কর্ণাটক বিশেষ করে এর পশ্চিম অংশকে হিন্দুত্বের ল্যাবরোটরি বলা হয়। হিজাব এবং হালালের পর এই ল্যাবের নূতন পরীক্ষার বিষয় কাস্ট ও সংরক্ষণ। ... ...
সবাই জানে, বাংলাদেশের মানুষ ভাষার জন্য লড়াই করেছিল। অনেকেই জানে না যে, বাংলাদেশের মানুষ একজন কবির জন্যও লড়াই করেছিল। গেল বছর মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পাড়ি দিচ্ছিল যখন বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী লড়াইগুলোর ইতিহাস আলোচনায় প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়িয়েছিল সে আন্দোলনও। মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন আর রবীন্দ্রনাথ- জাতীয় ইতিহাসের এই পালকগুলোর কোন একটিকে বিচ্ছিন্ন করলে যেন খসে যাবে অন্য পালকগুলোও, কংকালসার এক বাংলাদেশ পড়ে থাকবে চোখের সামনে। কিন্তু কেন তিনি নাড়ি ছেঁড়া ধন আমাদের? কেনই বা তার ‘সোনার বাঙলা’ আমাদের জাতীয় সঙ্গীত? বাংলাদেশের একটি নদীর উপর একটি নৌকোয় চড়ে বসুন আর ক্ষণিক ছিন্নপত্র ও ক্ষণিক চারপাশের জীবন ও প্রকৃতির মাঝে ডুবে থাকুন। আস্তে আস্তে একটি ছবি ভেসে উঠবে আপনার অক্ষিপটে; অবাক বিষ্ময়ে আবিষ্কার করবেন, পুরো বাংলাদেশটাই রাবীন্দ্রিক! ... ...
দূতাবাস আমাদেরকে খুব দারুণ করে সমাদর করল। মেহেদি হাসান নামে একজন সচিব বেশ মনোযোগ দিয়ে আমাদের সমস্ত অভিযোগ শুনলেন। এরপরে অভিযোগ গুলো নিয়ে আমাদের ভিতর থেকে কয়েকজনকে নিয়ে গেলেন রাষ্ট্রদূতের সাথে কথা বলার জন্য। আমরা বাকিরা নিচে বসে রইলাম, ছবি তুললাম। রাষ্ট্রদূত দ্রুত অ্যাকশন নিলেন। ফোন দিয়ে গরম করে ফেললেন মুহূর্তে। যারা কথা বলে আসলেন তাদের পরে আমি কথা বলার জন্য গেলাম। আমি যখন উনার রুমে ঢুকি তখন তিনি মোবাইলে আমাদের কোম্পানির কর্তা কোন ব্যক্তির সাথে লাউড স্পিকারে কথা বলছেন। বাকিটা আমার গর্বের হয়ে রইল। ওই পাশ থেকে একজন খুব কর্কশ স্বরে কথা বলছিলেন। আমাদের রাষ্ট্রদূত ( নামটা দেখেছি কিন্তু ভুলে গেছি, কি জানি হুদা!) উনাকে ফোনে থামিয়ে দিয়ে বললেন, “আপনি জানেন কার সাথে কথা বলছেন? আমি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলছি, আপনে এমন শব্দ ব্যবহার করতে পারেন না আমার সাথে কথা বলার সময়। এরা আসছে নির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে। আপনারা কোন আইনে, কোন অধিকারে আমার দেশের লোকজনের পাসপোর্ট নিয়েছেন?” ওই পাশে নীরব হয়ে গেল কিছুক্ষণের জন্য। বলল ওরা আসলেই সবাইকে পাসপোর্ট দিয়ে দেওয়া হবে, আজকে এখনই দিয়ে দেওয়া হবে। ... ...
আমার বা তথার বাড়ি ফেরার উপায় নেই, তবু মন পুলকিত, অকারণেই। কাশ ফুল ফুটুক না ফুটুক, আজ দুর্গা পুজো। শিউলি ফুল আশেপাশে কোথাও নেই, তবু যেন কোত্থেকে তার গন্ধ ভেসে আসে। হলই বা কাঠখোট্টা মহানগর দিল্লি, তবু মনের মধ্যে বাংলার কোনও এক চন্ডীতলায় সনৎ সিংহের গানের মত গুড়গুড় করে ঢাকের বাদ্দি বেজে ওঠে - জা গি না, তাক তা ধিনা তাক তা ধিনা, তাক কুড় কুড়, কুড়ুর কুড়ুর তাক… ... ...
জীবন চলিয়া যায় .................. ... ...
এক রাজা। বোম্বাগড়ের। যিনি একাই ছাপ্পান্ন। সর্বত্র বিরাজমান, কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে। ছবির ফ্রেমে আমসত্ত্বভাজা হয়ে নিজেই ঝুলে থাকেন। বলিউডে তাঁর ছবি দেখা যায়, উত্তরাখণ্ডের গুহাতেও। মোনাকো থেকে রোমানিয়া, ইন্টারনেট থেকে টিভিতে সর্বত্র তাঁর ছবি আছে, কিন্তু সামনাসামনি কোনো সাংবাদিক তাঁকে চোখে দেখেননি। তিনি এমন স্টেশনে চা বেচেছেন, যা আর খুঁজে পাওয়া যায়না, এমন ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রি পেয়েছেন, যার খোঁজ করতে গেলে আদালত জরিমানা করে। তাঁকে নিয়ে কটু কথা বললে বিবিসিকেও ঠুসে দেওয়া হয়, তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার মারলে পুলিশ ধরে। তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলা মানেই দেশদ্রোহ। কারণ তিনিই দেশ। তিনিই পরমাত্মা। তিনিই পরমেশ্বর। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে নিয়েই লিখেছিলেন, "আমরা বেগুনভাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে"। আজ রাজা আছেন, নিরবধিকাল থাকবেন, রোজ সকালে উঠে নমন করবেন। ... ...
মসজিদের বাহিরে গিয়ে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এরা মসজিদকে আমাদের মত পেট মোটা হুজুর পাঁচবার নামাজ পড়াবে আর বাকি সময় মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধনে ব্যয় করবে এমন করে রাখে নাই। সুন্দর সবুজ ঘাসের একটা ছোট্ট উদ্যান। শিশুদের জন্য দোলনা, বাস্কেটবল কোর্ট, সবার বসার জন্য সুন্দর করে সাজানো চেয়ার টেবিল! এক পলকেই পুরো ধারনাটা আমার খুব পছন্দ হয়ে গেল! ... ...
শারীরিক গ্লানি জনিত ছেঁড়া ঘুম ও আধো জাগরণ প্রসূত অসংলগ্নতার পাঠ্যরূপ মাত্র। ... ...
এইমাত্র এক বাল্যবন্ধুকে দেখলাম, আরেক পরিচিতের পোস্টে গিয়ে কমেন্ট করতে, যে, গুরু(চণ্ডা৯) 'ছুপা' তৃণমূল, অনেকদিন ধরেই। তার নীচে আবার একজন গম্ভীর সমর্থন জানিয়ে লিখেছে, গুরুতে নাকি সব তৃণমূল আইটি সেলের লোফার, আর ওখানে নাকি ডিএ-আন্দোলনকারীদের খুব গালি দেওয়া হয়... ... ...
" সম্ভবত আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে টালমাটাল সময়ে, ১০ আগস্ট ১৯৪৭-এর সকালে আমি দিল্লি পৌঁছলাম। ২০০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের শেষে হিন্দোস্তান আর পাকিস্তান নামের দুটি স্বশাসিত ডোমিনিয়নে চিরতরে ভেঙে যাওয়া ভারত ১৯৪৭-এর ১৫ আগস্ট নিজের প্রথমতম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য অস্থির উদ্দীপনা নিয়ে অপেক্ষা করছিল। আমিও অবশ্য ভাঙছিলাম...।আমি ভাঙছিলাম আমার সুরক্ষিত আর গতানুগতিক জীবনের সমস্ত শিকলগুলোকে। ... পরিবারের তামাম তির্যক কানাঘুষো, সমাজের সব নিষ্ঠুর নিন্দামন্দ আর লখনৌয়ের স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনের যাবতীয় অভ্যেসের বন্ধন ভেঙেছিলাম আমি আর পুরুষের কোনরকম সহায়তা আর অনুমোদন বিনে আমার জীবনটাকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য বেরিয়ে এসেছিলাম একদম একলা। আশ্চর্য ধৈর্য্য আর সহিষ্ণুতা দিয়ে আমার ঘটানো এমন অভূতপূর্ব কান্ডকে পারিবারিক আর সামাজিকভাবে সামলানোর জন্য আমি আমার মা আর শাশুড়ি মায়ের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব...।" কেবল এই দেশই নয়, পৃথিবীর প্রথম পেশাদার মহিলা সংবাদপাঠক সাঈদা বানোর আত্মজীবনী 'ডগর সে হঠ কর'-বইটির কয়েক লাইন দিয়েই না'হয় শুরু হোক এই লেখা...। ... ...
বেশি ভ্যান্তারা করে লাভ নেই। মহারাষ্ট্র থেকে দিল্লি, বিহার থেকে বাংলা, উহাদের ছক একটাই, এবং সেটা খুব পরিষ্কার। সিবিআই-ইডি-গ্রেপ্তার দিয়ে আঞ্চলিক বিরোধী সরকারগুলোকে নড়বড়ে করে দাও। চাপে রাখো। সত্যিই দুর্নীতি থাকলে তো সোনায় সোহাগা, নইলে বানিয়ে নাও। তারপর, চাপে থাকতে-থাকতেই খেলে দাও দাঙ্গার তাস। একে হিটলারি মতে বলা হত ব্লিৎসক্রিগ। ঝটিকা আক্রমণ। নানা জায়গায় ঝড়ের গতিতে শত্রুর সামনের লাইনে ফুটো করে দাও। তারপর সামনে চলো। দেখবে শত্রু নালে-ঝোলে হয়ে পিছনে পড়ে আছে। ... ...
আচমকা একটা খটখট শব্দটা শুনতে পেল - বন্ধুটির ট্যবলেট পর্দায় স্থির হল মোরসালিনের প্রজেক্টর। ভাবনায় ডুবে রয়েছে তার হৃদয়ের বন্ধু; তার আচমকা, অস্বাভাবিক মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। হঠাৎ কি মনে করে মোরসালিনের লেখাসমেত ইমেইলগুলো এক সাথে করল সে। নিঃশ্বাস পড়ছে না মোরসালিনের, শিহরিত নেত্রে চেয়ে রয়েছে বন্ধুটির ইমেইল পেইজে, হয়ত এখুনি কোন সম্পাদকের কাছে প্রেরিত হবে। ... ...
জীবন এরকমই আমার ... ...
বিমানে উঠার পরেই শুরু হল শ্রমিক জীবন! আমি মুহাম্মদ সাদেকুজ্জামান, নিজেকে একটু উন্নত প্রাণী বলে মনে করি, আমি বইপত্র পড়ি, সিনেমা সিরিজ নিয়ম করি দেখি, মতামত দেই, অস্কারের ভাল মন্দ নিয়ে জ্ঞান দেই, দেশের নারী অধিকার নিয়ে আমার কথা না বললে চলেই না, খুব আগ্রহ নিয়ে সংখ্যালঘুদের কথা বলি, নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আমার বোন, যার ভেরিফাইড পেজটা খুলছি এবং এখনও অন্যতম এডমিন আমি, এমন শতশত বিষয় যা আমাকে একটু আলাদা করে রেখেছিল, বিমানে উঠা মাত্র সব শেষ! আমি শ্রেফ শ্রমিক! আমার জন্য কাটা হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে সস্তা টিকেট। ঢাকা থেকে বুখারেস্ট, মাঝে দুবাইয়ে থাকতে হবে ছয় ঘণ্টা, সব মিলিয়ে ১৮ ঘণ্টার ভ্রমণ। এই লম্বা ভ্রমণে কোন খাবারের ব্যবস্থা নাই! বিমানে খাওয়া নাই! শ্রমিকদের এগুলা থাকতে হয় না, মানে বিদেশ ভ্রমণে ক্ষুধা পিপাসা আবার কী! যেন বিমানের শব্দের মাঝে শুনতে পেলাম কোন গায়েবি আওয়াজ, শ্রমিক জীবনে স্বাগতম শরীফ! ... ...
পেণ্ডুলাম ... ...
আপনার চোখের সামনে কেউ যদি বোতলের ঢাকনা খোলার মতো মুণ্ডুটা খুলে ফেলে...? ... ...