সিএএ বা নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন হিন্দু-মুসলমান কাউকেই সুরক্ষা দেওয়ার আনা হয়নি। এই আইন বিজেপির জুমলাবাজী ছাড়া আর কিছুই নয়। আসামে বিজেপি অসমীয়াদের বলছে তাদের সুরক্ষা দেবে, আসাম চুক্তির ছয় নং ধারা বাস্তাবায়িত করবে এবং তা করছেও। ওদিকে বাঙালি হিন্দুদের বলছে মুসলমানদের দেশ থেকে তাড়ানো হবে, হিন্দুদের কোনো ভয় নেই সিএএ দিয়ে তোমাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে হিন্দু বাঙালির কপালে সেই বিদেশী নোটিশ, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল এবং ডিটেনশন ক্যাম্প। এনআরসি আর ডি-ভোটারের কবলে পড়ে মুসলমানরা যত না ভুগছে তার থেকে তিনগুণ বেশি ভোগান্তি হচ্ছে হিন্দুদের। ... ...
এই অভিযোগের স্তূপের মধ্যেই নতুন করে কাল ভাইরাল হয়েছে একটি বিস্ফোরক ভিডিও। আলাদা করে তার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু নানা সংবাদমাধ্যম ইতিমধ্যেই সেটি প্রকাশ করে চলেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে উত্তেজিত জনতার জমায়েত, গুলির আওয়াজ, আর্তচিৎকার এবং রক্তাক্ত অবস্থায় কয়েকজনকে পড়ে থাকতে। এখনও পর্যন্ত এর সত্যতা কেউ চ্যালেঞ্জ করেননি। ভিডিওটি যদি সত্যি হয়, তো কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলার কোনো চিহ্ন সেখানে দেখা যাচ্ছেনা। শোনা যাচ্ছে গুলির আওয়াজ। তা একতরফা। কাঁদানে গ্যাস বা লাঠি চালনার কোনো চিহ্ন নেই। সামান্য বা একেবারেই বিনা প্ররোচনায় গুলি করে মারা হয়েছে সাধারণ ভোটারদের। ... ...
একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৪ বছরের প্রতিবন্ধী কিশোর শ্রীমান মৃণাল হক বলেছে যে, স্থানীয় বাজারের মধ্যে তাকে টুঁটি চেপে ধরে সিআইএসএফ কর্মীরা লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। মারের চোটে সে মাটিতে পড়ে গেলে কিছু গ্রামবাসী প্রতিবাদ করায় সে সিআইএসএফ কর্মীদের হাত থেকে ছাড়া পায়। আমাদের জেলা মানবাধিকার আধিকারিক নিহতদের পরিবারের সাথে কথা বলেছেন। জানা গেছে, শ্রী নূর ইসলাম তাঁর ৫ সদস্যের পরিবারের এমকমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন প্রবাসী শ্রমিক। ৮ এপ্রিল ২০২১ তিনি দেশে ফেরেন ভোট দেওয়ার জন্য। বুকে গুলি লাগা অবস্থায় মাথাভাঙ্গা সাবডিভিশনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করা হয়। শ্রী মণিরুল জামাল তাঁর ৭ সদস্যের পরিবারের মুখ্য রোজগেরে ছিলেন। তিনিও একজন প্রবাসী শ্রমিক ছিলেন। ৯ এপ্রিল ২০২১ গ্যাংটক থেকে নিজের গ্রামে ফেরেন ভোট দেবার জন্য। শ্রী চাইমূলও তাঁর ৫ সদস্যের পরিবারের প্রধান রোজগেরে ছিলেন। শ্রী হামিদুল মিয়াঁ তারঁ ৪ সদস্যের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। তাঁ স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। ... ...
