এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পাত্র পাত্রী চাই - সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন থেকে

    শ্রাবণী
    অন্যান্য | ২৪ মে ২০১৩ | ৪৩৬১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শ্রাবণী | 134.124.86.28 | ২৪ মে ২০১৩ ১৫:১১611723
  • বছর তিনেক আগে ভার পড়েছিল কাগজ দেখে পাত্রীর খোঁজ করার......দেখে বেশ খানিকটা অবাক হয়েছিলাম, তখ্ন লিখেছিলাম, এখনো মাঝে মাঝে এমনিই দেখি বিজ্ঞাপন গুলো, সেই একইরকম......ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটের অভিজ্ঞতাও লেখা যেতে পারে!:))
  • শ্রাবণী | 134.124.86.28 | ২৪ মে ২০১৩ ১৫:২২611745
  • -------******------------
    কাগজে পাত্রপাত্রী বিভাগ কারা দেখে? যাদের বাড়ীতে বিবাহযোগ্য পাত্র/পাত্রী আছে তারা ছাড়া? হ্যাঁ, এছাড়া খুবই কম লোকের কাগজের এই পাতায় নিয়মিত যাতায়াত থাকে। অবশ্যই ব্যতিক্রম অকাজের লোক বা অবসরপ্রাপ্তরা যারা কাগজে ব্যক্তিগত কলাম থেকে প্রতিটা বিজ্ঞাপন আদ্যোপান্ত পড়ে পয়সা উসুল করে। এছাড়া ফাজিল মেয়ে বা ছেলেছোকরারা দেখে মজা করার জন্য।

    বাড়ীতে আসে সর্বভারতীয় দৈনিকের দিল্লী এডিশন, তার রবিবারের ম্যাট্রিমনিয়াল বিভাগ যাকে বলে ওজনদার, মূল কাগজ থেকে আলাদা আট পাতা। আলাদা বলেই সুবিধে, কোনো দিকে না দেখে সানডে পেপারের এই অংশটি সোজা পাঠানো যায় রান্নাঘরে। সবজি কাটতে, নারকেল কুরতে হমেশাই লাগে কাগজ। কিছুদিন আগে এই গতানুগতিক নিয়মের একটু ব্যতিক্রম হওয়ার কারন ঘটেছিল।
    আমার শহরেরই বাসিন্দা এক নিকট আত্মীয় পাত্রের জন্য পাত্রী দেখা শুরু হল। তখন এই বাজে কাগজের দলে ফেলা পাত্রপাত্রী বিভাগের পাতা গুলৈ হয়ে উঠল দরকারী। পাত্রটির বয়স বেশী নয়, শিক্ষা চাকরি পরিবার সব দিক থেকেই সাধারণ মতে ঠিকঠাক, বিয়ের তাড়া খুব একটা নেই।
    সময় নিয়ে দেখেশুনে দিলেই হবে, তাই মোটামুটি চোখ রাখিস বিজ্ঞাপনে, যদি কোনো ভাল মেয়ের খোঁজ পাওয়া যায়, বিয়ের কথাবার্তাতেও তো সময় যায় অনেক - তার অন্য শহরে থাকা বাবা মার অনুরোধ। আসলে নিজেরা প্রবাসী বাঙালী এবং পাত্রীও চাই প্রবাসী,এইসব দিল্লী ইউপির দিকের। তাই একটু আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া আর কি!

    এর আগে এরকম ধরণের দায়িত্ব আমাদের কেউ দেয়নি, বেশ উত্তেজনায় পরের রবিবার থেকে শুরু হল কাগজে পাত্রী খোঁজা। প্রথমে ভেবেছিলাম ঐ আট পাতার খুদে খুদে লেখাগুলো পড়ে তার মধ্যে থেকে উপযুক্ত পাত্রী সন্ধান করতে না জানি কত মেহনতই লাগবে, কত সময়ই না ব্যয় করতে হবে। তবু এটুকু তো করতেই হয় নাহলে আর সমাজে পরিবারে বাস করা কেন!
    কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল ব্যাপারটা এত কঠিন নয়। সুন্দরভাবে শ্রেণীভাগ করা আছে, পাত্রী চাই এবং পাত্র চাই দুই মূল ভাগ। মূল ভাগের আবার অংশ আছে অনেক,নানা ভিত্তিতে ভাগ করা। অতএব পাত্র চাই বিভাগেতে গিয়ে বেঙ্গলী হেডিংএর অংশ দেখলেই হল।

    এর আগে যে কখনো কৌতূহলে বাংলা কাগজে পাত্র চাই বা পাত্রী চাই একেবারে দেখিনি তা বলবনা। অল্পবয়সে পাত্রপাত্রী কলামের ভাষা নিয়ে অনেকসময়ই অনেক মজা করা হত বন্ধুদের মধ্যে, বিশেষ করে পাত্রী চাইয়ের বর্ণনা নিয়ে। ছকটা মোটামুটি এরকম ছিল বা এখনও আছে -
    পাত্রীর ক্ষেত্রে রূপগুণ (সুশিক্ষিতা, গৃহকর্মনিপুণা/সঙ্গীতজ্ঞা/চাকুরিরতা ,সুন্দরী,উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা/ মধ্যমবর্ণা/ফর্সা) বর্ণনা বিস্তারে করা হয়, পাত্রের ক্ষেত্রে আয়,শিক্ষা, চাকরির ক্ষেত্র ( সুউপায়ী/কেঃসঃ চাকুরিরত/এম এন সি, নিজবাটী/কলকাতায় স্বগৃহ) ইত্যাদির খবর বিশদে দেওয়া হয়।

