এইভাবে অসংখ্য বন বাংলোর কথা ভাবতে ভাবতে বুকিং করা বাংলোটার কথা গুলিয়ে গেল এরকম সমস্ত এফ আর এইচ-য়ের ক্ষেত্রেই হয়। এসব জায়গা সাহেবরা খুঁজে, পেতে, ঘোড়ার পিঠে চড়ে, হেঁটে ঘুরে ঘুরে আবিষ্কার করেছে তারপর জঙ্গল চিহ্নিত করে, দখল করে, সুরক্ষিত করে বানিয়েছে আর প্রতিনিধিত্ব স্থানীয় করে তুলেছে—জঙ্গলের প্রতিনিধি হল বনবাংলো বা এফ আর এইচ, এরকমই চেয়ে এসেছে বৃটিশ সাহেবরা। যাদের স্থান মাহাত্ম্য বুঝতে হত যুদ্ধের কারণে। ... ...
বহু মানুষ আছেন যাঁরা নিজেদের দাবিগুলো মুখ ফুটে বলেই উঠতে পারেন না, এঁদের মধ্যে অনেকে আছেন যাঁদের দাবি বিষয়ে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। দুর্ভাগ্যের কথা, আমরা যারা নিজের এবং অন্যের মন কী বাত নিয়ে খুব বাতচিত করি, তাদের কাছেও এই দাবি তুলতে না পারা অংশটার গুরুত্ব খুব একটা স্বীকৃতি পায় না। ... ...
তার চেনা এক রেকর্ড কালেক্টর আছে মতিন মিঞা। তার বাড়ি বারাসতে। সে কলকাতা কেন জেলায় জেলায় ঘুরে নানা গান জোগাড় করে আনে। সিডি, টেপ। তারপর শুভমকে ফোন করে, স্যার লাগবে, প্রাণবন্ধু ঘোষাল, সেভেন্টি এইট, সাতষট্টি সালের রেকর্ড, নিজের কথা নিজের সুর, বর্ষার গান, খুব ভালো, শুনে দেখুন, মনে হবে...। কী মনে হবে মতিনভাই ? স্যার কাল রাতে আমার গ্রামোফোনে চালিয়ে ছিলাম, মেঘ করেছে ঘন করে, ঠান্ডা বাতাস বইছে, তখন বেলা পড়ে যায় যায়, ষোল সতের তারা, রঙিন শাড়ি, মাথায় লাল ফিতে, হাত ধরে নাচছে আর গাইছে। তারপর ? সব যেন এক পেখম তোলা ময়ুরকে ঘিরে গাইছে গো। তারপর। কখনো মনে হতে লাগল কৃষ্ণকে ঘিরেছে গোপিনীরা, গোবর্ধন গিরির মাথায় মেঘ জমেছে , মেঘের ছায়া নেমেছে ধরাতলে। ... ...
এটার নাম সোনা-অষ্টমী। মানে সোনাগাছির অষ্টমী। এমনিতেই সারা বছর দ্যাখনদারি রোশনাইতে ভরে থাকে হিজবিজবিজ গলিগুলো। অষ্টমীর দিন তার যৌবন যেন ফেটে পড়ে, কী উদ্দাম, আর কী নিষিদ্ধের প্রতি আকর্ষণ ! এতো সুন্দর মুখ, ঝলমলে সাজ আর পালিশ করা কথা ! স্বপ্নাকে আধো অন্ধকারে মনে হচ্ছে যেন কোনো রাণী। এই গলি যেখানে বড় রাস্তায় মিশেছে সেখান থেকেই শুরু ছোট ছোট টুনি বালবের চাঁদোয়া। তার আভা এসে ওর গালে পড়েছে। তালাবন্ধ আপনে আপের সেন্টারের দেওয়ালে হেলান দেওয়া মেয়ে অষ্টমী পুজো উদযাপন করবে ব'লে খদ্দেরের জন্য দাঁড়িয়ে আছে। ... ...
