বৈকুন্ঠবাবু চিন্তাকুল মুখে বিদায় নিলেন । বিদ্যুৎ বলল, ' কলতানদা ... অম্বরীশবাবুকে দিয়ে এন্টালি থানায় একটা ডায়েরি করাতে হবে । ওটা ওদের জুরিসডিকশানে । আমি তো কাল ওখানে যেতে পারব না । আমি অবশ্য এন্টালি থানার ওসি বিমল মন্ডলকে কেস ডিটেলসটা দিয়ে একটা মেল করছি । ফোনেও কথা বলে নিচ্ছি । তুমি যদি কাল ফার্স্ট আওয়ারে অম্বরীশ চ্যাটার্জীকে দিয়ে একটা জেনারেল ডায়েরি করিয়ে নিতে পার ভাল হয় ... ওই গ্যাঙ অফ ফোরের নামে.... '----' হ্যা ... দেখছি ... কিন্তু বিদ্যুৎ ... চারজনের নামে না , ডায়েরিটা একজনের নামে করে তাকে গাঁথতে হবে । তারপর তাকে দিয়ে বাকিদের তোলাতে হবে । ... ...
ফর্টিফাইভ বাই ওয়ান সূর্য সেন স্ট্রীট । এ টু জেড ডিজিটাল । বেলা এগারোটা । মাঝারি সাইজের দোকানঘর , পাঁচ ছ জন লোক কাজ করছে । অনেকগুলো কম্পিউটার এবং নানারকম যন্ত্রপাতি দেখা যাচ্ছে । একজন দাড়িওয়ালা লোক দোকানে এসে দাঁড়াল । বাইরে বেশ কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে । নানাধরণের কাজ নিয়ে এসেছে। দেখে মনে হচ্ছে বেশ চালু দোকান । একটা দাড়িওয়ালা স্বাস্থ্যবান লোক দোকানের ভিতর পা রাখল । সামনের মনিটরের স্ক্রিনে চোখ রেখে একমনে মাউস ... ...
সকাল আটটা বাজে । কলতান এক কাপ কফি নিয়ে বসে খবরের কাগজে চোখ বোলাচ্ছিল ।কাল রাত্রে অপরাধ বিজ্ঞানের ওপর এক বিদেশী লেখকের লেখা একটা বই পড়ছিল । তাতে একটা দারুণ উপপাদ্য পেল গোয়েন্দাতত্বের ব্যাপারে ----- 'স্ট্রাইক দি পয়েন্ট ব্লাইন্ডলি অ্যন্ড ফলো দা ওয়ে দি রিবাউন্ড কামস ব্যাক ... ইউ উইল রিচ ইয়োর এন্ড 'মানে, কোন লক্ষ্যে আন্দাজে ঢিল ছুঁড়ে দেখ কি দাঁড়ায় .... প্রতিক্রিয়ার গতিপথ থেকেই তোমার গন্তব্যের ঠিকানা পাবে ... । বাংলা কাগজ শেষ করতে পনের মিনিটের বেশি লাগে না ... ...
রাত দেড়টা বাজল। নপরাজিত আর মনসিজের সঙ্গে শিমিকা আর আলিয়া এখনও সিজলার বার থেকে বেরোয় নি। শিমিকা মনসিজের পিঠে একটা চাপড় মেরে বলল, ' চল ইয়ার .... থাইল্যান্ড থেকে ঘুরে আসি .... ' । সঙ্গে সঙ্গে আলিয়া নেচে উঠল, ' ইয়েস ... ইয়েস ... ফ্যান্টাস্টিক ... নো পয়েন্ট অফ ওয়েস্টিঙ টাইম .... ওখানে আমাদের একটা রিসর্ট আছে .... সো লেটস ফিক্স ...নেক্সট স্যাটারডে ... ' । সকলেরই কয়েক রাউন্ড করে চড়ানো হয়ে গেছে। কত হাজার টাকার বিল হবে তার ঠিক নেই। সেটা অবশ্য কোন 'ইস্যু' না। মস্তি করতে গেলে এই পেটি অ্যমাউন্ট নিয়ে 'ব্রুড' করলে হয় না। সকলেরই পকেটে ক্রেডিট কার্ড ... ...
( শেষ পর্ব ) পরের দিন সকালে দীপেনবাবুর আর সুরেশের সঙ্গে সন্ময়ও হাসপাতালে গেল । গৌরীদেবী আজ আসেননি । ইরাবানকে জেনারেল বেডে দেয়নি এখনও । ড. আলোকবিন্দু চক্রবর্তী মিনিট পনের পরে ঢুকলেন । ----- ' ও মিস্টার মল্লিক ...আপনারা এসে গেছেন .... ভালই হল ।সব রিপোর্ট এসে গেছে । গুড নিউস আছে আপনাদের জন্য । ক্রিয়েটিনিনটা শুধু একটু বেশি আছে । আর সব নর্মাল ... 'দীপেন বাবু বললেন, ' আর ওর যে অসুখটা আছে .... '----- ' হ্যা ... ওটা আছে । তবে স্টেজ ওয়ানে । ম্যানেজেবল । আগে মেডিসিন, মানে ইঞ্জেকশান অ্যপ্লাই করে দেখা যাক তিনমাস । যদি ... ...
গলির মধ্যে গাড়ি ঢুকল না । গলির মুখে গাড়ি থেকে নামলেন দীপেনবাবু । সঙ্গে সুরেশ জানা । গলির খানিকটা ভিতরে অনেক পুরনো দোতলা বাড়িটা । একতলায় দুঘর ভাড়াটে আছে । তার মধ্যে একঘর হল ইরাবানরা । সেখানে ইরাবান আর ইরাবানের মা থাকে । দোতলায় বোধহয় বাড়িওয়ালা থাকে । দরজাটা খোলাই ছিল । ভিতরে দেখা গেল একজন রোগা চেহারার বয়স্কা মহিলা স্টোভে কি রান্না করছেন । দরজার একপাশে দাঁড়িয়ে দুহাত জড়ো করে সুরেশ জানা সবিনয়ে বলল, 'মাসীমা এটা কি ইরাবানের বাড়ি ? 'ইরাবানের মা গৌরীদেবী স্টোভের শিখা কমিয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন । দরজার কাছে এগিয়ে এসে সন্দেহ ও শঙ্কাজড়িত দৃষ্টিতে সুরেশের দিকে তাকিয়ে ... ...
সন্ময় এবার শিকার সন্ধানী শার্দুলের মতো রক্তের গন্ধ পেয়ে গেল । অনুভব তিওয়ারির স্ট্রাইক । নতুন ব্যাটসম্যান এসেছে অলরাউন্ডার মুনাব্বার রহমান । বড় শট খেলার প্লেয়ার । খেলার মধ্যে থাকতে গেলে নিয়মিত স্ট্রাইক ঘুরিয়ে যেতে হবে । আরও অন্তত সাত আট ওভার যদি এই জুটি খেলে দিতে পারে খেলাটা আবার বর্ডারের নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে । তা আট নয়, দশ ওভার অনুভব আর মুনাব্বর খেলে দিল । খেলে দিল মানে উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকল । রান বিশেষ হল না ।শুধু টিকে থাকলে আর কাজের কাজ কি হবে।সন্ময় তার বোলারদের দিয়ে নাগাড়ে অফের দিকে বল করিয়ে , চারটে ফিল্ডারকে ব্যাটসম্যানের গায়ের কাছে দাঁড় ... ...
বারো ওভারের পর একটা ড্রিঙ্কস ব্রেক হল । রান দু উইকেটে একষট্টি । সঞ্জীব ভাটিয়া আর মদন শুক্লা এখনও ব্যাট করে যাচ্ছে । খুব স্বচ্ছন্দে খেলছে তা না । তবে টিকে আছে এখনও । দুজনেই এই সমস্যাসঙ্কুল উইকেটে বারংবার উৎপীড়িত হতে হতে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে । এর মধ্যে মিসটাইমড শটে দুজন ব্যাটসম্যান একটা করে বাউন্ডারি পেয়েছে । এদিকে সন্ময় ভাবছে এরা আরও সাত আট ওভার টেনে দিলে ম্যাচটা বেরিয়ে যাবে মনে হচ্ছে । দুটো উইকেট এক্ষুণি দরকার । না হলে যা প্রয়োজনীয় রান রেট, শুধু উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেই টার্গেটে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব । সুতরাং উইকেট ... ...
জিততে গেলে বর্ডারকে করতে হবে একশ চুয়ান্ন রান যা এই উইকেটে খুব সহজ নয় । যদিও আস্কিং রেট চারেরও কম । অমিত দত্ত আর বিতান কাঞ্জিলাল বোলিং ওপেন করল । দু ওভার অনায়াসে খেলল ওপেনার দুজন । উইকেটে জুজুর কোন লক্ষ্মণ দেখা গেল না । স্পিনার এলে বোঝা যাবে ওসব । রান বিনা উইকেটে এগারো । বিতানকে আর এক ওভারের জন্য ডাকল সন্ময় । প্রথম বল অফস্টাম্পে হাফভলি । এক্স্ট্রাকভার দিয়ে চার । নিখুঁত টাইমিং । পরের বল একই জায়গায় । একটু কম লেংথে । হালকা আউটসুইং। ব্যাটসম্যান পল্লব বোস আবার চালাল । ব্যাটের বাইরের কানা নিল । বল । বল কাঁধের উচ্চতায় ... ...
চিকিৎসা কর্মীরা ইরাবানের চোখের পাতা ফাঁক করে টর্চের আলো ফেলে চোখের মণির অবস্থা দেখল। রক্তচাপ, পালস বিট, অক্সিজেন স্যাচুরেশানের মাত্রা, জুতো খুলে বাঁ পায়ের তলার সাড় এসব প্রাথমিক পরীক্ষা করল। তেমন হতাশ হতে দেখা গেল না তাদের। ইরাবানকে একটা ইঞ্জেকশানও দিল। দীপেন বাবু এসে প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়লেন ইরাবানের শরীরের ওপর। একজন চিকিৎসা কর্মী তাকে সরিয়ে দিল। দীপেনবাবু বাধ্য হয়ে খানিক তফাতে গেলেন। একজন ছুটতে ছুটতে মাঠের বাইরে গেল। তাকে একটু পরে একটা স্ট্রেচার নিয়ে আসতে দেখা গেল। ইরাবানের শরীরের পাশে স্ট্রেচার পাতা হল। দুজন চিকিৎসা সহায়ক ইরাবানকে দুদিকে খুব ... ...