এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 75.255.37.161 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১২ ১০:১০583082
  • আমিও যাইনি|
    আর দেশ-এ বার্মুডা নাইটিকে নিয়ে লেখাটা পড়ার পর পুরীর কথা ভাবলেই... :পি
  • sosen | 126.203.189.43 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১২ ১০:২৮583083
  • পুরী দিব্যি লাগে। রাতের সমুদ্র দিনের চেয়েও সুন্দর।
    দিনের নোংরা বিচে হই চৈ করা ম্যাক্সি হাফপ্যান্টের দল কাউকে থোড়াই পাত্তা দেন। ওই অতটুকুই বাঙালির মন খুলবার আর দেহ খুলবার স্থান। আমার তাতেও ম্যাগো আসে না। বরং সারা বছরে একটিবার জগন্নাথ দর্শনের ওই চেষ্টাই ভালো লাগে।
    শুধু বিচটা এট্টু পরিষ্কার রাখলে খুশি হতাম। কিন্তু ভারতে বসে ওসব দাবি দাওয়া করা সঙ্গত নয়।
    শিবাংশুদার লেখা অবশ্য পুরীর চে' উচ্চমানের।
  • শঙ্কু | 127.201.224.238 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১২ ২০:০৬583084
  • আর আমি মাত্র একবার।
  • kd | 69.93.243.191 | ১০ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:৫৭583085
  • পুরী আমি বারবার যাই, বছরে একবার তো বটেই। থাকি স্বর্গদ্বারে - বাঁধা হোটেল, পুলিনপুরী, রুম ৩০২। চক্রতীর্থেও আগে ছিলুম, ওই সিউডো-সাহেবিপনা বড় বোরিং। তার থেকে এদিকে অনেক বেশী কালার। খাওয়াদাওয়ারও সুখ এদিকে অনেক ভালো।

    আমার কাছে পুরীর মেন অ্যাট্রাকশান নিম্নবিত্ত বাঙালী পরিবারের অনাবিল আনন্দের একটু ছোঁওয়া পাওয়া। অনেক বছরের সঞ্চয়ের বিনিময়ে বৌ-বাচ্চা নিয়ে একটু পুন্যি করা, একটু সমুদ্রে ডোবাডুবি এরা সারা জীবন ধরে রেমিনিস করবে, অনেক অনেক দেশ ঘোরা আমি কি কোনোদিন সেই আনন্দ পাবো? আমি শুধু এদের দেখি, প্রাণভরে দেখি।

    একটা ছোট্টো সীন।
    এই এই বোঁচা, খালের অত ধারে যাস না।
    মা, কতবার বল্লুম এটা খাল না, এটা গঙ্গা। খাল কি এত বড় হয় নাকি?
    হ্যাঁ, হ্যাঁ, এটা তো গঙ্গাই হবে। ওই তো দূরে বড় বড় জাহাজ। সত্যি, কত পুন্যি করেছিলুম, গঙ্গাদর্শন হ'লো। পুঁটি, ওই বিস্লেরির বোতলটা দে তো, গঙ্গাজল নিয়ে নি বাড়ির জন্যে।

    ওই বিস্লেরি বোতলের গঙ্গাজলের মতো পবিত্র কি আর কিছু হয়?