লম্বা-চওড়া, জিম করা সুদর্শন তুহিনকে একবার দেখে চোখ ফেরানো শক্ত ছিল। সবথেকে আকর্ষণীয় ছিল ওর চোখ দুটো। ভাসা ভাসা স্বপ্নালু। আর হাসলে গালে টোল পড়ত। সব মিলিয়ে মনে হত, যেন বলিউডের কোনও রোম্যান্টিক হিরো। ওরকম চেহারা আর ওই রকম ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে যে কেউ অন্তত গোটা কতক প্রেম তো করতই। কিন্তু তুহিন ছিল লাজুক, একটু অন্তর্মুখী। সম্ভবত নিজের সেক্সুয়ালিটিকে অন্যদের, বিশেষত আগ্রহী মেয়েদের থেকে দূরে রাখতেই, নিজের চারপাশে একটা গণ্ডি টেনে রাখত তুহিন। তার জন্য কেউ কেউ ওকে অহংকারী ভাবলেও, সৌম্য অন্তত জানে, যে ও আদপেই ওরকম ছিল না। সৌম্যর সঙ্গে একটা সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক শুরুতেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল তুহিনের। তবে একে অন্যের ওরিয়েন্টেশনের ব্যপারে জানতে সময় লেগেছিল আরো অনেকদিন। ... ...
আমিও জানি, একদিন টোবা টেক সিং-এর মতন আমাকেও খসে পড়তে হবে নিজের পায়ের থেকে। প্রশ্ন করলে বলা হবে এজেন্ট প্রোভোকাটুর। আগেও বলেছে অন্য সরকার। অন্য দল। দরকারে জেলে দেবে, গুলি করবে, অসম্মান করবে নানা ভাবে। কিন্তু আমার নামও টোবা টেক সিং। সমস্ত দলের সীমানার বাইরের এক নো-ম্যানস ল্যান্ড-এ দাঁড়িয়ে আমি জানতে চাইছি আমার দেশটা ঠিক কোথায়? আপনাদের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আমার দেশটা কোথায়? কোথায় প্রশাসন মনে করবে না আমি তার কেনা গোলাম? মনে করবে না যে আমাকে বন্দুক আর ভয় দিয়েই শেষ করা যায়? কোথায় তার সময় থাকবে আমার প্রার্থনার উত্তর দেবার, আমার কথা শোনবার? আমার সঙ্গে কথা বলবার? কোথায় সে উন্মাদ ঈশ্বর সেজে থাকবে না আমারই সঙ্গে পাগলা গারদে? ... ...
আগের পর্বের আলোচনাটা অনেক বেশী দিল্লী-কেন্দ্রিক ছিল। এই পর্বে বিজাপুর, লক্ষ্ণৌ এবং মাইসোরের আলোচনা হল। এবার বলব বাংলার কথা। অর্থনৈতিকভাবে মুঘলযুগে বাংলার বিশেষ স্থান ছিল, কিন্তু যে কারণেই হোক, বাংলায় খুব আড়ম্বরপূর্ণ সমাধি নেই। বাংলার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সমাধিসৌধ হল ত্রিবেণীর জাফর খাঁ গাজী মসজিদ, মালদহের একলাখি সমাধিসৌধ আর ফতে খাঁর সমাধিসৌধ, এবং মুর্শিদাবাদের আজিমুন্নিসা বেগমের সমাধি। এর মধ্যে প্রথম দুটি সুলতানি যুগের, শেষের দুটি মুঘল বা মুঘল-পরবর্তী যুগের। প্রথমটি সমাধির থেকেও দরগা এবং মসজিদ হিসাবে বেশী পরিদৃষ্ট হয়। দিল্লীতে আমরা যেরকম দেখেছি, বাংলায়ও একইরকম বিবর্তন দেখা যায়। ... ...
আমাদের ইস্কুলের একশ পঁচিশ বছর এসে পড়েছে। বিভিন্ন প্রাক্তনী ব্যাচের ব্যস্ততা তুঙ্গে। আমরা সাতাশির ব্যাচ ঠিক করলাম, কলকাতায় প্লেগ মহামারী আর বর্তমান করোনা মহামারীর তুলনা করে একটা আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার করব। ১৮৯৮ সালে ইস্কুল প্রতিষ্ঠার সময়ে প্লেগের থাবায় আহত হয়েছিল শহরটা, তাই এই আলোচনার উদ্যোগ। বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা বন্ধুরা মিলে সময় বের করে আমরা কাজ শুরু করলাম। মাতাজীরা বললেন, নিবেদিতার ডাকে সেযুগের যুবকেরা, মহিলারা প্লেগ নিবারণে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। এই করোনা মহামারীতে নবীন প্রজন্ম কীভাবে অংশ নিয়েছে, সেটা তাঁরা শুনতে চান। ... ...
