ইউক্রেন যুদ্ধের পরে কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলি অবরোধ করে মহামতি পুতিন কেবল ইউরোপ নয়, গোটা আফ্রিকায় ফসল পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ওডেসা বন্ধ হলেও ট্রেন বা ট্রাক যোগে ইউক্রেন তার খানিকটা শস্য ইউরোপে পাঠাতে পারে। আমার শ্বশুরবাড়ির দেশ সেই পথেই গম কিনছে। কিন্তু মিশর নাইজেরিয়া লিবিয়া আলজেরিয়া কেনিয়া সহ আফ্রিকার আরও অনেক দেশ গভীর খাদ্য সঙ্কটে নিমজ্জিত হতে চলেছিল। গতকাল ইস্তানবুলে তুর্কী রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান এবং রাষ্ট্রসংঘের প্রধান গুতিয়েরেথের উপস্থিতিতে দুই যুযুধান পক্ষের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হল : কৃষ্ণ সাগরের বন্দর থেকে রাশিয়া তার অবরোধ তুলে নেবে আফ্রিকার খাদ্য সঙ্কট এড়ানো গেলো , আপাতত। ... ...
কেন্দ্রীয় সরকারের ধারাবাহিক কণ্ঠরোধের নানান আগ্রাসী প্রয়াস ... ...
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় যেমন জনাদৃত, সংস্কৃতির উচ্চকোটিতে তেমনই ছিছিকৃত। হেমন্তর গান বাঙালির সংস্কৃতির পরিপন্থী, হেমন্তর ক্লাসিকাল বেস নেই, হেমন্তর রবীন্দ্রসঙ্গীত রাবীন্দ্রিক নয়, হেমন্ত রবীন্দ্রসঙ্গীতে স্বরলিপিতে থাকেন না, হেমন্ত সুরে গভীরতা নেই - নেই আর নয়। এই ধারাবাহিকে এই 'নেই আর নয়' পেরিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি হেমন্ত কেন জনাদৃত, এই 'নেই আর নয়'-গুলো কতটা সুপ্রযুক্ত। ... ...
ইউরোপের বাগী দেশগুলোকে টাইট দেবার বাসনায় পুতিন খুড়ো গ্যাসের কল খোলা বন্ধ করার খেলাটা খেলে যাচ্ছেন মাস চারেক ধরে। এবার পুরো দশ দিনের জন্য নরডস্ট্রিম পাইপলাইনে কুলুপ লাগালেন - মেরামতির কাজ চলবে বলে । ইতিমধ্যে বুলগারিয়া পোল্যান্ড সহ তিন বালটিক দেশ বলেছে চাই নে তোমার গ্যাস। জ্যাঠার দোকানে যাবো। কিন্তু কিছু দেশ হামলে পড়ে আছে। তাদের গাড়ি সারানো থেকে বানানো জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সব কাজে খুড়োর গ্যাস লাগে , নইলে দ্যাশ প্রায় অচল । ইউক্রেনে খুড়ো বিশেষ সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে গ্যাস কিনব না ? এই সব অর্থনীতির আকার এতো বড়ো যে তারা হাঁচলে বাকি ইউরোপের সর্দি লাগার আশঙ্কা । অন্যদিকে গণতন্ত্র , ইউরোপিয়ান ভ্রাতৃত্ব বোধ ইত্যাদি যুক্তির ঠেলায় কতটা কম রাশিয়ান গ্যাসে জীবন যাত্রা নির্বাহ করা যায় তার কসরত শুরু হয়েছে জার্মানিতে। ভু রাজনীতিক ভাবনা বিজ্ঞ জন ভাববেন – আপাতত আম জনতা কি করতে পারে? ... ...
আত্মঘাত নিয়ে অন্যরকম ভাবনা চিন্তা ... ...
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে চার্চিল ও রুজেভেলটের আশিস মাথায় নিয়ে মহামতি স্টালিন যখন নিজের ইচ্ছেমত ইউরোপিয়ান মানচিত্রে রক্ত বর্ণ সংযোগ করছিলেন তাঁর চোখ পড়ল এই ছোটো দেশটির ওপরে । ওয়াইন ছাড়া তার আর কোন ধন সম্পদ নেই । দুর্জনে বলে তিনি রোমানিয়াকে সোভিয়েত সাম্রাজ্যের অন্তর্গত করতে চেয়েছিলেন । শেষ অবধি মস্কো থেকে কল কাঠি নেড়ে রোমানিয়াকে কুক্ষিগত করেই খুশি রইলেন । বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় এই প্রবাদ বাক্যটির সত্যতা প্রমাণ করার জন্যেই হয়তো আরেক জুতো সেলাইয়ের মিস্ত্রি রোমানিয়াতে আবির্ভূত হলেন সে দেশকে সঠিক পথে চালনা করতে । জর্জিয়ান চর্ম শিল্পীর পুত্রের আত্মা চাউচেসকুকে দেখে নিশ্চয় সন্তুষ্ট হয়েছিলেন। ... ...