    পুরী তো এদেরই, আমাদের জন্যে তো গোয়া, বার্সেলোনা, হাওয়াই আছেই।

    সরি, "তিল"এর বাড়ি গিয়েছিলুম, অনেকগুলো তালের বড়া খেয়ে এসেছি। তারই প্রভাব হবে হয়তো।
  • cb | 99.231.122.175 | ১০ ডিসেম্বর ২০১২ ০১:২৬583086
  • কাব্লিদা মনের অনেক ভেতরের কথাগুলো বলে দিলেন।
  • lcm | 34.4.162.218 | ১০ ডিসেম্বর ২০১২ ০২:০০583087
  • শিবাংশুর লেখা যথারীতি অনবদ্য।
    দল বেঁধে সমুদ্রস্নানের সময় একটু কোলাহল হয় - পুরী থেকে মায়ামি - সর্বত্রই। পশ্চিমের অনেক জায়গায় সমুদ্রের জল তত উষ্ণ নয়। অনেকে স্রেফ রোদ পোহাতেই যায়, হয়ত জলেই নামল না, তোয়ালে পেতে শুয়ে বসে সারাদিন কাটিয়ে দিল। সে সব জায়গায় কোলাহল একটু কম হয়।
  • i | 147.157.8.253 | ১০ ডিসেম্বর ২০১২ ০৬:৩৬583088
  • "খুঁজে দেখো, আছে, আছে,
    নির্জনে কি কোনও জনতায় ...'
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ১০:৩৫583089
  • শিবাংশু দার লেখা পড়ে কেটেই ফেললাম পুরীর টিকিট, সাগরিকা হোটেল এ থাকা, ৩১শে ডিসেম্বর পৌছাব আর ফেরা ৪ই জানুয়ারী।
  • | 233.228.141.165 | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ১০:৪৬583090
  • শিংবাশু দা, একদম চেটেপুটে পড়লাম। বড় ভালো লেখা। এখানে তোমার সংযত আবেগ মিশে লেখা টা আরো লোভনীয় হয়েছে।
  • শিবাংশু | 127.197.239.80 | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ২২:২৫583092
  • পুরী নিয়ে কিছু লিখে আগমার্কা বাঙালিদের ভালো লাগানো নিঃসন্দেহে একটা চ্যালেঞ্জ। বিষয় হিসেবে এতো জানিত ও রোমাঞ্চহীন, যে বেশ সন্দিহান ছিলুম। তা সত্ত্বেও এ রকম একটা অকিঞ্চিৎকর লেখা এতোজনের ভালো লেগেছে এটা একটা বড়ো প্রাপ্তি। সবাইকে ধন্যবাদ। যদিও পুরী ভালো লাগার যতো কারণ আছে, ভালো না লাগার কারণও খুব কম নেই। কিন্তু ঐ আর কি, কীভাবে দেখবো তার উপর, অর্ধেক ভরা না অর্ধেক ফাঁকা, তার উপর নির্ভর করে।

    cb , কাবলিদা,

    আপনাদের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। নিম্নবিত্ত বাঙালিদের ' সব পেয়েছির দেশ' হিসেবে পুরীর তুলনা নেই। যে স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে তাঁরা এখানে দুদন্ড আনন্দ খুঁজে বেড়ান, সারা দেশে আমি এমনটি কোথাও দেখিনি। সম্প্রতিকালে বিশাখাপত্তনমের রামকৃষ্ণ তটভূমিতেও প্রচুর বাঙালি, যাঁরা ঠিক উচ্চবিত্ত নন, এমন অসংখ্য পর্যটকদের দেখা পেয়েছি। কিন্তু প্যাকেজ হিসেবে ভাইজাগ আর পুরীর কোনও তুলনা চলেনা। তবে তাঁদের মধ্যে অনেকেরই প্রকাশ্যে পোষাক সচেতনতা নিয়ে সামান্য প্রশ্ন উঠতে পারে। ঃ-)

    ডাগদার,

    চলে এসো, নতুন লোককে পুরী চেনাতে ভালো লাগে। ঃ-)
  • | 233.227.174.28 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ০৩:২৮583093
  • ভাইজাগ র একটা প্লাস পয়েন্ট সমুদ্র+ পাহাড়(?)।

    সীমাচলম এখনো চোখে লেগে আছে। বার দুই গেছি।
  • cb | 99.231.111.81 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ০৩:৩২583094
  • শিবাংশুদার অ্যাজ ইউজুআল সংযত লেখনী। ভাইজাগ যাব, কোনদিন যাই নি
  • | 233.227.174.28 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ০৩:৪১583095
  • cb যাও । ব্যাপক।

