মালয়েশিয়ার সমুদ্র তীরবর্তী সব শহরেরই সমুদ্রের ধারে পেয়ে যাবেন আপনি স্ট্রিট-ফুড বা হকার-ফুড, যা সত্যিকারের প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে সন্ধ্যে নামার পর। প্রায় সারি দিয়ে বিচের ধার ঘেঁসে আপনি অসংখ্য ফুড-স্টল পেয়ে যাবেন। অনেকে লাইভ বারবিকিউ করছে দেখতে পাবেন। খুবই সিম্পল ব্যাপার – সাধারণ টেবিল একদম সার দিয়ে বসানো, তাতে প্লাস্টিকের টেবিল ক্লথ দেওয়া। যাতে তাড়াতাড়ি টেবিলের টার্ন-ওভার হয় – আপনার খাওয়া শেষ হল, টেবিল ক্লথ পাল্টাবার কোন চাপ নেই। কেউ এসে প্লেট উঠিয়ে নিয়ে ঝটপট করে মুছে দিল টেবিল – আপনি বসে পড়লেন। প্লেট-ও খুব সিম্পল। আপনাকে একটা প্লেট দিয়ে যাবে – বেশির ভাগ সময়েই এগুলো প্লাস্টিকের – আর সাথে দেবে ন্যাপকিনে জড়ানো একটা চামচ এবং কাঁটাচামচ। ... ...
করোনা অতিমারীর আতঙ্কের মধ্যেই আরেকটা পুজো এসে গেল। বিগত পুজোয় আমরা দেখতে পেয়েছি লকডাউনের আঘাত কাটিয়ে সাধারণ পেশাজীবী মানুষের উঠে দাঁড়ানোর অসামান্য উদ্যম। এইবারেও পুজোর দিকে তাকিয়ে বসে আছেন অজস্র পেশার মানুষ, দুর্গা এলে যাঁদের ঘরে লক্ষ্মী আসবে। আমরা জানতে চাই, প্রকাশ করতে চাই সেই সকল পেশার কথা, কারিগর ও ব্যবসায়ীদের কথা, যাঁদের কর্মযজ্ঞে প্রাণ পায় আমাদের উৎসব। আর তার সাথে সেই উৎসবের আলো ছড়িয়ে দিতে চাই তাদের কাছেও, যাদের পুজো কাটবে নির্জন পরবাসে অথবা ভিড়ের থেকে বহুদূর নিভৃতবাসে। পুজোর গন্ধমাখা যা কিছু রাঙিয়ে দিতে পারে আমাদের এই দিনগুলো, হোক সে পুজোর গান, পূজাবার্ষিকী, পুজোর রিলিজ সিনেমা কি পুজোর নাটক। এমন সবকিছু, যার উপলক্ষ পুজো। এমন সবকিছু, যার গায়ে পুজোর গন্ধ মাখা। ৯ তারিখের মধ্যে [email protected]এ পাঠিয়ে দিন আপনার প্রবন্ধ- থিমঃ সব উৎসবেরই জন্যে। ... ...
১৪ কোটি রেশনের ব্যাগে তাঁর ছবি ছাপা হচ্ছে, ৫ কোটি পোস্টকার্ডে লেখা হচ্ছে ‘ধন্যবাদ’। তারপর দেশের নানান প্রান্তের বিভিন্ন বুথের অন্তর্গত পোস্ট অফিস থেকে সেই পোস্টকার্ড ঠিক সময়মত যাতে তাঁর কাছে পৌঁছয়, তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে, তাঁর দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে। দেশের ৭১টি গঙ্গা-সংলগ্ন ঘাট পরিষ্কারের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে, কারণ তিনি ৭১ বছরে পদার্পণ করবেন। তিনি যে সে মানুষ নন, তিনি আমাদের প্রধান সেবক নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি। ... ...