    এছাড়া আছে জাত - (কায়স্থ, ব্রাহ্মণ, বারুজীবি,মাহিষ্য, কুম্ভকার,তন্তুবায়, তিলি,স্বর্ণবণিক, গন্ধবণিক, কংসবণিক, বাঙালীদের মধ্যে এসব কত জাত আছে পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপন না দেখলে কখনো জানতে পারত কেউ!) গোত্র, বর্ণ, গণ, রাশি, পিতার কর্মবিবরণ এসব দুপক্ষেই দেয়।
    এবং যারা না দেয় তাদের ক্ষেত্রে লোকে ধরে নেয় যে এসব দেবার মত নয় বলে তাই দেয়নি ।

    এটাও একবার এক বন্ধুর মা, যিনি ছেলের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন তার কাছে জেনেছিলাম। পাত্রপাত্রীর অ্যাডে যা লেখা থাকে তা যেমন গুরুত্বপুর্ণ, যা লেখা নেই তাও ঠিক ততটাই খুঁটিয়ে দেখার বিষয়।
    এছাড়া যাকে বলে "বিটুইন দ্য লাইনস" অনেক কিছু পড়ে নিতে হয়।
    যেমন পাত্রী শ্যামবর্ণা বা উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা মানে ধরে নিতে হবে কালৈ, মধ্যমবর্ণা মানে ঐ মাজা রঙ, শ্যামবর্ণ হবে আর কি!
    ফর্সা লিখেছে কিন্তু সুন্দরী লেখেনি মানে রঙটাই আছে ছিরি নেই ইত্যাদি ইত্যাদি। ছেলে এতটা বয়স অবধি বসে আছে, কিছু গন্ডগোল আছে।
    ছেলের সবকিছু এত ভালো লিখছে তবু বয়স হয়ে গেছে, ও দেখতে হবেনা, পরিবারে সমস্যা আছে।
    মাইনে লেখেনি মানে তেমন লেখার মত নয় ইত্যাদি আরো কত কি!

    কলেজে এক বান্ধবী একবার এসে বলল যে তার মা তার জন্য কাগজ দেখে একটি বিলেত ফেরত পাত্রের খোঁজ পেয়েছেন। প্রচুর হাহা হিহি হয়েছিল এ শুনে, কেমন বিলেতফেরত শুনে সাদাকালো বাংলা সিনেমা মনে হয়েছিল, বিলেতফেরত ব্যারিস্টার, বিলেতফেরত ডাক্তার। তখন আমেরিকাপ্রবাসী, গ্রীণ কার্ড এসবের যুগ। বিলেতফেরতের ঐ অ্যাডটি বন্ধু ক্লাসে নিয়ে এলে বেশ খোরাক হয়েছিল কয়েক দিনের!

    এতো গেল অনেক বছর আগের কথা, এখন তো পৃথিবীটাই বদলে গেছে অনেক। যুগের পরিবর্তনে নিশচয়ই বদলে গেছে পাত্র পাত্রী বিভাগের ভাষা চাহিদা মান। প্রবাসে বসে এই প্রথম কাগজে পাত্রপাত্রী বিভাগ দেখলাম মন দিয়ে। যেহেতু এটি একটি সর্বভারতীয় ইংরাজী দৈনিক, আমার দেখা সেই বাংলা কাগজের পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপনের থেকে একটু অন্যরকম লাগল। বাঙালী পাত্রীর অ্যাড দেখার কাজ ও হাইলাইট করার কাজ তো দুমিনিটেই হয়ে গেল, তারপর দেখতে থাকি অন্যান্য বিভাগ।

    সত্যি কথা বলতে কি অদ্ভুত লাগে, সমাজের একটা অন্যরকম ছবি, যা থেকে আমরা এই অত্যাধুনিক মেট্রো সিটিজেনরা বোধহয় মুখ ঘুরিয়ে থাকি, তা আঁকা আছে এই পাতাগুলোর ছত্রে ছত্রে।
    বিজ্ঞাপনের হার বেশী, ইংরেজী কাগজ, তাই স্বভাবতই পাত্রপাত্রীরাও সব উঁচু দরের। আই আই টি/আই আই এম, দেশ বিদেশের বড় বড় শিক্ষাকেন্দ্রের, নামী দামী সরকারী বেসরকারী কোম্পানীর লেবেলের ছড়াছড়ি, শিক্ষায় চাকরিতে কূলে মানে, আধুনিক প্রগতিশীল ভারতবাসী সব।
    জাতগোত্র ধর্মের ভেদাভেদ আজও ভারতবর্ষে শিক্ষিত অশিক্ষিত প্রতিটা সমাজকে কেমন সমানভাবে আচ্ছন্ন করে রেখেছে তার কিছুটা নমুনা ঘরে বসেই পাওয়া যায়। অশিক্ষিত পিছিয়ে পড়া দুর প্রদেশে, গ্রামে, জাতভেদ, উচ্চবর্ণের লোকেদের দ্বারা নিম্নবর্ণের লোকেদের ওপর হওয়া অত্যাচার, এসব নিয়ে তো মাঝে মাঝেই ফলাও খবর, প্রবন্ধ ইত্যাদি দেখা যায় নানা প্রচার মাধ্যমে, এনজিও দের রিপোর্টে। কিন্তু জাতের ভুত যে উচ্চশিক্ষিত আধুনিক সমাজের কাঁধেও ভর করে আছে তা জানতে এই বিজ্ঞাপনগুলো পড়তে হয়। বেশী না, একবার দু তিনটি পাতায় ভালো করে চোখ বোলালেই বোঝা যায় কিভাবে আধুনিক সমাজের পটভূমিকায় লেগে আছে আদিম মধ্যযুগীয় ছোঁয়া!
  • শ্রাবণী | 134.124.244.107 | ২৪ মে ২০১৩ ১৫:৩৭611756
  • আগেই বলেছি মূল পাত্র ও পাত্রী বিভাগের অধীনে আছে বিভিন্ন শ্রেণী, তার ভাগের ভিত্তিও ভিন্ন। নিম্নে কয়েকটি উদাহরন দিলাম।
    ১) রাজ্য বা প্রদেশ অনুযায়ী - বাঙালী, পাঞ্জাবী, মারাঠা, সিন্ধী, তামিল, মালয়ালী, ওড়িয়া, হিমাচলী ইত্যাদি।
    ২) ধর্ম - মুসলিম, ক্রিশ্চান, শিখ, জৈন।
    ৩) বর্ণ - ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, বৈশ্য, তফশিলী।
    ৪) জাতি - জাঠ, রাজপুত, গুর্জর, কুর্মি,কুমায়নী, গাড়োয়ালী ইত্যাদি।
    ৫) উপজাতি/গোত্র - আগরওয়াল, অরোরা, পাসওয়ান, জয়সোয়াল, যাদব, মৌর্য, কাশ্যপ, সাহনী, স্বর্ণকার, ক্ষত্রী ইত্যাদি অসংখ্য।

