আগে যাঁরা ভাগাড়পাড়া স্কুলের গল্প পড়েছেন তাঁদের অনেক জায়গাই রিপীটেশান মনে হবে। বস্তুত ঐটা আর এদিক ওদিক লেখা আরো কিছু কুড়িয়ে বাড়িয়েই এটা চলবে। আরেকবার ফিরেদেখা। কেউ যদি পড়ে মন্তব্য করেন সম্ভবতঃ উত্তর দেব না, কারণ এটা আমার নিজের জন্যই নিজের সাথে কথা বলা। আগাম মাপ চেয়ে রাখলাম। ... ...
এই মামলার অন্যতম আইনজীবী, বিশিষ্ট বলে খ্যাত, মানবাধিকার রক্ষক আইনজীবী হিসেবে প্রায় সর্বমহল স্বীকৃত, এই মামলা বেচে দেবার চেষ্টা করেছিলেন পদ আদায়ের জন্য। সরকারি পদ। ... ...
আজ মুণ্ডু কাটার পালা গল্পকার ইন্দ্রাণী দত্তর, যাঁকে আমি দীর্ঘদিন ধরে টিটি দিদি বলে ডেকে থাকি। এই জন্য একেবারেই নয়, যে, তিনি একদা টোরান্টোর লোকাল ট্রেনে কালো কোট পরে টিটিগিরি করতেন। ওসব গল্পকথা। কালো কোট অবশ্যই তাঁর ছিল এবং আছে, কিন্তু তিনি হলেন অনুভূতির টিকিট-পরীক্ষক, ট্রেনের সঙ্গে যার কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর টোরান্টোর কালও কবেই খতম হয়ে গেছে। অর্ধেক আকাশ উড়ে এখন তিনি অস্ট্রেলিয়ায় ডেরা বেঁধেছেন, কিন্তু বিশ্বস্ত সূত্রের খবর কোটটি নিয়ে যেতে ভোলেননি। সে বস্তু আজও তাঁর চিরসঙ্গী। ভেন্ডার কম্পার্টমেন্ ... ...
সবাই বলছে গুজবে কান দেবেন না, কিন্তু মানুষের ধর্মই হল গুজবে কান দেওয়া।আপনি একটা ভাল খবর দিন.. সেটা বন্ধুদের মধ্যেই থাকবে কিন্তু খারাপ খবর মূহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। আপনি ফেসবুকে দেখতে পেলেন আপনার এক বন্ধু লিখেছে দেগঙ্গাতে কি কিছু হচ্ছে? আপনি সেখানে গিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আরো অনেকে করলো। একজন বলল হ্যাঁ হ্যাঁ, আমিও শুনেছি!! কি ব্যাপার কে জানে! আরো একজন প্রোফাইল এসে বলল আমার বাড়ি থেকে দশ কিলোমিটার, দাঙ্গার খবর আসছে!! আপনি মোটামুটি নিশ্চিন্ত হলেন যে খবরটার ভিত্তি আছে। উত্তেজনায় আর নি ... ...
কাচের জানলা সারসার। আলো কোথাও জ্বলে, কোথাও ঢিমে আঁচে নিভন্ত। জানলার মুখোশের আড়ালে জীবন। ফুটন্ত চায়ের মত, শুকিয়ে আসা আধাসবুজ ডালের মত। দেওয়ালির আলো মেখে সারারাত ভিজে পুড়ে ওঠা নক্ষত্রের মত। সেই জানলায় ছায়া পড়ে, অনন্তের। "অনন্ত কুয়ার জলে চাঁদ পড়ে আছে।"যে সমুদ্র শ্বাস নেয় তার কাছে সবাই ফকির। প্রচন্ড এক মাথাপাগল লোকের মত, সে শাসায়। মেঘ করে এলে সে লাফিয়ে নাচে, মেঘ সরে গেলে ভিজে ভিজে সে মাতাল ঝিমোয়। পাড়ার কাঁচাপাকা চুল, নোংরা জামার সংকর প্রজাতির মানুষটার মত। সে মাতাল না, মদ কেনবার পয়সা ও ধ্বক ... ...
