আমার নিজের জন্য কষ্ট হয় না। কষ্ট হয় সেইসব লোকদের জন্য, যারা নিজেদের জানা দুনিয়াটুকুর বাইরের কোনো কিছুকে বুঝতেই পারে না। অমুক অমুক লক্ষণ থাকলে ইনি পুরুষ, অমুক অমুক থাকলে ইনি নারী। খুব বেশি হলে উভলিঙ্গ অবধি বোঝা যায় (মেনে নেওয়া অবশ্য চলে না, তবু বোঝা যায়), ব্যস! আমার আয়নার মধ্যে একটা পুরো দুনিয়া আছে যেখানে জেন্ডার, বৃষ্টির পরের নরম আলোর মত অনেকগুলো রং ছুঁয়ে ছুঁয়ে যেতে পারে। আমার এই দুনিয়ায় ভালোবাসার জন্য আমাকে শুধু পুরুষে আবদ্ধ থাকতে হয় না, শুধু নারীতেও না। ভালোবাসা কোমল জলের মত আকার বদলাতে পারে অবিরত। আকৃতি, রূপ, সৌন্দর্য্য। রোদ্দুরের গুঁড়ো আর জলের কণা পলকে এক রং থেকে অন্য রঙে গড়িয়ে যেতে পারে। এই বেগুনি, এই নীল, এই সবুজ, কমলা, লাল। যারা চোখ বন্ধ করে রাখে, অসুবিধা তাদের। তাদের সাদাকালো, সীমাবদ্ধ দুনিয়ার কথা ভাবলে আমার কষ্ট হয়। ... ...
সেবারে কুয়ালালামপুরের বুকিং বিনতাং এলাকার বিখ্যাত শপিং মলে ঘুরে বেড়াচ্ছি, ঘুরতে ঘুরতে বেশ ক্লান্ত – ভাবছি কোন একটা স্টলে বসে একটু কফি/জুস/শেক কিছু একটা খেয়ে নিলে বেশ হয়। তাই আশে পাশে চোখ রাখছি – হঠাৎ করে চোখে পড়ে গেল একটা দোকানের খাবারের অ্যাডে আমের ছবি দেওয়া! মানে রসে ভরে উঠেছে, একটা পাত্রে টুপটাপ করছে কাঁচা হলুদ বা কমলা যাই বলেন তেমন রঙের আম! ব্যাস আর কী ভাবতে হয়! টুক করে ঢুকে পড়লাম সেইখানে – চারদিক খোলা বসার অ্যারেঞ্জমেন্ট, শপিং মলের ভিতরে। ... ...
আমার জীবনে এই শিক্ষকদের প্রচুর অবদান। সব শিক্ষকের কাছেই আমি ঋণী। তবে বিতর্ক, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, কুইজের জগৎ আমাকে চেনান শিশির দত্ত। সত্তর দশকে স্কুলেই ছুরি খেয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার আলাপ অদ্ভুতভাবে। ইংরেজির ক্লাস। ... ...
প্রতিবছর কেল্লা নিজামতের মধ্যে নানান উৎসব ও অনুষ্ঠান পালিত হয়। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হল পারসিক নববর্ষ বা নওরোজ। নবাবী আমল থেকেই মুর্শিদাবাদে রাজকীয় ভাবে নওরোজ উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এইদিন কেল্লার প্রতিটি বাড়ি সেজে উঠত। নওরোজের দিন সকাল থেকেই ইমামবাড়া আনন্দ মুখর হয়ে উঠত এবং সেখানে একটি বিরাট বড় দস্তরখওয়ান পেতে তার উপর নানান রকমের খাবার ও ফলমূল সাজিয়ে হজরত আলীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হত। ... ...
লজিবিটিকিউ দের নিয়ে লিখতে বা বলতে গিয়ে আমরা অবচেতনে অনেক সময়ই কিউ শব্দটা এড়িয়ে যাই। আমরা সমকামীদের নিয়ে লিখি-টিখি, কিন্তু এই কিউ বা কুইয়ার, বাংলা করলে যার প্রতিশব্দ 'উদ্ভট'এর কাছাকাছি, সেটাকে ছুঁই না। কারণ, যে ব্যাপারটা নামেই উদ্ভট, তার মধ্যে ঢোকা কঠিন। কে জানে কী জটিলতায় জড়িয়ে যাব। ওই কারণেই, ঘোষিত ভাবেই যাঁরা কুইয়ার, তাঁদের নিয়ে তেমন লেখাপত্র চোখে পড়েনা। তার চেয়ে কোনো একটা নির্দিষ্ট খোপে ঢুকে থাকা নিরাপদ। সমকামিতা এখনও, সমাজে পুরোপুরি গৃহীত নয়। কিন্তু তবুও সেটা নিয়ে লেখা সহজ, যখন পুরুষ চায় পুরুষকে, অথবা নারী কামনা করে নারীকে -- এরকম এক বোধগম্য সুনির্দিষ্ট খোপ আছে। উভকামিতা বা বিষমকামিতাও তাই। কিন্তু বাকিটুকু তো কেমন তরল, ধোঁয়ায় ঢাকা, যেন পাহাড়ের গায়ের কুয়াশা, যেখানে এদিক-সেদিক থেকে কখন কোন পাইনবন উঁকি মারবে বোঝা দুষ্কর। এ কুয়াশা যেন রহস্যময়। কোনো পাত্রে আঁটানো অসম্ভব। কোনো আকার দেওয়া কঠিন। ... ...
মুর্শিদাবাদের কেল্লা নিজামতের ভেতরে ছোট ছোট নানান দর্শনীয় বিষয় ছিল যার অধিকাংশই আজ নষ্ট হয়ে গেছে, বিশেষ করে কেল্লার ভেতরের যেসব দৃষ্টি নন্দন বাগান ছিল আজ সেসব গভীর জঙ্গলে ঢাকা পরে আছে, যেমন আজ সেদিনের কেল্লার ‘মহল সেরা’ এলাকায় গেলে দেখা যাবে একটি বিরাট অঞ্চল জঙ্গলে পরিণত হয়েছে অথচ নবাবী আমলে এই এলাকাতেই ছিল দেশ বিদেশের দামি সুগন্ধি ফুলের বাগান, আজও অবশ্য সেই জঙ্গলের ভেতরে নবাবী আমলের কিছু ফুলের গাছ দেখা যায়। ... ...
এক মৌলবাদ আরেক মৌলবাদকে পুষ্ট করে। সেটা হলে হিন্দু মৌলবাদীদের দাপট যে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আরেসেস-বিজেপির ক্ষমতা এখন সর্বব্যাপী। প্রায় সব প্রতিষ্ঠান তাঁদের তাঁবেদারে পরিণত হয়েছে। বিরোধীরা মূক। এই ঘটনা নিয়ে তাঁদের কোনও জোরাল প্রতিবাদ নেই। তাই নূপুর শর্মার ঘটনা সাময়িক ভাবে গেরুয়াবাহিনীকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিলেও, আদপে এই সংকট তাঁদের পক্ষে আরও অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে। ... ...
মাত্র চার বছর আগে অবধি আমরা আইনত বলতে পারতাম না, যে আমরা এলজিবিটিক্যু+ সম্প্রদায়ের মানুষ বা তাঁদের অধিকার নিয়ে কাজ করি। একটা লার্জার হিউম্যান রাইটস ছাতার তলায় ‘জেন্ডার’-এর আওতায় আমাদেরকে ফেলা হত। ফলে যা হওয়ার তাই হল – মানবাধিকার কমিশনের এক রিসার্চে যা উঠে এল, তা হল ৯২% ট্রান্সজেন্ডার মানুষ কোনোরকমের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত নয়। অথচ সরকারি স্তরে এই মানুষদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার কোনো পরিকল্পনাই নেই। ২০২১ সালে ভারত সরকারের সোশ্যাল জাস্টিস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট মন্ত্রক সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর স্বশক্তিকরণ বাবদ যদি ১০০ টাকা খরচ করে থাকে, তার মধ্যে মাত্র ৪ পয়সা খরচ করেছিল ট্রান্সজেন্ডার মানুষদের জন্য – প্রায় ১২,০০০ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র পাঁচ কোটি। অপরদিকে ভারতের কর্পোরেটগুলো সিএসআর বাবদ যে বিপুল অর্থ খরচ করে সামাজিক কারণে, সেখানে নারী কল্যাণ বা উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট জায়গা পেলেও, ট্রান্সজেন্ডার বা লার্জার এলজিবিটিক্যু+ সম্প্রদায়ের মানুষেরা জায়গা পাননি এখনও। ... ...
ইংরেজিতে ক্যুইয়র কথাটার সাধারণ মানে “অদ্ভুত” বা “উদ্ভট”। এই শব্দটার সাথে এক দীর্ঘ ইতিহাস জড়িয়ে আছে। ইতিহাসে দেখা যায় যে ক্যুইয়র কথাটা ইংরেজি সাহিত্যে এবং কথ্য ভাষায় ব্যবহার হতো যা কিছু অদ্ভুত তার প্রিফিক্স হিসেবে। বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় এই শব্দটি ব্যবহার হতে লাগল অপমানসূচক ভাবে, গাল হিসেবে, বুলি করার জন্য - এবং মূলত সমকামী-রূপান্তরকামী মানুষদের জন্য। এটার মানে এই নয় কিন্তু যে ক্যুইয়র ব্যাপারটা বিদেশী। আমাদের বিরুদ্ধে অনেক সময়েই শুনি, যে আমাদের আন্দোলনটা নাকি গভীর একটা চক্রান্ত। রাজনৈতিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে নানান ন্যারেটিভ বেরোয়। সনাতনপন্থীরা বলেন যে আমরা নাকি ভারতীয় সংস্কৃতির কেউ নই, আদপে আমরা পশ্চিমি ষড়যন্ত্রের সভ্যতা দুর্বলকারী সংস্কৃতিভাঙানি কাপুরুষ। ... ...
এক জানালা বৃষ্টির সামনে সেদিন অনুষ্ঠান হবে। যারা মোটা করে কাজল পরে আসবে, সকলে কাঁদবার সুযোগ পাবে। এক-এক করে গিয়ে দাঁড়াতে হবে জানালায়। চোখের কালো জল মিশে যাবে কার্নিশে। সম্পূর্ণ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার আগে অবধি পড়া হবে জয় গোস্বামী। তারপর ব্যথাগুলোকে একটা কাচের প্লেটে করে কিছুক্ষণ রাখা হবে শুকিয়ে যাওয়া রজনীগন্ধার স্টিক-এর পাশে। সমান করে দু’দিক কেটে সেলাই করা হবে। সাইকেল থেকে পড়ে গেলে, ওটাই শুধু ব্যথা হলে, কত ভালো হত। ‘ওর সাথে আর কোনোদিন কথা হবেনা’-র সাথে ‘বাড়ি থেকে কোনোদিন মেনে নেবে না’-কে সমান করে সেলাই করবি। দু’দিকের দুটো হাতা হয়ে যাবে। বোতামের ঘাট রাখিস। দুটো করে বোতাম দিবি, ভিতরের দিকে ‘পাড়ার লোক কী বলবে’, আর বাইরের দিকে ‘বড়রা যা বলে ভালর জন্য’। ... ...
পায়ে পায়ে মিছিল এগিয়ে চলেছে, কলকাতার রাস্তা দিয়ে। হাজরার মোড় থেকে কালীঘাট হয়ে দেশপ্রিয় পার্ক। প্রায় তিনশো জন নারী, হাতে মোমবাতি, মুখে স্লোগান - ""৮ই মার্চ দিচ্ছে ডাক পিতৃতন্ত্র নিপাত যাক''। এই বছর, ২০১০ সালে, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের একশো বছর পূর্ণ হল। ঐ মিছিলের শেষের দিকে কিছু অল্পসংখ্যক মেয়ে, তারা বয়ে নিয়ে চলেছে রামধনু পতাকা। গলা মেলাচ্ছে মিছিলের বাকি মেয়েদের সঙ্গে। কিন্তু মাঝে মাঝে ওরা আরো বলে উঠছে - ""তোমার আমার অংশীদারী, সমকামী তবুও নারী''। সেই সুরে সুর মেলায় মিছিলের শেষের দিকের সকল নারী। রাস্তার দু'ধারের মানুষেরা অবাক চোখে দেখতে থাকে সবাক সমকামী নারীদের। মিডিয়ার ক্যামেরার বিশেষ নজর কাড়ে ওরা। ... ...
বৈচিত্র্য এবং অন্তর্ভুক্তি (diversity and inclusion) জরুরি কেন? কারণ হল বৈষম্য ও প্রতিবন্ধকতা – যার মুখোমুখি সংখ্যালঘুরা হয়। এছাড়া কর্পোরেটের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যাক এতে কর্পোরেটের কী লাভ: ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির কর্মী কর্মক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ভাবনা ও কর্মপদ্ধতি নিয়ে আসে। দশজনের মস্তিষ্ক একইরকম ভাবে কাজ করলে সেটা দশটা মস্তিষ্ক হয় না, দশের কম হয়। আগে মানুষ ভাবনার বৈচিত্রকে ভয় পেত, এখন সেটাকে কাজে লাগাতে জানে। পশ্চিমী দুনিয়ার কর্পোরেটগুলো এখন মানববৈচিত্র বিষয়টাকে বুঝতে শিখেছে। তবে এমন নয় যে সবাই বৈচিত্রের গুরুত্ব বোঝে, বা বুঝলেও কর্মক্ষেত্রে মানববৈচিত্র্য আনার বিষয়ে সক্রিয়। বৈচিত্র আনার ও রক্ষার উপায় কী? উত্তর হল, কর্মীনিয়োগের ক্ষেত্রে বৈচিত্র আনা, আর যে কর্মীরা আছে তাদের জন্য অনুকুল কর্মক্ষেত্র তৈরি করা। এই অনুকুল কর্মক্ষেত্র কিরকম? সেখানে কী আশা রাখা যায়? ... ...
ভদ্রমহিলা বললেন, আসলে ছেলে তো, ফুলটুল দেখলে আবার পছন্দ করবে না। আমার মনে হল বলি, ছেলের বিয়ের পর খাটটা কি ক্যাকটাস দিয়ে সাজাবেন? পৌরুষের এই সামাজিক নির্মাণ পুরুষকেই বেঁধে রেখেছে নির্মম শিকলে। ছেলেরা ফুল পছন্দ করবে না, বন্দুক পছন্দ করবে। ছেলেরা শান্তির পক্ষে থাকবে না, যুদ্ধের পক্ষে থাকবে। ছেলেরা ফল খাবে না, মদ খাবে.... ... ...
আমার বন্ধুদের মধ্যে যেন বোমা পড়ল। কেউ ভাবতে পারেনি আমি ওই সম্পর্কে কখনও থাকব না, এমন হতে পারে। আর কারণটা জানাতে শুরু করলাম সবাইকেই, কিছু না লুকিয়ে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে কিছু মানুষের সঙ্গে আলাপ হল। সমকামী ও রূপান্তরকামী নারীপুরুষ সকলে। একটা অদ্ভুত জগৎ। সবটার সঙ্গে নিজেকে না মেলাতে পারলেও, চেষ্টা করতাম – যতটা পারা যায় জ্ঞান সঞ্চয় করতে। মনে হত, আর কোনও পরীক্ষা কি আছে, যা থেকে বোঝা যাবে আমি কী? আমার তো কোনও সমকামী সম্পর্কও নেই। কী করে প্রমাণ দেব, যে আমি সমকামী? কী করে বাকিদের বোঝাব, যে আমার সম্পর্ক ভাঙার আর কোনও কারণ নেই এটা ছাড়া? কী করে জাস্টিফাই করব আমার দাবি? ... ...
মায়ের যদিও আমার সাজগোজ সম্পর্কে কোন দিন কোনো সমস্যা ছিল না। ছোটবেলায় যখন অতিরিক্ত মেয়েলি ছিলাম তখন ও আমার মা কোনদিনও আমার মেয়েলি স্বভাব নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেনি। আজ হয়তো সেই মেয়েলি স্বভাব গুলো জীবনে আর নেই কিন্তু আমি নিজে যে প্রচন্ডভাবে কুইয়ার সেটা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই । তা সত্ত্বেও আমার মায়ের থেকে টিপিক্যাল রাশভারী পুরুষ চরিত্র না হওয়ার জন্য কোন দিন কথা শুনতে হয় নি। ... ...
- আচ্ছা, তুমি কি কোনো কঠিন রোগের জন্য স্টেরয়েড নিয়েছ ছোট থেকে? কারণ আমার কাছে একটি মেয়ে এসেছিল তার বাবা মার সাথে, তার boyfriend ছিল, কিন্তু তার ওষুধে সমস্যা হয়েছিল, তারপর লেসবিয়ান ছিল কিছুদিন। তারপর আমার ওষুধে ঠিক হয়ে একটা ছেলের সাথে সংসার করছে। তাই আমি তোমার মেজোমামাকে বলেছিলাম, তোমার সাথে একটু কথা বলব। ... ...
“কী রে, তোর বিয়েতে কবে খাব... ???” এই প্রশ্ন তো সয়ে গেছে এবং আমি বেশ ইনোভেটিভ উত্তরও দিই। তার ভয়ে আর কেউ এই কথা আর তোলে না। তবে একটা জিনিস অনুভব করি – যেটা আজকাল বেশ মনে হয়; সেটা হল একটা অদ্ভুত exclusion – অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার একটা অনুভূতি ... আরও কেমন লাগে, যখন দেখি, যে সেই বিবাহিত জুটিদের নিজেদের মধ্যেকার হাসা-হাসি-ইয়ার্কি, সেখানেও সেই exclusion-এর একটা অনুভূতি। অথচ আমার মনে কিন্তু একটা অপূর্ণ সাধ রয়েই গেছে – বিয়ে করার, ঘর বাঁধার – এইসব শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি শুনলে এই ইচ্ছেগুলো বেশ নড়েচড়ে ওঠে, নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়, মন কেমন করিয়ে তোলে। ... ...
এত থিওরি কপচে কীই বা হয়? আমার খোঁজার পরিধি আপনার দ্বিগুণ বলে হিংসে করেই বা কী হবে? চলুন না প্রেমে পড়ি, প্রেমিকের কি আর ওরিয়েন্টেশন হয়? ব্রহ্মা শতরূপাকে মেপে কেটেছেঁটে সাইজ করে নিলেও, শিব কিন্তু অত ঝামেলায় যাননি। শক্তি হোন বা হরি, যেমন-কে-তেমন গ্রহণ করেছেন। প্রেমিকের মাপকাঠিতে তাই তাঁর চেয়ে ভারি আর কেউ নেই। আর একটা কথা, যে থাকার সে থাকবেই, ঠেলে সরিয়ে দিলেও শেষ মুহূর্ত অবধি সম্পর্কটাকে বাঁচানোর জন্য লড়ে যাবে। আর যে না থাকার, সে স্ট্রেট গে বাই ট্রান্স যাই হোক না কেন থাকবে না। বিশ্বাস করুন, মেঘে মেঘে বয়েস তো কম হল না, নিজের ফার্স্ট হ্যান্ড অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। ... ...
এই বহুমুখী আক্রমণ অস্বস্তিকর হলেও, হাসিমুখে মজাদার প্রতিক্রিয়া দিতে হয়। সীমা অতিক্রম করলে একটু মৃদু বিষ মিশিয়েও দিতে হয়। অনেক বছর ধরে এটা করতে হচ্ছে। অন্য কোনো সমবয়সী কিম্বা জুনিয়র সহকর্মীর বিয়ের আগে আইবুড়ো ভাত খাওয়ানোর আয়োজন হয়। তখন এই উপদ্রব আরও বেশি হয়। সরাসরি বলার সাহস হয় না বেশির ভাগ পুরুষ সহকর্মীর। তাদের কথার মধ্যে থাকে পরোক্ষ প্রশ্নমালা। ... ...