'এই ধরনের অপরাধে সেদিনই ছিল আমার হাতেখড়ি, যেজন্য বিপদটা হল।...' (শীতবন্দরে)। 'গোলমালটা ঠিক কীভাবে শুরু হল বলা খুব কঠিন।..' (পাইথনের গপ্পো)। 'কেলোটা হল বড়দিনে।...' (বড়দিন)। 'আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ঝড় আসার কথাই ছিল।...'(ক্যাম্পফায়ার, আমাদের রাতের উৎসব)। এই জাতীয় সূচনা লেখকের একটি বিশেষ স্টাইল। শুরুর এই কৌতূহল না মেটা পর্যন্ত পাঠক স্বস্তি পাবেন না। কিন্তু চিত্তাকর্ষক হল সেটা মিটে যাওয়ার পরে পাঠক টের পাবেন অতিরিক্ত কি একটা যেন বলা হল, যা প্লটের চাইতেও বেশি করে বেরিয়ে আসছে লেখকের অননুকরণীয় নির্মাণকৌশল থেকে! ... ...
যে চোখ সব কিছু দেখে, সে কিন্তু নিজেকে দেখতে পায় না, তাই চোখে পোকা পড়লে আমরা পাশের লোকটাকে বলি দেখতে। ডাক্তার সবার অপারেশন করে, তার পেটে ব্যামো হলে? জোনাকির নিজের বুকে আলো, তবু সে ধেয়ে আসে আলোর উৎসের দিকে। এ উদাহরণ অন্তহীন। জ্ঞানী লোকেরা হলে উদাহরণ দিয়েই বুঝিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু আপনি পড়েছেন আমার পাল্লায়। অত জ্ঞানী হলে আজ আমি প্রফেসর হতুম। সে যাক গে। ... ...
শিরীন, একমাত্র ভারতীয় খেলোয়াড় যিনি একটি-দুটি নয়, তিন -তিনটি খেলায় আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন… বিদেশের কিংবদন্তি ইয়ান বথাম, ভিভ রিচার্ডস, জন্টি রোডস…আর বিস্মৃত শিরীন কন্ট্র্যাক্টর কিয়াসের মধ্যে কোন মিল কি আদৌ আছে?... অথবা ভারতের কোটার রামস্বামী, সোমনাথ চোপড়া, ইফতিকার আলী খান পতৌদি বা হালের সোহিনী কুমারী বা যুজবেন্দ্র চাহালের সঙ্গেই বা শিরীন কন্ট্র্যাক্টর কিয়াসের কতখানি মিল বা অমিল?? ... ...
অগাস্টের আট তারিখ, লকডাউনের দিন বেহালার এক পরিচারিকা হেঁটে কাজে যাচ্ছিলেন। পর্ণশ্রী থানার পুলিশ তাঁকে আটক করে। রাতে তিনি ছাড়া পান। পরের দিন ওই বাড়িতে কাজে গেলে লকডাউনের দিন না আসার অজুহাত দেখিয়ে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। ... ...
মানুষ কেন ভোট দেয়? নব্বই কোটি ভোটারের দেশে এ প্রশ্নের অন্তত এক কোটি আলাদা উত্তর পাওয়া যাবে। বছর পাঁচেক আগে চমকে দিয়েছিলেন একজন রেলের হকার, বলেছিলেন ভোট না দিলে ভোটার কার্ড ভ্যালিড থাকবে না. পরবর্তীতে জানতে পারি এইরকম অদ্ভুত গুজব গ্রামেগঞ্জে প্রচলিত, এমনকি শহরেও। ভোটার কার্ড ভ্যালিড না-থাকাটা খেটে খাওয়া মানুষের কাছে এক দু:স্বপ্নের ব্যাপার। ... ...
কুমুদি রইলেন তাঁর গ্রন্থিত-অগ্রন্থিত গল্পে, প্রবন্ধে, কবিতায়, স্মৃতিতে। স্মৃতিস্তম্ভের স্থবিরতাকে ভালবাসিনি আমরা, চাইছি স্মৃতির চলমানতা। অক্ষর বেয়ে বেয়ে পরের প্রজন্মে পৌঁছে যাক কুমুদি- তারা চিনুক আমাদের কুমুদিকে, ভালবাসুক, লেখা পড়ুক, পড়াক বন্ধুদের। কুমুদিও তাদের চিনতে চাইবেন- বলাই বাহুল্য। স্মিত সহাস্য মুখে জিগ্যেস করবেন- কই , কী লিখচ , শোনাও দেখি। এই সব অলীক চেনাজানাকে বাস্তব করতে গুরুচণ্ডা৯ শুরু করছে বার্ষিক 'কুমুদি পুরস্কার' - কিশোর কিশোরীদের গল্প লেখার প্রতিযোগিতায়। এবার কুমুদির জন্যে গল্পের দ্বিতীয় বছর। ... ...
