এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আরেকটা কলকাতা

    Achintyarup
    অন্যান্য | ৩১ অক্টোবর ২০১১ | ৪২৬১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • achintyarup | 59.93.246.243 | ৩১ অক্টোবর ২০১১ ০৫:৩২504818
  • ঝুপসি জঙ্গল নীলপুকুরের চারপাশ ঘিরে। পুকুরের উত্তরে পুরোনো নীলকুঠির ভাঙ্গা ভিত, নীল কাচার সারি সারি চৌবাচ্চা বুনো ঝোপে ঢেকে রয়েছে। দুশ বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু ভিতের গাঁথনি এতটুকু টসকায় নি। শাবলের চাড় মেরেও একটা গোটা ইঁট এখনও খুলে আনা যায় না। শঙ্কর চুনুরি চেষ্টা করে দেখেছে। ইঁট ভেঙ্গে যাবে তাও জোড় খুলব না। আজকালকার ফঙ্গবেনে সিমেণ্টের কাজ নয় তো, সুরকি আর শামুক-পোড়া জোংড়া চুনে গাঁথা। অমন আর এখন হয় না।

    নীলকুঠির উত্তরে, একটুকখানি জায়গা ছেড়ে সেকালের ইউনিয়ন বোর্ডের তৈরি রাস্তা। হো-ও-ও-ই উঁচু, দু মানুষ তো হবেই। তার ওপরে পিচ-পাথরে রোলার টানা হয়েছে তাও বেশ ক বছর আগে। এখন বাঁধের মাথা বরাবর কালো সরু পথ টানা চলে গেছে দেখা যায়। পুবদিকে খানিকটা গিয়েই রাস্তাটা বাঁক নিয়েছে দক্ষিণে।

    নীলপুকুরের দক্ষিণে অল্প একটু ডাঙ্গা জমি পার হলেই নদী। নদী নয় আসলে, নদ। দামোদর নদ। এই কাত্তিক মাসে ছিপছিপে তার চেহারা দেখলে ভাবতেই পারবে না দুমাস আগেই কি চেহারা ধরেছিল বাবা দামোদর। মাঠঘাট ভাসিয়ে নাবো জমির ঘর ডুবিয়ে কিছু আর বাকি রাখেনি। তবে দামোদরকে তো আর আজকে নতুন চেনে না এখানকার লোকেরা, তার লীলাখেলা দেখার অভ্যেস তাদের আছে। এখন তাই রোদ-গড়ানো ঘাটে ঝাপুস ঝুপুস সাঁতার কাটা আর নৌকো বাওয়া। ডিঙ্গি নৌকোয় চড়ে বসে জলে দাঁড়ের দু ঘা মেরে ছোট্ট ছেলে নিমেষের মধ্যে একবার এপাড়ে আসে তো আর একবার ওপাড়ে যায়। ডুব সাঁতার দিয়ে আরেকজন ভুস করে মুণ্ডুটা ভাসিয়ে তোলে ডিঙ্গির পাশটিতে, হাত দিয়ে টেনে ধরে দুলিয়ে দেয় নৌকো।

    কুঠির গা ঘেঁষে চুনুরিপাড়া। তার কথাও বলব।
  • siki | 123.242.248.130 | ৩১ অক্টোবর ২০১১ ০৯:৩৪504829
  • আটকে গেলাম। টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে বেরনো লেখা আর ছবিও পড়লাম।

    অচিন্ত্যরূপকে এখনো চোখে দেখি নি, তবে বেশ কল্পনা করতে পারি কেমন দেখতে লোকটাকে। তার কাঁধে বুঝি একটা বাঁশের লাঠি। লাঠির আগায় একটা পুঁটুলি বাঁধা। তার বাঁ হাতে একটা ঘটি। পুরানো একজোড়া নাগরা-জুতো প'রে সে এই মাঠের পথ দিয়ে ঐ পাহাড়ের দিকে চলেছে। মাঝে পড়ল এক ঝর্না। সেই যেখানে ডুমুর গাছের নিচ দিয়ে ঝর্নাটা বয়ে যাচ্ছে সেইখানে সে লাঠিটা নামিয়ে রেখে, পুঁটুলি খুলে, ছাতু বের করে জল দিয়ে মেখে খাচ্ছে। কেউ বুঝি তাকে জিজ্ঞেস করল, তুমি কোথায় যাচ্ছো? সে বললে, কী জানি, যেখানে হয়।

    -- কেন যাচ্ছো?

    সে বললে, কাজ খুঁজতে যাচ্ছি। ...

