প্রতিটি কোশের মধ্যে আয়ন চ্যানেল (ion channel) নামক একটি ফাঁপা অংশ থাকে এবং charged particles বা আয়ন ওই চ্যানেলের মধ্য দিয়েই যাতায়াত করে। এই চ্যানেলের মধ্যে কিছু সূক্ষ্ম দরজা থাকে, যা নিয়ন্ত্রণ করে ওই পথে কতটা আয়ন কোন্ গতিতে ও কোন্দিকে যাবে। কোশগুলি আবার অন্যান্য কোশের সঙ্গেও তথ্য আদানপ্রদান করে গ্যাপ জাংশান (gap junction)-এর মাধ্যমে। লেভিনের উদ্দেশ্য ছিল একটি মাইক্রোস্কোপিক যন্ত্র কেনিউরোটক্সিনের মতো কাজ করিয়ে যে-কোনো চ্যানেলের ওপর আধিপত্য বিস্তার করা, যার ফলে যে-কোনো কোশের বিভাজন, অঙ্গগঠন, আকার ও অবস্থান নির্ধারণ করতে পারা যাবে ইচ্ছেমতো। মানে খুব সহজ ভাষায়—একটা ত্রিভুজাকৃতির ব্যাং বা আমাদের বিখ্যাত প্রবাদ অনুযায়ী ‘সাপের পাঁচ পা’ গঠন করাও সম্ভব হতে পারে! ... ...
ছেলেটার কিছুই করার নেই তখন, কিছু করার ইচ্ছেও নেই বোধ হয়। টিলা থেকে নেমে একটু হাঁটা-চলা করে আবার এসে বসলো ঐ টিলার ওপরেই। ঝোলা গোছের কিছু একটা সঙ্গে ছিলো তার, সেটা থেকে বের করলো মিইয়ে যাওয়া একটা মুড়ির মোড়ক, সেটা খুলে মুড়িটা খেয়ে খানিকটা হেঁটে একটা ঝর্ণার জল খেয়ে নিলো পেট ভরে, তারপর আবার ঐ টিলার ওপরেই ফিরে এসে শুয়ে পড়লো চিৎ হয়ে। সন্ধ্যে হয়ে এসেছে তখন, ওপরের নীল আকাশটায় লেগেছে সূর্যাস্তের রঙের ছোঁয়া, ভাসমান এক-একটা সাদা মেঘ এসে সেই নীল ক্যানভাসে লাল-কমলা রঙের ওপর ছোট ছোট প্যাটার্ণ তৈরি করছে; সেই অপরূপ দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন যেন বুজে এলো তার ক্লান্ত চোখ দুটো, না জেনেই ঘুমিয়ে পড়লো সে। ... ...
আমাদের ব্যাংক-কর্মী সকলেরই এইটুকু সাধারণ বুদ্ধি আছে বলে মনে করি যাতে করে আমরা কোন্টা ‘মানবিক’ এবং ‘স্বাভাবিক’ তার সঙ্গে প্রায় অনৈতিক চাপ তার পার্থক্য করতে পারব। আমরা এটাও বুঝি যে সব কিছু কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকে না—তাই এই লেখায় সেই সব বিষয়ই কেবল উল্লেখ করব যে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে কর্তৃপক্ষ চাইলেই সমাধান করতে পারতেন। গ্রামীণ ব্যাংকের উন্নতির এক প্রধান অভ্যন্তরীণ অন্তরায় হল সঠিক টেকনোলজি এবং কম্পিউটিং ব্যবস্থা ঠিকমতো না করা। অন্য সব ব্যাংকে যে কাজ কম্পিউটার দিয়ে সারা হয় বহু বছর ধরে, সেই সাধারণ বেসিক টেকনোলজিও প্রদান করা হয়নি বহু ব্যাংকে। এবং তাই স্বাভাবিক ভাবেই কর্মীদের কাজ বেড়ে গেছে ম্যানুয়ালি সব কিছু সম্পন্ন করতে করতে। ... ...
