কেবল সিরিয়া ইরাক আফঘানিস্তান নয়, আপন দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণে উৎপীড়িত অন্য অনেক দেশের মানুষজন ব্রিটেনে আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছেন। এঁদের মধ্যে কিছু এসেছেন এল সালভাদোর থেকে। বিগত তিরিশ বছর যাবত সেদেশে চলেছে গ্যাং ওয়ারফেয়ার, বিভিন্ন দলের মধ্যে সশস্ত্র লড়াই। শাসন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। সে দেশের সঙ্গিন আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সালভাদোরিয়ান শরণার্থীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেবার কথা ব্রিটিশ সরকার বিবেচনা করছেন। ইতিমধ্যে তাঁদের বসবাসের ব্যবস্থা হচ্ছে দেশের নানা জায়গায়। তাঁদের কেস খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। ... ...
তা ব্রজেন বাবু হেল্প করলেন। উনার কথাতেই অন্নপূর্ণা যাত্রা অপেরা ডেকে পাঠালো অরুণ কুমারকে একদিন। অরুণকুমার গিয়ে দেখলেন একদমই নতুন ধরণের যাত্রা – নাম “শের আফগান”। সেখানে আলি কুলী খাঁ-য়ের চরিত্রে অভিনয় করছে কম বয়সী, কিন্তু তুখড় একজন ছেলে। সেই ছেলেই পরে শান্তিগোপাল নামে বাংলার ঘরে ঘরের নাম হয়ে ওঠে। অরুণের জন্য ওঁরা ভেবেছিলেন কুতুবউদ্দিন কোকা-র চরিত্র। তবে চরিত্রে ফাইন্যাল করার আগে যাত্রার পরিচালক অরুণকুমারকে টেষ্ট করে নিতে লাগলেন – একটা অন্য কোন যাত্রাপালা থেকে বড় ডায়লগ তাঁকে পড়তে দিলেন, আরো বললেন অভিনয় করে দেখাতে। ... ...
দিনে দিনে ক্রমশ: অসামাজিক হয়ে যাচ্ছি বলে নিজের আত্মচেতনা সজাগ হচ্ছে এই বলে যে কিছুটা অন্তত এফর্ট দেওয়া দরকার আমার তরফে যাতে করে একদম বিচ্ছিন্ন না হয়ে যাই - তা এফর্ট দিচ্ছি আজকাল। আর সেই এফর্টের আগে-পরে যা হচ্ছে সেগুলো ডকুমেন্টেড করে রাখাই এই লেখার উদ্দেশ্যে ... ...
কৈশোর থেকে যৌবনের উড়াল। বদলে যায় পরিবেশ। বদলে যায় স্বজন-বান্ধব-পরিচিতি। বদলে যায় সময়। বদলে যায় জীবন, পুর্ব-লালিত ধ্যান ধারণা। সবার নয়, কারোর কারোর। এ বদলের ছাপ আবার সবসময় বাইরে পড়ে না। তাই আশেপাশের অজান্তেই ঘটে যায় অদল-বদল। আর কখনো কখনো এই বদলের কেন্দ্রে থাকে একটি জড়বস্তু। একটি শিক্ষাস্থান। খিড়কী থেকে সিংহদুয়ারের জীবনে খোলা হাওয়া। বদলের ক্যাটালিস্টও। জীবনে বদলই ধ্রুব। জ্ঞানীরা তাই বলেন। তবু কতটা সহজ হয় এই অন্তর-যাত্রা? কতটা মূল্য দিতে হয়? ... ...
কয়লা পুড়িয়ে পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে তারা সেমিনারে সেমিনারে গলা ফাটায়। জঙ্গল সাফ করে তৈরি উৎকৃষ্ট কাগজের হাজার হাজার পাতায় তারা রিসার্চ রিপোর্ট তৈরি করে। কিন্তু সেমিনার হলে দৈবাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ কিছুক্ষণের জন্যেও বন্ধ হয়ে গেলে, বিক্ষোভে সবাই হাহাকার করে ওঠে। কয়লা পোড়ানো বিদ্যুতে এসি না চললে, আলো না জ্বললে, পরিবেশ সচেতন বিজ্ঞানের যে দম বন্ধ হয়ে আসে। ... ...