জনগনের ভোটে ক্ষমতায় আসা নির্বাচিত সরকার কি সত্যি সত্যি নাগরিকের ভুখা পেটে ব্যথিত হয়? তবে বালিকা কিস্কুদের দেশ কোথায়? সারাবছর বালিকাদের খাবার জোটে না। অভাব যায় না। কেননা নির্দিষ্ট উপার্জন নেই। এদের মাথায় উপরে কেউ হাত রাখার নেই। এবারে এসেছে ভাইরাসের দাপট। নতুন পরিস্থতি। এখন প্রতিদিন সকাল হলেই ভয়। অভাব আর অবসাদ। বালিকা কিস্কুর জীবিকা বলতে সাঁওতালি নাচ প্রদর্শন। বছরের বাকি দিন বালিকা দিনমজুরি করে। মাঝে মাঝে জমিতে চাষের কাজে ডাক পায়। স্বামীও লেবার খাটে। তিন সন্তান ও শাশুড়ি নিয়ে এভাবেই চলে সংসার। শাশুড়ির ভাতাও বন্ধ । দুইবার পেয়েছে এক হাজার করে টাকা। বালিকা কিস্কুর বিদ্যালয়ের মুখ দেখা হয়নি। তবু নিজের ছেলেমেয়েদের নিয়ে বালিকা খুব সচেতন। ছেলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে এবার। মেয়ে একাদশ শ্রেণি। অভাবের সংসারে এক নতুন পরিস্থিতি লকডাউন। বালিকা কিস্কু খুব সহজেই বলছে, “ভাইরাসের লেগে খাওয়া বন্ধ। দিনে আটা গুলে খাচ্ছি। রাতে ভাত।” ... ...
উনি কি আমাদের পি জি উডহাউস? না; উনি একান্ত ভাবে আমাদের অনাবিল বাঙালি হিউমারের ঘরানার। অল্প শিব্রাম, অনেকটা পরশুরাম আর একটুখানি প্রভাত মুখুজ্যে। ওঁর ধর্মবিশ্বাস কী ছিল জানিনা, কিন্তু সমস্ত রচনার শেষে মধুরেণ সমাপয়েৎ আমাদের ভাবতে বাধ্য করে –আছে দুঃখ আছে মৃত্যু; কিন্তু এ’সবের মধ্যেও আনন্দ ও সুন্দরের খোঁজ পাওয়া যায়। লেখার মধ্যে ফুটে ওঠে লেখকের প্রশান্তি । এই প্রশান্তির খোঁজ আমি আজও পাইনি, কিন্তু উনি আমার চেয়ে বয়েসে অনেকটা ছোট হয়েও পেয়ে গেছলেন। কীভাবে? সে রহস্য সমাধানের চাবি বরাবরের মত হারিয়ে গেছে। ... ...
পরীক্ষকের মুখে কোন বাক্যি নেই, পাতা ওলটাচ্ছেন। আমি বললাম আমার ইসরায়েলি ভিসার কাগজটা ওর ভেতরেই আছে আর যদি ব্রিটিশ ভিসা খুঁজছেন আমি সেই পাতাটা খুলে দেখাতে পারি। নিরুত্তরে চোখ তুলে তাকিয়েই আবার পাসপোর্টে মনোনিবেশ করলেন। এতো মন দিয়ে আমি দস্যু মোহন বা দীপক চ্যাটারজির বিশ্বচক্র সিরিজের বই পড়ি নি। পিছনের ভদ্রমহিলাকে আমার সুটকেসটি দিয়েছিলাম আমার অনুমতির অপেক্ষা না রেখে তিনি সেটি খুলে দেখেছেন। ... ...