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বনগাঁয়, উদ্বাস্তু-শিবিরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কলেরার প্রাদুর্ভাব। স্যালাইনের জোগান যথেষ্ট না হওয়ায় মুত্যু-মিছিল। একসময় দেখা গেল, মোট আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৩০%। বনগাঁ উদ্বাস্তু-শিবিরে এইসময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য পাঠানো হল ডা. দিলীপ মহলানবিশকে.... কলেরার জীবাণু দূষিত জল আর খাবার দিয়ে শরীরে ঢোকে আর বংশবৃদ্ধি করে এক বিষাক্ত রাসায়নিক তৈরি করে, যার প্রভাবে রোগী উদরাময়ে আক্রান্ত হয়। কলেরার জীবাণুর আবিষ্কারক জার্মান বিজ্ঞানী ডা রবার্ট কখ (১৮৪৩-১৯১০) পর্যন্ত বিশ্বাস করতেন, এই পদার্থ আমাদের অন্ত্র থেকে শোষিত হয়ে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। ডা. শম্ভুনাথ দে অত্যন্ত সরল এক পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রমাণ করেন, কলেরার জীবাণু-নিঃসৃত বিষাক্ত পদার্থ জীবাণু-কোষের বাইরে চলে আসে এবং রোগের যাবতীয় লক্ষণ সৃষ্টি করে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের মধ্যে থেকেই.... আমার ক্ষোভের সীমা ছিল না, যখন ব্যক্তিগত আগ্রহে তাঁর অবদান সম্বন্ধে বইপত্র ঘাঁটতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম, যে-শহরে আমার বাড়ি, সেই শহরেরই এক কোণে তিনি থাকতেন- দুই গেঁয়ো যোগীর গল্প .... ... ...
অতিমারি এবং লক ডাউনের আড়ালে, পার্লামেন্টকে এড়িয়ে এই নতুন শিক্ষানীতি পাস করিয়ে নেওয়া হল। আয়তনে বিশাল, বাইরেটা কথার ফুলঝুরিতে উজ্জ্বল এই নীতিকে টুকরো টুকরো করে বোঝার চেষ্টা হয়েছে। দেখা হয়েছে কী ভাবে স্কুল লেভেল থেকেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে দাস বানাবার যন্ত্রে পরিণত করা হয়েছে। এই নীতির শুরুতেই বলা হয়েছে অতি উচ্চ গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়া হবে নার্সারি থেকে ১২ ক্লাস অব্দি ভারতীয় শিশু, কিশোর-কিশোরীকে। বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে, ফলে তার মনমতো করেই তৈরি হল এই পলিসির আগাপাশতলা। তবে টাকা দেওয়া হবে কিন্তু কেবলমাত্র বিশেষ বিশেষ প্রোগ্রামে। তেমনি একটি প্রিয় প্রোগ্রাম STARS যা আগেই চালু করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের মস্তিষ্কপ্রসূত এই ব্যাপারটি কী সেটা অনেকেই জানেন। ... ...
ভারত সরকারের কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে এই লড়াই শুধু ভাইরাসকে পরাজিত করা নয়, একই সাথে চিরদিনের মত ভারতের মুসলমান সমাজকেও আবদ্ধ করা। ব্রাহ্মণ্যবাদের পবিত্র সংক্রমণ এর মুক্ত প্রসারের জন্য এই দুই শয়তানকেই চিরতরে বন্দী করা হিন্দু রাষ্ট্রের চোখে একই রকম প্রয়োজনীয়। সুতরাং অতিমারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলাকালীনই একই সাথে মুসলিম অ্যাক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনে তাদের গ্রেপ্তার করা মোটেই অবাক করার মতো কোন বিষয় নয়। এবং কোভিড-১৯ কে সীমিত রাখার প্রয়াস যত ব্যর্থ হয়েছে, সেই ব্যর্থতার হতাশা ক্রমশই বাড়িয়ে তুলেছে মুসলিম সমাজের প্রতি ঘৃণা এবং দ্বেষ। ভক্তেরা দেখতে চায় রাষ্ট্র তাদের জন্য কতটা ভাবিত - তাদের তা দেখানো রাষ্ট্রের প্রয়োজন। ফর্মুলা খুব সহজ এবং পরিষ্কার - কোভিড-১ যদি না প্রতিহত করতে পারো, মুসলিমদের করো। সে যুদ্ধ করোনা যুদ্ধের চেয়ে সর্ব অর্থেই বেশী লাভজনক। ... ...
