ইয়ে... ব্রিজ বানাও ! ঘর বানাও ! রোড বানাও ! ইঞ্জিনিয়ার লে লো বাবু। সস্তে মে লেলো...কিংবা,ওয়ে জ্বর সর্দি কাশি, অম্বল বুক জ্বলা সারাই... যে কোনো রোগ সারাই... সাথে ফ্রীতে দাঁত সারাই...কিংবা,মামলা দায়ের করবেন নাকি বাবু, মামলা ! সিভিল বা ক্রিমিনাল দুইই পাবেন.…. ভারী ছাড় পাবেন, মামলা করবেন নাকি…!কিংবা,বিবিএ এমবিএ লিবেন বাবু। এমসিএ বিসিএ লিয়ে লিন... সস্তায় মিলবে এমকম, এমএ... যতো খুশি তত নিন। কিংবা,হেই... ভাল ভাল উপন্যাস আছে। ছোটগল্প আছে। রম্যরচনা সস্তায় পাবেন। আর কবিতা নিন জলের দরে... ভাল ভাল সাহিত্য নিন... উপরে উল্লিখিত শব্দবন্ধগুলো ফেরিওয়ালার হাঁক বা ডাক। নব্বইয়ের দশকের শেষ ভাগে শোনা ফেরিওয়ালাদের ডাকগুলোকে মনে করুন। যাঁরা সত্তর আশির ... ...
সময়টা তখন খুব খুব কঠিন চলছিল। সদ্য চাকরিটা খুইয়েছি। পাঁচমাস হল জয়েন করেছিলাম। ছয়মাসে কনফার্মেশন। তাই আমার মত অনেকেরই ঘাড়ের ওপর খাঁড়া নেমে এসেছিল। আমাদের কোম্পানি প্রায় রাতারাতি অন্য একটি বড় কোম্পানির সঙ্গে মার্জ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বড় কোম্পানিটি কনফার্ম না হওয়া কর্মীদের অধিগ্রহণ করবে না। এটা তাদের একটি সিদ্ধান্ত। যেটি আমাদের কোম্পানি মেনে নিয়েই অধিগ্রহণ করায় সায় দিয়েছিল। তাই আমাদের কিচ্ছু করার ছিল না। নির্বাক দর্শকের মত বলি হওয়ার দিন গুনছিলাম। বড় কোম্পানিটি আমাদের বেরিয়ে যাওয়ার জন্যে পঁয়তাল্লিশ দিন সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিল। উক্ত দিনের মধ্যে রিজাইন করে দূর হয়ে যাও। রোজ সেজেগুজে অফিস যেতাম। মুখ চুন করে টুকটাক কিছু ... ...
'বইপ্রেমী’, ‘বইপোকা’ বিশেষণ গুলো ভীষণরকম পরিচিত। উপযুক্ত বিশেষ্য ব্যতীত বিশেষণগুলি অস্তিত্বহীন। পঞ্চ ইন্দ্রিয় খোলা রাখলে খোঁজ পাওয়া যায় এমন অনেক বইপ্রেমীদের যারা বই পড়া এবং সংগ্রহ করাকে একপ্রকার নেশার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন! আজ থেকে ১২-১৩ বছর আগে একটি সর্বভারতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয় ছিল কলকাতার প্রাইভেট লাইব্রেরির সন্ধান। সেখানে মোট তিনজন ব্যক্তির কথা তারা উল্লেখ ছিল। উৎপল দত্ত, সুধীন চট্টোপাধ্যায় ও অঞ্জন চক্রবর্তী। এঁদের মধ্যে সেই সময় শুধুমাত্র অঞ্জন চক্রবর্তীর সংগৃহীত বইয়ের সংখ্যাই ছিল ৩৫ হাজার! এখন তো সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে কবে! অঞ্জন চক্রবর্তীর একজন বন্ধু ছিলেন যিনি জাতীয় গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক। তিনি অঞ্জনবাবুর বই সংগ্রহের তালিকা দেখে রীতিমতো থ! বাড়িতে ... ...
বৃদ্ধার বয়েস কত হবে জানিনা। শীর্ণ অশক্ত নুব্জ দেহ। কখনও দাঁড়িয়ে থাকলে হাতে অথবা বসে থাকলে পাশে একটা লাঠি থাকে। ফুটপাতের ধারে রোজ দেখি বসে কিংবা দাঁড়িয়ে ভিক্ষে করেন। বৃদ্ধা ভদ্রমহিলাকে দেখলেই বোঝা যায় বেশ ভাল পরিবারেরই সদস্য...। আমার বড় জানতে ইচ্ছে করে, কোন পরিবার এমন নৃশংস ! এই বয়েসের একজন বৃদ্ধাকে রাস্তায় ভিক্ষে করে খেতে হয় ! রঞ্জুকে অফিস থেকে ফেরার পথে ওঁর কথাই বলছিলাম। রঞ্জু আর আমি প্রায় প্রত্যেকদিনই একসঙ্গে অফিস থেকে ফিরি। ও এখন নামী একটা মাল্টিন্যাশনাল ইলেকট্রনিক্স কোম্পানীতে রয়েছে। ভাল বেতন। ওর বৌও নামী একটা প্রাইভেট স্কুলের টিচার । স্কুলের বেতন ছাড়াও আছে বৃহৎ এক কোচিং ... ...