যোহন বলিলেন, মানুষের যা অসাধ্য কাজ, কেমন করে সাধিব তা আজ। প্রভু বললেন, মনুষ্যের কথা ছাড়। পশ্চিমে তাকাও। বিস্তীর্ণ গোবলয় থেকে দেখ নিয়ে আসছি কেন্দ্রীয় বানরসেনা। এ বাহিনীতে প্রবেশ করতে গেলে সুললিত রাষ্ট্রভাষা জানা আবশ্যক। কোনো বঙ্গীয় যিহাদি এর মধ্যে প্রবেশে সমর্থ নয়। এরা কর্তার ইচ্ছায় কর্ম ও হুপহাপ করে। ব্যবহার কর। শব্দের মাধ্যমে ধর্মপ্রচার না হলে বজ্রপাতের ব্যবস্থা কর। ... ...
আমাদের কর্তা গিন্নি দু'জনের জীবনেই ঝুলন পূর্ণিমার স্মৃতি মনের ঝিলের গভীর স্তরে সাজানো আছে। আমার স্মৃতিতে ভরে আছে - কাঠকলে গিয়ে বস্তা করে কাঠের গুঁড়ো আনা, সেগুলো নানারকম রঙ করা, গ্রাম, শহর, জঙ্গল সব পাশাপাশি, একধারে পাহাড়, নদী, ঝরনা - সেই পাহাড়ের মাথায় শিব ঠাকুর। প্যাকিং বাক্স ওপরে ওপরে রেখে, কাদা জলে ছোপানো কাপড় দিয়ে ঢেকে সেই পাহাড়, কায়দা করে শিব ঠাকুর বসানো। নিচে বড় মোটর সাইকেলের পাশেই ছোট ছোট হাতির সারি। স্বচ্ছ প্লাস্টিক দিয়ে করা একরত্তি পুকুরে উত্তরাধিকারে পাওয়া এক মস্ত পোর্সেলিনের হাঁস। আর ঝুলন যেদিন শেষ হয়, সেদিন হল রাখী। ... ...
সকালে উঠে ব্রাশ্ করে কচৌরি গলিতে কচুরি খেতে যাওয়ার সময় মনটা লুচি-লুচি হয়ে থাকে। আলতো করে ফুলে ওঠা লুচি। কিন্তু আঙুল দিয়ে টোকা মেরে ফুটো করে গরম বাষ্প বের করে দিলে লুচির যেমন অবস্থা হয়, হঠাৎ মনেরও তাই। কিছুদূর যেতেই তিনজনের সঙ্গে দেখা। ম্যাটাডোরে পাশাপাশি শুয়ে আছেন ওঁরা। পা থেকে মাথা পর্যন্ত কমলা-হলুদ কাপড়ে মোড়া। জ্বলছে ধুপ। ইতস্তত গাঁদার পাপড়ি। সবাই এক আঙুলে প্রণাম সারছে। পথচারী কেউই খুব একটা বিচলিত নয়। তিনজনেরই গন্তব্য মণিকর্ণিকা। মুখ হাঁ হয়ে যায়। এ কি সিস্টেম? আমাদের শ্মশান হয় গ্রামের প্রান্তে, শহরের উপকণ্ঠে। শহরের মধ্যিখানে শ্মশান? না হওয়ার হাজার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে, জানি। .... অত জানি না। তবে মণিকর্ণিকা কান ধরে শিখিয়ে দেয় - আজ যারা জিলিপি খেতে খেতে প্রণাম ঠুকলে, কাল এই জিলিপি প্রণাম যে তাদেরই প্রাপ্য হবে না - এই গ্যারান্টি খোদ মহাদেবও দিতে পারবেন না। ... ...
"সুকান্তর রানার কবিতাটি পড়ে সে চমকে উঠেছিল। কোনোদিন তো ভাবেনি, পিঠে চিঠির পাহাড় আর টাকার বোঝা নিয়ে ছুটে চলা ডাকহরকরার কথা? পিঠে বোঝা নিয়ে সারা রাত দৌড়ে যায় সে, মানুষের চিঠি, টাকা গ্রাম থেকে গ্রামে পৌঁছে দেয় সূর্য ওঠার আগেই। তাকে কি কেউ চিঠি লেখে? যৎসামান্য অর্থে দিন-গুজরান, অভাব যার নিত্যসঙ্গী, সেই রানার নিজেও কি কোনোদিন ভেবে দেখেছে তার দুঃখের কথা? না কি তার সব বোধ, অনুভূতি গেছে অসাড় হয়ে? এ কবিতা পড়ে সলিলের চোখ খুলে গিয়েছিল। তখন থেকেই গান বাঁধার ইচ্ছে, রানারের ছুটে চলার গান। " ... ...