    চাগ্রিটা তো বদলাবদলি কল্লে না ভাই, লেখো তা হলে, তোমার লেখাই পড়ি।
  • I | 14.96.26.46 | ৩১ অক্টোবর ২০১১ ১৩:২০504840
  • ওয়া, ওস্তাদ !
  • kumu | 122.160.159.184 | ৩১ অক্টোবর ২০১১ ১৩:২৯504851
  • আচ্ছা, অচিন এই ফকির এত দেশ বিদেশ ঘোরার সময় কোথায় পায়?
  • ranjan roy | 14.97.28.79 | ৩১ অক্টোবর ২০১১ ১৬:৩৮504852
  • অচিন্ত্য শুধু ফকির নয়, মহা-ফক্কড়।:)) বাংলা নয়, হিন্দি অর্থে ""ফক্কড়'', যেমন রাহুল সাংকৃত্যায়ন বা বাবা নাগার্জুন নিজেদের ফক্কড় ভাবতেন। কাজের মধ্যেই ফাঁকি দিয়ে ঘুরে বেড়ায়, সেই বেলুড় মিশনে পড়ার সময় থেকেই।
    নিঘ্‌হাৎ TOI আপিসে এমন সব উদ্ভট অ্যাসাইনমেন্ট নেয়, যেগুলো সহজে কেউ নিতে চায় না! ব্যস্‌। সেবার ভরা বর্ষায় ফোন করলাম-- উত্তর এল কেরালায় আছি। ঝুপ্পুস বৃষ্টি দেখছি। কেন রে বাবা! কলিকাতায় কি বৃষ্টি কিছু কম পড়িয়াছিল?
  • Nina | 12.149.39.84 | ৩১ অক্টোবর ২০১১ ২২:১০504853
  • চিন্টু রে---ওয়াহ! ওয়াহ! দিল বাগ বাগ হয়ে গেল :-))
  • aranya | 144.160.226.53 | ৩১ অক্টোবর ২০১১ ২২:১৮504854
  • শমীক অচিন্ত্য-র ছবিটা এঁকেছে একদম ঠিকঠাক। আমাদের সবারই বোধহয় ওর সাথে চাকরী অদলবদল করার, নিদেনপক্ষে কোন একটা ট্যুরে সঙ্গে ঝুলে পড়ার ইচ্ছে।
    বড় ভাল লিখছ, অচিন্ত্য, as usualTOI-এর লেখাটার লিংক কি পাওয়া যাবে?
  • achintyarup | 14.96.54.71 | ০১ নভেম্বর ২০১১ ০৪:০৬504855
  • অনেক ধন্যবাদ সক্কলকে :-))

    TOI-এর লিঙ্কটা আর একটু পরে দিই? নেটে সার্চ মারলেই পেয়ে যেতে পারবেন যদিও, তাও...
  • aranya | 144.160.226.53 | ০১ নভেম্বর ২০১১ ০৫:৩৫504856
  • নিশ্চয়ই অচিন্ত্য, তুমি শুধু লিখে যাও, লিঙ্ক টিঙ্ক এখন দিতে হবে না, আমি নেটে সার্চ করে নেব।
  • achintyarup | 14.96.54.71 | ০১ নভেম্বর ২০১১ ০৫:৫২504819
  • চুন যে কত রকমের হয় তার ঠিক নেই। আজকাল শামুক-ঝিনুক পোড়ানো চুন বড় একটা হয় না। তৈরি করতে গেলে অনেক হ্যাপা, খরচও অনেক। তার বদলে আছে পাথুরে চুন। এখন তো কেউ আর চুন-সুরকির ঘর বানায় না। কম-পয়সাওয়ালা মানুষ দেওয়ালে চুনকাম করে, আর পকেট যদি একটু ভারী হয় তাহলে কত কোম্পানীর কত রং বাজার ছয়লাপ করে রেখেছে। আর লাগে পানে কি খৈনিতে খাওয়ার চুন। ওষুধ কোম্পানিগুলোরও লাগে কি? ও কুমুদি?

