দেবযানী ভট্টাচার্য লিখিত কলিকাতার কসবি কিস্সা বইটির আলোচনা। ... ...
এই ধরুণ যেমন আমরা সবাই জানি নায়ক সিনেমায় উত্তমকুমারকে হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনের খন্যান স্টেশনে চা-খেতে নামিয়ে মাষ্টার স্ট্রোক দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনদিন ভেবে দেখেছেন কি এত স্টেশন থাকতে খন্যান কেন? এখনকার খন্যান স্টেশন আর সেই ১৯৬৫-৬৬ সালের খন্যান স্টেশনের মধ্যে যদিও অনেক পার্থক্য, কিন্তু তখনো খন্যান স্টেশনের একদিকে ছিল তালান্ডু আর অন্যদিকে পান্ডুয়া। তাহলে খন্যান কেন? ... ...
অনেক অনেক দূরে শাল বনের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে একটা লাল মাটির পথ ছিল আর পথের শেষে ছোট্ট একটা গ্রাম। সেই গ্রামে একটা ছোট্ট মেয়ের বাড়ি। জানি এ পর্যন্ত পড়েই আপনারা ভুরু কুঁচকে ভাবছেন, এ আর নতুন কথা কি? পথের শেষে গ্রাম থাকবেই আর সে গ্রামে যে একটা না একটা মেয়ে থাকবে সেও তো জানা কথাই। এ আর নতুন কি? আহা, ধৈর্য ধরে একটু শুনুনই না. হয়তো নতুন কিছু আছে এ গল্পের শেষে। যাকগে যা বলছিলাম, গ্রামের সেই ছোট্ট মেয়ে একটা কুঁড়েঘরে থাকে তার মা বাপের সাথে। মেয়ের নাম বাহামনি, না আপনাদের সিরিয়ালের নয়, এ ... ...
যুদ্ধের বিগ্রহ এক শ্রেষ্ঠ দেবতা। তিনি তাঁর মায়ায় আর সবকিছুকেই ম্যাজিকের মতো ছায়া করে দিতে পারেন। বা আমাদের ভাষায় বলতে পারেন, হাওয়া। ... ...
চিকিৎসক ও গবেষক অমিতাভ নন্দীর একটি ভিডিও গত কয়েক দিন ধরে সোশাল মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে ছড়ানো হচ্ছে। তাতে তিনি বলছেন, কোভিড আসলে সাধারণ ফ্লু ছাড়া আর তেমন কিছুই নয়, এবং তা আটকাবার জন্য যে ভ্যাকসিনটা দেওয়া হচ্ছে সেটাও অকেজো, কাজেই কোভিড এবং তার ভ্যাকসিন --- কোনওটিকেই নাকি বিশেষ পাত্তা দেবার দরকার নেই। তাঁর মতে, ভ্যাকসিন বানিয়ে ভাইরাস-জাত ব্যাধিকে আটকাবার দাবি করা নাকি আসলে এক রকমের প্রকৃতি-বিরোধী দম্ভ (আবার একেবারে শেষে যদিও বলেছেন, তিনি নাকি ‘সত্যি ভ্যাকসিন’ এর জন্য অপেক্ষা করছেন)। তিনি আরও বলেন, রোগ হয়ে শরীরে ‘স্বাভাবিক’ প্রতিরোধ তৈরি হতে দেওয়াটাই রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে ভাল পন্থা, এবং টিকাকরণের চেয়ে তা অনেক ভাল। ভিডিও-টি আগে দেখেছি, আজ আরও কয়েকবার মন দিয়ে দেখলাম। এবং, একজন বর্ষীয়ান দায়িত্বশীল চিকিৎসক কীভাবে এমন বলতে পারেন, তা দেখে স্তম্ভিত হলাম। হ্যাঁ, তিনি এখানে যা যা বলেছেন, তার সবই ভুল। ... ...
উপন্যাস ছাড়া নাকি প্রোলোগ লেখার নিয়ম নেই - তাই বুজুরগলোগ মাপ করবেন - এই উপন্যাসোপম আখ্যানে এই আদিপর্বটা প্রতিবারেই ঘাপলা হয়ে যায়, তাই এবারে এটা দিতেই হল। কারণ না দিলে মিস। বইমেলার লটারি এক জব্বর বস্তু - সে অভিজ্ঞতা না কহিলেই নহে। অতএব গিল্ড লটারির কথা অমৃতসমান - পূণ্যবানেরা আসুন আসুন - পিঁড়ে পেতে বসে পড়ুন। গিল্ড ফ্রী তে চা খাওয়ায়, এমন কি টপ বিস্কুটও খাওয়ায়, হাতে হাতে নিয়ে নিন বাবাসকল, মা সকল। কৃতাঞ্জলিপুটে বসে পড়ুন।ঘোষিত সময় দুপুর বারোটা। জনতা সাড়ে এগারোটা ... ...
শবে মিরাজ, এই মহাযাত্রার কিসসায় মুহম্মদ নিজের জায়গা করে নিয়েছেন তাঁর আগেকার চিন্তা ও সাধনার ঐতিহ্যকে মান্যতা দিয়ে তারই মাঝে। অথচ, পশ্চিম ১০৯৫ থেকে সকলকে বোঝাতে চেয়েছে ইসলাম ও খৃষ্টধর্মের বিরোধ আসলে পরষ্পরের উল্টোবাগে দাঁড়িয়ে থাকা চিরশত্রুতার ইতিহাস। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর যাকে আখ্যা দেওয়া হলো “দুই সভ্যতার সংঘাত” বলে। প্রাতিষ্ঠানিক ইসলাম ও প্রাতিষ্ঠানিক খৃষ্টধর্ম আমাদের ভুলিয়ে দিলো দুই চিন্তা, দুই দর্শনের ভিতরের সখ্যতা, মান্যতা, সম্মানবোধ। ... ...