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সব কিছুরই টানাটানি । রুটি , কয়লা র্যাশনে পাওয়া যেতো , চকোলেটের র্যাশন ছিল ১৯৫৮ অবধি। বাড়ির বাথরুম অজানা বস্তু। মাঝে মধ্যে সার্বজনীন স্নানঘরে পয়সা দিয়ে গা ধোয়ার ব্যবস্থা। সেন্ট্রাল হিটিং অনেক দূরে তখন। যুদ্ধে ভাঙ্গা বহু বাড়ির মেরামত হয় নি। যুদ্ধ থেকে যারা ফেরেন নি ব্রিটিশ সরকার তাঁদের পরিবারকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছেন । লন্ডন অনেক দূরের শহর । জর্জ এবং জেনি অ্যাডামস নিঃশব্দে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের দিকে । না, কোন ইউনিসেফ বা অক্সফ্যামে টাকা পাঠিয়ে বিবেক পরিষ্কার করেন নি । নিজের হাতে টাকা বা সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন । ১৯৯৯ সালের ২৭শে আগস্ট বিবাহের সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে শেষ বারের মতো জর্জ অ্যাডামস জেনিকে নিয়ে গিরজে থেকে রাসটন লজ অবধি তাঁর প্রিয় সিলভার শ্যাডো রোলস রয়েস চালান । পরের দিন সেটি নিলামে তোলা হয় – সে যাবত প্রাপ্ত সমস্ত টাকা দান করেন। ... ...
একটি এমটিপি করতে আসা মেয়েকে নার্স বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রশ্ন করায় এক বেসরকারি হাসপাতালের (পশ্চিমবঙ্গের বাইরের) ডাক্তার নার্সকে ডেকে কাউন্সেল করেছিলেন, বলেছিলেন এই সব কথা তো তোমার জানার দরকার নেই। ও একটা সার্ভিস নিতে এসেছে আমাদের কাছে, আমরা দেব এইটাই ওর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক, বাকিটা ওকে বুঝে নিতে দাও। এই ডাক্তার মহিলাকে অসীম শ্রদ্ধা জানাই। এর পাশে রাখি সেই সব কলকাত্তাই ডাক্তারদের যারা শুধু সিঁদূর দেখতে না পাওয়ার জন্য একটি মেয়েকে কুমারী ধরে নিয়ে মোরাল পিসিমা হয়ে এমটিপি করা নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতে চেষ্টা করেছিলেন। ... ...
সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আফ্রিকা মহাদেশের সম্বন্ধ দীর্ঘদিনের কিন্তু গত প্রায় তিরিশ বছরে রাশিয়ার সঙ্গে পরিচয় তেমন হয়তো হয় নি। বর্তমান রাশিয়ান সরকার আফ্রিকার সকল দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ও রাশিয়া ও আফ্রিকার পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধির মানসে আফ্রেক্সিমব্যাঙ্কের সঙ্গে গাঁট ছড়া বাঁধতে মনস্থ করেছেন এ ব্যাঙ্ক কোন এক দেশের নয়, সারা আফ্রিকা এর মালিক । তাই এই ব্যাঙ্কের সঙ্গে কাজ করে তাঁরা সারা আফ্রিকার কাছে পৌঁছুতে চান। রাশিয়া সরবরাহ করে এক বিশাল পরিমাণ খাদ্য শস্য আফ্রিকার প্রয়াস হোক তাদের রপ্তানি বাড়ানোর । অন্য দেশের মতন ( তির্যক মন্তব্য চিনের প্রতি !) রাশিয়া টাকার থলি নিয়ে আফ্রিকা এসে সম্পত্তি ও প্রভাব কিনতে আগ্রহী নয় । ... ...
গত ১৯ জুন,২০২২ তারিখে দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় পৃথিবীর দুই দেশে—প্রথমটি লাতিন আমেরিকা মহাদেশের কলম্বিয়ায়, দ্বিতীয়টি ইওরোপ মহাদেশের ফ্রান্সে। দুটি নির্বাচনের ফলাফলই শ্রমজীবী মানুষের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । ... ...
