আমি গেলেই ডাকতেন, ও খোকা, মিত্তিরবাবুর বাড়ির ছেলে না ? হ্যাঁ, বলতে তাঁর একের পর এক প্রশ্ন ধেয়ে আসত আমার দিকে। “ভাত খেয়েচ? কী দিয়ে ভাত খেলে ? মাছ খেইলে ? কী মাছ। মাছের কালিয়ায় কি ফুলকপি ছিল। টমটমের চাটনি ছিল কি ? ক্ষীর খেয়েচ কাঁটাল দিয়ে। মাংস কবে খেয়েচ খোকা…” এখন বুঝতে পারি ক্ষুধার্ত মানুষের জিজ্ঞাসা ওসব। গরিব কাহার পাড়ার মানুষের না ছিল জমি, না ছিল কাজ। অন্ন সংস্থান হবে কী করে ? ভোটো কাহার রিকশা করেছিল, তা তার নিজের না অন্য কারোর টাকায় কেনা তা জানতাম না। গ্রামের বাঁড়ুজ্যে বামুনের সঙ্গে ভোটো কাওরার খুব বিবাদ ছিল। রিকশায় চেপে তিনি এক টাকা ভাড়া হলে আট আনা দিতেন। আট আনা বাকি থাকল। বাকিটা শোধ দিতেন না। বাঁড়ুজ্জ্যে মশায়ের ছেলেদের নাম ছিল, ধরুন, অমলকিশোর, বিমলকিশোর, কমলকিশোর, কুনালকিশোর...। ভোটো কাহার কী করল, তার ছেলেদের নাম সব বদলে অমলকিশোর, বিমলকিশোর...। করে দিল। সেই নামে ডাকা শুরু করল। বাঁড়ুজ্জ্যে মশায় রেগে কাঁই। একদিন বেজায় খাপ্পা হয়ে রাস্তায় ঝগড়া, তাঁর ছেলের নামে নিজের ছেলের নাম রেখেছে কেন ভোটো ? ভোটো উদাসীন হয়ে জবাব দিয়েছিল, নাম কি কারোর নিজের সম্পত্তি। মেয়ের নামও বাঁড়ুজ্জ্যে মশায়ের মেয়ের নামে রেখেছিল, ছায়া, মায়া... ... ...
পুজোর গামছার প্রধান দুই সমস্যা ছিল তাদের দৈর্ঘ্য এবং ঘনত্বের। সবচেয়ে নিকৃষ্টমানের গামছা সাপ্লাই করা হত পুজোর সময় ব্রাহ্মণদের প্রণামীতে। সেই গামছা প্রায় মসলিনকেও হার মানিয়ে দেয়, অনেকে ভয়ে ভাঁজই খুলত না গামছার, এই যদি ফেঁসে যায়! তবে পুজোতে গামছা এক সিম্বলিক জিনিস ছিল প্রায় – ডাঁই করে রাখা গামছার উপরের কয়েকটায় কিছু সিঁদুর এবং ফুল-গঙ্গা জল পড়ত। তাদের তলার গুলো পুজো শেষ হয়ে গেলে ব্রাক্ষণ ঠাকুর নিজে গিয়ে বিক্রী করে দিয়ে আসত আমরা যেই দোকান থেকে কিনেছি। পরের বছর আবার সেই গামছা আমরা কিনতাম। ... ...
আজ খুব বেশী রান্না হবে না। দুপুরের খাওয়া সেড়ে আজ মুড়ির ধান বানা হবে যে। আজ বাজারের ব্যাগ নিয়ে কোনো রিক্সাওয়ালাও তাই আসবে না। রান্নাঘরের মাচার নীচে রাখা সবজির ধামার তলানিতে যা আছে তা দিয়েই দুপুরের পর্ব সারা হবে। ঠাকুমা কালো পাথরের বাটি হাতে বড়ঘরের দিকে যেতেই আমি পিছু পিছু হাঁটা ধরি, ও ঠাকুমা নেলপলিশের রঙটা কত সুন্দর দেখছো? ঠাকুমা পেছনে ফেরে না, ওসব রঙ ভাল না; আমার দিদি তো রঙ ছাড়াই সুন্দর। আমি থেমে যাই। লাল বারান্দায় বসে ভাবি, কাল ফেরিওয়ালা এলে সব ফিরিয়ে দেবো। ... ...