তাদেরকে সাদাদের কামরা থেকে নাবিয়ে দিল না কেউ। টিকেট দেখতে এসে লালমুখো গুঁফো লোকটা অনেকক্ষণ চোখ সরু করে সবার চেহারা জরিপ করল। এরা নিজেদের জান পেটের মধ্যে সিঁধিয়ে বসে ছিল। ভাবটা যেন কিছুই হয়নি, কিন্তু বুক গুড়গুড় করছে। শেষ অবধি লোকটা জিগেস করল, হিন্দু? চেকার আসার আগেই পাঁচকড়ি চোখ বুজে হরিনামে ডুবে গেছিল। মোকসাদ মাথা নেড়ে সায় দিল। ফ্রম ক্যালকাট্টা। আর তুমি? লালমুখোর নজর ইরুবার দিকে। ইরুবা দাড়িতে হাত বুলিয়ে দাঁত বের করে বলল, হিন্দু ফ্রম কালকাত্তা। সে লোক ভুরু কুঁচকে দাঁড়িয়ে রইল। কি নাম তোমার? ইরুবা এত কিছু ভেবে রাখেনি। বলল, ইরুবা। কোথায় যাচ্ছো? নিউ অরলিন। সে লোক এবার ইরুবার কাঁধে এক থাবা মেরেছে। কথা বলছো যেন মিসিসিপির নিগার, আর ভেক ধরেছো হিন্দুর? মুহূর্তে ইরুবা দিল এক লাফ, যেন জলজ্যান্ত হনুমান .... ... ...
১৭৯৯ সালের ১৯ জুলাই মিশরের রাশিদ গ্রামে পিয়ের বুশা নামক এক ফরাসি মাটিতে পোঁতা একটি শিলালিপি উদ্ধার করেন। এমনধারা পাথরের ছড়াছড়ি মিশরে। কিন্তু পিয়ের লক্ষ করলেন এখানে পাশা পাশি তিন স্তরে কোন ভাষ্য লিখিত হয়েছে। হয়ত তিনটে আলাদা ভাষায়। তার একটি গ্রিক। হঠাৎ আলোর ঝলকানি। তবু সময় লাগে। দুই দশক বাদে জন ফ্রানসোয়া শামপিলিওঁ হায়ারোগ্লিফিকে লুকনো মিশর রহস্যের সমাধান করলেন। ১৮২১। নাপলেওঁ তখন সেন্ট হেলেনায় বন্দি। তিনি কি সে খবর পেয়েছিলেন? ... ...
আজ এই হেমন্তের সন্ধ্যায় হাসপাতালের সামনের ফুটপাথে সেই কুয়াশা তাকে আবার ঘিরে ধরেছিল- যে কুয়াশা তাকে এই ক'বছরে বারে বারে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে তার শৈশবে আর সে কখনও মা, কখনও বাবা , কখ্নও জেম্মার সঙ্গে কথা বলেছে ফোনে। আজ সে' উপায় ছিল না- তার শৈশবের শেষ যোগসূত্র এই হাসপাতালের চারতলার ঘরে নাকে মুখে নল নিয়ে শুয়ে ছিল তখন। হাসপাতালের কাচ দরজা খুলছিল, বন্ধ হচ্ছিল। নীল আলো জ্বালিয়ে অ্যাম্বুলেন্স এসে থামছিল পরপর। হিম নামছিল ফুটপাথে। সেই হিমের সঙ্গে হাসপাতালের চারতলা থেকে কুয়াশার মত মৃত্যুর ছায়া এসে মিশছিল যেন। ... ...
গ্রামের নাম এদেসমেত্তা, জেলা বিজাপুর, ছত্তিসগড়। জেলাশহর থেকে ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত এই গ্রামে যাওয়ার কোনও রাস্তা নেই। ১৭-১৮ মে, ২০১৩র রাতে গ্রামের ৩০-৪০ জন মানুষ বীজ পান্ডুম উৎসব পালন করার জন্য মিলিত হয়েছে। বীজ পান্ডুম হচ্ছে ফসলের বীজের মাধ্যমে নতুন জীবনের আগমনকে উদযাপিত করা। প্রায় হাজার জনের নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের ঘিরে ধরে, নির্বিচারে গুলি চালায়; ৮ জন নিহত হন, যার মধ্যে ৪ জন নাবালক। মাওবাদীদের মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কোবরা ইউনিট উল্লসিত, তাঁরা উগ্রপন্থীদের একটি দলকে নিকেশ করে দিয়েছে। এলাকার মানুষ মানতে নারাজ, তাঁরা বলেন যে এঁরা সবাই ছিলেন নিরীহ গ্রামবাসী, কেউ মাওবাদী নন। তুমুল হৈচৈ হয়। তখন রাজ্যে রমন সিংয়ের বিজেপি সরকার যাদের প্রবল দমন-পীড়নে আদিবাসীরা আতঙ্কগ্রস্ত। ঘটনাটি নিয়ে এতো সাড়া পড়ে যায় যে সেই সরকারও বাধ্য হয় বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে। ... ...
লম্বা লম্বা শিক লাগানো পেল্লায় তার কপাট। সেই শিক ধরে ভিতরে চোখ রাখল ফায়জল। সঙ্গে সঙ্গে যেন আলিবাবার গুহার মত এক আজব দুনিয়া চিচিং ফাঁক হয়ে চোখের সামনে হাজির। কি বনবন করে ঘুরছে সবাই। সঙ্গে গান করছে কেউ মিঠে সুরে। ছোট-বড়, রোগা-মোটা, বাচ্চা-বুড়ো সবাই চরকি-ঘোরান ঘুরতে ঘুরতে খলখল করে হাসছে। জীবনটা এত মজার, এসব না দেখলে বোঝাই যায় না। পায়ে পায়ে ভেতরে ঢুকে গেছিল ফায়জল, নিজেকে গুটিয়ে কারো সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি না করে। ভিতরে কত রকমের বাতি ঝুলছে। চলতে চলতে এক আয়নার সামনে গিয়ে তার চোখ কপালে। হুবহু তার মত একটা লোক, শুধু কেউ যেন হামান দিস্তা দিয়ে এমন পিষে দিয়েছে লম্বায় এক হাত আর চওড়ায় তিন হাত। পোশাক দেখে শুধু বুঝতে পারল, যে এটা তার নিজের সুরত। এমন সেই সিসার কেরামতি। এমনি অনেক সিসা দিয়ে একটা দেওয়াল মুড়ে রেখেছে। কোনখানে ফায়জল বেঁটে, তো কোথাও হিলহিলে লম্বা, আর এক জায়গায় সে হয়ে গেল বেলুনের মত গোল। যেন এখুনি হাওয়া বেলুন হয়ে উড়ে যাবে। আলেফ ডেকে না নিয়ে এলে সেখানেই বুঝি পুরো দিনমান কাটিয়ে দিত ফায়জল। ... ...
আফগানিস্তানে জমানা বদলের পর থেকেই নানা দেশ নানাভাবে তাদের লাভক্ষতির হিসেব নিকেশ করছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ভাবছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও সদ্য সমাপ্ত সংসদ অধিবেশনের সমস্ত তিক্ততাকে পাশে সরিয়ে রেখে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছে। বিরোধীরাও তাতে সমস্বরে সাড়া দিয়েছেন। বৈঠক থেকে আফগান-নীতি প্রসঙ্গে শাসক বিরোধী ঐক্যমত-ও তৈরি হয়েছে। বোঝা কঠিন নয় আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে সবারই উদ্বেগ আছে এবং এই ক্ষেত্রে অন্তত শাসক বিরোধী রাষ্ট্র স্বার্থে অনেকটা কাছাকাছি থাকতে চাইছেন। ... ...
মাটি ভাগ হয়, দেশ ভাগ হয়, মানুষ, পাড়াপড়শি, আত্মীয়স্বজন, পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জন্ম জন্মান্তর ধরে গড়ে ওঠা গ্রাম, ঝিল, পুকুর, বনবাদাড়, ঘরবাড়ি বিদীর্ণ করে দেয় দিল্লির শাসকের কাঁচি। দীর্ঘদিনের প্রতিবেশী আসিফ সামিনার পরিবার এপার-ওপার হয়ে যায়, তাদের সদ্য প্রস্ফুটিত প্রেমের মাঝে রাষ্ট্র খুঁটি পুঁতে দেয়। প্রবল ঝুঁকি নিয়ে তারা খণ্ডিত হয়ে যাওয়া নাজির বিলের কাছে দেখা করে, সুখী দাম্পত্যের স্বপ্ন দেখে, তারপর একদিন সীমান্তরক্ষীর গুলিতে দুই উজ্জ্বল তরুণ তরুণী পাচারকারীর লাশ হয়ে যায় .... সম্পাদক বিমল চক্রর্তীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, কারণ ত্রিপুরার দেশভাগের গল্প একসাথে গ্রন্থিত হয়েছে এরকমটা অন্তত এই প্রতিবেদকের আগে কখনো নজরে আসেনি। সেদিক থেকে এই সংকলনটি অনন্য ... ... ...
উৎসবের দেশ জাপানের পাঁচটি ঋতু-কেন্দ্রিক উৎসবের অন্যতম দুটি হল পুতুল-কেন্দ্রিক। পুতুল উৎসবের একটি ৩রা মার্চ অনুষ্ঠিত “হিনা মাৎসুরি”। এর অন্য নাম “বালিকা-উৎসব”। অন্যটি হল ৫ই মে অনুষ্ঠেয় “তানগো-নো-সেক্কু” বা “বালক-উৎসব”। জাপানের অন্যান্য উৎসবের মত এই পুতুল উৎসব দুটিরও শুরু বহুযুগ আগেই। তবে নিঃসন্দেহেই বলা যেতে পারে যে, নানা পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের পথ পেরিয়ে বর্তমানের উৎসব অন্যরূপে প্রতীয়মান। ... ...
বিদ্যা ভারতী নিজেদের “বিশ্বের সর্ব বৃহৎ শিক্ষা সংগঠন” হিসাবে দাবী করে থাকে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে “একটা জাতীয় শিক্ষা পদ্ধতি নির্মাণ করা যেটা নারী পুরুষের একটা তরুণ প্রজন্ম গড়ে তুলবে যারা হিন্দুত্বর প্রতি দায়বদ্ধ, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং যারা প্রাণবন্ত ও শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক ভাবে পরিপূর্ণ উন্নত………” ... ...
অর্চনার একজনের ওপর বিরাট ক্রাশ ছিলো। জনৈক 'লেদা রাজা'। যে যেখানে কারুর কোনো গুণের কথা বলুক না কেন, অর্চনা হাসিতে মুখ ভরিয়ে বলতো "লেদা রাজার মত"। আমি তো কিছুতেই ভেবে পেতামনা যে কোনো রাজা 'ল্যাদা' হলে তাঁর এত ভক্ত হবার কী আছে! এদিকে যতই জিজ্ঞেস করা হোক না কেন এই 'লেদা রাজা'টি কে, অর্চনা খালি ফিক করে হেসে বলতো "আমি কী জানি?" শেষে একদিন কৃষ্ণর গল্প শুনে সে সটান বলে বসলো "এটা তো লেদা রাজার গল্প। আন্টি মোটেই জানেনা, লেদা রাজার গল্পে শুধুশুধু ভুলভাল কান্ড ঢুকিয়ে দিয়েছে!" সবাই মিলে তখন নানা প্রশ্ন, নানা মন্তব্য। কারুর রাগ হয়েছে, কেউ আন্টিকে বলে দিতে চাইছে। কিন্তু এই বিস্ফোরক মন্তব্য করে দিয়েই অর্চনা আবার সেই – ফিক, "আমি কী জানি?" মোডে চলে গেছে। ... ...
দেশভাগ বিষয়টি কোনো রাতারাতি ঘটে যাওয়া আকস্মিক ঘটনা নয়, অনেকদিন ধরেই একটু একটু করে তার প্রেক্ষিত তৈরি করা হয়েছিল – ঠিক সেইরকমই, সেই সময়ের ভারতীয় শিল্পীদের কাজে তার যে প্রতিফলন রয়েছে তাও ঠিক একদিনের ঘটনা নয়। .... আশ্চর্যের ব্যাপার হল, বাংলার নাটক, সাহিত্য, ফটোগ্রাফি এবং চলচ্চিত্রের মধ্যে দেশভাগের বিষয়টির যে জোরালো উপস্থিতি, তা কিন্তু চিত্রকরদের কাজের মধ্যে নেই। দেশ ভাগ হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ বাস্তু হারিয়ে শেষ সম্বল নিয়ে এপার বাংলায় চলে আসছে – এমন দৃশ্য আমরা সমকালীন ফোটোগ্রাফ এবং কিছু পরে নির্মিত চলচ্চিত্রে দেখতে পেলেও খুব কম শিল্পীই এই বিষয় নিয়ে সরাসরি ছবি এঁকেছেন। চিত্রকলা এমনই এক দৃশ্যভাষা, যেখানে কেবলমাত্র চোখে দেখা দৃশ্যের একটা চটজলদি ডকুমেন্টেশন করে দিলেই চলে না, শিল্পীর নিজস্ব ভাবনা, মনন এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিশ্লেষণ কাজের অঙ্গ হয়ে যায়। চলচ্চিত্রের মত ন্যারেটিভ মিডিয়াম নয় বলেই, চিত্রকলার ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং যথেষ্ট ম্যাচিওরিটি দাবি করে। ফলে চিত্রকরদের কাজে আমরা দেশভাগ যতটা পেয়েছি, তার থেকে অনেক বেশি পেয়েছি তার রাজনৈতিক এবং আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিতের অনুসন্ধান। .... ... ...
কনফারেন্সে এমন জবরদস্ত লাঞ্চ হলে, তার নেগেটিভ দিক হচ্ছে, লাঞ্চের পরের টকগুলোতে খুব কম লোক হাজির হবে। যারা হাজির হবে, তারাও অনেকে ঢুলবে! আমাকে দু’একবার কোন কোন সেশনের চেয়ারম্যান হতে হয়েছিল, তাই স্টেজ থেকে একদম সামনা-সামনি দেখি অডিয়েন্স কেমন ঢুলছে! আর যদি কোনো সরকারি কোম্পানির বড় কর্তা টক দেয়, তো রুম ভরে যাবে – সেই ভরা রুমে লোকে ঢেকুর তুলছে, কেউ নিঃশব্দে বাতকর্ম করে দিল ধরুন – মাটন রোগান জুসের ঢেকুর বা পাদের গন্ধ কি আর রুম ফ্রেশনার দিয়ে আটকানো যায়! ... ...
সূর্য দীঘল বাড়ি। যে আয়তাকার বাড়ির দুই সমান্তরাল দীর্ঘ বাহু পূব থেকে পশ্চিমে টানা। এই ধরণের বাড়িতে থাকে স্থায়ী অমঙ্গলের ছায়া। এখানে কেউ বেশিদিন টিকতে পারে না, নইলে নির্বংশ হয়। এইখানটায় এসে আমি থমকে যাই। জীবনে একটাই বাড়ি বানিয়েছিলাম – আরে সেটাও তো ছিল এক সূর্য দীঘল বাড়ি! সে বাড়িতে কতদিন ছিলাম? মাত্র দশ বছর। আমার পেছনের আরেক সূর্য দীঘল বাড়িতে দুই ছেলে মারা যাওয়ায় বাড়ি বিক্রি হয়ে যায়। কেনে আমার পরিচিত এক উদীয়মান কবি। একবছরের মধ্যে মারা যায় রক্তবমি হয়ে। তবে কী - ! ... ...
১৮৫০-এর লণ্ডন। তার একদিকে বর্ণিল সন্ধ্যার মায়াবী হাতছানি, আর একদিকে ঘিঞ্জি গলিতে আবর্জনার মধ্যে পিলসুজের তলার মানুষের লড়াই। এর-ই মধ্যে বারেবারে হাজার-হাজার মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে কলেরার দৈত্য। রোগের কারণ অজানা, মনে করা হত দূষিত বাতাস বা মায়াজমা থেকেই কলেরা ছড়ায়, যদিও মায়াজমা ঠিক কি জিনিস তা অবশ্য কেউ-ই জানতেন না। ঠিক সেই সময়েই লন্ডনের এক তরুণ ডাক্তারবাবু, জন স্নো, ঝাঁপিয়ে পড়লেন কলেরার মোকাবিলায়, দীর্ঘদিনের চেষ্টায় প্রমাণ করলেন মায়াজমা নয়, দূষিত জল-ই এই রোগের বাহক। আজকের যদুবাবুর টিউশনিতে সেই জন স্নো-র গল্প, এক মহামারির দানবের চোখে চোখ রেখে সত্যি খোঁজার রূপকথা। ... ...
বর্বর জাতিরা যুগে যুগে যে ভাগ্যের ওঠাপড়া দেখে এসেছে, এই সেগুহহা উপজাতির বিশিষ্ট ও ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠাটা আমাদের সামনে সেই ভাগ্য পরিবর্তনের একটা উদাহরণ তুলে ধরে। তিরিশ বছর আগেও সেগুহহারা দেশের একটি সংকীর্ণ অঞ্চলে বসবাস করত। জায়গাটা সাম্বারাদের ও ডোদের দেশের মাঝখানে। উসাগারা পাহাড়ের পূর্বদিকে ডোরা ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি, কিন্তু দাস-ব্যবসায়ীরা এদের জীবনে ধ্বংস ডেকে এনেছে, এদের সংগঠিত দস্যুদের হাতে তুলে দিয়েছে। দস্যুদের মধ্যে রয়েছে বিশ্বাসঘাতক মৃমারা, পালিয়ে যাওয়া দাসেরা, জাঞ্জিবারের আইনের চোখে অপরাধীরা, আসামীরা ও অপহরণকারীরা- উসাগারা থেকে সমুদ্র অবধি এলাকার জঙ্গলগুলো এই ধরণের লোকে থিকথিক করত। ... ...
রোগ থেকে আরোগ্যের এমন বৈজ্ঞানিক প্রমাণের পরাকাষ্ঠা শুনে ডাক্তার হ্যারিস মৃদু হাসলেন। বললেন, ‘আপনাদের মতো গ্রীষ্ম প্রধান দেশে শুধু নয়, স্নান সবার পক্ষেই একটি আবশ্যিক প্রাত্যহিক অনুষ্ঠান। তবে ইহুদিদের কাছে নয়! তাদের একটা ঐতিহাসিক জলাতঙ্ক আছে! আমি যদি রুগীকে স্নান করতে বলি, সে খুব চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করবে, স্নান করতে হবে কেন? আমার অসুখটা কি এতোই কঠিন?’ এ নিয়ে গল্পের শেষ নেই । কারলসবাদ (কারলোভি ভারি, আজকের চেক) সেখানে মাটি ফুঁড়ে উঠে আসে খনিজ জল। জলের দ্বারা স্বাস্থ্য – সানুস পের আকুয়াম । এস পি এ - স্পা ! ইলান গেছে জল চিকিৎসার টিকিট কাটতে । কাউন্টারের মহিলা : একটা কেন, একসঙ্গে যদি বারোটা টিকিট কাটেন, সস্তা হবে। এগারোটার দামে বারোটা পাবেন । ইলান (দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে ) :আমি কি আর বারো বছর বাঁচবো ? ... ...