তার পক্ষ হইতে এক লোক আইসা খাবার দিয়া যাইত ও সন্ধ্যার দিকে আইসা বাক্সগুলি নিয়া যাইত। সেই লোকও অদ্ভুত, চোখে সব সময় কালা চশমা পইরা থাকত, আর কথা বলার সময় এর গলা থেকে চি চি শব্দ বের হইত। অনেকটা পাখির মত। ... ...
জানিস পেখম রাস্তা,বিদ্যুৎ, জল,যাতায়াত ব্যবস্থা সবকিছুই আগের চেয়ে অনেক ভাল হয়েছে কিন্তু আমরা এক গভীর অসুখে ভুগছি রে, কবে যে নোংরা রাজনীতির ভাইরাস আমাদের প্রত্যেকের মনকে সংক্রমণ করেছে। এ রোগও মরশুমে প্রকট হয়। মরশুম বলতে ভোটের সময়। ফুটবল মাঠের মত ভোটের মাঠেও নিজের দলের খেলোয়াড় ছাড়া সবাই প্রতিদ্বন্দ্বী।আর কোন পরিচয় থাকেনা। সারা বছর ভুলাভালা সাদাসিদা ছেলেটাও তখন রয়েল বেঙ্গল টাইগার । হাসিখুশি মিশুকে বৌদিটাও তখন গুপ্তচর। যত পৌরুষ,যত বীরত্ব, যত বুদ্ধিমত্তা আশ্বিনমাসে ধানের শিষের মত ফুলে বেরোয়। ... ...
সামাজিক ওলোট-পালোট ... ...
দ্বিতীয় গল্প। প্রথমটা ছিল নুরুন্নাহার বানুর ঘটনাটি। এখন তার বান্ধবী জোলেখা বানুর ঘটনা। ... ...
আজ ই-ম্যাগ দাপিয়ে বেড়ানো সুপ্রিয় পাখি সেন -এর ইন্টারভিউ নিতে হবে তাই রোব্বার হলেও চটপট উঠে গেল জয়ন্ত। গত ক বছরে যার চেহারা কেউ দেখেনি, সে কেমনটি হতে পারে ভেবে জল্পনা চলত প্রচুর। উনি ফর্সা না কালো, লম্বা না বেঁটে আর বয়সটা! বেট লাগালেও শিওর হওয়া হত না। উনি তো একেবারে হাওয়া, কোনও ফটো-টটোও নেই। তাই ছেলেরা আন্তাবরি বকত ... ...
দুপুর থেকেই শরীরে একটা অস্বস্তি ছিল কুমার বাবুর। একবার ভাবলেন আজ আর হাঁটতে যাবেন না। কিন্তু যতই সময় এগিয়ে আসতে থাকলো মনের ভেতরটা কেমন যেন আনচান করে উঠল। আসলে চা খাওয়া, খবর শোনার মত এটাও একটা নেশাতে দাঁড়িয়েছে আজকাল। না হাঁটলেই কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। খাবার যেন হজম হতে চায় না। ঘুমের সমস্যা হয়। তবে তার কতটা সত্যিই শারীরিক আর কতটা মানসিক তা নিয়ে অবশ্য নিজেরও একটু ধন্দ আছে ওনার।পার্কে পৌঁছেই মনটা ভালো হয়ে যায়। কাল সন্ধেবেলা খবরটা শোনার পর থেকে এমনিতেই খুব ডিস্টার্বড হয়ে আছেন। নিউজ দেখছিলেন, তখনই ভেসে ওঠে খবরটা। ভোটযুদ্ধের রাজনৈতিক ঝগড়ায় কারা যেন বিদ্যাসাগরের মুর্তি ভেঙ্গে ফেলেছে। প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল নিশ্চয় কোথাও কোন ভুল হচ্ছে। তারপর যখন বুঝলেন ঘটনাটা নিদারুণ ভাবে সত্যি, মনটা একদম খারাপ হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত এরা বিদ্যাসাগরকেও ছাড়ল না। ... ...
“চিঠি” - সাদা পাতায় লেখা এক মনকেমনের কাহিনী, “চিঠি” - সেই দূরবর্তী মানুষটিকে জানান দেওয়া, যে “ভালো আছি” ও জানতে চাওয়াও তাঁর ভালো থাকার কথা। যারা নিয়মিত চিঠি লিখতে ও পড়তে ভালোবাসেন তাদের সাথে এই “পত্র দিও” ওতোপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। একখানি চিঠি যে কি পরিমান ভালো থাকা দিতে পারে তা যারা পেয়েছেন একমাত্র তাঁরাই বুঝবেন। এমন অনেক সময় হয়, মানুষটি যখন কাছাকাছি, তখন সব কথা বলা হয়ে ওঠে না। কিন্তু দূরত্ত্ব বাড়ার সাথে সাথে সেই কথাই একটি চিঠির আকার নেয়...আর কি থাকে না সেই চিঠিতে!...প্রাত্যহিক জীবনের গল্প থেকে শুরু করে সমস্তটা উঠে আসে তাতে, আর যিনি পান সেই সময় তাঁর উপলব্ধিটাও অসামান্য। চিঠির মধ্যে ঐ মানুষটার প্রতিচ্ছ্ববি অজান্তে তৈরী হয়ে যায় আমাদের মনের ভেতরে...চিঠিকে তখন আরো বেশি আপণ মনে হয়। তাই হয়তো প্রিয় মানুষটির একটি চিঠির জন্য আমাদের এত অপেক্ষা, আর তেমনই তা না পেলে মনখারাপ-মনখারাপ। ... ...
গল্পে যেমন ... ...
