অনির্বাণ মুখার্জীর লেখা তিন বাহু দশ মুখ নামক বইটির আলোচনা। ... ...
আমাকে যদি কেউ চট করে জিজ্ঞেস কর, ভাই বেড়াতে বেড়িয়ে তোমার অনুভূত এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে ওভার-হাইপড জিনিস কি? খুব বেশী না ভেবে যে জিনিসটির কথা আমার মনে সর্বপ্রথম চলে আসবে তা হল – ভেনিসে গন্ডোলা চেপে ঘোরা!বেশ কিছু ইতালি বা মলটা দেশের বন্ধু বান্ধব থাকার জন্য গন্ডোলা নিয়ে আজকের দিনের ওভার-হাইপড ব্যাপারটা আগেই শুনেছিলাম। কিন্তু যা হয় আর কি – জেনেশুনেই বিষ পান করতে হয় আমাদের সবাইকেই মাঝে মাঝে। বিশেষ করে যেখানে এই গন্ডোলার সাথে কিভাবে যেন রোমান্টিকতা জুড়ে যায় – তার পর আর কিভাবে এ জিনিস চাপা থেকে নিজেকে এড়াতে পারেন যদি কেবল আপনারা দুটি-তে ঘুরতে যান! গন্ডোলা যার রোমান্টিক চাপে পড়ে চেপেছিলেন, নৌকাবিহার শেষে সে আপনাকে জিজ্ঞেস করবে – “কি দারুণ, না?” আপনি বুদ্ধিমান হলে শুধু “হুঁ” বলে চুপ করে যাবেন - ... ...
নামদাফায় যদিও বিগ ক্যাট প্রজাতির চার রকম প্রাণীর (টাইগার, লেপার্ড, স্নো লেপার্ড, ক্লাউডেড লেপার্ড) সন্ধান পাওয়া যায় তবে এতটা নীচে লোক চলাচলের পথের এত কাছে তারা আসে না, বলা ভাল তাদের আসার দরকার হয় না (ভাগ্যিস!), জঙ্গল এখনো যথেষ্ট ঘন এবং জঙ্গলের অনেকটাই মানুষের, অন্তত শহুরে মানুষের জন্য প্রায় অগম্য স্থান। কিন্তু চোরাই কাঠ পাচারকারিদের উৎপাতে বেমক্কা বন নিধনের ফলে নামদাফার জীববৈচিত্র্য অনেকটাই ঝুঁকির মুখে। আর কতদিন তথাকথিত উন্নয়নের জাঁতাকল ও ধ্বংসযজ্ঞ থেকে নামদাফা বাঁচবে জানি না, এখনো অন্তত অনেকটাই আছে। এমনকি নদীর ওইপারের কোর এরিয়াতে না ঢুকলেও প্রজাপতিই যে কতরকম দেখা যায়, পাখি সেও তো কতরকমই দেখা যায় আর দেখা যায় নানারকম রঙ বেরঙের পোকা। ও হ্যাঁ নামদাফায় কিন্তু প্রচুর অজস্র জোঁক। এখানে পাঁচ রকম বিভিন্ন প্রজাতির জোঁক দেখা যায়। শুকনো আবহাওয়ায় এমনিতে জোঁক কম হলেও ডিসেম্বরেও কিছু জোঁক দিব্বি মানুষের গোড়ালি কিম্বা জুতোমোজা ও জিন্সের ফাঁক গলে পায়ের গোছে ঝুলে পড়েছে। ... ...
“ত্র্যম্বকের ত্রিনয়ন ত্রিকাল ত্রিগুণশক্তিভেদে ব্যক্তিভেদ দ্বিগুণ বিগুণ।বিবর্তন আবর্তন সম্বর্তন আদিজীবশক্তি শিবশক্তি করে বিসম্বদী।আকর্ষণ বিকর্ষণ পুরুষ প্রকৃতিআণব চৌম্বকবলে আকৃতি বিকৃতি।কুশাগ্রে প্রবহমান জীবাত্মবিদ্যুৎধারণা পরমা শক্তি সেথায় উদ্ভূত।ত্রয়ী শক্তি ত্রিস্বরূপে প্রপজ্ঞে প্রকট —সংক্ষেপে বলিতে গেলে, হিং টিং ছট্।।”- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরওঁ স্বস্তি। এথে কলিযুগস্য পঞ্চসহস্র একশতবিংশতিবর্ষ গতে অথ চতুর্দ্দশশত চতুর্বিংশতি সংবৎসরে চ ... ...
আমি নিজের দিক থেকে কিছু বেশ পুরানো এবং বহুল প্রচলিত কথা ভাবছিলাম – এই যে ‘আর্ট’ (এখানে ধরা যাক কবিতা) তার সফলতা ঠিক কতটা বা কিভাবে নির্ভর করা উচিত যে পড়ছেন (বা যে দেখছেন) তাঁর উপর? এই প্রসঙ্গে V.S. Ramachandran এর লেখা “The Tell-Tale Brain” বইটির সপ্তম পরিচ্ছদে খুব সুন্দর আলোচনা আছে – “Beauty and The Brain – The Emergence of Aesthetics”. একটি বিখ্যাত উদাহরণ আছে, যেখানে বলা হচ্ছে শিল্পী Marcel Duchamp আর্ট গ্যালারীতে একটি প্রসাব করার চিনামাটির পাত্রগুলি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন এই দাবী করে যে, “আমি বল ... ...
‘কেন? আমরা ভাষাটা, হেসে ছেড়ে দেবো?যে ভাষা চাপাবে, চাপে শিখে নেবো?আমি কি ময়না?যে ভাষা শেখাবে শিখে শোভা হবো পিঞ্জরের?’ — করুণারঞ্জন ভট্টাচার্য স্বাধীনতা-পূর্ব সরকারি লোকগণনা অনুযায়ী অসমের একক সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাষাভাষী মানুষ ছিলেন বাঙালি। দেশভাগের পরেও অসমে বাঙালি ছিলেন মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ। স্বাভাবিক কারণেই সেই সময় অসমিয়া প্রধান সরকারি ভাষা ঘোষিত হলেও সমগ্র অসমে সরকারি স্তরে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে চালু ছিল বাংলা। কিন্তু তার পর শুরু হয় ঠান্ডা মাথায় ছক কষার কাজ। অসমের প্র ... ...
ধড়মড় করে উঠে বসলো অজয়। ভয়ার্ত চিৎকার করে উঠলো। নিমেষে ঘুম ভেঙে গেলো দীপার।"ক্কি ?" উৎকন্ঠায় গলা বসে গেছে দীপার "কি হোলো?" "শুনতে পাচ্ছো?""পাচ্ছি" দীপা বলে। একটা শব্দ। ঠিক চেনা যাচ্ছে না। কারুর আওয়াজ। কোনো দুর্বোধ্য ভাষায় কেউ বিড় বিড় করছে। না, মনে হচ্ছে গান গাইছে। কান পেতে শোনে দীপা। কেউ যেন অনেক দুরে চেঁচিয়ে উঠলো। অজয়ের বুকে কান পাতে। হৃতপিন্ডের ধুকধুক আওয়াজের সাথেই অস্ফুট একটা হাসি। শুনতে পায়।"আমার বুকের মধ্য থেকে। কেউ। কিছু। কথা বলছে।"দীপা উত্তর দেয় না ... ...
আমার প্রতিবাদের শাড়িসামিয়ানা জানেন? আমরা বলি সাইমানা ,পুরানো শাড়ি দিয়ে যেমন ক্যাথা হয় ,গ্রামের মেয়েরা সুচ সুতো দিয়ে নকশা তোলে তেমন সামিয়ানাও হয় । খড়ের ,টিনের বা এসবেস্টাসের চালের নিচে ধুলো বালি আটকাতে বা নগ্ন চালা কে সভ্য বানাতে সাইমানা টানানো আমাদের গ্রাম দেশে রীতি । আমার মা এ ব্যাপারে এক্সপার্ট । পুরানো , রঙ ওঠা ,ছেঁড়া দু একটা শাড়ি এদিক ওদিক কেটে হাতে সেলাই করে তিনি এমন সাইমানা বানিয়ে দেবেন যা দেখে আচ্ছা আচ্ছা দর্জি চমকে যাবে । আমি তখন গাজিপুরে আলুর গুদাম তৈরির কাজে জোগাড়ে ... ...
বৌদ্ধধর্ম তিব্বতে পৌঁছেছিল সপ্তম শতাব্দীতে। কিন্তু তার আগে ভারতবর্ষে কীরকম ছিল তার চেহারা? হীনযান, মহাযান কী? নির্বাণই বা কী? ... ...
তিনি ছিলেন আমার রাঙামা। আসলে রাঙা ঠাকুমা। বাবার মেজ কাকিমা। কিন্তু সকলের কাছেই তিনি একডাকে পরিচিত ছিলেন এই রাঙামা নামেই। একেবারে টুকটুকে গায়ের রঙের সঙ্গে আদরের ডাকের কী মিল! মাথায় কালো চুলের বড়ি খোঁপা। ছোটখাটো চেহারা। সংসারের হাজারো কাজ সামলে ওই বয়সেও মসৃন ত্বক। আদতে দ্বারভাঙার কন্যা। কবি যদিও বলেছেন, "যব-ছাতু খেয়ে বাঁচে পশ্চিমের দীনে," পশ্চিমে কিন্তু লোকপ্রিয় ছোলার ছাতু। উত্তরবঙ্গে বলতে শুনেছি, বুটের ছাতু। তা রাঙামা ছিলেন এই ছোলার ছাতু মাখার স্পেশালিস্ট। তাঁর হাতের তারে সেই ছাতু মাখা গোল বলের মতো দলার যে কী সুস্বাদ ছিল তা এখনও ভুলতে পারি না। আজকের আধুনিক প্রজন্ম এমন সব আটপৌরে জলখাবারের মর্মই হয়ত বোঝে না। তবে আজও এই সব সাধারণ ঘরোয়া খাবার নিয়ে বসলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে পৃথিবী থেকে একে একে চলে যাওয়া প্রিয় মুখগুলি যাঁদের স্নেহ, আর ভালোবাসা আমাদের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিকে এমন উজ্জ্বল করে রেখেছে। ... ...
কৈশোর থেকে যৌবনের উড়াল। বদলে যায় পরিবেশ। বদলে যায় স্বজন-বান্ধব-পরিচিতি। বদলে যায় সময়। বদলে যায় জীবন, পুর্ব-লালিত ধ্যান ধারণা। সবার নয়, কারোর কারোর। এ বদলের ছাপ আবার সবসময় বাইরে পড়ে না। তাই আশেপাশের অজান্তেই ঘটে যায় অদল-বদল। আর কখনো কখনো এই বদলের কেন্দ্রে থাকে একটি জড়বস্তু। একটি শিক্ষাস্থান। খিড়কী থেকে সিংহদুয়ারের জীবনে খোলা হাওয়া। বদলের ক্যাটালিস্টও। জীবনে বদলই ধ্রুব। জ্ঞানীরা তাই বলেন। তবু কতটা সহজ হয় এই অন্তর-যাত্রা? কতটা মূল্য দিতে হয়? ... ...
সেদিনও এমনি বূষ্টি পড়ছিল।জানলার বাইরে অশ্বত্থের পাতাগুলো এমনি করে ভিজছিল।স্প্রিংয়ের গদিওলা সেগুনের খাটে,যেটা এখন জানলার পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, একটি পাহাড়ি মেয়ে রণধীরের সঙ্গে লেপটে শুয়েছিল। জানলার বাইরে দুধসাদা অন্ধকারে অশ্বত্থের পাতাগুলো ঝুমকোর মত থরথরিয়ে কাঁপতে কাঁপতে নাইতে লেগেছিল।আর থরথর পাহাড়ি মেয়েটি রণধীরের গায়ে লেপটে শুয়েছি ... ...
ঠিক পড়েছেন। অন্য এক প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টরের কাছে লেখা খোলা চিঠিতে সই করার ‘অপরাধে’ তাঁদের শো-কজ হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের গবেষণার খাতে বরাদ্দ সমস্ত টাকা প্রতিষ্ঠান আটকে দিয়েছে। আগামী ১৩ তারিখের মধ্যে সেই চিঠির উত্তর দিতে হবে অভিযুক্ত অধ্যাপকদের। মোহালিরই এক অধ্যাপকের মন্তব্য, “কোনো CCS (Central Civil Services) আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে বলে আমি মনে করি না, … গোটা দেশে, বৃহত্তর পরিসরে যা হচ্ছে এ আসলে তারই প্রতিফলন। ‘শুধু প্রতিবাদ-ই শাস্তিযোগ্য অপরাধ’—বছরের পর বছর এই মানসিকতাই গড়ে তোলা হচ্ছে গোটা দেশে।” ... ...
পৃথিবীর বয়স কত? ধরুণ গিয়ে ঐ মোটামুটি ৪.৩ বিলিয়ন ইয়ার, মানে ওই ৪৩০ কোটি বছরের মত আর কি। তো এই এত বছর বয়সে পৃথিবীর বুক থেকে ‘প্রাণ’ নাম জিনিসটার পুরোপুরি অবলুপ্তি হয়েছে বার কয়েক ধরে নেওয়া যাক। ওই যেমন ডাইনোসার রা হাপিস হয়ে গিয়েছিল। সেই অর্থে মনুষ্য প্রজাতির (হোমো স্যাপিয়েন্স) এর অবলুপ্তি পৃথিবীর বুক থেকে এখনো হয় নি। কিন্তু যদি হত? ... ...
৩৩।কলকাতা থেকে ফিরে আসা ইস্তক মনটা ভীষণ ভালো হয়ে রয়েছে সুধার। এত দিনের স্বপ্ন এবার পূরন হতে চলল। এম.এ.-তে ভর্তি হতে গেছিল ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটিতে। ইউনিভার্সিটির চৌহদ্দির বাইরে পায়ে পায়ে বেড়িয়ে এসে হাতে ধরে থাকা মাইনে জমা দেওয়ার বইটার দিকে চেয়ে অদ্ভূত একটা শিহরণ খেলে গেছিল ওর সারা শরীরে। কলেজ স্ট্রীট দিয়ে শিয়ালদা স্টেশনের দিকে হাঁটতে হাঁটতে বাবা অনেক কথাই বলছিল কিন্তু সব কথা ওর কানে ঢুকছিল না। কলকাতায় থেকে পড়তে পারবে - এ সুখ চিন্তাটাই মাথায়-মনে খেলে বেড়াচ্ছিল সারাক্ষণ। দুটো একটা শব্দে ... ...
আবার একটা বাজে দিন। তবে এবার লোকজন আর ছেড়ে দেবে না। আজ পালানোটা খুব দরকার। আজ আবার রেজাল্ট বেরোবে। আমি জানি, আবার ফেল করবো। আর সঙ্গে সঙ্গে বিয়ে বিয়ে করে শুরু হয়ে যাবে। কেন রে বাবা, বিয়েটা কি করে সমাধান হয়। আমি মাধ্যমিকটা ভালই পাস করে গেছিলাম। ভালই মানে এক চান্সে। আমার রেজাল্ট কোনো কালে " ভাল" ছিল না। একবারে পাস করায় বাড়ির সবাই খুশী হয়েছিল। আমার তারপর পড়াশুনো মাথায় ঢুকছে না। মানে ইচ্ছে করছে না ও বলা যায়। আমি গান গাই ভাল। আমি রান্না করি দারুণ। আমি দেখতেও বেশ। সবাই আরেকবার ফিরে তাকাত ... ...
মেহতা সাব কেমন যেন চুপসে গেছেন, থ্যালিয়াম সালফেটের ভিসেরা রিপোর্ট দেখার পর কি? কুমড়োপটাশ পরিহারজি আঙুলের নখ খুঁটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোসলে স্যার ফাইলে কোন কাগজ দেখছেন, এবং নিজের কিছু নোটস। এবার সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন। ... ...
[গণমাধ্যমে প্রায়ই মজার মজার কিছু সত্যি ঘটনা ঘটে। এ সব কখনো কখনো প্রচলিত হাস্য কৌতুককে হার মানিয়ে দেয়। আবার এসব প্রেস জোকসের নেপথ্যে থাকে কষ্টকর সাংবাদিকতা পেশাটির অনেক অব্যক্ত কথা। এমনই কিছু বাস্তব ঘটনা নিয়ে এই 'প্রেস জোকস' পর্ব। রীতিমত প্রাপ্তমনস্কদের জন্য রচনা।]ট্যাক্স ফ্রি_______বিখ্যাত ফটো সাংবাদিক মোহাম্মাদ আলম (কিছুদিন আগে প্রয়াত) ভাইয়ের ঘটনা। ১৯৭২-৭৩ সালে আলম ভাই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত আলোকচিত্রী। পানপ্রিয় আলম ভাই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সাথে মস্কো সফর শেষে ... ...
( দ আর কেউ কেউ একজায়গায় চেয়েছিলেন লেখাটা , কিন্তু আজকে কি জানি কেন আমার 'add to first post' অপশনটা পাচ্ছি না , কাল কিন্তু পেয়েছিলাম। ক্ষমাপ্রার্থী। )--------------------------------------------------------------------------------------------------------জীপসাফারি-র বাকি গল্পটুকু-তে এখন থাক। তার আগে বলি , এই পর্যন্ত পড়ে যারা ভাবছেন , সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসাবে কিউবা স্বর্গরাজ্য , বিশেষতঃ যাঁরা পারিশ্রমিক আর কাজের সুযোগ-এ অথবা উচ্চশিক্ষার উৎকর্ষে , আমেরিকার সুবৃহৎ দক্ষতার বাজারে প্যাম্পার ... ...