মাদের দেশে ‘দর্শন’ বলে আলাদা কোনো বিষয় কখনও ছিল কি? বেদে, উপনিষদে যা আছে বা মহর্ষি কপিল, কণাদ, জৈমিনি, ব্যাস, মধ্বাচার্য, রামানুজম, শঙ্করাচার্য ইত্যাদিরা যা বলে বা লিখে গিয়েছিলেন তৎকালে তা ‘দর্শন’ নামে বিবেচিত হতো কি? সম্ভবত না। প্রকৃতপক্ষে বৃহৎ ও অপার বৈচিত্র্যময় এই জগতের দিকে তাকিয়ে যুগপৎ বিস্মিত ও কৌতূহলী হয়েছিলেন অগাধসলিলা সরস্বতী নদীর তীরের আমাদের সুপ্রাচীন পূর্বপুরুষেরা। তারই ফল স্বরূপ যেগুলি বিবেচিত হয়েছে সাংখ্য, বৈশেষিক, পূর্বমীমাংসা, উত্তরমীমাংসা, দ্বৈতবাদ, অদ্বৈতবাদ, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ ইত্যাদি হিসেবে, এগুলির ভিতর দিয়ে তাঁরা যা বলতে চেয়েছিলেন নিজেদের জীবন-চর্যায় তাই তাঁরা প্রতিভাত করে গিয়েছিলেন, যার অন্ত বোধিতে বা মুক্তিতে। এমনকি বস্তুবাদী চার্বাকেরাও চর্যায় ছিলেন বস্তুবাদী দর্শনানুগ। অর্থাৎ, আদিতে দর্শন আসলে জীবন-চর্যার নামান্তর ছিল ও পরিশেষে জীবনের অন্তিম লক্ষের সন্ধানী। এসব দূর অতীত বা সুপ্রাচীন কালের কথা। স্বতন্ত্র একটি বিষয় হিসেবে ‘দর্শন’-এর আত্মপ্রকাশ ঘটেছে বহু পরে মূলত পাশ্চাত্যের হাত ধরে। আমাদের নিকটবর্তী সময়ে বিংশ শতাব্দীর দর্শন বলে যা পরিচিত বলা বাহুল্য তা জোরালো ভাবে পাশ্চাত্যেরই অবদান। এর সূত্রপাত মোটামুটি ভাবে George Edward Moore-র আধুনিক বাস্তববাদের হাত ধরে, প্রসারিত হাল আমলের Slavoj Zizek পর্যন্ত। ... ...
রাস্তায় এক অদৃষ্টপুর্ব দৃশ্য দেখে সে বিস্ময়ে স্থাণু হয়ে গেল। “গ্রে এ এ এ ট পামেলা সারকাস,গ্রে এ এ এ ট পামেলা সারকাস-----” রিকশায় বসে মুখে মাইক ধরে খুব হাসি হাসি মুখে এইরকম বলতে বলতে সিড়িঙ্গে রোগা কিন্তু এই মোটা গোঁপওলা একটা কাকু যাচ্ছে। তার লাল নীল বেগুনী সবুজ হলুদ খয়েরী জামাটা দেখে কুমু মোহিত না হয়ে পারল না,হ্যাঁ ,জামা হবে এইরকম। তার বাবা কাকাদের সাদা নীল ছাই ইত্যাদি বিচ্ছিরি রঙের ওগুলো আবার জামা নাকি? কাকুর পাশে জায়গা থাকলেও দুটো প্যাংলা মত ছেলে রিকশার পেছনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চলেছে,কাকুর জামার ঘাড়ের কাছে একতাড়া পাতলা কাগজ গোঁজা,সেই কাগজ থেকে একটা দুটো টেনে টেনে নিচ্ছে আর রাস্তার লোকদের হাতে দিচ্ছে । ... ...
সুদীপ্তরা খুশিঝোরা থেকে ফিরে যাওয়ার মাসখানেক পর একটা পত্রিকা এসে পৌঁছোয় জয়ির কাছে, পোস্ট অফিস মারফত। শিল্প-সাহিত্য-সমাজ বিষয়ক লিট্ল্ ম্যাগাজিন ঝলক, জয়ি কখনো সখনো এক-আধ কপি দেখে থাকতেও পারে, মনে করতে পারে না। এই সংখ্যা সুদীপ্ত রায়ের একটা প্রবন্ধ গোছের লেখা প্রকাশ করেছে, নাম মানুষের বর্জ্য গাছেদের ভোজ্য। চিত্রশিল্পী জয়মালিকা সেন পুরুলিয়ার এক প্রান্তে আদিবাসীদের শিল্প-সংস্কৃতি প্রসারের যে বিপুল কাজ করছেন তাঁর খুশিঝোরা সমিতির মাধ্যমে, তা যে শুধুমাত্র একজন ব্যতিক্রমী সৃষ্টিশীল মানুষের পক্ষেই সম্ভব এ কথা দৃঢ়তার সাথে বলেছে সুদীপ্ত। ... ...
