আঠারো শতকের শেষভাগে সামান্য কয়েকটা লেখায় বিক্ষিপ্ত প্রয়োগ দেখা গেছে। তবে সেটাকে ‘হোমোসেক্সুয়ালিটি’ না বলে ‘হোমো-ইরোটিসিজম’ বলা যায়, যেটা সমকামিতার একটা ‘সাময়িক’ সংস্করণ। দুই পুরুষ বা দুই নারীর মধ্যে ক্ষণস্থায়ী আকর্ষণমাত্র। ‘ইন্দিরা’তে বঙ্কিমচন্দ্র ইন্দিরা ও সুভাষিনীর মধ্যে এরকমই একটা সম্পর্ক দেখিয়েছিলেন। পরবর্তী যুগে কবিতা সিংহের একটা গল্পে একইভাবে দুই নারীর মধ্যে ‘হোমো-ইরোটিসিজম’ এসেছে। সমরেশ মজুমদার একটি উপন্যাসে হালকভাবে প্রসঙ্গটা ছুঁয়ে গেছেন। ষাটের দশকে হাংরি মুভমেণ্টের সময় অরুণেশ ঘোষের ছোটগল্প ‘শিকার’ ছাড়া আর কোনো নথি চোখে পড়ে নি। একটা ব্যাপার বেশ বোঝাই যাচ্ছে, যৌনতা বস্তুটাই যখন মারাত্মক ট্যাবু ছিল তখন ‘অপর যৌনতা’ নিয়ে কাহিনী নির্মাণ কল্পনারও দূর অস্ত। তাছাড়া সাহিত্যিকরা উপাদান পাবেনই বা কোত্থেকে? ... ...
আফ্রিকার একটি ছোট্ট দেশ উগান্ডার উদাহরণ দিয়ে লেখা শুরু করা যাক। কোটি কোটি উগান্ডাবাসী সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, কারণ তাঁদের অনেকেরই ডিজিটাল পরিচয়পত্র নেই। উগান্ডা সরকারের আইন অনুযায়ী এই ডিজিটাল পরিচয়পত্র জাতীয় সুরক্ষার জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, কিন্তু সেই ব্যবস্থাকে যখন সরকারি পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, তখন দেখা যাচ্ছে তা থেকে বহু মানুষ বাদ পড়ছেন। ... ...
দাদু কয়েকদিন পরেই পাবনা চলে গিয়েছিলো। রূপালী রঙের প্যানাসনিক টেপ রেকর্ডার নিয়ে যখন রিক্সা থেকে বাইরবাড়িতে নেমেছিলো, তখন তাঁতিরা কত খুশি হয়েছিলো আমার মনে নেই। তবে মানিক কাকুর কথাগুলো ঠিক এমন ছিল, বাবু, এই টেপ রেকর্ডারে সন্ধ্যা মুখোপধ্যায়ের গান বাজলি তো সুচিত্রা সেন সামনে আইস্যা খাড়াইবো। ... ...
আমাদের তথ্যানুসন্ধানের কাজ শুরু হয় ২০১৮-র এমন এক সময়, যখন ভাটপাড়ার অধিবাসীদের দৈনন্দিন জীবন আগুন আর ছাইয়ের উপর দাঁড়িয়েছিল। ভাটপাড়া নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির সহায়তায় আমরা বিভিন্ন সময়ে কিছু ফিল্ড সার্ভে-ও করেছিলাম। বছরখানেক পেরিয়ে এসে আমরা যখন পুরোনো বিবৃতিগুলির পর্যালোচনায় বসেছি, ঠিক তখনই কিছু নতুন শব্দকে কেন্দ্র করে নতুন করে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি রূপ নিতে শুরু করেছে—‘নিজামউদ্দিন-মুসলিম-করোনা’। ইতিমধ্যে তেলিনিপাড়াতেও দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়, এবং ফলস্বরূপ হুগলি নদীর দু-পারেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ... ...
