কাবুল থেকে ফিরেছেন এক বাঙালি ভদ্রলোক। ইশকুলে পড়াতেন। ফিরে আসার পর টিভিতে অনেক কিছু বলেছেন। এক কথায় যার মর্মার্থ হল তালিবান জমানা যতটা ভয়াবহ ভাবা হচ্ছে তা নয়। এ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। হবারই কথা। কারণ আমরা কেউই কদাচ কাবুল যাইনি। আমাদের ভাই-বেরাদর-ছোটোমেসো-বড়পিসি কেউ আফগানিস্তানে থাকেনা। আমরা মূলত পরের মুখে ঝাল খাচ্ছি, আর দূর থেকে লিংক ছোঁড়াছুঁড়ি করে বিপ্লব কিংবা সলিডারিটি দেখাচ্ছি। আমি তো ব্যক্তিগতভাবে মুজতবা আলি বা সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এই প্রথম একজন বঙ্গসন্তানের নাম শুনলাম যিনি আফগানিস্তান গেছেন। ফলে উত্তেজনা স্বাভাবিক। সমস্যা হচ্ছে, ভদ্রলোকের যে ভঙ্গীতে সমালোচনা হচ্ছে, সেটা নিয়ে। ওঁর বক্তব্যে কী আছে? উনি বলেছেন, উনি কাবুলে বিশেষ ... ...
সংস্থাটির সঙ্গে আমি ২০০৭-২০০৮ থেকে জড়িত। মূলতঃ শ্রীযুক্তা সুপ্রিয়া রায়চৌধুরীর নেতৃত্বে কয়েকজন মানুষ এই সংস্থার কাজ আরম্ভ করেন। মূলতঃ উত্তর পূর্ব কলকাতায় দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের পড়াশুনা করানো হয় ড্রপ আউট কমানোর লক্ষ্যে। এছাড়া ইঁটভাটা গুলিতে যে পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারগুলি আসেন তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়ানোর কাজ করা হয় সুযোগ পরিস্থিতি অনুমতি অনুযায়ী। এবছর লকডাউনের সময় যথাসাধ্য সাহায্য করা হয়েছে। ... ...
সকাল ৮:৩০ এ ক্লাস শুরু হয়েছে খিলখিলের। নিজের ৯টা থেকে অফিস। যদিও বাস ধরার তাড়া নেই। তাও রেডি তো হতে হবে। প্রায় দেওয়ালের সাথে মিশে গিয়ে অরিন্দম টাওয়ালটা জড়িয়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে কোনোমতে সুরুৎ করে ছোট ঘরটায় ঢুকে গেল। ডাইনিং টেবিলে খিলখিলের স্কুল চলছে, চশমা আঁটা তরুনী দিদিমণি সিভিক সেন্স পড়াচ্ছেন। ... ...
বিশ্বজুড়ে আজকাল যখন তখন কেউ না কেউ বক্তব্য রাখছেন। কাজের হোক, অকাজের হোক। কি আসে যায়! বড়, মেজ, সেজ, ন, ফুল, ছোট, আরোও ছোট, এমনকি কুট্টি সাইজের নেতারা তো বক্তব্য রাখেনই । চিরকাল তাই হয়ে আসছে। আজকাল মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সকলেই মানে রাম, শ্যাম, যদু, মধু , আমার আপনার মতো সকলেই যারপরনাই সামাজিক হয়ে উঠেছেন। সকালে বড়দা বললেন তো তাঁর কথাকে সমর্থন বা প্রতিবাদ করে মধুবাবু বা বিবি একটা আধটা ফ্যাঁস বা ফোঁস করলেন। ব্যস্ হয়ে গেল। ফুলদিদি লাফালাফি করে মিডিয়ার পালে জোরালো হাওয়া ঠেলে দিলেন। ব্যস, মিডিয়াকে দেখে কে তখন? রমরমিয়ে বাড়ছে TRP। সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম ওদিকে। ... ...
