স্বয়ং ধর্ম এবং ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরের আলোচনায় ধর্ম বলতে প্রচুর ঘৃতাহুতি ও বেদোচ্চারণ করে বিশাল যজ্ঞের অনুষ্ঠান এবং তারপর বিপুল দান-টান করে স্বর্গবাস সুনিশ্চিত করার প্রকরণ বলে মনে হল না। যজ্ঞ-টজ্ঞ নিয়ে দু চার কথা রয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেটা গৌণ, মুখ্যতঃ ধর্ম বলতে যা বুঝলাম, সংসার, সমাজ, প্রতিবেশী, গুরুজন, স্বজন-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সকলের সঙ্গে সদাচরণ, সকলের সঙ্গে মিলেমিশে সদ্ভাব বজায় রেখে চলা। একথা ভগবান বুদ্ধ, সম্রাট অশোকও বলেছিলেন, তাঁদের আমরা “বুদ্ধু” বলেছি, বলেছি “নির্বোধ”। কারণ এই ধর্ম আচরণে সমাজের পুরোহিত বা ব্রাহ্মণ শ্রেণীর স্বার্থ সিদ্ধি হয় না। তাঁদের স্বার্থসিদ্ধির প্ররোচনায়, আমরাই “বুদ্ধু” এবং “নির্বোধ”-এর মত, ধর্ম নিয়ে প্রতিবেশী, সমাজ, বন্ধুজনের প্রতি আনৃশংস্যতার পরিবর্তে নৃশংস হয়ে উঠেছি বহুকাল। ধর্মের নামে আমরা কবেই খুইয়ে বসেছি আমাদের মানবধর্ম। ... ...
আমার এ রচনা বিভিন্ন সিঁড়ি নিয়েই। হঠাৎ করেই একদিন অন্যমনায় ছিলাম। সে সময়ে মাথার মধ্যে ছোটবেলার আমাদের বাড়ির এক প্রাচীন আমলের সিঁড়ির নানান ঘটনা ভেসে উঠল অতর্কিতেই। ভাবলাম লিখেই ফেলি। এই নিয়ে গুগুল মামার শরণাপন্ন হতেই দেখলাম - ওরে বাবা, এই সিঁড়ি নিয়েই হয়তো একটা বিরাট রচনা নামিয়ে ফেলা যায়। সারা বিশ্বের নানান সিঁড়ি, সেগুলোর ইতিহাস, সবচেয়ে বড় কথা সেই আদিম যুগ থেকে কতই না পরিবর্তন হয়ে আজকের গতিমান লিফট থেকে এস্ক্যালেটর। আমারই চোখে দেখা কত কিছুই। স্মৃতির মননে ছোট বেলা থেকে কলেজ জীবন পেরিয়ে চাকরি জীবন। সব কিছুর সাথেই জড়িয়ে আছে এই সিঁড়ি। জানিনা আপনাদের ভাল লাগবে কিনা...ভাল লাগলে যদি জানান তাহলে আরো একটু বিস্তৃত ভাবে রচনাটি শেষ করবো। আমি এ রচনাটিকে "ধারাবাহিক" বিভাগ আর "ইতিহাস" উপবিভাগেই রাখছি। ... ...
কে বলে মানুষের পাশে আজ মানুষ থাকে না। ঘরে সাপ ঢুকেছে? ডাকো তাঁকে। বাড়িতে করোনা? অক্সিজেন চাই। ফোন দাও তাঁকে। করোনা? ঘরেতে কেউ আসছে না! খাবার বা ফলমূল দরকার? জানাও তাঁকে? বয়স্ক মানুষ। বাজার দোকান করার লোক নেই? খবর দাও তাঁকে। বাড়িতে ভূতুড়ে কারবার? প্রমোটারের কারসাজি? হাজির তিনি। ... ...
“ওঁ পূর্ণমদঃ পূর্ণমিদং পূর্ণাৎ পূর্ণমুচ্যতে। / পূর্ণস্য পূর্ণমাদায় পূর্ণমেবাবশিষ্যতে।। / ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ”। (সন্ধি ভাঙলে – ওঁ পূর্ণম্ অদঃ পূর্ণম্ ইদম্ পূর্ণাৎ পূর্ণম্ উচ্যতে। / পূর্ণস্য পূর্ণম্ আদায় পূর্ণম্ এব অবশিষ্যতে।। /ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।) অর্থাৎ ব্রহ্মাণ্ডে নিরাকার রূপে যিনি পূর্ণ, এই জগতে সাকার রূপেও তিনি পূর্ণ, পূর্ণ থেকেই পূর্ণের সৃষ্টি, পূর্ণ থেকে পূর্ণ গ্রহণ করলেও, পূর্ণই অবশিষ্ট থাকেন। হে পরমাত্মন, সকল বিঘ্নের শান্তি হোক। এই পূর্ণতার সংজ্ঞা যদি অসীম (Infinity) ধরা যায়, সেক্ষেত্রে অসীম থেকে অসীম নিলেও, অবশিষ্ট অসীমই থাকেন বৈকি! ... ...
বাবা একদিন বললেন পনের-কুড়ি দিন তো হয়ে গেল, আর ফোন নয়; একবার ওই অফিসে গিয়ে খোঁজ নাও। আর এক বন্ধুও সেখানে চাকরি পেয়েছিল আর আমারই মত হাপিত্যেস করে বসে ছিল। দুজনে মিলে গেলাম ডালহৌসি পাড়ার সেই অফিসে যেখানে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আর গিয়ে বুঝলাম মহামতি নিৎসে কেন ওই কথাটা বলেছিলেন। কথাটা হল, “যাবতীয় খারাপ জিনিসের মধ্যে সবচেয়ে বাজে হল আশা, কারণ মানুষের যন্ত্রণাকে সে ব্যাটা দীর্ঘায়িত করে।” ... ...