    ১। রামকৃষ্ণ বীচ এ হালকা স্পীড বোট চালানো
    ২। বোরা কেভ্স
    ৩। ট্যানেলের ভেতর দিয়ে যাওয়া ।বোরা কেভস র রাস্তায়।
    ৪। সীমাচলম,
  • cb | 99.231.111.81 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ০৩:৫১583096
  • জয়গুরু!!!
  • bb | 127.195.160.107 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ০৮:২৭583097
  • শিবাংশুদা একমত- ভাইজাগ রামকৃষ্ণ আর ঋষিকোন্ডা বিচ অনেক ভাল।
    পুরীকে বাঙ্গালীরা ঐ গড়িয়াহাট বা শ্যামবাজারের মার্কেটের একটা একস্টেনশন বানিয়ে বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।
  • প্পন | 126.202.116.201 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ০৯:৫১583098
  • রুশিকোন্ডা সেই ২০০৫-এ গেছিলাম। ব্যপক বিচটা আর সমুদ্রের জলের রং। মনেই হয় না ইন্ডিয়তে আছি।

    কিন্তু একইসাথে দেখেছিলাম ব্যপকহারে কনস্ট্রাকশন শুরু হয়েছে। জানি না এখন একটা গোপালপুর অন সি টাইপের কেস হয়েছে কিনা।
  • প্পন | 126.202.116.201 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ০৯:৫৫583099
  • রামকৃষ্ণ বিচটা ভালো তবে বড় পাথর। ওখানে চান করা যায় না।

    ভালো ছিল ইয়ারাড়া বিচ। একেবারে অসাম শালা।

  • | 37.61.19.188 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ১০:১০583100
  • আমি ও ই ছোট্ট স্পীড বোট টাইপের জিনিস টা ( এর মনে হয় এক পিস গাল ভরা নাম আছে) চালিয়ে হেব্বি মস্তি পেয়েছিলাম।
  • | 24.97.16.129 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ২৩:১৬583101
  • ওয়ালটেয়ারেই মনে হয় সেই বড় বড় কালো পাথরগুলো ছিল ----- দূর মনে পড়ছে না। :-(
  • siki | 24.97.191.206 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ২৩:২৪583103
  • কালো পাথর তো প্রমিনেড বীচ -- পন্ডিচেরি।
  • প্পন | 190.215.102.251 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ২৩:৩১583104
  • একদম তাই।

    ওই ইয়ারাড়া বিচে এই সিনের শুটিংটা হয়েছিল।

  • প্পন | 190.215.90.89 | ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:০৯583106
  • ওহ, তালে ওটা আমাদের ড্রাইভারের গুল্প ছিল। ঃ)
  • Paramita | 132.179.31.146 | ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:১৫583107
  • একবারই পুরী গেছি, মাত্র বছর সাতেক আগে। বাঙালীসুলভ নস্টালজিয়া নেই(যেমন শোলে প্রথম দেখেছি দু বছর আগে, কিচ্ছু মনে হয় নি)। কিন্তু নস্টালজিয়া কি অ্যাসোসিয়েশন থাকলে তো ভালো লাগার চার আনা কাজ ওখানেই হয়ে গেল। কিন্তু আমি যে এই একজোড়া নতুন চোখ পেলাম - আমার পুরী সম্বন্ধীয় অলমোস্ট আনকোরা স্লেটে ছবি আঁকলেন লেখক আর একাত্ম করে দিলেন আমায় - যেন আমিই হাঁটছি ঐ দঙ্গলে। প্রেমেন মিত্তিরের এই কবিতাও এমনই ছবি এঁকেছিল সমুদ্রের যা কিছুতেই ভুলতে পারি না।

    নীল! নীল!! সবুজের ছোঁয়া কিনা তা বুঝি না
    ফিকে গাঢ় হরেক রকম কম বেশী নীল
    তার মাঝে শূন্যের আনমনা হাসির সামিল
    কটা গাঙচিল।

