প্রথম যে জিনিসটা বোঝা দরকার, সেটা হচ্ছে ভারতবর্ষের কৃষির কোনো স্ট্যান্ডার্ড ফর্ম নেই। ভারতবর্ষের কৃষিব্যবস্থা প্রত্যেক জায়গায় বেশ কিছুটা আলাদা। যেমন ধরুন কেরালা। কেরালায় প্রায় প্রত্যেক কৃষকেরই একটা করে হোমস্টেড ল্যান্ড আছে। সবথেকে বোধ হয় বড় কাজ, যেটা সিপিএম গভর্নমেন্ট করেছিল সেটা হচ্ছে হোমস্টেড ল্যান্ড দেওয়া। ওয়েস্টবেঙ্গলে তার যে করেস্পন্ডিং কাজটা সিপিএম করেছিল, সেটা হচ্ছে গিয়ে যেটাকে বলে ওই জমিতে ভাগচাষিদের সত্তা দিয়ে দেওয়ার কথা। আমি যে সময়টায় ঘুরে দেখেছিলাম সেই সময় থেকে শুরু হয়েছিল নকশাল আন্দোলনের, পরে যাতে ভাগচাষিরা শুধু তাদের ভাগ পায় এমন নয়, তাদের জমিতে মোটামুটি একটা থাকার ব্যবস্থা হয়। আমি তখন প্রথম লক্ষ করি, আমার তখনকার কিছু পুরোনো ছাত্র, আমার প্রথম জেনারেশন ছাত্র, যাদের মধ্যে কয়েকজন তখন মন্ত্রীও ছিল, এদের কৃষি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হবে আফ্রিকার গভীরে অভিযান। আপাতত তিনি সেই শহরে। স্থানীয় ব্রিটিশ কনসালকে একদিন প্রশ্ন করলেন—লিভিংস্টোন সম্বন্ধে আপনার কী মনে হয়, এখন তিনি কোথায়? তারপর? স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায়। ... ...
মানুষ কেন ভোট দেয়? নব্বই কোটি ভোটারের দেশে এ প্রশ্নের অন্তত এক কোটি আলাদা উত্তর পাওয়া যাবে। বছর পাঁচেক আগে চমকে দিয়েছিলেন একজন রেলের হকার, বলেছিলেন ভোট না দিলে ভোটার কার্ড ভ্যালিড থাকবে না. পরবর্তীতে জানতে পারি এইরকম অদ্ভুত গুজব গ্রামেগঞ্জে প্রচলিত, এমনকি শহরেও। ভোটার কার্ড ভ্যালিড না-থাকাটা খেটে খাওয়া মানুষের কাছে এক দু:স্বপ্নের ব্যাপার। ... ...
এবছর ডেমোক্র্যাটদের প্রচারে তরুণ ভারতীয়রা ওপিনিয়ন পিস লিখেছেন, টেলি কলিংয়ের মাধ্যমে প্রচারে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশ নিয়েছেন এবং তথ্যপ্রযুক্তিগত কাজে সহায়তা করেছেন। অন্যদিকে রিপাবলিকানদের নির্বাচনী প্রচারে যেসব ভারতীয়রা ছিলেন তাঁরা ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই তাঁর চিরভক্ত। ধরে নেওয়াই হয়েছিল হিন্দু জাতীয়তাবাদের ভক্ত ভারতীয়রা আগেরবারের রিপাবলিকান প্রার্থীদের চেয়ে ২০২০ সালে আরও বেশি করে ট্রাম্পকে সমর্থন জানাতে পারেন। ... ...
স্বাস্থ্যব্যবস্থার নিরঙ্কুশ বাণিজ্যায়ন। সামাজিক অভিভাবক থেকে মুনাফা-তাড়িত পরিকাঠামোর প্রতিনিধি হিসেবে চিকিৎসকদের ভূমিকার বিবর্তন। চরম সরকারি উদাসীনতা ও দুর্নীতি। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’— এই লক্ষ্য থেকে রাষ্ট্রের পশ্চাদপসরণ। ভারতের স্বাস্থ্যপরিষেবার অজুত সমস্যা। ও তারই মধ্যে কিছু বিরল সাফল্যের উদাহরণ। একটি বই। পড়লেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী ... ...