বঙ্গলক্ষ্মী হোটেল। বৌবাজারের মোড়ে। বঙ্গলক্ষ্মী সত্যিকারের লক্ষ্মী। খাওয়ার জন্য আদর্শ হোটেল। রাণাঘাটের আদর্শ হিন্দু হোটেল বা বর্ধমানের ব্যানার্জি হোটেল বা আসানসোলের গঙ্গা হোটেল কিংবা শিলিগুড়ির চলন্তিকার সঙ্গে লড়তে পারতো কেবল কলকাতার বঙ্গলক্ষ্মী। রুই মাছ পোস্তও ছিল অসাধারণ। কলাপাড়ায় চুড়ো করে ভাত। ... ...
২৫০+২৫০ = ৫০০ কিমি পথ মাড়িয়ে তিনদিন পথে বা খোলা জায়গায় থেকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করতে আসা। মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতার বিধাননগরে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে। নারীর দল। পুরুষবিহীন। ১০-১২ জনের ছোটো ছোটো দল। নানা গ্রামের। ... ...
দিনে ১০-১২ ঘন্টা কাজ। বসার ব্যবস্থা নেই। আমার চেনা একজন কাজ করেন শপিং মলে। শুনলাম সেখানেও বসার নিয়ম নেই। ১০-১২ ঘন্টা বিউটি। হাজার দশেক টাকা বেতন। যাতায়াত সাজপোশাকেই কত খরচ চলে যায়? আগে শুনতাম ইউনিয়নের জন্য ঝামেলা। এখন তো দেখছি, ইউনিয়ন না থাকলেই ঝামেলা। ১০-১২ ঘন্টা দাঁড়িয়ে কাজ করতে পারেন মানুষ? ... ...
আজ রাত্রি বারো ঘটিকায় ঘটবে আমাদের পঁচাত্তরতম স্বাধীনতা দিবসের অমৃত-মহোৎসবের শুভ উদ্ঘাটন। সেই অমৃত আস্বাদনের আগে প্রায় পঁচাত্তর বছরের পুরোন "পাঁচন"-এর তিক্ত স্বাদে আমাদের চিত্তশুদ্ধি ঘটুক। সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। ... ...
রাজ্যের বা সাম্রাজ্যের রাজা যদি, প্রধান অমাত্য ও সেনাধ্যক্ষদের নিয়ে সর্বদাই যুদ্ধে – সে নিজের রাজ্য রক্ষার জন্যেই হোক অথবা অন্য রাজ্য জয়ের জন্যেই হোক – ব্যস্ত থাকেন, প্রদেশ থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দুর্বলতা আসতে বাধ্য। প্রশাসনিক দুর্বলতার পিছনে অবধারিতভাবে আসে দুর্নীতি। অর্থাৎ প্রাদেশিক থেকে গ্রামিক আধিকারিকরা মিলিতভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে মগ্ন হয়ে পড়তেন। অতএব একদিকে যেমন প্রশাসনিক আধিকারিকরা হয়ে উঠতেন অত্যাচারী আঞ্চলিক রাজা, অন্যদিকে সাধারণ প্রজাদের দুর্গতির সীমা থাকত না। ... ...
যাদবপুর মেয়ে হস্টেল আশির দশক। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। ... ...
আজ রাখী পূর্ণিমা। বছরের এমন কিছু কিছু উৎসবের দিন আসে, যেদিন ছোটবেলার স্মৃতি মনে ভিড় জমায়। আজ তেমনই একটা দিন। সেই উপলক্ষে এই গল্পটি এখানে শেয়ার করলাম। সকলকে শুভেচ্ছা জানাই, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আনন্দে থাকুন। ... ...
আশির দশকের যাদবপুর মেয়ে হস্টেল। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। ... ...
পৌরাণিক উপাখ্যান আছে, মহামুনি অগস্ত্যের শিষ্য ছিলেন বিন্ধ্যপর্বত। একবার সূর্যের ওপর রাগ করে বিন্ধ্যপর্বত সূর্যের গতিরোধ করার জন্যে খুব বেড়ে উঠছিলেন। সে সময় বিন্ধ্যের বৃদ্ধি কমাতে অগস্ত্যমুনি বিন্ধ্য পার হয়ে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার মনস্থ করলেন। মহামুনি অগস্ত্য বিন্ধ্যপর্বতের সামনে দাঁড়াতেই, মহামুনিকে প্রণাম করতে বিন্ধ্য যখন মাথা নত করলেন, মহামুনি বললেন, আমি যতদিন না ফিরে আসি, এভাবেই মাথা নত করে থাকো। অগস্ত্য তারপরে দক্ষিণভারত থেকে আর ফেরেননি, বিন্ধ্যপর্বত আজও মাথা নত করে আছে এবং সূর্যেরও প্রদক্ষিণ পথ আজও রুদ্ধ হয়নি। কাহিনী যাই হোক, এর সার কথা হল মহামুনি অগস্ত্য দুর্গম বিন্ধ্যপর্বত পার হয়ে দক্ষিণ ভারতে যেতে পেরেছিলেন এবং তাঁর দেখানো পথে, পরবর্তী উত্তরভারতের রাজা, ঋষি এবং উপনিবেশ-স্থাপনকারী মানুষেরা, উত্তরের ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি নিয়ে দক্ষিণে যাওয়া আসা শুরু করেছিলেন। ... ...
আশির দশকের যাদবপুর মেয়ে হস্টেল। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুলি। ... ...