    গানটাও শোনো সবাইঃ


    আর শিবাংশুবাবুর লেখায় কি আভিজাত্য, কি দাপট! আবার একটা উদাসীন ব্যাপারও আছে। ওদিক থেকে দ্যাখো উঁকি মারছে হাসির আভাস। সব মিলিয়ে কয়্রেকবার পড়ে ফেললাম। আরো কয়েকবার পড়ব।
  • i | 147.157.8.253 | ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ ০৭:২৩583108
  • শিবাংশুদা,
    একটা লেখা শুরু করেছিলাম একদা। এই রকম ভাবেঃ

    "হাইওয়ে থেকে বাঁহাতি একজিট্‌। সামান্য এগোলে রাউন্ড অ্যাবাউট। গতানুগতিক। যেমনটা দেখা যায়। ডানদিকে টার্ন নিলে স্লোপ। রাস্তা খাড়াই । রাউন্ড অ্যাবাউট থেকে যখন পা রাখছ এ রাস্তায় অথবা গাড়ির চাকা, সেই মুহূর্তে জানছই না কোথায় যাচ্ছ। উঁচু রাস্তা। ব্যাস-এটুকুই দেখছ শুধু। হাল্কা দম নিয়ে পা রাখছ খাড়াই পথে অথবা অ্যাক্সিলেটরে পায়ের চাপ বাড়াচ্ছ খাড়াই পার হতে। হঠাৎই ভেসে আসছে সমুদ্রগন্ধ।শুনতে পাচ্ছ সমুদ্রগর্জন। তোমার মনে হচ্ছে-কি জানি কেন মনে হচ্ছে-তুমি নিজেই জানো না কেন ভাবছ এই খাড়াই পেরোলেই সামনে সমুদ্দুর। এই পথ তোমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে তোমার চেনা কোনো সমুদ্রপথের কথা। হয়তো।আবার হয়তো তুমি ছুটি চাইছ মনে মনে । তাই মনে আসছে সমুদ্র। যেখানে ছুটি কাটাতে চাও তুমি। আবার প্রতিদিন দু বেলা এ পথ যদি পার হতে হয়, তোমার মনে আসবেই না সামনে সমুদ্দুর। স্পীড লিমিট নিয়ে সচেতন হবে ঢালুতে নামতে আর তিন কিলোমিটার গিয়ে লেফট লেন নেওয়াটা মাথায় থাকবে শুধু। প্রাত্যহিকতা গ্রাস করে নেবে তোমার পথ পেরোলেই সমুদ্দুরকে। কিন্তু, ধরো আবার যদি বেশ খানিকটা সময়ের ব্যবধানে এ পথে আসো, হঠাৎ-ই, ধরো ছ মাস... এক বছর.. এই চমকটা ফিরে আসবে। টার্ণ নেবে খাড়াই রাস্তায়। সমুদ্রের গন্ধ পাবে। আবারও।
    অনেকটা -কোন্‌ পুরাতন প্রাণের টানে গানটা দীর্ঘদিনের ব্যবধানে শোনো যদি... প্রকৃতি পর্যায়। বর্ষার গান। তুমি শুনছ ।' কোন্‌ পুরাতন প্রাণের টানে/ ছুটেছে মন মাটির পানে।' চেনা শব্দ, চেনা সুর তোমার কানে। তুমি শুনছ- 'চোখ ডুবে যায় নবীন ঘাসে, ভাবনা ভাসে পুব-বাতাসে'-তুমি শুনবে এরপর, 'মল্লারগান প্লাবন জাগায় মনের মধ্যে শ্রাবণ-গানে।' এই অবধি একদম চেনা তোমার। মাটি, পুব বাতাস, মল্লার গান। গতানুগতিক। তুমি শুনছ। আঙুলের টোকা দিচ্ছ আলতো। তাল রাখছ। তারপরেই সেই অলীক চমক। তুমি ভুলেই গেছিলে যেন এরপর সাংঘাতিক একটা বদল আছে গোটা গানে। বর্ষা সংশ্লিষ্ট শব্দরাজির বদলে তোমার কানে আসবে 'লাগল যে দোল/ বনের মাঝে লাগল যে দোল।'