রামু দীপালি রেখা রহিম তৌফিক বুদ্ধুরাম সবাই জানে অন্ধকার থাকতে খেয়ে নিয়ে সারাদিন উপোস থাকতে হয়। সারাদিন উপোসটা অবশ্য এদের অনেকের জন্য আলাদা কিছু না। সন্ধ্যার সময় পেট ভরে খেতে হয় তারপর একদিন আসে চাঁদের দিন, সেদিন ঈদ। নামাজ পড়তে হয়। আকাশে একফালি চাঁদের ওপর সুন্দর তারাটি জাগে সেদিন ঈদ। কোলাকুলি করতে হয়।বন্ধুদের কিছু দিতে হয়। মনিপুরী বস্তির গোরাচাঁদ আর ললিতা জানে চাঁদের রাতেই রাসপূর্নিমা নাচের উৎসব কিন্তু সেই চাঁদ বড় আর গোল । সে উপোস হলো কি হলো না, কিন্তু সন্ধ্যায় ইফতার হোলো। একদিন ঘরঘর থেকে লুকিয়ে চুরিয়ে আনা মুড়ি, কজন এনেছিলো জমানো পয়সায় কেনা তেলেভাজা। একদিন খাওয়া দাওয়া হোলো কলা আর জাম। আর একদিন মিষ্টি আলু পুড়িয়ে খুব ভালো ইফতার হোলো। আজ চাঁদের উৎসব। ... ...
কুর্দ ভাসায় ‘রোজাভা’ শব্দটির অর্থ ‘পশ্চিম’। টাইগ্রিস এবং ইউফ্রেটিস নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল,কুর্দিস্তানের পশ্চিমে,সিরিয়ার উত্তরে এবং তুরস্কের সীমানায় আবদুল্লা অচালানের ‘ডেমোক্র্যাটিক কনফেডেরালিস্ম’ বা রাষ্ট্র বিহীন গণতন্ত্রের তত্বের ভিত্তিতে রোজাভা গড়ে তুলছে এক অভূতপূর্ব গণতন্ত্রের মডেল। আইসিস মানেই যখন চরম পরধর্ম অসুহস্নিতা তখন রোজাভা সব ধর্মের মানুষের জন্য এক খোলা বাতাস। আইসিস মানেই যখন নারী গৃহবন্দী, বোরখা বন্দী,ইতিহাস বিহীন,রাজনীতি বিহীন এক সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র। ইসলামিক স্টেট এ বিধর্মী হলে যখন গন ধর্ষণ আইনসম্মত,যৌনদাসী নিয়মানুগ তখন রোজাভায় বাল্য বিবাহ, বহু বিবাহ এবং বলপূর্বক বিবাহ আইনত নিসিদ্ধ্ব। আইসিস মানেই যখন চরম মধ্যযুগীয় পুরুষ আধিপত্য তখন রোজাভা প্রতিটি সংস্থায় তা রাজনৈতিক পার্টিই হোক বা মিউনিসিপ্যালিটি ৪০% নারী কোটা বাধ্যতামূলক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে ভেঙ্গে দিচ্ছে হাজারো বছরের পুরুষ প্রাধান্য। প্রতিটি সংস্থা রোজাভা পরিচালনা করছেন যৌথ নেতৃত্বের ভিত্তিতে। কো প্রেসিডেন্ট, কো মেয়র, কো চেয়ারম্যান - এক জন পুরুষ হলে অন্যজন মহিলা হতে বাধ্য। মহিলারা অংশ নিচ্ছেন সমাজের সর্ব ক্ষেত্রে এমনকি যুদ্ধ ক্ষেত্রে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় আমরা কিছুদিন যাবত যে সমস্ত মহিলা যোদ্ধাদের ছবি দেখছি তারা সবাই এই রোজাভার মহিলা যোদ্ধাবাহিনী YPJ এর সদস্য। ... ...