এই সেই বাড়ি, যেখানে ডায়পার পরে রবীন্দ্রনাথ হামাগুড়ি দিয়ে বেড়িয়েছেন চত্বর থেকে চত্বরে। হাঁটু ছড়ে গেছে, ট্রাইসেপ টনটন করেছে, বেবি ফ্যাট ঝরে গেছে। কিন্তু কালো বলে কেউ তাঁকে কোলে তোলেনি। বড় হয়ে ক্ষোভে, দুঃখে, অভিমানে রবীন্দ্রনাথ বাড়ি ছেড়েছিলেন। খালি পায়ে হেঁটে চলে গিয়েছিলেন শিয়ালদহে, কাটিয়েছেন উদ্বাস্তু জীবন। তখন জায়গাটাকে শিলাইদহ বলা হত। বাংলার ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথই প্রথম উদ্বাস্তু। এক নম্বর প্লাটফর্মে বসে মনের সমস্ত ক্ষোভ উজাড় করে রবীন্দ্রনাথ লেখেন তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস গোরা। সেখানে তিনি দেখিয়েছেন, যে, ফরসা হলেই ছহী হিন্দু হওয়া যায়না। যতই পুজো কর, আচারবিচারের ভড়ং কর, শেষমেশ জানতে পারবে তুমি বিধর্মী। এখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় আরেক কালোপুরুষের ... ...
সব মরণ নয় সমান। আফগানিস্তান নিয়ে দুনিয়া চিড়বিড়িয়ে অস্থির, ওদিকে শিশিরের শব্দের মতো চুপচাপ এসব প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চলতেই থাকে সৌদি টৌদিতে। ২০১৬ তেই সেখানে শুভ নববর্ষের সূচনা হয়েছিল একসঙ্গে জনা পঞ্চাশ লোকের গণজবাই দিয়ে। এদের মধ্যে জনা চারেককে মারা হয়েছিল গুলি করে, বাকিদের স্রেফ মুন্ডু কেটে খাল্লাস। খতমের লিস্টিতে এক দিকে যেমন রয়েছেন 'সন্ত্রাসবাদী'রা, অন্যদিকে আছেন জনপ্রিয় শিয়া নেতা আল-নিমর, যিনি আর কিছু না, স্রেফ সংখ্যালঘু শিয়াদের সমানাধিকার চেয়েছিলেন। না, তালিবানদের কাণ্ড না, রীতিমত সৌদি আদালতের নির্দেশেই এই মুন্ডু কাটার কারবার।আঁতকে ওঠার কিছু নেই, ও দেশে ক্ষতিকর লোকেদের ধরে প্রকাশ্যে মুন্ডু কেটে নেওয়াই দস্তুর। এই পবিত্র কাজের জন্য দেশের রাজধানীতে রয়েছে ... ...
আমার বন্ধু, এপারে চট্টগ্রামের ফটোসাংবাদিক দিদার আর নেই; ভাবতেই বুকের ভেতর শেল বিঁধে যায়!কিছুক্ষণ আগে তার মৃত্যু সংবাদ পেলাম! করোনাক্রান্তিতে যেন কত সহজ এই সব মহাপ্রস্থান! দিদারের পবিত্র মুখচ্ছবিতে এক লহমায় মনে পড়ছে কত শত স্মৃতি, কত হাসি গান, ফেনিল পানপাত্র, প্রাণের উচ্ছ্বাস! রাঙামাটির পাহাড়ে সেই ২০০০ সালে তিন বিদেশী অপহরনের সংবাদ আমরা মাসখানেক ধরে করেছি। এরপর তার সাথে অনেক নৈকট্য, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দৈনিক যুগন্তরে দুই দফায় তিনি আমার সহকর্মি ছিলেন, কতবার চট্টগ্রামে তার বাসায় আড্ডা জমিয়েছি! বড্ড অকালে তার এই চলে যাওয়া! কেন মেঘ আসে, হৃদয়ও আকাশে, তোমারে দেখিতে দেয় না ❤️ ... ...