কৈশোর থেকে যৌবনের উড়াল। বদলে যায় পরিবেশ। বদলে যায় স্বজন-বান্ধব-পরিচিতি। বদলে যায় সময়। বদলে যায় জীবন, পুর্ব-লালিত ধ্যান ধারণা। সবার নয়, কারোর কারোর। এ বদলের ছাপ আবার সবসময় বাইরে পড়ে না। তাই আশেপাশের অজান্তেই ঘটে যায় অদল-বদল। আর কখনো কখনো এই বদলের কেন্দ্রে থাকে একটি জড়বস্তু। একটি শিক্ষাস্থান। খিড়কী থেকে সিংহদুয়ারের জীবনে খোলা হাওয়া। বদলের ক্যাটালিস্টও। জীবনে বদলই ধ্রুব। জ্ঞানীরা তাই বলেন। তবু কতটা সহজ হয় এই অন্তর-যাত্রা? কতটা মূল্য দিতে হয়? ... ...
দেবযানী ভট্টাচার্য লিখিত আনন্দনগরীর সেকাল বইটির আলোচনা। ... ...
পুতিন একজন স্বৈরাচারী শাসক। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফোঁপরদালালি হিপোক্রিসি। ... ...
দার্জিলিং জেলার মিরিকের কাছে চা বাগান ঘেরা একটা ছোট্ট গ্রাম তাবাকোশি। যে চা বাগানের মাঝে আমাদের হোমস্টে তার নাম মাগারজাং টি গার্ডেন। প্রচুর কমলালেবু পাওয়া যায় বলে জায়গাটিকে অরেঞ্জ ভ্যালিও বলে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। অন্য সব পাহাড়ি গ্রামের মতোই এখানে সুস্থ, কর্মঠ মানুষের বাস। গোটা গ্রামে তাই একটিও ওষুধের দোকান নেই। নেই কোনো মিষ্টির দোকানও। ... ...
গাইড হঠাৎ একটু পিছিয়ে এসে দেবাশীসের জ্যাকেট টেনে ধরে থামতে ইশারা করেন। আমরাও থেমে যাই। আমাদের ওখানেই স্থির হয়ে দাঁড়াতে ইশারা করে পাশের জঙ্গলে চোখ রেখে গাইড পায়ে পায়ে পিছিয়ে গাড়ির কাছে পৌঁছান। আড়চোখে দেখি নিঃশব্দে দরজা খুলে কী যেন করছেন মুখ কিন্তু সেই জঙ্গলের দিকে। আমি নড়তেই দেবাশীস আমার ব্যাগে হ্যাঁচকা টান মারে। কী যেন দেখায় ইশারায়, আমি কিছুই দেখতে পাই না। ... ...
হাঁটতে হাঁটতে তিনি পোঁছে গেলেন সেই জায়গাটায় এখন যেখানে গেলে গঙ্গার উলটোদিকে মেটিয়াবুরুজের ফেরিঘাট দেখা যাবে। আর বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে তখন এই পাশের পুরো জায়গাটা জুড়ে চাষ হত গাঁজার। হাঁটতে হাঁটতে জগদীশ বসু ভাবতেও পারেন নি সেদিনের থেকে প্রায় ১২০ বছর পরে এই বোটানিক্যাল গার্ডেন তাঁর নামেই নামাঙ্কিত হবে। আগেকার দিনের শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন এখন পরিচিত “আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন”। ভারতের সবচেয়ে বড় বোটানিক্যাল গার্ডেনের নাম ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত বোটানিষ্টের নামে হবে সে আর আশ্চর্য কি! তবে হালকা আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে বোটানিক্যাল গার্ডেনে জগদীশ বসু-র প্রথম পদার্পণ কোন স্পেশাল গাছ গাছালি দেখতে নয় – গাঁজার চাষ দেখতে! গাঁজার চাষ এবং গাঁজা গাছের ব্যাপারে আলোচনার জন্যই কিউরেটর ডেভিড প্রেইন ডেকে পাঠিয়েছিলেন জগদীশ বোস-কে। একদম সরাসরি তাঁর অফিসে চলে যেতে বলেছিলেন, কিন্তু জগদীশ বোস ভাবলেন আলোচনায় ঢোকার আগে নিজের মত করে গাঁজা গাছগুলিকে দেখে নেওয়া যাক! ... ...
কুরোসাওয়া ক্রমশঃ মানিক বাবুর পারিবারিক বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন। উনি বিজয়া রায়-কে ডাকতেন “জয়া – সান” বলে। ‘সান’ হল জাপানী ভাষায় এক সম্ভ্রম সূচক সম্বোধন – পুরুষ, মহিলা দুই দলকেই বলা যায়। যেমন প্রথম প্রথম কুরোসাওয়া সত্যজিৎ রায়কে ডাকতেন “মাষ্টার-সান” বলে। কিন্তু মানিক বাবু বেশ অপ্রস্তুত হয়ে একদিন বললেন, “আপনি আমাকে প্লীজ এই ভাবে মাষ্টার বলে ডাকবেন না সবার সামনে – বেশ লজ্জা লাগে”। তারপর থেকে কুরোসাওয়া উনাকে সবার সামনে ‘মিঃ রায়’ আর একান্তে ‘মাষ্টার-সান’ বলে ডাকতেন। ... ...