কথোপকথন শুরু হল। কী নিয়ে? সত্যি বলছি, ভুলে গেছি। উঁহু! পরস্পরকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছিলাম, যেমন ‘আপনি এখানে কীভাবে এসেছেন?’ ও ‘এতদিন কোথায় ছিলেন? - গোটা পৃথিবীর লোক জানে যে আপনি মৃত।’ হ্যাঁ, এভাবেই কথা শুরু হল: তবে ডাক্তার আমাকে কী বলেছিলেন, আর আমিই বা তাকে কী বলেছিলাম, সেসব সঠিক বলতে পারব না, কারণ আমি তো তার দিকে হাঁ করে তাকিয়েই ছিলাম, যে মানুষটার পাশে এখন মধ্য আফ্রিকায় বসে আছি, তাঁর দারুণ চেহারা ও মুখের প্রতিটা দাগ মুখস্থ করছিলাম। ... ...
- এই দেখ, মধ্যবিত্ত গৃহস্থ বাঙালি বিয়ের ভোজ নিয়ে কী লিখছেন মহেন্দ্রনাথ দত্ত: ‘কলাপাতায় বড় বড় লুচি আর কুমড়োর ছক্কা। কলাপাতার এক কোণে একটু নুন। মাসকলাই ডালের পুরে আদা মৌরি দিয়ে কচুরি, নিমকি, খাজা, চৌকো গজা, মতিচুর এইসব সরায় থাকিত। আর চার রকম সন্দেশ থাকিত। আগে গিন্নিরা নিজেরাই রাঁধিতেন। কিন্তু একদল লোক খুঁত ধরে ভোজ পণ্ড করে দিত বলে মেয়েরা আর রাঁধিতেন না। ’ - একদল লোক খুঁত ধরে খাওয়াদাওয়া পণ্ড করে দিত? - হ্যাঁ রে, নিন্দেমন্দ, খুঁত ধরা, গাল পাড়া, ঘোঁট পাকানো, জাতপাত তুলে ভোজ বয়কট – এইসব নষ্টামি খুব ছিল। - এ বাবা! - আবার এটা কি জানিস, কলকাতার বিয়েবাড়িতে অনেক দুষ্ট লোক যেত জুতো চুরি করতে। সেই জন্য গৃহকর্তার সঙ্গে চাকরও যেত জুতো পাহারা দিতে। বিয়েবাড়ির সামনে ঘোড়ার গাড়ি আর পালকির পার্কিং প্লেস বানাতে হত। - হি হি। ... ...
মাথার টুপি খুলে তাঁকে বললাম: 'ডঃ লিভিংস্টোন, তাই তো?' ‘হ্যাঁ,’ তিনি মৃদু হেসে বললেন, নিজের টুপিটি সামান্য তুলে। আমি নিজের মাথায় ফের টুপিটা বসালাম, আর তিনিও ফের টুপি পরলেন, আর আমরা দু'জনের হাত আঁকড়ে ধরলাম, তারপর আমি জোরে জোরে বললাম: ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, ডাক্তার, আপনার সঙ্গে দেখা হল।’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমিও খুশি যে আপনাকে এখানে স্বাগত জানাতে পারছি।’ ... ...
শহরে আমাদের দু’কামরার বাড়িটাকে মা-বাবা বাসা বলে। হ্যাঁ তাই তো, চিলতে উঠোনের নিরিবিলি ছোট্ট এই বাড়িটা কীভাবে আমাদের বাড়ি হবে? বাইরবাড়ি নেই, দুপুরের ভাতঘুম ফাঁকি দিয়ে জেঠি ঠাকুমাদের আড্ডা নেই, আমার খেলার কোনো সঙ্গী নেই আর নেই কোনো হৈ-হুল্লোড়। তাঁতঘর থেকে তাঁতিদের গানের মত ভেসে আসা সুর দূরে থাক, এ বাড়ি ও বাড়ি থেকে একটু আধটু কারো কথার আওয়াজও পাওয়া যায় না। আর তা যাবেই বা কী করে? এখানে সব বাড়িই প্রাচীর ঘেরা যে। ... ...
