মাসীমা একজন ডাকসাইটে অধ্যাপক।বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে তাঁর জ্ঞানের গভীরতা আর তাঁর বাজখাঁই গলার দাপট - এই দুই কারনেই উনি কলকেতার বিদ্বত সমাজে এক দারুন সম্ভ্রমের আসন ছিনিয়ে নিয়েছেন। তাবৎ কলা কুশলীরা কানে তুলো গুঁজে তাঁর দুয়ারে ধরনা দ্যান। গুরুচন্ডালীর সম্পাদক (অনরারী) ঈশেন ও মাসীমার কথোপকথন নীচে তুলে দেওয়া হলো। ... ...
ভারতের নাগরিকেরা কি তবে আর ভারতীয় গণতন্ত্রের শ্রেষ্ঠ উৎসব, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইছেন না? অন্তত নির্বাচন কমিশনের তথ্য তো তাই বলছে। ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচন এবং তারপরে যে কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন প্রতি ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ভোটদানের হার ক্রমশ কমছে। গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের আগে, নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মৌ চুক্তি অবধি করেছিল, যাতে সেই সব সংস্থাতে কর্মরত মানুষেরা ভোট দিতে অনীহা প্রকাশ না করেন। যে সমস্ত কর্মীরা নির্বাচনে অংশ নেবেন না, তাঁদের নামের একটি তালিকা অবধি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। বিরোধীদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, এই বন্দোবস্ত তো ‘বাধ্যতামূলক’ ভোটদানের প্রক্রিয়া, কোনও গণতন্ত্রে একজন মানুষ, নানান কারণে ভোট নাও দিতে চাইতে পারেন, তা’বলে কি একজন মানুষকে ভোটদানে অংশ নিতে বাধ্য করা যায়? ... ...
রুমিকে শেখাই। দুজনে খেতে এলে মুখোমুখি বসতে হয়। কার্টেসি। এসেই ধপ করে পাশে বসে পড়ছিলো। যা যা বলি, যে সিকোয়েন্স-এ খেতে বলি, রুমি মন দিয়ে শোনে। আমার ওকে নতুন করে তোলার ইচ্ছেটাকে বুঝেই যেন শুষে নেয়। একটুও যেন বাদ না যায়, এমন অতন্দ্র হয়ে শোনে। ... ...
আর কী-বা সেবা দিতে পারি ফ্রিতে, দুশমনের ঠাণ্ডাতম দিনে... একদিন ছন্দ মেলাতাম, একদিন অন্ত্যমিল দিতাম, একদিন প্রেম ভেঙে যাওয়ার ছমাস যেতে না যেতেই ছটফট করতাম নতুন প্রেমের জন্য, আর এখন হারপিকের ফাঁকা কৌটোর দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিতে পারি সারাবসন্ত... আগের প্রজন্মের উন্মাদেরা সব কী করছেন এখন? নতুন বইটা তারা কি পড়লেন? কারুর হাতে কি জ্যান্ত হলো? কেঁপে উঠল কি কারও তালুর ওপর? কোথায় প্যাঁচাদের চিয়ার্স? আজ মাপবো হেমিস্ফিয়ারের জ্যামিতি-আকার-আয়তন... তার ব্যাপ্তি... একটা লোক অনর্গল হয়ে গ্যাছে বাংলাভাষার সাথে মিশে... এটা রোগ না নেশা না সিদ্ধি না অভিশাপ না চক্রান্ত না ভ্রান্তি না প্রতিভা না পরিশ্রম না নিউরোপ্রবাহ না প্রলাপ না পলায়ন না প্রারব্ধ না ট্রান্স না মোনোটনি...? ... ...
৮ মার্চ, ১৯৬৭: ক্রিস মার্কে SLON (Service de lancement des oeuvres nouvelles)-এর প্রথম প্রজেক্ট Loin du Vietnam (1967)-এর সম্পাদনা করছেন। Godard, Ivens, William Klein, Claude Lelouch, Alain Resnais এবং Agnès Varda এঁদের সকলের নিজস্ব নির্মাণ দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদ রয়েছে এতে। মার্কেরা একে বলছেন cinéma ouvrier। কোনোরকম ব্যক্তিগত নেতৃত্ব ও অথরশিপকে বাদ দিয়েই হবে নতুন সিনেমার নির্মাণ। এমন সময়ে Rhodiaceta থেকে চিঠি হাজির René Berchoud-এর। রেনে-রা তিন হাজার শ্রমিক ওখানে Rhône-Poulenc-এর মালিকানায় থাকা কারখানাটিতে ধর্মঘট করেছেন এবং দখল করে নিয়েছেন সেটা। একমাসের দীর্ঘ্য ধর্মঘট হয়েছে ২৫ শে ফেব্রুয়ারী থেকে। ১৯৩৬ সালের পরে সেই প্রথম কোনো কারখানা মজুররা দখল করে রাখলো। মালিক কোম্পানিটি সে আমলের ফ্রান্সের অন্যতম বড় কোম্পানি। ... ...
"মেয়েরাই উঠে এসেছে এ বইতে কথার পর কথায়, কিন্তু এ বই শুধু মেয়েদের বই নয়। এর মরমিয়া কথন, বিষয়ের ব্যাপ্তি সবাইকে দিয়ে পড়িয়ে নেবে গল্পগুলোকে। উপরি পাওনা মনস্তত্ত্বের নিখুঁত মিশেল আর শ্লেষের নির্দয় চাবুক। ব্যথা নিরোধক যন্ত্র গল্পটি খুব নাড়া দেয়। দত্তক, একটি মেয়েলি দুপুর, গোধূলিসন্ধি, সবগুলোই গতানুগতিকতার বাইরে অন্য গল্প। আর রয়েছে কল্পবিজ্ঞান টিট্টিভ । তাকে সার্থক গল্প করে তোলার কাজটি যশোধরা করেছেন অবলীলায়।" পড়লেন প্রতিভা সরকার ... ...
এক সুফি পীর বলেছিল ছেলেকে "রাত কি রানি” ফুলের কাছে নিয়ে যেও না যেন। তাহলে তাকে আর বেঁধে রাখতে পারবে না। রাত কি রানি, শিউলি ফুল। নিশিরাত জুড়ে সে কান্নার মত ঝরে পড়ে। অজস্র কান্নার ফোঁটা। সেই উদাসী - গন্ধ ওকে ঘর ছাড়া করবে। সেই থেকে মা, রাত কি রানি ফুল থেকে ছেলেকে দূরে রাখে ! আজমেঢ় শরিফে মাথা কুটে এই ছেলের জন্ম। বাবার অকাল মৃত্যুর পরে চিরাগ এ দিল্লির আঙিনায় খেলে বেড়ানো এক খ্যাপা ছেলেকে দেখে মায়ের চিন্তা হয়। পীর বলে, রাজার দুয়ারে মাথা কুটলে রাজার জন্ম হয়, নিদেন পক্ষে মন্ত্রীর । ফকিরের দরগায় মাথা কুটলে ফকির হবে না তো কি শাহেনশা হবে? ... ...
আপেল পাই জিনিসটার সাথে যদি আগে পরিচিত না থাকেন, এবং আমস্টারডামে গিয়ে প্রথমবার ট্রাই করেন, তাহলে হয়তো আপনার মনে এটা হালকা ভাবে ভেসে উঠতে পারে, যে – এটা কি আর এমন ব্যাপার, যার জন্য এত নামডাক? খুব বেশি কারিকুরি তো দেখতে পাচ্ছি না এই আপেল পাই-এ! এই ভাবনাটা মনের মধ্যে এলেই নিজেকে একটু ক্যালিব্রেট করে নেবেন – ভেবে নিন আপনাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করছে প্যারামাউন্ট-এর সরবত, নকুড়ের সন্দেশ বা আমিনিয়ার বিরিয়ানি নিয়ে! এইসব খাদ্য এমন সুউচ্চ স্তরে পৌঁছে গেছে, যে পার্থিব তর্ক করে কিছু হবে না – যার হয়, তার হয় টাইপের কেস। ... ...
আইনি মর্যাদার চেয়ে বড় প্রশ্ন সাংবিধানিক মর্যাদার। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী (বা সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত কোনও ব্যক্তি) কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পৌরহিত্য করতে পারেন? আমাদের সংবিধানের বিধান স্পষ্ট: সাংবিধানিক কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত ভাবে যেমন খুশি ধর্মীয় বিশ্বাস বা অনুশীলনে অংশগ্রহণ করতে পারেন, কিন্তু একজন পদাধিকারী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে তা করতে বাধা দেয়। সংবিধান এও বলে যে সরকারকে সমস্ত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম থেকে সমান দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যে কোনও একটি ধর্মের প্রতি ঝোঁক সাংবিধানিক মর্যাদার লঙ্ঘন। ২২ জানুয়ারির আচার-অনুষ্ঠানে রাষ্ট্র ও ধর্মের মধ্যে বিভাজন রেখা ঝাপসা হয়ে গেছে। কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই দেশের অন্যান্য ধর্মের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে হিন্দু ধর্মকে। ... ...
... আমার পুরোনো নিমগাছ চুড়োয় দেখেছি তার বাঁধা আছে পুজোর মাইক হেমন্তবাতাসের ঝরা গানে তারা-ঝিকমিক চাঁদের বাড়িতে ফেরা পাখি ... ... ...
অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের আগে যখন আফ্রিকায় ইউরোপিয়ানরা কলোনি গড়ে তুলছে, তখন তাদের মধ্যে সিফিলিস মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। পেনিসিলিন আবিষ্কার হবে আরও দেড়শো বছর পরে। ইউরোপিয়ান সৈনিকরা খেয়াল করেছিল যাদের ম্যালেরিয়া হচ্ছে এবং বরাত জোরে ম্যালেরিয়ার থেকে বেঁচে ফিরছে তাদের সিফিলিস সেরে যাচ্ছে। একাধিক সৈনিকের ক্ষেত্রে এই পর্যবেক্ষণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এর প্রকৃত কারণ বলা মুশকিল। তবে একটা কারণ হতে পারে সিফিলিসের জীবাণু ট্রিপোনেমা প্যালিডাম বেশি উষ্ণতায় বাঁচে না। ম্যালেরিয়া জ্বরের সময় দেহের উষ্ণতা মাঝে মাঝেই ৪০ – ৪২ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। সেই যুগে ম্যালেরিয়ারও নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা ছিল না। ফলে জ্বর চলতো দীর্ঘদিন ধরে। শরীরের মধ্যে থাকা সিফিলিসের জীবাণু এই উচ্চ তাপমাত্রায় মারা পড়ত। ... ...
পাড়ার দাদারা বলে চিনা শালারাই নাকি এ অসুখের ভাইরাস ছেড়েছে। নাক ফেটা হারামজাদা জাত। ভারতমাতার চরম শত্রু। টিভিতে চিনা মানুষদের ছবি দেখেছে হারু। ষ্টীলের থালার মত গোল চকচকে চেহারা। বাচ্চাকাচ্চা বুড়ো একরকমের দেখতে। বনগাঁর আকবর আলিদাদার দোকানে সাজানো থালার মত। কে জানে বাবা, মানুষ মেরে এদের কি সুখ ! আজকাল বাইরে কোথাও যাওয়া হয় না হারুর। গোহালেই থাকে। যত্ন নেয় গরুগুলোর । প্রত্যেক মাসের প্রথম রবিবার তিরিশটা গরু আর ওদের খাবার দিয়ে যায় চন্দনবাবু । তখন গরুগুলোকে খুব ভালো ভাবে লক্ষ্য করে। গাল দেখে , দাঁত দেখে , পেটে হাত বুলোও, গাভিদের ওলান ধরে পরীক্ষা করে। কোন গরুকে রোগা লাগলে জানতে চায়, কি রে হারু। খাবার দিসনি নাকি ? ... ...
আইন তিনটি আপাতদৃষ্টিতে কৃষি বিপণনে কর্পোরেটদের আরো বেশি সুবিধা করে দেবার বন্দোবস্ত। কৃষি বিপণনে কর্পোরেটরা আছে অনেকদিন ধরেই। পেপসি আলুর চুক্তি চাষ আজ এক দশক কি তারও বেশি দিন ধরে চলছে। কিন্তু জমছে না। মেট্রো ক্যাশ এন্ড ক্যারিও প্রায় আট বছর হতে চলল, মান্ডি বা এপিএমসি লাইসেন্স নিয়ে কিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে পাইকারি ব্যবসা করছে। খুচরো ব্যবসায় টাটা বিগ বাস্কেট, রিলায়েন্স ফ্রেশ, আদানি বিগ বাজার চলছে কিছুদিন হল। আগরওয়াল এঞ্জিন তেল, আদানি ফরচুন তেল, টোডি ইমামি তেল -- এসব তো আরো বহুদিনের ব্যাপার। কিন্তু কৃষি বিপণনে থাকলে শুধু ঠিক জমছে না, কৃষি বিপণনে থাকার ছদ্মবেশে চাষ বা কৃষিকে নিয়ন্ত্রণ করা, এক দায়িত্ববিহীন ক্ষমতা -- এ নাহলে আর কর্পোরেট কেন? ... ...
তিনদিন পরেই প্রয়াত হলেন রমানাথ রায়। গভীর, শাণিত ও তির্যক তাঁর সৃষ্ট গল্প ও উপন্যাস। তথাকথিত বাস্তবতা ও ফ্যান্টাসির ভেদরেখাও লঙ্ঘিত হয় প্রায়শ। সহমর্মিতা তাঁর সাহিত্যের বড়ো সম্পদ। ১৯৬৬। ‘এই দশক’ পত্রিকা প্রকাশ দিয়ে শুরু হয় ‘শাস্ত্রবিরোধী আন্দোলন’। ছিলেন তার প্রথম পাঁচ পদাতিকের একজন। লিখছেন আকৈশোর বন্ধু ও এ আন্দোলনের সহস্রষ্টা শেখর বসু ... ...
এই লাইনের মানে কী হলো? – জলধর বলে, ধারমুর শেখানো করম পুজো আমরা এখন সবাই মানি; মানি, তাই বাঁচি মাথা উঁচু করে। অনেক দিন আগে, তা প্রায় একশো বছর হবে, আমাদের পূর্ব পুরুষরা নিজেদের ভাষা প্রায় ভুলতে বসেছিলেন। তখন ইংরেজ আমল, আমাদেরই জঙ্গলের জমি কেটে খনি বানিয়ে ওরা আমাদের বাপ-দাদাদের তখন কুলি বানাচ্ছে, হাজার মাইল দূরে ওদের চা-বাগানে ধরে নিয়ে যাচ্ছে কুলির কাজ করার জন্যে, আর আমাদের বাপ-দাদারাও নিজেদের ভাষা ভুলে ওদের ভাষাই শেখার চেষ্টা করছেন। সেই সময়ে জন্ম নিলেন এক আশ্চর্য মানুষ যিনি অনুভব করলেন মাতৃভাষা মানুষের কাছে কত বড়ো সম্পদ। ... ...
রাঢ়ের এই অঞ্চলের অতীতের ইতিহাস আমরা মঙ্গলকাব্যগুলোতে পাই। ... তারা কি দুর্যোধনের মত মারাত্মক? ব্যাপক সামাজিক ধ্বংস, হত্যালীলার নায়ক? মাহুদ্যা আর ভাঁড়ুদত্তের মধ্যে প্রথম জন কেমন যেন মাথা গরমের, আর দ্বিতীয় জন লোভী, কুচুটে। যারা ঝিল বোজাতে চায়, তারা ব্যাপকভাবে অন্ধকারের মানুষ এমনটা নয় কিন্তু! চরম ধ্বংসাত্মক মনোভাব এখানকার মানুষের তেমন নেই। উচ্চকিত মন্দ নেই, গড়পরতা ভাল, গড়পরতা মন্দ।” বলতে বলতে আচমকা হেসে ফেললেন তিনি। বললেন, “তোমরা যদি কখনও উপন্যাস লেখ, এই এলাকার পটভূমিতে মহৎ উপন্যাসের সাদা মানুষ কালো মানুষ নিয়ে মুশকিলে পড়বে। আপাদমস্তক “কালো” মানুষ বোধহয় আঁকতে পারবে না, যদি বাস্তব থেকে চরিত্র খোঁজো। আবার সব ভাল মানুষের পো যদি সেই লেখার চরিত্র হয়, তবে পাঠকের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না নিশ্চিত। কৃত্রিমতার অভিযোগ উঠতে পারে কিন্তু! ... ...
