সম্প্রতি প্রকাশিত তিনটি বইয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। লিখেছেন নবকুমার ... ...
মির্জা অসদুল্লা খান গালিব। নিজের কালে পরিচিতই ছিলেন ‘মুশকিল-পসন্দ্’ বলে। তাঁর চারপাশে তৈরি হয়েছে এনিগমার কুহেলি। কারণ তিনি আধুনিক, তিনি যুগের থেকে এগিয়ে। উর্দুর মহানতম কবি। কিন্তু শুধু সেইটুকুই নয়, এ কেতাব জুড়ে উঠে এসেছেন এক রক্তমাংসের মানুষ, সব দুর্বলতা, ব্যর্থতা নিয়ে। ইংরেজিতে যাকে বলে—‘আপ, ক্লোজ অ্যান্ড পার্সোনাল’। তাই এ বইয়ের স্বাদই আলাদা। পড়লেন তৃষ্ণা বসাক ... ...
দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরী। বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর। আর তেমনই বৈচিত্রময় জীবন। কী করেননি? গুরুর জুতো পালিশ, ঘর ঝাঁট দেওয়া, নিজের ছবি ফেরি করা... শিল্পীর নিজের কথায় এবং তাঁর স্ত্রী চারুলতা রায়চৌধুরীর ভাষ্যে সেই চিত্তাকর্ষক জীবনের কথা। একটি বই। পড়লেন শিল্পী কৃষ্ণেন্দু চাকী ... ...
সম্প্রতি প্রকাশিত তিনটি বইয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। লিখেছেন নবকুমার ... ...
উৎসাহী পর্যটক গোটা অঞ্চলটির গায়ে লেপে দেন একটিই নাম—দার্জিলিং। নস্টালজিয়ায় ভরপুর অনেক রোমান্টিক যাতায়াতের পরেও তাঁর নজরের বাইরেই থেকে যায় সেই পাহাড় জুড়ে নিজ নিজ ভাষা, সংস্কৃতি, বঞ্চনা, ক্ষোভ নিয়ে বেঁচে থাকা বিবিধ জনগোষ্ঠীর একদিন প্রতিদিনের বাস্তব। সেইসব মানুষের কথা। নেপালি ভাষায় লেখা উপন্যাস—ফাৎসুঙ্। লেখক ছুদেন কাবিমো। বাংলা তরজমায় পড়লেন বিমল লামা ... ...
আব্দেল্লাতিফ লাবি। মরক্কোর প্রথম সারির কবি। লেখেন ফরাসি ভাষায়। বহু পুরস্কারে সম্মানিত। কিন্তু দীর্ঘকাল মরক্কোর শাসকশ্রেণির চক্ষুশূল। ফলত প্রথমে আট বছর কারাবাস ও পরে নির্বাসন। তিরিশ বছর দেশছাড়া হলেও মরক্কো তার কবিতার প্রতিটি শব্দে, প্রতিটি উচ্চারণে। লিখছেন পার্থপ্রতিম মণ্ডল ... ...
ব্রিটেনে তো তুলো হয় না। ইউরোপে কোথাও না। তা হলে সে মহাদেশে কী করে অষ্টাদশ শতক থেকে গড়ে উঠেছিল এত বিপুল সংখ্যক সুতিবস্ত্র কারখানা—উন্নত অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি? যুগ যুগ ধরে তুলো চাষের প্রধান ক্ষেত্র ভারতীয় উপমহাদেশ। কীভাবে সেই ভারতীয় তুলো পৌঁছে গেল ইউরোপীয় কারখানা হয়ে দুনিয়ার বাজারে? মর্মন্তুদ সে ইতিহাস। একটি সাম্প্রতিক বই। পড়লেন বিশ্বেন্দু নন্দ ... ...
চ্যাপলিন তাঁর আত্মজীবনী লিখেছেন, একাধিক ভাষ্যে; তাঁর প্রামাণ্য জীবনী লিখেছেন ডেভিড রবিনসন। কিন্তু সারাজীবন তিনি সযত্নে আড়াল করে রেখেছেন তাঁর ছবি তৈরির প্রক্রিয়া। সাক্ষাৎকারে, বক্তৃতায়, সাংবাদিক সম্মেলনে অনেক কথা বলেছেন তিনি নিজের জীবন ও বিশ্বাস বিষয়ে; এত মানুষের সঙ্গে পরিচয়, আলাপ ও সঙ্গ ঘটেছে তাঁর, তাঁরাও লিখেছেন, তাঁর সম্পর্কে; এই সব কিছু মেলালে চ্যাপলিনের যে জীবনচিত্র তৈরি হয়ে ওঠে, তা তাঁর জীবনী বা আত্মজীবনীর ধরাবাঁধা, সুবিন্যস্ত বৃত্তান্ত তথা পরিচিতি পেরিয়ে আরও বিস্তীর্ণ হয়ে ওঠে। ... ...
বাইশটি নিবন্ধের সংকলন। লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। অতিকথন ও যুক্তি-তথ্য বিন্যাসে কিছু গরমিল সত্ত্বেও, এ গ্রন্থ জুড়ে রয়েছে এমন কিছু চাঁছাছোলা সত্য যা যতবার বলা যায় এবং যত মানুষকে বোঝানো যায় ততই ভালো এবং তা অতিশয় জরুরি। পড়লেন মীরাতুন নাহার ... ...
সুধীর চক্রবর্তী। প্রয়াত হলেন সম্প্রতি। অনন্য প্রাবন্ধিক। অসাধারণ বাগ্মী। তেমনই ছিলেন একজন চিরায়ত শিক্ষক, যে শিক্ষক স্নেহপ্রবণ, যে শিক্ষকের আশীর্বাদমুদ্রা সতত তাঁর ছাত্রদের মাথার উপরে। বিবিধ বিষয়ে তাঁর গভীর গবেষণা। প্রেম, প্রকৃতি, মানুষ ও ঈশ্বর সম্পর্কিত যে বোধগুলি লোকধর্মগুলি নুড়িপাথরের মতো পড়েছিল, সুধীরবাবু তর্জনী নির্দেশে দেখালেন, এই দ্যাখো, এগুলো রত্ন। লিখছেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী ... ...
তারা মীরচন্দানী। এ সময়ের এক অনন্য সিন্ধী সাহিত্যিক। চারপাশের চেনা জগত থেকে উঠে আসে তাঁর কথাবস্তু। মানুষের যন্ত্রণা আনন্দ দিয়ে তিনি কাহিনি বুনে চলেন অনায়াস দক্ষতায়। উপন্যাসের নাম হঠযোগী। বাংলা তরজমায় পড়লেন তৃষ্ণা বসাক ... ...
সুভাষ মুখোপাধ্যায়। জীবনের অন্তিম পর্বের একগুচ্ছ কবিতা। তবু এর পাঠে কদাচ বোধ হয় না এ কোনো অশীতিপরের রচনা। বরং যেন এক পথ-ভোলা পর্যটক, জগতের অসংতিগুলোর দিকে তাকিয়ে আছেন। প্রকৃতির সঙ্গে বন্ধুতা পাতিয়ে ফেলেছেন নীরবে। এবং তারই মধ্যে সম্পৃক্ত তাঁর কবিতার অতি-পরিচিত রাজনৈতিক দর্শন, শ্লেষ, ব্যঙ্গ, রসিকতা, ব্ল্যাক হিউমর, এসমস্ত কিছুই। পড়লেন হিন্দোল ভট্টাচার্য। ... ...
প্রত্যেক গানের এক বা একাধিক গল্প থাকে। কখনও তা লিখিত হওয়ার গল্প, কখনও সুরারোপের, কখনও-বা পরিবেশনের। আবার যেসব গান কিংবদন্তি হয়ে যায় সেগুলি ঘিরে গড়ে ওঠে নানা কাহিনি। তেমনই গল্পের সমাহারে তৈরি একটি বই। পড়লেন শুভদীপ সাহা। ... ...
মণিশংকর বিশ্বাস। তাঁর কবিতার সংকলন। অতিনাটকীয়তা, তথাকথিত মোচড় ও চমক পরিহার করে, কবি বেছে নিয়েছেন এক মৃদু, অনুচ্চকিত ও প্রায়-নিরলংকার উচ্চারণ। পড়লেন শৌভ চট্টোপাধ্যায়। ... ...
মহাকাব্যের পুনঃকথনের জন্য কারিয়ের এই বিচিত্র রচনারীতি চয়ন করেছেন যাতে আখ্যানের একাধিক স্তরের স্পর্শে-সংঘাতে পুরাতন কাহিনি সঞ্জীবিত হয়। ব্যাসের কল্পনায় কাহিনি তৈরি হয়ে ওঠে; স্রোতা ও দর্শক দুই ভূমিকাতেই কিশোর ও গণেশ; কিশোর ভবিষ্যতের মানুষ তথা পুরাকাহিনির পাঠক; ব্যাস এই কাহিনির নির্মাতা-রচয়িতা; মাঝে মাঝে তিনি তাঁর চরিত্রদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন, কখনও বাধাও দেন, আবার তাঁদের আচরণ বিচারেও প্রবৃত্ত হন। রচয়িতার সৃষ্টিকর্মে কখনও কুশীলবেরা স্বতঃপ্রবৃত্ত, স্বাধীন চরিত্র হয়ে ওঠে, কখনও রচয়িতার কল্পমায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে সেই মায়ালোকের অন্তর্গত হয়ে যায়; সেই মায়াবৃত্তান্ত তখন দৃশ্যকাব্য। ... ...
দুই মলাটের মধ্যে চোদ্দটি ভারতীয় ভাষার ছাব্বিশটি গল্পের বাংলা তরজমা। ওড়িয়া ও উর্দু গল্পের সংখ্যা সর্বাধিক। রয়েছে বাঙালি পাঠকের কাছে প্রায় অপরিচিত সিন্ধি, কাশ্মীরি আর ডোগরি ভাষার গল্পও। একটি সাম্প্রতিক সংকলন। পড়লেন তৃষ্ণা বসাক ... ...
আন্তনিউ লোবু আন্তুনেশ। পোর্তুগালের অন্যতম সাহিত্যিক। বহু পুরস্কারে সম্মানিত। বিখ্যাত উপন্যাস ‘উশ কুশ দ্য জুদাশ’ রূপকার্থে ‘তেপান্তরের পারে’। আঙ্গোলার স্বাধীনতাসংগ্রাম দমনে নিযুক্ত পোর্তুগিজ ঔপনিবেশিক সেনাবাহিনীতে চিকিৎসক হওয়ার অভিজ্ঞতায় জারিত কাহিনি। পড়লেন পোর্তুগিজ ভাষার শিক্ষক ও তরজমাকার ঋতা রায় ... ...
পঁয়ষট্টি বছর ধরে যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয় আর ষাট বছর জুড়ে যার সঙ্গে প্রতিদিনের নিবিড়তম সখ্য, প্রায় পঞ্চাশ বছর বিদেশবাসের দূরত্ব সত্ত্বেও যার সঙ্গে সংযোগ থেকে গেছে প্রায় প্রাত্যহিক সম্পর্কের মতো, তার আকস্মিক এই প্রয়াণ কী বিমূঢ়তায় রেখে গেছে আমাকে, আশা করি পাঠকমাত্রেই সেটা অনুমান করতে পারবেন। এই সময়টায় আমার পক্ষে নীরব থাকাও যেমন শক্ত, তেমনই কঠিন কিছু বলাও। তবু সম্পাদকের আগ্রহের কাছে পরাভূত হয়ে কোনোমতে এই সামান্য-কটি কথা লিখতে হলো। পাঠকেরা আমাকে যেন মার্জনা করেন। ... ...
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। কেবল সুকবি নন, মহৎ কবি। গভীর খেদ এই যে, বাংলা সাহিত্যের বৃহত্তর পাঠকসমাজ এবং গ্রন্থপ্রকাশকরা মধ্যমানের পক্ষেই তাঁদের রায় দেওয়ায় তাঁর লেখার কপালে যে উপেক্ষা জুটল, তা অবমাননার নামান্তর। লিখছেন কবি গৌতম বসু ... ...
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। কেমন ভাবে পাঠ করব আমরা তাঁর কবিতা? সে কবিতা একদিকে যেমন ভুবনায়নের কাউন্টার কালচার তৈরি করছে, তেমনই নিজে হয়ে উঠছে বিশ্বের মাইক্রোকজম। ‘কবিদের সমস্ত জায়গায় একটা সমান্তরাল এবং আদিগন্ত রাখিবন্ধনের ব্যাপার আছে। সেই জায়গাতে আমাকে শনাক্ত করার কাজটা কিন্তু তোমাদেরই করতে হবে,’ এমনই ছিল কবির নিজের অভিপ্রায়। লিখছেন হিন্দোল ভট্টাচার্য ... ...