১০ই নভেম্বর। শুক্রবার। সমুদ্রের ধারের বাগামোয়ো থেকে ২৩৬তম দিন। আর উন্যানয়েম্বে থেকে ৫১তম দিন। মোটামুটি পশ্চিম-নৈর্ঋত কোণে উজিজি। হাঁটার সময়, ছয় ঘণ্টা। দারুণ সুন্দর, আনন্দের সকাল। তাজা, ঠান্ডা বাতাস। ধরিত্রী আর তার সন্তানদের দিকে আকাশ ভালোবাসার হাসি ছড়িয়ে দিচ্ছে। গভীর অরণ্যের মাথায় উজ্জ্বল তাজা পাতার মুকুট; জঙ্গলে ঢাকা নদী পাড়ের পান্না-সবুজ ছায়ায় ছায়ায় এমুকুটির জলস্রোত কলকল শব্দে ছুটে চলেছে, যেন আমাদের চ্যালেঞ্জ করছে, কে আগে উজিজি পৌঁছাতে পারে। ... ...
প্রতিবছর কেল্লা নিজামতের মধ্যে নানান উৎসব ও অনুষ্ঠান পালিত হয়। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হল পারসিক নববর্ষ বা নওরোজ। নবাবী আমল থেকেই মুর্শিদাবাদে রাজকীয় ভাবে নওরোজ উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এইদিন কেল্লার প্রতিটি বাড়ি সেজে উঠত। নওরোজের দিন সকাল থেকেই ইমামবাড়া আনন্দ মুখর হয়ে উঠত এবং সেখানে একটি বিরাট বড় দস্তরখওয়ান পেতে তার উপর নানান রকমের খাবার ও ফলমূল সাজিয়ে হজরত আলীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হত। ... ...
আমার কর্তা বলে, যে ওরা প্রায়ই ছোটবেলায় নারকেল তেলে ভাজা লুচি খেত। খুবই স্বাভাবিক। কারণ উপকূল অঞ্চলে নারকেল খুব সুলভ। বাড়িতেই তেল বানানো হত। আমার খুব আগ্রহ ছিল – এই তেল বানানোর পদ্ধতিটা নিজের চোখে দেখব। আমাদের রান্নাঘরের মতি বৌ নারকেল তেল বানিয়ে আমার সেই ইচ্ছে পূরণ করেছে। ব্যাপারটা দেখলাম তেমন শক্ত কিছু নয়। নারকেল কুরে গরম জলে ফেলে দুধ বের করতে সকলেই জানে। এক্ষেত্রে খুব ঝুনো নারকেল যেগুলোর জল শুকিয়ে ফোঁপর বেরিয়ে যায়, অঙ্কুরোদ্গম হয়ে যায়, তেমন কয়েকটা নারকেল ধৈর্য ধরে কুরে নিতে হবে। তারপরে রাঁধুনিরা সেই কোরা নারকেল গরম জলে কিছুক্ষণের জন্য ভিজিয়ে রাখল। আধঘণ্টা-খানেক পর, ঐ জলেই বেশ দু’-তিনবার ভাল করে কোরা নারকেল চটকে দুধ বার করে নিল। এইবার এই দুধটুকু কড়ায় ফোটাতে ফোটাতে জল সব বাষ্প হয়ে উড়ে যাবে, তেলটুকু ভেসে উঠবে। রাঁধুনিদের অনুরোধে তেল থেকে ছেঁকে নেওয়া বাদামি রঙের নারকেলের ছিবড়ে খেয়ে দেখলাম। এখানে বলা হয় নারকেলের চড়া। মিষ্টি মিষ্টি বেশ খেতে। ... ...
লিভিংস্টোন এখনও অধরা। এদিকে রসদ ফুরিয়ে আসছে। স্থানীয় সর্দারদের ভেটের দাবি এড়াতে গ্রাম এড়িয়ে গোপনে চলার চেষ্টা। উহহাদের এলাকা পার। ... ...
