দম বন্ধ করে, দাঁত চেপে দেখে শেষ করলাম নতুন করে বানানো ক্লাসিক 'অল কোয়ায়েট অন দা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট'। এরিক মারিয়া রেমার্কের অসাধারণ এই উপন্যাস অবলম্বনে এর আগে আরও দুইবার সিনেমা বানানো হয়েছে। ১৯৩০ সালের সিনেমাটা দুর্দান্ত ছিল। এবারের সিনেমা নেটফ্লিক্স তৈরি করেছে এবং অসাধারণ ভাবেই তৈরি করেছে। এই সিনেমা নেটফ্লিক্স কেন হলে মুক্তি দিল না তা আমার ঠিক বুঝে আসল না। এই বছরের অন্যতম সেরা সিনেমা এইটা। অস্কারের জন্য যোগ্য দাবিদার হতে পারত কোন সন্দেহ ছাড়াই। একাডেমী অ্যাওয়ার্ডের নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়ন পেতে হলে সিনেমাকে অবশ্যই হলে মুক্তি দিতে হবে এবং কয়েক সপ্তাহ অন্তত চলতে হবে। সেই সূত্রে অল কোয়ায়েট অন দা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট অস্কারের জন্য মনোনীত হবে না হয়ত। ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্যাটাগরির নিয়ম জানা নাই, আইএমডিবির তথ্য অনুযায়ী এইটা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্যাটাগরিতে এবারের জার্মান মনোনয়ন অস্কারের জন্য। অস্কারের ছোট্ট তালিকায় জায়গা পেলে আমি অবাক হব না, বরং খুশিই হব। ... ...
আমার বাবাকে জীবনকালে , আমার জ্ঞান ও বিশ্বাসমতে, থানায় যেতে হয়েছিলো একবারই। কোনো অপরাধ করায় পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিলো তা নয়, নিছক স্নেহের আকুল টান বাবাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো 'মামা'দের মাঝে। 2007 সাল। তখন এপ্রিল মাস। 14ই মার্চ ঘর ছেড়ে মাসতুতো বোনের বাড়ী চলে আসবার পর, 17 তারিখ আমার বড়কন্যেকে তার ইচ্ছাক্রমে আমার কাছেই আনতে , জলপাইগুড়ি যাই বাবার বাড়ীতে, যেখানে তারা দুইবোন অ্যানুয়াল পরীক্ষা শেষে অভয়ারণ্যে বিচরনের আনন্দ উপভোগ করছিলেন। তো, বড়মেয়েকে নিয়ে আমি বেড়োলাম উকিলের সাথে দেখা করতে, আর ছোট ... ...
অপৌরুষেয়---------------শাড়ি মানে শাটী বা শাটিকা, একটি পরিধান বিশেষ, যা এদেশে গত পেরায় হাজার দুই বছর ধরে নারীর সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে চলেছে । এই শব্দটির উল্লেখ প্রথম পাই বৌদ্ধ জাতক কথায় । তখন অবশ্য শাটী ছিলো অধোবস্ত্র, উত্তরাঙ্গে উত্তরীয় ব্যবহার করা হতো। আর্যযুগে পুরুষ ও নারী উভয়েরই পোষাক ছিলো একই রকম । পুরুষের অধোবস্ত্রে কাছা থাকতো, সহজভাবে কাজকম্মো করার জন্য আর নারীর শাটীতে থাকতো কোঁচা । তাও ছিলো অভিজাত নারীদের লক্ষণ । সাধারণ মানবীরা সচরাচর শাটীটি কটীদেশে জড়িয়ে পরতো ... ...
ভূত সম্বন্ধে দু-চার কথা যা আমি জানি। ... ...