যদি মৃত্যুই মানুষের অমরত্বের সূচক হয়ে থাকে তবে জানিয়ে রাখা ভালো কোনো কোনো মানুষ জীবৎকালেই অমর হয়ে যান। যেমন বিষ্ণু দে হয়েছিলেন অনুজ প্রতীম অরুণ সেনের কলমে, তেমনি অরুণ সেন স্বয়ং তার সমকালীন বেশ কিছু বিশিষ্টজন ও তাঁর স্নেহভাজনদের মনে। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস ধরে সেখান থেকে একে একে রওনা হলো অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’।এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
কয়েকবছর হল, জীবনের দুটো নিয়ন্ত্রককে আমরা বরণ করে নিয়েছি বেশ। প্রথমটা ছোট্ট একটা স্ক্রিন বসানো রবারের ব্যান্ড। কব্জিতে তা এঁটে রাখতে হয় চব্বিশ ঘণ্টা। হ্যাঁ, স্নান করার সময়ও খোলা নিষ্প্রয়োজন। পোশাকি নাম ফিটনেস ট্র্যাকার। আপনার চলন, শয়ন, স্বপন-বপন সব কিছু সেই ১৫ গ্রামের ছোট্ট ডিভাইস মন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করবে। স্মার্ট ফোনের লেজুড় হয়ে কল, এসএমএস, হোয়্যাটসঅ্যাপের নোটিফিকেশন তো পাঠাবেই, ডায়ালের তলায় রাখা ইনফ্রারেড আলো আপনার অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপবে, হৃৎস্পন্দন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করবে। ... ...
জন্মপরিচয়ের উপর এত গুরুত্ব কেন? তার কারণ দারায়ুস সাইরাসের বংশজাত ছিলেন না, আর সাইরাস এবং তিনি একই বংশজাত সেটা প্রমাণ করার দায় তাঁর ছিল। তার জন্য আমাদের দেখতে হবে দারায়ুস কীভাবে সিংহাসনে বসেন। সাইরাসের মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসে তাঁর পুত্র দ্বিতীয় ক্যাম্বিসেস, আর তার মৃত্যুর পর সাইরাসের অন্য পুত্র বরদিয়া। কিন্তু রাজদরবারের সাতজন সম্ভ্রান্ত মানুষ দাবি তোলেন এই বরদিয়া সত্যিকারের বরদিয়া নয়, সে আসলে একজন ম্যাজাই (জাদুকর), যে ছদ্মবেশ ধরে বরদিয়া সেজে বসে আছে- যার আসল নাম গৌমাত। সাতজন সম্ভ্রান্ত মিলে এই গৌমাতকে হত্যা করে- দারায়ুস তাদেরই একজন। ইতিহাস কোনওদিনই জানতে পারবে না এই গৌমাত আদৌ কোনও ছদ্মবেশী বহুরূপী ছিল, না কি সিংহাসনের ন্যায্য উত্তরসুরী বরদিয়াই ছিল, যাকে ছলনা করে সরানো হয়। ... ...
বাঘটা সুবিধা দিচ্ছে না। এখন জায়গায় দাঁড়িয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে ডান দিকে তাকাচ্ছে। এখনও গুলি পিছলে যাবার ভয় আছে। আব্দুল ওহাব আবার নিজের পজিশন বদলানোর কথা ভেবে বাদ দিয়ে দেয়। আজকে না পারলে কালকে হবে। কিন্তু উল্টাপাল্টা গুলি করে খামাখা একটা নিশ্চিত শিকার হাতছাড়া করা ঠিক না। এখনও যা বেলা আছে তাতে কাজ শেষ করে বড়ো নদীর ওই পাড়ে খালের ভেতরে দাঁড়ানো মহাজনের ট্রলারে দাঁত-নখ দিয়ে চামড়ার ঠিকানা বলে বেলাবেলিই বাড়ি ফিরতে পারবে। অবশ্য বড়ো নদীতে ফরেস্টারদের সামনা সামনি পড়ে যাবার ভয় আছে। গুলির শব্দ শুনলে টহল বোট নিয়ে তারা হয়ত এদিকে চলে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্য আব্দুল ওহাবেরও উত্তর মুখস্থ করা আছে। তাকে যদি জিজ্ঞেস করে সে কোনো গুলির আওয়াজ শুনেছে কি না। সে নির্দ্বিধায় উত্তর দেবে- আপনাগের বন্দুকের একটা দেওড় ছাড়া তো আর কিছু শুনিনি ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হবে আফ্রিকার গভীরে অভিযান। আপাতত তিনি সেই শহরে। তারপর? স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। শুধু সফরের অ্যাডভেঞ্চারই নয়, শ্বেতাঙ্গ উপনিবেশ-বিস্তার এবং একজন অবনেদি নীচুতলা থেকে উঠে আসা শ্বেতাঙ্গের চোখে ঊনবিংশ শতকের অফ্রিকা এবং সেখানে উপস্থিত ঔপনিবেশিক শাসনকর্তাদের জীবনের এক অমূল্য দলিল। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায়। ... ...
আমরা পাই সারগর্ভ উপদেশ, জ্ঞানের ফুলঝুরি, আমাদের কি করা উচিত ছিল, তার লম্বা ফিরিস্তি, ভবিষ্যতে কি শিক্ষা নেওয়া উচিত, নিজেকে কেমনভাবে পাল্টে নেওয়া উচিত, কি করলে এমনটা ঘটতো না। এ জেনে আমার কি লাভ? আমি কি পালটে ফেলবো এসব জেনে? আমি বিষ খেয়েছি, জেনে বা না জেনে, কিন্তু তোমার কাছে আমি শুধু একটু উপশম চাই। তার বদলে আমরা পাই, পুকুরে ডুবতে থাকা আপনাকে না বাঁচিয়ে, সাঁতার না জেনে আপনার পুকুরে নামা খুব অন্যায় হয়েছে, সেই মতামত, পুকুরের পাড়ে সাবধানে দাঁড়িয়ে থাকা লোকেদের থেকে। আর তারা কে? তারা বলে তারা আপনার বন্ধু। বলে, আমরা তোমার বন্ধু না হলে কি দরকার ছিল আমাদের সময় নষ্ট করে এইসব বলার। কিন্তু আপনি কি চান, আপনার কি দরকার, সেটা কেউ শুনেছে তাদের মধ্যে? ... ...
হিলগার্ড আর ওয়াইৎসেনহফার তৈরি করেন স্ট্যানফোর্ড হিপনোটিক সাসেপটিবিলিটি স্কেল। তাঁরা দেখেন মোটের ওপর ৮-১০% জনতা আছে, যারা হাইলি হিপনোটাইজেবল। ৮৪-৮৮% মডারেট আর ৪-৬% লো। ওই হাই এবং কিছু মডারেট লোকের মধ্যেই সেই বৈশিষ্ট্যাবলী আছে যাতে তারা খুব সহজে হিপনোটাইজড হতে পারে, এবং তাদের ক্ষেত্রেই হিপনোসিস খুব কার্যকরী চিকিৎসাপদ্ধতি হতে পারে কিছু কিছু রোগের জন্য। তাঁরা আরো দেখলেন যে এই বৈশিষ্ট্যগুলোও স্ট্যাটিক না, বয়সের সাথে একটু আধটু পাল্টায়। সাধারণত ৯-১২ বছর বয়সের জনতা যারা বেশি কল্পনাপ্রবণ, ফ্যান্টাসিতে থাকে, এবং যাদের কনক্রিট অপারেশনাল থিঙ্কিং তৈরি হচ্ছে, তারা বেস্ট ক্যান্ডিডেট। মজার ব্যাপার, সাময়িকভাবে এলেসডি বা এমডিএমএ জাতীয় ড্রাগ বা সেনসরি ডিপ্রাইভেশন কিছুক্ষণের জন্য এই হিপনোটাইজেবিলিটি বাড়িয়ে দিতে পারে, যদিও সেটা বেশিক্ষণ টেকে না। আর হ্যাঁ, কোন ধরনের লোক সহজে হিপনোটাইজড হবে আন্দাজ করার কোনো নিখুঁত রুল অব থাম্ব নেই, মোটামুটি মনোসংযোগদক্ষতা, একাগ্রতা, কল্পনাপ্রবণ ও অনুভূতিপ্রবণ মানুষের সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমার সামনের লোকটি হাই হিপনোটাইজার কি না, তা বোঝার স্কেল থাকে, এবং সাধারণত তা বোঝার পর হাই জনতাদেরই হিপনোসিস অফার করা হয় চিকিৎসার ক্ষেত্রে। পাতি লক্ষ্মণবিচার আর কি। সেইসব টেল টেল সাইন দেখে বোঝার চেষ্টা করা হয় সামনের ইনি সেই গিফটেড ৮% এর মধ্যে পড়েন কিনা। মার্কিনীরা সেইসব লিস্টির গালভরা নাম দিয়েছে - "হিপনোসিস ইন্ডাকশন প্রোফাইল", " স্ট্যানফোর্ড হিপনোটিক সাসেপটিবিলিটি স্কেল", "হার্ভার্ড গ্রুপ স্কেল অব হিপনোটিক সাসেপটিবিলিটি", "বারবার সাজেস্টিবিলিটি স্কেল" ইত্যাকার। এর মধ্যে ঐ হিপনোসিস ইন্ডাকশন প্রোফাইলটায় তো মাথার ওপর দিকে তাকাতে বলে চোখে স্ক্লেরার ভিজিবিলিটি দেখেই কিসব বোঝা যায় বলে দাবী করে। আর তার মেডিক্যাল ব্যাখ্যাওয়ালা হাইপোথিসিস রয়েছে গুটিকয়, যদিও এভিডেন্স বেসড নয়। সবার ওপরে, যিনি করবেন, তাঁর মানুষ চেনার এতদিনের অভিজ্ঞতা। ... ...
আমাদের ডোমকলের জনকল্যাণ মাঠে একবার বামফ্রন্টের মিটিং হয়েছিল… তাতে রেজ্জাক মোল্লা বলেছিলেন, ‘ভারতবর্ষে কি মুসলিমের যোগ্যতা নাই মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার? কেন হতে পারে না?’ তারপর থেকেই কিন্তু রেজ্জাক মোল্লা রাগ করে নেমে গেছেন। ... ...
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট থেকে জানতে পারছি পুণে শহরে সুরক্ষাকর্মী সরবরাহের জন্য কমবেশী ৯০০ সংস্থা আছে, সুরক্ষাকর্মীর সংখ্যা ৫০,০০০ এর মত। এঁদের অনেকেই আসেন মারাঠাওয়াড়া, লাতুর, বিহার আর ছত্তিশগড়ের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। পুণেতে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ার খবরে ভয়ের চোটে এঁদের অনেকের বাড়ি থেকে বারবার ফোন আসছে ফেরত যেতে বলে। এঁরা যাচ্ছেনও। ওই খবর অনুযায়ীই কিছু সংস্থা অতিরিক্ত বেতন কবুল করেও কর্মী ধরে রাখতে পারছে না। বলাবাহুল্য সুরক্ষাকর্মীদের নিজেদের সুরক্ষার বন্দোবস্ত বিশেষ নেই। যাঁদের অনবরত লোকের ব্যাগ, ল্যাপটপ, আইডি কার্ড হাতে নিয়ে দেখতে হয়, খাতায় লিখে সই করিয়ে নিতে হয় আগন্তুকের, তাঁদের বরাদ্দ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বচ্ছভারত অভিযানের বেঁচে যাওয়া কিছু ফিনফিনে পাতলা মাস্ক, আর কোথাও কোথাও একটি শেষ হতে বসা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল। অতএব ভয় দ্রুত গ্রাস করছে তাঁদের। ... ...