আমলাপাড়ার নিরিবিলি বাসাটা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠতেই আমার বুকের ভেতর কেমন করে ওঠে। আমি ফিসফিস করে বলি, “ও মনিপিসি, বাবার শহরের চাকরি কবে ফুরাবে?” মনিপিসি কি একটু হেসে উঠল? অন্ধকারে তা ঠাওরে উঠতে পারলাম মা। তবে আমার কাছে আরেকটু সরে এসে মনিপিসি বলল, “এই শহরের পর আরোও বড় শহর, তারপর আরোও বড় শহরে যেতে হবে তোকে। তোকে অনেক বড় হতে হবে মনি”। মনিপিসির স্বরে কিছু একটা আছে। উত্তর খুঁজে পাইনা আমি। মনে মনে নিজেকেই প্রশ্ন করি, “বড় হলে কি আর নিজের বাড়ি, নিজের জায়গাতে আর ফেরা যায় না?” ... ...
এ বাড়িতে পশু পাখিকে, গাছকে, ঘাসকে, পুকুরের মাছকে খেতে দেওয়ার, সম্মান করার এক প্রাচীন প্রথা আছে। আমার বাপের বাড়ির গ্রাম আড়বালিয়াতে এমন কখনও দেখিনি। সেই প্রথা হল গমা পূর্ণিমাতে প্রকৃতি পুজো। পুজোতে সকল পশুপাখির প্রতিনিধিত্ব করে গমা বুড়ি অর্থাৎ গোমাতা। এইদিন খুব সকালে গোয়ালের যত গরু আছে তাদের পরিষ্কার করে স্নান করিয়ে দুই শিঙে রাখী বেঁধে দেওয়া হয়। সারাদিন ধরে পুজোর জন্য আস্কে পিঠে তৈরি করা হয়। সেদ্ধ চাল আগের দিন সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকাল সকাল বেটে নেওয়া হয়। এবার তাতে একটু নুন আর অল্প অল্প করে গরম জল মিশিয়ে খুব ভালো করে ফেটানো হয়। কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখা হয়, যাতে মণ্ডটা একটু ফেঁপে যায়, তারপর মাটির সরায় পাতার জ্বালান দিয়ে একটা একটা করে আস্কে পিঠে তৈরি হয়। ... ...
লিভিংস্টোন এখনও অধরা। এদিকে রসদ ফুরিয়ে আসছে। স্থানীয় সর্দারদের ভেঁটের দাবি এড়াতে গভীর জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গোপনে চলেছে কাফেলা। ... ...
উনি নাকি লিফলেট ছাপাতেন। তাতে সহজ বাংলায় লেখা থাকতো স্বাস্থ্য বিধি, তারপরে মেয়েদের কেন লেখাপড়া করা দরকার, দেশের ভালোর জন্য কী কী করা উচিত - এইসব। বাগবাজারের বিশ্বকোষ লেনে একটা প্রেস ছিল। সেই প্রেসে ছাপানো হত। কুমুদিনীর বই দুটোও ঐ প্রেসেই ছাপানো হয়েছিল। তাছাড়া অন্য লেখালেখি ছিল। পরিবারের সকলেই বলেছে, কিন্তু চোখে কিছু দেখিনি। আর একথাও শুনেছি, লেখালেখির থেকে ওঁর নিজস্ব উপার্জন ছিল। আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা মা বলেছিল, উনি শোভাবাজার রাজবাড়িতে থাকা কালীনই নিয়মিত সাহিত্য সভা করতেন। সেখানে সমাজের বড় মানুষেরা আসতেন। ধীরে ধীরে সেইসব সংসর্গে আরও অনেক সভা সমিতির কাজে জড়িয়ে পড়েন। সবগুলো নিরামিষ সাহিত্যের ব্যাপার ছিলনা। সেখানে সক্রিয় ইংরেজ বিরোধিতার গল্প ছিল। স্বামী শরৎ মারা যাবার পরে, উনি যে রাজবাড়ি ত্যাগ করতে বাধ্য হলেন, তার এটাও একটা কারণ। শরতের দাপটে সব চুপ থাকতো। কিন্তু তিনি না থাকাতে পরিস্থিতি ঘুরে গেল। ... ...