    উপরোক্ত শ্রেণীভাগ ছাড়াও আছে অন্যান্য ভাগ, পেশা অবস্থা ইত্যাদির ভিত্তিতে। ডাক্তার, ইঞ্জীনিয়র, ম্যানেজমেন্ট, এন আর আই/গ্রীণ কার্ড,আই এ এস ইত্যাদি। আছে বিপত্নীক, বিধবা, ডিভোর্সী, দ্বিতীয় বিবাহ ( এতে ডিভোর্সী, বিপত্নীক, সেপারেটেড সবের মিশ্রণ আছে, তবে সেপারেটেড কোন আইনে আবার বিয়ে করবে ঈশ্বরই জানেন!) মায় সিনিয়র সিটিজেন পর্যন্ত।

    জাতপাতের ব্যাপার বাদ দিলে বাঙলা কাগজের পাত্রপাত্রী চাইয়ের মূল বক্তব্যের সাথে সর্বভারতীয় পাত্রপাত্রী বিভাগের চাহিদার খুব একটা ফারাক নেই।
    পাত্রী চাই তিলোত্তমা, সর্বগুণসম্পন্না, ভালো পরিবার ও পিতার মোটা ব্যাঙ্কব্যালান্স সহ।
    পাত্রের ক্ষেত্রে এখনও সেই পুরনো "হীরের আংটি আবার বাঁকা " থিওরি। তন্ন তন্ন খুঁজলে দেখা যাবে একটি দুটি জায়গায় হ্যান্ডসাম পাত্র চাওয়া হয়েছে। এছাড়া সবাই শুধু পাত্রের শিক্ষা ও চাকরি সংক্রান্ত চাহিদার উল্লেখ করে। আইআইটি/আইআইএম প্রেফারড, এন আর আই বাঞ্ছনীয় ইত্যাদি। পাত্রের রূপ বা অন্য গুণ নিয়ে পাত্রীপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই। হ্যান্ডসাম পাত্র না চাইলেও অনেক জায়গায় দেখা যায় লেখা আছে h'some salary। অবশ্য দেখেশুনে মনে হয় পাত্রদের প্রত্যেকেরই ইনকাম পার অ্যানাম দেওয়া অতি আবশ্যক। এছাড়া আছে জাতধর্ম বিশেষে ভেজ পাত্রপাত্রীর দাবী দু তরফেই।

    বিউটিফুল, স্লিম, এডুকেটেড (কনভেন্ট), ওয়ার্কিং এসবের সাথে আবার কারো কারো চাহিদা হোমলি, সফটস্পোকেন। ওয়ার্কি ংমেয়েটি বাড়ি এসে নিঃশব্দে বাড়ির কাজে লেগে যাবে, এযে এখনো পুরুষদের একান্ত কাম্য তার প্রমাণ এইসব অ্যাডের প্রতি লাইনে!
    অনেকে আবার বিউটিফুল লিখে তার সাথে ইংরেজী অক্ষরে গোরী লিখে দেয় যদি ফেয়ারের সঠিক হিন্দী মানে নিয়ে কোথাও কোনো দ্বন্দ থেকে থাকে! অথবা বিপাশা, দীপান্বিতার মত বলিউডের হালের ব্ল্যাক বিউটীদের রমরমায়, বিউটীফুলের সংজ্ঞায় যদি গোরী শব্দ কেটে গিয়ে থাকে, সে কথা ভেবেই হয়ত এই সাবধানতা!
    কোথাও কোথাও এতসব কিছুর সাথে আবার যোগ করা হয়েছে ট্যালেন্টেড! সেই যেমন নাকউঁচু ছেলে বা মেয়েকে আমাদের সব পরিবারে বলা হয় যে "এর জন্য বউ/বর আনতে হবে কুমারটুলিতে অর্ডার দিয়ে", সেই রকম ব্যাপারস্যাপার আর কি। ঘরে ঘরে তো আর সর্বগুণের অধিকারিণী পরমাসুন্দরী কন্যা থাকেনা, অথচ সবারই চাহিদা সেরকমটাই। তাই ঈশ্বরকে স্পেশ্যাল লটে অর্ডার দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় আছে বলে এইসব পাত্রপক্ষের, মনে হয় না!

    উত্তর বা মধ্য ভারতীয়দের মধ্যে বিয়েশাদীর ব্যাপারে একটা বড় নিয়ামক হল পাত্রপাত্রীর মাঙ্গলিক, নন মাঙ্গলিক বা আংশিক মাঙ্গলিক হওয়া। ঐশ্বর্য রাইয়ের কল্যাণে রেস্ট অফ ইন্ডিয়াও এখন এ ব্যাপারে খুবই ওয়াকিবহাল। তাই বাঙালীদের দু একটা পথ ছুট অ্যাডে দেখি nmglk/mglk/ansh mglk লেখা।
    মনে হতে পারে গাছের সাথে একবার বিয়ে দিলেই যে দোষ খন্ডানো যায় তা নিয়ে এত বাড়াবাড়ি কেন! তা পরিবেশ রক্ষারও তো দায়িত্ব আছে আমাদের। গ্রহের দোষ খন্ডাতে গিয়ে বেচারা গাছের জীবনের ঝুঁকি নেওয়াটা যে অন্যায়, একথা মানুষ ছাড়া আর কে ভাবতে পারে!