শুধুমাত্র ছবি আঁকার জোরে টাকা-পয়সা আয় করে কলকাতায় কাটিয়ে এসেছে জয়ি কয়েক মাস, শিল্পী-সাহিত্যিকদের অনেককেই চেনে সে এখন, জয়ি এখন স্বাভাবিক নেতা ওর বন্ধু-বান্ধবীদের। সবাই মিলে ঠিক হয়েছে পরের সংখ্যা থেকে শাম্ব ছাপানো হবে, আর হাতে-লেখা নয়। রাঁচি থেকে শ্যামলিমা-অরুণিমাও এলো; দুজন সম্পাদক, অরুণিমা আর জয়ি। তুলি প্রস্তাব দিয়েছিলো শাম্বর ঠিকানাটাও বদলিয়ে এখন কলকাতায় জেঠুর বাড়ির ঠিকানা দেওয়া হোক, সে প্রস্তাব নাকচ হয়ে গেলো। জয়ি বললো কলকাতার হাজারো লিট্ল্ ম্যাগাজিনের মধ্যে শাম্ব হারিয়ে যাবে, এখানকার ঠিকানাই ভালো। ... ...
তারপর প্রথম পৃষ্ঠায় সবুজ কালিতে লিখল, ‘আজ প্রথম সর্বশক্তিমানকে দেখলাম। ইনি কাউকে জোর করেন না। কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দেন না। তাঁর কাছে গেলে তাঁর শক্তির কিছুই টের পাওয়া যায় না। তাঁর ব্যবহার অতি মধুর। এই মাধুর্য দিয়েই তিনি সবাইকে জয় করে নেন। আমাকেও তিনি জয় করে নিয়েছেন। একটা সকালেই আমার জীবন বদলে গেছে। এখন প্রতি মুহূর্তে আমার ওপরে তাঁর অপরিসীম প্রভাব আমি টের পাচ্ছি। সম্মোহিত হয়ে আছি আমি। তাঁর কাছে আমার কৃতজ্ঞতার কোনো শেষ নেই। যাদের শক্তি থাকে না, তারা প্রতি মুহূর্তে নিজেদের শক্তিকে জাহির করে। তিনি সর্বশক্তিমান, নিজের শক্তিকে তাই তিনি অনাবশ্যকভাবে টের পেতে দেন না।’ ... ...
অথচ উল্টোটাই হওয়া উচিত ছিল। মিডিয়ায় উল্টো ঘটনা দেখে আমরা অভ্যস্ত। ভরসার বিষয় মিডিয়ার বাইরেও একটা জগত আছে। বিশাল জগত। সেখানকার মানুষেরা হাজার প্রলোভন সত্বেও খুব খারাপ নন। কোন ঘটনা ঘটলেই চিকিৎসককে দলবেঁধে পেটাতে আসেন না। ক্ষতিপূরণের জন্য ঘনঘন “সিপিএ”তে কেস করেন না। ... ...
পক্ষীরাজের বয়েস হচ্ছিল। কলকব্জা গুলো বিগড়োচ্ছিল একে একে। এর মধ্যে অনিমেষ একটা বাস কিনে ফেলেছে৷ ৩বি /৩ডি ৩ডি/১ হয়ে সেই বাস আমাদের পাড়া থেকেই ছাড়ে রোজ৷ পক্ষীরাজ আর চলতে পারলো না ছিয়ানব্বুই এর গোড়া থেকেই৷ স্থায়ী ঠিকানা হল দত্তবাগান মোড় এর পেট্রল পাম্প৷ অনিমেষ ভাবে থাক ওখানেই। বিক্রী করবে না৷ কিন্তু লোক আসতে থাকে ওর কাছে। পক্ষীরাজকে স্ক্রাপ হিসেবে কিনতে চায় তারা। অনিমেষ রাজী হয় না৷ তারপর একদিন আসেন এক কালোয়ার। অনিমেষ তাকেও বলে ও বিক্রী করবে না পক্ষীরাজকে। সেই কালোয়ার ভদ্রলোক তখন এমন একটি কথা বলেন অনিমেষকে যে অনিমেষ তাঁকেই বিক্রী করে দেয় নিজের পক্ষীরাজকে। উনি বলেছিলেন - স্যার, আপনি তো এই গাড়িটাকে নিজের বাড়ির লোকের মত দেখেন। তো আপনার বাড়ির কেউ মারা গেলে কী তাকে বাড়িতেই রেখে দেন? ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। পাক্কা দু’ বছর। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা ছুটলেন নবীন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। তারপর? স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায়। ... ...
