লিটিল ম্যাগাজিন মেলা অর্থাৎ যেটা নন্দনে হয়েছিল আর এই কলকাতা বইমেলা অর্থাৎ যেটা সেন্ট্রাল পার্কে হচ্ছে। দুটোতে কয়েকটা জিনিস দেখে অবাক হলাম। কত ছোট ছোট পত্রিকা আছে। যাদের নামও হয়ত কোনদিন শুনিনি, দেখা তো দূর। নিজেরাই পাঁচ ছয়জন মিলে পত্রিকার টেবিলের আশে পাশে বসে মন খুলে আডডা দিচ্ছেন। পত্রিকা বিক্রির কোন লোভ তাদের চোখে নেই। এই উৎসবে সামিল হতে পেরেই তারা আনন্দে মেতে উঠেছেন। ... ...
আমাদের বাড়িটা কলকাতা লাগোয়া হয়েও এখনও গ্রাম। ছোটবেলায় ধান চাষ দেখেছি। কলাই চাষ হত আমাদের বাড়ির পেছনের মাঠে। বিকেলের নরম রোদে মায়ের সাথে বসে কলাই তুলে ঝুড়িতে ভরে রাখতাম। তারপর সেটা থেকে ডাল হত। মুগ ডাল। কিভাবে কলাই থেকে ডাল হত সেটা এখন আর মনে পরেনা। সে অনেকদিন আগের কথা। তখন আমরা দুই ভাই ছোট। আমার বয়স দশ-এগারো হবে, আর ভাই আমার থেকে চার বছরের ছোট। আমাদের বাড়ির পাশেই মণ্ডলদের পুকুর। তার পাশে অনেক খেঁজুর গাছ। একসময় সেই গাছের নিচে লাল পাকা খেঁজুর বিছিয়ে থাকত। মাছি ভনভন করে উড়ে বেরাত। তার পাশে একটা ডেঁফল গাছ ছিল। ... ...
দীর্ঘ এক সপ্তাহ বাড়িতে থাকার পর আজ অফিসে গেলাম। শরীর এখনও বেশ খানিকটা দূর্বল। কোভিড হয়নি যতদূর সম্ভব। তবে যে জ্বরটা হয়েছিল। ভয়ঙ্কর হয়েছিল। এক এক করে বাড়ির সবাইকে আক্রমণ করে, দু-দিন বিছানা সাপটা করে উনি আপাতত বিদায় নিয়েছেন।অফিসে পৌঁছালাম বটে, তবে আমাকে মালিক পরামর্শ দিলেন এখনও এক সপ্তাহ বাড়িতে থাকার। অগত্যা তল্পিতল্পা গুটিয়ে আবার ফিরে এলাম। বাসে উঠলাম এলগিন মোড় থেকে। রাজাবাজার - শিয়ালদহ মিনি। ভিড় সেরকম ছিলনা। আমি একেবারে শেষের সিটে গিয়ে জানালার ধারে বসলাম। আমার সামনের সিটে দুজন ছেলে বসেছিল। তারপর তাদের কথাবার্তায় বুঝলাম তারা দুজন একটা সমকামী কাপল। আর সেটা নিয়ে তাদের মধ্যে লুকোচুরির কোন ব্যাপার ... ...
‘‘দেখো, দুটি ডাল-ভাতের সংস্থান না রেখে বাংলাদেশে কেউ যেন সাহিত্য করতে না যায়।’’ এই কথাটা মন দিয়ে পড়লেন? হ্যা অবশ্যই পড়েছেন। যুগল উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে আছে মানে আরও ভালো করে পড়েছেন। কিন্তু বুঝেছেন কতখানি? না, আমি এসব কথা বলেছি ভাববেন না। কথাটি "পদ্মা নদীর মাঝি" বলেছেন। কথাটি "পুতুলনাচের ইতিকথা"-র সৃষ্টিকর্তা বলেছেন। হ্যাঁ, চেনেন নিশ্চয়? কথাটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন। ... ...
আসলে ছাড়তে হয়, সবাইকেই ছাড়তে হয়। না ছাড়লে জীবন চলেনা। কেমন ভাবে? বোঝালে বুঝবেন তো? নাকি স্বভাব খারাপ, অকর্মন্য, বেইমান, বদজ্জাত ছেলে তকমা দিয়ে কমেন্ট বক্স ভরাবেন? ভেবে দেখুন, আপনার স্কুল, কলেজের বন্ধুদের সেই গ্রুপ গুলো, টিউশনি যাওয়ার সেই রেঞ্জার সাইকেলটা, সেই অগোছোলো চুল ঠিক করা মেয়েটা সবাইকে সময়ের সাথে সাথে আমাদের ছাড়তে হয়। সেই টিনের বইয়ের বাক্স, সেই প্রিয় মাষ্টারদা অথবা প্রিয় শিক্ষিকা দিদি। কলেজের সেই ক্রাশ হাফ স্লিভ ব্লাউজ পরা ম্যাডাম। আমাদের ঘরের পিছনের সেই পুরানো আম গাছ। সেই পানা পুকুর। সেই আম কুড়ানোর কালবৈশাখী, সেই বৃষ্টির দিনের কইমাছ। সবাইকে ছাড়তে হয়। ভেবে দেখুন একটা মেয়ে তার বাপ-মায়ের সাথে তার বাইশটা বছর ... ...
সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে। বাস থেকে নেমে জাস্ট উদোর মত দৌড়াচ্ছি এলগিনের রাস্তায়। সামনে চোখ কিন্তু কেবলমাত্র অফিসের গেটটা চোখে ভাসছে। হঠাৎ কট করে একটা আওয়াজ। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলাম এমন কিছুর উপর একটা পা পড়েছে যেটা কিনা আমার শরীরের চাপে কিছুটা বসে গেছে। মূহুর্তে মনে পড়ে গেল ল্যান্ড মাইনের কথা। চারপাশটা অন্ধকার হয়ে এল। শান্ত হয়ে গেল চারিদিক। আশেপাশের উঁচু বিল্ডিং, পিচঢালাই রাস্তা, শপিং মল আর কিছুই নেই। শুধু শাল সেগুন গাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। শহরটা পরিনত হয়েছে একটা ঘন জঙ্গলে। জুতোটা তখনও চেপে আছে নিচের বস্তুটাকে। ... ...
ছোটবেলায় শুঁয়োপোকা দেখে একবার ভয় পেয়েছিলাম একজন শিক্ষকের সামনে। জোড়ে একটা হাঁকুনি মেরে তিনি বলেছিলেন "পুরুষ মানুষ তুই, ভয় পেতে নেই"। ... ...
ভেবেছিলাম ব্যাপারটা নিয়ে কিছু লিখব না। কারণ, এখন মনের কথা লিখলেই কেউ বলছে পদ্ম আবার কেউ বলছে ঘাস। তাদের বলতে চাই ওরে আমি মানুষ, কোন ফুল নই অথবা কোন অস্ত্রও নই। ... ...
আমার আর এলগিন রোডের সম্পর্ক ধীরে ধীরে আরও গাড় হচ্ছে। কয়েকদিন তাকে নিয়ে লিখতে পারিনি। তাই প্রতিদিন আমার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচায় এখন সে। তাই তার অভিমান ভাঙাতে আজ এই লেখা। ... ...
শাসকের জ্বালায় প্রজা / দড়িতে ঝুলে মরে ... ...