বাংলা লিখিত সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের যুগ থেকে কোম্পানি-রাজের পত্তন পর্যন্ত রচিত নানা বাংলাগাথা চর্ব্যচোষ্যলেহ্যপেয়র রঙিন বিবরণে ভরপুর। উঠে আসে বাঙালির রসনা-সংস্কৃতির বিবর্তনের ছবি। এ কিস্তিতে নিরামিষ ভূরিভোজ। লিখছেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। ... ...
এই তথ্যগুলোর বিচারে বলা যায়, নীতি আয়োগের কৃষি, কৃষক ও কৃষিপণ্য মূল্য নিয়ে যে ধারণা তা অত্যন্ত মায়োপিক। আমাদের কৃষির সমস্যা সমাধানের জন্য নয়, শুধুমাত্র কৃষিপণ্য বাজারে কিছু অ্যাগ্রিগেটরকে জায়গা করে দেওয়ার জন্য এই আইন করা হয়েছে। নতুন আইন কোনো সমাধানই নয়। তেমনি এখনই এর জন্য কৃষকের ভয়ানক সর্বনাশ হয়ে যাবে এমনও নয়। আবার ফড়ে বলে যে সম্প্রদায়কে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তারা ভয়ানক অপরাধ করে যাচ্ছে তাও নয়। এটা ঠিক মধ্যস্বত্বভোগী বা ফড়েরা ভোক্তা যে মূল্য পণ্যের জন্য দেয় তার ১০-৭০% বিভিন্ন পণ্যের জন্য পেয়ে থাকে। কিন্তু এই ব্যবস্থা একটি অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে জন্ম নিয়েছে। অর্থনীতিতে কিছু ভূমিকা এরা পালন করেছে, তা নানা কারণে কৃষকের পক্ষে যায়নি। যতক্ষণ না সেই প্রক্রিয়ার পরিবর্তন হয় মধ্যস্বত্বভোগী থাকবেই, তা সে ধুতি পরা গ্রাম্য হোক আর কর্পোরেট সংস্থাই হোক। এই মুহূর্তে কর্পোরেট সংস্থার মাধ্যমে কৃষিপণ্যের বাজারজাত করা শুরু হলে খুব দ্রুত হওয়ার সম্ভাবনা নেই, পণ্যসংগ্রহের জন্য কর্পোরেটকে সেই ফড়েদের ওপরেই নির্ভর করতে হবে। নীতি আয়োগের আলোচনায় আরও যা লক্ষ করা হয়নি তা হল অকৃষি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ। ভারতের অর্থনীতির যা চেহারা তাতে একে লুম্পেন অর্থনীতি আখ্যা দেওয়াই যায়। কৃষিতে অবাঞ্ছিত শ্রমিক বা এরপর উপার্জন হারানো ফড়ে (ধরে নিলাম হবে) কোথায় যাবে? গ্রামে শুধু নয়, আমাদের শহরেও লুকোনো রয়েছে বেকারত্ব। এসব দেখেও না দেখার ভান করা কৃষিনীতি ও তার ওপর ওপর বিরোধিতা আসলে নিজেদের সামগ্রিক ব্যর্থতা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা, সরকারের এবং বিরোধী পক্ষের। ... ...
দুনিয়ায় এখন আর্থিক অসাম্য যতখানি, টমাস পিকেটি সাক্ষী, শিল্প বিপ্লবের পর আর কখনও অসাম্য এতখানি বাড়েনি। অসাম্য জিনিসটা তার নিজের কারণেই খারাপ— জিনিসটা অন্যায়, অনৈতিক। কিন্তু, পুঁজিবাদের একটা কু-অভ্যাস, তা নৈতিকতার যুক্তিকে স্বীকার করতে চায় না। কাজেই, চাহিদা-জোগানের দিক থেকেও যে অসাম্য জিনিসটা খারাপ, সেটা মনে করিয়ে দেওয়া ভাল।ধরুন, মোট ১০০ টাকা আছে, সেটাকে দু’রকম ভাবে ভাগ করা যায়— দশ জনের মধ্যে দশ টাকা করে; আর, এক জন ৯১ টাকা, বাকি ন’জন এক টাকা করে। দ্বিতীয় বিকল্পে শেষ ন’জনের ক্রয়ক্ষমতা বলে কার্যত কিছু নেই, ফলে তাঁদের চাহিদাও নেই। প্রথম জনের হাতে অনেক টাকা, কিন্তু ভোগব্যয়ে খরচ করার প্রথমত একটা সীমা আছে; আর দ্বিতীয়ত, প্রাথমিকপ্রয়োজন মেটানোর পর যে ভোগব্যয়, তাতে খরচ হওয়া টাকার বণ্টনও এই দ্বিতীয় বিকল্পের মতোই অসম। ... ...
ফের অন্যায় হল সুদর্শনের সাথে। বিস্মিত পদার্থবিজ্ঞান মহল। সুদর্শন নোবেল না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হলেন অনেকেই। স্থির হল প্রতিবাদপত্র পাঠানো হবে নোবেল কমিটিকে। সেই মতো লেখা হল এক চিঠি। চিঠিতে লেখা হল, “আমরা সবিনয়ে জানাতে চাই... সুদর্শনের আলোর কোয়ান্টাম তত্ত্বের মৌলিক অবদানের প্রতি উদাসীন থেকে ন্যায়ের জন্ম দিতে ব্যর্থ হয়েছে” কমিটি। ১০ জন (মূলত ভারতীয়) পদার্থবিদের সই সম্বলিত এই পত্র পাঠানো হয় নোবেল দফতরে। প্রতিবাদ জানিয়ে নোবেল দফতরে পত্র লেখেন সুদর্শনও। লিখলেন, “এই বছরের ঘোষণায় আমি প্রকৃত অর্থেই বিস্মিত এবং হতাশ।” ... ...
বৈজ্ঞানিকদের পুর্ব-লব্ধ জ্ঞান এক্ষেত্রে বিশেষ কাজে লেগেছে। সেগুলো হল – (১) করোনা ভাইরাসের দেহের স্পাইক প্রোটিনের ভূমিকা সম্বন্ধে আগাম ধারণা থাকা, (২) ইমিউনিটির ক্ষেত্রে স্পাইক প্রোটিন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে “নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি”-র ভূমিকা, (৩) নিউক্লিক অ্যাসিড (যেমন আরএনএ বা ডিএনএ) ভ্যাক্সিন প্ল্যাটফর্মের উন্নত চেহারায় বিবর্তন এবং (৪) ভ্যাক্সিন তৈরির প্রক্রিয়াকে ধাপে ধাপে (sequentially) করার পরিবর্তে সমান্তরাল ভাবে (parallel) করা, কিন্তু যারা ভ্যাক্সিন স্টাডিতে অংশগ্রহণ করেছে তাদের ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি না নিয়ে। পূর্বোল্লেখিত সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে – “কার্যকারিতা কেবলমাত্র তখনই নির্ধারণ করা যাবে যখন যাদেরকে ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে এবং অতিমারির হটস্পটের মধ্যে তুল্যমূল্য বিচার (match) করা যায় ... এজন্য প্রাথমিক এন্ড পয়েন্টগুলোকে সতর্কতার সাথে নির্বাচন করতে হবে (এ বিষয়ে এর আগে বিস্তারিত আলোচনা করেছি), নির্বাচন করতে হবে স্টাডি-ডিজাইন এবং স্যাম্পেল সাইজের (অর্থাৎ কতজনের ওপরে ট্রায়াল দেওয়া হবে) সম্ভাব্যতার পুনর্মূল্যায়ন বিবেচনায় রাখতে হবে।” ... ...
মেক্সিকোর শিল্পী ফ্রিদা কালো। তাঁর ডায়ারির বাংলা তরজমা। মৃত্যু, যন্ত্রণা, ভিতরের চাপা বেদনা—এ সবই লিপিবদ্ধ পাতায় পাতায়। কিছু টুকরো টুকরো শব্দ। পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক বোঝা দায়। হয়তো তাদের ভিতরে কোনো সংকেত আছে। বিভিন্ন শব্দের আশ্চর্য সম্মোহক সব স্বরভঙ্গির ওঠাপড়া। লিখছেন শিল্পী হিরণ মিত্র। ... ...
কয়েকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হয়নি, ধরা যাক, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা কোভিডের মতো কোনো আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত বিপদের সময় কীভাবে শিক্ষাব্যবস্থাকে বহাল রাখা যাবে? বন্যা অথবা ঝড় হলে (একটি শহর যেভাবে মোকাবিলা করবে একটি প্র্যত্যন্ত গ্রাম সেভাবে বাস্তবিকভাবেই পারবে না, কোনো দুর্গম অঞ্চলে অবস্থা আরও শোচনীয়) বা এজাতীয় কোনো অস্বাভাবিক ও কঠিন সময়ে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলির কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? জুলাই মাসে যখন এই নীতিটি প্রকাশ করা হচ্ছে, তখন কোভিডের সর্বাধিক সীমা ছোঁওয়ার একটা পূর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছে, মাসের পর মাস যেখানে স্কুল বন্ধ, তখন শিক্ষাব্যবস্থায় কী বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করা দরকার, এমতাবস্থায় শিক্ষকরা কীভাবে পড়াবেন এরকম কোনো প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হয়নি। অনলাইন এবং অফলাইন লার্নিং-এর কী পদ্ধতি এরকম পরিস্থিতিতে কেমনভাবে ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠতে পারে তার কোনো উল্লেখ নেই। ইন্টারনেট না থাকলে শিক্ষা কীভবে বহাল থাকবে? এরকম কোনো বিষয়ই উঠে আসেনি। এই প্রসঙ্গে বলি, আমি আপ্লুত, যে কোভিডের এই আস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে কিছু নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক আজ সফল। এই কঠিন সময়ে, কোনো সাহায্য ব্যতীত, নিজস্ব উদ্যোগে নতুন শিক্ষণকৌশল উদ্ভাবন করে শিশুদের কাছে পৌঁছোতে পেরেছেন। ... ...
মিয়া কোতু। আফ্রিকার মোজাম্বিকে বংশানুক্রমে বসবাসকারী শ্বেতাঙ্গ পোর্তুগিজ। পোর্তুগিজ ভাষার শ্রেষ্ঠ আধুনিক সাহিত্যিকদের অন্যতম। পোর্তুগাল ও ব্রাজিলের যুগ্ম ভাবে দেওয়া পোর্তুগিজ সাহিত্যের সর্বোচ্চ পুরস্কার কাময়েঁশ (২০১৩) সহ বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত। অ্যানিমিস্ট রিয়ালিজম শৈলীর লেখক। তাঁর সেরা উপন্যাস ত্যারা সুনাম্বুলা (স্বপ্নচারী দেশ)। ১৯৭৫-এ মোজাম্বিকের স্বাধীনতা ও পরবর্তী কালের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষিতে লেখা এক নিরন্তর খোঁজের কাহিনি। পড়লেন পোর্তুগিজ ভাষার শিক্ষক ও তরজমাকার ঋতা রায়। ... ...
এম জে আকবর কতটা দোষী আর কতটা মিথ্যা অভিযুক্ত, এর আনুপুঙ্ক্ষিক তদন্ত হওয়া দরকার। এবং সবিশেষ বাদী প্রতিবাদী শিবিরের বাইরে বিষয়ের নানা দিক খতিয়ে দেখা প্রয়োজন, কারণ ভারচুয়াল যোগসূত্র আমাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ রায় দেবার স্বাভাবিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। কেবল সত্যের জন্য কোনো দরদ নেই আমাদের, তবু আমরা গসিপ থেকে সরে আসবো না। প্রতিদিন যেন এই স্ক্যান্ডালের বাটি পূর্ণ থাকে। ... ...
সর্বত্রই ত্রাণের কাজে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের কাছ থেকে একটাই কথা শুনতে হচ্ছে - 'ত্রাণসামগ্রী নিয়ে কিছুদিন না হয় চলবে, কিন্তু সরকার যদি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না করে, তাহলে মরে যাব আমরা'। আমরা গুরুচণ্ডা৯-র পক্ষ থেকেও এই কথার সাথে সম্পূর্ণ সহমত পোষণ করি। কেবল ত্রাণ নয়, এই সমস্যাগুলোর দীর্ঘমেয়াদী সমাধান চাই। আজকে যাঁরা ত্রাণের জন্য হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের কাছে আমাদের তাই আবেদন, দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক নজরদারি কীভাবে গড়ে তোলা যায়, কীভাবে আয়লা বা আমফানের ক্ষয়ক্ষতির পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায়, ধীরে ধীরে সেটিকে চর্চার বিষয় করে তুলুন। ... ...
হিলগার্ড আর ওয়াইৎসেনহফার তৈরি করেন স্ট্যানফোর্ড হিপনোটিক সাসেপটিবিলিটি স্কেল। তাঁরা দেখেন মোটের ওপর ৮-১০% জনতা আছে, যারা হাইলি হিপনোটাইজেবল। ৮৪-৮৮% মডারেট আর ৪-৬% লো। ওই হাই এবং কিছু মডারেট লোকের মধ্যেই সেই বৈশিষ্ট্যাবলী আছে যাতে তারা খুব সহজে হিপনোটাইজড হতে পারে, এবং তাদের ক্ষেত্রেই হিপনোসিস খুব কার্যকরী চিকিৎসাপদ্ধতি হতে পারে কিছু কিছু রোগের জন্য। তাঁরা আরো দেখলেন যে এই বৈশিষ্ট্যগুলোও স্ট্যাটিক না, বয়সের সাথে একটু আধটু পাল্টায়। সাধারণত ৯-১২ বছর বয়সের জনতা যারা বেশি কল্পনাপ্রবণ, ফ্যান্টাসিতে থাকে, এবং যাদের কনক্রিট অপারেশনাল থিঙ্কিং তৈরি হচ্ছে, তারা বেস্ট ক্যান্ডিডেট। মজার ব্যাপার, সাময়িকভাবে এলেসডি বা এমডিএমএ জাতীয় ড্রাগ বা সেনসরি ডিপ্রাইভেশন কিছুক্ষণের জন্য এই হিপনোটাইজেবিলিটি বাড়িয়ে দিতে পারে, যদিও সেটা বেশিক্ষণ টেকে না। আর হ্যাঁ, কোন ধরনের লোক সহজে হিপনোটাইজড হবে আন্দাজ করার কোনো নিখুঁত রুল অব থাম্ব নেই, মোটামুটি মনোসংযোগদক্ষতা, একাগ্রতা, কল্পনাপ্রবণ ও অনুভূতিপ্রবণ মানুষের সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমার সামনের লোকটি হাই হিপনোটাইজার কি না, তা বোঝার স্কেল থাকে, এবং সাধারণত তা বোঝার পর হাই জনতাদেরই হিপনোসিস অফার করা হয় চিকিৎসার ক্ষেত্রে। পাতি লক্ষ্মণবিচার আর কি। সেইসব টেল টেল সাইন দেখে বোঝার চেষ্টা করা হয় সামনের ইনি সেই গিফটেড ৮% এর মধ্যে পড়েন কিনা। মার্কিনীরা সেইসব লিস্টির গালভরা নাম দিয়েছে - "হিপনোসিস ইন্ডাকশন প্রোফাইল", " স্ট্যানফোর্ড হিপনোটিক সাসেপটিবিলিটি স্কেল", "হার্ভার্ড গ্রুপ স্কেল অব হিপনোটিক সাসেপটিবিলিটি", "বারবার সাজেস্টিবিলিটি স্কেল" ইত্যাকার। এর মধ্যে ঐ হিপনোসিস ইন্ডাকশন প্রোফাইলটায় তো মাথার ওপর দিকে তাকাতে বলে চোখে স্ক্লেরার ভিজিবিলিটি দেখেই কিসব বোঝা যায় বলে দাবী করে। আর তার মেডিক্যাল ব্যাখ্যাওয়ালা হাইপোথিসিস রয়েছে গুটিকয়, যদিও এভিডেন্স বেসড নয়। সবার ওপরে, যিনি করবেন, তাঁর মানুষ চেনার এতদিনের অভিজ্ঞতা। ... ...
খেলার শেষে সবাই মুরি যাচ্ছেন বাসে করে। মুরি থেকে ট্রেন। দু ঘন্টার জার্নি। পিকে চুনী একই বাসে। সময় কম, বাস চলছে জোরে, ট্রেন ধরতে হবে তো। হঠাৎ চোখ ধাঁধিয়ে গেল ড্রাইভারের, উল্টোদিকে বোধহয় একটা বাস বা লরি কিছু ছিল, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদের দিকে ছুটছে বাস। বাসে রয়েছেন বসে আগামী দিনের দুই সুপারস্টার, প্রদীপ আর সুবিমল। পিকে আর চুনী। আঠারো মাসের ছোটো বড়। মোটামুটি নাম হয়ে গেছে দুজনেরই। সবাই ধরে নিয়েছে এরা কলকাতা মাঠ কাঁপাবে আর কিছুদিন পরেই। বাস ছুটতে ছুটতে ধাক্কা খেল বড় পাথরে। কাত হয়ে সামলে গেল। ভাগ্যিস গেল। না হলে? ... ...
বিশিষ্ট কিছু বিজ্ঞানীর কথা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের স্বর্ণযুগের কাহিনি, গণ-আন্দোলনে বিজ্ঞানীদের অবস্থান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক প্রচারে অপবিজ্ঞানের জনপ্রিয় ব্যবহার, গণ-মারণাস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের ভূমিকা। বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে একগুচ্ছ প্রবন্ধের সংকলন। পড়লেন চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের কর্মী বিষাণ বসু। ... ...
অথচ উল্টোটাই হওয়া উচিত ছিল। মিডিয়ায় উল্টো ঘটনা দেখে আমরা অভ্যস্ত। ভরসার বিষয় মিডিয়ার বাইরেও একটা জগত আছে। বিশাল জগত। সেখানকার মানুষেরা হাজার প্রলোভন সত্বেও খুব খারাপ নন। কোন ঘটনা ঘটলেই চিকিৎসককে দলবেঁধে পেটাতে আসেন না। ক্ষতিপূরণের জন্য ঘনঘন “সিপিএ”তে কেস করেন না। ... ...
খাপ কিন্তু শিল্প। চপসিল্পোর মতো খাপসিল্পো। এখানে এডিট স্ক্রিনিং স্ক্যানিং--- ইত্যাদির ব্যাপক কারুকাজ চলে। তো, ওই সুচারু ইন্টেলেকচুয়াল কারুকাজে কমেন্টের 'বাবা উক্ত' শেষের 'ভালোবাসা' 'মানবিক মুখ' কথাটথা ঝড়াকসে বাদ চলে গেলো। এবং ন্যাজাবিযুক্ত স্ক্রিনশটটি পোস্ট হইতে পোস্টান্তরে বাহিত হইতে লাগিলো। ... ...
এর মধ্যে বাড়িতে একদিন কয়েকজন বন্ধুবান্ধবকে খেতে ডেকেছিলাম। তার মধ্যে রেখা আর আলিশাও ছিল। ওদের আগেই ফুটফুটে দুটো যমজ হয়েছিল আলিশার গর্ভে, সাম্প্রতিক কালে রেখা অন্তসত্ত্বা। ওরা চলে যাওয়ার পর আমরা চারমূর্তি বসে গল্পগাছা করছিলাম। কথাবার্তা ঘুরতে ঘুরতে গে ম্যারেজ, লেসবিয়ান কাপল, আই ভি এফ, দত্তক ইত্যাদি হয়ে কিভাবে যেন কাটজুতে পৌঁছে গেল। আমি বললাম যে প্রাক্তন বিচারপতি কাটজু মনে করেন, বিয়ের কেন্দ্রীয় উদ্দেশ্য সন্তান উতপাদন ও প্রতিপালন। তাই যেহেতু গে কাপলদের সন্তান হবে না, তাই গে ম্যারেজ অর্থহীন। আইলীন হঠাৎ রেগে গেল। কাটজুর উদ্দেশ্যে কিছু বাছা বাছা গালাগাল দিয়ে শুতে চলে গেল। খানিকবাদে ড্যানও চলে গেল। আইলীন যদিও তুমুল এলজিবিটি সমর্থক তবু এরকম রেগে যাওয়ার কারণ বুঝতে পারলাম না। সম্ভবত রেড ওয়াইন একটু বেশি হয়ে গেছে। ওরা দুজন চলে যাওয়ার পর আমি এই কথাটা গণেশকে বলতে ও অবাক হয়ে আমাকে বলল, ও তুমি জান না? আমি বললাম, কী জানব? ... ...
লোকটা হাত নেড়ে বলে, বাতাস না, বাতাস না—ওসব হল গুহ্য কথা—বুঝলেন কিনা! কানের পাশ দিয়ে ফিসফিস করে বয় আর বলে যায়, সাবধান, সাবধান! লোকটা চোয়াল শক্ত করে বলে, হোমে দুটি ছেলে থাকে না? মাজু আর কেল্টু? হারামির হাড় একটা! এই তো সেদিন এদিকের পরিচিত পাগল, নিত্যকে পিটিয়ে মেরে দিল—কেউ কিছু করল না, জানল না, বুঝল না—মেরে খালের জলে ভাসিয়ে দিল দেহ—গুহ্যকথা, গুহ্যকথা! ... ...
১৯৪৭-এর পরবর্তী নানারূপ কৃষি সংস্কার, আইন করে জমিদারি প্রথার বিলোপ সত্ত্বেও ভারতরাষ্ট্রের উৎপাদন সম্পর্কের সামন্ততান্ত্রিক চেহারাটি বদলায়নি, সামন্ততান্ত্রিক সম্পর্কের উপর আইনি আঘাত এলে, অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে নতুন ধরনের উপরিকাঠামোর সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামন্তবাদ নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে রেখেছে। বুর্জোয়া আইনের মাধ্যমে জমি হাতবদল আটকাতে আইনি ব্যবস্থার নাকের ডগায় গড়ে ওঠে সামন্ততান্ত্রিক সশস্ত্র সংগঠন। ... ...
নিউমার্কেট এবং কলকাতা কর্পোরেশনের নিকটেই রক্সি সিনেমা হলটা নিশ্চয় অনেকেই চেনেন। ওর সামনে দিয়ে কতোবার হেঁটে গেছেন অতীতে,যেখানে ওই সিনেমা হলটার উলটোদিকের ফুটপাতে সাব্বির ব্যাগওয়ালা বসতো নানানরকমের জুটের এবং কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে! মনে আছে? যেটাতেই হাত দিতেন, ঝাঁকড়াচুলো সাব্বির বলতো "ওনলি থ্রি হান্ড্রেড।" ওই রক্সি সিনেমা হলটা এখন কলকাতা কর্পোরেশনের স্থায়ী কোভিড টেস্টের সেন্টার। দারুণ ব্যবস্থা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। প্রত্যেক কর্মীই ভীষণ সহানুভূতি সহকারে এবং সুশৃঙ্খলভাবে নিজের নিজের কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকে এই সেন্টারটার কথা জানেন না বলে গিজগিজে ভীড় নেই। আর সবচেয়ে বড়ো কথা ওই বড়ো বড়ো ঘরগুলোর কোথাও কোনো মন খারাপের ছায়া বা বিষণ্ণতা লুকিয়ে নেই। যাঁর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়বে, তিনি ওখান থেকে ভয় নিয়ে বেরোবেন না। তাঁর মনে হবে কোয়ারেন্টিনে থাকলেই সুস্থ হয়ে যাবো। আর হবেনও তাই। উচ্চবিত্তরাও কিন্তু নিশ্চিন্তে যেতে পারেন। পুরসভা,সরকারি,ঘিনঘিনে, গন্ধ,জানোয়ারের মতো ব্যবহার, ছোটলোকদের জায়গা...ওখানে গিয়ে দাঁড়ালে এসব কথা মনেই হবে না। ছুটি এবং লকডাউনের দিন ছাড়া বাকি সব দিন খোলা। ... ...
আগের খসড়াটি পেয়ে অনেকেই নানা মতামত দিয়েছেন। তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ। কিছু মতামতের ভিত্তিতে দ্বিতীয় খসড়াটিও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে যথাস্থানে। সেটিই হুবহু আকারে এবার প্রকাশ করা হল বুলবুলভাজায়। সময়ের চাপে এবারও খসড়াটি ঠিক দানা বাঁধেনি। খসড়াটি আজ প্রকাশিত হলেও যেহেতু এটি পাঠানো হয়েছে যথেষ্ট আগেই, তাই সমস্ত মতামতগুলি নিয়ে এখানে আলোচনাও করা যায়নি। পরবর্তী খসড়ায় অতি অবশ্যই বাকি মতামতগুলিকে স্থান দেওয়া হবে। সে কারণেই এইটি নিয়েও আলোচনা আহ্বান করা হচ্ছে। ... ...