বাংলা লিখিত সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের যুগ থেকে কোম্পানিরাজের পত্তন পর্যন্ত রচিত নানা বাংলাগাথা চর্ব্যচোষ্যলেহ্যপেয়র রঙিন বিবরণে ভরপুর। উঠে আসে বাঙালির রসনা-সংস্কৃতির বিবর্তনের ছবি। এ কিস্তিতে নানা কিসিমের অন্ন, মানে ভাত, আর, বেশি নয়, মাত্র চোদ্দরকমের শাকের কথা। লিখছেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। ... ...
মিউজিয়াম বলতে আমরা সাধারণ ভাবে যা বুঝি, নানা দেশে এমন কিছু মিউজিয়াম রয়েছে যেগুলি তার থেকে একদম স্বতন্ত্র। এই সিরিজের প্রত্যেক কিস্তিতে বর্ণিত হবে তেমনই কিছু অদ্ভুত মিউজিয়ামে ভ্রমণের কথা। এবারে ব্রিটেনের বিমিশ: দ্য লিভিং মিউজিয়াম অফ দ্য নর্থ। এ মিউজিয়ামে সব থেকে বেশি যা নজর কাড়ে তা হল, ঊনবিংশ শতকের শ্রমিকদের কঠোর শ্রম নিংড়ে কীভাবে চলছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের চাকা তার ছবি, কোনো লুকোছাপা নেই। লিখছেন বৈশাখী মিত্র। ... ...
তবে আর কী। হাতে নিন হাতা-খুন্তি। আর নিজেই করে ফেলুন খানা তৈয়ার। দুই কিসিমের রেসিপি এবার। যারে কয় হাঁসজারু, থুড়ি ফিউশন খাবার—নাম? ফুলকপির হাইকু! আহা খানা নয়, যেন পঙ্ক্তি কবিতার! সঙ্গে তার খানা গুরুবাদী, থুড়ি খানা অথেন্টিক, আগমার্কা খাঁটি— বাদশাহি বিন্স। চেবাতেই মেজাজখানা ঠিক যেন রাজা-রাজড়ার। ভয় নেই, মশলার ভুলে পড়বে না ঢি ঢি! বলে দিতে রান্নার নানা প্যাঁচপয়জার হাজির যে ডিডি। ... ...
অসাম্য, হিংসা, জাতি-লিঙ্গ দ্বেষ রাষ্ট্রীয় বিচারব্যবস্থায় কম নেই। বস্তুত রাষ্ট্রীয় ন্যায় প্রতিষ্ঠাই করা হয় ‘পুলিশ’ নামক হিংসা সংগঠনটির মাধ্যমে। রাষ্ট্রের বিচার ব্যায়বহুল, নিম্নতর পুলিশ থেকে উচ্চতম প্রধান বিচারপতি সকল পেশাজীবীর জন্য রাষ্ট্র যা ব্যয় করে তা সাধারণ মানুষের কাছে অকল্পনীয়। প্রশান্ত ভূষণের এক টাকা জরিমানার পিছনে দেশের মানুষের কয়েক লক্ষটাকা নিশ্চিতভাবে খরচ হয়েছে আদালত-পদ্ধতিতে। ... ...
যতজন ভারতীয় বলিউডি ছবি দেখেন, ততজন নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতা শোনেন না। ফিল্মের মাধ্যমে কোন বার্তা দিলে সে বার্তা যে অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায় এবং বার্তার জোর অনেক বেশি হয় সেকথা বামপন্থী, মধ্যপন্থী, দক্ষিণপন্থী --- সকলেই বোঝেন। উপরন্তু বলিউড ভারতের মানুষের কাছে পুরাণকথিত স্বর্গলোক, যেখানে দেবদেবীদের বসবাস। সুতরাং বলিউডি ছবির বার্তা বিরাট অংশের মানুষের কাছে বেদবাক্য --- কখনো সচেতনভাবে, কখনো অবচেতনে --- এ কথা বুঝতে আধুনিক চাণক্য হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ... ...
