পবিত্র পরিচয় করিয়ে দিলো, এই আমিনুলদা, বিপ্লবের ভার বহন করতে করতে চিঁড়ে-চ্যাপ্টা হওয়ার যোগাড়; আর উজ্জয়িনী, উজ্জয়িনী ভৌমিক, এত বড় নামটা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে, সাবজেক্টিভ আর অবজেক্টিভ কণ্ডিশন মিলে গেলেই ওজনদার নামটা ত্যাগ করে বিপ্লবকে নিয়ে নেবে মাথায়। আমিনুলদা, আমাদের নতুন কমরেড সোমেশ্বর, সোম বলে ডাকতে পারো, ফাটাফাটি কবিতা লেখে। লাল-টালের ছিটে আছে, রক্তপাতও ঘটাচ্ছে একটু একটু, আর এই ওর বন্ধু স্বরাজ। একে একে বিভিন্ন কলেজের কিছু কিছু ছেলেমেয়ে আসতে শুরু করলো, আড্ডা শুরু হলো, একটু-আধটু কবিতা, গান, আর তার পরেই জোর তর্ক। এ তর্কে যোগ দিতে পারলো না সোমেশ্বর, বিষয়টা প্রায় অজানাই ওর। তেনালী নামের কোন একটা জায়গায় কম্যুনিস্ট পার্টির লোকজনরা কিছু একটা মীটিং করেছে, সেই মীটিং নিয়েই তর্ক। ... ...
আসামের তিনসুকিয়াতে বাঘজান তৈলকূপের কথাই মনে এল সবার আগে। কারণ খবরের কাগজে একেবারে ভেতরের পাতায় এ খবর কতোজনের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে নিশ্চিত নই। অথচ ক্ষতি যা হল তা মারাত্মক। এই তৈলকূপ ঘিরে রয়েছে ডিব্রু-শইখোয়া ন্যাশনাল পার্ক। পার্কের গাছপালা, পশুপাখি ঝলসে গেছে। লাগোয়া বিলে ভেসে উঠছে অসংখ্য জলজ প্রাণীর পচাগলা মৃতদেহ। বিলেই পাওয়া গেছে দুজন দমকল কর্মীর লাশ। আগুন আর গ্যাস তাদের এমনভাবে ঘিরে ফেলেছিল যে পালাবার অবকাশ ছিল না। ডিব্রু নদী বিখ্যাত ছিল নানা বিরল প্রজাতির মাছ ও গাঙ্গেয় ডলফিনের জন্য। লাগোয়া বন বিখ্যাত ছিল বুনো ঘোড়ার জন্য। ৩৬ টি স্তন্যপায়ী প্রজাতি যার মধ্যে বাঘ একটি, এবং ৩৮২টি প্রজাতির পাখি এই ৩৪০ কিলোমিটার ব্যাপ্তির বনে বাস করত। তাদেরই বা কী হল ! শোনা যাচ্ছে ৪ সপ্তাহের আগে এ আগুন নেভানো সম্ভব হবে না। ... ...
করোনা অতিমারির সময়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার অসামান্য গুরুত্ব আমাদের সবার দৃষ্টিপথ, শ্রুতি এবং ভাবনার ক্ষেত্রপথের একেবারে বাইরে চলে যাচ্ছে। অতি উচ্চ মুল্যের আইসিইউ পরিষেবা, উচ্চচাপের অক্সিজেনের ব্যবস্থা, ECMO ইত্যাদি জন মানসিকতায় ক্রমশ গ্রাহ্য হয়ে উঠছে, মান্যতা পাচ্ছে। মনে ক্ষোভ পুষে রেখেও সাধারণভাবে মানুষ চাইছে বেশি দামের রেমডেসিভিরের চিকিৎসা – নিতান্ত কমদামের এবং একমাত্র “improved survival” ঘটাতে পারে ডেক্সোমেথাসোনের চিকিৎসা নয়। চিকিৎসকেরাও এই সোশ্যাল সাইকি বা গণমানসিকতার বশে থাকছেন বেশিরভাগ সময়েই। বাজারের, মিডিয়ার এবং বিজ্ঞাপনের দুর্মর শক্তি উভয়কেই নিয়ন্ত্রিত এবং প্রভাবিত করছে। ফলে চিকিৎসা আরও বেশি করে হাই-টেক হয়ে উঠছে, ভার্টিকাল প্রোগ্রামের দিকে ঝুঁকছে। এবং ক্রমাগত ঝুঁকবে। ... ...