    তারপর , ধরো, এ বছর পুরী গেছ তুমি। অনেক অনেকদিন পরে। প্রথম দর্শনে যে রোমাঞ্চ ছিল-পুরী স্টেশন থেকে রিক্‌শা নিয়ে যাচ্ছিলে তুমি-ধরো পুরী হোটেলে -বাঁক ঘুরতে কোথা থেকে সমুদ্র এসে তোমার সামনে দাঁড়িয়েছিল। তুমি চিনতে পার নি -ভেবেছিলে আকাশ-তারপর চিনেছিলে-এক পল, দু পল পরে চিনেছিলে-তারপর ভেসে গিয়েছিলে। এই মুহূর্তটা -তোমার এই ভেসে যাওয়া টা-এতবার ফিরিয়ে এনেছ মনে মনে -এতবার, যে সেই শিউরে উঠে ভেসে যাওয়ার অনুভূতি জীর্ণ হয়ে হারিয়ে গেছে। এবারে বুঝলে সেটা। তুমি শিউরে উঠলে না । বুকে চমক লাগছে না তোমার। চোখে দেখ নি এতদিন। তবু হারিয়ে ফেলেছ।মনে মনেই হারিয়ে ফেলেছ। অ্যালবাম উল্টোতে উল্টোতে চেনা হয়ে যায় যেমন ছবির ফ্রেম, ছবির ডেপ্‌থ, শেড। চমক লাগলনা এতদিনের অদর্শনেও। তখন কি করলে তুমি? তিনদিন খুব ঘুরলে -পায়ে হেঁটে, রিক্‌শায়-চক্রতীর্থ, বেড়ীওলা হনুমান, সোনার গৌরাঙ্গ, স্বর্গদ্বার, গুন্ডিচা, গম্ভীরা, জগন্নাথের মন্দির, সিদ্ধ বকুল-গলি-গরু- গজা-পদ্মের মালা-নৌকার চোখদুটি -বালিতে দুটো কুকুরছানা। জগন্নাথের মন্দিরে তোমার মাথায় পড়লো ছড়িদারের লাঠি।।। শনিমন্দিরে তোমাহেন নাস্তিক স্রেফ জেনেশুনে প্রতারিত হ'ল-তুমি পান্ডার গল্প শুনলে - যা তুমি অসত্য জানো-শুনলে তবু-তোমার কানে কেমন একটা সুর বাজতে লাগলো- ঘুরে ঘুরে বাজতেই লাগল- 'এইখানে, একদিন নদী ছিলেন , মা, এখন সমুদ্র।' তুমি তাকে টাকা দিলে। পান্ডা তোমাকে স্তম্ভগাত্রে গৌরাঙ্গের আঙুলের ছাপ দেখালো। তুমি দেখলে। নিজের অজান্তেই হাত বোলালে স্তম্ভে -নিজের আঙুল আর গৌরাঙ্গের আঙুল মেলাতে চাইলে যেন- তুমি দেখছ দশ আঙুলে দশটি সোনার আঙটি সাষ্টাঙ্গ, ছিন্নবস্ত্রের পাশে, জগন্নাথের সামনে বুক চাপড়াচ্ছে শোকার্ত-দুহাত উঁচু করে আশীর্বাদ চাইছে শয়ে শয়ে ভক্তজন-তোমার মাথার ওপরে দ্বাদশ শতকের খিলান,প্রাচীন ছাদ, তোমার পাশে স্তম্ভগাত্রে গৌরাঙ্গের অঙ্গুলিচিহ্ন আর তোমার চতুর্দিকে থই থই তোমার ভারতবর্ষ, আসমুদ্রহিমাচল ভারতবর্ষ তোমার।তুমি তো এসব ভুলেই গেছিলে একদম-তোমার খালি পায়ের পাতার তলায় মন্দিরের পাথর-বালি-যেমন তুমি ভুলেই গিয়েছিলে সাদা শাড়ি , নরুণ পাড় সেই পাঁচজনকে-চরাচর ভেসে যাওয়া জ্যোৎস্নায় যারা একদিন গেয়ে উঠেছিল, সে মরণ স্বরগসমান... হঠাৎ পেয়ে গেলে সমুদ্রের সামনে-যখন সে বলল তোমার পাশে বসে-'ঐ যে সমুদ্রর আওয়াজ , আমার বুকে আজ পাঁচ বচ্ছর সে আওয়াজ... '
    তুমি সব ভুলে গেছিলে। সব ভুলেছিলে তোমার গুগল ম্যাপে, তোমার জিপিএস-এ, বীচ টাওয়েলে, ফিশ চিপস, আর সী গালে। তুমি ফিরে পেলে। এতদিনের অদর্শনে তাকে তুমি ফিরে পেলে। তোমার সমুদ্র। তোমার ভারতবর্ষ।"

