#একাকী_ভ্রমি_বিস্ময়ে ... ...
ফেলুদা হঠাৎ 'জ্যাক দ্যা রিপার' শব্দটা কয়েকবার অস্ফুট উচ্চারণ করলো। লালমোহনবাবু বোধহয় ঠিক শুনতে পারেননি। উনি প্রশ্ন করলেন, "জ্যাক ফ্রুটের কথা বলছেন? মানে কাঁঠাল?"। ফেলুদা লালমোহন বাবুকে বললেন, "নাহ্। জ্যাক দ্যা রিপার"। তারপর আমাকে বললো, "চল তোর সিধু জ্যাঠার বাড়িতে, কয়েকটা ইনফর্মেশনের দরকার আছে। এ ব্যাপারে সিধু জ্যাঠার শরণাপন্ন হতেই হবে। আপনিও যাবেন নাকি লালমোহন বাবু? কাছেই। হাঁটাপথ।" ... ...
কত বছর পর গ্রামে ফেরা! নিরানন্দ, ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। শীতকাল, তায় শেষ কয়েকটা সপ্তাহ হলো বেজায় বরফ পড়ছে। পথরেখা দেখা যায়না। রাস্তার দু'পাশে, দূরের পাহাড়ের গায়ে - মোটা বরফের কম্বল। আকাশে কালো মেঘ, মেঘের ব্যাকগ্রাউন্ডে সাদা বরফের ছিটেফোঁটা। শেষ বিকেলে পড়া শুরু হল যখন, তখন সারারাত আর থামবে না। ... ...
মানুষের চোখ যে এত সুন্দর তা এই অতিমারী না হলে হয়তো জানতেই পারতাম না। মহিলা, পুরুষ, শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ - সবার চোখ দৃশ্যমান। নাকের নিচ থেকে ঢাকা মুখোশে, মাথা আর কপালও অনেকেরই টুপির নিচে চলে গেছে। বাজারে ঢোকার মুখের রাস্তায় পাঁচটা মিনিট দাঁড়িয়ে যান, দেখুন আশপাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষের চোখ। কারও চোখ যামিনী রায়ের ক্যানভাসের মত, কারোর আবার রবি ঠাকুরের কালোহরিণ। কারও চোখে সরু কাজলের টান, কারোর চোখের উজ্জ্বলতা আবার চশমার ভিতর দিয়েও স্পষ্ট। কারও চোখ আবার অন্য গল্পও বলে। ... ...
পুস্তকেই তো বলা হয়েছে কেউ যদি অনাবাদী জমিন আবাদ করে, তার জন্য রয়েছে সওয়াব… এখন একদম মিম্বরের সামনেই রয়েছে সে…স্রষ্টার এত বড় জমিনে জায়গা পাওয়া বুঝি কি সবাইকে দিয়ে হয়? এর জন্য বুদ্ধি, ক্ষীপ্রতা, সজাগ দৃষ্টি দরকার হয় শক্তিমত্তার পাশাপাশি… বেশ একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন মুরব্বি… জায়গাটা এত মধুর লাগে তার কাছে! খোশবুর রোশনাই মনে হয় এখান থেকেই ছেটানো হয়! পবিত্র এক শিহরনে তার দুচোখ বয়ে নিদ নেমে আসতে চায়! ... ...