    তার চেয়ে বলা ভাল, চুন যে কত রকমের হত এই বাংলাদেশে তার ঠিক নেই। এক তো এই শামুক গুগলি-পোড়া জোংড়া চুন। দারুন জোরদার। সুরকীর সঙ্গে সেই চুন মিলিয়ে ঘর বানালে, চুন-বালির পলেস্তারা দিলে সে ঘর টিকে যাবে বছরের পর বছর। লোনা লাগবে না। পাথুরে চুনের গাঁথনি দিয়ে কিন্তু দেখা গেছে অতটা টেকসই হচ্ছে না ঘর। জল টানছে চুনে, দেওয়াল ফুলে যাচ্ছে, ইঁট খারাপ হচ্ছে। সে জন্য যাদের সামর্থ্য ছিল বেশি দাম দিয়ে হলেও জোংড়া চুনেই ঘর বানাত।

    সেকালে অনেক সময় দেখা গেছে বড় বাড়ি কি মন্দির তৈরিতে গাঁথনির কাজে ব্যবহার হয়েছে শুধু নরম কাদামাটি। বাকি কাজ জোংড়া চুনের মশলা দিয়ে হয়েছে। ভেঙ্গে পড়া পুরোনো মন্দিরের ফাটল থেকে বের করা মশলায় শামুকের খোলের টুকরো দেখা গেছে। হয়ত পোড়েনি ভাল করে, কিম্বা হয়ত পোড়ানো চুন ভাল করে চালুনিতে চালা হয়নি।

    বেড়াচাঁপায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ মিউজিয়ামের পণ্ডিতেরা যখন খনা মিহিরের ঢিবির নিচ থেকে দেড় হাজার বছরের পুরোনো মন্দিরের ভগ্নাবশেষ খুঁড়ে বের করছিলেন তখন মন্দির চত্বরের কাছেই মাটির নিচে আবিষ্কৃত হয় দুখানি গোল স্তূপ। স্তূপদুটোর ভেতরে দেখা যায় প্রচুর শামুকের খোলা আর কিছু পোড়ানো চুন। মন্দির তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল ওই জোংড়া চুন।

    আরও একটা কাজে চুনের ব্যবহার ছিল গৌড়বঙ্গে। গুড় তৈরি করতেন যাঁরা, তাঁদেরও কাজে লাগত চুন। তাল বা খেজুর গাছ থেকে রস বের করার সময় সে রস যাতে খারাপ না হয়ে যায় সেজন্য হাঁড়ির ভেতরে চুনের প্রলেপ লাগানো হত। শামুক-পোড়ানো চুনের দাম একটু বেশি হলেও, গুড় ব্যবসায়ীরা সেই চুনই পছন্দ করতেন। এই চুন অল্প একটু ব্যবহার করলেই নাকি কাজ হয়ে যেত। পাথুরে চুন লাগত পরিমাণে অনেক বেশি।

    তাছাড়া কবরেজমশাইরাও জোংড়া চুন ভেজানো পরিশ্রুত জল খাওয়ার বিধান দিতেন পেটের নানা রোগে।

    পানেও খাওয়া হত এই চুনই। কিন্তু নিষ্ঠাবতী হিন্দু বিধবারা নাকি শামুক-পোড়ানো চুনের পান খেতেন না। তাঁরা খেতেন শঙ্খচুন। সামুদ্রিক শাঁখ পুড়িয়ে তৈরি করা। শাঁখারিদের কাছ থেকে শাঁখের ছাঁট নিয়ে গিয়ে চুনুরিরা শঙ্খচুন বানাত।

    আর ছিল পঙ্খের কাজ। গোপেন্দ্রকৃষ্ণ বসু বাংলার বাস্তু অলংকরণ শিল্পের লুপ্তধারা প্রবন্ধে লিখেছিলেন, পঙ্খের কাজ হল -- বাড়ির দেওয়ালের বালি কাজের উপর একটা বিশেষ ধরণের আবরণ বা একপ্রকার চুনের প্রলেপ লাগানো, অনেকটা কলাই করার মত।... পঙ্খের কাজের জন্য যে বিশেষ রকমের চুন একান্ত প্রয়োজন তা পাওয়া যায় জোঙ্গড়া নামক এক প্রকার শামুক জাতীয় জলজ জীবের আবরণ বা খোলা পুড়িয়ে। সেকারণ এর নাম জোঙ্গড়ার চুন।... প্রসঙ্গত একটা কথা বলা প্রয়োজন, পঙ্খের কাজ করা স্থানের উপর চুনকাম করলে তার উঙ্কÄলতা নষ্ট হয়ে যায়। পঙ্খের কাজ শুধু ইমারতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না -- লোনা ও আর্দ্রতা প্রতিরোধ করে, অবশ্য সেটা জোঙ্গড়া চুনের গুণে।

    ও হরি! আমার ধারণা ছিল পঙ্খের কাজ হত শুদ্ধমাত্র শঙ্খের চুনে।

    যাগ্গে যাক। শেষ পর্যন্ত কিন্তু দামের প্রতিযোগিতায় জিতে গেল পাথুরে চুন। দক্ষিণবাংলায় তো সে চুন তৈরি হয় না, নিয়ে আসতে হত সিলেট কি বিসরা কি কাটনি থেকে। রেললাইন বসার পর সহজ গেল তার যোগান। আর চুনুরিদের কপাল পুড়ল।