না, শিল্পী কখনই সাংবাদিক নন - নিত্যকার ঘটনার জার্নাল মেইনটেইন করা তাঁর অবশ্যপালনীয় দায় নয়। তাঁর মনের মধ্যে আসা দৃশ্যকল্পকে তিনি রঙতুলি দিয়ে ধরেন কাগজে, ক্যানভাসে। কিন্তু, সেই মনের মধ্যে আসা দৃশ্যকল্পে সমকাল, পারিপার্শ্বিক হানাহানি, মানুষের অসহায়তা, সমাজের গরিষ্ঠ অংশের অনিশ্চয়তা ঠাঁই পাবে না এতটুকু? ছবিতে শুধুই ফুটে উঠতে থাকবে শিল্পীর সমকালবিমুক্ত অন্তর্দর্শন (শিল্পীর অন্তর্জগত যদি সমকালীন সঙ্কটে আলোড়িত না হয়, তাহলে সেই অন্তর্দর্শন তো নিছক আত্মকেন্দ্রিকতা), কিম্বা স্বপ্নের নারী, অথবা দৃষ্টিনন্দন প্রকৃতিদৃশ্য? এ কী তাঁদের অন্তর্জগতের যথার্থ প্রতিফলন? নাকি, তাঁরা সর্বার্থেই এমন অন্তঃসারশূন্য হয়েছেন, যে ক্লিশে বিষয় বাদ দিয়ে কিছুই আনতে পারেন না ক্যানভাসে? ... ...
আপনি যে একদিন বিখ্যাত হবেন তা আমার জানা ছিল, আমি মুজফ্ফর সাহেবকে বলছিলুম, আমার বিশ্বাস ছিল আপনি একদিন দেশবিখ্যাত এক লেটোশিল্পী হবেন। এখন তো দেখছি আপনি একজন দেশবিখ্যাত লেখক কবি এবং গায়ক, প্রায় ঠিকই ছিল আমার ধারণাটা। কিন্তু আপনি কি জানেন, ছেলেবেলায় আলাপ না হওয়া সত্ত্বেও আমি কেন আপনাকে মনে রেখেছি? আমার মায়ের কাছে শুনেছিলুম আমি নাকি এক ফকিরের আশীর্বাদে জন্মেছিলুম। ফকির মানে কী, আমি জানতুম না তখন। কিন্তু আপনার বাবা তো অজয়ের দুপারেই বিখ্যাত ছিলেন। আমি যখন শুনলুম তাঁর নাম ফকির আহ্মদ, কেউ না বলা সত্ত্বেও আমি ধরে নিলুম, ইনিই নিশ্চয়ই সেই ফকির, এঁর আশীর্বাদেই আমি জন্মেছি। ... ...
পাগলি খোঁড়া ঝুমির বিটি বাতাসিয়া এবার জোয়ান মরদ কুলিদের সব টেক্কা দিয়ে মজুররত্ন হবে। এমন বিষয় মেনে নিতে পারেনি কেউ। একদিন সন্ধ্যার পর কাজ থেকে ফেরবার সময় একদল মুখে কাপড় বাঁধা পুরুষ ছিন্নভিন্ন করে দেয় বাতাসিয়াকে। খোঁড়া ঝুমির বাতাসিয়াকে মজুররত্ন বানানোর স্বপ্ন ফের চিরতরে ঘুচে যায়। বাতাসিয়া এখন খুদে খুদে চোখ জোড়ায় ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে। খাদানে এমন ঘটনা মাঝেসাঝে ঘটে। তাই হইচই একটু কমই হয়। তা ছাড়া বাতাসিয়া তো বোবা হয়ে গেছে। ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে আর নাল ঝরে, শুধু বসে বসে পাথর ভাঙে। বাতাসিয়া মা হতে চলেছে খবর পেয়ে ছুটে এসেছিল সুজাউদ্দিন। ঝুমিয়াকে রেগে গিয়ে বলেছিল – ওকে হাসপাতালে নিয়ে যা। যা খরচা লাগে আমি দেব। মাথা নেড়েছিল ঝুমিয়া – না মালিক। মারাংবুরু জীবন দেয়। নেয় না বটে। ... ...