সরকার যে শুধুমাত্র চাষির স্বার্থ ভেবে নতুন ব্যবস্থা আনছেন না তা শুধু এই উদ্যোগেই বোঝা যায় যে, এই বিল প্রস্তাব করার ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের জায়গাটি রাখা হয় নি এবং চাষির আইনি পরিসর বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। প্রান্তিক চাষির সুবিধা যদি প্রাথমিক লক্ষ্য হয়, তবে প্রাথমিক শর্তও হবে তার আইনি ও অর্থনৈতিক সুরক্ষার দিকটি মজবুত করা। স্বাভাবিকভাবে একজন প্রান্তিক চাষি শিক্ষা, প্রযুক্তির ব্যবহার ও আইনি সুবিধায় অনেকটা পিছিয়ে। বড় কর্পোরেটের সাহেবদের সঙ্গে এঁটে ওঠা তার পক্ষে কঠিন। ... ...
অনীতার কথা এইবেলা বলে নেওয়া ভালো কেননা, অনীতা প্রেমে পড়েছে। সেটা খুব বড় কোনো ব্যাপার নয়, আকছার পৃথিবীর প্রতিটি কোণেই চৌদ্দ থেকে চব্বিশ বয়সী একগাদা মেয়ে কিশোরী মায় উদ্ভিন্নযৌবনা পর্যন্ত প্রেমে পড়ছে, শুধু পড়ছে না, বলা ভালো ধপাধপ আছাড় খাচ্ছে। প্রেমের মতো এমন একটা সঘন স-আবেগ তদুপরি সলজ্জ ব্যাপারের সাথে আছাড় খাওয়ার মতো অমন আনকুথ ক্রিয়াশীলতার কথা ভাবতেই কেমন যেন তেতো অনুভূতি হয় মুখের মধ্যে ওর, কিন্তু ব্যাপার টা ঠিক ঐ রকমই আনকুথ বলা যায় একেবারে বিশ্রী রকমের আনকুথ হয়ে গ্যাছে। কারণ অনীতা, আমাদের সুন্দরী ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া চোখে হাফ কাট রিডিং গ্লাস দেওয়া, লেয়ার কাট চুল, স্মুথ হেয়ার সিল্কি শাইনিং স্কিন অনীতা, টম ক্রুজ লুক আর রালফ লরেন পোলো টি শার্ট বিশেষজ্ঞ অনীতা, সর্বোপরি শোভা দে আর সিডনী শেলডন গোগ্রাসে গিলে খাওয়া অনীতা হঠাৎ করে আছাড় খেয়েছে, থুক্কু, মন প্রাণ সবই সঁপে বসে আছে এই দর্জিকে! ... ...
ছেলেগুলো আসলে গণ্ডগোল করার মতলবেই এসেছিলো। বললো, চব্বিশ ঘন্টা সময় দিচ্ছি, তার মধ্যে না হলে আগুন জ্বালিয়ে দেবো। এখানকার এস-ডি-পি-ও কে চিনতাম আমি, ডি-এস-পি কেও চিনি, খবর দিলে হয়তো সাহায্য পেতাম, কিন্তু সে রাস্তায় যাইনি। সেদিন গেলাম না কলকাতায়। একজন মিস্ত্রীকে চিনতাম, যে আমাদের টয়লেট অনেকগুলো তৈরি করেছে। খোঁজ করে করে তাকে ধরলাম, সেপটিক চেম্বার সারাবার ব্যবস্থাটা হলো। বান্দোয়ানের হাসপাতালে গেলাম, কোনই ব্যবস্থা করা গেলো না। মিস্ত্রী বললো, কাউকে দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করিয়ে যদি ঢাকাঢুকি দিয়ে কোথাও রেখে দিতে পারি, ও পরের দিন সেগুলো সরিয়ে দেবার ব্যবস্থা করে দেবে। তারপর কী করলাম জানেন? গোটা কয়েক ড্রাম কিনে বান্দোয়ান থেকে ফিরলাম। ... ...
জাবেদা, রুমেলা, ফতিমা মেয়েটাকে ছেঁকে ধল্লো। পতমত একুন তো হিঁদু মেয়েছেলে মোসলমান মেয়েচেলে আলেদা করা যায় না। বড়ঘরের হিঁদু মেয়েচেলেরাও সিঁদুর পরেনা, শাকা পরে না। আর গরিবঘরে নিয়মমতো হিঁদু মোসলমান মেয়েচেলে আলাদা করাই যায় বটে কিন্ত একুন সবার মুকে ত্যানা। মাতায় মোসলমান মেয়েমানুষের মত কাপড়জড়ানো। এ মেয়েটার হাত ফাঁকা। এমনিতেই হিঁদু না মোসলমান? জাবেদা হাত ধরে জোরে ঝাঁকালো। ... ...