    পরিবার সম্বন্ধে কালচারড, রেপ্যুটেড এসবের সাথে সাথে লেখা থাকে স্ট্যাটাস ফ্যামিলী। পড়তে পড়তে মানে করে নিতে হয় হাই স্ট্যাটাস হবে, লো হলে তো লেখার কিছু নাই। আজকাল পাত্র ও পাত্রী দু পক্ষেই পিতার চাকুরির ফলাও বিবরণ থাকে। ভাই কৃতী হলে তার বর্ণনাও থাকে। তবে উল্লেখযোগ্য যে কোথাও মায়ের চাকুরি বা পেশা সম্বন্ধে কিছু লেখা থাকেনা। অথচ যে শ্রেণীর পাত্রপাত্রী বা পরিবারের বিবরণ থাকে এই আট পাতায়, তাদের সবার ক্ষেত্রেই মায়েরা নিছক হোমমেকার, তা বোধহয় নয়!

    আজকের ইংরাজী দৈনিকে পাত্রপাত্রী বিজ্ঞাপনে বিষয় সেই পুরনো আমলের হলেও ভাষা হয়ে গেছে আজকালকার এসএমএসের মত। এত বেশী সংক্ষিপ্ত শব্দ ও কোডের ব্যবহার যে চট করে যে কেউ চোখ বোলাতে গেলে হোঁচট খাওয়া গ্যারান্টীড। সত্বর BHP পাঠান (বায়োডাটা হরস্কোপ ফোটো), SM4 (স্যুটেবল ম্যাচ ফর),V'BUL, E'BUL(ভেরী বিউটিফুল, এক্সট্রিমলি বিউটিফুল)। এছাড়া আছে PQM, WUP, PQMS, KKB, LKng, এরকম নানা সংক্ষিপ্ত শব্দাবলী। সেদিক দিয়ে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নেটচ্যাট বা মোবাইল মেসেজের সাথে একেবারে যুগোপযোগী লিঙ্গো!
    শুধু বিষয়বস্তু এখনো সেই আদ্যিকালে যা ছিল তাই আছে, কোনো পরিবর্তন নেই।

    সেদিক দিয়ে মুসলিম পাত্রদের চাহিদার লিস্ট বেশ কম - সুশ্রী, এডুকেটেড ও কোথাও কোথাও রিলিজিয়াস। ধর্মীয় বিচ্ছেদের একটা ব্যাপার আছে বলেই বোধহয় মুসলিম ডিভোর্সী পাত্র পাত্রী উভয়ের ক্ষেত্রেই লীগ্যালী ডিভোর্সড কথাটির উল্লেখ দেখা যায়।
    তবে বাঙালীরা প্রবাসেও গোত্র গণ জন্মসময় এসবের চক্কর থেকে বেরোতে পারেনা, সে দিল্লীই হোক বা ইউকে ইউএস সিঙ্গাপুরে কর্মরত ছেলে বা মেয়েই হোক। মজা লাগে যখন বড় করে uaa দিয়ে শুরু হয় বিজ্ঞাপন। অনেক চেষ্টায় উদ্ধার করলাম উআ হল ইস্ট বেঙ্গল। বাংলা কাগজে বিজ্ঞাপনে যেমন এখনো থাকে কুমিল্লা,ঢাকা, বরিশালের উল্লেখ, এখানে প্রবাসে ঐ EB!
  • শ্রাবণী | 134.124.244.107 | ২৪ মে ২০১৩ ১৫:৩৮611767
  • *uaa = EB :)
  • de | 69.185.236.51 | ২৪ মে ২০১৩ ১৫:৪৫611778
  • মাঙ্গলিক মানে?
  • শ্রাবণী | 134.124.244.107 | ২৪ মে ২০১৩ ১৫:৫১611789
  • আমার আত্মীয় ছেলেটির বিয়ের সম্বন্ধের যোগাযোগের স্থল হল আমার বাড়ী। যেহেতু আশপাশের প্রবাসীর মধ্যে খোঁজ করা হচ্ছে, অপশন অত্যন্ত কম। আগে এ নিয়ে আফশোষ হলেও এখন শাপে বর মনে হচ্ছে। বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করলে প্রথমেই পাত্রীপক্ষ চায় কুষ্ঠী। কুষ্ঠীতে না মিললে নাকি দেখাশোনা বা অন্যান্য কথার কোনো মানেই হয়না। কুষ্ঠী নেই বললে জন্মসময়, জন্মস্থান এসব চায়। কম্পিউটার নাকি কুষ্ঠী বানিয়ে ম্যাচ করিয়ে হাতেগরম রেজাল্ট দিয়ে দেবে। প্রথম দিকে দু একবার রাগ করে কাটিয়ে দিতে গিয়ে শেষে যখন দেখলাম সব শিয়ালেরই এক রা, পাত্রের বাবা মায়ের শরণাপন্ন হই জন্মসময়ের জন্য।
    পাত্রের বাবা মা কিছু সময় বিদেশে বাকীটা বাংলার বাইরে ছোট শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নির্ঝঞ্ঝাট জীবন কাটিয়েছে চিরটাকাল, একটু যেন বাস্তব থেকে দূরে। তাদের ধারণা তাদের ছেলেবেলার পরিচিত বাংলাসমাজ ও বাঙালী আজ এতবছরে নির্ঘাত অনেক এগিয়ে গেছে। এদের নিজেদের ক্ষেত্রে সেই যুগেও শুধু যে কুষ্ঠী মেলানো হয়নি তাই নয়, সময়ের অভাবে রেজিস্ট্রী বিয়ে দিয়েছিল দুবাড়ির বাবা মারা বাড়িতে রেজিস্ট্রার নিয়ে এসে।
    দু পুরুষ প্রবাসী আর্মির মেয়ে, পাত্রের মা আমাকে জিজ্ঞেস করে জন্মসময় তো সেকেন্ড মিনিটের এদিক ওদিক হতে পারে,তাতে হিসেবে ভুল হবেনা? সে নিজেও খুব একটা শিওর নয় ছেলের জন্মসময় ঠিকঠাক লেখা আছে! আমার কাছে উত্তর নেই।
    যখন ফোন করে কোনো পাত্রীর মা দাঁত কেলিয়ে (দেখিনি, গলা শুনে মনে হয়েছে!) আমাকে জানায় যে দারুন হরস্কোপ, রাজযোটক, "জানো তো ছত্তিশ কে ছত্তিশ গুণ মিলে গেছে", - একেবারে সাস বহুর ডায়ালগ। তখন আমি এধার থেকে দাঁত কিড়মিড় করি আর ভাবি এ কোন বাঙালী, হিন্দী সিরিয়ালের কালচারে মোড়া? খুব ইচ্ছে হয় মহিলাকে বলি ছত্তিশ গুণের প্রত্যেকটার বিবরণ দিতে, অনেক কষ্টে সম্বরন করি নিজেকে। আমাদের বাড়িতে কারো কোনো কুষ্ঠীই নেই, না বাপের বাড়ি না শ্বশুর বাড়িতে। নিজের দিকে তাকাই,কোনো কিছু না মিলিয়েই তো কেটে গেল এতগুলো বছর!