একটা অদ্ভুত মাথা ধরা নিয়ে ঘুম ভাঙ্গল গোপাল বাবুর। মাঝে মাঝে এমনটা হয়। আগে কম হত। আজকাল একটু বেশিই যেন হচ্ছে। ভাবেন এর পর শহরে ছেলের কাছে গেলে একটা ভাল ডাক্তার দেখাতে হবে। এখানে, মানে এই মফস্বল শহর শালদুয়ারির পাঁচ কিলোমিটার দূরের গ্রামে তার উপায় নেই। তবে দিন বাড়লে এটা নিজেই কমে যাবে জানেন উনি। তাছাড়া শরীরকে বেশী পাত্তাও দিতে চান না। গোপালবাবুর বাবা বলতেন “শরীরের নাম মহাশয়, যা সওয়াবে তাই সয়”, তাই উনি আজ অবধি সেটাই মেনে চলেন। ... ...
কিছু শোনা, কিছু কল্পনা ... ...
আগে মানে এই সত্তর আশির দশকে এরকম বেশ কিছু জ্যেঠু বা পিসীদের আমরা অনেকেই চিনতাম। এঁদের কেউ বলত ছিটেল, কেউ বলত বাতিকগ্রস্ত, কেউ কেউ বিরক্ত হত, বেশিরভাগই এঁদের নিয়ে হাসাহাসি করত। তবে কোথাও একটা প্রশ্রয়ও ছিল সমাজে এঁদের প্রতি। এঁরা এঁদের বিশ্বাসমত সকলের যাতে ভাল হয় সেরকম চেষ্টা করতেন, ব্যক্তিগত অধিকার অনধিকারের তোয়াক্কা খুব একটা করতেন না। সেটা যে সবসময় ভাল হত তাও না, তবু এঁদের আন্তরিকতায় খাদ ছিল না। আরোপিত স্বাতন্ত্র্যে ঘরবন্দী থাকার সময় এঁদের কথা হঠাৎই বড্ড মনে পড়ছে। ... ...
বালাসাহেব মারা যাবার বছরখানেক পরে বোম্বে এসেছি। সন্ধ্যের ঝোঁকে রাস্তার আলোগুলো জ্বলে উঠেছে; আলো ফেটে রঙ নাবছে, রঙ থেকে ঝিনচ্যাক রঙ। ... ...
নীলাভ আলোর ঝলকে প্রস্তরীভূত শরীরের ভেতর আদিম অন্ধকারের স্বাদ থেকে জেগে উঠে দেখলাম কোনো ব্যথা নেই, কোনো স্মৃতি পর্যন্ত নেই যে কবে শরীরের অনুভূতিসম্পন্ন স্নায়ুকোষগুলি একে একে নষ্ট হয়ে ঝরে গেছে। মৃত্যুর পরে সময়ের কোনো চেতনা অনুভব করিনি আর। তাই জানিনা কতদিন শুয়ে আছি এই গ্রহের মাটিতে প্রায় জীবাশ্ম হয়ে, পাথরের দৃঢ় শরীরে গেঁথে আছে আমার কঙ্কাল, তবু জেগে ওঠবার প্রেরণা সংগ্রহ করে নিতে হলো নীল আলোর বৃত্তটায় করোটির কোটরদুটো ধাঁধিয়ে যাবার ফলে। ... ...
ছোটগল্প ... ...
অপেক্ষার পল অনুপল বিপল এখন পরিতোষের আঙুলে— মেগাবাইট গিগাবাইটে ভরে উঠতে লাগল ওর মোবাইল— তারপর উপচে উপচে ক্লাউডে— মুহূর্তর পরে মুহূর্ত সাজিয়ে এইভাবে সে যেন পৌঁছে যাবে গন্তব্যে, তারপর ক্যামেরার ফ্রেমে দেখতে পাবে তাকে— –কেমন আছ পরিতোষ? –আসুন কালিদা, চা খান। ... ...
গ্রাম হেকে শহরে যারা আসেন, তারা যেই আকাঙ্খা নিয়ে আসেন আর যেমন করে সেই আকাঙ্খা আঁকড়ে থাকেন, অনেক ক্ষেত্রে একটা ব্যবধান থেকে যায়; স্বপ্ন আর বাস্তব, আশা আর প্রাপ্তির ... ...
খালিশপুরে হাউজিং বাজারের বিহারী পট্টির এক চিমসার মধ্যে সে সাইন্দা থাকে! চায়ের কাঁপে চুমুক দেয় আর চিনচিন করে বিড়িতে টান মারে! ফলে আমরা রত্ন আবিষ্কারের মতন ঝকমকি উল্লাসে উজ্জ্বল হয়ে যাই তারে নজরে পেয়ে! আমরা নাড়াই তারে! আমরা জিজ্ঞাস করি, কাকা দেশের অবস্থা দেখছেন? করোনার মধ্যে সারা দেশে কি টাল্টুবাল্টু কারবার? ... ...
সত্য ঘটনা অবলম্বনে ... ...
ছোট গপ্পো । মাইথনকে, ছোট শহর বললে, তার নিরিবিলি পরিবেশটাকে, উপেক্ষা করা হয়। তবে, মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তার নিয়মিত আসেন, বাজারে সব সরঞ্জাম সহজলভ্য, নাগরিক নিরাপত্তার প্রতি স্থানিয় প্রশাসন সজাগ - শহুরে সাচ্ছন্দ্য যথেষ্ট। ... ...
আমার ছেলেবেলায় স্কুল-বাস ধরতে যাবার পথে একটি কাঠের-পুলের পাশে একটি পাগল বসে থাকতো।।।একবার দেখলাম পাগলটি চলে গেছে ।।কিছুদিন পর দেখলাম আবার সেই রিকশা স্ট্যান্ডের পাশেই একটি পাগলী এসে বসেছে।।।বাকিটা কল্পনা , গল্পের খাতিরে ... ...