প্রথম অধ্যায়কোরপান শা এবং একটি মশার গপ্পো।ধরা যাক,আপনি আপনার দিকে ধাবমান একটি মশাকে এক থাপ্পড়ে মারলেন।পেনাল কোড যাইই বলুক না ক্যানো,আপনি জানেন যে আপনার কিস্যু হবেনা কারণ আপনি প্রমাণ করে দেবেন যে মশাটি আপনার দোতলায় বিনা অনুমতিতে ইভনিং ওয়াক কি বাণিজ্যিক চুক্তিতে সাইন করতে নয় বুক পকেটে আণবিক অস্ত্র নিয়ে আপনাকে মারতে আসছিল আর ওই মশাটি পেনাল কোডের খরচা বহন করতে পারবেনা,বিচার তো অনেক পরের কথা।অতএব সার,ওই মশাটার যে মরাটাই ভবিতব্য ছিল তা আমি আপনি ভালোই জানি আর রোজ কত এরকম ... ...
ছোট করে চুল কাটলে আমাকে একদমই বাঙালী বলে চেনা যায় না সেটা আবার আজ টের পেলাম। আর এমনিতে আমাকে দেখে ঠিক কি মনে হয় সেটারও রিমাইন্ডার এসে গেল আজ আমাদের হাউসিং কমপ্লেক্সে ওনম উপলক্ষ্যে মেলা টাইপের বসেছে - নানা ধরণের নারকেল তেল বিক্রী হচ্ছে খুব। কি খাওয়া সেফ হবে সেই ভাবতে ভাবতে দেখতে পেলাম এক দোকানে লস্যি পাওয়া যাচ্ছে। একবোতল ম্যাঙ্গো আর একবোতল স্ট্রবেরী কিনে বগলদাবা করে ফিরছিলাম, সেই দোকানী ভালোবেসে কাগজের ঠোঙায় প্যাক করে দিল সেই প্যাকিং নিয়ে আমি লিফটে ঢুকে দেখি এক দম্পতি। লোকটি আমাকে আপাদমস্তক দেখে হিন্দীতে বলল - - অ্যাই সুইগি ভাই, তুমি এই লিফটে কেন? ভেন্ডরদের জন্য যে লিফট আছে সেটায় যাও নি কেন? - আমি তো সুইগি নয়! - তাহলে জ্যমেটো হবে! তোমাদের তো কোম্পানী লেখা টিশার্ট থাকে। সেটা পর নি কেন? ... ...
জ্বরজারি, পেটখারাপ ও ডাক্তারবাবুরা; ক্যাপসুল বিপ্লব ও স্লাইস ব্রেড দাদুর দস্তানায় রায় পরিবারের এত জন সদস্য, কিন্তু সে হিসেবে অসুখ বিসুখ হত কম। সময়ে হামাদেওয়া শিশু এবং টলটল করে হাঁটা বাচ্চা প্রথমে দুই, পরে তিন হল। কয়েক বছর পরে আরো এক এবং দুই। কিন্তু ততদিনে পৃথিবী বিশেষ বদলায় নি। বাচ্চাদের হত জ্বর ও পেট খারাপ। বড়দের জ্বর; সম্ভবতঃ ওঁরা পৈটিক সমস্যা হলে নিজেরাই সমাধান খুঁজে নিতেন। ... ...
এটা আরো আগে লেখা যেত, আরো পরেও কোন সময়ে লেখা যেত - সত্যি বলতে কি, আদৌ না লিখলেও হত। কারণ এটা নেহাৎই একটা ব্যক্তিগত গপ্প। তবুও লিখছি - গেছোদাদা, মারিয়া আর পাই এর চক্করে। মূল গপ্পটা খুব ছোট, তাই একটু ভূমিকা টুমিকার গোঁজামিল দিয়ে বড় করতেই হচ্ছে আর কি।সময়টা ২০০৯। আমি তখন একটা বীমা কোম্পানিতে অপারেশনস ম্যানেজারের কাজ করতাম। এখানে একটু এই কাজের বিষয়টা সামান্য বিস্তার করি - ডাইনামিক্সগুলো বুঝতে। আমার ডেজিগনেশন ছিল "অ্যাসিস্টান্ট ব্রাঞ্চ সার্ভিস ম্যানেজার" বা এবিএসেম, যদিও ওই "অ্যাসিস্ট্যান্ট" ... ...
ক্লাস সেভেনে উঠে পুঁটির মধ্যে আমূল পরিবর্তন এল। আগে ছিল চুপচাপ, শান্ত ধরণের- এখন হয়ে দাঁড়াল দুর্দান্ত! আগে বাড়িতেও গল্পের বইতে মুখ ডুবিয়ে বসে থাকত, কারো বাড়ি গিয়েও চুপচাপ গল্প শুনত বা যা হাতের কাছে পেত, পড়ে ফেলত। গল্পের বইয়ের নেশা কমেনি মোটেই, তবে দেখা গেল, এখন সারা ক্লাস গল্প করে কাটানোয় তার জুড়ি নেই। পড়াশুনায় তো তার কোনকালেই মন ছিল না। ক্লাস থ্রী থেকে নিজে পড়ছে তো, বুঝে গেছে মোটামুটি কতটা পড়লে উতরে যাওয়া যাবে। দিদিমণিরা জায়গা বদলে বেছেবেছে ক্লাসের সবচেয়ে ঠান্ডা, ঝিমন্ত ধরণের মেয়েদের ... ...
এইখানে লিপিবদ্ধ করা রইল ফেসবুকিয় কিছু টুকিটাকি যেগুলোতে পাবলিক মারহাব্বা দেয় ... ...
১.ঘুম চোখে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁতে ব্রাশ ঘষতে ঘষতে ভালো করে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো অনামিকা, চোখের তলায় কালী জমেছে। রাতে ভালো ঘুম হয়নি, রাত তিনটেয় প্যাকআপ করে ক্লান্তিতে নুইয়ে আসা শরীর টা কোনো মতে বিছানায় এলিয়ে দিয়েছিলো। আজ আবার সকাল থেকে শুট আছে। আজ আজই তার পিরিওডস হওয়ার ছিল। তলপেট ব্যথায় ছিঁড়ে যাচ্ছে। ব্রেকফাস্ট করেই একটা পেইনকিলার খেতে হবে। সারা দিনের শুট, ওই ভারি ক্যামেরা নিয়ে দৌড়োদৌড়ি অসম্ভব না হলে। কেনো যে প্রতিমাসের এই যন্ত্রণা। অসহ্য লাগে। এই পিরিওডস তার মতো মেয়ের কাছে ... ...
হাঁটতে হাঁটতে তিনি পোঁছে গেলেন সেই জায়গাটায় এখন যেখানে গেলে গঙ্গার উলটোদিকে মেটিয়াবুরুজের ফেরিঘাট দেখা যাবে। আর বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে তখন এই পাশের পুরো জায়গাটা জুড়ে চাষ হত গাঁজার। হাঁটতে হাঁটতে জগদীশ বসু ভাবতেও পারেন নি সেদিনের থেকে প্রায় ১২০ বছর পরে এই বোটানিক্যাল গার্ডেন তাঁর নামেই নামাঙ্কিত হবে। আগেকার দিনের শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন এখন পরিচিত “আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন”। ভারতের সবচেয়ে বড় বোটানিক্যাল গার্ডেনের নাম ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত বোটানিষ্টের নামে হবে সে আর আশ্চর্য কি! তবে হালকা আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে বোটানিক্যাল গার্ডেনে জগদীশ বসু-র প্রথম পদার্পণ কোন স্পেশাল গাছ গাছালি দেখতে নয় – গাঁজার চাষ দেখতে! গাঁজার চাষ এবং গাঁজা গাছের ব্যাপারে আলোচনার জন্যই কিউরেটর ডেভিড প্রেইন ডেকে পাঠিয়েছিলেন জগদীশ বোস-কে। একদম সরাসরি তাঁর অফিসে চলে যেতে বলেছিলেন, কিন্তু জগদীশ বোস ভাবলেন আলোচনায় ঢোকার আগে নিজের মত করে গাঁজা গাছগুলিকে দেখে নেওয়া যাক! ... ...
অত্যন্ত ভয়ে ভয়ে ‘কাদম্বরী’ দেখিলাম। একা দেখি নাই অবিশ্যি। সঙ্গে পাড়ার হুলো মস্তানটিকে লইয়া গিয়াছিলাম। কেন? লোকমুখে শুনিয়াছি উহার নাকি একটি ‘আনলাইসেন্সড রিভলবার’ আছে। একেই ‘বম্বকেস’ বাবুর বম্ব খাইয়া হিরোশিমা-নাগাসাকির মত ‘থ’ কেস খাইয়া বসিয়াছি। তাহার পর ‘কাদম্বরী’র সাইড এফেক্টে কী হইবে কে জানে। গঙ্গা যদি কোলে তুলিয়া না লন্, তবে হুলোর রিভলবারই সই! ‘মরিব মরিব সখী, নিশ্চয়ই মরিব-ও-ও-ও-ও...!’ ইয়ে, মানে সব ফিলিমকে খারাপ বলিলে লোকে আমাকে নিন্দুক বলিবে। তাই ‘কাদম্বরী’কে খারাপ বলিব না! ভালোই হইয়াছে। ... ...
পরিবারে স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের যে সমমর্যাদা এবং সমদক্ষতার অবস্থান ছিল, সেখান থেকে অনেকটাই সরে গিয়ে, কৃষিসমাজের পরিবারগুলি পুরুষপ্রধান - পিতৃতান্ত্রিক হয়ে উঠল। মেয়েরা এখন জন্ম থেকেই পরের ঘরে যাওয়ার জন্যে প্রস্তুত হতে থাকল। অতএব আগের মতো দক্ষ শিকারী, অরণ্যচারী হওয়ার থেকে মেয়েরা এখন রূপচর্চা করে, কোমল ও পেলব অবলা নারী হয়ে উঠতে শুরু করল। তাদের সঠিক বরে এবং ঘরে বিয়ে দেওয়াটাই হয়ে উঠল পরিবারের অন্যতম দুশ্চিন্তার বিষয়। ... ...
রিলিফগুলোর মধ্যে বৌদ্ধ জাতকের গল্প , জলের ওপর হাঁটা ইত্যাদি অতিপ্রাকৃত ঘটনা বা মিরাকল , মারবিজয় , মৃত্যুর পর গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ নিয়ে কুশিনগরের মল্ল এবং আরো সাতজন রাজার মধ্যে যুদ্ধ এরকম নানা ছবি খোদাই করা হয়েছে। গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ আটটা রাজ্যের মধ্যে ভাগ হয়। তার কয়েক শতাব্দী পর অশোক সমস্ত দেহাবশেষ সাতটা রাজ্য থেকে সংগ্রহ করে ৮৪০০০ স্তুপ তৈরি করে আবার তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। একমাত্র নেপালের শক্তিশালী নাগ বংশের অধিকারে থাকা রামগ্রামের দেহাবশেষ অশোক সংগ্রহ করতে পারেননি। এই বিদিশার এক বণিকের মেয়ের সঙ্গে অশোকের বিয়ে হয়েছিল বলে নিরিবিলি পাহাড়ের ওপর এই সাঁচিকে তিনি একটা বড় স্তুপ তৈরীর জন্য বেছে নিয়েছিলেন। ... ...
তার পরেরদিন সকালে আবার মা উঠিয়ে দেয় ঘুম থেকে, তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নিতে বলে, ভর্তি হতে যেতে হবে। আমি অবাক হয়ে ভাবি হিন্দু গার্লস কি এত সকালে ভর্তি নেবে? ওদের তো দুপুরে স্কুল, কিছু জিগ্যেস করার আগেই দাদু আমাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে, সেই ভাগাড়পাড়ার স্কুলের দিকেই যাই আমরা। দাদু আমাকে নিয়ে ‘বালিকা শিক্ষা সদন জুনিয়র হাই' স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়, বিলবইতে লেখা ছিল নামটা, ইরাদিদিমণি হেডমিস্ট্রেস। কিন্তু এখানে কেন সেটা যদি কেউ একটু বুঝিয়ে দিত! জানুয়ারী মাসে তো তেমন ক্লাস হয় না, রোজই প্রায় দশটায় ছুটি। আমি বাড়ী ফিরে দেখি শুভ্রা, রিঙ্কু, শর্বরী, মিঠু, সাতুরা এ ওর বাড়ী গিয়ে ডাকাডাকি করে একজায়গায় হয়, তারপর একসাথে খুব মজা করতে করতে যায়, ইলু, শীলুও হীরালাল পালে ভর্তি হয়েছে এই বছর, ওরাও যায়। ওদের স্কুলে রোজ ড্রেস পরতে হয় না, বেশীরভাগ দিন ওরা পরিস্কার এমনি জামা পরে স্কুলে যায়, মাঝে মধ্যে সবুজ-সাদা স্কুলড্রেস পরে। আমার তো আর ওদের সাথে হইহই করে যাওয়া হয় না, আমি থেকে যাই ভাগাড়পাড়া স্কুলে ফেলের মধ্যে ফার্স্ট হয়ে। ... ...