এম জে আকবর কতটা দোষী আর কতটা মিথ্যা অভিযুক্ত, এর আনুপুঙ্ক্ষিক তদন্ত হওয়া দরকার। এবং সবিশেষ বাদী প্রতিবাদী শিবিরের বাইরে বিষয়ের নানা দিক খতিয়ে দেখা প্রয়োজন, কারণ ভারচুয়াল যোগসূত্র আমাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ রায় দেবার স্বাভাবিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। কেবল সত্যের জন্য কোনো দরদ নেই আমাদের, তবু আমরা গসিপ থেকে সরে আসবো না। প্রতিদিন যেন এই স্ক্যান্ডালের বাটি পূর্ণ থাকে। ... ...
১৯৪৭-এর পরবর্তী নানারূপ কৃষি সংস্কার, আইন করে জমিদারি প্রথার বিলোপ সত্ত্বেও ভারতরাষ্ট্রের উৎপাদন সম্পর্কের সামন্ততান্ত্রিক চেহারাটি বদলায়নি, সামন্ততান্ত্রিক সম্পর্কের উপর আইনি আঘাত এলে, অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে নতুন ধরনের উপরিকাঠামোর সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামন্তবাদ নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে রেখেছে। বুর্জোয়া আইনের মাধ্যমে জমি হাতবদল আটকাতে আইনি ব্যবস্থার নাকের ডগায় গড়ে ওঠে সামন্ততান্ত্রিক সশস্ত্র সংগঠন। ... ...
খাপ কিন্তু শিল্প। চপসিল্পোর মতো খাপসিল্পো। এখানে এডিট স্ক্রিনিং স্ক্যানিং--- ইত্যাদির ব্যাপক কারুকাজ চলে। তো, ওই সুচারু ইন্টেলেকচুয়াল কারুকাজে কমেন্টের 'বাবা উক্ত' শেষের 'ভালোবাসা' 'মানবিক মুখ' কথাটথা ঝড়াকসে বাদ চলে গেলো। এবং ন্যাজাবিযুক্ত স্ক্রিনশটটি পোস্ট হইতে পোস্টান্তরে বাহিত হইতে লাগিলো। ... ...
১৯২২ সালে গান্ধীর ডাকে পথে নামা আন্দোলনকারীরা যখন গোরক্ষপুরের চৌরিচৌরায় থানার ভিতরে ঢুকে ইংরেজসেবক ২২ জন পুলিশকে খুন করেছিল, গান্ধী আন্দোলন তুলে নিয়ে তাঁর পত্রিকা ‘নবজীবন’-এ লিখলেন, গোরক্ষপুরের চৌরিচৌরার ওই ঘটনার জন্য আমিই সব থেকে বেশি দায়ী। চলতি বছরের ২৪ মার্চ রাতে নরেন্দ্র মোদি ৪ ঘণ্টার নোটিসে লকডাউন ঘোষণা করে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে ফেলে দিলেন। সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী বাড়ি ফেরার পথা প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হল রাস্তায়, রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে, পথ দুর্ঘটনায়, পথে অসুস্থ হয়ে বিনা চিকিৎসায়। খাবার, পানীয় জলের অভাবে তারা ধুকতে ধুকতে পায়ে হেঁটে, সাইকেলে, ভ্যানে চেপে রওনা দিয়েছিলেন বাড়ির পথে। তার পরও বহুবার নানান বাহারি পোশাকে নরেন্দ্র মোদি সরকারি ক্যামেরার সামনে এসেছেন। একবারও কিন্তু স্বীকার করলেন না যে তাঁরই ভুলে লক্ষ লক্ষ মানুষ অনন্ত দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। গান্ধী কি শুধু বসার কায়দায় আর বক্তৃতা দিয়ে হওয়া যায়! আজ থেকে চার বছর আগের কথা। আচমকা নোট বাতিল করে গোটা দেশকে তিনি বিপাকে ফেলেছিলেন। বলেছিলেন সব কালো টাকা বেরিয়ে পড়বে। দেখা গেল তা হল না। সব টাকাই ব্যাঙ্কে ফেরত এল। বলেছিলেন, কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ কমবে। যার কোনও লক্ষণই নেই। ওই সময় টাকার জন্য ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িবে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কখনও তো নরেন্দ্র মোদি বলেননি যে তিনি মানুষের এই দুর্ভোগের দায় নিচ্ছেন! লাইনে দাঁড়িয়ে বয়স্ক মানুষদের মৃত্যুর দায় তিনি নিচ্ছেন, কেউ কখনও শোনেনি তঁর মুখে এমন কথা। ... ...