রবীন্দ্রসাহিত্যে যে ফুলের নাম আছে তার সঙ্গে পরিচয় না থাকলে নতুন প্রজন্মের কাছে বার্তা সঠিক ভাবে পোঁছাবে কি ? তাই এই লেখার অবতারণা ... ...
তখনকার বণিকেরা এতটা শিল্প সম্মত মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিতে শেখেনি, কিন্ত তাদের সামগ্রীর বাস্তব বিজ্ঞাপন করাটা অবশ্যই জরুরি ছিল। কারণ গ্রামের সাধারণ মানুষদের কাছে সে সময় ব্রোঞ্জ সামগ্রী, তেল, গাভী ও বলদ কিংবা মূল্যবান পট্টবস্ত্র ছিল, একেবারেই নতুন এবং অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। অতএব আমার এই কল্পনা, অলীক অবাস্তব নয়। আমরা প্রকৃতিজাত অনন্য এক প্রাণী - হোমোস্যাপিয়েন্স, সেদিনও ছিলাম, আজও আছি। সে সময় ব্যবসায়ীরা মনোহারী সত্য কথায় মানুষকে প্রলুব্ধ করেছিল, এখন ব্যবসায়ীদের মনোহারী নির্জলা-মিথ্যা কথায় আমরা প্রলুব্ধ হই, তফাৎ এইটুকুই। ... ...
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে অমলবাবু বুঝলেন মনটা বেশ ফুরফুরে লাগছে। আসলে এটা কাল রাতের রেশ। রাত তখন প্রায় বারোটা। হাই উঠে গেছে গোটা পাঁচেক, ঘুম ঘুম পাচ্ছে। এমন সময় এল। কবিতার লাইন। কবিতা যারা লেখেন তাঁরা জানেন, কবিতা খুব মারাত্মক জিনিস। একবার এলে, যতক্ষণ না লিখে ফেলা হচ্ছে, পেটের ভেতরটা গুড়গুড় করে, মন আনচান। লিখে ফেললে তবে শান্তি। অমলবাবুও দেরি করেন নি। স্ত্রী সুরমা ততক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছেন। চট করে কবিতাটা লিখে ফেলেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে পোস্ট। কিন্তু কটা লাইক পড়ল সেটা দেখার জন্য বেশিক্ষণ জেগে থাকতে পারেন নি অমলবাবু। ঘুমে চোখ জড়িয়ে এসেছিল। কটা লাইক পড়ল সেটা দেখার জন্য আজ একটু তাড়াতাড়িই ঘুম থেকে উঠে পড়েছেন। ... ...
মিছিমিছি খেলা বোধহয় আমাদের সবারই ছিল। ছোটবেলায়।এই যেমন দরজার কড়া আর হুড়োকোতে টিউবওয়েলের মত ঘ্টাং ঘটাঁ করে জল বের করে কলসীতে জল ভরা, সেই কলসী কাঁখে নিয়ে, কত উঃ আঃ করে চলাফেরা করে রান্নাঘরে এনে তার থেকে গড়িয়ে বাড়ির সবাইকে জল দেওয়া, প্লাস্টিকের সবুজ স্টোভটাতে চা বসানো, প্লাস্টিকের লাল কাপ প্লেটে সবাইকে সেই চা দেওয়া, মা, বাবা , দাদা। ঠাকুমা, পিসি, মাসি, কাকা , মামারা এলে আবার প্লেট শর্ট পড়লে মেল থেকে কেনা কাঠের কাপের সেটটাও উদ্বোধন ক'রে ফেলা। সকালে আপিস যাবার অগে রান্না ... ...
[ আমার চোখে দেখা আর হৃদয়ে্র অনুভবে জারিত এই ছোট্ট ছোট্ট চিকিৎসা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি এখনো মোছেনি আমার মাথার স্মৃতিকোষগুলোর থেকে। তার থেকে তুলে আনা এই মণি-কাঞ্চনগুলোয় যেমন পেয়েছি সাক্ষাৎ ভগবানদের, তেমনি কিছু কিছু সাংঘাতিক ঘটনা নেহাৎ-ই সহ্য করেছি উপায়ান্তরহীন যাপনে। ক্রোধে ফেটে পড়েছি মননে। রক্তচাপ বাড়িয়েছি বারংবার – মধ্যবিত্ত মনোভাবনায়। পেয়েছি আচম্বিত বাড়ানো হাত - অকাতর অকৃপন স্পর্শে। কৃতজ্ঞতাও হয়তো অব্যক্ত ছিল আমার পক্ষে সে সময়। তো এইসব ছিন্নবিচ্ছিন্ন ঘটনার কিছু রেশ গ্রন্থিত করছি প্রাণের আনন্দে। এখনো বেঁচে আছি, বেঁচে আছে আমার প্রজন্ম। তাই ভগবানের নামকীর্তন যেমন করেছি অক্লেশে, আবার সেই ‘আতঙ্ক’ চলচিত্রের মতো যেন কিছুই দেখিনি আমি হয়ে পাল্টেছি চরিত্র কিম্বা স্থান-নাম। মহাবীর-বুদ্ধ-নানক-রামকৃষ্ণের পুণ্যভুমিতে আজ হিংসা পৌনঃপুনিকতায় ছড়াচ্ছে বিদ্বেষের লাল আগুন। যে আগুন শুধুই ভস্ম-জন্ম আহ্বান করে। নিরুপায় আমি করজোড়ে মার্জনা চাইছি আমার এটুকু অপৌরুষেয়তার।] ... ...
পর্দা জুড়ে ফুটে ওঠে পরিত্যক্ত মন্দিরে এক বিশাল রামের মূর্তি। আধুনিক দর্শক আশা করি এই অনুষঙ্গ ভালোই বুঝতে পারবেন। রাম গেরুয়া ধুতি পরে রামের মূর্তি থেকে তীর ধনুক খুলে নেয়। জড়িবুটির ম্যাজিকে তার সমস্ত ক্ষত এতক্ষণে উধাও। সারাংশে রাম আর ভীম, সঙ্গে রয়েল বেঙ্গল বাঘ, কম্পজ্বর ভাল্লুক, চিড়বিড়ে চিতাবাঘ, চোখানাক নেকড়ে, দৌড়বাজ হরিণ, উপজাতির শিকারী ভায়েরা - সিনেমার গল্প জুড়ে সবার মিলিত প্রচেষ্টা বড়লাটের বাড়ি উড়িয়ে দিয়ে সব খারাপ ইংরেজ খতম করে। প্রথম দৃশ্যের নির্মম ফার্স্ট লেডির ময়ূর আঁকা নিথর হাতটি শূন্যে দোলে। কিন্তু এতো শুধু খোলসের বিবরণ। ভাবুক দর্শকের সামনে খুলে যায় বোধের দরজা। আর্য আর ফর্সা ইংরেজের সঙ্গে যুদ্ধ করে ভীম। পাঁচ নিষাদ পুত্রকে তাদের মায়ের সঙ্গে জতুগৃহে পুড়িয়ে মারার গ্লানি ধুয়ে আজ সে নিজেই নিষাদের কন্ঠস্বর, তাদের চেতনার প্রতিভূ। আর আবহ জুড়ে গান বাজে রাঘবম রাজসম। তীরধনু আর অক্ষয় তূনীর হাতে ভীমকে সুরক্ষা দেন রাম। পুলিশ অফিসার রামের অহল্যা মনোভূমি আজ ভারতের ঐতিহ্যধারী রামের স্পর্শে প্রাণ পায়। আজ সে সত্যিকারের শ্রীরামচন্দ্র হয়ে ওঠে। ... ...