কৃষ্ণাঙ্গ বিক্ষোভে আমেরিকা উত্তাল। রাজনৈতিক ভাবে, আমেরিকার বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের সম্মান অর্জন প্রচেষ্টা আজ এক নতুন বিস্ফোরক বাঁকে। রাজনৈতিক আলোচনা চলবে। এই প্রবন্ধটি তিন প্রজন্মের কৃষ্ণাঙ্গ লেখকদের লেখা প্রসংগে। নবারুণ ভট্টাচার্য্য প্রতিষ্ঠিত 'ভাষাবন্ধন' পত্রিকায় ২০১৭ র উৎসব সংখ্যায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত। ... ...
ক্রিসমাসের এবারের ছুটিতে আমেরিকা তথা বিশ্বে সবথেকে আলোচিত টাইটানিকের পরিচালক জেমস ক্যামেরুনের "অভতার' (বাংলা অবতার)। শুধু অত্যাধুনিক স্টিরিওগ্রাফিক ক্যামেরা বা থ্রি ডাইমেনশনার কম্পুটার গ্রাফিক্সের জন্যেই অবতার নিয়ে এত শোরগোল হচ্ছে তা ঠিক না। হলে গিয়ে মনে হল আমেরিকান বস্তুবাদী সভ্যতায় বিধ্বস্ত অনেকেই ফিরে যেতে চাইছে, ফিরিয়ে দাও সে অরণ্যের যুগে যেখানে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করেই বেঁচে থেকেছে মানুষ। ... ...
আমি এমন "গায়ক'এর গানও শুনেছি যিনি আমার নিজের বানানো গানের তাল পালটে সেটিকে আত্মস্থ করে গেয়েছেন। শ্রোতারা খেয়ালও করে নি যে গানটার রিদমটাই পালটে গেছে। এইভাবেই আমার একটা ৫ মাত্রার গান নির্দ্বিধায় ৬ মাত্রা, কখনও কখনও ৮-মাত্রাও হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং একজন শ্রোতার একটা ভুরুও বাঁকে নি, বরং গানশেষে সেই গায়ক অজস্র তারিফ এবং তারিফ পেয়েছেন। এইসব বিখ্যাত আর জনপ্রিয় শিল্পীরা গানের মাত্রা বদল কেবল শস্তা জনপ্রিয়তা পাবার জন্যেই করেন নি, তাঁরা এটা করেছেন কারণ ৫-মাত্রার গান হ্যান্ড্ল করা তাঁদের কাছে কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। তাই একজন সেটাকে ৬ মাত্রায় বদলে নিলেন, আরেকজন, ৮ মাত্রায়। পরিশেষে, শ্রোতাদের তৃপ্ত মুখগুলি আর শিল্পীর খুশি-খুশি মুখ দেখে আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে ভাবলাম, একদিন আমার কিছু শুভানুধ্যায়ী আমাকে এই দেশে ফিরে এসে গানকে জীবিকা হিসেবে নেবার বিরুদ্ধে সাবধান করেছিলেন, তাঁদের কথা সেদিন শুনলে আজ আমাকে এই জিনিস দেখতে হত না। আমি কিছুই করতে পারি নি, নিজের ক্ষোভ, রাগ, হতাশা, কিছুই ব্যক্ত করতে পারি নি সেই দিন। আজ, তেষট্টি বছর বয়েসে, জীবনে অনেক কিছু দেখবার পরে, আজ হয় তো সময় হয়েছে, আমি গলা ছেড়ে বলতে পারি এই বং সোসাইটি (ঞ্ছবাঙালিঞ্জ নয়) আর এই বং জীবনযাত্রার প্রতি আমার অপছন্দ, আমার ঘেন্নার কথা। "বাংলা' বলে আর কিছু বেঁচে নেই। অনেকদিন আগে মরে গেছে। অনেকদিন আগে শোনা এক বাউল-গান মনে পড়ে যাচ্ছে - "বাউল বাউল করো তোমরা / বাউল কে আছে / বড় দু:খ পাইয়া বাংলার বাউল মইরাছে।' ... ...