প্রয়োজন আছে, তবে সে তুলনায় মান নেই বা দাম। প্রাইভেট টিউটররা যেন ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো। আমাদের রোজগার নেই, ক্রমশ ফুরোচ্ছে নুন-পান্তা। ঘিরে ধরছে অচেনা দারিদ্র্য আর অবসাদ। ... ...
বিজ্ঞান মানে তো শুধু যুগান্তকারী আবিস্কার নয়, রোজ একটু একটু করে প্রদীপের সলতে পাকানোটাও বিজ্ঞান, যাতে পরের আবিষ্কারের কাজটা সহজতর হয়। তবে আমাদের সাধারণ হিরো-নাহলেই-জিরো ভাবার মানসিকতার প্রেক্ষিতে এই সলতে পাকানোর কাজটাও যে গুরুত্বপুর্ণ, এ না হলে বিজ্ঞানের এগোন বন্ধ হয়ে যাবে এই বোধ তৈরি করা খুব দরকার। এই বইটা খুঁজে খুঁজে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন শাখার বিজ্ঞানীদের নীরব কাজ তুলে এনে কিছুটা সেই ধারণাও তৈরি করতে পেরেছে। আর বহুদূর দেশের বিদেশিনী না বা ইতিহাস খুঁড়ে বার করে আনা আগের যুগের বিজ্ঞানী না, আমারই সময়ে আমারই দেশে এই বিজ্ঞানীরা এত কিছু কাজ করছেন, এটা পড়ে বুড়োরাও এক্সট্রা উজ্জীবিত বোধ করছেন, বাচ্চারা এ লেখা পড়ে মোটিভেটেড হবে বলেই মনে হয়। কোন কোন বাচ্চা হয়তো এই বইএর চরিত্রদের মধ্যে থেকে রোল মডেল খুঁজে নেবে। ... ...
এই মদ্যপান নিয়ে বাঙালির নৈতিক দ্বন্দ্বের ইতিহাস বড় পুরাতন। মূলধারার সাথে অস্ফুট লোকাচারের পার্থক্য তো ছিলই; কিন্তু মূল সুর ছিল সহাবস্থানের। কথিত আছে, একবার শাক্ত সাধক কমলাকান্তকে মদ্যপান করতে দেখলে, বর্ধমানরাজ তেজচন্দ্র তিরস্কার করেন। প্রত্যুত্তরে মাতৃভক্ত কমলাকান্ত মদ্যকে দুগ্ধে পরিণত করে সেই দুধে দেবীপ্রতিমার পূজা করেন। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রতিভূ তেজচন্দ্রের কাছে যা অনৈতিক, সাধক কমলাকান্তের কাছে তা নয়। ভারতীয় লোকাচারের ঊর্ধ্বে থাকা সাধক সামাজিক নিয়মনীতির অধীন নন। কমলাকান্তের মতই, সাধক রামপ্রসাদও মদ্যপান করতেন। পণ্ডিতসমাজের প্রধান কুমারহট্ট এ নিয়ে তাঁকে তিরস্কার করলে, রামপ্রসাদ বলতেন, “সুরাপান করিনা আমি / সুধা খাই জয় কালী বলে”। কিন্তু সব প্রেমিক যেমন দেবদাস নয়, সকল মদ্যপই রামপ্রসাদ নয়। শাক্তমতে গুহ্যসাধন-ক্রিয়ায় মদ্যপানের যে রীতি, তা প্রাত্যহিক জীবনের অঙ্গ না হওয়াটিই স্বাভাবিক। কিন্তু ‘প্রাত্যহিক জীবন’ তো কোন সমসত্ত্ব ধারণা নয়, বরং তা স্থান-কাল-পাত্রভেদে ভিন্ন। একদিকে প্রাক-ঔপনিবেশিক বঙ্গীয় উচ্চবর্গ যেমন পারতপক্ষে মদ্যপান এড়িয়ে চলেছে, মঙ্গলকাব্যের অন্ত্যজ শ্রেণি অবশ্য শুঁড়িখানায় ক্রমাগত ভিড় জমিয়ে গেছে। তাই মদের বিচারেই বাঙালি অনেক আগেই ‘আমরা-ওরা’-র ব্যবধান তৈরি করে ফেলেছে। ... ...
স্বৈরাচারকে একটা নান্দনিক জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন সঞ্জয়। সেই ব্যাটনই হাতে তুলে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। হিন্দু রাষ্ট্রকে নাগরিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ গড়ে তোলার জন্য যে নগর পরিকল্পনা তিনি করেছেন তার কাছে সঞ্জয় নেহাতই বামন। সঞ্জয় বড়জোর চাইতেন শহরটাকে নতুন করে দেওয়াল দিয়ে ঘিরতে। আর মোদির উচ্চাকাঙ্ক্ষা গোটা শহরটাকে নতুন করে গড়ার। যখন স্বাস্থ্য পরিষেবা না পেয়ে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন তখন মোদির ধ্যান-জ্ঞান সেন্ট্রাল প্রোজেক্ট। শোনা যাচ্ছে, এমন ভাবেই এই সেন্ট্রাল ভিস্তা তৈরি করা হবে যাতে রাষ্ট্রপতি ভবন সংসদ ভবন অন্যান্য প্রশাসনিক দফতরগুলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকেই দেখা যায়। এর থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যদি সুযোগ থাকত তাহলে গোটা দেশটাই নতুন করে গড়তে প্রধানমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই আমরা দেখে ফেলেছি বেনারস ঘাটের 'সৌন্দর্যায়ন' বা আমেদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়ামের নব নামকরণ। এগুলি সেই বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশবিশেষ। ... ...
বঙ্গের প্রাচীন রাঢ় অঞ্চল দীর্ঘকাল ছিল নাচ-গান-বাজনা-ছড়ায় গমগমে এক অঞ্চল। এখন সেই সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিবর্ণ প্রায়। তবুও রয়ে গিয়েছে কিছু রেশ। তাই নিয়েই একটি সাম্প্রকিত বই। পড়লেন লোকসংস্কৃতি গবেষক রামামৃত সিংহ মহাপাত্র ... ...
"ঘরে চল, এইখানেই দাঁড়ায়ে থাকবি নাকি ছেমড়ি?" হানিফার ডাকে হুঁশ ফেরে সাকিনার। ব্যাগটা তুলে হানিফার পিছন পিছন ভিতরে ঢোকে সে। ঘরের ভিতরটা কিছুটা বদলেছে বটে। উঠোনের ওপারে আগে কাঁটাগাছের বেড়া ছিল, মাঝে মাঝে ফাঁকা। ওখানটায় একটা ঘর উঠেছে। পাকঘরটা ছিল ডান দিকে, বাম দিকে খালপাড়ে খাটা পায়খানা। এখন ওখানে পাকা পায়খানা হয়েছে, রাস্তাটায় একটু সিমেন্ট দেওয়া। রান্না হচ্ছে এদিকের বারান্দার এক কোনে, সেখানে দুটি বউ কাজ করছে। সম্ভবতঃ জলিল আর খলিলের বিবি ওরা। ওদের আসতে দেখে একটু অবাক হয় দুজনেই। তাদের কাছে ডাকে হানিফা, "এই দেখ ছেমড়িরা, আমার একখান মাইয়া আছে কইছিলাম না? এই হইল সাকিনা বানু - আমার সই জারিনার মাইয়া। কিন্তু আসলে আমারই। ছালাম কর" ... ...
এ তনু ভরিয়া — দর্শন আপাদমস্তক। লেখক অরিন্দম চক্রবর্তী। দেহকে আরও ভালোভাবে বুঝে নেওয়ার তাগিদে তার দার্শনিক বিচার-বিশ্লেষণ। দার্শনিক প্রশ্ন তোলা ও তার উত্তরে দার্শনিক যুক্তিবিন্যাসই বইটির অবলম্বন। পড়লেন দর্শনের অধ্যাপক অমিতা চট্টোপাধ্যায় ... ...