বহুবছর পরে 'দ্য প্যাশন অ্যাকোর্ডিং টু জি.এইচ.' পড়তে গিয়ে এই ঘটনাটা অংশুমানের মনে পড়বে: অংশুমানের মা চিরকালই ভীষণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন লোক; ফলে বর্ষাকালে তার খুব সমস্যা হতো। অর্ধেকদিনই খাবার সময় পোকামাকড় এসে পড়লে না খেয়ে উঠে যেত। একদিন রাতে, অংশুমানের মা তখন কলেজে পড়ে, দিদু থালায় ভাত বেড়েছেন দুজনের, হ্যারিকেনের আলোয় খেতে খেতে হঠাৎ একটা আরশোলা দিদুর পাতে এসে পড়ল। দিদু তখন ভাবলেন আরশোলাটাকে পাতের পাশে ফেললে মেয়ের চোখে পড়বে এবং সঙ্গে সঙ্গে থালা ফেলে উঠে যাবে, সারারাত খালিপেটে থাকবে মেয়েটা; ফলে তিনি কোনো শব্দ না করে ভাতসুদ্ধু আরশোলাটাকে মুখে ঢুকিয়ে নিয়েছিলেন। ... ...
আমরা বরং, এই দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর যাত্রার শেষে, পপুলিজম কেন বিপজ্জনক সেটা বোঝার চেষ্টা করি। স্বাভাবিক বুদ্ধিতে পপুলিজম ব্যাপারটা মোটেই খুব একটা খারাপ বলে মনে হয়না। হাজার হোক, গণতন্ত্রের তো উদ্দেশ্যই মানুষের কথা আরো বেশি করে তুলে আনা, তাঁদের অভাব অভিযোগ গুরুত্বসহকারে ভাবা। একরকমভাবে এলিট শাসকদলের এইসব অভাব অভিযোগ সম্পর্কে ঔদাসীন্যই তো পপুলিস্ট বা তোষণের রাজনীতির কারণ। কিন্তু বিভিন্ন দেশে পপুলিস্ট দল বা নেতৃত্বের উত্থান এবং ঘটনাপরম্পরা খতিয়ে দেখলে বোঝা যায় বিপদটা কোথায়। আরো স্পষ্ট হয় ক্যারিশম্যাটিক জনপ্রিয় নেতাদের কার্যকলাপ দেখলে। সেখানে একটা স্পষ্ট প্যাটার্ন আছে। ... ...
ইমতিয়ার শামীম। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম স্বর। সম্প্রতি সম্মানিত হলেন বাংলাদেশের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে। তাঁর কলমে ঘুরে ফিরে বারবার উঠে আসে শেখ মুজিবুর রহমান-হত্যার পরবর্তী বাংলাদেশের সমষ্টিগত আঘাত। সে ক্ষত বিশেষ ভাবে প্রতিভাত হয় ‘আমরা হেঁটেছি যারা’ উপন্যাসে। লিখছেন স্বাতী মৈত্র ... ...
বিগত উনিশটি কিস্তিতে বর্ণিত রসিকতার বেশির ভাগ বক্তা, নায়ক বা খলনায়কের নাম আমাদের অচেনা। কোন গল্পটা কে যে কাকে বলল তা কারো জানা নেই। সবটাই মুখে মুখে প্রচলিত, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ঘরানার মতো। তার ওপর কখনো রঙ চড়ানো হয়েছে, স্থান কাল পাত্র বদলে গেছে। সঠিক ফ্যাক্ট চেকিঙ্গের কোন উপায় নেই। তাতে অবিশ্যি স্বাদের কিছু ক্ষতি বৃদ্ধি হয় নি। কৌতুকের কোন তকমা লাগে না। ... ...
সুন্দরবন ডেল্টা আজ অস্তিত্বের সঙ্কটের মুখে। একদিকে গোটা সুন্দরবন ভূমিরূপ গঠনের দিক দিয়ে যেমন নবীন, অন্যদিকে বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে তীব্র হচ্ছে সংলগ্ন জনবসতির ‘ক্লাইমেট রিফিউজি’ হওয়ার সম্ভাবনা। বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে একদিকে যেমন বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা। একই সঙ্গে তীব্র হয়ে উঠছে বাড়তে থাকা জনবসতির বেঁচে থাকার আর্তি। পরিবেশবিদ ও ভুতাত্ত্বিকেরা সুদুরপ্রসারি দৃষ্টি দিয়ে বাঁচাতে চাইছেন গোটা প্রকৃতি। আর স্থানীয় মানুষ চাইছেন বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় আশু উন্নয়ন। গণদাবী হয়ে উঠছে কংক্রিট বাঁধ। ফলে, ‘বনাম’ হয়ে মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে 'উন্নয়ন’ আর ‘নিসর্গ’। ‘বনাম’ হয়ে মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে ‘কংক্রিট বাঁধ’ আর ‘মাটির বাঁধ’। ... ...