ইউক্রেনিয়ান হাব নামক একটি শরণার্থী সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে নিকটবর্তী উওকিং শহরে । প্রতি সোম ও বুধবার সারেতে সদ্য আগত ইউক্রেনিয়ানরা সমবেত হন । তৈল তণ্ডুল লবণের প্রবন্ধ , স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা, ডাক্তারের খোঁজ, জাতীয় স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পে যোগদানের পন্থা, ইংরেজি আচার আচরণের ব্যাখ্যা সবই তাঁদের দেওয়া হয়। তার সঙ্গে চলে এক ঘণ্টার ইংরেজি শিক্ষার ক্লাস , বিশেষ করে মায়েদের জন্যে । দেখা যাচ্ছে অল্প বয়েসি ছেলে মেয়েদের ইংরেজির মান চলনসই , তাদের নতুন স্কুলে মানিয়ে নেওয়া খুব শক্ত হবে না। তবে হয়তো এক দু ক্লাস নিচে ভর্তি হতে হবে । এটাও জানানো হয় সব ছেলে মেয়ে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে পদব্রজে পাড়ার স্কুলে যেতে পারবে এ আশা অবান্তর । স্কুলটা অন্য পাড়ায় জুটতে পারে। একটা সুবিধে এই যে সামনে গরমের ছুটি পড়ছে । বিদ্যাশিক্ষার ব্যাপারটা মুলতুবি রেখে ইউক্রেন ফুটবল টিমের অগ্রগতির তত্ব তাবাশ করাই শ্রেয় । হিথ হুকে এদেশের দীর্ঘদিনের অধিবাসী সাইমন এবং ইরিনার বাড়িতে এক সন্ধ্যায় ডজন দেড়েক ছেলে মেয়ে কাতারের বিশ্বকাপে যোগদানের যোগ্যতা অর্জনের পালায় ইউক্রেন বনাম স্কটল্যান্ডের খেলা দেখতে একত্র হয় । ইউক্রেন ১-০ গোলে জেতার পরে এক সমবেত উচ্ছ্বাস, আনন্দ অন্তত কিছুক্ষণের জন্য খারকিভ মারিউপোল খারসন লভিভের ধ্বংসস্তূপ , ঘরছাড়া হবার যন্ত্রণাকে ভুলিয়ে দিলো। ... ...
রাশিয়ান অর্থোডক্স গিরজের প্রধান মহান কিরিল এককালে কে জি বির পদাধিকারী ছিলেন তামাক ও অ্যালকোহলের ব্যবসা করে তিনি এখন বিলিওনেয়ার এবং পুতিনের সমর্থক। দু দিন আগে কিরিল এক বিবৃতিতে বলেছেন রাশিয়া এক বিশাল দেশ, শক্তিশালী দেশ । কিন্তু রাশিয়া কখনো কোন দেশ অধিগ্রহণ করে নি । পিটার দি গ্রেটের নবীন অবতার পুতিন আজ রাশিয়ার আপন ভাগ বুঝে নেবার সঙ্কল্পে ব্রতি । ন্যাটোর সদস্যপদ গ্রহণ করে কোন দেশ যদি তাঁর এই শুভ বাসনায় বাদ সাধে তাহলে মহামতি পুতিন নিতান্ত অপ্রসন্ন হবেন, গোলা গুলি ছুঁড়তেও পিছ পা হবেন না । এই সার সত্য আপামর জনগণকে তিনি জানিয়েছেন। ... ...
আনা আমাকে বলছিলেন ,’ মিশা আর আমি প্রতিরাতে শুনেছি উড়ো জাহাজের শব্দ । আমি কখনো ভাবিনি বাজ পড়ার আওয়াজে ভয় পাবো । আকাশে বিদ্যুতের ঝলকানি আর বজ্রপাত দেখতে শুনতে ভালো লাগত। বনিস্লাভের হবি ছিল আকাশে চমকানো বিদ্যুতের ছবি তোলা । এখন সব শব্দেই ভয় পাই । যে কোন আওয়াজে মিশা আতঙ্কে আমায় জড়িয়ে ধরে ‘ । ... ...
পরশু, প্রায় কেউ জানতেন না, অবরোধ কেন, কী নিয়ে, কারা করছে। পরশু রাত থেকে প্রায় গোটা দেশ জানে এগুলো। কেন জানে, বলুন তো? কারণ সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়েছে। তারা টের পেয়েছে যে এ বড় সুখের সময় নয়। আচ্ছে দিন আসলে গল্প। ... ...