চাঁদপানা মেয়েটি আজ হাওয়াইয়ান ব্রিজ ও ল্যাভেন্ডারের মিশ্র সুবাস পরে এসেছে। এই সুবাস তৈরি হয়েছে বহুদূরের এক সমুদ্রশহরে ... ...
খালের প্রসঙ্গ ধরে কলকাতার ইতিহাসে প্রবেশ করার গুস্তাখি মাফ; আমি নিরুপায়। যা পড়েছি, তাই বলছি: সতেরো শতকের মাঝামাঝি সময়ে যখন মারাঠা বর্গিরা বারবার বাংলায় হানা দিচ্ছে, গঙ্গাপ্রান্তের এই শহরকে বাঁচানোর জন্য শহরের মাঝবরাবর একটা বিরাট খাল কাটা হয় (যাকে বুজিয়ে দিয়ে তৈরি হয়েছে আজকের সার্কুলার রোড)। বৃথাই খাল-কাটা! বর্গি এল না কলকাতা ঘুরতে, উল্টে সেই পরাক্রমশালী খাল ডিঙিয়ে সিরাজের সৈন্যদল হাহা করে এসে শহরের সবচেয়ে পুরোনো নাট্যশালা 'ওল্ড প্লে হাউজ' ভাঙচুর করে চলে গেল ১৭৫৬ নাগাদ। এতকিছুর পর বোধ হয় অনেকের মনে হয়েছিল, এতবড় একটা খাল কাটলাম, একেবারে কোনোই কাজে আসবে না? সে থেকেই অনুবর্তী নবজাগরণ -- 'খাল-কাটা' টু ‘ক্যালকাটা’। ... ...
আমি ওর প্রতি একটু বেশিই দুর্বল। আমার কাজ শুরুর সময় থেকে জানি। ১৯ বছরের মেয়ে। তিনটি বাচ্চা। বয়স তিন বছর, দু বছর, আট মাস। তৃতীয় বাচ্চা হবার আগের দিনও আমি ওকে রাস্তায় দেখেছি দুহাতে দু’ গ্যালন দুধের বোতল, সঙ্গে আরো কিছু বড় বড় ব্যাগ। এর মধ্যে ডিমের বাক্সও উঁকি দিচ্ছে। সঙ্গে দুই বাচ্চা। পেটে আরেকজন, যে আগামিকাল পৃথিবীর আলো দেখবে (পরে জেনেছি)। আমি ওকে দেখলাম ওর বাড়ি থেকে দেড় মাইল দূরে। ... ...
কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসার ফলে আদিবাসীদের সমস্যার কি কোনও সুরাহা হয়েছে? নতুন সরকার ২০১২ সালের একটি হত্যাকাণ্ডের রিপোর্ট প্রকাশ করে যেটি আগের বিব্জেপি চেপে রেখেছিল। ঐ বছর ২৮ জুন বিজাপুর জেলায় সারকেগুড়া নামে একটি জায়গায় বাহিনীর গুলিতে সতেরো জন মানুষের মৃত্যু হয়। বাহিনী তাঁদের বিজ্ঞপ্তিতে বলে যে মৃতেরা সবাই মাওবাদী ছিলেন। গ্রামবাসীরা এবং সুধা ভরদ্বাজের (যিনি নিজে ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ভুয়ো অভিযোগে কারাবন্দি) নেতৃত্বে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র বিরোধিতা করেন এবং দাবি করেন যে মৃতরা কেউ মাওবাদী ছিলেন না। চাপে পড়ে সরকার অবসরপ্রাপ্ত বিচারক বিজয় কুমার আগরওয়ালের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে। প্রায় সাত বছর বাদে কমিশন তাঁরা রিপোর্ট পেশ করেন এবং প্রমাণিত হয় যে মৃতরা কেউ মাওবাদী ছিলেন না। কংগ্রেস সরকার যদিও এই রিপোর্ট সর্বসমক্ষে আনে কিন্তু যে সতেরো জন নিহত হন এবং দশ জন আহত হন তাঁদের কোনও ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে। একই ভাবে যারা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ছিল তাদেরও হয়নি। ... ...