আমাদের বাঙলার রাজা লক্ষণ সেনের (শুনেছি বখতিয়ার খিলজি যখন বাঙলা আক্রমণ করেন, তখন লক্ষণ সেন নাকি বসে ভাত খাচ্ছিলেন – আক্রমণের খবর শুনে হাত না আঁচিয়েই ঘোড়ায় চড়ে পিছনের দরজা দিয়ে হাওয়া!) মত এই খেমাই রাজাদেরও প্রধান এবং প্রিয় খাদ্য ছিল ভাত – সাথে মেকং এবং টোনলে-স্যাপ নদীর মাছ, গেঁড়ি-গুগলি-শামুক-ঝিনুক, একদম টাটকা ধরা। ট্রাডিশ্যানাল খেমাই ক্যুজিনের প্রধান ডিশগুলি ছিল – স্যুপ, স্যালাড, একটা মাছের কোর্স, একটা মাংসের ডিশ, শাকসবজি এবং ভাত। মুখে জল আনা নানা রকমের সস বানাতে ছিল এরা প্রসিদ্ধ – আর খাবারে নানাবিধ মশলা এবং সুগন্ধি ইনফিউজ করার চেষ্টা করত। আর একটা কথা, কাম্বোডিয়ার রান্না বান্নায় রসুন কিন্তু বেশ দিল খুলে ব্যবহার করা হয়। শেষ পাতের মিষ্টি বলতে তা ছিল ফলমূল এবং নারকেল থেকে বানানো। সব মিলিয়ে বেশ জমকালো ব্যাপার। ... ...
- বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ লড়ছে এমন কিছু মুক্তিসেনা লুকিয়ে আছে ঐ ক্যাম্পগুলোতে। অস্ত্র চালান করা, আন্তর্জাতিক রেডিও স্টেশন অপারেট করা, সবেতে আছে ছেলেগুলো। শিতলখুচি বর্ডার দিয়ে ওরা পারাপার করে। আজ যাদের দেখছো, কাল গেলে দেখবে তাদের মুখগুলো পালটে গেছে। সে যাক, ওদের দেশের স্বাধীনতার লড়াই ওরা কেমনভাবে লড়বে ওরা বুঝবে। কিন্তু খুকি... - খুকি কী ? খুকি কেমন কইরা আসলো এইসবের মধ্যে ? মা ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করে। - শোনো, তোমার খুকি না হাতে এতোদিন হাতকড়া পরতো, যদি ইন্দিরা গান্ধীর হুকুমে পুলিশ অন্যদিকে তাকিয়ে না থাকতো। রিলিফ দেবার নাম করে চরে যায়, ছেলেগুলোর সঙ্গে মেলামেশা করে। একটি মুসলমান ছেলের সঙ্গে নাকি সম্পর্কও হয়েছে। সারা টাউনে ঢি ঢি পড়ে গেছে তো। আর তার সঙ্গে তুমি মেয়েকে পাঠিয়ে দিলে! ... ...
লেখকের মতে বিধবাবিবাহ আইন পাশ করানো নিয়ে লেখালেখি এবং অপমানিত ও ঋণগ্রস্ত হওয়ার পেছনে প্রেরণা বিধবাদের দুঃখকষ্টে দ্রবিত হওয়া নয়, বরং অন্য তাঁর অন্য কোন হিডেন এজেন্ডা ছিল। কী সেই এজেন্ডা? ধর্মশাস্ত্রের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে কলোনিয়াল শাসকেরা হিন্দু বিধবাদের সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চেয়েছিল। প্রথমে প্রায় ৬২ বছর আগে জোন্স মনুসংহিতার কথিত অনুবাদের মাধ্যমে যে হিন্দু আইন প্রণয়ন করেছিলেন তাতেই বিধবাদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার ব্যবস্থা হয়েছিল। তারপরে বিধবাবিবাহ আইনের মাধ্যমে তাদের মৃত স্বামীর সম্পত্তি ও স্ত্রীধন থেকেও বঞ্চিত করা হল। এবং তাতে বিদ্যাসাগরের সক্রিয় সহযোগিতা ছিল। এবং তিনি তা কলোনিয়াল প্রভুদের স্পষ্ট আদেশ পেয়ে অনুপালন করেছেন মাত্র। ... ...