১৯৭৫। বাঁকুড়ার ছোট্ট মফস্সল শহর বিষ্ণুপুর থেকে বেরিয়ে পড়েছেন দুই তরুণ। দুনিয়া ঘুরে দেখার আগে সাঙ্গ করছেন ভারতভ্রমণ। সাইকেলে। কিছু পরে হাল ছাড়লেন একজন। ঘুরতে থাকে দ্বিতীয়জনের সাইকেলের চাকা। ১৭ বছর। ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। ১৫৪ টি দেশ। আজও এ কীর্তিতে তিনি অদ্বিতীয়। এই প্রথম দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে সে পরমাশ্চর্য সফরের অনুপুঙ্খ কাহিনি শোনাচ্ছেন জয় মণ্ডল। এ পর্বে জুতোর শুকতলা খইয়ে, কপর্দকশূন্য অবস্থায় মুম্বই-দিল্লিতে বহু আচেনা মানুষকে বহু কষ্টে রাজি করিয়ে আফ্রিকা যাওয়ার দুটি ফ্রি টিকিট জোগাড়ের কাহিনি। আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
আজন্ম পরিচিত কিন্তু ছুঁয়েও না দ্যাখা তিস্তাপারের বৃত্তান্ত, দুনিয়া কাঁপানো দশ দিন, খোয়াবনামা যেভাবে আলমারিতে এসেছিল, হারবার্ট সেভাবে আসেনি। হারবার্টকে আনা হয়েছিল নিজের হাতে, সচেতনে। নতুন শিখতে থাকা পাখিপড়া তত্ত্বজ্ঞানের বুদবুদ মাথায় নিয়ে,অন্যের পরামর্শে হারবার্ট পড়তে বসা হয়েছিল আট বছর আগে। উদ্দেশ্য নিয়ে হারবার্ট পড়ার কারণ হলো, এতে নাকি মূলধারার বাইরের প্রথাবিরোধী প্রতিষ্ঠানবিরোধী উত্তরাধুনিক নানা জ্ঞানের সমাহার রয়েছে। তাছাড়া, নবারুণের ‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’ লাইনটি সংসদ থেকে ফুটপাথ, ডান থেকে বাম, সবাই যে যার সুবিধামতন যেভাবে মুখস্থ আওড়ায় তাতে মনে হয়েছিল সে বেশ কেওকেটা লেখক হয়ে থাকবে! নাম দেখে অনুবাদ বই বলে ভুল করা মহাজ্ঞানী ‘আমি’ উপন্যাসের কোত্থাও কোনো তত্ত্বের উল্লেখ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ি। বড় বড় তত্ত্ব শেখার উদ্দেশ্য নিয়ে বসে, আনকোরা অনভিজ্ঞ মাথা আর বাছা বাছা মজার খাবার খাওয়া জিবে সোয়াদ নিলে কোন বই থেকে কতখানিই বা শেখা যায়! ... ...
কৃষক নেতারা স্পষ্টভবে জানান, কোনও নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে কোথাও যাচ্ছেন না তাঁরা। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম আন্দোলন কতটা কৃষক আন্দোলন নিয়ে ৫০০ সংগঠনের যৌথ মঞ্চ 'সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা'র অনেকেরই মতপার্থক্য থাকতে পারে। অনেকে অনেক ভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন, কিন্তু এই আন্দোলনগুলিতে ঐতিহাসিক ভাবে কৃষকরাই অংশ নিয়েছিলেন এবং প্রাণ দিয়েছেন। তাই 'সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা' বাংলার এই অঞ্চলের কৃষকদের কাছে যাবে। ... ...
আমার বাবার মুখে শ্রদ্ধেয় কয়েকজন নেতার নাম উচ্চারিত হতো। মুজফ্ফর আহমেদ, আবদুল হালিম, পি সুন্দরাইয়া, হরেকৃষ্ণ কোঙার এবং নাগি রেড্ডি। পি সুন্দরাইয়া ১৯৭৬-এ পার্টি সংশোধনবাদী হয়ে যাচ্ছে বলে চিঠি লিখে পার্টির সাধারণ সম্পাদক পদ ও পলিটব্যুরো সদস্যপদ ছেড়ে দেওয়ায় কষ্ট পান। জনসঙ্ঘের সঙ্গে হাত মেলানোয় ছিল মূল আপত্তি সুন্দরাইয়ার। বাবা অবশ্য ইন্দিরা জমানার অবসানে প্রাণপণ লড়ে যান। ... ...