সাইকেল আর বই, এই তাঁর জগৎ। রাজাবাজারের বাড়িতে বইয়ের ভিড়ে বাকি সব কিছুই অদৃশ্য বলা চলে। সে বাড়িতে প্রথম যে দিন গেলাম, বিচিত্র অভিজ্ঞতা। রূপদার গলা শুনতে পাচ্ছি, মানুষটাকে দেখতে পাচ্ছি না। অনেক পরে নজর করি, দুটি বইয়ের তাকের ফাঁকে এক চিলতে জায়গায় গা এলিয়ে রূপদা। কথায় কথায় বললেন, দেশের বাড়ি থেকে সে দিনই সকালে ফিরেছেন। জানতাম, দেশের বাড়ি ভগবানপুর। অনুমান করতে পারছিলাম, রূপদা কীভাবে গিয়ে থাকতে পারেন। তবু, খানিক মজা করার জন্যই বললাম, এই গরমের মধ্যেও কি নন-এসি বাসে…। বাক্যটি শেষ করার ফুরসত পেলাম না। রূপদা যেন রীতিমতো অপমানিত বোধ করলেন। পাল্টা প্রশ্ন, ‘কেন, বাস কেন? সাইকেল থাকতে বাস কেন?’ মার্জনা চেয়ে বললাম, সব ঠিক আছে। কিন্তু বম্বে রোডে ঝড়ের গতিতে চলা গাড়ির মধ্যে সাইকেলে চলাফেরা ঝুঁকি হয়ে যাচ্ছে না! রূপদা কথাটা কানেই তুললেন না। ... ...
এনভিরনমেন্টাল রিফিউজি বা জলবায়ু শরণার্থী শব্দ দুটি আজকাল খুব চালু। পরিবেশের বিপন্নতার কারণে ঘর-বাড়ি, বসত এলাকা ছাড়তে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে। সুন্দরবনের এমন কত মানুষ দেশের নানাপ্রান্তে জীবন-জীবিকার লড়াই চালাচ্ছেন কেউ খোঁজ রাখেন না। আবার পরিবেশ রক্ষার আয়োজনেও জীবন-জীবিকা বিপন্ন বহু মানুষের। দূষণ ছড়ায় বলেই কলকাতার পূর্বতম প্রান্তে গড়ে উঠেছিল ট্যানারি শিল্প। ক্রমে শহরটা পূর্ব দিকে বাড়ল। বর্ধিত শহরের মানচিত্রে ট্যানারি পড়ল শহরের প্রায় মাঝখানে। ফতোয়া জারি হল, দূর হটো। বানতলায় সরে গেল চামড়ার শতাব্দী প্রাচীন কারবার। নতুন জায়গায় কাজ জুটল না দুই-তৃতীয়াংশেরই। কর্মহীন এই শ্রমিকেরা কেন পরিবেশ-শরণার্থী বলে গন্য হবেন না? পরিবেশ রক্ষা ঘিরে উদীয়মান এই শ্রেণি সংঘাত নিয়ে আমরা কী ভাবছি? ... ...
এটা রিসোত্তোর রেসিপির বা ইতিহাস লেখার রচনা নয়, তাই সেই সব বিষয়ে ঢুকছি না। তবে যেটা বলার, রান্নার টেকনিক ছাড়াও আর যেটা প্রধান পার্থক্য করে দেয় রিসোত্তো কোয়ালিটির তা হল যে চাল ব্যবহার করা হয় তা। রিসোত্তোর ছবি দেখেই ‘আমাদের গোবিন্দভোগ চাল দিয়ে এই জিনিস আরো ভালো হত’ এমন হল্লা মাচাবেন না প্লিজ। সব জিনিসের একটা স্থান-কাল-পাত্র আছে! অবশ্য আপনি নিজের নিজের সিগনেচার ডিস “রিসোত্তো উইথ এ গোবিন্দভোগ টুইস্ট” বানাতে চাইলে কিছু বলার নেই! যদি পারফেকশন আনতে পারেন, কে জানে হয়ত পায়েস ছেড়ে গোবিন্দভোগ গ্লোবাল স্কেলে পৌঁছে যাবে পাতে পাতে! এখানে জাস্ট এটুকু বলে রাখি এই মুহূর্তে রিসোত্তো বানাবার সবচেয়ে জনপ্রিয় চালু চাল তিনটি – কারনারোলি, আরবোরিও এবং ভিয়ালোনে ন্যানো। আর একটা ছোট্ট টিপস -এই চাল দিয়ে রিসোত্তো রান্নার আগে প্লিজ চাল ধোবেন না বারে বারে! একবারে না ধুলেই ভালো হয়। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এ কিস্তিতে এমপাওয়াপাওয়া সমতল-অঞ্চল দিয়ে চলার কথা। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
কেবারে আধুনিক উপন্যাসের লক্ষণে গল্পের সঙ্গে গাঁথা আছে রান্নাবাড়ার খুঁটিনাটি, রাজনৈতিক খবরাখবর। পুরুষের চোখে দেখা ইতিহাসের ভাঁজ খুলে তার ভেতর থেকে মেয়েদের ইতিহাসের টুকরোগুলো সযত্নে আলাদা করে দেখা। পড়লেন জয়া মিত্র ... ...
