নন-আঁতেল লেখা কম পড়ে লোকে দু-একটা আঁতেল লেখা পড়লে বিজেপি আসতে আরো বছর দশেক দেরী হত। ঃ-)))
দেশভাগ, মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি নিয়ে অনেকেই লিখেছেন বটে, তবে খুব কমজনের লেখাই দাঁড়িয়েছে। তীক্ষ্ণ রাজনৈতিক সচেতনতা এবং সময় সম্পর্কে স্বচ্ছ দৃষ্টি না থাকলে এসব লেখা কেবল স্মৃতিচারণ হয়ে দাঁড়ায়। স্মৃতি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তির নিজের বর্গের দোষত্রুটিকে র্যাশনালাইজ করে দেয়। খুব কম লেখকই আখতারুজ্জামান ইলিয়াস হতে পারেন। 'খোয়াবনামা' যেভাবে তেভাগা ও দেশভাগকে একসুতোয় বেঁধে দ্যাখে, সেইটেই সেসময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতার সবচেয়ে নিখুঁত চিত্র বলে মনে হয়। উল্টোদিকে, 'চিলেকোঠার সেপাই'-তে হাড্ডি খিজির যখন টালমাটাল ঢাকার রাস্তায় মধ্যবিত্ত দম্পতির কাছ থেকে নিষ্ঠুরভাবে নিজের মজুরি নেয় এবং সেই দম্পতি খিজিরকে অমানুষ বলে গাল দেয় কিংবা আয়ুব খানের গদিতে আগুন লাগাও বলে স্লোগান দিতে দিতে তার ফাঁকে হঠাৎ গুঁজে দেয় মহাজনের গদিতে আগুন লাগাও এবং তারপর অন্যান্যদের কাছে ধমক খায়, তখন এইসব ঘটনাগুলোর মধ্যে জাতীয়তাবাদী সীমা ছাড়িয়ে অনেক গভীর একটা ঐতিহাসিক সচেতনতা খুঁজে পাওয়া যায়। এসব বাদ দিয়ে শুধুমাত্র স্মৃতিনির্ভর লেখা পড়ার উৎসাহ বোধ করিনা।
সব সময় homogeneity খুঁজলে unity in diversity concept টা অর্থহীন হয়ে যায় ।
"চকের গুঁড়ো পর্যন্ত দিয়ে দেয়, দুধে।"
"বড়" হয়ে যাবার পর মানুষের গরুর দুধ খাবার কি খুব প্রয়োজন আছে? সাউথ ইস্ট এশিয়ায় দুধ বিক্রির পলিটিক্সটি অতীব জটিল, :-)
আপনাদের পোস্টগুলো পড়তে পড়তে একটা কথা মাথায় ঘুরছে, লিখেই ফেলি।
গতকাল আমার জনৈক ছাত্রের PhD ওরাল পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিল, যে ভদ্রলোক পরীক্ষক, তিনি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের লোক, এখানে এসে ল্যাপটপের পাওয়ার কর্ড গুঁজছেন। আমাকে বললেন, এই একটা বেশ ভালো ব্যাপার জানেন, নিউ জিল্যাণ্ড অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে গেলে আলাদা করে অ্যাডাপ্টার নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় না। আমরা দুদেশের মানুষরা প্রায় একই রকম, বলুন? তা ব্যাপারটা হয়ত অতটা মধুর নয়, যদিও মোটামুটি অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যাণ্ডের সাধারণ মানুষের মধ্যে যাতায়াত, জমি বাড়ি কেনা, ভিসাহীন চলাফেরা সবই চলে। এমনকি, আপনি নিউজিল্যাণ্ড থেকে অস্ট্রেলিয়া গেলে চট করে বুঝতে পারবেন না, কোথায় কতটা তফাৎ। দোকানপাট সব এক রকম, লোকেরা (কান খুব সজাগ না হলে) প্রায় একই রকম ইনটোনেশনে কথা বলে, এইসব। তা কিছুটা রাইভ্যালরি নিশ্চয়ই আছে। অজি, কিউয়ি তো এক নয়।
যে কারণে কথাটা তুললাম, পশ্চিম থেকে পূবে উপমহাদেশে তিনটে দেশ (পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ), তিনটে দেশের মানুষের মধ্যে কি খুব অমিল (চেহারায়, মনে?)। যাঁরা দেশের বাইরে থাকেন বা অন্তত এমন কয়েকদিন থেকেছেন যেখানে পাকিস্তানি বাংলাদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে (ধরুন পেট্রোল পাম্পে/গ্যাস স্টেশনে), অন্যত্র, তখন কথা বললে কি মনে হয়? মানুষ মানুষে সম্পর্কটা আমরা এত সহজে অকারণে তেতো করে ফেলি কেন?
@Atoz ১৯৪৭ থেকে ধীরলয়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে ইমিগ্রেশনের কথাটা তুলেছেন দেখলাম। ১৯৬৮ সালে ভারত সরকার পার্লামেন্টে একটি আইন পাশ করেন, যার নাম "Enemy Property Act, 1968", আইনটির টাইটেলটি লক্ষ্য করুন, "Enemy" । কে কার শত্রু? একটা কাল্পনিক লাইন, তার ভিত্তিতে একটা দেশকে দুটুকরো করে দেওয়া হল, মানুষগুলোর কি হল কারো খেয়াল নেই, সম্পত্তি হয়ে গেল "শত্রুর" সম্পত্তি! সেমানটিকস, কিন্তু তার পেছনে তো একেকটা গল্প থাকে। একটা মন থাকে যে গল্পগুলো তৈরী করে।
আমরা সব মেনেও নিই।
এইটাই।