যদি নিজের জাতির হয়ে কথা বলা প্রাদেশিকতা হয়, তাতে আমার কোনও অসুবিধা নেই। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় যাঁরা লড়েছেন, তাঁদের কেউ বিপ্লবী বলেছেন, কেউ আতঙ্কবাদী, সুতরাং ওতে কিছু যায় আসেনা। ... ...
প্রৌঢ় বয়স পর্যন্ত ইচ্ছার বিরুদ্ধে সুলেখাকে মেনে নিতে হতো তন্ময়ের অন্যায় আবদার। হ্যাঁ প্রায় চল্লিশ বছর বয়সে তৃতীয়বার সন্তানসম্ভবা হয়েছিলেন সুলেখা। লজ্জায় তিনি কলেজে যেতে পারতেন না, তার মেয়েরা তখন কত বড়, শুধু তাই নয় শরীরও যেন নিতে চাইত না সন্তান বহন করবার ধকল। তবু তিনি সবটুকুই মেনে নিয়েছিলেন মুখ বুঁজে। কখনো তিনি গুনগুন করে গান গাইলে যখন তন্ময় ধমকে উঠতেন, আহ! বন্ধ করো তো নাকি কান্না। ... ...
কুররাতুলায়েন হায়দার। স্বাধীনতা-পরবর্তী জমানায় উর্দু সাহিত্যের বহুধাপ্রবাহিত আধুনিক ধারার একটি বিশেষ স্রোতের অন্যতম পথিকৃৎ—যা প্রবাহিত মূলত মনের বিচিত্র উপত্যকা দিয়ে। বহুবর্ণময় তাঁর সাহিত্যের চরিত্রগুলি—এদেশের, বিদেশের, নানা জাতের, নানা শ্রেণির, নানা ভাষার। তেমনই কথাসাহিত্যের বিভিন্ন ধারায় ছিল তাঁর অবাধ গতায়াত— উপন্যাস, ছোটোগল্প, নাটক, ভ্রমণকহিনি। সমসাময়িক অন্যান্য উর্দু সাহিত্যিকের থেকে তাঁর দরিয়ার প্রবাহ ভিন্নতর। আলোচনায় লেখক ও উর্দু থেকে বাংলা ভাষায় সাহিত্য-তরজমাকার সঞ্চারী সেন। ... ...
কবিতা কি সত্যি কখনো অস্ত্র হয় বা হয়েছে? মানে ঠিক যেভাবে দেখাতে চায় মেরুকরণের রাজনীতি, কবিকে নিজেদের দিকে টেনে নিয়ে? নাকি তার জায়গাটা একটু আলাদা যা চিনতে না পেরে আমরা কবিতার প্রাসঙ্গিকতাকে ওই একই খোপে ঢোকাতে চাই ও বারংবার ব্যর্থ হয়ে নিরাশায় ভুগি। আদতে, সমালোচকদের মধ্যে একটা মাপকাঠি কাজ করেছে চিরকাল, যে, যথেষ্ট দেকার্তিয়ান না হলে, সেইটে আধুনিক রাজনীতির অংশ হয় না। ... ...