রোজরোজ এইরকম সব কথা হয় ওর সাথে। কিন্তু আলাপ পুরো হচ্ছে না। রোজই দেখি লাল টিনের বোর্ডের ওপরে সাদা দিয়ে লিখে রেখেছে "নো সুইমিং", ইংরিজি আর হিব্রু দু ভাষাতেই। এ কী অনাছিস্টি কথা! সমুদ্রে নামবো না? বালির ওপরে বসে ঢেউয়ের শব্দের সব কথা বুঝতে পারি না। আমার শ্রবণেন্দ্রিয় মাছের মত, সারা শরীর জুড়ে। স্পর্শেন্দ্রিয় পার্শ্বরেখা মনে আছে? ভেতরে বড্ড ছটফটানি জমা হয়। "কেন মানা? মানা কেন জলে নামা?" জলের কোয়ালিটি কন্ট্রোলের ওপর খুব কড়াকড়ি ওখানে। নিয়মিত দূষণের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা হয়। তাতে পাশ না হলে বিজ্ঞপ্তি উঠবে না! থাকো এখন বসে হাত পা গুটিয়ে! ... ...
খবর রাখে জয়ি। একটা একটা কোরে সব ব্যাপারে মার খেতে খেতে বাঙালিদের এখন প্রায়-শেষ আইকন একজন ক্রিকেট প্লেয়ার, যে ক্রিকেটে বাঙালিদের উৎসাহ ছিলো বরাবরই, কিন্তু তেমন কিছু দক্ষতা ছিলো না কোনদিনই। সেই ক্রিকেটেই এই ছেলেটির অভ্যুদয় ও উত্থান সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বাঙালিদের আত্মসম্মান ফিরে পাবার জায়গা কোরে দিয়েছে খানিকটা। ক্রিকেট থেকে ধীরে ধীরে অবসর নিতে নিতে এই ছেলেটিই এখন একটা বাংলা টিভি চ্যানেলে কুইজ-প্রোগ্রাম করছে নিয়মিত। সারা পৃথিবীর বাঙালি সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে তার টিভি সেটের সামনে বসে যায় এর প্রোগ্রাম দেখবার জন্যে। কলকাতায় থাকলে জয়িও। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এ অধ্যায়ে ন্যামবোয়া নামের জনপদ পার করে বিহওয়ানা পৌঁছনোর কাহিনি। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
আফ্রিকার একটি ছোট্ট দেশ উগান্ডার উদাহরণ দিয়ে লেখা শুরু করা যাক। কোটি কোটি উগান্ডাবাসী সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, কারণ তাঁদের অনেকেরই ডিজিটাল পরিচয়পত্র নেই। উগান্ডা সরকারের আইন অনুযায়ী এই ডিজিটাল পরিচয়পত্র জাতীয় সুরক্ষার জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, কিন্তু সেই ব্যবস্থাকে যখন সরকারি পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, তখন দেখা যাচ্ছে তা থেকে বহু মানুষ বাদ পড়ছেন। ... ...
নিনি দৌড়াচ্ছে, নিনি দৌড়াচ্ছে, খুব দৌড়াচ্ছে স্কুলের মাঠে। সামনেই স্পোর্ট্স। ওর খুব ইচ্ছে রিলে রেসে নাম দেয়, খুব একটা ভাল দৌড়াতে পারে না বলে বাকীরা ওকে রাখতে চাইছে না। তা দিদিমনি বলেছেন ও যদি সবিতা আর রিমার সাথে সমানে সমানে দৌড়াতে পারে তবেই ওকে নাম দিতে দেবেন। ... ...
সোনা সুগন্ধি জড়িবুটি রত্নসম্ভার! শেবার রানি চলেছে জেরুজালেম। যেতে যেতে রানি কী করছে? মনেমনে মহড়া দিচ্ছে প্রশ্নবাণগুলোকে নেড়েচেড়ে ধার দিয়ে রাখছে মনের সিন্দুকে নিজেকে তৈরি করতে করতে পথ চলছে রানি বিপুলকে যাচাই করতে গেলে তার সমকক্ষ হতে হবে সমকক্ষ না হলে পরখ হবে কেমন করে? তা না হলে সেটা হয়ে উঠবে অক্ষমের আর্তনাদ! রানি তো সেই দলে পড়ে না সেই কোন কাল থেকে হেঁয়ালির মধ্যে জ্ঞান আর মেধা যাচাই এর খেলা শুরু হয়েছে উদ্ভট শ্লোক! তার ভেতর থেকে অর্থ খুঁজে বের করে আনো রানি নিঃসীম মরুভূমির বুকে একাকী চলতে চলতে নিজেকে তৈরি করছে এক মনে আর ভাবছে রাজা তার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন তো? রাজা তার হাত থেকে উপহার নেবেন তো?মরুজাহাজের আঁকাবাঁকা এক দীর্ঘ সারি মরুভূমি ভেঙে ভেঙে চলেছে তারা নিজেকেও কি ভেঙে ভেঙে চলেছে রানি? এই যাত্রা পথে কত অনিশ্চিয়তা ও বিপদ মাথায় নিয়ে চলেছে সে! প্রতিমুহূর্তেই নিজেকে নানাভাবে নতুনরূপে দেখছে সে! বন্ধু দেশের পাশ দিয়ে, শত্রু দেশের সীমানা দিয়ে আগে থেকেই অনেক প্রস্তুতি নিতে হয় সশস্ত্র কড়া নজরদারি। ... ...
জেরুসালেম থেকে ছড়িয়ে পড়া ইহুদি ইউরোপে এলেন স্পেন পর্তুগালে (সেফারদি) এবং রাইন নদী ধরে আরেক দল (আশকেনাজি) গেলেন উত্তরে। নাগরিক অধিকার বস্তুটি মেলে না। পশ্চিম ইউরোপের নানা দেশের দরজা তাঁদের জন্য বন্ধ। এমন সময়ে পোলিশ রাজা পুণ্যবান বলেস্লাভ আমন্ত্রণ জানালেন - ইহুদিদের দিলেন ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার, আপন বিচার ব্যবস্থা, জোর করে ধর্মান্তরিত করার বিরুদ্ধে আইনি সমর্থন (কালিস ঘোষণা ১২৬৪)। পরবর্তী চারশ বছরের পোলিশ লিথুয়ানিয়ান রাজত্বে সকল শাসক ইহুদিদের সে অধিকার সসম্মানে রক্ষা করেছেন। ১৫শ শতকে স্পেনে যখন রাজা ফারদিনান্দ ও রানি ইসাবেলার সাদর উৎসাহে কলম্বাসের কল্পিত ভারত আবিষ্কার আর তার সঙ্গে ইহুদি ধর্মান্তর, সংহার ও বিদায় উৎসব চলছে, নরওয়ে সুইডেনের মতো আলোকিত দেশ গুলি অবধি তাদের প্রবেশাধিকার দেয় নি। পোল্যান্ড লিথুয়ানিয়া তাদের স্বাগত জানিয়েছে। স্বাধীনতা ছিল সীমিত, জীবন ধারণ অত্যন্ত কঠিন কিন্তু এই প্রথম ইউরোপ তাদের খানিকটা মানুষের মর্যাদা দিলো। ... ...
স্বৈরাচারকে একটা নান্দনিক জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন সঞ্জয়। সেই ব্যাটনই হাতে তুলে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। হিন্দু রাষ্ট্রকে নাগরিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ গড়ে তোলার জন্য যে নগর পরিকল্পনা তিনি করেছেন তার কাছে সঞ্জয় নেহাতই বামন। সঞ্জয় বড়জোর চাইতেন শহরটাকে নতুন করে দেওয়াল দিয়ে ঘিরতে। আর মোদির উচ্চাকাঙ্ক্ষা গোটা শহরটাকে নতুন করে গড়ার। যখন স্বাস্থ্য পরিষেবা না পেয়ে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন তখন মোদির ধ্যান-জ্ঞান সেন্ট্রাল প্রোজেক্ট। শোনা যাচ্ছে, এমন ভাবেই এই সেন্ট্রাল ভিস্তা তৈরি করা হবে যাতে রাষ্ট্রপতি ভবন সংসদ ভবন অন্যান্য প্রশাসনিক দফতরগুলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকেই দেখা যায়। এর থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যদি সুযোগ থাকত তাহলে গোটা দেশটাই নতুন করে গড়তে প্রধানমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই আমরা দেখে ফেলেছি বেনারস ঘাটের 'সৌন্দর্যায়ন' বা আমেদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়ামের নব নামকরণ। এগুলি সেই বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশবিশেষ। ... ...