  • achintyarup | 14.96.54.71 | ০১ নভেম্বর ২০১১ ০৫:৫৫504820
  • *সহজ হয়ে গেল তার যোগান
  • pi | 128.231.22.133 | ০১ নভেম্বর ২০১১ ০৭:১১504821
  • অচিন্তিদা চুন চুনকে একেকটা জায়গায় যায় বটে !
  • Manish | 59.90.135.107 | ০১ নভেম্বর ২০১১ ১৪:৪১504822
  • অচিন্ত, শঙ্খচুন আর একটা কাজেও ব্যাবহার করা হয়ে থাকে, তা হলো উড়োন তুবরি বানানোর জন্য যে মশলা তৈরি করতে হয় তার জন্য।

    সোরা,গন্ধক,এল্যুমিনিয়ম চুর,কাঠ কয়লা আর শঙ্খচুন।
  • achintyarup | 115.111.248.6 | ০১ নভেম্বর ২০১১ ১৮:০৯504823
  • হুঁ, তুবড়িতে চুন আমিও দিয়েছি বটে
  • ranjan roy | 115.118.237.75 | ০১ নভেম্বর ২০১১ ২৩:৩৬504824
  • জবলপুর থেকে দেড়ঘন্টা রেলপথের দূরত্বে কাটনি শহর। মধ্যপ্রদেশের এই শহরটির চূণা সত্যিই বিখ্যাত। হিন্দি বলয়ে
    ভীষণ চাহিদা।
  • achintyarup | 59.93.246.46 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ০৪:৫০504825
  • এই দেখো, শিবের গীত গাইতে বসে ধান ভানতে শুরু করেছি। ঢেঁকির আর রেহাই নেই। দম-দেওয়া কলের মত চলে। থামতেই চায় না কিছুতে।

    তাহলে শোনো, জায়গার নামটা বলি আগে। নদীর পাড়ের ছোট্ট এই গাঁয়ের নাম কলকাতা। একশো দুশ তিনশ বচ্ছর আগেকার নয়গো, আজকের কলকাতা। একই নামে শহর আবার একই নামে গাঁ। বেশ পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা গেরাম। ওপর ওপর ভারী শান্ত পল্লীজীবন। বাঁধের মত উঁচু পথটুকু চলে গেছে নিজের মনে। তার এপারে পুকুর ওপারে পুকুর, চাষের জমি কিন্তু বিশেষ নজরে আসে না। যেটুক আছে তারও বেশিরভাগ ধানই বাবা দামোদরের সেবায় লেগেছে এই বর্ষায়।

    লোকে আদর করে ডাকে ছোট কলকাতা। কোথায় যাও গো? বলি কলকেতা যাই। কোন কলকেতা? ছোটো কলকেতা গো, ছোট কলকেতা। আমাদের আবার শহরে কি কাজ? সেটেলমেণ্টের কাগজে গাঁয়ের নাম কিন্তু কলিকাতা। দলিল দস্তাবেজেও তাই। দুশো বছরেরও বেশি পুরোনো মন্দিরের গায়ে সে নামই লেখা। দোকান-টোকানের সাইনবোর্ডে বেশিরভাগ জায়গাতেই লেখা কলিকাতা। অবশ্য দোকানের বালাই খুব একটা নেই ছোট্ট গ্রামে। সাকুল্যে বোধ হয় গুটি ছয়েক। একই জায়গায় চাল ডাল আলু বাতাসাও বিক্কিরি হচ্ছে, আবার কাগজটা কলমটাও পাওয়া যাচ্ছে। বিড়ি সিগারেটও। এক দোকানের গায়ে আবার বড় বড় করে লাল রঙে লেখা কলিকাতার দরে মুদী ও স্টেশনারি দ্রব্য বিক্রয় হয়। ভাব কাণ্ড! কলিকাতার দোকান তো কলিকাতার দরেই দ্রব্যাদি বিক্রয় করবে, নাকি? বেলা খুব একটা হয়নি, কিন্তু বাজার ভোঁ ভাঁ। জিগ্যেস করে জানা গেল বাজার বসে সকাল ছটায়, থাকে সকাল আটটা পর্যন্ত। এ কেমন বাজার গো? কোনোকালে যে সেখানে বাজার বসে দেখে মনেই হবে না, এমনি সাফ সুতরো জায়গাটা। একটা চালা কি ফেলে-যাওয়া ডালা, কিচ্ছুটি নেই কোত্থাও।