লিভিংস্টোনের কাছাকাছি থাকার সম্ভাবনার খবর সত্বেও এবং উজিজির কাছাকাছি এসেও এখনও তিনি অধরা। ... ...
কেল্লার ভেতরে নবাবের দরবারের আলো নিভে গেছে, বহু বছর হল নবাবী গৌরবও অস্ত গিয়েছে। শ্বেত পাথরের ফোয়ারায় আর রঙধনু রং ধরেনা, এখন আর নবাবের ভাঙ্গা প্রাসাদ থেকে দরবারী কানাড়া, দাদরা ঠুংরির আওয়াজ ভেসে আসেনা, প্রতি সন্ধ্যায় সারেঙ্গীর সুরও আর বাজেনা। নবাবের সাধের ফুলের বাগান আজ গভীর জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। ... ...
- সেনবাড়ির ঝোল আর মাছের ঝালের তফাৎটা কি? - তফাতের বদলে তুলনা বলছি। ১। দুটোতেই তেলে পাঁচফোড়ন আর লঙ্কা ফোড়ন পড়ে। কাঁচা লঙ্কা অথবা শুকনো লঙ্কা - আপরুচি খানা। মা কাঁচা লঙ্কা দিত, আমিও তাই। ২। ঝোলে নানারকম সব্জি দেওয়া যাবে। কিন্তু ঝালে সেটা হয়না। ঝালে আমার মা মাঝে মাঝে আলু বা বেগুন, অথবা শীতের সময়ে পেঁয়াজ কলি বা কচি শিম ভেজে দিতো, যেকোনো একরকম। ৩। আজকাল সারাবছর টমেটো পাওয়া যায় বলে, দুটোতেই টমেটো দেওয়ার চল হয়েছে। আমাদের ছোটবেলায় টমেটোর এত ব্যবহার ছিলনা। ৪। হলুদ দুটোতেই কমন। ৫। ঝোল বা ঝাল হবে নোনতা স্বাদের। কোনো মিষ্টি পড়বেনা। ৬। ঝোলের মশলা হচ্ছে প্রধানত ধনে; জিরে দিলে খুব অল্প, মা জিরে দিতনা। ডালনা বা দমে জিরে হল প্রধান, কিন্তু ঝোলে নয়। বেগুন দিয়ে ঝোল হলে হাল্কা সর্ষে ধোওয়া জল দেওয়া যাবে। ... ...
ভোরের আজানের শব্দে ঠাকুমার ঘুম ভাঙলে ফুরিয়ে যায় আমারও ঘুম। আর আজ তো ঘুম ভাঙার অজুহাত আছেই, “ও ঠাকুমা, আমার হাতটা ধুয়ে দেবে একটু? দেখো মেহেন্দি শুকিয়ে সারা বিছানায় গুঁড়ো ছড়িয়ে পড়েছে”। ঠাকুমার সাথে আমিও নেমে আসি উঠোনে। বরইগাছের মাথা ছুঁয়ে থাকা আকাশটাই আলো ফুটছে একটু একটু করে। সেই আলো মিশে যাচ্ছে শ্বেতকাঞ্চনের ঝাড়ে। চারপাশের নীরবতার সাথে তাল মিলিয়ে ফিসফিস করে উঠি, “ও ঠাকুমা, পূজার ফুল তুলবে না আজ?” কলঘর থেকে একঘটি জল এনে ঠাকুমা ঢেলে দেয় আমার হাতে। ঠাকুমার আঁচলে ভেজা হাত মুছি আমি। আবছা অন্ধকারে তাকাই আমার হাতের দিকে। মেহেন্দি আঁকা চাঁদটা কেমন জ্বলজ্বল করছে। ঠাকুমা বারান্দায় রাখা ফুলের সাজি শ্বেতকাঞ্চনে ভরে দেয়। সেখান থেকে কয়েকটা ফুল মুঠোয় করে নাকের কাছে আনতেই ফুলের ঘ্রাণ ছাপিয়ে নাকে এসে ধাক্কা দেয় মেহেন্দির ঘ্রাণ। আমি ঠাকুমার দিকে তাকাই, “ও ঠাকুমা, আজ ঈদ”। ... ...
তরকারিতে নুন কম বেশি হলে কী করতে হয় গো মা? – কম হলে খুব একটা অসুবিধে নেই, দিয়ে খাওয়া যায়। বেশি হলে বিপদ। – বেশি হলে কী করব? – রান্না অনুযায়ী হবে। ধর, মাংসের ঝোলে নুন বেশি হয়েছে। তখন গরম জল মিশিয়ে ঝোল পাতলা করতে পারিস। যদি দেখিস আর জল মেশালে গামছা কাঁধে ঝোল পুকুরে নামার অবস্থা হবে, তখন এক দেড় চামচ টক দই, এক চিলতে হলুদ, লঙ্কা গুঁড়ো আর ময়দা মিশিয়ে দিতে পারিস। টকে নুন টেনে নেবে, ঝোলও পাতলা হবে না। দইয়ে হলুদ, লঙ্কা মিশিয়ে দিলে রংটাও হাল্কা হবে না। আবার ধর ঘুগনি জাতীয় কিছুতে নুন বেশি হলে তেঁতুল গোলা জল বা লেবুর রস মেশানো যেতে পারে। যদি টমেটো দেওয়া রান্না হয়, তবে টমেটো ঘিসনিতে ঘষে পিউরি বানিয়ে আলাদা ফোড়ন কড়ায় একটু ফ্রাই করে মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে। হাল্কা ফ্রাই না করলে আবার কাঁচা টমেটোর গন্ধ উঠবে। ... ...
হুররে! এই তো লিভিংস্টোন! নিশ্চয়ই লিভিংস্টোন! আর কেউ হতেই পারে না; তবে কিনা - অন্য কেউ হতেও তো পারে - পশ্চিম উপকূলের থেকে আগত কেউ - বা হয়তো তিনি বেকার! উঁহু; বেকারের মুখে তো সাদা দাড়ি নেই। কিন্তু এবার আমাদের দ্রুত এগোতে হবে, পাছে আমরা আসছি শুনে তিনি আবার পালিয়ে যান। ... ...
আচ্ছা জেঠিমা, আমরা তিনজন যে মোহনবাগানের মেয়ে হলাম, সেটা কি ধোপে টিকবে? কেন? টিকবে না কেন? আমরা যে খুব ইলিশ খাই। তাতে কী? মোহনবাগানীরাও ইলিশ খায়, ইস্টবেঙ্গলীরাও চিংড়ি খায়। তাতে ভালবাসা কমে না। লাবণ্যর হাতের একটা রেসিপি করতে পারি, খাবি? কৃষ্ণার কাছে শিখেছি, কাঁচা ইলিশের ঝাল। মা, রান্নাটা কিন্তু দেখব, কীভাবে কর। কুমুদিনী-লাবণ্য-কৃষ্ণা-শারদা – আর একটা নাম জুড়ে যাবে রঞ্জাবতী। মানুষ থাকবে না, রান্নার ঘরানা চলতে থাকবে। কাল কাঁচা ইলিশের ঝাল করলে পরশু ডাব চিংড়ি করবে জেঠিমা। ঠিক হ্যায়, করতেই হবে। আজ ইস্টবেঙ্গলী ইলিশ রান্না হলে কাল তো মোহনবাগানী চিংড়ি রান্না হতেই হবে। তাহলে আমি ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে দিচ্ছি, কাল, পরশু বাড়িতে ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের নামে ফুটবল – খাদ্য উৎসব হবে, অরগানাইজড বাই আওয়ার টু প্রিন্সেসেস। ... ...