দিল্লীর গদিতে বসে যাঁরা পলিসি বানান তাঁদের হয়তো মনে হয়েছিলো এই ১৯৬৪ সালটা জাতীয় ঐক্যের খাতায় দারুণ কিছু একটা নজির তৈরী করবে, কিন্তু সত্যি বলতে কি ঐ সময় থেকেই কাশ্মীরি সাধারণ মানুষ ভারতকে একেবারে "পর' বলে ভাবতে শুরু করলো।' ... ...
অতুলনীয় মেধা,অতি উজ্জ্বল ছাত্রজীবন ও তীক্ষ্ণ ধীশক্তির অধিকারী হিসাবে সুপরিচিত অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর কালাজ্বরের প্রতিষেধক বিষয়ক গবেষণা আরম্ভ হয়। ক্যাম্পবেল কলেজে (বর্ত্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে) শুরু হয় ভীষণ মারণব্যধি কালাজ্বরের বিরুদ্ধে তাঁর ঐতিহাসিক সংগ্রাম। গবেষণার জন্য তিনি পেলেন ছোট একটি ঘর, যেখানে জলের কল, গ্যাস পয়েন্ট বা বিদ্যুত সংযোগ কিছুই নেই। কিন্তু এইসব অসুবিধা নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে একটি পুরনো কেরোসিন ল্যাম্প সম্বল করে প্রকৃত বিজ্ঞানতপস্বী উপেন্দ্রনাথ শুরু করেন তাঁর গবেষণা। ধাতুঘটিত যৌগকে রোগনিরাময়ের জন্য ব্যবহার করার পদ্ধতি তখন খুব বেশি প্রচলিত হয়নি। এই প্রসঙ্গে, মিশরের রাণীরা রূপটান হিসেবে ঘন নীল রঙের একধরণের অ্যান্টিমনি পেষ্ট ব্যবহার করতেন, অর্থাত অ্যান্টিমনির ভেষজ গুণের কথা তখনও জানা ছিল। বিংশ শতাব্দীর প্রথমে Paul Ehrlich ও তাঁর সহযোগীরা আর্সেনিক, অ্যান্টিমনি ইত্যাদির যৌগকে সিফিলিস, আফ্রিকান স্লীপিং সিকনেস ইত্যাদি অসুখের প্রতিষেধক হিসাবে ব্যবহার করা শুরু করেন। ... ...
নাম: শাহরুখ খান। ইনি বলিউডের বাদশা। বলিউড অর্থাৎ রামরাজ্য ও শ্যামরাজ্যের মাঝামাঝি যে গোবেচারা যদুরাজ্যকে আমরা ভারতবর্ষ বলি তার প্রধান শহরের প্রধানতম ইন্ডাস্ট্রি। শাহরুখ খান, ইন শর্ট SRK , এই শহরের এবং এই ইন্ডাস্ট্রির সবেধন বৈদূর্যমণি। গ্লোবাল আইকন। ... ...
কেন হল, কেন হয়, এরকম? বিপর্যয় রাজনৈতিক হউক বা একডেমিক, পহেলা টোটকা- 'আত্মসমীক্ষা'। ভেবে দেখুন, যে আপনি চিরকাল স্টেজে মারনে ওয়ালা পার্টি, যার কাছে অধ্যবসায় ও সেল্ফ-ডিসিপ্লিনের আদর্শ মিড-নাইন্টিজ ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিম ... ...
শেষ বিকেলের মরা আলোয় চিকচিক করে ওঠে রিকশচালক হরেন দাসের চোখ। খালপাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘অঙ্কটা খুব সহজ, দাদাভাই। বাইরের দেশের লোকজনের সামনে দেখাবে সল্টলেকে কোনও গরীব নেই, নোংরা নেই। সব ঝকঝকে চকচকে। তাই আমদের চলে যেতে বলেছে। কালো প্লাস্টিক না কী রাখা যাবে না। কালো প্লাস্টিক মানেই নোংরা, জঞ্জাল।’’ হরেনের ছেলে আকাশ লেবার খাটেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আপনাদের যাদবপুর, টালিগঞ্জ, নেতাজিনগর, বাঘাযতীন কী করে তৈরি হয়েছিল? সেগুলো জবরদখল নয়? তাহলে ওই এলাকাগুলো ফাঁকা করা হোক। একতা হাইটস ভাঙা পড়ুক। আমরা গরীব, আপনাদের সরকারের আমাদের কাজ দিতে পারে না, তাই আমরা ঝুপড়িতে থাকি। সেটা অন্যায়?’’ ... ...
১৯৫৬ সাল, স্যরের নির্দেশমতো, উইক ইন্টারেকশন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেন সুদর্শন। পড়লেন এনরিকো ফের্মি, বারনিস ওয়েল্ডন সার্জেন্ট, হিডেকি ইউকাওয়া, সাং-ডাও লি, চেন-নিং ইয়াং প্রমুখ। এই সমস্ত পদার্থবিদদের রচনা মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়ে চলেছেন সুদর্শন। যত পড়ছেন ততই যেন একটা ভাবনা তাঁর মাথায় চেপে বসছে। পড়ছেন যতটুকু ভাবছেন তার চেয়েও গভীরে। উইক ইন্টারেকশনের বেনিয়মের মুখে লাগাম পরাতে মনে মনে বুনে চলেছেন এক নতুন যুক্তিজাল। ... ...
কোভিড থেকে বাঁচার জন্যে সুরক্ষাসামগ্রীর দাম বেড়েছে বহুগুণ। N95 মাস্কের দাম কোভিড পরিস্থিতির আগে যা ছিল, কিছু ক্ষেত্রে দাম বেড়েছে তার দশগুণ - পরবর্তীতে দামে কিছুটা লাগাম টানা গেলেও, কোভিড-পূর্ব দামে পৌঁছানো যায় নি। পিপিই কিট বা হেড শিল্ড সবকিছুর ক্ষেত্রেই তা-ই। এর সাথে বাড়তি বিপদ, নিম্নমানের সামগ্রীকেও চড়াদামে বেচে দেওয়া। সরকারি কমিটি, যাদের দায়িত্ব গুণমান যাচাই করা, তাঁরা প্রবল উদ্যোগে এবিষয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন - এমন অপবাদ কেউই দিতে পারবে না। যাঁরা এইধরণের সুরক্ষাসামগ্রী তৈরী করেন, যাঁদের এবিষয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে - বিশ্বজুড়ে কোভিড মাথাচাড়া দেওয়ার সময়েই তাঁরা সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ঠিক কী পরিমাণ বাড়তি সামগ্রী প্রস্তুত করে রাখা প্রয়োজন - অভিযোগ, সরকার তাঁদের একাধিক চিঠির উত্তরটুকুও দেননি। ... ...
হিন্দুরা বলেন লঙ্কা দ্বীপে রাবণের তোরণদ্বার খোলার সময় ঐ শব্দ হয়। মুসলমানেরা বলেন ইমাম মেহেদীর আগমন জনিত কারণেই ঐ শব্দ। হিস্ট্রী অব বাকেরগঞ্জের লেখক বেভারীজ সাহেব সিদ্ধান্তে এসেছেন যে জৈষ্ঠ্য আষাঢ় মাসে ঝড়ের সময় এই শব্দ চারবার শোনা যায়। উনি স্থির করেছেন এর পেছনে বায়ুমন্ডলের কোনো বৈদ্যুতিক ঘটনার যোগ রয়েছে। তবে প্রবল তরঙ্গাভিঘাতের জন্যও এই শব্দ হতে পারে। এ বিষয়ে আরো বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রয়োজন। ক্রমশঃ আরো রাত ঘনায়। মোকাম আবাদী জুড়ে চলাফেরা বাড়ে। রুপোলী আঁশ মাখা জাল নিয়ে জেগে ওঠে চরমমতাজ। হোগলা কুটীর ছাওয়া ঘর দোর উঠোন আদুল গায়ে মাখে রাত। হাজার হাজার অশরীরী ছুটে চলে জলাভূমি, নদীঘাট, বর্ষা বাদল পেরিয়ে ভাটার সাগর। তারপর এ দ্বীপ ও দ্বীপ সে দ্বীপ… ... ...
কোভিড ১৯ পরীক্ষা করানো এখন অনেক সহজ হয়েছে। কয়েকদিন আগেও আমরা যারা বেসরকারি চিকিৎসক, চাইলেই করোনা পরীক্ষা করাতে পারতাম না। পরীক্ষা হতো খুব অল্প জায়গায়। আর খরচও লাগতো প্রায় আড়াই হাজার টাকা। লকডাউনের মধ্যে অধিকাংশ মানুষেরই সঞ্চয় তলানিতে। তাই আড়াই হাজার টাকার পরীক্ষা লেখার আগে অনেক ভাবনা চিন্তা করতে হতো। চারদিকে কি বিপুল অপচয়। রাস্তাঘাট, বাড়ি- ঘর স্যানিটাইজেশনের নামে জল, অর্থ ও লোকবলের অপচয় হচ্ছে। মাঝে মধ্যে আকস্মিক লকডাউন করে করোনাকে কতদূর ঠেকানো যাবে, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে। বরঞ্চ স্বাভাবিক জীবনে যত দ্রুত সম্ভব ফেরার চেষ্টা করা উচিত। মানুষদের কিভাবে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, সেটা প্রতিদিনই দেখতে পাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার একমাত্র হাতিয়ার হতে পারে মাস্ক। একটা থ্রি লেয়ার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা গেলে মহামারী ছড়ানোর গতিকে আমরা অনেক শ্লথ করে দিতে পারব। কিন্তু সেটুকু করার বদলে বাদবাকি যাবতীয় কিছু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। লোকজন করোনার ভয়ে স্বাস্থ্যকর্মীকে আবাসন ছাড়া করছেন। আর নিজে মাস্ক গলায় ঝুলিয়ে ভিড়ের মধ্যে চা- সিগারেট খাচ্ছেন। ... ...
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। কাহিনির নির্মাণ ও বিষয়বস্তু উভয় নিরিখেই তাঁর রচনা সমসাময়িক সাহিত্যধারা উপেক্ষা করে প্রবাহিত হয়েছে ভিন্ন খাতে। একদিকে তাতে যেমন প্রতিফলিত হয় মানুষের অস্তিত্বরক্ষার অবিরত সংগ্রামের ছবি, তেমনই উঠে আসে প্রতিটি চরিত্রের অন্তর্বিরোধ। এককথায় তাঁর সাহিত্যসৃষ্টি বহুমাত্রিক। সেসবই আলোচিত একটি সাম্প্রতিক গ্রন্থে। পড়লেন লেখক রাহুল দাশগুপ্ত। ... ...
ভারতের ক্ষেত্রে আমরা দেখছি বস্তি অঞ্চলের চাইতে অপেক্ষকৃত স্বচ্ছল এবং সম্ভ্রান্ত অঞ্চলে সংক্রমণের মাত্রা বেশি। তাছাড়াও দেখা যাচ্ছে সংক্রমণের ক্ষেত্রেও দুটি মানুষের মাঝে পার্থক্য ঘটছে, সংক্রমণ হবার পরে কেউ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ছে, আবার কেউবা প্রায় কোন সমস্যা ছাড়া সুস্থ হয়ে উঠছে। জনসমষ্টির বিশেষ অংশ বেশি সংক্রমিত হচ্ছে, অন্য অংশ কম। কেন এরকম ঘটে? এ প্রশ্ন কি বিজ্ঞানীদের কি সাধারণ মানুষ ও চিকিৎসকদের গভীরভাবে ভাবাচ্ছে। এর কোন সরল একমাত্রিক উত্তর নেই। ... ...
আমরা অতীতে যেখানেই ছিলাম, যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ভেঙে ফেলা খেলাধুলোয় ব্যস্ত ও ত্রস্ত মানুষ -- আমরা কেবল ক্যালাইডোস্কোপের মধ্যে নাড়াচাড়া করে দেখছি। দেখছি, অক্ষরগুলো এখনও বেঁচে আছে কিনা। দেখছি, গনগনে চিতার শিখার থেকে কেউ রুমাল নাড়ে কিনা। চিতাভস্মে সমান হবার যে আবেগপ্রবণ আকাঙ্খা তার লেশমাত্র নাই। এখন কেবল ধানখেতে কালো একটি ছেলে শুয়ে আছে, রক্তাক্ত। কালো কালির ওপর লাল কালির এই কাটাকুটি লিখেছিলেন ভাস্কর চক্রবর্তী। ব্যাপারটা তেমন কিছুই নয়। ... ...
মিশেল উয়েলবেক। ইসলামোফোবিয়া থেকে পর্নোগ্রাফি, পুরুষতান্ত্রিকতা—বারংবার উঠেছে নানা অভিযোগ। তবু তিনি এ মুহূর্তের ফরাসি সাহিত্যের উজ্জ্বলতম তারকাদের একজন। ছত্রিশটি ভাষায় অনুদিত হয়েছে তাঁর সাহিত্য। মার্সেল প্রুস্ত বা অন্দ্রে জিদ-এর সাহিত্যশৈলীর পরম্পরা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন তিনি। গতবছরই দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ‘লিজিয়ঁ দ’নর’ প্রাপ্ত এই লেখকের ‘প্লাতফর্ম’ উপন্যাসে উঠে আসে ইউরোপীয় সমাজের অন্তঃসারশূন্যতার হাড়-হিম-করা ছবিও। পড়লেন ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার শিক্ষক পার্থপ্রতিম মণ্ডল। ... ...
দুটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন মেরুনা। সম্প্রতি জেনারেল ক্যাটেগরিতে এক ওবিসি মহিলার সিলেকশনের বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট মহিলাটির নিয়োগ আটকে দেয়। পরে যদিও উচ্চআদালত হাইকোর্টের এই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় কিন্তু বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। অথচ ২০০৪ সালে সুপ্রিমকোর্টের রুলিংয়েই অনগ্রসর শ্রেণির জেনারেল ক্যাটেগরির আসনে চলে আসার প্রতিবিধান রয়েছে! দ্বিতীয় ঘটনাটি মেরুনার নিজের। কলকাতা সংলগ্ন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অসংরক্ষিত জেনারেল ক্যাটেগরির মেধাতালিকায় প্রথম নির্বাচিত হন তিনি। এই নির্বাচন মেনে নিতে পারেনি জনৈক ব্রাহ্মণ অধ্যাপক এবং মেরুনা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন, অভ্যাগত সদস্য হিসেবে সমস্ত মিটিং এড়িয়ে গিয়েছেন অধ্যাপক মহাশয়। মেরুনা সেখান থেকে স্থানান্তরিত হবার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ভদ্রলোকের সম্পর্ক সহজ হয়! ... ...