কৈশোর থেকে যৌবনের উড়াল। বদলে যায় পরিবেশ। বদলে যায় স্বজন-বান্ধব-পরিচিতি। বদলে যায় সময়। বদলে যায় জীবন, পুর্ব-লালিত ধ্যান ধারণা। সবার নয়, কারোর কারোর। এ বদলের ছাপ আবার সবসময় বাইরে পড়ে না। তাই আশেপাশের অজান্তেই ঘটে যায় অদল-বদল। আর কখনো কখনো এই বদলের কেন্দ্রে থাকে একটি জড়বস্তু। একটি শিক্ষাস্থান। খিড়কী থেকে সিংহদুয়ারের জীবনে খোলা হাওয়া। বদলের ক্যাটালিস্টও। জীবনে বদলই ধ্রুব। জ্ঞানীরা তাই বলেন। তবু কতটা সহজ হয় এই অন্তর-যাত্রা? কতটা মূল্য দিতে হয়? ... ...
দুটো জিনিস নিয়ে আজকাল খুব কনফিউশন। এক, গুডি পাড়বার দিন অনেকে বাংলা হরফে হিন্দু নববর্ষ উইশ করছেন। দুই, বাংলাদেশের ১৪ই এপ্রিলটা সঠিক পয়লা বৈশাখ না পশ্চিমবঙ্গের ১৫ই এপ্রিল, সেই নিয়ে বিবাদ। সেখানেও হিন্দু মুসলমান চলে আসছে। ... ...
কোনো দেশ দখলের মহান ব্রতে যখন সৈন্য বাহিনী পথে নামে তাদের পিছু পিছু চলে সরবরাহ বাহিনী – রাঁধুনি খানসামা থেকে আরম্ভ করে মুচি মেথর। সৈন্যরা যেমন যেমন দুর্বার বেগে এগিয়ে যায় তার সঙ্গে তাল রেখে ডাল ভাত এমনকি দাঁত খোঁটার খড়কে কাঠিটি পর্যন্ত যোগান দেবার কনভেয়র বেল্টটি চালু থাকে। অভুক্ত সৈন্য বাহিনী যুদ্ধ জেতে না। আপন আপন রাশিয়া অভিযানের কালে নাপোলেওঁ এবং হিটলার এই সার সত্যটি অনুভব করেছিলেন। ১৯৪২ সালের ডিসেম্বরে শূন্যের পনেরো ডিগ্রি নিচে নেমে যাওয়া ঠাণ্ডায় যে জার্মান বাহিনী স্টালিনগ্রাদে লড়াই করছিল, তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনের দশ শতাংশ পৌঁছে দিতে অক্ষম হয় গোয়েরিঙের লুফতভাফে । ফলাফল আমাদের জানা। ... ...
তোত্তো-চানের নামের অর্থ ছোট্ট খুকু। তোত্তো-চানের অত্যাচারে তাকে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে। যদিও সেই সম্পর্কে তোত্তো-চানের বিন্দু মাত্র ধারনা নেই। মায়ের সঙ্গে নতুন স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য সে চলছে। নানা বিষয়ে নানা প্রশ্ন, নানান আগ্রহ তার। স্টেশনের টিকেট চেকার থেকে শুরু করে আশেপাশের সব দিকেই তার সমান আগ্রহ। অন্যদিকে মায়ের দুশ্চিন্তা হচ্ছে নতুন স্কুলে তোত্তো-চান টিকতে পারবে কিনা তা নিয়ে। স্কুল দেখেই তোত্তো-চানের সমস্ত মনোযোগ স্কুলের দিকে চলে গেল। ও বিশ্বাসই করতে পারছিল না এমনও কোন স্কুল হতে পারে। প্ ... ...
বাংলায় যদি একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে, তাহলে সমাজমাধ্যমে কী হয়? এখন যা হচ্ছে। সরকারপক্ষ, হয় চেপে যায়। নইলে বলে, দোষ আমাদের কেন হবে? মদ খেয়ে যদি কেউ খুন-ধর্ষণ কিছু একটা করে, তাহলে দোষ তো তাড়ির, তাড়ির না হলে নির্ঘাত খেজুর গাছের। পুলিশ তো আর গাছকে গ্রেপ্তার করতে পারেনা, ভারতীয় দন্ডবিধিতে তেমন ধারা নেই, তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। যদি প্রশ্ন করেন, কিন্তু খুনটা তো আর গাছ এসে করে দেয়নি, খুনিকে ধরলেন না কেন? তখন তাঁরা অম্লানবদনে বলবেন, আরে খুন হয়েছে জানবে, তবে তো। আইন আইনের পথে চলবে। আগে অভিযোগ, তারপর তদন্ত। খুন হবার আগে, সেই বেটি থানায় এসে অভিযোগ করেনি কেন? কোথাও কেউ প্রপার প্রসিডিওর ফলো করবেনা, আর সব দোষ হবে প্রশাসনের? মামার বাড়ি? সংখ্যাগুরু বিরোধীরা, সেই শুনে বলবেন, দেকেচ, আগেই বলেছিলাম, হিন্দু খতরেমে। খেজুর গাছের দোষ সরকার তো দেখতে পাবেইনা, ও গাছ তো আরব থেকে এসেছে। এরা সমুদ্রের নাম দিয়েছে, আরব সাগর, এদের পুলিশ আরবী ঘোড়া চড়ে, এদের একমাত্র দাওয়াই হল কেন্দ্র। কেন্দ্র থেকে তিনশছাপ্পান্ন লাও, দিল্লি থেকে সিবিআই। মারবে এখানে, বডি পড়বে তিহারে। জ্যায় শ্রীরাম। যদি মিনমিন করে প্রশ্ন করেন, কিন্তু এদিকে তো বঙ্গোপসাগর, তাছাড়া ওদিকেও তো হাথরাস-টাথরাস কীসব হয়েছে, তখন সিবিআই ঠিক কী করছিল? রেডিমেড জবাব, বড়-বড় কথা বলবেন না, আপনি কি সেকু-মাকু না লিবারবাল? কাশ্মীরে যখন পন্ডিতদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখন আপনি কোথায় ছিলেন? যখন আফগানিস্তানে বুদ্ধমূর্তি ভাঙা হচ্ছিল, আপনি কী করছিলেন? যখন নাইন-ইলেভেন হল, তখন... ইত্যাদি প্রভৃতি। ... ...
বেড়াল অনেকের আদরের পুষ্যি। বেড়ালও অনেককে বেশ ভালোবাসে। তবে কুকুরের প্রভুভক্তি বা বিশ্বাসযোগ্যতা বেড়ালের কাছে আশা করলে দুঃখ লাভের সম্ভাবনা আছে। প্রবাদ আছে কুকুর নাকি খেতে খেতে দিলে প্রার্থনা করে, আমার প্রভু ধনেজনে বাড়ুক, পাতেপাতে ভাত পড়বে আমিও পেটপুরে খাবো। বেড়ালকে খেতে দিলে বেড়াল নাকি প্রার্থনা করে গেরস্ত কাণা হোক আমি চুরি করে প্রাণ ভরে খাবো। হতে পারে এটা বিড়াল-বিদ্বেষীদের অপপ্রচার। তবে বেড়ালের চৌর্যবৃত্তি সুবিদিত। তবুও এই সেদিনও দেখেছি ডাকসাইটে গৃহকর্তা খেতে বসেছেন, তাঁর দাপটে নাতি পুতিরা সিঁটি ... ...
এক'কিছুটা থাক আলগোছেতে...কিছুটা থাক কাছে...কিছু কথা ছড়িয়ে পড়ুক...চেনা আলোর মাঝে...।''খুব সকালে ঘুম ভাঙতে চাইতো না আমার। লেপের পরে লেপ, চাদরের পরে চাদর এর গা থেকে ওর কাছ থেকে, ছেড়ে যাওয়া বিছানা থেকে টেনে টেনে গায়ে চলে আসতো আমার। লম্বা চাটাইয়ে স্যাঁতসেঁতে পলেস্তারা খসা ঘরে শুয়ে থাকতো ওপার বাংলা থেকে অনিচ্ছায় আসা উদ্বাস্তু মানুষ গুলো। আমিও তাদের মধ্যে কুন্ডুলী পাকিয়ে লেপ, চাদর আর কাঁথার পাহাড়ের মধ্যে সেঁধিয়ে থাকতাম। সকালের রোদ আমাদের বালীর বাসায় ঢুকতো না একটুও। কিন্তু মায়ের উনুনের ধো ... ...
তিনি মধুপ্রিয়। তাঁর পছন্দ নীল। তাই রুপোলি বুটিদার নীল রেশমের কাপড়ের পশ্চাৎপটে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত গৌরবর্ণ সুস্মিত দারুবিগ্রহের বুকের কাছে ধরা বাম হাতটিতে মধুর বাটি। হাতের ফাঁকে গোঁজা রয়েছে একটি হল। মাথার উপরে অনন্তনাগের প্রসারিত ফনার নিচে ডান হাতের মুঠিতে ধরা মুষল। তিনি বিষ্ণুর বাহন সর্পরাজ শেষাবতার। তিনি শ্রীকৃষ্ণের দাদা বলদেব। তিনিই তো হলধর কিংবা হলায়ুধ, বলরাম বা সঙ্কর্ষণ অথবা পুরীর মন্দিরে জগন্নাথদেবের পাশে বসা বলভদ্র। তিনি এক তবু অনন্য। বর্ধমানের রায়না থানার বোড়ো গ্রামে দশ হাত উঁচু, চোদ্দটি হাতের অনার্য-পূজিত প্রাচীন বলরাম মন্দির রয়েছে। যার উল্লেখ পাওয়া যায় ধর্মমঙ্গল কাব্যে -- "বোড়ো গ্রামের বলরামে নত কৈনু শির।" উত্তর কলকাতার রাজবল্লভ পাড়ার কাছে 'হারানো বলাই' মন্দিরও আছে। কিন্তু বেলেঘাটার শুঁড়া অঞ্চলে ইতিহাস-প্রসিদ্ধ রাজাবাহাদুরের গৃহদেবতা বলদেব ও শেষজায়া অর্থাৎ রেবতীরানির এই বিশেষ মূর্তি ভূ-ভারতে আর দ্বিতীয়টি নেই। বিভিন্ন মন্দিরে বা পারিবারিক দেবালয়ে রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহ সুপরিচিত ও জনপ্রিয় হলেও বলদেব ও রেবতীরানির ঠাকুরবাড়ি একেবারেই ব্যতিক্রমী। শ্রীকৃষ্ণের দাদা, তাই পরিবারের ভক্তহৃদয়ে এই কুলবিগ্রহের মৌখিক পরিচিতি একান্ত আপনার 'দাদা-বৌদি' হিসেবেই। আর এই দারুবিগ্রহের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে বঙ্গীয় এশিয়াটিক সোসাইটির প্রথম ভারতীয় প্রধান, বাংলার রেনেসাঁসের পুরোধা ব্যক্তিত্ব রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্রের নাম। রবীন্দ্রনাথ 'জীবনস্মৃতি'তে লিখেছিলেন, "রাজেন্দ্রলাল মিত্র সব্যসাচী ছিলেন। তাঁহার সঙ্গে পরিচিত হইয়া আমি ধন্য হইয়াছিলাম। রাজেন্দ্রলালের স্মৃতি আমার মনে যেমন উজ্জ্বল হইয়া বিরাজ করিতেছে, এমন আর কাহারো নহে।" তাঁর দ্বিশতজন্মবার্ষিকী উদযাপন হচ্ছে চলতি বছরেই। ... ...