    ছোটোবেলায় শুনতাম যারা খুব গোঁড়া,রক্ষণশীল, তাদের বাড়িতে ওসব কুষ্ঠীটুষ্ঠী মেলানো হয়, আমরা ওসবে বিশ্বাস করিনা, আমাদের বাড়িতে এসব হয়না। কেউ বিয়েতে কুষ্ঠী এসবের কথা তুললে মনে করা হত, পুরনোপন্থী। এই আমরা বলতে যে নিজেরা তা শুধু নয়, এমন অনেকেই ছিল। তারা যাকে বলে উচ্চবিত্ত, হাই সোস্যাইটীরও নয়। সাধারণ মধ্যবিত্ত শিক্ষিত বাঙালী পরিবার সব। ফলস কুষ্ঠী নিয়েও অনেক মজার গল্প শোনা যেত। ছোটোবেলায় শুনেছি আমাদের পাড়ার একটি মেয়ের কুষ্ঠীর দোষে বিয়ে হচ্ছিলনা। একটি পাত্র এল খুব ভালো, কোনো ঝুঁকি না নিয়ে মেয়েটীর বাবা পাড়ার জ্যোতিষীকে দিয়ে খুব ভালো একটা কুষ্ঠী বানালো,মিলল না। পরে নাকি ঘটক মেয়েটির আসল কুষ্ঠী ছেলেদের দিতে দেখা গেল দিব্যি মিলে গেছে, রাজযোটক। তখন আর এরা বলতে পারেনা যে এ মেয়ে সেই মেয়ে, আগে মিথ্যে কুষ্ঠী দিয়েছিল।
    খোঁজ নিয়ে দেখি এখন বাঙালী সমাজ সত্যিই আধুনিক হয়েছে, ঘরে ঘরে কুষ্ঠীর সাথে সাথে ব্লাড গ্রুপও মেলানো হচ্ছে বিয়ের সম্বন্ধ করতে গিয়ে। বাংলায় পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপনে তাই ব্লাড গ্রুপেরও উল্লেখ দেখা যায়!

    প্রতি রবিবারে কাগজের ঐ আটপাতা রান্নাঘরের নির্দিষ্ট র‌্যাকে পাঠানোর আগে একবার চোখ বুলিয়ে নিই, অভ্যেস হয়ে গেছে। কেমন যেন দেশের বিভিন্ন সমাজ, যাদের অনেককে চিনিনা, জানিনা বা জানলেও বাইরে থেকে যা দেখি তাতে আমাদেরই মত লাগে, এই বিজ্ঞাপনের কতগুলো শব্দে কিছুটা হলেও তাদের একটা অন্য দিক দেখা যায়। এছাড়া সমাজ দেশে কে কোথায় যাচ্ছে, কতটা উদার হচ্ছে বা কতটা পিছিয়েছে তারও একটা যেন সূচক এই পাতাগুলো। আমরা তো কেমন আজকাল নিজেদের গন্ডীর বাইরে কিছুরই খবর রাখিনা, কিছু খবরের কাগজের হেডিং ছাড়া। দেখলেও জানলেও সত্যিকে আনদেখা করে সবকিছু কেমন নিজেদের ছাঁচে ফেলে দিতে চাই, ফেলে দি যেন তার বাইরে কিছুর অস্তিত্ব নেই। এই বিজ্ঞাপনগুলো দেখে মনে হল আমাদের জানাচেনার বাইরে কত বড় একটা জগত রয়েছে, যার অনেক কিছু আমার ভাবনার সঙ্গে মেলেনা তবু ভীষণভাবে রয়েছে!