মুশকিল হচ্ছে দু'জায়গায়। এমনটা নয় যে আমাদের রাজ্যে খুব শান্তিপূর্ণ ভোট হয় এবং স্থানীয়রা বুথে গিয়ে ঝামেলা করেনা। কিন্তু, শীতলকুচির ঘটনায় যতগুলো ন্যারেটিভ বাজারে ঘুরছে তাতে আমরা মেনেই নিচ্ছি যে স্থানীয়রা ওখানে ঝামেলা করেছিল। এখন অব্দি কোনো প্রমাণ নেই। স্থানীয়রা এরকম কোনো ঘটনার কথা স্বীকার করছেন না। কিন্তু আমরা, ব্যানানা রিপাবলিকের ম্যাঙ্গো পাবলিকেরা প্রকারান্তে মেনে নিচ্ছি যে তারা ঝামেলা করেছিলেন। এবং এরাজ্যে যেহেতু, সংখ্যালঘুদের একটা অংশ বিভিন্ন পলিটিক্যাল পার্টির মাসলম্যান হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাতে এ ভাবনা আরও প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। সংখ্যালঘুদের মাসলম্যান হিসেবে ব্যবহার করার তালিকায় মুসলিম বিদ্বেষী প্রচার চালানো বিজেপিও পিছিয়ে নেই। চব্বিশ পরগণার ত্রাস ফিরোজ কামাল গাজী ওরফে বাবু মাস্টার এইমুহুর্তে বিজেপির সম্পদ। প্রসঙ্গত, আমাদের রাজ্যের সংখ্যালঘুরা প্রায়ই গলা ফাটান যে তাদের রাজনৈতিক দলগুলি ব্যবহার করে থাকে এবং অভিযোগটি অসত্য নয়। সমস্যা হচ্ছে তারা নিজেরা কোন যুক্তিতে নিজেদের এতদিন ধরে ব্যবহৃত হতে দিচ্ছেন তার কোনো সদুত্তর পাওয়া যায় না। ... ...
ন্যায়বিচারের প্রাথমিক শর্ত হল, যেকোনো আদশের পশ্চাতে যে কারণগুলো আছে তা ব্যাখ্যা করা। সকলকে জানানো। কারণ কমিশন নাগরিকের সমক্ষে দাঁড়িয়ে, মানুষের নজরদারির মধ্যে দাঁড়িয়ে কাজ করার অন্যতম স্বাধীন সংস্থা।কাজের স্বচ্ছতা তাই আবশ্যিক শর্ত। তা অনুসৃত হওয়ার মধ্য দিয়েই কমিশনের মত স্বাধীন সংস্থার জনগ্রাহ্যতা, বিশ্বাস, আস্থা গড়ে ওঠে। দায়বদ্ধতাহীন ক্ষমতা স্বেচ্ছাচারের জন্ম দেয়। ... ...
নিরস্ত্র জনতার উপর গুলি চালানো এবং হত্যার পর দেশের সর্ব বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতাদের এই সব মন্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর তা নিয়ে নীরব থাকা, একটাই কথা বলে। সেটা হল, ঘৃণা এখন ভারতে শাসকের রাজনীতির সব থেকে জরুরি উপাদান। এর সঙ্গে মিলিয়ে নিন আরও কয়েকটি তথ্য। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন আন্দোলনকারীদের পোশাক দেখে চিনতে। মোদী মন্ত্রিসভার এক সদস্যকে শাহিনবাগকে উদ্দেশ্য করে জনতাকে দিয়ে বলাতে দেখা গিয়েছিল, ‘গোলি মারো সালোকো’। মোদী মন্ত্রিসভারই আরেক মন্ত্রীকে দেখা গিয়েছিল আখলাখ খুনে গ্রেফতার হওয়া এক অভিযুক্তের স্বাভাবিক মৃত্যুর পর, সেই শবযাত্রায় উপস্থিত থাকতে, যেখানে হত্যায় অভিযুক্তের ওই মৃতদেহ জাতীয় পতাকায় ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। সেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর টুইটে তাকে বলা হয়েছিল ‘শহিদ’। এই সব কিছু একই সুতোয় বাঁধা। আর এই মুহূর্তে তারা সবাই সক্রিয় শীতলকুচিতে। ... ...