একটি এমটিপি করতে আসা মেয়েকে নার্স বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রশ্ন করায় এক বেসরকারি হাসপাতালের (পশ্চিমবঙ্গের বাইরের) ডাক্তার নার্সকে ডেকে কাউন্সেল করেছিলেন, বলেছিলেন এই সব কথা তো তোমার জানার দরকার নেই। ও একটা সার্ভিস নিতে এসেছে আমাদের কাছে, আমরা দেব এইটাই ওর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক, বাকিটা ওকে বুঝে নিতে দাও। এই ডাক্তার মহিলাকে অসীম শ্রদ্ধা জানাই। এর পাশে রাখি সেই সব কলকাত্তাই ডাক্তারদের যারা শুধু সিঁদূর দেখতে না পাওয়ার জন্য একটি মেয়েকে কুমারী ধরে নিয়ে মোরাল পিসিমা হয়ে এমটিপি করা নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতে চেষ্টা করেছিলেন। ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ৮ … এটাকে চান্দেরী ভ্রমণ বৃত্তান্তের পুনশ্চঃ বলা যায় ....আমার প্রশ্ন শুনে করণ করুন ভাবে আমতা আমতা করে। করণের মতো মানুষের জীবনে বিশেষ কিছু না জেনেও দিব্যি চলে যায় তাই যেখানে এতদিন আছে সেই স্থানের নামটির তাৎপর্য জানার কৌতূহলও হয়নি ওর। শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত কোট - যা রোমিও জুলিয়েট না পড়েও কোথাও উদ্ধৃতি পড়েই জেনেছি - “What's in a name? That which we call a rose by any other name would smell just as sweet.” মনে হয় এমন খামচা মারা জানার আগ্ৰহ ওর নেই। ... ...
এটা একবারের অভিজ্ঞতা হলে ছুটকো ছাটকা বিষয় বলে উড়িয়ে দেওয়াই যেত। কিন্তু ব্যাপারটা ধারাবাহিক। যখনই শাসক দলের কিছু সমালোচনা করা হয়, সিপিআইএম এর অনলাইন কিছু কর্মী দেখি ঝাঁপিয়ে পড়েন তার বিরুদ্ধে। না, সবাই না, বেশিরভাগও না, দক্ষিণ কলকাতার একটি অংশের কিছু উগ্র কর্মীবৃন্দ। এটা বহু সময় দেখেছি। বগটুইএর ঘটনায় নিজে লিখে দেখেছি। জয় গোস্বামীর 'দগ্ধ' বইটি আমরা প্রকাশ করেছি, তখন দেখেছি। ব্যাপর দেখে মনে হচ্ছিল বগটুই না, পশ্চিমবঙ্গে আলোড়ন ফেলা নিন্দনীয় একটাই ঘটনা ঘটেছে, যার নাম দগ্ধ। এই সব আক্রমণেরই মূল উপজীব্য একটাই। পছন্দমতো কেন প্রতিবাদ হচ্ছেনা। কেন 'শাসক দল' লেখা হচ্ছে। কেন ঘটনা দেখে দুঃখ হচ্ছে, 'প্রতিবাদে গর্জে উঠুন' কেন বলা নেই। সারা জীবনে বহু জিনিসে প্রতিবাদ ইত্যাদি করেছি। কিন্তু এই অদ্ভুত জিনিস কখনও দেখিনি, যে, যাঁরা সর্বস্তরের মানুষের কাছে প্রতিবাদের আহ্বান করছেন, তাঁদেরই কর্মীবাহিনীর একাংশ সেটাকে বানচাল করে দিতে চাইছেন। এই ঔদ্ধত্য, কে কী বলবে, ঠিক করে দেবার মানসিকতা, কোথা থেকে আসে বলা মুশকিল। হয়তো একরকম অন্তর্ঘাতও হতে পারে। আমার জানা নেই। ... ...
কোথায় যে আনন্দধারা বইছে কে জানে ... ...
আটের দশকে এসএসসি পরীক্ষার পর আমার স্কুলের বন্ধুরা কেউ স্পোকেন ইংলিশ, কেউ বেসিক ইংলিশ, কেউ বা শর্টহ্যান্ড-টাইপরাইটিং বা কম্পিউটার কোর্সে ভর্তি হয়ে গেল। তখন আমেরিকা যাওয়ার খুব ক্রেজ। এবং মাইকেল জ্যাকসন।…আমি এ সব কিছুর কোনোটাই করিনি। একেবারে সিরিয়াস পরীক্ষার্থীর মতো সকাল বেলাতেই খাতা-কলম গুছিয়ে যেতে শুরু করি শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরিতে। তারপর একেবারে টানা চলতে থাকে গভীর অধ্যায়ন।সেই সময় আমি খুঁজে পাই আরেক সিরিয়াস পাঠককে। তার নাম জাহিদ হাসান পাপ্পু। সংক্ষেপে– জাহিদ। বয়সে আমার চেয়ে ... ...
চেনা মানুষ অচেনা গল্প ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১১ … আমার চেহারা, পোষাক, হাবভাবে প্রথাগত ভক্তসূলভ ছাপ নেই। হয়তো সে জন্যই মুখ্যবাবা জানতে চান, এভাবে কষ্ট করে আশ্রমে থাকতে চান কেন? সুরয়ায়াতে লাল্লুকে দেখানো বেড়ালটা আবার ঝোলা থেকে বার করি। এমন যাত্রায় সেটাকে অনেকবার বার করতে হয়েছে। তবে বেড়াল দেখেও বাবা লাল্লুর মতো প্রভাবিত হলেন না। বাবার মুখভাব ক্রনিক আমাশা রুগীর মতো অপ্রসন্ন। তবু স্বরে কয়েক আউন্স সেন্টিমেন্ট মাখিয়ে বলি, যদি রাতটা এখানে কাটাতে আসি, মোহনী মহারাজের কৃপা থেকে বঞ্চিত হবো না তো? মূখ্যবাবা হয়তো এমন ছিনে জোঁকের পাল্লায় আগে পড়েন নি। নিস্তার নেই দেখে নিমরাজি ভঙ্গিতে অস্পষ্ট ভাবে মাথা নাড়েন। সেটাই আমি ভিসা অন এ্যারাইভালের প্রতিশ্রুতি ধরে নি। প্ল্যান-এ বস্তির টাইমকলের লাইনে বালতি রাখার মতো আশ্রমের যজ্ঞশালার বুড়ি ছুঁয়ে থাকে। আমি জোড়হস্তে নমস্কার করে বিদায় নিই। হোবো শৈলীতে ঘুরতে হলে গাত্রচর্মটা নাসিকাশৃঙ্গী প্রাণী গোত্রের ভাবলে কোনো সমস্যা হয় না। ... ...
কৈফিয়তঃ জন্মদিন-মৃত্যুদিনে লেখা নাবানো ফেসবুকাব্দের একটি অসুখ বিশেষ। এটি সেই অসুখের সিম্পটম। একমাত্রা সেভিং গ্রেস, লেখাটি অগাস্ট মাসের।বাংলা ছবি আর কিছু না হোক চরিত্রাভিনেতাদের নিয়ে জগতসভায় গিয়ে শ্রেষ্ঠ আসনের জন্যে কম্পিটিশনে নাবতে পারে। চরিত্রাভিনেতারাই ছবির বুনিয়াদ, যার ওপর মূল অভিনেতারা নিজেদের অভিনয়ের ইমারত তৈরি করেন। সে ইমারত হর্ম্য হবে না প্রাসাদ হবে না কুটীর হবে তা স্থির হত মূল অভিনেতার অভিনয়ের জোরে। কিন্তু সে ইমারত কতটা টেঁকসই হবে তা নির্ভর করে ইমারতের ভিতের জোরের ওপর - অর্থাৎ ... ...
লাইক ছাড়া আর কোনও সিস্টেম নাই রে , চমকে উঠি। কথা হচ্ছিল মোল্লা সাগরের সঙ্গে পিঠে পার্বণ, অনাহার ও ডায়াবেটিস নিয়ে। পিঠে নিয়ে কথা বলার আজ একমাত্র দিন। রোজ হয়না, আজ সংক্রান্তি। মাকে মনে পড়ে, বাংলাদেশকেও। সকাল থেকে চারপাশে খুলনা খুলনা গন্ধ। বাসেরা এখন নিরুদ্দেশে যাবে, মহাভারত এখন গঙ্গাসাগরে। সেঁকা খোলায় পিঠে পুড়ছে। মফস্বলের এই নরম রোদে বড়ি শুকোচ্ছে শাড়িময়। এখানে স্নান ওখানে টুসু। পাপিয়াদি ফেবুতে পোষ্ট দিয়েছে আকণ্ঠ শিলাবতী, মাইক, হট্টগোল। তবু মন নাচে, পাহাড়ের গা দিয়ে আমি যেন কোথাও যাই ... ...
মঙ্গল পাণ্ডে নয়; চিল্লেছিল আমির খান, প্রবল বাবরি আর গোঁফ বাগিয়ে। 'হলল্লা বোল'। আমিরি চুলের মেন্টেনেন্স খরচা উঠেছিল কি না সন্দেহ, তবে পাবলিক হল্লাটা খেয়েছিল। ওটা খাওয়া পাবলিকের ঐকান্তিক ধর্ম। কেউ মরছে কি না, কেউ ধুঁকছে কি না, কেউ তার বিষাদফোঁড়ায় আলতো হাত রাখছে কি না – সে জেনে পাবলিকের কি! পাবলিক বেঁচে আছে এবং সাংঘাতিক তীব্ররূপে আছে – সেটা সক্কলের জানা দরকার। জানানো তার হক। সে জন্যেই ঈশ্বরবাবু তাকে গলা দিয়েছে। এবার তো বাকিদের গলায় সে পা তুলবেই। ইস্কুলে চুকিৎকিৎ বা কমপ্লেক্সে হাডুডু – স্রেফ চি ... ...
ম্যাডান স্ট্রীট নামের উৎস সন্ধানের অলস কৌতূহল মেটাতে গিয়ে ক্ষণিকের আলাপ হোলো অমায়িক গুলনার ম্যামের সাথে …. ফাউ হিসেবে জানা গেল কিছু কথা ... ...
সোজা রিভিউয়ে ডাইভ মারার আগে দু-একটা কথা বলে নেওয়া আবশ্যক। অর্থাৎ কিনা – আরশিনগর – চারিদিকে এতো সব শোনার পরেও – আদৌ দেখলাম কেন। দেখলাম, তার কারণটা ওই... বাঙালি রক্তদোষ। সবাই খারাপ বলছে, আমি আমি ততই ভাবছি – আর আপামর প্রত্যেকটা ভেতো বাঙালির মতন করেই, যে – ছ্যাঃ, ওই ব্যাটারা নিশ্চয়ই বোঝেনি... আমি তো ইয়ে, যাকে বলে গিয়ে... আমি, মানে, নিশ্চয়ই বুঝবো! অপর্ণা সেন আফটার অল, যিনি কিনা পরমা, পারমিতা, শনকা ভেবেছেন একদা, তিনি কি করেই বা কতই বা... ভুল, ভুল! আমি বুঝিনি!! সত্যি বলতে কি, এখন দেখার পর থেকে একটা অন্ ... ...
পথের শেষ কোথায়... কী আছে শেষে? ... ...
বুড়োবুড়ির স্মৃতি ... ...
দশ বছরের জন্মদিন-এর কাছাকাছি সময়ে, অরুনাংশুদাদুর কাছ থেকে একবাক্স টিনের পুতুল পেয়েছিলো মিতুল। একটা মজবুত কাঠের বাক্সে এক একটা ইঞ্চি ছয়েক লম্বা, প্রায় কুড়িটা পুতুল। অরুনাংশুদাদু কাজের সূত্রে দেশ বিদেশ ঘুরতেন তখন। অতশত ভালো করে মনে নেই মিতুলের, তবে খুব সম্ভব পেশায় সাংবাদিক ছিলেন অরুনাংশুদাদু। তো পুতুলের বাক্সটা খুব সম্ভবত : জর্জিয়া, হাঙ্গেরী বা ইউক্রেন এরকম কোনো পূর্ব ইউরোপের দেশের হবে-ও বা। এটাও যে সেইসময় মিতুলের বোঝার কথা, তা নয়। ... ...