    জানা যায় এককালের গোঁড়া হিন্দী বেল্টে বেশী বেশী মেয়েরা আজকাল উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে, কুড়ি পার হতে না হতেই আর বিয়ের পিঁড়িতে বসছে না। মেয়েদের কাজ খালি ঘরে থেকে চুল্হা জ্বালানো আর বাচ্চা পয়দা করা, এই চিন্তাধারার পরিবর্তন হচ্ছে। ওয়ার্কিং বা প্রফেশন্যাল পাত্রী এখন অনেক পরিবারেরই কাম্য, তাদের আলাদা কদর।
    হরিয়ানা রাজস্থান ইউ পির জাঠ গুর্জরদের মত গোষ্ঠী যাদের কন্যাভ্রুণ হত্যার রেকর্ড আছে, তাদের বাড়ি থেকেও ডাক্তার ইঞ্জিনীয়র সফ্টওয়ার প্রো মেয়ে বেরোচ্ছে। যদি জাঠ কলামটি দেখেন খুঁটিয়ে, "অ্যাভয়েড দাহিয়া" অথবা "অ্যাভয়েড সাঙ্গওয়ান" এরকম নানা অ্যাভয়েড তালিকা দেখতে পাওয়া যায়। এগুলি এদের খাপ গোত্রের নাম। আজকাল যে স্বগোত্র বিবাহ ও অনার কিলিং নিয়ে এত হইচই তা বুঝতে খাপ গোত্র সম্বন্ধে ধারণা এখান থেকেই করা যায়।
    শুধু যে হিন্দু সমাজ জাতপাতের জ্বরে আক্রান্ত তা নয়, শিখ,মুসলিম এরাও কম যায়না। গুরু শিখ, শিখ ক্ষত্রী, রামগড়িয়া শিখ, দোয়াবা শিখ রাজপুত, শিখ কাম্বোজ এমন আরো কতজাতের শিখ স্বজাতি পাত্রপাত্রীর খোঁজে হাজির, গুরু গোবিন্দ সিংও জানতেন কিনা জানিনা!

    অন্যদিকে বাঙালী সমাজের অন্দরমহলে হিন্দী সিরিয়াল ও বলিউডের হাত ধরে উত্তর ও মধ্য ভারত কি ভাবে ঢুকে পড়েছে তা মালুম হয় যখন জাত গোত্র ইত্যাদির সাথে সাথে মাঙ্গলিক অমাঙ্গলিকের উল্লেখ হয় বাঙালীদের বিজ্ঞাপনে। বাঙালী বিয়েতে আইবুড়োভাতের সাথে সাথে এভাবেই আজকাল মেহেন্দী, সঙ্গীতও মিশে গেছে, সে অবশ্য অন্য প্রসঙ্গ।

    যদি এতক্ষন অবধি পড়ে মনে হয় ম্যাট্রিমনিয়ালের পাতা গুলো শুধুই সিরিয়াস ভাবনাচিন্তার উদ্রেক করে তাহলে তা লেখার দোষ। এখানে ওখানে মনিমুক্তোর মত ছড়ানো থাকে মজার মজার কথা, একটু মন দিয়ে পড়তে হবে।
    "কাস্ট নো বার" কথাটা প্রায়ই দেখা যায় এধরণের বিজ্ঞাপনে যা দেখে আমরা তাদের উদারতায় বাহবা দিই, আবার মাসিমার মত কেউ কেউ পাত্র/পাত্রীর কোনো সম্ভাব্য গন্ডগোলের আশংকায় ভ্রু কুঁচকিয়ে পাতা ওল্টায়।
    মজা লাগে যখন দেখি "আপার কাস্ট নো বার"। অনেকটা জলে নামব, জল ছড়াব, জল তো ছোঁবনা, উদার হব কিন্তু শর্তসাপেক্ষে!
    চৌত্রিশ বছরের পাত্রর বিজ্ঞাপনে লেখা থাকে "লুকস মাচ ইয়ঙ্গার" আবার বাহাত্তর বছরের সিনিয়র সিটিজেনের ক্ষেত্রেও সেই একই কথা। কার ক্ষেত্রে ইয়ঙ্গারের কি মানে করে কতটা বয়স কমিয়ে ভাবতে হবে তা কিন্তু বেশ ভাবনার ব্যাপার!
    তিরিশ বছরের মডার্নাইট মাথুর বয় তার আধুনিকতা প্রমাণ করতে পাত্রী সম্বন্ধে কোনো চাহিদাই রাখেনা, নিদেনপক্ষে বয়স নিয়েও নয়।

    কমেডি, ট্র্যাজেডী, সাসপেন্স রহস্য কোনো কিছুরই অভাব নেই বিজ্ঞাপনের এই বিভাগে,পাক্কা সাপ্তাহিক মনোরঞ্জনের সাধন, শুধু একটু ধৈর্য্য ধরে খুঁজে নিতে হবে আপনার পছন্দের বিষয়টি।

    **********শেষ************
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ২৪ মে ২০১৩ ১৬:৪৪611800
  • দারুন লেখা জমাটি লেখা,
    কিন্তু রহস্য গল্পে এখনো শ্যাষ হইলো না!!!!!!
  • 4z | 152.176.84.188 | ২৪ মে ২০১৩ ২০:৫০611811
  • বাঙালীদের মধ্যে এই ঢপের সিরিয়ালগুলো কীভাবে প্রভাব ফেলেছে তার প্রমাণ পেয়েছি ভায়ের বিয়ের সময়। পাত্র-পাত্রী নিজেরাই একে অন্যকে পছন্দ করে বাড়ির লোককে এই কলাম দেখার অত্যাচার থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল। পাত্রীর পরিবার দীর্ঘকাল প্রবাসী (দিল্লি)। সব কিছু ফিক্সড হয়ে যাবার পর হঠাৎ একদিন পাত্রীর মায়ের ফোন, মেয়ে মাঙ্গলিক, তাই পণ্ডিতজি বলেছে গাছের সঙ্গে আগে বিয়ে দিতে। সে শুনে পাত্র পক্ষ প্রবলভাবে বেঁকে বসে, ছেলে তো পারলে সেদিনই হবু বউকে কিডন্যাপ করে কোর্ট ম্যারেজ করে ফেলে। শেষ পর্যন্ত অনেক বুঝিয়ে পাত্রীর মাকে থামানো গেছিল। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, পাত্রের বাবা-মা খুবই জ্যোতিষ মেনে চলেন কিন্তু পাত্র বা তার দিদির বিয়েতে কোন কুষ্ঠি মেলানো হয়নি (এতে যে পাত্রের দিদির হাত আছে সে কি আর... হেঁ হেঁ... বলে দিতে হবে :))
  • sosen | 125.242.252.190 | ২৪ মে ২০১৩ ২১:০৮611724
  • আমি একখানা পড়েছিলাম, উচ্চমাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ পাত্রের জন্য মাধ্যমিক অনুত্তির্না পাত্রী চাই। মনে ভারী দাগ কেটেছিল। ( অনুত্তির্না বানান গুগল লে আউটে হচ্ছে না)
  • Lama | 126.203.206.255 | ২৪ মে ২০১৩ ২১:১৩611725
  • আমার দেখা সবচেয়ে খোরাক পাত্র চাই বিজ্ঞাপন

    'অসবর্ণ, চশমা ও শিবপুর চলিবে না'
  • byaang | 132.167.123.198 | ২৪ মে ২০১৩ ২১:৩৩611726
  • ঃ-)))))
  • Reshmi | 192.64.5.193 | ২৪ মে ২০১৩ ২২:০৯611727
  • পাত্র "নামে মাত্র ডিভোর্সি" এটাও খুব চলে।
  • Ekak | 125.118.20.67 | ২৪ মে ২০১৩ ২২:১৪611728
  • "এক ক্লাস কম ম্যাট্রিক পাশ "

    এখনকার না , পুরনো জমানো কাগজের বই এ দেখেছি ।
  • উৎসুক | 127.216.213.119 | ২৪ মে ২০১৩ ২২:২৮611729
  • হ্যাঁ এই নামমাত্র বিবাহে ডিভোর্সী দ্বারা কি কৌমার্য্য দিকে ইঙ্গিত করা হয়???
  • pi | 78.48.231.217 | ২৪ মে ২০১৩ ২২:৩৬611730
  • ডিগ্রিঃ MABF
  • ন্যাড়া | 132.179.75.132 | ২৪ মে ২০১৩ ২২:৪৩611731
  • সুদর্শন, সুউপায়ী, স্মার্ট, অ্যামেরিকা-ফেরত, আইটি, সরকারী কর্মচারীর একমাত্র সন্তান পঃ বঃ রাঃ সদগোপ পাত্রর জন্যে যেমন তেমন একমাত্র সন্তান পাত্রী চাই। পাত্রীর নিজস্ব বাড়ি থাকা প্রয়োজন। বাড়ির ছবিসহ যোগাযোগ করুন।

    (শিব্রাম অবলম্বনে)
  • ranjan roy | 24.99.8.30 | ২৫ মে ২০১৩ ০০:৪৪611732
  • শ্রাবণীকে,
    প্লীজ, একটু হেল্পান!
    আমার এখন প্রতি রোববার সকালে অব্শ্যকর্তব্য হল আবাপ ও TOI এ পাত্রী চাই কলাম দেখে দাগ দিয়ে যদি একটা দুটো মেলে তো ই-মেইল করা বা SMS পাঠানো। কিন্তু TOI এ ওই PQM ,WUP এগুলো কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। আবার SM ও আছে। যদি একটু এগুলো বলে দেন!
    আমার হাড়ে দুব্বো গজিয়েছে। কারণ মেয়ে লুরুতে পদস্থ ছেলে চায়। আবার নিজে ৫-১১ বলে অন্ততঃ ৬ ফিট হাইটের ছেলে চায়। কোন জ্যোতিষ নিয়ে মাপজোক চায় না। কিন্তু ওর চেয়ে স্যালারি বেশি চায়। প্রবাসী বং হলে ভাল, ইত্যাদি। এখন এত ছোট সাব সেটের মধ্যে পাওয়া খুব কঠিন অংক। কারণ, ৬ ফিটের ছেলে কানের পাশে ৫-১১ চায় না, খুব বেশি হলে ৫-৮ অব্দি। আর মেয়ের চাকরিকে গুরুত্ব না দিয়ে চায় মেয়ে ছেলের চাকরিস্থানে যাবে। এবং অধিকাংশ ছেলের বাবা-মা চান কুষ্ঠি-রাশি-গণ মিলিয়ে বিয়ে দিতে। যেমন দেবারি গণ-মাঙ্গলিক চলিবে না। প্রকৃত সুন্দরী ও ফর্সা কন্যা নিজে কথা বলুন।

    আর বিজ্ঞাপন দেখে অবাংগালী পাত্র খোঁজা বেশ চাপ।
  • দেব | 127.194.10.255 | ২৫ মে ২০১৩ ১০:৩৩611733
  • বাপরে, বাঙ্গালীরা যে বাকি ভারতের থেকে কতটা বেশী উদারমনস্ক, এবং গুরুর পাঠকরা (আমি সমেত) বাকি বাঙ্গালীদের থেকে, লাইনে লাইনে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখালেন বটে। এটা আমি জানতামই, তবে এবার একেবারে নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। শুধু একটা ব্যপারই ভাবায়, অবাঙ্গালীদের মধ্যে মাত্র দুই জেনারেশন বাস করার পর, তাদের আচার ব্যবহারগুলো আমাদের ভেতরে কিভাবে কিছুটা ঢুকে আসে সেটাই আশ্চর্য্য।
  • | 126.202.142.106 | ২৫ মে ২০১৩ ১৩:১৯611735
  • যাদের প্রেমজ বিয়ে হয় নি তারা কী ভাবে জীবন সঙ্গী না সঙ্গিনী পাবেন?