সাধারণভাবে বিজেপিকে হারানোর আহবান এবং নিজেদের প্রার্থী বা অন্য কমিউনিস্ট দলগুলিকে ভোট দেওয়ার আহবান আমাদের বিচারে স্ববিরোধী নয়। কারণ বিজেপিকে হারানোর পাশাপাশি আমাদের কমিউনিস্ট বিপ্লবী শক্তিকে নির্বাচনী সংগ্রামেও টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব রয়েছে। কারণ শেষ বিচারে ফ্যাসিবাদী বিজেপিকে রাজনৈতিকভাবে হারানোর ক্ষমতা কমিউনিস্ট বিপ্লবীদেরই রয়েছে। অন্যান্য মূলধারার দলগুলিকে ব্যবহার করে বিজেপিকে সাময়িকভাবে ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে মাত্র, কিন্তু চূড়ান্ত অর্থে পরাজিত করা সম্ভব নয়। ... ...
অর্থবল, মিথ্যাচার শেষ হাসি হাসবে নাকি আমাদের ভাষা, প্রগতিশীল ঐতিহ্যের, সহাবস্থানের অহংকার, আমাদের শিরদাঁড়া সোজা হবার পথ বেছে নেবে, তা সময়ে বোঝা যাবে, তবে দেশ জুড়ে বিজেপির পরাক্রমের তত্ত্ব খ্যাখ্যা হাস্যরবে পরিত্যাগ করুন। আর বিজেপি (আদি) ও বিজেপি (নব্য) সততার দাবি করলে, কাটমানির দুঃখ ভোলার জন্য তিনদিন বিশ্রাম নিয়ে, অট্টহাস্যের সঙ্গী উপযুক্ত ঘোড়া ভাড়ায় পেতে ময়দানে, ভিক্টোরিয়ার সামনে থেকে ঘুরে আসুন। ... ...
আমরা আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতির নিরিখে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিজেপি বিরোধী এক শক্তি হিসেবে দেখি। সিপিএম যেভাবে তৃণমূল ও বিজেপিকে একাকার করে বিজেমূল নামে একটি কাল্পনিক দল তৈরি করে ফেলেছে বা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে আগে তৃণমূলকে হারাতে হবে এমন এক অদ্ভুত রাজনৈতিক উপসংহার টেনেছে আমরা তাকে ভ্রান্ত মনে করি। ... ...
জলপাইগুড়ির রূপান্তরকামীদের বিষয়টি কানে গিয়েছে খোদ নারী ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজার কানেও। তিনি জেলাশাসককে চিঠিও দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে। দু তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আপাতত, ভোট হওয়া বা না হওয়া কোন দিক থেকেই রূপান্তরকামীদের আশা প্রত্যাশার যোগ বিয়োগের হিসাব নেই বললেই চলে ... ...
মানবোন্নয়ন হলেই কি বিনিয়োগ হুড়মুড় করে চলে আসবে? না। বিনিয়োগ আসে দশরকম কারণে। খয়রাতি বেশির কারণে বিনিয়োগ কমবে না। বিনিয়োগ যে কারণে কমবে সেখানে প্রশাসনিকতার একটা ভূমিকা আছে। প্রশাসনিকতা কতটা সক্রিয় তার উপর অনেকটা নির্ভর করছে এবং অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের মানসিকতার দিক থেকেও দেখতে হবে। একটা ইতিহাস থাকে অনেক সময় এবং সেখানে ইতিহাসের কতকগুলো মিথ, সেগুলোও চালু থাকে। এখানে যেমন চালু ধারণা শ্রমিক অসন্তোষ অনেক বেশি বলে বিনিয়োগ হত না, হয় না। আমরা আমাদের গবেষণা থেকে দেখিয়েছি যে শ্রমিক অসন্তোষটা যে ছিল না তা নয়। কিন্তু বিনিয়োগ কমে যাওয়ার অন্য অনেকগুলো কারণ ছিল। এগুলো নানান রকম গবেষণা থেকে আজকাল উঠে আসছে। কিন্তু মানুষের মনে এই যে অতিকথাগুলো ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে, সেগুলোর জন্য কিন্তু আমাদের একটা প্রধান বাধা হচ্ছে, জনজীবনে যেগুলো প্রয়োজনীয় জিনিস, সেগুলো নিয়ে আমরা খুব একটা কথা বলে উঠতে পারছি না। এইটা কিন্তু আমাদের একটা ধারাবাহিক লড়াইয়ের ব্যাপার, আমি বলব। এই মিথগুলো, এই ভ্রান্ত ধারণাগুলো, এগুলোর সঙ্গে লড়তে হবে। একটু পরিসংখ্যান মিশিয়ে, মানুষজন যেগুলো নিয়ে চর্চা করেন, সেগুলোর ভিতরে ঢুকে একটু একটু বোঝার চেষ্টা করা। ... ...
পরিশেষে এসেছে আমার আপনার নাম। হ্যাঁ, নাগরিক সমাজ। ব্যক্তিগতভাবে যে কথাগুলো আমি সুযোগ পেলেই আপনাদের গেলাবার চেষ্টা করি, সেই আমার মন কী বাত- পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে জনসাধারণকে যুক্ত করা। বিশ্ব জুড়ে এখন ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার কথা বলা হচ্ছে। শুধু সরকার, কমিটি আর কমিশন নয়, পরিবেশ বাঁচানোর লড়াই লড়তে হবে আমাদের সবাইকে। তাই বাম জোটের ইশতেহারে পরিবেশের নীল নকশা দেখে আশান্বিত হলাম। ... ...
২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সংসদে প্রথম ইলেক্টোরাল বন্ড বাজারে আনার কথা বলেন। অবশ্য এর জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সম্মতির দরকার ছিল। জানুয়ারির ২৮ তারিখই অর্থমন্ত্রক থেকে ই- মেইল যায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তদানীন্তন ডেপুটি গভর্নর রামা সুব্রমনিয়ম এবং সেকেন্ড ইন কম্যান্ড উরজিৎ প্যাটেলের কাছে। আরবিআই-এর তরফে দুদিনের মধ্যে জানানো হয়, এই ইলেক্টরাল বন্ড অনেকটা বেয়ারার বন্ডের মতো, যেখানে মালিক হবেন বেনামী, শেষমেশ রাজনৈতিক দলের হাতে কে বা কারা টাকা তুলে দিল তা জানার উপায় থাকছে না। ... ...
বাস্তবে কী হয় সেটা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা গোপীনাথ মুন্ডে। ইন্ডিয়া টুডের খবর অনুসারে, ২০১৩ সালে তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন যে ১৯৮০ সালের লোকসভা নির্বাচনে তার খরচ হয়েছিল মাত্র ৯০০০ টাকা আর ২০০৯ সালের নির্বাচনে তাঁর কেন্দ্রে তিনি ৮ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন। আলোড়ন উঠেছিল তাঁর এই কথায়। ২০০৯ সালে তাঁর কেন্দ্রে খরচের উর্ধ্বসীমা ছিল ২৫ লাখ টাকা। মজা এই যে, নির্বাচনী কমিশনের কাছে মুন্ডের খরচের যে হিসেব জমা দেওয়া হয়েছিল, তাতে তাঁর নির্বাচনী খরচ বলা হয়েছিল মাত্র ১৯ লাখ টাকা। ... ...
বহু মানুষ আছেন যাঁরা নিজেদের দাবিগুলো মুখ ফুটে বলেই উঠতে পারেন না, এঁদের মধ্যে অনেকে আছেন যাঁদের দাবি বিষয়ে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। দুর্ভাগ্যের কথা, আমরা যারা নিজের এবং অন্যের মন কী বাত নিয়ে খুব বাতচিত করি, তাদের কাছেও এই দাবি তুলতে না পারা অংশটার গুরুত্ব খুব একটা স্বীকৃতি পায় না। ... ...
বিজেপি কোনও রাজ্যে নির্বাচনে যদি হেরেও যা্য়, তবু বিজেপি সেখানে সরকার গড়তে পারে। বিজেপি সম্পর্কে এখন বলা হয়, জিতলে আমরা সরকার গড়ব, আর হারলে, তোমরা বিরোধী আসনে বসবে। মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, গোয়া সহ বেশ কিছু রাজ্যে হেরে গিয়েও সরকার গড়ে বিজেপি প্রমাণ করে দিয়েছে, ভোট বা নির্বাচন একটা ধাপ মাত্র, সরকার গড়ার জন্য ভোটে জিততেই হবে, তার কোনও মানে নেই। ... ...
আসামে এমন কোনও রাজনৈতিক দল নেই যারা এনআরসি বিরোধী। এবং বিজেপি বাদে বাকি সবাই সিএএ বিরোধী। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার (বিজেপির সহযোগী বা প্রতিযোগী) সব রাজনৈতিক দলই সিএএ বিরোধী, কারণ সিএএ এনআরসি-র মূল অবস্থানটিকেই চ্যালেঞ্জ করে। বাঙালি হিন্দুরা সিএএ-র পক্ষে, কিন্তু বাঙালি মুসলিমরা বিপক্ষে। বরাক উপত্যকার প্রায় সব রাজনৈতিক দল সিএএ-র পক্ষে কিন্তু এনআরসির বিরুদ্ধে। ... ...
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের লক্ষ্যে, সেই ১৯১৯ সালে। জাতীয়তাবাদী এবং বরাবর দেশভাগের বিরুদ্ধে থাকা এই গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের কথা দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাঙালির ইতিহাসে উল্লেখিত না হওয়ায় বেশিরভাগ বাঙালি তাঁদের অবদানের কথা জানেন না। যদিও পশ্চিমবঙ্গে জমিয়তের লক্ষাধিক সদস্য এবং কয়েকশ মাদ্রাসা আছে। বহু হিন্দু বাঙালি জমিয়াতের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামিকে গুলিয়ে ফেলেন। ধরে নেন এটি বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো সংগঠনের শাখা। বিড়ম্বনার কথা এই যে, বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে রামকৃষ্ণ মিশন সেক্যুলার বুদ্ধিজীবীদের কাছে সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষা প্রসারের মর্যাদা পেয়ে থাকেন, কিন্তু, সেই সমাজে একই রকম কাজে যুক্ত থাকা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ সাম্প্রদায়িক হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যায়। আমাদের দুর্ভাগ্য ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে জমিয়তের ভূমিকা নিয়ে পাঠ্যপুস্তকে একটি লাইনও খরচ করা হয়নি। ... ...
চে-র টাট্টু খোদাই একজন অসৎ মানুষ বিজেপিতে গেছে বলে এতো এতো খিল্লি! তার মতোই আর কয়েকজনও বিজেপিতে গেছে। কিন্তু লেসার ইভিলে যে পাল্লা অনেক ভারি! পয়সা ছড়িয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে কিনে নিলে, ট্রেন্ড দেখে যার সম্ভাবনা খুবই বেশি বলে সবাই বলছে, তখন কী হবে? ... ...
এ রাজ্যে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা না ঘটা নিয়ে আমরা গর্ব অনুভব করে এসেছি, এবং সেটা সঙ্গত কারণেই। কিন্তু, হিংসার ঘটনা না ঘটা মানেই সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ দূর হয়ে গেছে – এই ভাবনার মধ্যে অতি সরলীকরণ থেকে গেছে। বরং বলা চলে, বাংলার রাজনীতি, এবং রাজনীতি নিয়ে বিদ্যাচর্চা ও অন্যান্য আলোচনায় সামাজিক বিভাজনে ধর্ম, জাতি, আঞ্চলিকতা ইত্যাদি প্রসঙ্গগুলোকে সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এই এড়িয়ে যাওয়ার পিছনে একটা প্রধান কারণ হচ্ছে মানুষে মানুষে দূরত্ব বেড়ে চলা – সেটা আর্থ-সামাজিক দিয়েও যেমন বেড়েছে, তেমনি সাংস্কৃতিক দিয়েও বেড়েছে। ... ...