জানলা খোলা ছিল, দেবযানী চা খেতে বসেছিল, কিছু পুরানো স্মৃতি মনের কোনে উঁকি দিচ্ছিল। অমলের জন্যও চা এনেছিল। জানলা দিয়ে ভিজে হাওয়া উড়ে আসছিল।
বাংলা কবিতায় ঘুরে ফিরে এসেছে উদ্বাস্তু বাঙ্গালী জীবনের হাহাকার।
বহুদিন আগে, আনন্দবাজার পত্রিকার উত্তর সম্পাদকীয় বিভাগে কবীর সুমন একটি সিনেমায় পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে গানটির শুরুতে একটি হু লা লা ব্যবহার নিয়ে লিখেছিলেন, একজন সঙ্গীত পরিচালকের উদ্দেশে - হাওয়া টা পাগল, আপনি বা আমি পাগল নই। এবং আরো অনেক কিছু। আমি নিশ্চই একা নই। অনেকেই ভাবছেন, কেনো এরম ভাবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন অঞ্জনবাবু। উনি তো অঞ্জন চৌধুরী নন। OTT র সুবিধা হলো যে সবাই দেখবে। আজ না হয় কাল দেখবে। পছন্দ না হলেও ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হিসেবে দেখবে। লোকের সাথে কথা বলতে গিয়ে মুখেন মারিতং জগৎ করতে গেলেও দেখবে। চানাচুরের মত। সকাল বিকেল এক গরস করে না হলে চলে না। তাই যদি ... ...
গুরুর অসীম কৃপায় খেরোর খাতায় আঁকিবুকি কাটা শুরু করছি। শিষ্য তার সাফল্য প্রার্থনা জানাচ্ছে।
একটা ছোটো বিষয় পরিষ্কার করা দরকার হতে পারে। আমি সিপিএম সমর্থক হিসেবে শ্রমজীবি ক্যান্টিন পরিচালনার কাজে জড়িয়ে আছি। গত লকডাউন থেকেই অনিয়মিত ভাবে এ কাজ পাড়ায় চালাচ্ছেন সিপিএম-এর সদস্য সমর্থকরা। তখন ছিলাম এখনও আছি। যা প্রয়োজন তার তুলনায় কিছুই করতে পারি নি এবং ব্যক্তিগত সামর্থ্যের শেষ সীমায় পৌঁছেছি, দুটি কথাই সত্যি। প্রথমটিই বেশি সত্যি, তবে নির্মম না, কারণ কিছু লোক শ্রমের মূল্য পান না তার চেয়ে নির্মম কিসু নাই। আমার রাজনৈতিক কাজকর্ম রাজনৈতিক ভাবে বামেরা কোণঠাসা হবার পরে আরো বেড়েছে। এতদ্বারা আমি মহান প্রমাণ হল না অবশ্যই। ... ...
নিস্তব্দ কনফারেন্স রুম। আশফাক আলীর শরীর থেকে ঘাম ঝড়ছে। স্ত্রী আয়েশা পাশেই বসে আছে। আজকের এই পার্টির কাছে মাল বেচঁতেই হবে যে করেই হোক। এর আগেও কয়েকটা পার্টি দেখে গেছে, পড়ে জানাবে বলে আর জানায়নি। ফোন দিলেও ধরে না হারামজাদারা। একবার তো এক পার্টি প্রায় ফেঁসে গিয়েছিলো। আশফাক আলী ভালো জাল বিছিয়ে ছিলো। পার্টিও কথা দিয়েছিলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কেনেনি বদমাইশের বাচ্চা। আশফাক আলী বারবার ঘড়ি দেখছে। স্ত্রীর দিকে চিন্তিত মুখে তাকাচ্ছে। বারবার পানি খাচ্ছে। ম্যানেজার এসে খবর দিলো পার্টি এসে গেছে। আশফাক আলী তরতরিয়ে ঘামতে লাগলো। স্ত্রী রোকেয়া আর ছেলে সমসের কে নিয়ে উছমাত মোল্লা কনফারেন্স রুমে প্রবেশ ... ...
এইবার সুগতবাবুর এক পিস গল্প লিখি। গল্প মানে সত্য ঘটনা। ক্লাশ হচ্ছে হেডুর ঘরের ঠিক নীচে। স্যার ইতিহাসের কিছু একটা পড়াচ্ছেন। হাই ফাই নোটস দিচ্ছেন। ভালো ছেলেরা মন দিয়ে নোট নিচ্ছে আর "স্যার আর এক বার বলুন" "আর এক বার বলুন" করছে। আমি এবং আরও বেশ কিছু ওঁচা ছেলে খাতার পেছন দিকে ট্যালি মার্ক দিয়ে স্যার কটা 'কেমন' বললেন গুনছি। ... ...
#rebuildbengalleft বিজেপির রাজ্য সভাপতি তাঁর নিজের দলের কাউন্সেলর এর বাড়ির পিছনে বা সামনে বা অন্তত অনতিদূরে নাগরিক দের মলত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন। এরকম সিভিক সলিউশন সত্যিই বিরল।আরেকজন আদ্যপান্ত সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ, রাজনীতি থেকে চলে গেলেও, সাংসদ পদটি ছাড়তে পারছেন না। একজন রীতিমত শিক্ষিত বিজেপি নেতা, তিনি আবার রাজ্যপাল পদ অলঙ্কৃত করে থাকেন, নিয়মিত কদর্য আক্রমণ করেন সমাজের নানা অংশের মানুষকে। আর দুজনের অপূর্ব রূপকথার মতো শাসন কালে দাড়ি ও টাক ফ্যাশনেবল হওয়া ছাড়া আর কিছু বিশেষ দেশের কাজ হয় নি, যা হয়েছিল তা বানচাল করা চলছে। আপাদমস্তক স্বৈরাচারী এবং মিথ্যাচারী। তাঁদের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী হুমকি এবং এনকাউন্টার দিয়ে রাজ্য চালান। বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূল জোর ... ...
এক একটা ঘটনা ধূপের গন্ধের মতো। ধূপের গন্ধ যেমন ঠাকুর ঘর মনে করায় তেমন বর্তমানে ঘটে চলা কোনো ঘটনা হাত ধরে নিয়ে চলে পুরোনো কোনো স্মৃতির অলিন্দে।জগতের আনন্দজজ্ঞে সবে মাত্র সমাপ্ত হওয়া অলিম্পিক্স সেই ধূপের গন্ধ। অলিম্পিকের মানে বুঝতে আশির দশকের শিশুর ক্লাস সেভেনে উঠতে হয়েছিল। আর যেমনি বোঝা অমনি শুরু হল আয়োজন। এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার অধরা থেকে যাবে তা তো হয় না। মনে আছে আমাদের পাড়ার যে খেলার গ্ৰুপ ছিল সেখানে সদস্য হতে গেলে বয়সের কোনো সীমারেখা রাখা হত না। তা না হলে সদস্য বে-দল হতে পারে। প্রত্যেক সদস্যই নিজ নিজ যোগ্যতায় স্বমহিমায় থাকতেন।সেই গ্ৰুপে একবার অলিম্পিক্সের আয়োজন করতে ... ...
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একবার সস্ত্রীক রেল পথে ভ্রমণ করছিলের। এক যুবক অনেকক্ষণ ধরে তাঁর স্ত্রীকে দেখার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। বিষয়টা বুঝতে পেরে বঙ্কিমবাবু যুবকটিকে কাছে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, 'কী করা হয়?' ছেলেটি উত্তর দিল যে সে চাকরি করে এবং ত্রিশ টাকা মাইনে৷ বঙ্কিম হেসে বললেন, 'আমি সরকারি চাকরি করি৷ সঙ্গে বইও লিখি৷ হাজার দুয়েক রোজগার৷ সবই স্ত্রীর চরণে দিই। তাও মন পাইনে ভাই৷ ত্রিশ টাকায় সে মন কি তুমি পাবে?' যুবকটি লজ্জিত হয়ে তৎক্ষনাৎ প্রস্থান করে ... ...