    অ্যাড তো দিতেই হবে। তবে হ্যাঁ অ্যাড র ভাষা র ক্ষেত্রে আরো সাবধানী হওয়াই যায়।
  • | 126.202.142.106 | ২৫ মে ২০১৩ ১৩:২৫611736
  • আমার এবং আমার বোনের জন্যে একই সঙ্গে অ্যাড দেওয়া হয়।

    প্রথম বারে অ্যাড দেবার তিন নম্বর আসা কলে বোনের বিয়ের ঠিক হলেও। আমার ক্ষেত্রে মোট তিন বার অ্যাড দিতে হয়েছিল।

    কারন "ঘরোয়া" কথা টা লেখা সত্ত্বেও বেশীর ভাগ ডঃ/প্রফেসর/আই টি তে কাজ করেন এমন মেয়ে দের পরিবার ই যোগাযোগ করছিলেন। আর আমার জেদ ছিল কিছু তেই চাকুরী রতা মেয়ে বিয়ে করবো না।

    এক্ষেত্রে "ঘরোয়া" বলতে আমরা সেটা ই বোঝাতে চেয়েছিলাম।
  • bb | 127.195.185.98 | ২৫ মে ২০১৩ ১৬:৪২611737
  • সেক্ষেত্রে পরিষ্কার চাকুরীরতা চাই না লেখাটাই বাঞ্ছনীয় নয় কি ? কারণ ঘরোয়া মানে আরও কিছু যা একজন চাকুরীরতা মেয়েও হতে পারেন, যেমন তিনি গৃহকর্মেনিপূনা, দেশীয় পোশাক ছাড়া পরেন না, যৌথ পরিবারে মানুষ ইত্যাদি।
  • bratin | 122.79.41.55 | ২৫ মে ২০১৩ ১৬:৫৮611738
  • হ্যাঁ ঠিক।

    আমাদের ই লেখার ভুল হয়েছিল।
  • PM | 233.204.200.11 | ২৫ মে ২০১৩ ১৭:৩৭611739
  • ব্রতীনের সম্বন্ধে যেটা সবচেয়ে প্রশংসাযোগ্য সেটা হলো, ও যেটা করে বা বলে খুব স্ট্রং বিশ্বাসের যায়্গা থেকে করে। পোলিটিকালি কারেক্ট নয় সবক্ষেত্রে, কিন্তু আমাদের অনেকের মতো দ্বিচারী নয়। বাইরে সবকিছুই পলিটিকলি কারেক্ট কিন্তু বাড়ীর চার দেওয়ালের মধ্যে এক্কেবরে অন্য জগত।
  • চান্দু মিঁঞা | 127.97.172.201 | ২৫ মে ২০১৩ ১৭:৪১611740
  • তাইতো ব্রতীনের এত ফ্যান।
  • bb | 127.195.185.98 | ২৫ মে ২০১৩ ২০:৫২611741
  • রাইটো - ব্রতীনের অনেক ফ্যান সেই জন্য।
  • | 37.62.248.170 | ২৫ মে ২০১৩ ২২:২৭611742
  • ম্যাট্রিমনিতে অ্যাকাউণ্ট খুলবো বলে সাইন আপ করলাম, মোটামুটি ডাটা ইন্পুট করার পর ভেরিফিকেশন কল এলো, গলা শুনে মনে হলো সাউথের লোক, কনভার্সেশনটার কিছু অংশ এমন​:
    আপ ♦ হ্যায়?
    হ্যাঁ।
    আপ হিন্দু হ্যায় না?
    ম্যায় নন রিলিজিয়াস লিখা হুঁ..
    মগর আপকে মাম্মিপাপা হিন্দু হ্যায় না?
    হাঁ, তো?
    ঠিক হ্যায় চ্যলেগা......
    আচ্ছা স্যর আপ কাস্ট নেহি লিখে হ্যায়?
    ম্যায় কাস্ট সিস্টেম বিলিভ না করতা....
    ঠিক হ্যায় স্যর,..... আচ্ছা আপ স্যালারি নহি লিখে হ্যায়?
    লিখনা জরুরি হ্যায় ক্যা?
    লিখনেসে আচ্ছা হোতা.......
    ..........ঠিকহ্যায় স্যর​, আপকা অ্যাকাউন্ট বনগ​য়া।

    লগ ইন করে দেখলাম আমার রিলিজিয়াস বিলিভের জায়গায় হিন্দু লেখা হ​য়েছে, আর কাস্টটের জায়গায় পদবিটাকেই লিখে দিয়েছে!!
    এবার ফোন করলাম ওদের নম্বরে, এক বাঙালি মহিলা ফোন ধরলেন:
    নমস্কার, আপনাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারি?
    আমার রিলিজিয়াস বিলিভের জায়গায় হিন্দু লেখা হ​য়েছে, ওটা নন রিলিজিয়াস হবে।
    দেখুন স্যর ওটাতো আমরা চেঞ্জ করে দিতেই পারি কিন্তু স্যর তাহলে আপনি বেশি প্রেফারেন্স পাবেন না, আপনার সার্চ রেজাল্টও বেশি আসবেনা, তাছাড়া আপনার নাম থেকেওতো বোঝা যায় আপনি হিন্দু ব্যাকগ্রাউন্ডের তাই আমরা ওটা হিন্দু লিখেছি....
    ঠাণ্ডা গলায় বললাম ওটা চেঞ্জ করুন​।
    ঠিক আছে স্যর​, আর কিছু?
    হ্যাঁ কাস্টের জায়গায় আমার পদবি লিখেছেন কেনো? ওটা ব্ল্যাঙ্ক রাখতে বলেছিলাম।
    স্যর কাস্ট দিলে আপনার সুবিধা হবে,....
    ওটা খালি রাখুন।
    স্যর বুঝছেন না, এগুলো না ভরলে আপনার প্রোফাইল বেশিরভাগের সার্চে আসবেনা.....
    ঠিক আছে আমার প্রোফালটা ডিলিট করে দিন।
    না না ঠিক আছে, আপনি যেমন চাইছেন তেমনই করে দিচ্ছি!
  • PM | 181.6.207.108 | ২৫ মে ২০১৩ ২২:৪০611743
  • ক্ষি কেলো!!!
  • ranjan roy | 24.96.119.1 | ২৫ মে ২০১৩ ২২:৫৪611744
  • বুঝতে পারছি কেন আমি বেশি রেসপ্ন্স পাচ্ছি না। ঃ((((
  • | 126.203.131.213 | ২৫ মে ২০১৩ ২৩:০৫611746
  • অ্যাঁ? রঞ্জন দা আবার? ঃ))
    ন্যাড়া কি এক বারের বেশী বেল তলায় যাচ্ছে আজকাল?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন