বালুরঘাট ব্লকের কাশমুলাই গ্রামে মানুষ গাছের কচি পাতার দিকে তাকিয়ে আছে। কখন পাতা শুকিয়ে ঝরে পড়বে, তবে তাই দিয়ে রান্না হবে। রান্না কী হচ্ছে? ত্রাণ দিতে গিয়ে আমার বন্ধুরা দেখে এসেছে, গরু যে ঘাসপাতা চিবিয়ে খাচ্ছে, তাই সিদ্ধ করে গ্রামের মানুষ খাচ্ছে। মানুষ আর পশুর খাবার এক হয়ে গিয়েছে। ... ...
স্থানীয় ভাষায় বলে ‘তামু’। আলু, পটল, ঢ্যাঁড়শ, কুমড়ো। লকলকে সবুজ শাক। পুঁটি, মৌরলা, পাবদা। মায় কাছিম পর্যন্ত। এক্কেবারে যেন বাংলার হাট। থলি হাতে ঘুরলেন সুকান্ত ঘোষ ... ...
এপিএমসি ব্যবস্থায় মধ্যস্বত্বভোগীদের ভূমিকার কথা প্রায়ই উল্লেখ করা হয়। বলা হয় এদের ক্ষমতা অতিরিক্ত বেশি, এরাই মূল সুবিধাভোগী। মজাটা হল, এখন পশ্চিম উত্তর প্রদেশে তৈরি হতে শুরু করেছে এফ পি ও (ফারমার প্রডিউসার অরগানাইজেশন), এগুলি কোম্পানি হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে, যাদের নতুন করে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে। যারা নাকি উৎপাদক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কোম্পানি হবে এবং কৃষিজাত পণ্য ক্রয়ের কাজ করবে। বিহারেও ২০০৬ থেকেই এটা চলছে। কিছুই না, নতুন মধ্যস্বত্বভোগী তৈরি করা হচ্ছে মাত্র। ... ...
জীবনানন্দ দাশের অসংখ্য অপ্রকাশিত রচনার পুনরুদ্ধারের প্রকল্পে তন্নিষ্ঠ গবেষক ভূমেন্দ্র গুহের সহযোগী ছিলেন গৌতম মিত্র। সে অভিজ্ঞতাজনিত বোধ ও ভাবনা থেকে নির্মিত দু-খণ্ডের একটি বই। পড়লেন কবি যশোধরা রায়চৌধুরী। ... ...
শিল্পকলার অন্য ক্ষেত্রে, মানে ছবি আঁকা, মূর্তি গড়া বা চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে যদি কেউ এই ধরনের রেফারেন্স বা কোটেশন ব্যবহার করেন তাহলে কি সেটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে গন্য হবে ? আমার উত্তর হচ্ছে ‘না’। যদি কোন শিল্পী তাঁর পূর্বজ আরেকজন শিল্পীর কোন আইকনিক কাজকে অন্য ভাবে অন্য কনটেক্সটে বা অন্য মাধ্যমে ব্যবহার করে আলাদা কোন বার্তা দিতে চান, তাহলে সেটাও শিল্পের একটা ভ্যালিড পদ্ধতি বলেই ধরে নিতে হবে । এই পদ্ধতিতে সাধারণত শিল্পী তাঁর রেফারেন্স সোর্সকে গোপন রাখতে চান না বরং সেটাকেই তাঁর নিজস্ব সৃষ্টির একটা এন্ট্রি পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করবার চেষ্টা করেন । এ বিষয়ে সেরা উদাহরণ হচ্ছে পিকাসোর পঞ্চাশের দশকের বেশ কিছু ছবি, যেখানে তিনি ভেলাস্কেথ, গোইয়া, এদুয়ার মানে প্রমুখ শিল্পীর আঁকা কিছু বিখ্যাত মাস্টারপিস ছবির পুনর্নির্মাণ করেছিলেন । ... ...
বাংলা লিখিত সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের যুগ থেকে কোম্পানি-রাজের পত্তন পর্যন্ত রচিত নানা বাংলাগাথা চর্ব্যচোষ্যলেহ্যপেয়র রঙিন বিবরণে ভরপুর। উঠে আসে বাঙালির রসনা-সংস্কৃতির বিবর্তনের ছবি। এ কিস্তিতে নিরামিষ ভূরিভোজ। লিখছেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। ... ...
চৌমাথার মোড়ে কে আগে দাঁড়াবে মেঘ না বাস- মনে মনে বাজি রাখতে রাখতে সিগ্নাল লাল হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগল পঙ্কজ । সেই সময় উল্টো দিক থেকে জোর হাওয়া উঠল- ধুলো, ভাজা সসেজের গন্ধ, টিউব রেল স্টেশনের চত্ত্বরের চিনে বৃদ্ধর ছড় টানা যন্ত্রের সুর শঙ্কুর মত পাক খেতে খেতে পঙ্কজকে ঘিরে নিল; মেঘের পাল টার্ন নিল সম্পূর্ণ বিপরীতে। বাসগুলো আচমকা ওয়াক ওভার পেয়ে সিগন্যালে পা ছেতরে দাঁড়িয়ে পড়ল। আর ম্যাজিক শব্দটা মুহূর্তে পঙ্কজের মনে ঢুকে তার শাখাপ্রশাখা ছড়াল; এই ক্রসিং থেকে যেমন একটা রাস্তা ডাউনে গিয়েছে, অন্যটা আপে; পঙ্কজের মগজের মধ্যে মুহূর্তে একটা রাস্তা বহু বছর আগের সাহেবগলিতে বাঁক নিয়ে ঢুকল। ... ...
আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলা ভাষা রক্ষা, গণতন্ত্র রক্ষা, আসন্ন নির্বাচনে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার প্রক্রিয়া গ্রহণসহ বাংলার সংস্কৃতিকে যেভাবে বিষাক্ত করে দেওয়া হচ্ছে তার প্রতিবাদে শহর কলকাতার বুকে এক মিছিলের আহ্বান জানানো হয়েছে মঞ্চের তরফ থেকে। ... ...
ডাঃ বোস বেশ জোরের সঙ্গে বলেছেন যে গাঁজা টানেন এবং ভাং পান করেন কলকাতা শহরের জনসংখ্যার প্রায় একের আট ভাগ মানুষ। যে সমস্ত শ্রমজীবীরা হাড়ভাঙা খাটুনির ক্লান্তি দূর করতে গাঁজা-ভাং ব্যবহার করেন, কিংবা জলবহনকারী ভিস্তির দল ও বাড়ির চাকরেরা, তাঁদের প্রতি খুবই অবিচার হবে যদি তাঁদের গাঁজা- ভাং বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই কোনোরকমেই নিষেধাজ্ঞা একটা বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হতে পারেনা। শুধু যে এতে মদের ব্যবহার বেড়ে যাবে তাই নয়, রাজনৈতিক অসন্তোষও ধূমায়িত হতে পারে। তাঁর চিকিৎসক জীবনে তিনি মোট তিরিশটা ইন্স্যানিটির কেস দেখেছেন কিন্তু কোনোটারই কারণ গাঁজা-ভাং ব্যবহারের জন্য নয়। গাঁজা-ভাং ব্যবহারে উন্মাদ রোগ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন নি। ... ...
খুব বেশিদিন নয়, মাত্র অর্ধশতক আগের কথা এসব। কোন্ বিত্তে এই ফুলের শিশুদের অবস্থান তা বোঝার বয়স তাদের ছিলনা। তাদের পাপড়ি মেলে জীবনের দিকে প্রথমবার চোখ তুলে তাকানোর সেই মধুর কালপর্বে মুখে মুখে ছড়ার অবাধ গতায়াত ছিল। যে বাংলা ছড়ায় তাদের বর্ণপরিচয়ের হাতেখড়ি সেই অ-এ অজগর সত্যিই তেড়ে আসে কিনা বা আ-এ আমটি পেড়ে খাওয়া কতটা সহজলভ্য তা তাদের কল্পনা শক্তিকে উস্কে দিতে যথেষ্ট ছিল। যে কল্পনায় রং তুলির কাজটা অনায়াসে করে দিত তাদের ঠোঁটের ফাঁক আলগা হয়ে বেরোনো মরমী বাংলা ছড়া। বা, বাস্তবের হাটের যে অতুলনীয় রূপকল্প যেমন, উচ্ছে বেগুন পটল মুলো/ বেতের বোনা ধামা কুলো/ সর্ষে ছোলা ময়দা আটা / শীতের রাপার নক্শা কাটা.., তা কি সংসার যাপন সম্পর্কে শিশু হৃদয়ে এক আবিলতা এনে দেয় না ? জীবনের সহজিয়াকে বুঝতে কোমল হৃদয়কে কি ছড়ার এই ছবি যথেষ্ট উৎসাহ দেয় না ? যে ছড়াতে পল্লীবাংলার ঋতুবদলের ছবি শিশুমনকে প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে আসে তা তো স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকার কথা। আমরা কি কোনো দিন ভুলে যাবো- আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে/ বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে..। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ জড়িয়ে আছে যার পরতে পরতে। চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা,/ একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা। অথবা, আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভর ভর/ মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর। এ তো গেল রবীন্দ্রনাথ জানার সহজপাঠ। বাংলার শিশু সমাজ যাঁকে এক কথায় হৃদয়ে জায়গা করে দিয়েছিল। কে যেন ততক্ষণে আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে অন্য কাড়ানাকাড়া। রিন্ রিন্ করে বেজে চলেছে সুকুমারের আবোল তাবোল। ... ...
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখতে পাওয়া যাবে যে সেলফের বিষয়টা আদতে আধুনিক। আজকের আধুনিক মানুষ যেভাবে তার সেলফ নিয়ে ভাবে মধ্যযুগের রাজা বা দাসেরা কিন্তু সেভাবে ভাবিত ছিলেননা। আধুনিক যুগের একদম গোড়ায়, মোটামুটি ১৫০০-১৮০০ শতকের মধ্যে অভ্যন্তরীণ আর বাহ্যিক সেলফের একটা পার্থক্যের ধারণা গড়ে উঠতে থাকে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবোধকে মূল্য দিতে আর মানবিক বিকাশ ও পরিবর্তনের ধারণাকে স্বীকৃতি দিতে। প্রাচীন গ্রীক দর্শনে যে “know thyself” এর ধারণা গড়ে উঠেছিল সেটা ছিল একজনের প্রতিভা আর দক্ষতাকে সঠিকভাবে যাচাই করার জন্য যাতে সে তার কর্তব্য ঠিকভাবে পালন করতে পারে এবং উপযুক্ত বিচার করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। একে আজকের আধুনিক মানুষের সেলফের ধারণার সাথে এক করে দেখা যায় না। ... ...
চরের মানুষের জীবন সংগ্রামের এই গল্প জাদু-বাস্তবের ঘরানা অনুসারী না বাস্তবতা-নির্ভর তা তর্কযোগ্য। কিন্তু এই উপাখ্যানে অবিসংবাদিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নারীসত্তার প্রাধান্য, জল জঙ্গম ও মানবমনের রক্ষাকর্ত্রী নারীশক্তির উন্মেষ ও প্রতিষ্ঠা। অমর মিত্রের ধনপতির চর, পড়লেন প্রতিভা সরকার। ... ...
ইদ মানে উৎসব। ইদ-উৎসবকে ঘিরে আনন্দ স্মৃতি, না বলা কথা, কিম্বা ভীষণ বলতে চাওয়া আখ্যান নিয়ে রইল এবারের ইদের কড়চা। এই কড়চার দুই কিস্তির প্রথমটি বেরোল আজ। ... ...
শ্রেষ্ঠ হিন্দি সাহিত্য অতি ক্ষুদ্র অংশেই পৌঁছোয় বাঙালি পাঠকের কাছে। তরজমার অভাবে। যদিও বহুধা প্রবাহিত সেই সাহিত্য প্রায়শই আন্তর্জাতিক সেরা সাহিত্যসৃষ্টির সঙ্গে তুলনীয়। গত শতকের প্রথম ছয় দশকে জন্ম, এমন নয় লেখকের এক ডজন গল্পের তরজমা। পড়লেন সাহিত্যিক ও তরজমাকার তৃষ্ণা বসাক ... ...
ফাইনম্যান নাসার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা নিয়ে বিস্তারিত একটি রিপোর্ট লিখে মতামত দেন, যে এই ভেঙে-পড়া ব্যবস্থা ঠিক না হওয়া অবধি মহাকাশযাত্রা স্থগিত থাকুক। বলেন, “For a successful technology, reality must take precedence over public relations, for nature cannot be fooled”। রজার’স কমিশনের ঘোর আপত্তি সত্ত্বেও সে রিপোর্ট শেষমেশ প্রকাশ পায়, তবে একেবারে শেষে অ্যাপেন্ডিক্স-এফ হিসেবে। অথচ, থিওকল, বইসজলি আর তাদের সঙ্গীদের সমস্ত সাবধানবাণী ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে, নাসার ম্যানেজমেন্ট উৎক্ষেপণের আগে যে প্রি-লঞ্চ এস্টিমেটটি কষেছিলেন, তাতে বলা ছিল, লঞ্চে শাটল ফেল করার সম্ভাবনা ১০০,০০০এ মাত্র ১ – প্রায় নেই বললেই চলে। তাহলে? ... ...
কেন, দূরত্বের প্রশ্নে এতো বিস্ময় সৃষ্টি হলো কেন? মার্কনির পরীক্ষায় বিস্ময় উদ্রেক হওয়ার পিছনে নিহিত ছিল আর একটা কারণ। মার্কনির সমসময়ে আলোর সরলরৈখিক গতি, আলোর প্রতিফলন, আলোর প্রতিসরণ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানতেন আলো হলো এক বিশেষ তরঙ্গদৈর্ঘ্য সম্পন্ন তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ। তারা জানতেন সমস্ত তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গই আলোর মতো সরলরেখায় চলে। রেডিও ওয়েভ যেহেতু তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ তাই সেই ওয়েভও সরলরেখায় চলে। কোনও প্রতিবন্ধকতা না থাকলে ৫-৬ কিমি দূরের কোনও আলো যেমন স্পষ্ট দেখা যায়, তেমনই ৫-৬ কিমি দূরে রেডিও ওয়েভ প্রেরণ করাটা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। কিন্তু তাই বলে ইংলন্ডে আলো জ্বালালে কি তা কানাডা থেকে দেখা সম্ভব? ঠিক তেমনই ইংলন্ড থেকে রেডিও ওয়েভ প্রেরণ করলে তা কি কানাডায় পৌঁছন সম্ভব? তাছাড়া পৃথিবী পৃষ্ঠ হলো গোলকাকার। আর রেডিও ওয়েভ চলে সরলরেখায়। তাহলে বক্রপৃষ্ঠ বেয়ে সেই তরঙ্গ কি ভাবে পৌঁছল কানাডায়? স্থম্ভিত বিজ্ঞান মহল। ... ...
ফরাসি সাহিত্যের সাত লেখক। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকের। তাঁদের নিয়ে একগুচ্ছ প্রবন্ধ। নানা দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁরা কী ভাবে পঠিত হয়েছেন বিভিন্ন যুগে তার খোঁজ। একটি নিবন্ধসংকলন। পড়লেন ফরাসি ভাষার শিক্ষক ও তরজমাকার পার্থপ্রতিম মণ্ডল ... ...
রসানবিদ্যায় অবদানের জন্য এ বছর নোবেল পুরস্কার পেলেন দুই নারী-বিজ্ঞানী জেনিফার ডাউডনা এবং ইমানুয়েল শারপেনতিয়ের। জিন-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তাঁদের আবিষ্কারে অবিশ্বাস্য রকম কম খরচে কঠিন রোগ সারানোর দরজা খুলে যেতে পারে। লিখছেন ‘ফিটাল মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়। ... ...
মাইকেল গুটেনব্রুনের। অস্ট্রিয়ার কবি ও গদ্যকার। লেখেন জার্মান ভাষায়। নাৎজিবাদের বিরোধিতার জন্য কারারুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত। হিটলার পরাজিত হওয়ায় মুক্তি। আধুনিক জার্মান কাব্যধারা অন্যতম স্বর। লিখছেন কবি ও তরজমাকার হিন্দোল ভট্টাচার্য ... ...
আজ ‘যৌনকর্মী’ কথাটা উচ্চারণ যতটা সহজ লাগে নব্বইয়ের দশকে তা ছিল না। আশির দশকের দ্বিতীয় ভাগ থেকে নব্বইয়ের দশকে এইডস মহামারী সমাজে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। রোগটা ছড়াচ্ছিল মূলত যৌনকর্মীদের যৌনরস ও রক্ত থেকে, তাঁদের থেকে অন্যেরা আক্রান্ত হচ্ছিলেন, অন্যের থেকে তাঁরাও আক্রান্ত হচ্ছিলেন। এই রোগকে বাগে আনতে ১৯৯২ সালে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এর তরফে এসটিডি/এইচআইভি ইন্টারভেনশন প্রজেক্ট-এর ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব এসে পড়ে স্মরজিৎদার উপর। এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লি সোনাগাছিতে শুরু হয় ‘সোনাগাছি প্রজেক্ট’। কিন্তু কাজ শুরু করার কিছুদিন পর তাঁর মনে হয়েছিল, শুধু প্রচারের মাধ্যমে যৌনকর্মীদের শিক্ষিত করে, আক্রান্তের চিকিৎসা করে এইসব রোগের সংক্রমণ থামানো যাবে না। যৌনকর্মীদের কালেক্টভ বার্গেইনিং পাওয়ার না বাড়াতে পারলে এইডস বা সিফিলিস, গনোরিয়ার মত সেক্সচুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিস (এসটিডি) কমানো যাবে না। সংক্রমণ বাগে আনতে গেলেও যৌনকর্মীদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে যৌনকর্মে কন্ডোম ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। এই পর্যন্ত তাঁর ভাবনা ছিল বিশেষজ্ঞের। এ কথা বলে তিনি সরে যেতে পারতেন। বলতে পারতেন যৌনকর্মীদের ক্ষমতায়ন একজন ডাক্তারের কাজ নয়। তা না করে যৌনকর্মীদের মধ্যে এইসব রোগ নির্মূল করার কাজে নেমে পড়লেন। সারা জীবন ধরে রয়ে গেলেন তাদের ভালমন্দে। তাঁর নেতৃত্বে শুরু হল যৌনকর্মীদের মর্যাদার লড়াই। ... ...