর’ ঠাওরানো আসলে একটা ‘মহান’ দ্বিচারিতা------- চৌকিদারকে চোর ধরে দেখাতে হয়, চোর চোর বলে চিৎকার করলে হয় না। সমস্যার কথা, এ ক্ষেত্রে চিৎকার শুধু নয়, গোটা দেশের নাগরিকের জীবনযন্ত্রণা বাড়িয়ে দেওয়ায় আগুয়ান ভূমিকা নিয়ে খলনায়কের ভূমিকায় প্রযুক্তি। প্রযুক্তি তো আর নিজে নিজে হাঁটতে পারে না, তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় নিজেদের মতাদর্শ মতো- ‘নাচে কারা? তারা তারা !’ ... ...
যুগে যুগে দুর্বৃত্তের সূর্যের মত প্রখর তেজে পিঠ রেখে সত্য কায়ার ছায়ার খেলা দেখিয়ে দুরাচারী দামালকে শাসন করতে পারে, মানুষের সঙ্গে মানুষের দূরত্ব কমাতে পারে এমন এক মায়ের সন্ধানে আমরা নই কি! অন্বেষণ থেকেই হয়ত হবে আবিষ্কার! সেদিন দামাল ছেলে শাসন করতে গিয়েই হয়ত আবিষ্কৃত হবে শাসনের আর এক নতুন কোন পন্থার! ... ...
সলিল চৌধুরীর গানের যন্ত্রানুষঙ্গের বিবর্তন ... ...
রবি ঠাকুরের গান বাণীপ্রধান - এরকম একটা ধারণা চালু আছে। কিন্তু গানের প্রাণ হলো সুর। রবিগানেরও। তাঁর অলৌকিক বাকবিভূতি বাণীকে সুরের দোসর করেছে। এই লেখায় কিছু রবীন্দ্রসংগীত - যা ভারতীয় রাগসঙ্গীত আশ্রিত- আর লিখিয়ের ব্যক্তিগত সংলাপ। ... ...
তথাকথিত শিশু-কিশোর সাহিত্য, যদি সত্যিকারের সাহিত্য হয়, তবে তার একটা স্তর থাকবেই, যেটা বড়োদের জন্য। ছোটোদের জন্য লেখা কিছু গল্প আর একটা উপন্যাসের সাহায্যে সেই hidden adult theme খোঁজার চেষ্টা করেছে এই রচনা। ... ...