গত ২৬ শে জুলাই থেকে SSKM হসপিটালের নার্সিং স্কুলের সামনে নার্সেস ইউনিটির নেতৃত্বে সারা রাজ্যের নার্সদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। এই আন্দোলনের কারণ কি? অনেকের মুখেই প্রচারিত হচ্ছে, এটা নার্সদের মাইনে বাড়ানোর দাবি। কিন্তু, এটা ভুল। আসল কারণ কি তবে? ... ...
অন্যদিকে ফ্রান্সের পুরনো ইহুদি বিদ্বেষ তার কণ্ঠ খুঁজে পেলো। কট্টর জাতীয়তাবাদী ফরাসিরা জেগে উঠলেন - ইহুদিদের জন্য ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা, ফরাসি সভ্যতা বিপন্ন । সে ক্রোধ এমনি রুদ্র রূপ নিয়েছিল যে এমিল জোলা আনাতোল ফ্রাঁসের মত মানুষের প্রাণ নিয়ে টানাটানি । একশোর বেশি জেলায় ইহুদিদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ , তাদের সম্পত্তির বিনাশ চলল -পুলিস নির্বাক দর্শক মাত্র ( হিটলারের বয়েস তখন ন বছর , গোয়েরিঙের ছয় : আইখমানের জন্মাতে আট বছর দেরি আছে )। কোন প্রমাণ ছাড়াই পুনর্বিচারে দ্রাইফুসের সাজা আরও দশ বছর বাড়ানো হল । তাঁকে জানানো হল তিনি মুক্তি পাবেন যদি অপরাধ স্বীকার করেন। পাঁচ বছর ডেভিলস আইল্যান্ডের কঠোর জীবনে ক্লান্ত দ্রাইফুস তাতেই সই করে মুক্ত হলেন ( ডাসটিন হফমান অভিনীত পাপিলন ছবিতে ডেভিলস আইল্যান্ড চিত্রায়িত হয়েছে)। সামরিক বাহিনীতে পুনর্বাসন হল দ্রাইফুসের। তিনি জার্মানির বিরুদ্ধে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। । ... ...
যদি আপনি খাবার এবং বাজার ভালোবাসেন, তাহলে এখানে ঘুরতে ঘুরতে আপনি আচ্ছন্ন হয়ে যাবেন। অনেক দোকানের সামনে দেখবেন, চাখার জন্য স্যাম্পেল রাখা আছে – ইচ্ছেমত ট্রাই করে যেতে পারেন। খুব ছোট ছোট কিছু রেস্টুরান্ট আছে, যারা দুই-একটা টেবিল বা বসার টুল নিয়ে স্পেশালিটি কিছু খাবার বিক্রি করছে। এখানে খাবার পাওয়ার জন্য খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না। ইচ্ছে হলে চট করে খেয়ে নিন – কিন্তু একটা ব্যাপার মনে রাখবেন – জাপানে খেতে খেতে হাঁটা-কে ব্যাড ম্যানারস্ হিসাবে ধরা হয়। ... ...
প্রথমদিন তিস্তা লাহিড়ি’র দিকে একঝলক তাকিয়েই মনটা ভালো হয়ে গিয়েছিল শুভশ্রী’র। ভদ্রমহিলাকে যখন দেখে সে, একেবারে অভিভূত হয়ে গিয়েছিল, এমনিই ব্যক্তিত্ব তাঁর। পরনে ছিমছাম একটি তাঁতশাড়ি, মুখে হালকা প্রসাধন, চোখে শৌখিন ফ্রেমের চশমা। গায়ের রঙ এই বয়সেও যেন ফেটে পড়ছে। চুল কালার করা, কালোর সঙ্গে মেরুন রঙ। বেশ লাগে তাঁকে দেখতে। তিনি ইজিচেয়ারে বসেছিলেন। তাঁর বসাটা এমন জায়গায় ছিল, যেখান থেকে বাইরে-ভেতর দেখা যায়। তিনি দু’হাত বাড়িয়ে তাকে গ্রহণ করলেন। শুভশ্রী দু’হাত তুলে ‘নমস্কার ম্যাডাম’ বলতেই তিনি এগিয়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, এসো এসো, আমার সই। ... ...
আমি চান ঘরে গিয়ে নিজের গায়ের গন্ধ শুঁকতে লাগলাম। হুঁ, পচা ইঁদুরের গন্ধ লেপ্টে গেছে গায়ে। এই গন্ধ কি যাবার? গঙ্গায় ডুব দিলে হয়তো যেত। নাকি আমাদের গাঙ মাতলায়? আমি জল ঢালতে লাগলাম। সাবাং ঘষতে লাগলাম। শ্যাম্পু দিলাম মাথায়। কিন্তু গন্ধ যেন যায়ই না। বুঝতে পারলাম গা থেকে তারা বেরিয়েও নাকের কাছ থেকে সরছে না। চানঘরে মরা ইঁদুরের গন্ধ ভেসে বেড়াতে লাগল। তার মানে আমার গা থেকে তারা মুক্তি পেয়ে চানঘরে ভাসছে। জলে গুলে যাচ্ছে। বাতাসে মিশে যাচ্ছে। শেষ অবধি আমাকে বেরতে হলো। দরজায় ধাক্কা মারছিল হুজুরের চেলা। আমার চান হলো। খোলতাই হয়ে বেরিয়ে এলাম। দুটো সাবাং গায়ে ঘষে ঘষে শেষ করে দিয়েছি। শ্যাম্পুর শিশি উপুড় করে মাথায় ঢেলে চুলের জট ছাড়িয়েছি। বাইরে কাচা জামা কাপড় ছিল। পরে নিলাম। ভগবানের বাহন বাবু এসে গায়ে সেন্ট ঢেলে দিতে দিতে বলল, তোর গা দিয়ে এখনো পচা গন্ধ বেরোচ্ছে। ... ...
জুলাই ও নভেম্বর ১৯৩২ পর পর দু বার নির্বাচন হয়। কোন দল সরকার গঠন করতে পারে না। জানুয়ারি ১৯৩৩ আবার নির্বাচন। কোন দল সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে নি (নাৎসিরা পায় ৩৩% ভোট) । ভোট ক্লান্ত জনগণকে রেহাই দেবার জন্য ছিয়াশি বছরের বৃদ্ধ প্রেসিডেন্ট হিনডেনবুরগ হিটলারকে কোন রকমে একটা জোড়া তালি দিয়ে সরকার গঠনের অনুমতি দিলেন। ক্ষমতা দখল করেই মার্চে আবার নির্বাচন ডাকলেন হিটলার। ক্রুপ থুসেন সহ যাবতীয় শিল্পপতিরা তাদের কোষাগার খুলে দিলেন – প্লেনে চড়ে এই প্রথম কোন রাজনৈতিক নেতা নির্বাচনী প্রচার করলেন। বিপুল অর্থ ব্যয় করেও সংখ্যা গরিষ্ঠ হল না নাৎসি পার্টি -তারা পেলো ৪৩% ভোট। জার্মান জাতীয় দলের সঙ্গে একত্রে হিটলার আবার সরকার গঠন করলেন। দু মাসের মধ্যে পার্লামেন্টের দরোজা বন্ধ হল। সে দরোজা আবার খুলবে দেড় দশক বাদে। ... ...
বাদন এবার প্রায় চুপ করে খাবার বানানোর কাজ করছে। শানুর এই বকবকানি নতুন নয়, এর আগে পেটে লালজল পড়লেই এসব কাহিনী মুড়িয়ে মুড়িয়ে তার মুখ থেকে বেরোয়। এসব বাদনের কাছে নতুন নয়। তবে এই বিয়ের কথাটথা যেন শানু একটু বেশিই বলে এখন। কে জানে, শানুর হয়ত বিয়ের ফুল ফুটেছে। একেকটা সময় আসে যখন ছেলে মেয়ে বিয়ে পাগল হয়ে যায়। শরীরের সুখ যেসব ছেলে মেয়েরা পায়নি তাদের ক্ষেত্রে না হয় এই বিয়েপাগল ভাবটার কথা তবু কিছুটা বোঝা যায়। কিন্তু শানুর তো আর তা নয়, বাদনের গায়ের আর কোনও জায়গা তার অচেনা নয়। তবু এত একসাথে থেকেও কেন যে শানু শুধু বিয়ের কথা বলে তা বাদন বুঝতে পারে না। ... ...
বেড়াতে গিয়ে ঝালমুড়ি, বাদামভাজা, বারোভাজা, আইসক্রিম কত কিছু খাওয়া হয় তার কোনো তালিকা বা হিসাব মনে হয় কেউই রাখে না। তাই আই সব খাবার বিক্রেতার মুখেও হাসি থাকে সর্বদা। কিন্তু জনশুন্য স্থানে এই খাবার কে খাবে? কোভিড তো মানুষ কে গৃহবন্দী করে দিয়েছে। তাই এই ব্যবসায়ীরাও বাধ্য গৃহবন্দী থাকতে। কিন্তু খিদে তো আর বন্দী থাকে না, সময় হলে তার খাবার চাই। সে বুঝবে না কিভাবে তা পাওয়া যাবে। এইসব ব্যবসায়ীদের অবস্থা সত্যিই কোনোভাবেই বর্ণনা করা যায় না। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর তারাও মূলস্রোতে ফিরছে। ... ...
ভাষাতত্ত্বের কম্পাস নিয়ে খিচুড়ির পূর্বজর খোঁজ করতে গিয়ে আমাদের পথ আটকে গিয়েছে কৃসর বা কৃসরা-য়। তার চাল আর তিলের পাক। আজকের খিচুড়ির ইভ কে, সে খোঁজ করতে হলে, খেলা ঘুরিয়ে হাতে নিতে হবে রসনাতত্ত্বের কম্পাস। আর তাতেই খুলে যাবে চাল-ডালের প্রথম পাকের আশ্চর্য এক দুনিয়া। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
খিচুড়ির পূর্বজ কৃসর-র খোঁজে ভরতমুনির রুদ্ধশ্বাস নাট্যশাস্ত্র পার করে এবার পার করতে হবে মনুর ধর্মশাস্ত্র—মনুষ্য রসনাকে একদিকে ভয় অন্যদিকে লোভ দেখিয়ে শৃঙ্খল-বদ্ধ করার সে রোমহর্ষক প্রয়াস। খাবার রইল না কেবলই পেট-ভরানোর বস্তু, তা হয়ে গেল একটা বিশেষ আর্থসামাজিক ব্যবস্থা কায়েম রাখার অন্যতম হাতিয়ার। সেই খাদ্যাস্ত্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে কৃসর। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
মৃত্যু স্পর্শ করে সকালের ঘুম চোখ কারো এক পাঠানো বার্তা জানায় মারা গেছে কেউ – চেনা ছিল একদিন যে এখন ঘুম চোখে স্মৃতি খুঁজি বাইরের বারান্দা দেখায় বহুদূরে হাঁটছে চেনা অনেকেই হয়ত ভাবি কেমন চেনা ছিল সে কতখানি ঠিক? সামনে বসিয়ে কুশল মঙ্গল বা চোখের কোণে ব্যথা তার সেই প্রবল সময়ে যখন অন্ধকার চাইতাম, খুঁজে নিতাম নিভৃতি ... ...
২০১৯ র দিল্লি বইমেলাতে কুমুদির এতাবৎ প্রকাশিত লেখাগুলোর থেকে কিছু লেখা একসঙ্গে করে একটা বই বেরোল। কুমুদির রোমহর্ষক গল্পসমূহ। গুরুচন্ডা৯-র থেকেই। এই বইতে সব গল্পই অতি প্রিয়। আর বইটা নিয়ে কথা বলতে গেলে আমার ইচ্ছে করে পুরো বইটাই কোটেশন হিসেবে তুলে দেই। গল্পগুলো মানে প্লটগুলো মজাদার তো বটে, কিন্তু প্লটের অন্তর্নিহিত মজা আর চরিত্র বর্ণন কুমুদির অননুকরণীয় সরস বর্ণনায় যে কোথায় উঠে গেছে তা আর কি বলব। ই যেমন ধরুন না সাইকেল চালাতে শেখার গল্পটাই – প্রথম সাইকেল চালাতে শেখার অনেক মজার মজার গল্প আমাদের অনেকেরই স্টকে আছে, কিন্তু সেই গল্পই একবারটি পড়ে দেখুন কুমুদির বয়ানে, “একটি সাইকেল ও দেহলিজ” । দেখবেন কখন যেন আপনিও আওড়াতে শুরু করেছেন, “ডরাইলেই ডর”। কোন গল্প ছেড়ে কোন গল্পের কথা বলি! কেবলীর কলেজ জীবন, গোবু মহারাজের সঙ্গে তার প্রেম জীবন এবং বিবাহপর্ব - এসব তো আমাদেরই গল্প, শুধু নিজেরা যেন দেখতে শিখি নি – কুমুদি হাতে ধরে দেখিয়ে দিলেন। ... ...
খোলা উনুনে এবার ঠাকুমা দুধের হাঁড়ি বসিয়েছে। তাতে মিশিয়ে দিয়েছে ঝোলাগুড়। দুধ ফুটছে। সেদ্ধ আতপ চালের মণ্ড ঠাকুমা খুব ভালভাবে মেখে নিলো আর তা থেকে বানালো ছোট ছোট লেচি। লেচিগুলোর মধ্যে গুঁজে দিলো অনেকটা করে পাটালি গুড়। হাতের তালুতে ঘুরিয়ে নাড়ুর মতো গোল হলেই লেচিগুলো দুধের হাঁড়িতে পড়তে শুরু করলো। ডালিম গাছের মাথায় দিনের শেষ রোদের আয়েশি আড্ডা জমেছে। তুলসীতলায় জ্বলে উঠেছে প্রদীপ। ঘটে সিঁদুর গোলায় আঁকা হয়েছে পুতুল। ... ...
পুজোর চালচলন যে বদলাচ্ছে এ আর কোন নতুন কথা নয়। অতিমারি এই বদলানোর পালে বাতাস লাগিয়েছে। তবে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক চালচিত্র বদলালেও প্রতিমার পিছনে চালচিত্র এখনও একইরকম। থিম, টিম, স্পনসর, মেন্টরদের ধামাকার সামনে দাঁড়িয়ে সে এখনও আমাদের মনে করিয়ে দেয় বাংলার প্রাচীন সংস্কৃতিকে। চালচিত্র যেন বাংলার প্রাচীন সামাজিক জীবনের এক রেট্রসপেকটিভ, অতীতের এক ঝাঁকি দর্শন। প্রতিমার পিছনের অর্ধচন্দ্রাকৃতি পরিসরে দাঁড়িয়ে সে বলে অসুর বিনাশের জন্য সমস্ত দৈবশক্তির মহামায়ার রূপ নেওয়ার কাহিনি; দেবীর গার্হস্থ্য জীবন; ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর ছাড়াও নানা দেবদেবীর ছবি ও কাজকর্মের চিত্রকল্প। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ভাষায়, “ক্রমে দুর্গার গায়ে রঙ উঠিল, রঙ শুকাইল, চালচিত্রে ঘরবাড়ি, সাজসজ্জা ক্রমে যেন ফুটিয়া উঠিতে লাগিল। বোধ হইতে লাগিল মহাদেব যেন সত্যসত্যই ষাঁড়ের উপর বসিয়া বিবাহ করিতে যাইতেছেন।” ... ...
আমি বিমলের দিকে চেয়েছিলাম। ছোট ছোট করে ছাঁটা চুল। প্রায় কদমছাঁট। একটু ভিতরে বসা চোখ। গোঁফজোড়া এতদিনে বেশ জম্পেশ, মিলিটারি কায়দায় পাকানো। ভুঁড়িটা না থাকলে বেশ মিলিটারি মিলিটারি লাগত। ছোটবেলায় খুব ডানপিটে ছিল বিমল। স্কুলের রেসে ভাল দৌড়াত। ব্যায়ামমন্দিরে গিয়ে হাত-পা বেশ তাগড়া করেছিল। কে জানে, বাবার দোকান না থাকলে হয়তো আর্মিতেই নাম লেখাত ছেলেটা। বাবার দোকান না থাকলে, এরকম অনেক কিছুই হয়তো করতে চাইত, মাঝে মাঝে প্রেসার কুকারের সিটি মারার মত মুখ ফুটে সেকথা বেরিয়ে আসত। কিন্তু জোরের সঙ্গে অন্যকিছু করতেও দেখিনি বিমলকে। ... ...
নওদীপ কৌর-এর বিষয়ে নতুন করে বলবার অপেক্ষা রাখে না। গত জানুয়ারি মাসে দিল্লির কৃষক আন্দোলনকে সমর্থনের জেরে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দেশ বিদেশের বহু বিশিষ্টজন থেকে সাধারণ মানুষ গ্রেফতারের বিরোধিতা করেন। দেড় মাস বন্দি থাকার পর ছাড়া পান নওদীপ। তিনি গান পরিবেশনের পাশাপাশি সাহিত্য উৎসবের আলোচনাতেও যোগ দেন, যার শিরোনাম ছিল ‘এক গুচ্ছ বুলেটপ্রুফ কবিতা’। ... ...
আজ ষষ্ঠী, রাত ফিকে হলেই সপ্তমী। ভোট, ভাইরাস আর ভিড়ের ভয়েবচ সামলাতে না সামলাতেই এসে পড়েছে আরও একটা উৎসবের উপলক্ষ্য। আর এই বিস্তীর্ণ মানচিত্রের কোথাও কোথাও আলো ক্রমে আসিতেছে, আর তার পাশে মঞ্চের বাইরে মাটিতে, আলোর বৃত্তের বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কেউ কেউ। নতুন নতুন গল্প শুরু হবে এখন-ই, সুতোর টানে আস্তে আস্তে জীবন্ত হয়ে উঠবে এক-এক করে চরিত্র। আসুন তাহলে এই ক'টা দিন, প্যান্ডেলের বাইরে দু'টো চেয়ার টেনে একটু বসা যাক নিরিবিলি আড্ডার মেজাজে, এই তো আমরা-ই ক'জন ... আসুন তার এক ফাঁকে পর্দা তুলে উঁকি মারি মঞ্চের ভেতরে ও বাইরে, ভিড় ছেড়ে চলুন এসে বসি ইন্টারনেটের এই ঠেকে। একটু একটু করে জমে উঠুক কথা ও বার্তা। এবারের শারদ সংখ্যা প্রকাশিত হবে আগামী কিছুদিন ধরে, উৎসবের পুরো মরশুম জুড়েই যতটুকু পুজোর গন্ধ গায়ে মেখে নেওয়া যায়। চোখ রাখুন গুরুর শরৎ ২০২১-এর পাতায়, প্রতিদিন নতুন লেখা জুড়ছে, জুড়বে। পড়তে থাকুন রয়ে সয়ে। ভাল লাগলে ভাগ করে নিন, না লাগলেও। ... ...
আজ ‘যৌনকর্মী’ কথাটা উচ্চারণ যতটা সহজ লাগে নব্বইয়ের দশকে তা ছিল না। আশির দশকের দ্বিতীয় ভাগ থেকে নব্বইয়ের দশকে এইডস মহামারী সমাজে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। রোগটা ছড়াচ্ছিল মূলত যৌনকর্মীদের যৌনরস ও রক্ত থেকে, তাঁদের থেকে অন্যেরা আক্রান্ত হচ্ছিলেন, অন্যের থেকে তাঁরাও আক্রান্ত হচ্ছিলেন। এই রোগকে বাগে আনতে ১৯৯২ সালে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এর তরফে এসটিডি/এইচআইভি ইন্টারভেনশন প্রজেক্ট-এর ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব এসে পড়ে স্মরজিৎদার উপর। এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লি সোনাগাছিতে শুরু হয় ‘সোনাগাছি প্রজেক্ট’। কিন্তু কাজ শুরু করার কিছুদিন পর তাঁর মনে হয়েছিল, শুধু প্রচারের মাধ্যমে যৌনকর্মীদের শিক্ষিত করে, আক্রান্তের চিকিৎসা করে এইসব রোগের সংক্রমণ থামানো যাবে না। যৌনকর্মীদের কালেক্টভ বার্গেইনিং পাওয়ার না বাড়াতে পারলে এইডস বা সিফিলিস, গনোরিয়ার মত সেক্সচুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিস (এসটিডি) কমানো যাবে না। সংক্রমণ বাগে আনতে গেলেও যৌনকর্মীদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে যৌনকর্মে কন্ডোম ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। এই পর্যন্ত তাঁর ভাবনা ছিল বিশেষজ্ঞের। এ কথা বলে তিনি সরে যেতে পারতেন। বলতে পারতেন যৌনকর্মীদের ক্ষমতায়ন একজন ডাক্তারের কাজ নয়। তা না করে যৌনকর্মীদের মধ্যে এইসব রোগ নির্মূল করার কাজে নেমে পড়লেন। সারা জীবন ধরে রয়ে গেলেন তাদের ভালমন্দে। তাঁর নেতৃত্বে শুরু হল যৌনকর্মীদের মর্যাদার লড়াই। ... ...