কাজের বাড়ির বাইরে পা দিয়ে শ্যামা এক সম্পূর্ণ অন্য মানুষ হয়ে যায় । বন্দির দশা কাটলে যেমন হয়। ও জানে বৌদিরা ঠিক কী চায়। তাই কাজের বাড়িতে প্রবেশের আগে শ্যামা গায়ে আঁচল দিয়ে নেয়। সেই সঙ্গে খুলে রাখে পায়জোড়। ছমছম শব্দ করে বাড়ির মধ্যে চলাফেরা করা কোনো বৌদিই পছন্দ করে না। এবং পায়জোড়ের সঙ্গে সঙ্গে ও খুলে রাখে ওর যাবতীয় ছমকছল্লোপন, ছয়ল ছবিলি চলন, ভ্রূভঙ্গিমা, নখরাবাজি। বাসন মাজতে মাজতে ছেলের স্কুলের কথা বলে । ... ...
সিএএ আইন প্রবর্তনের পর শাহীনবাগ এবং তৎপরবর্তী যে 'দাঙ্গা' হয়েছিল মাত্র দুবছর আগে, ২০২০ সালে, পরবর্তী দুবছরের করোনা পরিস্থিতিতে সেকথা অনেকটাই চাপা পড়ে গেছে। অথচ ভয়াবহতার নিরিখে এই ঘটিয়ে তোলা 'দাঙ্গা' অন্যান্য গণহত্যাগুলির চেয়ে কম কিছু নয়। 'দাঙ্গা' চলাকালীন, ২৭শে ফেব্রুয়ারি, কিছু সমাজকর্মী দিল্লির কিছু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁরা দেখেন, যে, পদ্ধতি এবং প্রকরণে নির্দিষ্ট সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করে তোলা হয়েছিল দিল্লিতে, তা ২০০২ এর গুজরাত বা ১৯৮৪ র দিল্লির 'দাঙ্গা'র থেকে পৃথক কিছু নয়। হত্যার সংখ্যা নিঃসন্দেহে অনেক কম, কিন্তু পদ্ধতি এবং নৃশংসতা একেবারে এক। ... ...
এ এক অদ্ভুত সময়। এ এক হননকাল। পৃথিবীতে কালান্তক করোনার আক্রমণের বাইরেও ঘটে চলেছে একটানা প্রাণঘাতী হননযজ্ঞ। না, ভাইরাস না। ভাইরাস মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেই। কিন্তু এখানে যার কথা বলা হচ্ছে, তা রীতিমতো আনুষ্ঠানিকভাবে মানুষেরই নিয়ন্ত্রণে। রাজনৈতিক নেতৃত্বে, সম্পূর্ণ পরিকল্পনামাফিক ভাবে নিত্যদিন ধ্বংস করা হচ্ছে, জল, জঙ্গল আবাসভূমি। এ এক অদ্ভুত সময়, যখন সাড়ম্বরে ধ্বংসসাধনের নাম দেওয়া হয়েছে উন্নয়ন, বন্যাকে চিরস্থায়ী করার নাম হয়েছে বন্যানিয়ন্ত্রণ, উচ্ছেদকে বলা হচ্ছে নগরায়ন, আর কর্পোরেট শকুনের নাম বেদান্ত। ... ...
সুবণসিরির এক সহোদরা ধানসিড়ি বাংলা সাহিত্যে বিখ্যাত। তবে তাদের অন্য সহোদরারা, ডিহং, ডিবং, গাবরু, জিয়াভরলি তত পরিচিত নয়। ক্ষীণতোয়া মনু নদীর নাতি পুতিও বর্তমান, তাই বা কে জানত? সেসব নদীর জলে সময়ের ছায়া কেমন ভাবে পড়েছিল তাও আমরা সম্যক জানি না। ময়মনসিংহের ঠুনকি, মানকি বা আৎকা পীরের বিষয়েও আমাদের জ্ঞান সীমিত। ভারত ভূখন্ডে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে ত্রিপুরা, আসামের বাঙালীদের জীবন কেমন ছিল? আমরা জানিনা। ... ...
এতে শাহরুকের কোনো দোষ নেই। কিন্তু এ একদম নির্জলা সত্য কথা, যে, 'বাবা কেন চাকর' দেখে কেউ উলুতপুলুত হলে তাকে নিয়ে আপনি যেমন হাসেন, শাহরুক খানকে নিয়ে উলুতপুলুত হলে, আপনাকে নিয়ে আমি ততটাই। হ্যাঁ, হতেই পারে, শাহরুক বিরাট শিল্পী, বড় পর্দাতে তাঁর অভিনয় দক্ষতা ঠিক আঁটেনি, হিন্দি সিনেমার খাতিতে নানা অখাদ্য ছবিতে তিনি নাগাড়ে চড়া দাগের মোটা অভিনয় করে গেছেন। তা, সে তো এও হতে পারে, আদতে স্বপন সাহা বিরাট পরিচালক, কষ্ট করে সিনেমার ছোটো ফ্রেমে আঁটেননি, কষ্ট করে 'বাবা কেন চাকর' বানিয়েছেন, স্রেফ বাংলা সিনেমাকে বাঁচাতে। সবই সম্ভব, কিন্তু যা দেখেছি তার ভিত্তিতে ৮০-৯০ এর শাহরুক এবং সমকালীন বলি-সমাজকে ... ...
কুমিল্লার ঘটনায় এবং তার পর বাংলাদেশে পুজোর সময় বহু মন্ডপ আক্রান্ত। সবাই জানেন। যেটা জানা নেই, সেটা হল, হিন্দু 'ভির'রা কী করছেন? নিন্দায় ফেটে পড়েছেন? মিছিল-টিছিল করেছেন? বাংলাদেশ দূতাবাসে ডেপুটেশন দিয়েছেন? নিদেনপক্ষে নিন্দে করে একটা বিবৃতি? ছাপ্পান্ন ইঞ্চি কি একটা চিঠিও লিখেছেন? নাঃ। বালাই ষাট। বরং উল্টোটা। তথাগত রায় বলেছেন, বাংলাদেশে হিন্দুরা ভালো আছেন। সে হয়তো হাসিনার আমলে হিন্দুরা সব মিলিয়ে ভালই আছেন, কিন্তু কুমিল্লার ঘটনার পর, নিন্দা নেই, হুঙ্কার নেই, স্রেফ মিনমিন করে বলা, হিন্দুরা তো ভালই আছেন। ভাবতে পারছেন? এই নাকি হিন্দু 'ভির'? ওদিকে বাংলার মুসলমানের মুক্তিসূর্য আব্বাস কী বলেছেন? হেবি হুঙ্কার ঝেড়েছেন। হনুমানের পায়ের কাছে কোরান? হালুম। যা ... ...
আমার ক্যাবলা কাটিং হাসি পুরোনো গান। এর আগে লাইভ একটা ভার্সান ছিল। ভালো রেকর্ডিং ছিলনা। এবার নতুন করে করা হল। অ্যারেঞ্জ ট্যারেঞ্জ করে। মন্তব্যে কেউ কেউ বলেছেন, আগেরটাই ভালো ছিল। সে আর কী করা যাবে। পাপের ফল, হয়েছে যখন, থাক। ... ...
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ বলতে অনেকে শীতকালে কম করে আতপ চাল খাবার কথা বলা হচ্ছে মনে করেন। আসলে কিন্তু কার্ব কম খেয়ে ওজন কমানোর সঙ্গে শীতাতপের কোনো সম্পর্ক নেই। উহা বাংলা এসি র সংস্কৃত নাম। সেই যন্ত্রের ওজন প্রচুর। ঘাড়ে তুলে নিয়ে গেলে পেশির বৃদ্ধি হতে পারে, ওজন কমা সম্ভব না। অনেকে ভাবেন, এসি চালালে পরিবেশ ঠান্ডা হয়। সেটাও ভুল ধারণা। এসি চালালে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন নামের খুব খারাপ গ্যাস বার হয়ে ওজন স্তরে ছ্যাঁদা করে দেয়। সেখান দিয়ে অতিবেগুনি রশ্মি গায়ে পড়লে মাথা এবং শরীর গরম হয়ে যায়। একে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বলা হয়। গ্লোবাল ওয়ার্মিং এ মাথা গরম করে পৃথিবীতে অনেক খারাপ কাজ হয়েছে। ভাইয়ে ... ...
ক্লান্ত লাগে। ভিডিওটা খুলেছিলাম অনবধানে। আর পাঁচটা যেমন খুলি। খুলে দেখলাম পুলিশ কাদের যেন গুলি করতে করতে তেড়ে যাচ্ছে। একটা লোক হাত তুলে দৌড়ে এল। মারধোর করতে নয়, আত্মসমর্পণের ভঙ্গীতে। পুলিশ তার দিকেও তেড়ে গেল। পুলিশের যা স্বভাব। তারপর লাঠি দিয়ে ধড়াদ্ধম পিটুনি। সঙ্গে কয়েকটা গুলির শব্দ। গুলিটা কোথায় লাগল ঠিক বুঝতে পারিনি। পয়েন্ট ব্ল্যাংকে ওইভাবে কাউকে গুলি করে নাকি? লোকটা পড়ে আছে দেখা গেল। ভাবলাম, এমন করে মারল, যে অজ্ঞান হয়ে গেল? তারপর দেখলাম, ক্যামেরা হাতে একজন, পুলিশের ফটোগ্রাফারই হবে, দৌড়ে গেল পড়ে থাকা শরীরের দিকে। তারপর শরীরের উপরে উঠে জান্তব উল্লাসে নাচ। দেখে আঁতকে উঠে ভাবলাম, মরে যাবে ... ...
জানি তো ফিরবেনাকুলে তো ভিড়বেনাভেঙেছে মাস্তুল, ডুবেছে শিপ। তবুও সন্ধ্যায়বন্ধ জানালায়হঠাৎ ছায়া, বুক কী ঢিপঢিপ। এখনও পড়ে মনেরামনবমী দিনেতোমার জামা আর সিঁদুরে টিপ। তোমার বাণী যত কীভাবে অবিরতছড়িয়ে দিত ওই দুইটি লিপ। সত্যি ফিরবেনা?শিকে কি ছিঁড়বেনা?কখনও কোনোদিন, আর দিলীপ? পু: জীবনানন্দের পরে এমন মরমী কবিতা আর হয়নি। কেউ যদি বুঝতে না পারেন, তো মানেবইএর অংশ হিসেবে বলে দিলাম। ... ...