    লেখাটা শেষ হয় নি, শেষ করি নি আর কি-বা এখানেই শেষ করে দিয়েছিলাম একদিন।
    কারণ পুরীকে লেখায় ধরতে গেলে - সমুদ্র মন্দির কুকুর গরু গোবর পান্ডা পদ্মফুলের মালা বালি ডাবের খোলা হাওয়াই চপ্পল নোনাধরা বাড়ি জগন্নাথের রান্নাঘর ফোঁপরা বকুলের গুঁড়ি আর হয়তো পুরোনো একটা সাদা কালো ছবি মা বাবা আর দুটো বাচ্চা - বালিতে বসা-ব্যাকড্রপে সমুদ্র--এই সমস্ত কিছু গন্ধ রং আর শব্দ সমেত ধরতে গেলে যে ভাষার প্রয়োজন হয়- ভাষা বদলে যাবে , বাঁক নেবে , কখনও সাধু কখ্নও চলিত -চলন বদলে বদলে ঢেউ হয়ে পাঠককের বুকে আছড়ে পড়বে-এই ভাষা আমার আয়ত্বে আসে নি আজও।

    আপনার কলমকে প্রণাম করে গেলাম।
  • pi | 127.194.7.202 | ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ ০৯:৪৭583109
  • কখনো কখনো শুধু আলাপ ই স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যায়।
  • dd | 120.234.159.216 | ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ ১০:২০583110
  • "কারণ পুরীকে লেখায় ধরতে গেলে - সমুদ্র মন্দির কুকুর গরু গোবর পান্ডা পদ্মফুলের মালা বালি ডাবের খোলা হাওয়াই চপ্পল নোনাধরা বাড়ি জগন্নাথের রান্নাঘর ফোঁপরা বকুলের গুঁড়ি আর হয়তো পুরোনো একটা সাদা কালো ছবি মা বাবা আর দুটো বাচ্চা - বালিতে বসা-ব্যাকড্রপে সমুদ্র".........

    ব্যাস। ব্যাস। পুরোটাই লেখা হয়ে গেছে। কিসু বাকী নেই।

    টইবোন কাঁপিয়েছে।
  • শিবাংশু | 127.197.236.235 | ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ ১৪:৪২583111
  • পারমিতা,

    আপনার উচ্ছ্বাস স্নিগ্ধতা দেয়, কিন্তু আমি জানি এ অতিশয়োক্তি। ঃ-)

    ইন্দ্রাণী,

    তোমার কলমকে অনেক ভালোবাসা।

    এই লেখাটা অনবদ্য হয়েছে।
  • | 24.97.235.242 | ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ ২০:৪৪583112
  • বলব কি বলব না ----- নাঃ বলেই ফেলি। ইন্দ্রাণীর এই লেখাটার ধরণটায় বড্ড শ্রেয়াদি শ্রেয়াদি গন্ধ। শ্রেয়াদির একক মাত্রার বেশ কয়েকটা লেখা এই ফর্মে এসেছে।
  • i | 147.157.8.253 | ১৪ ডিসেম্বর ২০১২ ০২:৪০583114
  • এখানে সমুদ্রগন্ধ । উত্তর তাই ভাটে দিলাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন