কবীর সুমন সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার বাড়ির সামনে বাজারে যে-মাসি ক্যানিং থেকে রোজ এসে শাকসব্জী নিয়ে বসেন, তাঁর সারাদিনে জলবিয়োগের কোনও জায়গা ছিল না, সরকার বাজারে একটি ‘পথের সাথী’ নামক স্নানাগার করে দিয়েছেন যেখানে স্নান-পায়খানা-পেচ্ছাপ ছাড়াও খানিক বিশ্রামও করা যায়। ‘পথের সাথী’ এখন বড় রাস্তার ধারে দৃশ্যমান। সংস্কৃতি মানে কেবল গান-বাজনা-গল্প-কবিতা লেখা নয়, এই ‘পথের সাথী’ নির্মাণ বা নির্মাণের ভাবনাও একটা সংস্কৃতি। ওই মাসি সারাদিন কীভাবে টয়লেটবিহীন হয়ে কীভাবে থাকেন, কী আশ্চর্য, কেউই ভাবেননি আগে! বাংলার বিপুল এই নারীসমাজ দু’হাত ভরে নিজেদের মেয়ে মমতাকে জানিয়েছেন কৃতজ্ঞতা ও আশীর্বাদ। ... ...
২০১৯-এর নির্বাচনে ওই রকম জাতীয়তাবাদী প্রচারে বাংলা থেকে ১৮টা আসন বিজেপির পায়। শুধুমাত্র বামের ভোট রামে গেছে বললেই কিন্তু এই সমস্যা থেকে মুক্তি নেই। নিজেদের দলেরও সমালোচনা তৃণমূলকে করতে হবে। কেন নীচের তলায় এতো ক্ষোভ তৈরি হল তা পর্যালোচনা করতে হবে। শুধুমাত্র অঞ্চল স্তরের নেতাদের দুর্নীতির কারণে ক্ষোভ বেড়েছে তা কিন্তু নয়। নীচের তলার নেতাদের দাদাগিরিও ও ঔদ্ধত্যও আছে। যে রোগে ৩৪ বছরের বাম শাসনের পতন হয়েছিল, সেই একই রোগে কিন্তু তৃণমূলও আক্রান্ত। বিরোধীশূন্য রাজনীতি আসলে দক্ষিণপন্থী উত্থানের সিঁড়ি সেটা আরো একবার আজ বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন। ... ...
- বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ লড়ছে এমন কিছু মুক্তিসেনা লুকিয়ে আছে ঐ ক্যাম্পগুলোতে। অস্ত্র চালান করা, আন্তর্জাতিক রেডিও স্টেশন অপারেট করা, সবেতে আছে ছেলেগুলো। শিতলখুচি বর্ডার দিয়ে ওরা পারাপার করে। আজ যাদের দেখছো, কাল গেলে দেখবে তাদের মুখগুলো পালটে গেছে। সে যাক, ওদের দেশের স্বাধীনতার লড়াই ওরা কেমনভাবে লড়বে ওরা বুঝবে। কিন্তু খুকি... - খুকি কী ? খুকি কেমন কইরা আসলো এইসবের মধ্যে ? মা ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করে। - শোনো, তোমার খুকি না হাতে এতোদিন হাতকড়া পরতো, যদি ইন্দিরা গান্ধীর হুকুমে পুলিশ অন্যদিকে তাকিয়ে না থাকতো। রিলিফ দেবার নাম করে চরে যায়, ছেলেগুলোর সঙ্গে মেলামেশা করে। একটি মুসলমান ছেলের সঙ্গে নাকি সম্পর্কও হয়েছে। সারা টাউনে ঢি ঢি পড়ে গেছে তো। আর তার সঙ্গে তুমি মেয়েকে পাঠিয়ে দিলে! ... ...
কর্পোরেট অফিস আর কলকাতায় পার্থক্য অনেক। কলকাতায় সোমেশ্বরই ছিল বস, অতএব সাধারণভাবে অফিসের চালচলন, ম্যানেজার আর অন্য কর্মচারীদের মধ্যে সম্পর্ক, ওঠাবসা ইত্যাদি, ঠিক নিয়ন্ত্রণ না করলেও সোমেশ্বরের রুচি আর পছন্দের ছাপও পড়ত তাতে। কর্পোরেট অফিস অন্য রকমের। সেখানে অনেক ডিপার্টমেন্ট, অনেক কমিটি, বিদেশী ভিজিটর্স, নানা রকমের প্রেজেন্টেশন আর পার্টি। বেশির ভাগ কাজের দিনগুলোতেই যেহেতু ট্যুরে থাকে সোমেশ্বর, অতএব নিজের কাজের বাইরের এসব ব্যাপারে ও থাকেই না প্রায়। মুম্বইতে থেকেও এক-আধটা সান্ধ্য পার্টিতে না গেলে চলে না, কাজেই সেটুকুই ওর জনসংযোগ। কিন্তু ওকে যে বিশেষ কেউ লক্ষ্য করে, তা-ও মনে হয়না। ... ...
এই ভূগোলের বাইরেও একটা ভূগোল আছে। সে ভূগোল জঙ্গলের মানুষকে নিয়ে। সে ভূগোল যে অঞ্চলের সেই অঞ্চলের যে কোন জায়গা ধরে কিছুক্ষণ হাঁটলেই শাল-মহুয়ার জঙ্গল, ছোট-বড়ো পাহাড়, লালচে মাটি যার অনেকটাই কাঁকুড়ে, অজস্র তিরতিরে ছোট ছোট নদী-ঝোরার গুনগুনানি, আর কালোকোলো বেঁটেখাটো মানুষ – আপনি মাইলের পর মাইল হাঁটুন – এই একই দৃশ্য – মাইলের পর মাইল। কতো মাইল? কতো মাইল আমি ঠিক ঠিক জানিনা, কিন্তু অনেকটাই। এখান থেকে হাঁটতে শুরু কোরে বাঁকুড়া-মেদনীপুরের ভেতর দিয়ে ঢুকে যান সিংভূমে; ঘাটশিলা-জামশেদপুরের কারখানাগুলোর দক্ষিণে এসে ময়ূরভঞ্জ-কেওনঝর-সম্বলপুর হয়ে পশ্চিমে গিয়ে পৌঁছিয়ে যান সুন্দরগড়-রায়গড়-সরগুজা, তারপর আবার পূবের দিকে এসে পালামৌ-হাজারিবাগ-রাঁচি-গিরিডি-সাঁওতাল পরগণা দিয়ে ধানবাদ হয়ে ফিরে আসুন এই পুরুলিয়ায়। ... ...
যে বৃদ্ধাবাসের প্রস্তাবটা অরুণ দিচ্ছেন, ধরুন সেই একই বৃদ্ধাবাসে একটা ব্লক তৈরি করা হলো যেটা নিঃশুল্ক। আর, সেই ব্লকটায় থাকবেন শুধুমাত্র একা-হয়ে-যাওয়া ট্রাইবাল মানুষজন। এই ধরণের বৃদ্ধাবাসে সাধারণত নিয়মিত চিকিৎসার জন্যে একটা ব্যবস্থা থাকে। এ ক্ষেত্রেও সেটা থাকবে, কিন্তু অন্য বৃদ্ধাবাসের তুলনায় এটা একটু অন্যরকমের হতে পারে। এমন হতে পারে যে বৃদ্ধাবাসের আবাসিক যারা নয়, স্থানীয় সেই সব মানুষদের জন্যেও আউটডোর চিকিৎসার ব্যবস্থা হলো এখান থেকে। সত্যি সত্যিই যদি এইরকমের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে আপনাদের সমাজসেবার কাজটা এই বৃদ্ধাবাস দিয়েই শুরু হতে পারে। ... ...
অস্থির বোধ করে জয়মালিকা। কলকাতা শহরে তার কোম্পানীর গেস্ট হাউজে একা একা বিছানায় শুয়ে গত কয়েক বছরের নানা ঘটনার কথা মনে আসে তার। যে এগজিবিশন আজ তার এত পরিচিতি এনে দিয়েছে, কলকাতার নানা খবরের কাগজ আর পত্রিকা তাকে নিয়ে এতো আলোচনা করেছে যে এগজিবিশনের ফলে, কয়েক বছর আগে সেই এগজিবিশনেরই একটা ছোট সংস্করণ এই খোদ কলকাতা শহরেই তো অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। কেউ আসেনি সেদিন দেখতে, একটা লাইনও আলোচনা হয়নি কোথাও ! কী হলো এর মধ্যে, তফাৎটা কোথায় ! নিলীনের বই? কিন্তু, কতোটা আলোচনা হয়েছে নিলীনের বইকে নিয়ে? নিলীনের বই-ই যদি খ্যাতি এনে দিয়ে থাকে তার, তাহলে সে বই নিজে খ্যাতি পেয়েছে কতটুকু? ... ...
তোমার প্রতিভা ছিলো, বারবার বলছি জয়ি। প্রতিভা না থাকলে ভূদেবদার মতো অমন খুঁতখুতে লোক তোমার প্রথম ছবিটাই কিনে নিতেন না। আর শুধু ঐটুকু কেনাই তো নয়, কলকাতার লিট্ল্ ম্যাগাজিন ওয়র্ল্ডে আর বিজ্ঞাপন-ইলাস্ট্রেশনের জগতে তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে কতো মানুষের সাথে কথা বলেছেন শক্তিদা আর ভূদেবদা, তা তো তোমার চেয়ে বেশি কেউই জানেনা। শুধু ঐটুকুই নয়, তোমার প্রতিভার স্ফুরণের জন্যে বোধ হয় ঠিক ঐ সময়টায় একজনের প্রয়োজন ছিলো, এমন একজন যে তোমাকে ঠিক ঠিক দিশা দেখাতে পারবে, যে তোমার দক্ষতার পরের ধাপটায় তোমাকে নিয়ে যেতে পারবে হাত ধরে। নিখিলেশদার মাধ্যমে তোমাকে বিকাশ ভট্টাচার্যর কাছে পৌঁছিয়ে দিয়েছিলেন শক্তিদা। বিকাশ ভট্টাচার্যর মতো এ যুগের শ্রেষ্ঠ চিত্র-প্রতিভাদের একজন নিজে তোমার সাথে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন ছবি আঁকার পাঠ দিতে। এ কথা তুমিই আমাকে বলেছো জয়ি যে তোমার তা পছন্দ হয়নি। পালিয়েছিলে তুমি। ... ...
মধ্যবিত্ত নাগরিক সমাজ যতই উন্নাসিক হোক না কেন, স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, সমব্যাথী, সবুজ সাথী প্রকল্পগুলি গরিব মানুষের পছন্দের। যে কোন নির্বাচনে গরিব মানুষের ভোট নির্ণায়ক হয়। এবারও যাবতীয় দুর্নীতি সত্ত্বেও গরিব মানুষ মনে করেছেন তৃণমূল থাকলে তাঁর প্রাপ্তিযোগ হবে। কারণ বিজেপি দীর্ঘ দিন ধরেই বড়লোকদের পার্টি বলে পরিচিত। ... ...
সুন্দরবনের সন্দেশখালি, ন্যাজাটের বানভাসি গ্রাম বাউনিয়া। মেয়েরা এসেছিল মেডিক্যাল ক্যাম্পে ডাক্তার দেখাতে, তারই মধ্যে একটু ফাঁক পেয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে বসাল বেঞ্চিতে। পেট মোটা এক বিগ শপারে ঠাসা শাড়ি, এক মহিলা ঝুঁকে পড়লেন, অন্যরা বলতে লাগল, ‘বেগুনিটা নয় রে, হলুদটা দেখা।’ হলুদ শাড়িই বেরোল, দু’ধারটা ধরে মেলে দাঁড়ালেন দু’জন, আর সেই গাছ উপড়ে-পড়া, ছাদ উড়ে-যাওয়া বিধ্বস্ত গ্রাম যেন নিমেষে হেসে উঠল। পীতবস্ত্রে অজস্র সোনালি চুমকি, পাড়ে আরও ঘন হয়ে শোভা বাড়াচ্ছে, আর আঁচলে যেন জোনাকির মেলা। এমন অপরূপ শাড়ির কারিগরদের মুখ ম্লান। আগে ১২০ টাকা দিত শাড়িতে চুমকি বসাতে, এখন ৮০ টাকা দেবে বলছে ব্যবসায়ীরা। একটা গোটা শাড়িতে কাজ করতে তিন দিন থেকে সাত দিন লাগে। কত ঘণ্টা, তা চুমকির ঘনত্ব দেখে আন্দাজ করা কঠিন নয়। এই কাজের দাম ৮০ টাকা হলে ঘণ্টায় ক’টাকা মজুরি দাঁড়ায়, ভাবলে মনে মনে মরে যেতে হয়। ... ...
যারা এতদিন বিভিন্ন জনসভায় মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়ে কান্নাকাটি করছিলেন, ভোট মিটতেই এবং করোনা বাড়তেই যে যার ঘরে গিয়ে খিল এঁটেছেন। যখন মানুষের জন্য কাজ করার, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সবচেয়ে বেশি দরকার তখন এই রকম কয়েকটি তরুণ যুবক ছাড়া কারোরই পাত্তা পাওয়া যাচ্ছে না। প্রত্যেকটি পাড়ায় পাড়ায় এখন এরকম ছেলেদের বেশি দরকার। তারা যদি পাড়ার প্রতি বাড়ির অসুস্থ রোগীদের খবর রাখে, তাঁদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন সহ অন্যান্য সহজ শারীরিক পরীক্ষা গুলি করতে পারে এবং রোগীর অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে ভর্তির ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে তাহলে বিপর্যয় অনেকটাই এড়ানো যেতে পারে। ... ...
চে-র টাট্টু খোদাই একজন অসৎ মানুষ বিজেপিতে গেছে বলে এতো এতো খিল্লি! তার মতোই আর কয়েকজনও বিজেপিতে গেছে। কিন্তু লেসার ইভিলে যে পাল্লা অনেক ভারি! পয়সা ছড়িয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে কিনে নিলে, ট্রেন্ড দেখে যার সম্ভাবনা খুবই বেশি বলে সবাই বলছে, তখন কী হবে? ... ...
শুধু বলি, স্পষ্টভাবে বলুন - যা বলতে চাইছেন, দায়িত্ব নিন। উত্তরটি গ্রহণযোগ্য না-ই হতে পারে - সর্বজনগ্রাহ্য তো কখনোই হবে না - তবুও, স্পষ্ট অবস্থান ও উচ্চারণ জরুরি। শুধুই নেতি নেতি করে আধ্যাত্মিক সত্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা থাকলেও, রাজনৈতিক লক্ষ অর্জন মুশকিল। বিরোধিতা করার মুহূর্তে বিরুদ্ধ কোনো একটি দলের পক্ষে বোতাম টেপা জরুরি। আমার পক্ষে সেই বোতাম বামেদের - আপনি সিদ্ধান্ত নিন, সেই বোতাম কাদের। ... ...
লুইস সেপুলভেদা। ঔপন্যাসিক, চলচ্চিত্র নির্দেশক, চিত্রনাট্যকার, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মী। স্বদেশ চিলে। ১৯৭৩ সালে ক্ষমতাসীন আউগুস্তো পিনোশে সরকার প্রথমে কারারুদ্ধ ও পরে নির্বাসিত করে। কিছুকাল একুয়াদরবাসী। সান্দিনিস্তা বিপ্লবে সক্রিয় অংশগ্রহণ। পরে জার্মানির হামবুর্গ শহরে পাকাপাকি বসবাস। কোভিড-আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন ২০২০-র ১৬ এপ্রিল। তাঁর বিখ্যাত নভেলা ‘দ্য ওল্ড ম্যান হু রিড্স লাভ স্টোরিজ’ পড়লেন ঋতা রায় ... ...
প্রয়াত হলেন প্রদীপ চৌধুরী। হাংরি আন্দোলনের পুরোধা এই কবি তাত্ত্বিক ভাবে কবিতাকে বুঝতে চেয়েছিলেন। শিক্ষিত ও মুখরোচক শব্দের প্রতি তাঁর কোনো আনুগত্য নেই। নান্দনিকতার অজুহাতে কবিতায় যা কিছু বর্জন করা হয়, তাদেরই নিজের কবিতায় স্থান করে দিতে চেয়েছেন। লিখছেন রাহুল দাশগুপ্ত ... ...
কমলা দাস। ছদ্মনাম মাধবীকুট্টি। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর কমলা সুরইয়া। লিখেছেন মালয়ালম্ ও ইংরেজিতে। তাঁর আত্মজীবনী। অনাবৃত—কলকাতার শৈশব, মালাবারের বাড়ি, বম্বের যাপন, সমকাম, শরীরী প্রেম, যৌনতা, বিষাক্ত দাম্পত্য...। বাংলা তরজমায় পড়লেন তৃষ্ণা বসাক ... ...
প্রকৃতপ্রস্তাবে বর্তমানের বিজেপি হল ভারতীয় জনমনের প্রকৃত প্রতিফলন। এই সরকার দেশের উদার-গণতন্ত্রের মুখোশ ছিঁড়ে ফেলে জনগণকে একেবারে তার উলঙ্গ প্রতিলিপির সামনে সটান দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিজেপি দেশকে একটি বাইনারির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ... ...
থকথক করে কেঁদে ফেলে ছেলেটি , আমি মোছলমান বলি মা আমারে বাঁচায় নাই স্যার— যাতি আসতি কতবার ভালো ভালো কলা দিছি দুগগা মার পায়ের তলায়—বলাইকাকার সাথি কতবার ডাকিছি মা, ওমা জগজ্জননী আমারে একটু বুদ্ধি দাও মা -- প্রাণ খুলে শ্বাস নেন নূরতাজ মন্ডল। যাক বলাই সাহা্রা তাহলে মিথ্যে বলেনি কাল মাঝরাতে। ছেলেটা সত্যি নিরীহ। বলাই সাহার বউ কি যেন বলেছিল, গোপাল। তা গোপালই বটে ! একটু বেশি ভালো মানুষ। সমাজের লোকেরা যাদের বোকা বলে তেমন সোজা সরল মানুষ। কৃস্টালের পেপার ওয়েটটা টেবিলের কাঁচের উপর ঘুরাতে ঘুরাতে নূরতাজ মন্ডল উপলব্ধি করেন, এই ছেলেটার ভালোমানুষি মনে এবার পাপ ঢুকে পড়বে। জেল বাস হয়ত তিনি রক্ষা করতে পারবেন। কিন্তু ছেলেটা এবার সাম্প্রদায়িক হয়ে যাবে। ওর মনে মানুষকে সহজে বিশ্বাস করার সরলতা মুছে গিয়ে অন্যদের মত জেঁকে বসবে আল্লাহ, ঈশ্বর, ভগবানকে ভাগ করে নেবার শিক্ষা। জন্ম নিবে ঘৃণা । মানুষকে ধর্ম দিয়ে ভাগ করতে শিখে যাবে ছেলেটা। এক হাতের চেটো দিয়ে অন্য হাত মুছে নিয়ে তিনি মনে মনে হাসেন, এই তো এই জগতের বাস্তব শিক্ষা। ছেলেটার বুদ্ধির কমতি ছিল। এবার তা পূর্ণ হলো ... ...
তোমায় আমি লিখতে পারছি না, বাজার দোকান রান্নাবান্না বাসনকোসনের জঙ্গলে যেন এক বাঘ, বোঁটকা সোঁদা গন্ধের ভিতর এক নিভৃত অঞ্চল যাতে আমি শুয়ে শুয়ে বিছানায় নক্ষত্র শুঁকি, খেয়ে ফেলি তার মিষ্টি আর সুস্বাদ, টক সব গন্ধগুলো পিতলের পাত্রে রাখি,কল্পে যাবার কল্পিত... ... ...
এই ফুটপাথেই থাকেন সেরিনা বিবি পুরকাইত (৩৩)। লক্ষ্ণীকান্তপুর লাইনে গ্রাম। বাসন মাজা, ঘর মোছা, কাচাকাচির কাজ করেন আশেপাশের তিনটে বাড়িতে। তিন সন্তানের জননী। বাচ্চারা কর্পোরেশনের স্কুলে পড়ে। স্বামী ভ্যান চালান। কথা শুরু হয় তাঁর সঙ্গে। লকডাউনে কী করেছেন? “লকডাউনের সময় বাড়ি চলে গেছিলাম। বসেই ছিলাম বাড়িতে। কিন্তু খাবার জোটাতে পারছিলাম না। খুব কষ্ট হচ্ছিল। গ্রামের কিছু লোকের দানে চলছিল। এভাবে কী চলে? তাই শহরে চলে এলাম।” এসেই কাজ পেলেন? ... ...