বৈজ্ঞানিকদের পুর্ব-লব্ধ জ্ঞান এক্ষেত্রে বিশেষ কাজে লেগেছে। সেগুলো হল – (১) করোনা ভাইরাসের দেহের স্পাইক প্রোটিনের ভূমিকা সম্বন্ধে আগাম ধারণা থাকা, (২) ইমিউনিটির ক্ষেত্রে স্পাইক প্রোটিন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে “নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি”-র ভূমিকা, (৩) নিউক্লিক অ্যাসিড (যেমন আরএনএ বা ডিএনএ) ভ্যাক্সিন প্ল্যাটফর্মের উন্নত চেহারায় বিবর্তন এবং (৪) ভ্যাক্সিন তৈরির প্রক্রিয়াকে ধাপে ধাপে (sequentially) করার পরিবর্তে সমান্তরাল ভাবে (parallel) করা, কিন্তু যারা ভ্যাক্সিন স্টাডিতে অংশগ্রহণ করেছে তাদের ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি না নিয়ে। পূর্বোল্লেখিত সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে – “কার্যকারিতা কেবলমাত্র তখনই নির্ধারণ করা যাবে যখন যাদেরকে ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে এবং অতিমারির হটস্পটের মধ্যে তুল্যমূল্য বিচার (match) করা যায় ... এজন্য প্রাথমিক এন্ড পয়েন্টগুলোকে সতর্কতার সাথে নির্বাচন করতে হবে (এ বিষয়ে এর আগে বিস্তারিত আলোচনা করেছি), নির্বাচন করতে হবে স্টাডি-ডিজাইন এবং স্যাম্পেল সাইজের (অর্থাৎ কতজনের ওপরে ট্রায়াল দেওয়া হবে) সম্ভাব্যতার পুনর্মূল্যায়ন বিবেচনায় রাখতে হবে।” ... ...
যাঁরা কোলকাতায় ক্লাসে বসে ছাত্রছাত্রীর কাছে শিক্ষাতত্ত্ব (education theory) পরিবেশন করছেন আর যে মানুষটি রোজ ভোর চারটের সময় ঘুম থেকে উঠে তিনঘণ্টা দৌড়ে স্কুলে পৌঁছে একটা ছোটো বাচ্চার ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে সাধনা করছেন তাঁদের দর্শন এবং মতামত কিন্তু আলাদা। ভাগ্যবশত দু-বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের কিছু জেলার বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে মতামত আদানপ্রদানের সুযোগ পেয়েছিলাম, সীমিত সুবিধা, সীমিত সংস্থান, সীমিত অর্থ সংস্থানের মধ্যেই, প্রত্যহ অনেক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে লড়াই করেই তাঁদের অপ্রতিহত যাত্রা এবং সাফল্য। সেখানে পরিষ্কার হয়ে উঠেছিল যে নতুন শিক্ষাব্যবস্থা ও উন্নত পরিকাঠামো অবশ্য প্রয়োজন। শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে আমার আলোচনার একটা বড়ো অংশ জুড়েছিল, ‘Authentic learning'-এর প্রসঙ্গ, এই প্রক্রিয়ায় স্কুলে শ্রেণিকক্ষে এবং শ্রেণিকক্ষের বাইরে inquiry based learning, project based learning কীভাবে প্রয়োগ করা যায়? ... ...