সময়টা ১৯৪০ সালের আশেপাশে – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তখন জাপানের অবস্থা ভালো নয়, নানা দিকে পিছু হটছে জাপানী ইম্পিরিয়াল বাহিনী। সাধারণ লোকেরাও বুঝতে পারছে যে এই যুদ্ধে জাপানের পরাজয় প্রায় আসন্ন। কিন্তু তখনও সম্রাট এবং তার বাহিনী শেষ কামড় দিতে লড়ে যাচ্ছে। নিত্য নতুন সৈন্য নিয়োগ হচ্ছে – প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে যুবক সম্প্রাদয় নিযুক্ত হচ্ছে যুদ্ধে যাবার জন্য। পরিবার জানাচ্ছে সেই সব তরতাজা যুবকদের বিদায় – মুখে বলছে সবাই, কারো বাবা-মা, কারো প্রিয়তমা, কারো ভাই, কারো স্ত্রী – “শপথ করো আবার দেখা হবে” – কিন্তু প্রায় সকলেরই চোখের কোণের জল টের পাচ্ছে যে এই শপথ রক্ষার প্রায় কোন উপায়ই নেই! সেদিনের দেখাই শেষ দেখা! ঠিক এমন ভাবেই বিদায় জানাচ্ছিলেন মাসাকি তাকাওকা তাঁর ছাত্রদের। মাসুকি তখন ইহিমে পার্বত্য এলাকার এক ছোট্ট গ্রামের কৃষি বিদ্যালয়ে পড়াতেন। সেই বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে ছিল এক বিরাট চেরী গাছ। মাসাকি জানতেন আসল সত্যি – কিন্তু তবুও প্রত্যেক ছাত্রের হাতে হাত রেখে অঙ্গীকার করছিলেন যে আবার দেখা হবে স্কুল প্রাঙ্গণে ফুল ফুটে ভরে ওঠা চেরী গাছের তলায়। যুদ্ধের পর যেন তারা সবাই আবার স্কুল প্রাঙ্গণের চেরী গাছের তলায় ফিরে আসে। ... ...
অনেকদিন আগে একবার দিন সাতেকের জন্যে ভূটান বেড়াতে যাব ঠিক করেছিলাম। কলেজ থেকে বেরিয়ে তদ্দিনে বছরখানেক চাকরি করা হয়ে গেছে। পুজোর সপ্তমীর দিন আমি, অভিজিৎ আর শুভায়ু দার্জিলিং মেল ধরলাম। শিলিগুড়ি অব্দি ট্রেন, সেখান থেকে বাসে ফুন্টসলিং। ফুন্টসলিঙে এক রাত্তির থাকব। পরের দিন পারোর পার্মিট নিয়ে বাসে করে পারো হয়ে থিম্পু। এই হল প্ল্যান। প্রথমেই গর্দিশ। আমাদের পারো যাবার পার্মিট দিলনা। কাজেই সোজা থিম্পু। থিম্পুতে নেবেই মালুম হল এখানে সাতদিন কেন, তিনদিনও থাকা যাবেনা। করার মতন কিচ্ছু নেই। দ্বিতীয়দিন ... ...
সাম্রাজ্যই হোক বা কোন উদ্যোগই হোক, তার সাফল্য এবং দীর্ঘস্থায়ীতা নির্ভর করে প্রশাসনিক দক্ষতার ওপর। আমার বিস্ময় এখানেই, কোন প্রশাসনিক দক্ষতার জোরে, বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা এমন একটা উদ্যোগকে এত দীর্ঘ সময় সাফল্যের সঙ্গে টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হল? আমার বিশ্বাস – এই প্রশাসন চালাতেন নির্বাচিত কোন গণসঙ্ঘ বা বুধমণ্ডলী। তাঁদের এতদিন ধরে সগৌরবে টিকে থাকার রহস্য হল বন্ধুত্বপূর্ণ নিবিড় যোগাযোগ। তাঁদের মূলমন্ত্র ছিল – যুদ্ধ নয়, রাজ্য জয় ও ক্ষমতার লিপ্সা নয় - মৈত্রী এবং সহযোগীতা। যার সূচনা করেছিলেন, পিতা পশুপতি, মাতা মিত্তিকা এবং বিশ্ভাই। ... ...
আমার শিক্ষকবেলা... ছবিটা দেখতে দেখতে সেই কতোদিন আগে ফিরে যাচ্ছি। ওই ছোট্ট ছোট্ট দুষ্টুমিষ্টি মুখগুলো আমার আর শর্বাণীদির চারপাশে ...... আচ্ছা, ওদের মধ্যে কি আমিও আছি? একই সংগে আমার শৈশব আর যৌবন পাশাপাশি?...... কেমন যেন ধাঁধা লেগে যাচ্ছে। আসলে স্কুলের ওই মাঠটা যেখানে ছবি তোলা হয়েছে, যে গাছটার নিচে, ঠিক ওইখানেই যে আমিও ছোটবেলায় খেলে বেড়িয়েছি! ওই গাছটার নিচে হত আমাদের প্রার্থনা, একদিন গাছের ডাল থেকে টুপ করে আমার মাথায় খসে পড়েছিল শুঁয়োপোকা আমারই ... ...
বই পড়া যদি বা হয়, বই নিয়ে দুই কলম লেখা আর হয় না মোটে| কয়েকটা বই সম্পর্কে অন্তত দু'চারলাইন লিখে না রাখলে বইগুলোর প্রতি বোধহয় একটু অবিচারই হয়| আপাতত তিনটে বই নিয়ে বলি|১) বাঁকাউল্লার দপ্তর সটীক সংস্করণ - সম্পাদনা প্রসেনজিত দাশগুপ্ত, সৌমেন পাল ২) ভারতে রাজনৈতিক কার্টুনচর্চা - সুমিত ঘোষ ৩) ঈষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও ভারতের অর্থনৈতিক ইতিহাস - তীর্থংকর রায়তিনটি বই একটু সময় নিয়ে পড়তে হয়, থ্রীলার পড়ার মেজাজে পড়ে ফেলা যায় না| কাগজে ছাপা বইয়ের মুদ্রণসৌকর্য আমার কাছে যথেষ্ট গুরু ... ...
পর্ব এক"মদন, বাবা আমার ঘরে আয়। আর গাছে গাছে খেলে না বাবা। এক্ষুনি ভোর হয়ে যাবে। সুয্যি ঠাকুর উঠল বলে।"মায়ের গলার আওয়াজ পেয়ে মদনভূত একটু থমকাল। তারপর নারকেলগাছটার মাথা থেকে সুড়ুৎ করে নেমে এল নীচে। মায়ের দিকে তাকিয়ে মুলোর মত বিরাট বিরাট দাঁত বার করে একটা ফিচকে হাসি হেসেই আবার উড়ান দিল পরের গাছটার উদ্দেশ্যে। মায়ের কথা শুনতে আজ ওর ভারি বয়েই গেছে। কতদিন বাদে এসেছে এমন শান্তির রাত। সব্বাই যে যার ঘরে খিল দিয়ে ঘুমোচ্ছে। নয়তো আজকাল রাত হলেও ছেলে-ছোকরারা ঘুমায় না। হাতে কি ... ...
এক‘৯০ এর ছাত্র-গণআন্দোলনের শেষ প্রান্তে চরম দীনতার অনুসঙ্গে খানিকটা ঘটনাচক্রেই ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়ার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। এর আগে নির্ঘাত কোনো না কোনো কাগজে বা সাময়িকপত্রে তার চমৎকার সব ছড়া পড়ে থাকবো।…সে সময় জেনারেল এরশাদ কবিকূলকে কিনতে শুরু করলে দেশের শীর্ষ কবিরা এর প্রতিবাদে গঠন করেন জাতীয় কবিতা পরিষদ। রাজকবিদের বিরুদ্ধ স্রোতের বাইরে পরিষদ আয়োজন করে ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দুদিন টিএসসির সড়কে ‘জাতীয় কবিতা আন্দোলন’, পরে তা ‘জাতীয় কবিতা উৎসব’এ রূপ ... ...
‘ভাই আর্জেন্ট, ‘অন্তরিত তামার তার’ এর ইংরেজি কী হবে? কুইক…’ফোনের ওপাশে বসুর চাপা গলা। অম্লান বসু- ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ, টিটি বোর্ডে অপ্রতিরোধ্য, গমগমে গলায় ‘উদভ্রান্ত সেই আদিম যুগে…’ শুরু করলে ক্যান্টিনে বাকি সব চুপ- সেই বসুর সন্ধ্যাবেলায় চাপা গলায় আর্জেন্ট ফোন মানেই ওর ভোকাবুলারিতে টান। তমলুকের ছেলে, সোনার ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মত মাধ্যমিক- উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট, কিন্তু ওর ছাত্রকে পড়াতে বসলেই দরদরিয়ে ঘামে। পদার্থবিদ্যা আর ফিজিক্স যে দুটো দুই গোলার্ধের বিষয়, দু’টো ... ...
প্রায়ই আমায় নিজের ড্রয়ার থেকে গেঞ্জি বার করে বাবার ড্রয়ারে রেখে দিতে হত; আর প্রতিবারই মনে হত, একটি নতুন স্যান্ডো আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে বাবার জন্য। কিন্তু তারপরই স্মৃতি থেকে ধুলোর মত উড়ে যেত সেই স্যান্ডো। ... ...
হিন্দু শব্দটার উৎস নিয়ে একটা সংশয় অনেকের দেখতে পাই। এটা নিয়ে আলোকপাত করছি। শব্দটির অস্তিত্ব সুলতানী আমলের আগে ছিল কিনা সেই নিয়ে অনেকের সংশয় দেখা যায়। প্রথমেই বলি, এই লেখার উদ্দেশ্য হিন্দু ধর্মের উৎপত্তি খোঁজা নয়, বরং হিন্দু শব্দটার ব্যুৎপত্তি খোঁজা। ... ...
আগামী সপ্তাহে খুব সম্ভবত সংসদে পেশ হতে চলেছে হাইয়ার এডুকেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এইচইসিআই) বিল ২০১৮। এই বিল পাশ হয়ে গেলে ১৯৫৬ সালের ইউজিসি অ্যাক্ট রদ হয়ে যাবে, এবং ইউজিসির পরিবর্তে গঠিত হবে একটি নতুন উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা, যার নাম এইচইসিআই। প্রশ্ন উঠতেই পারে, তাতে কী এসে গেল? বিশেষত শিক্ষাবিদরা যখন মাসে একবার ইউজিসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে থাকেন, অতএব ইউজিসি ভেঙ্গে দেওয়া হলে তাঁদের আপত্তি কেন? আপত্তি অনেক। প্রাথমিক স্তরে মাননীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী প্রকাশ জাভা ... ...
পাওলো ফ্রেইরি-র শিক্ষাতত্ত্ব নিয়ে কাজ করার আগে একটা ভয় দেখানোর দরকার আছে। আপনি কাজ করবেন কিন্তু সীমিত সময়ে জীবিত মানুষ নিয়ে, যাদের জীবনের অনেকটা সময় কিন্তু আপনার হাতে থাকবে। দায় কিন্তু অনেকটাই আপনার উপর বর্তাবে। পাওলো ফ্রেইরি-র শিক্ষাতত্ত্ব আমি যেটুকু বুঝেছি তা মূলত কাজ করতে করতে, যে বোঝাটা আজও প্রতি পদে পাল্টাচ্ছে, আশা করি, উন্নততর হচ্ছে। পদ্ধতি যতটা বুঝছি, তা থেকেই বুঝতে পারছি যে তার প্রয়োগ অনেক সময়েই ত্রুটিপূর্ণ হচ্ছে। একটা কারণ হয়ত এটা বুঝতে না পারা (বা আত্মতুষ্টিও হতে পারে) যে প্রত্যেক ... ...
ভোজনরসিক বাঙালি ... ...
বারো তেরো বছর আগেকার কথা।তখন হৈ হৈ করে দুর্গা পুজো কালি পুজোর চাঁদা তুলতাম।একবার হয়েছে কি যে যে বাড়ির কোটাগুলো ছিল সেই সব কটা বাড়ির চাঁদা তোলা হয়ে গেছে।হাতে আরো কয়েকদিন সময়ও আছে।তো নতুন মার্কেট ধরার জন্য আমরা পাড়া থেকে একটু দূরে গেলাম।যদি কিছু চাঁদা আরো এক্সট্রা পাওয়া যায় তাহলে সেটা হবে ওভার টার্গেট অ্যাচিভ এর মত ব্যাপার।সেই অনুযায়ী একটা বাড়িতে ঢুকেছি।দরজায় নক করলাম, ভেতর থেকে একজন বলল কে? বললাম আমরা দুর্গা পুজোর চাঁদা নিতে এসেছিলাম এই ক্লাবের থেকে।দরজা খুলে গেল।তখনো লোকে চাঁদার নামে এখনকার মত এ ... ...