টেস্টিং এর ক্ষেত্রে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পার্থক্যও লক্ষনীয়| ২৫শে মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী যেখানে মহারাষ্ট্রে টেস্ট ৩,৭৯,১৮৫, কেরালায় ৬৩,০০৯, পশ্চিমবঙ্গে সেই সংখ্যাটা ২০শে এপ্রিল অব্দি ছিল ৫৪৬৯ আর মে মাসের ২৫ তারিখে ১,৪৮,০৪৯| বিগত প্রায় এক মাসে পশ্চিমবঙ্গে টেস্টের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে| প্রতি পজিটিভ কেস পিছু টেস্টের সংখ্যা এই মুহূর্তে চল্লিশের (৩৮.৮) কাছাকাছি। ১০ই এপ্রিল নাগাদ এই সংখ্যাটাই ছিল ১৮| তুলনায় কেরলে ১০ই এপ্রিল নাগাদ এই সংখ্যাটা ছিল ৩৬.৭ আর ২৫শে মে’র হিসাব অনুযায়ী, ৭০.২, দুক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গের প্রায় দ্বিগুন| অর্থাৎ শুরু থেকেই পজিটিভ কেস পিছু বেশিমাত্রায় সন্দেহভাজন ব্যক্তির টেস্ট করে কেরলে যেখানে কোভিড প্রায় নিয়ন্ত্রণে, সেখানে এই রাজ্যে কম রোগলক্ষণযুক্ত বা উপসর্গহীন অথচ সংক্রমিত এমন অনেক মানুষ এখনও অধরা থাকার সম্ভাবনা প্রবল| ... ...
আলাউদ্দিনঃ দেখো দিকি আবার মালা ক্যানো! রবীন্দ্রনাথঃ নন্দলাল খাঁ সাহেব বলছেন; ‘এ মণিহার আমায় নাহি সাজে’, ভেবে দেখতে হবে কে কার অলঙ্কার! মালা খাঁ সাহেবের না খাঁ সাহেবের মালা। খাঁ সাহেব স্মিত হেসে আসন গ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথঃ সাহানা ‘সুরের রসে হারিয়ে যাওয়া সেই তো দেখা সেই তো পাওয়া--- বিরহ মিলন মিলে গেলো আজ সমান সাজে’।। রবীন্দ্রনাথঃ নির্মল থামলে কেন ? ভয় পেয়ো না, খাঁ সাহেবও একদিন শিখেছেন তুমিও তো শিখছো। তফাৎ হল খাঁ সাহেব ওস্তাদ আহমদ আলীকে গুরু পেয়েছিলেন তুমি স্বয়ং খাঁ সাহেবকেই পাচ্ছ। আসলে ‘অরূপরতন’ নাটক মঞ্চস্থ হবে। তারই প্রস্তুতি চলছে। খাঁ সাহেব সঙ্গীত ভবনে যারা তারের যন্ত্র বাজায় তাদের তার যতটা যত্নে টেনে বাঁধা, সুর ততটা নয়। আপনি যে ক'দিন আছেন, একটু সুর বেঁধে দিন। আলাউদ্দিনঃ গুরুদেব আমি তো বেসুরা আতাই, জীবনে তো একটা সুর লাগাইতে পারলাম না। আমি হলেম গিয়ে ম্লেচ্ছ, ডাকাতের বংশ। রবীন্দ্রনাথঃ ডাকাতের বংশ বলেই তো খাঁ সাহেব যখন যাকে গুরু পেয়েছেন প্রকাশ্য দিবালোকে তাঁর সুরের নির্যাসটুকু এমন করে নিজের করে নিয়েছেন যে, সে বেচারা নিজের ধন আর নিজের কাছে রাখতে পারলো না। এমন ডাকাত তো আমার সঙ্গীত ভবনে আরও কয়েকটা চাই। ... ...
দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমি কিছু সোচ্চার বর্ণবাদী বাঙালি ভদ্রসন্তানের কাছে আসন্ন অমঙ্গলের সংকেত। এই অ্যাকাডেমি সফল হলে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ওপর ভদ্রসমাজের বংশানুক্রমিক বজ্রআঁটুনি শিথিল হবার সম্ভবনা রয়েছে। ভদ্রসমাজের একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখতেই দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির ওপর আক্রমণ হানার চেষ্টা চলেছে। এক্সক্লুশানের সংস্কৃতি এক ভগ্নপ্রায় সংস্কৃতি। বাঙালি ভদ্রসমাজের এই অপচেষ্টা ব্যর্থ না করতে পারলে সমগ্র বঙ্গসংস্কৃতিই চরম সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে। ... ...
সময় বদলে গেছে। সন্দীপ দত্তের মতো লিটল ম্যাগাজিনের জন্য জীবনপাত করার লোক চারপাশে আর দেখি কই! টেমার লেনের লাইব্রেরিটির ভবিষ্যৎও অজানা। বিপুল ও দুর্লভ সব পত্রিকার দেখভাল করবেন কে এবার? সন্দীপ দত্ত চলে গেলেন। আমাদের কাছে রেখে গেলেন স্মৃতি ও প্রশ্ন। বেশ-কিছু দায়ও, যা হয়তো পালন করতে পারব না কোনোদিনই। শুধু গর্বের সুযোগ ফিরে-ফিরে আসবে— ‘আমরা সন্দীপ দত্তকে চিনতাম।’ ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হবে আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রস্তুতি প্রায় শেষ। বেরোনোর আগে সুলতানের শুভেচ্ছা নেওয়ার পালা। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
ফুটবল মাঠের গেটের কাছে দেখি চারটি কুকুর দাড়িয়ে আছে। চারটি কুকুরের মধ্যে দুটোর রঙ কালো এবং স্বাস্থ্যবান। আর দুটো ছিল মোটামুটি গেরুয়া রঙের হবে, মানে--যেগুলো সাধারনত রাস্তায় আমাদের চোখে পড়ে। তবে আমার চোখে সব সময় পড়ে, কারন আমি খুব ভয় পাই রাস্তার কুকুর দেখলে। আর আমার মা বলে ভয়ের কিছু নেই। ব্রেভ হও। কুকুরকে কিছু না বললে সেও কিছু নাকি বলে না। ... ...
ও চোখ দুটো বন্ধ করল। খুব আবছা হাসির টুকরো ঠোঁটের কোণে। মেনে নেওয়ার হাসি। একেবারে নিজস্ব। আর ঠিক তখনই আমার মনে ঝিলিক দিয়ে গেল, ও যা কিছুর জন্য অপেক্ষা করছে... এই মুহূর্তে তা আমাদের দু'জনের। দু'জনকেই ভাগ করে নিতে হবে। তা না হলে এই যে আলো ..দোদুল্যমান আলো .. আমাদের যাপনে এখন...তা নিভে যাবে। ফুসমন্তরে । আলো -আঁধারিতে দেখি ওর চোখের পাতা কেমন তিরতির করে কাঁপছে। নিজেকেই বুঝি স্তোক দিয়ে যাই, হয়ত অনেক করে চাওয়া এক দু'কণা সুখের কুচি এখনও পড়ে আছে কোথাও। ওর মনের কোণের বাইরে। মাথাটা একটু নামিয়ে একটা চুমু খেলাম । ওর বন্ধ চোখের পাতায়। ... ...
লাক্সের নিয়ন বিজ্ঞাপনের পরই একটা বিশাল বোর্ড জুড়ে একটি হাস্যোজ্জ্বল তরুণী লাইফবয় সাবানের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। তার হাসি ও তারুণ্য মজিবুল হকের চোখকে ধরে রাখে। মজিবুল হকের ডান পাশে তার স্ত্রী, রেজওয়ানা চৌধুরী। রেজওয়ানা অনেকক্ষণ ধরে মজিবুলকে দেখে, গত এক বছর হল তার স্বামী এই রকম, কিছুটা আনমনা, ব্যবসার কাজে মন নেই। পঞ্চাশ পার হয়ে গেছে, মধ্যবয়সের সঙ্কট। লাইফবয় মেয়েটির দিক থেকে মজিবুল চোখ ফেরাতে পারছে না, রেজওয়ানা খুব অস্বস্তিতে পরে। মেয়েটিকে যত খুশী দেখুক না মজিবুল, রেজওয়ানার সমস্যা হল তাদের গাড়ির ড্রাইভারকে নিয়ে। ড্রাইভার সেলিম আয়নায় আড়-চোখে তার মালিকের দিকে তাকায়, রেজওয়ানা সেলিমের মুখ দেখতে পায় না, কিন্তু তার মনে হয় সেলিম এই পরিস্থিতিকে খুব উপভোগ করছে। রেজওয়ানা ভাবে মজিবুলকে খুব দ্রুত একটা কিছু বলতে হবে। ... ...