কাহিনি, চরিত্র কিংবা স্থান-কাল-পাত্রের পরম্পরা, এসব বাদ দিয়ে গল্পকে করে তুলতে চেয়েছিলেন গল্পকারের স্বাধীন বিচরণক্ষেত্র। গোষ্ঠীবদ্ধ সাহিত্য আন্দোলনগুলি সময়ের নিয়মে যখন থেমে গেছে, গভীরতর অন্বেষণে রমানাথ রায় চলে গেছেন রূপান্তরের পথে। লিখছেন শাস্ত্রবিরোধী আন্দোলন-বিষয়ে গবেষক সৌম্যব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ... ...
ও মনিপিসি বাটিতে কী এনেছো? এতক্ষণ কী করছিলে উপরে? মনি, তুই আজও ঘুমালি না? মনিপিসির হাতের বাটিটার প্রতি আমার অদ্ভুত আগ্রহ বেড়েই চলেছে। শিকবিহীন কাঠের বড় জানালার ঠিক নীচে সেই বাটিটা রাখে মনিপিসি। আমি সব ভয় অগ্রাহ্য করে ঘাড় ঊঁচিয়ে বাটির ভেতর কী আছে দেখতে যাই। কিন্তু ঠাকুমা কলাপাতার মাইজ দিয়ে চট করে ঢেকে ফেলে বাটি। মনিপিসি এবার আমাকে প্রায় অগ্রাহ্য করে বাইরবাড়ির দরজা পেরিয়ে গোলেনূর দাদীর উঠোনের দিকে চলে যায়। ... ...
আমি তো স্থানীয় ভারতীয় নই, আগন্তুক। আমার কাছে কৃষ্ণাঙ্গ, শ্বেতাঙ্গ, খয়েরি চামড়া এ সবের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সেসময়ের মধ্যেই আমি বুঝে ফেলেছিলাম যে, আমরা সবাই মানুষ। আমাদের সংস্কৃতি আলাদা, খাদ্যাভ্যাস আলাদা, ধর্ম আলাদা—কিন্তু আমরা সবাই মানুষ। শিরায় একই রক্তে বইছে। তুমি এটাকে কেতাবি দর্শন বলতে পার, কিন্তু এটা আমার অভিজ্ঞতা। আমাকে দেখেই ওরা বুঝেছিল যে আমি আফ্রিকান নই। এমনকি আমাকে জিজ্ঞাসাও করল, আমি ‘মুইন্ডি’ নাকি। ... ...
এ জগতে কবিরা সৃষ্টিশীল অন্তত সাত শতক ধরে। বঙ্গের ঠিক পাশের অঞ্চলে। এও কম আশ্চর্যের বিষয় নয়, বিদ্যাপতি ব্যতীত এ ভাষার দ্বিতীয় কোনো কবির নাম অধিকাংশ কবিতাপ্রেমী বাঙালির কাছে আজও অজানা। তরজমা বিরল। বাংলা অনুবাদে মৈথিলি কবিতার তেমনই একটি সংকলন। পড়লেন তৃষ্ণা বসাক ... ...
১৯৪৭-এর পরবর্তী নানারূপ কৃষি সংস্কার, আইন করে জমিদারি প্রথার বিলোপ সত্ত্বেও ভারতরাষ্ট্রের উৎপাদন সম্পর্কের সামন্ততান্ত্রিক চেহারাটি বদলায়নি, সামন্ততান্ত্রিক সম্পর্কের উপর আইনি আঘাত এলে, অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে নতুন ধরনের উপরিকাঠামোর সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামন্তবাদ নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে রেখেছে। বুর্জোয়া আইনের মাধ্যমে জমি হাতবদল আটকাতে আইনি ব্যবস্থার নাকের ডগায় গড়ে ওঠে সামন্ততান্ত্রিক সশস্ত্র সংগঠন। ... ...
জানেন কতজনের সঙ্গে আলাপ হয় কত বড়ো গুণীজন তাঁরা সবার কনট্যাক্ট আমি রেখে দিই। সময় এলে ঠিক কাজে লেগে যায়। এরম করে অন্তত দুটি ফুটবলারের জীবন আমি বাঁচাতে সাহায্য করেছি আমার চেনা পরিচিত দুই ডাক্তারের সাহায্যে। এই আপনার সঙ্গে আলাপ হলো আজ তেমনি কোথাও কোনও অনুষ্ঠানে তাঁদের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল, কার্ড দিয়েছিলেন রেখে দিয়েছিলাম। ঠিক সময়ে কাজে লেগে গেলো। ফুটবলে আপনার পায়ে বল এলে আপনাকে ঠিক টাইমিং এ পারফেক্ট কন্ট্যাক্টে বা টাচে বল পাস করতে হবে দলের সহ খেলোয়াড়কে, আফটার অল ইটস আ টিম গেম... লাইফ ইস অলসো আ টিম গেইম... শ্রদ্ধায় প্রণাম করতে গিয়েছিলাম, হাঁ হাঁ করে উঠে দাঁড়িয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। এরপর সেদিনের কলাম চেক করতে হবে ওঁকে, তাই আর বিরক্ত না করে বেরিয়ে এসেছিলাম। ... ...
একজন সেই রাতে কান পেতে পেতে শব্দমাহাত্ম্য চিনতে শিখিয়েছিলেন বেশ দরদ দিয়ে। কাছে-দূরে ওই চাপা-গম্ভীর শব্দগুলো, যেগুলো ইকো হতে হতে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো বোমার। আর মাঝে-মধ্যে, নেহাতই খাপছাড়া ভাবে, ওই অস্ফুট ফট্-ফট্ শব্দগুলো হলো বুলেটের। বন্দুক ছোড়া হচ্ছে। সর্বনাশ! আবার শুরু হলো নাকি? হার্মাদদের আক্রমণ? জিজ্ঞেস করায় দু-দিকে কনফিডেন্টলি ঘাড় নেড়ে তিনি বলেছিলেন, নাঃ। সে আওয়াজ আলাদা। এগুলো ‘অ্যাকশন’-এর আওয়াজ নয়। ‘অ্যালার্ট’ করার আওয়াজ। দু’পক্ষই দু’পক্ষকে বলতে চাইছে … সাবধান … এগিও না … আমরাও তৈরি আছি! ঢোঁক গিলে বুঝেছিলাম, কখনো কখনো ডোভার লেনের চেয়েও উচ্চাঙ্গের মিউজিক চর্চা হয় লড়াইয়ের ময়দানে। ... ...
সবার্না গ্রুপের তিনটি ভ্যাকসিন নিয়ে ফেজ থ্রি ট্রায়ালের কাজ শুরু হয়ে গেছে। তবে কাজটা করা খুব সহজ ছিল না। আমেরিকার অর্থনৈতিক অবরোধের জন্য ভ্যাকসিন তৈরির মেডিক্যাল ইকুইপমেন্টই তারা কিনতে পারে নি। বড়দার চোখরাঙানি উপেক্ষা করে কে তাকে যন্ত্র বেচবে? কিউবা করোনাপীড়িত আমেরিকার দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বছর বছর আমেরিকার ছেলেমেয়েদের স্কলারশিপ দিয়ে ইলাম মেডিক্যাল স্কুল থেকে শিখিয়ে পড়িয়ে আমেরিকা পাঠাচ্ছে। আর তার প্রতিদানস্বরূপ ট্রাম্প প্রশাসন অর্থনৈতিক অবরোধের ফাঁস আরো শক্ত করেছে। বারাক ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সেই সময় সম্পর্ক ভালো করার একটা চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, ট্রাম্পের সময় তার অবনতি হয়। নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এখনো পর্যন্ত কোনো সদর্থক পদক্ষেপ নেন নি। ... ...