তত্ত্বগতভাবে ভারতের সংবিধান অনুযায়ী সমস্ত নাগরিক আইনের চোখে এক হলেও মুসলমানদের ক্ষেত্রে এই তাত্বিক অবস্থান বাস্তব অর্থে যে ভিন্ন ছিল তা প্রমাণিত হয় সাচার কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে । মুসলমানদের যেন ধরেই নেওয়া হয়েছে যে তারা এদেশীয় নন । তাদের আনুগত্য বিষয়ে সদা সন্দিহান মনোবৃত্তির ফলে ভারতের ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস মুসলমানদের জন্য প্রায় নিষিদ্ধ ***(পাদটীকা ) । ভারতের এবং পশ্চিমবঙ্গের সরকারী অ্যাডমিনস্ট্রেসানের উচ্চ পদে মুসলমান সংখ্যা অতি নগণ্য । শিক্ষা ক্ষেত্রের উচ্চ পদে মুসলমান অবর্তমান । ভারতীয় রেলে যত সংখ্যক মুসলমান কর্মরত তার ৯৭ % চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানেরা ঐতিহাসিক সময় থেকে হিন্দুদের তুলনায় সম্পদে, রাজনৈতিক ক্ষমতায় এবং শিক্ষায় পিছিয়ে থেকেছে। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে হিন্দুরা ছিল জমিদার আর মুসলমানেরা রায়ত এবং ভাগচাষী । কেবলমাত্র ১৯২০ থেকে ১৯৪৭ এর সময়ে অবিভক্ত বাঙলায় মুসলমান মধ্যবিত্ত শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী হিন্দুদের কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে দাঁড় করাতে পেরেছিল । মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত কেন্দ্র এবং ব্রিটিশ প্রবর্তিত কিছু সংরক্ষণের সুবিধা ,সাথে মুসলিম লীগের রাজনীতি তাঁদের রাজনৈতিক ক্ষমতার কিছুটা পুনর্বিন্যাস করতে সক্ষম হয়েছিল , কিন্তু দেশ ভাগের পরে সমস্ত প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতৃত্বের এবং শিক্ষিত মুসলমান সম্প্রদায়ের দেশত্যাগের সাথে সাথে স্বাধীন সেকুলার ভারতবর্ষে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের পরিবর্তে চলে আসে জাতির ভিত্তিতে সংরক্ষণ । ... ...
এই মিছিলে অংশগ্রহণ করতে সুদূর সিংঘু সীমান্ত থেকে এসেছিলেন সদ্য একশো দিন অতিক্রম করা নজিরবিহীন কৃষক আন্দোলনের সাত জন নেতা। পাঞ্জাবের 'ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন' সংক্ষেপে বিকেইউ এর ডাকোণ্ডা শাখার পক্ষ থেকে ছিলেন মনজিৎ ধানের, ডোয়াবা শাখার তরফে এসেছিলেন মনজিৎ সিং রাই। রাজস্থানের 'গ্রামীণ কিষান মজদুর সভা'র তরফ থেকে বক্তব্য রাখেন রজনীত সিং। এছাড়াও ছিলেন অভিমন্যু কোহার, হরিয়ানার সংযুক্ত কিষান মোর্চার প্রতিনিধি এবং কীর্তি কিষান ইউনিয়নের রামিন্দর সিং। ... ...
বইটি পড়তে পড়তে আচ্ছন্ন লাগে, প্রচণ্ডভাবে আক্রান্ত হই। একেবারে তরতরে সাহিত্যিক বাচনে গল্পচ্ছলে যেন লেখা হয়েছে বিবরণগুলি। ফলত ইতিহাস হয়ে উঠেছে জীবন্ত, সজীব, নড়ে চড়ে বেড়ানো। আমাদের পড়া যাবতীয় পুরনো সাহিত্যকর্ম, নানা গল্প উপন্যাসে যে বিন্দু বিন্দু পার্টিশন-যাপন, তার যাবতীয় ফাঁক-ফোকর পূর্ণ করার দায় নিয়ে এসেছে এই বই। এই বই আসলে চেয়েছে নিজের শর্তে কথা বলতে, নিজের মত করে চলতে চেয়েছে গদ্যের ভেতর দিয়ে। কোন নস্টালজিয়াকে প্রশ্রয় দেয়নি, একপেশে গল্পও বলতে চায়নি - যেখানে কোনও একটি ধর্মের মানুষই উৎপীড়িত...। এখানে হিন্দু, মুসলিম ও শিখ এই তিন গোষ্ঠীর মানুষের অবর্ণনীয় দুঃখের গল্প থেকে যায়। এই গল্পগুলো জুড়ে জুড়ে একটা ছিন্নভিন্ন সময় ও ছিন্ন জনজাতির কথা চলে আসে। একরকম শারীরিক বেদনাবোধ জাগে, ভেতরে ভেতরে ক্ষত বিক্ষত লাগে - কেননা আমার পরিবারও পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ উচ্ছিন্ন পরিবার। ... ...