“জনতা মানে যেন মানুষ নয়! ভোটার। মিডিয়া থেকে নেতা সবাই বলছে 'ভোটব্যাংক'। মুসলমান ভোটব্যাংক, উদবাস্তু ভোটব্যাংক, রাজবংশী ভোটব্যাংক, দলিত ভোটব্যাংক, আদিবাসী ভোটব্যাংক। এতে যে মানুষকে অপমান করা হয়, এই বোধটা চলে গেছে! অথচ অন্য সব পক্ষেরও আগে গণতন্ত্রের আসল শক্তি হিসেবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হবার কথা ছিল এই সাধারণ জনগণের। জনতাপক্ষের।” ... ...
এমন অসংখ্য দৃশ্যের জন্মদিয়ে গেল সাইক্লোন। মত্ত বাতাস টিনের চাল উড়িয়ে ফেলেছে অন্যের বাড়ি। মুড়মুড় করে টালির গুঁড়ো হওয়ার শব্দ, কড়মড় শব্দে গাছ ভাঙার শব্দ আর একরাশ আতঙ্কে প্রহর গুণেছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। বৃহস্পতিবার, শুক্রবার বিধ্বস্ত এলাকায় গেলে গাছকাটার খটাখট, টিন পেটানোর দমাদম শব্দ আর হাউমাউ কান্নার শব্দ ভেসে আসছিল। বিদ্যুতের খুঁটিগুলো হেলে আছে, কোনটা টুকরো হয়ে ছড়িয়ে গেছে, চারদিকে ভগ্নস্তূপ আর গুটানো, ছেঁড়া তার। বিপর্যস্ত লোকজনের আশাহীন চোখে একটাই জিজ্ঞাসার ভাষা - "আমাদের কী হবে?" ... ...
কৃষক যে কম দাম পাবে, সেটাকে শুধু তার বিপদ হিসেবে দেখাটাই ভুল। সরষের তেলের দাম, বড় রিটেল প্লেয়াররা যেরকম দাম ঠিক করে দিচ্ছে, সেরকমই চলছে। এসেনশিয়াল কমোডিটি অ্যাক্ট এর তালিকা হ্রাস হবার ফলে ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স বস্তুটা সরকারি কর্মচারীরা কিসের ভিত্তিতে পাবেন? সেটি উবে যাবে না এরকম কোন গ্যারান্টি নেই। খাদ্য সুরক্ষা কি শুধু ফসল উৎপাদকের লাগে? ... ...
নিঝুম রাতের বেলা হেঁটে হেঁটে ফেরা। বোম্বে বাজারে ফেরার রাস্তায় ওই অন্য রাজ্যে কাজে যাওয়া বাঙালি ছেলে দেখলে চুরি-ছিনতাই-গালাগাল ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। আর এই সোনার কারিগরদের আর একটা প্রাপ্তি প্রায় কমন। সামান্য কিছু ভুলভ্রান্তি বা এধার ওধার দেখলেই পিঠে পড়বে মার। অবাঙালি শেঠ মালিকদের হাতে বা লাঠিতে পেটানি। সঙ্গে অবাঙালি মুখের অন্য ভাষার গালাগাল। ওই টাইট রুটিনে সোনার কাজের কারিগরি শিখতে শিখতে মইনুদ্দিন হয়ে উঠল পাকা কারিগর। ওর হাতদুটো ওই সোনালি ধাতুতে কারুকার্য তুলতে হয়ে উঠল পারদর্শী। মইনুদ্দিনের পড়াশোনার বুদ্ধিটা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের স্ট্যাম্পমারা রেজাল্টের ছাপা কাগজে ছাপ না ফেললেও বারবার সে বুদ্ধি ছাপ ফেলেছে ওর লেবার জীবনে। ... ...