আমি - হ্যালো ! কে বলছেন ?সে - কে বলছি, গলা শুনে বুঝতে পারছেন না ? আশ্চর্য্য তো !আমি - বুঝতে পারছি না বলেই তো জিজ্ঞেস করছি।সে - আপনি তো আশ্চর্য্য মানুষ দেখছি। সেই থেকে কে বলছেন ? কে বলছেন, বলে যাচ্ছেন।আমি - আপনি কে সেটি জানা থাকলে কি জিজ্ঞেস করতাম যে, কে বলছেন ? প্লিজ বলুন আপনি কে ?সে - আমি একটি মেয়ে। ভুত নই।আমি - আপনি যে মেয়ে সেটুকু বোঝার ক্ষমতা আমার আছে। ওটা না বললেও চলত। আর আপনি যে ভুত নন। সেটাও আমি বেশ বুঝতে পারছি।সে - ও মা ! তাই নাকি ? আমি ভুত নই, কি ... ...
একচল্লিশে এসে কাঞ্চনের শেষমেষ বিয়েটা হল। পুলিশের চাকরিতে বিয়ে করা সম্ভব নয়। আজ বালি তো কাল বলাগড়ে বদলি। তারপরে দিবারাত্র অপরাধীদের সঙ্গে সহবাস। জীবন যেন হাঁসফাঁস। তিতিবিরক্ত জীবনটাকে আর বিয়ের বাঁধনে বাঁধতে উৎসাহী ছিল না। কিন্তু অমলেশ কাকু ছাড়লেন না। প্রায় ঊনসত্তরটি পাত্রী দেখে কামিনীকে ফাইনাল করেই ফেললেন ... ...
শুনিয়াছি লুচি শব্দটি নাকি চৈনিক। অবগত নই, বেঁটে খাটো চক্ষু পিট পিট করা মানব সম্প্রদায় লুচির মর্ম কি বুঝিয়াছিল ! আমি যাহা বুঝি লুচি হইল আদ্যোপান্ত ভারতীয় খাদ্য বস্তু। হিন্দিতে পুরি। বাঙ্গালাতে লুচি। দেশী ঘৃত অথবা বনস্পতি কিংবা তৈল সহযোগে ভাজিয়া উষ্ণ পরিবেশিত দ্রব্যের কি যে মহিমা, তাহা সে জানেনা যে না ভক্ষণ করিয়াছে। লুচির সহিত আলুরদম ব্যঞ্জন ... ...
"উঁহু, ওটাতো ভ্রান্তিবিলাস নয় শান্তিবিলাস...।" ষষ্ঠীদাকে থামিয়ে ফোনে আমি হাঁ হাঁ করে উঠলুম।"আরে ওইটাই তো ! আমারই ভুল হয়েছে। এ বাড়ির আসল নাম যে, 'শান্তিবিলাস' সেটা ভুলতেই বসেছি।" বুঝলুম ষষ্ঠীপদ সরখেল এতক্ষণ ভুল বলছিল না। বেচারা মফস্বলের মানুষ। কলকাতায় এলে একটু ধাঁধিয়ে যায়। আমারই উচিত ছিল ওকে ঠিক করে বুঝিয়ে বলা। ওর সাথে এরপর কিছু কাজের কথা সেরে 'ভ্রান্তিবিলাস' বাড়িরই পিছনের দিক দিয়ে দোতলায় উঠে যাব ... ...
অ কাকা, সামু কাকা গো... আম্মো তুমার মত্ত ছেলিব্রিটি হুব। ধুস শালা। সেলিব্রিটি হওয়া কি অত সহজ নাকি রে ! হবো বললেই কি সব হওয়া যায় রে পাগলা.. ইচ্ছে করলে তুই কুলি কামিন, কিংবা ছোটখাট ব্যবসাদার থুড়ি হকার হতে পারিস। চপ শিল্প খুলতে পারিস। কিংবা পান বিড়ি দোক্তা এসবও বেচতে পারিস। এইগুলো ছাড়া, আর তুই যা-ই হতে চাস না কেন। হতে পারবি কিনা কোনো গ্যারান্টি নেই। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যেমন সহজ নয়। তেমনি সেলিব্রিটি হওয়া তো মোটেই সহজ নয় ... ...
খালি শুনতি ছেলাম, খেলা হবেক। খেলা হবেক। খেলা হবেক। হেই অ-রাম রাজত্বে মেলা আর খেলাই তো হওয়ার আছে গো। হরেক মেলা তাবৎ দ্যাখছি বটে। রঙিন মাছের মেলা। পাখির মেলা। বাসনের মেলা। কোষণের মেলাও দ্যাখ্ছি। আর কিছু নাহোক, আনন্দ মেলা নাম লইয়া হরেক মালের মেলা দ্যাখছি। কিন্তুক খেলা হবেক। খেলা হবেক। খেলা হবেক... হাঁকল বটেক। তেমন খেলা আর হইল কই ! ... ...