কথা হচ্ছে একশ সত্তর বছর আগের এই নেতা কী লিখেছেন, সেটা কি এখনকার প্রজন্মকে, এখনকার বাস্তবকে কোনোভাবে প্রভাবিত করে? বিশেষ করে এমন কোনও ব্যাক্তির জীবনকে, যিনি স্প্যানিশ সাহিত্য বা মার্ক্সবাদী দর্শন নিয়ে আগ্রহী নন! ... ...
হাতে লেখা পান্ডুলিপির প্রয়োজন ফুরিয়ে গেল ... ...
ইদানিং খেয়াল হয়েছে যে গিটারটা ভাল করে শেখা হয় নি, ভাল করে শিখে বাজানো হয় নি। আঙুল কাঁপে, এমনকি কখনও কখনও গিটারশুদ্ধু পুরো অবয়ব কাঁপে, ধপাস করে সবশুদ্ধু চেয়ার থেকে পরেও যান - কিন্ত সুর আঁকড়ে ধরে থাকেন। ... ...
যখন দেখলাম আমার এইচ আই ভির পুরো গোপন ব্যাপারটা হাট হয়ে গেল, তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এসব নিয়েই চলব। যত বেশি আমি আপসেট হব ততবেশি সমাজ আমার ঘাড়ে চেপে বসবে। যতই জানি একই সুঁচ- সিরিঞ্জের ব্যবহারে, সংক্রমিত রক্ত বা রক্তজাত দ্রব্যের সংবাহনে, এমনকি গর্ভবতী মা যদি এইচ আই ভি আক্রান্ত হন তাহলে তার ভবিষ্যৎ শিশুর এইচ আই ভি সংক্রমণ হয়। তবুও অসুরক্ষিত বা বিনা কন্ডোমে যৌনমিলনে এইচ আই ভি ছড়ানোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কেননা খিদে ঘুমের মত সেক্সটাও যে মানুষের জীবনে অপরিহার্য। আর সেক্স নিয়ে আমাদের অনেকরকম ট্যাবু, অনেকরকম ঢাকঢাক গুড়গুড়। আর তাছাড়া তথাকথিত যৌনতার বাইরের যৌনতা তো এই সেদিনও আইনস্বীকৃত ছিল না। এর ওপর ছিল আমার চূড়ান্ত নীতিবাগীশ দায়িত্ব। তাই যত বেশি আমাকে কোনও সম্পর্কে যেতে দেখলে লোকে আমার এইচ আই ভি নিয়ে বাকীদের সাবধান করত, তার থেকেও বেশি আগেভাগে কোনও ক্যাজুয়াল সম্পর্কে যেতে হলে আমার এইচ আই ভি নিয়ে আমিই সোচ্চার হয়ে বলতে শুরু করলাম। তাতে করে আমার যৌনজীবনটা অনেকটা কম্প্রোমাইজড হলেও মনে হত সুখের থেকে স্বস্তি ভাল। যদিও আজ আমার অনেক বন্ধুই সম্পর্কে আছেন যাদের একজন এইচ আই ভি আক্রান্ত আর অন্য জন এই আই ভি আক্রান্ত নন। ... ...
সুজিত ডাক্তার চোঁয়া ঢেঁকুরের রুগী দেখতে এসে আধঘন্টার মধ্যে লিভার ক্যান্সার প্রেডিক্ট করে "খুবই ভয়ের ব্যাপার" বলে শেষ করেছেন। সেই থেকে ভিড় জমে গেছে সান্যালের আঙিনায়; গুমরে-ডুকরে বিলাপ উঠছে -- ডাক্তারবুড়োর সহজ কালমেঘের অঙ্কে যে সমস্যা মিটতে পারতো, এখন মনে হচ্ছে অঙ্কলজিস্ট ছাড়া গতি নেই। মুড়িমাসিও নাকিসুরে কেঁদে বললো, তার মুড়ির ধুলো চোখে ঢুকে করকর করছিল, সুজিত ডাক্তার দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এক ঝলক দেখে নাকি বলেছে, রেটিনা ফেটে গেছে। ... ...
আমরা বাচ্চারা ফুটপাথ আর গলির মুখে চার আনার রবারের বল নিয়ে ক্রিকেট খেলায় মশুগুল। ব্যাট করছে নীচের তলার আখতারদা -- নিলোফারের ছোড়দা -- ক্লাস এইটে পড়ে। বল করছি আমি, ক্লাস টু। লোপ্পা বলটায় আখতারদা এমন মারলো যে রাস্তা পেরিয়ে সার্কাস হোটেলের বারান্দায় শিককাবাব তৈরির উনুনের পাশে গিয়ে পড়লো। ওরা গেল খেপে, বল আটকে রেখে দিল। আখতারদা গিয়ে কীসব বলে নিয়ে এল বটে, কিন্তু তারপর ব্যাটটা অভিজিতের হাতে দিয়ে নিজে বল তুলে নিল। ... ...
বেলা ১টা নাগাদ পৌঁছে গেছিলাম কার্জন পার্কে। সে এক উৎসবের মেজাজ সারা পার্কটাকে ছেয়ে ফেলেছে। জায়গায় জায়গায় গোল হয়ে বসে গেছে গানের দলগুলো। এখানে অরণি তো ওখানে মাস সিংগার্সের বন্ধুরা। ওদিকে উত্তরপাড়ার ইউনিট থিয়েটারের (যারা ‘হচ্ছেটা কী’ আর ‘লাশ বিপণি’ করত) বন্ধুরা নাটকের একটা বিশেষ অংশের মুভমেন্টগুলো ঝালিয়ে নিচ্ছে। এদিকে আরএকজন একটা আশ্চর্য মূকাভিনয় করে দেখাচ্ছে - প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে সামনের দিকে কিন্তু আসলে পেছনে হাঁটছে - ইন্দিরার ‘প্রগতিশীলতার’ আসল চেহারা। ... ...
গল্প ... ...
কাজ করতে গিয়ে বুঝেছিলাম কুয়্যার-কমিউনিটির মানুষজনের এই ঝুঁকিপুর্ণ আচরণের মুল জায়গা আত্মপ্রত্যয়ের অভাব। তার অনেক কারণ, নিজেকে দিয়ে যেটুকু জানতাম তা যথেষ্ট ছিল না। আসলে যৌনস্বাস্থ্য বা মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি সামাজিক স্বাস্থ্য অনেক বেশি গুরুত্বপুর্ণ। যে মানুষগুলো ছোট থেকে বড় হতে হতে পরিবার সমাজ সকলের কাছে অবাঞ্ছিত জানতে জানতে বড় হয়েছে তাদের হেলথ সিকিং বিহেভিয়ার তৈরী হওয়া অত সহজ না। তার ওপর সম্পর্কের টানাপোড়েন, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা, সামাজিক স্বীকৃতির অভাব তখনও পর্যন্ত আইনি স্বীকৃতির অভাব এ সব গুলো ছিলই। আর একটা দিকের মুখোমুখি হলাম তা হল অর্থনৈতিক সমস্যা। আমার বড় হওয়া, পড়াশোনা, স্কুলিং, শহুরে প্রিভিলেজড জীবনের সঙ্গে এখানকার মানুষজনের বিস্তর ফারাক। এখানে এসে দেখলাম দিনের বেলা খেত খামারে কাজ করা তথাকথিত মেয়েলি পুরুষের অনেকেই বৌ বাচ্চা সংসার সামলাতে দুটো টাকার জন্য রাতের বেলা হিজড়া পেশার অন্তর্ভুক্ত হয়ে ট্রেনে ট্রেনে ছল্লা মেঙ্গে (ভিক্ষা করা) বেড়ায়। রেলপুলিশের তাড়া খেয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে নামার ঝুঁকি নিতে হয়। আবার কখনও কখনও শারিরীক ভাবে খুশি করতে হয় রেল পুলিশকে। কখনও রাতের বেলা গুড শেডের লরীর ড্রাইভার বা খালাসীর সাথে টাকার বিনিময়ে শারীরিক মেলামেশা তো আকছার ঘটে। এদের যৌনরোগ বা এইচ আই ভি নিয়ে বোঝানো বা কন্ডোমের ব্যবহার নিয়ে বলতে গেলে প্রয়ই শুনতে হত, "কি লাভ এভাবে বেঁচে থেকে। এমনিই তো মরে আছি, এর চেয়ে এডস হলে তো তাড়াতাড়ি মরে যাব।" তারপরেও কেউ যদিও বা এইচ এই ভি পরীক্ষা করতো, চিকিৎসার আওতায় আনা ছিল আরও কঠিন। ... ...
বুড়ার গেস্ট হাউসে জায়গা নেই, কারণ দুটো মাত্র ঘর। সে দুটোয় আমি এবং দুই বাঙালি দিদি আগে থেকেই রয়েছি। তাই আমার বস কোসলে স্যার আর বিলাসপুরের এসপি মিঃ শ্রীবাস্তব রাজবাড়িরই একটা ঘরে আস্তানা গেড়েছেন। ওঁরা সন্ধ্যেবেলা পৌঁছে আগে কুমারসাহেব এবং থানেদার ঈশ্বর পান্ডের সঙ্গে কথা বলে সব শুনে নিয়েছেন। জবানবন্দীর ফাইলের এক সেট কপি এখন ওনাদের কাছে। বডি রয়েছে বুড়ারের সরকারি হাসপাতালের মর্গে। সেখানে পাঠানোর আগে থানেদার ঈশ্বর পান্ডে বডি যে অবস্থায় মাটিতে পড়ে ছিল তার ছবি তুলে নিয়েছেন। হাসপাতালের ডাক্তার রক্তের স্যাম্পলও নিয়েছে। ... ...
কৃষিকাজের জন্য হেবার-পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়া উৎপাদন আজ একটি বিশাল শিল্প। প্রতিটি মানুষের দেহে যে নাইট্রোজেন, তার সবচেয়ে বড় অংশটাই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত হয়। এটা খুবই সম্ভব যে, আমি এবং আমার মতো অধিকাংশ মানুষই জন্মাতই না, যদি না ফ্রিটজ হাবের, হেবার প্রসেস আবিষ্কার করতেন। ... ...
ঠিক যেমন কবিতা আসলে একটাই, আমরা কেবল নাম দিয়ে তাকে ভাঙি, পথকেও আমরা ভেঙে নিই বছরে। নতুন, পুরোনো, ইত্যাদিতে। কিন্তু তাতে পথের মনে হয় বিশেষ কিছু আসে যায় না। ... ...
কাউন্সেলিং নিয়ে ভাবনা আমার ছিলই নিজের সেক্সুয়্যালিটি নিয়ে বুঝতে পারার সময় থেকেই, আমার প্রথম সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর সেটা কতটা প্রয়োজন হাড়েহাড়ে টের পেয়েছিলাম, কেননা অন্য যৌনতা যাপন তখন আজকের মত সবাইকে বলা যেতনা , আজও অনেকেই বলতে পারেনা। এর সঙ্গে যোগ হল এইচ আই ভি যাপন। বুঝলাম আমাদের মত মানুষের পাশে পজিটিভ ভাবে থাকাটা আমার মত পজিটিভ লোকের ভীষণ জরুরি। আর তাই তো মনখারাপ, বিচিং বা কোনও নেগেটিভ ভাবনাকে পাত্তা না দিয়ে সবসময় ভাল থাকার অভিনয় করতে করতে কখন যেন ভালো থাকাটাই অভ্যেস হয়ে গেছে আমার । ভাল থাকা একটা আর্ট। ওটা রপ্ত করলেই হয়। আমি জানি জাতকের গল্পের মত একমুঠো সর্ষে কারও কাছে পাবনা যার খারাপ থাকা নেই। নিজেকে বোঝাই আমার মাথার ওপর বর্ষায় ছাদ আছে, দু'বেলা পেটপুরে খেতে পাই, শীতে গায়ে গরম পোষাক দিতে পারি, তাই বাকী দুঃখ নিয়ে ভাবনাটা বিলাসিতা! ... ...
কোত্থেকে যে শুরু করব বুঝতে পারছি না। গত ৪৮ ঘন্টা, মানে পরশু বুড়ার স্টেশনে নামার সময় থেকে এখন অব্দি যেন একটা ঘোরের মধ্যে কেটেছে। এইটুকু বলে দিই যে ছিন্নমস্তা দেবীর পুজো তো নয় যেন দক্ষযজ্ঞ! তাতে বলি চড়েছে একাধিক প্রাণী। যেমন আমি, যেমন ওই দুই বাঙালি দিদি। আমাদের টিকিট ফিকিট গেছে চুলোয়। বুড়ার থানার ওসি’র নির্দেশে আমরা তিনজন আগামী আদেশ পর্য্যন্ত বুড়ারের বাইরে যেতে পারব না। বলতে গেলে একরকম নজরবন্দী। কারণ যুবরাজ বীরেন্দ্রপাল প্রতাপ সিংহ হত্যায় আমরা তিনজনই স্থানীয় পুলিশের সন্দেহের তালিকায়। ... ...
এখন হয়তো কাউন্সেলিং ব্যবস্থা অনেক পাল্টেছে। আসলে এইচ আই ভি কাউন্সেলিং এর ভাবনা চিন্তা এখনকার মত তখন ছিল না। এইচ আই ভি প্রোগ্রামের খোলনলচে বদলেছে অনেক পরে। তখন অনেকেই মনে করত এইচ আই ভি আক্রান্তের যৌনজীবন থাকা উচিত না, আজও অনেকে করে। কাউন্সেলিং ব্যবস্থায় কন্ডোমের ব্যবহার করতে বলা হত নীতি পুলিশি দেখিয়ে, বলা হত, "কন্ডোম ব্যবহার না করলে, তোমার থেকে অন্যের এইচ আইভি ছড়াতে পারে" বিষয়টা যতটা সত্যি ততটাই এইচ আই ভি আক্রান্ত ব্যক্তির পুনঃসংক্রমণ বা অন্যান্য যৌনসংক্রমনের ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা সব পরিসরে হত না। আজও অনেক কম হয়। দুজন এইচ আই ভি আক্রান্তেরও যে যৌনমিলনে কন্ডোম ব্যবহার প্রয়োজন তা নিয়েও কথা কমই হয়। আরও একটা অদ্ভুত বিষয় লোকজন মনে করে কারও এইচ আই ভি আছে তা বাকীদের জানালে বোধহয় বাকীরা সুরক্ষিত থাকবে। আসলে অনেকেই নিজের রক্তপরীক্ষা করায় না, নিজের অজান্তেই তারাও এইচ আই ভি-র বাহক হতে পারে তাদের থেকেও এইচ আই ভি ছড়াতে পারে এ সত্যটা মেনে নিতে মানুষজন কিছুতেই পারেনা। সকলেরই নিজেকে এইচ আই ভি বা যৌনরোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে কন্ডোমের ব্যবহার জরুরি এই সহজ তথ্যটা সকলের বোধগম্য আজও নয়।আসলে যৌনতা বিষয়টা নিয়েই তো খোলাখুলি আলোচনা আমাদের সমাজে আজও কম হয়। ... ...
মজার ছলে লেখা অসামান্য এই গল্পগুলি জীবজন্তুকে অন্যভাবে দেখতে শেখায়, ভালোবাসতে শেখায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে মাত্র চার বছর, ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত সময়ে তাঁরা কর্ফু দ্বীপে ছিলেন। কিন্তু এই অভিজ্ঞতাই জন্ম দিয়েছিলো ভবিষ্যতের বন্যপ্রাণী সংরক্ষক জেরাল্ড ড্যারেল-এর। সুদূর ১৯৫৬ সালে লেখা এই বইটিকে আজও সাধারণ পাঠকের পক্ষে পশুপ্রেম ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রথম পাঠ বলা যেতে পারে। ... ...
আসলে তখনও পর্যন্ত সকলেই মনে করত একটা নির্দিষ্ট শ্রেণীর লোকেদেরই এইচ আই ভি হয়। আজও বহু মানুষ মনে করে এইচ আই ভি থাকে যাদের তারা তথাকথিত সুস্থদের দলে নয়। কিছু না কিছু রোগলক্ষণ দেখা দেবেই। যা সবচেয়ে ভুল। আমাদের জীবনযাত্রা আমরাই জানি। আর কেবল মাত্র একজন যৌনসঙ্গী থাকলেও এইচ আইভি হতে পারে। যদি সেই সঙ্গীর কোনও ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ থেকে থাকে। আজকাল যদিও কাউন্সেলর বা চিকিৎসকরা কারও এইচ আইভি ধরা পড়লে তাকে নিয়ে বসে আলোচনা করেন। কিন্তু সেদিন সেই মুহুর্তে আমার করনীয় কি আমি নিজেও বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ... ...
আমার একটি প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। যার বেশীরভাগ প্রবন্ধই এই ব্লগে প্রকাশিত। সেই বই বিষয়ে দু'চার কথা ভাগ করে নিলাম আমার পাঠকদের সাথে। নিজের বই নিয়ে ফেসবুক জাতীয় সমাজমাধ্যমে আলোচনা করাটাই রীতি। কিন্তু আমি ফেসবুক বা অন্য প্রচলিত সমাজমাধ্যম থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসন নিয়েছি। গুরুচন্ডালিই আমার একমাত্র মাধ্যম নিজের কথা বলার জন্য। আশা করি নিজের ব্লগে, নিজের বই নিয়ে লেখা একটু রীতি বহির্ভুত হলেও নীতি বহির্ভুত বলে বিবেচিত হবে না। ... ...
তিনি ছিলেন আমার রাঙামা। আসলে রাঙা ঠাকুমা। বাবার মেজ কাকিমা। কিন্তু সকলের কাছেই তিনি একডাকে পরিচিত ছিলেন এই রাঙামা নামেই। একেবারে টুকটুকে গায়ের রঙের সঙ্গে আদরের ডাকের কী মিল! মাথায় কালো চুলের বড়ি খোঁপা। ছোটখাটো চেহারা। সংসারের হাজারো কাজ সামলে ওই বয়সেও মসৃন ত্বক। আদতে দ্বারভাঙার কন্যা। কবি যদিও বলেছেন, "যব-ছাতু খেয়ে বাঁচে পশ্চিমের দীনে," পশ্চিমে কিন্তু লোকপ্রিয় ছোলার ছাতু। উত্তরবঙ্গে বলতে শুনেছি, বুটের ছাতু। তা রাঙামা ছিলেন এই ছোলার ছাতু মাখার স্পেশালিস্ট। তাঁর হাতের তারে সেই ছাতু মাখা গোল বলের মতো দলার যে কী সুস্বাদ ছিল তা এখনও ভুলতে পারি না। আজকের আধুনিক প্রজন্ম এমন সব আটপৌরে জলখাবারের মর্মই হয়ত বোঝে না। তবে আজও এই সব সাধারণ ঘরোয়া খাবার নিয়ে বসলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে পৃথিবী থেকে একে একে চলে যাওয়া প্রিয় মুখগুলি যাঁদের স্নেহ, আর ভালোবাসা আমাদের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিকে এমন উজ্জ্বল করে রেখেছে। ... ...