    কুঠির পেছনে নীলপুকুর, তার কথা বলেছি শুরুতেই। আসলে নীলের কাজের জন্য জলের প্রয়োজন হত প্রচুর। তাই পুকুর কাটানো। তাই এর নাম নীলপুকুর। কারও কারও ধারণা এ কলকাতার নীলকুঠি সাহেবদের তৈরি। সে ধারণটি ঠিক নয়। সাহেব যদি হয়েও থাকে -- তার কোনো প্রমাণ নেই আমার হাতে -- তা হলেও তারা নিয্যস দিশি সাহেব। হুগলি জেলার জনাইয়ের জমিদার ছিল তারা। মুখুজ্যে পরিবার। আজ থেকে ১৮৫ বছর আগে নাকি ওই কুঠির পত্তন।

    কুঠির এক কোনা বরাবর তিনঘর চুনুরির বাস। দেখতে যাই। পরিষ্কার নিকোনো উঠোন, একপাশে তুলসী গাছ, বাঁশে বাঁধা তারে শাড়িটা গামছাটা ঝুলছে। মাটির বারান্দায় খেজুর চাটাইয়ের আসন। কিন্তু দাদা তো ঘরে নেই, চুনের কাজের বিষয়ে কথা বলার মত মানুষ আর কেউ নেই এখানে। পাশের ঘরে উঁচু দাওয়ায় হাঁড়ি-কুড়িতে রান্না চড়েছে। বগ্‌বগ্‌ আওয়াজ উঠছে। ফুটন্ত ভাতের গন্ধ আসছে হাঁড়ি থেকে। গলা বাড়িয়ে গিন্নি জিগ্যেস করেন কোত্থেকে আসা হচ্ছে? কারও সঙ্গে দরকার, নাকি? কত্তার মুখও উঁকি মারে চালের নিচ থেকে। ও, চুনের ব্যাপারে জানতে চান? সে আমরা কিছু জানিনি। দাদা বলতে পারবে হয়ত সে বিত্তান্ত। দেখুন এদিকে ওদিকে আছে কোথাও।
  • Nina | 69.141.168.183 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ০৫:০২504826
  • চিন্টুবাব! কত্ত কি জানছি--
  • achintyarup | 59.93.244.219 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৫:৩৪504827
  • শহর কলকাতার নামের উৎস নিয়ে চর্চা হয়েছে অনেক। সম্ভব অসম্ভব নানা তঙ্কÄ নানা পণ্ডিত দিয়েছেন। সে সব তঙ্কেÄর কথা সবাই জানেন। যুক্তি তর্কের শেষ নেই, তবু কেমন মনে হয় সব কটা তঙ্কÄই অসম্ভব হওয়া অসম্ভব নয়। এই নাম গবেষণার সূত্র ধরেই ১৯৩০-এর দশকের শেষ দিকে ভাষাচার্য সুনীতিকুমার আরেকটা কলকাতার খোঁজ শুরু করেন। তাঁর বক্তব্য ছিল সুতানুটির পড়শী গাঁ কলকাতার নামটির উদ্ভব হয়েছে চার-পাঁচশ বছর আগে এবং নামটির সঙ্গে কলিচুনের ব্যবসার কিছু যোগাযোগ আছে। শামুকের খোলা (কাতা) পুড়িয়ে তৈরি করা চুন (কলি)-এর ব্যবসা ছিল এই গাঁয়ে। চাটুজ্যে মশাই খুঁজতে শুরু করেন, আর কোনো কলকাতা কি আছে বাংলাদেশে? সেখানেও কি কোনোকালে শামুক পুড়িয়ে চুন তৈরি হত? সেই মিলের সুতো ধরে কি পাওয়া যেতে পারে নামের উৎস?

    সে সময় সুনীতিবাবুর ছাত্র কৃষ্ণপদ গোস্বামী মশাই গ্রামনাম বিষয়ে গবেষণা করছিলেন। তিনি দুটি গ্রামের কথা ভাষাচার্যকে জানান। দুটিরই নাম কলিকাতা। একটি পুব বাংলায়, আরেকটি পশ্চিম বাংলায়। একটি ঢাকা জেলার লোহাজং থানায়, অন্যটি হাওড়া জেলার আমতা থানায়। ১৯৩৭ সালের মে মাসে দুই থানার দুই দারোগাকে চিঠি লিখে গ্রামদুটির বিষয়ে জানতে চান সুনীতিবাবু। লোহাজং থানার ওসি কে মুখার্জি জানালেন, তাঁর থানা আপিসের তিন মাইল উত্তরে কলিকাতা-ভোগদিয়া নামে একটি গ্রাম আছে বটে। সে গ্রামের লোক সংখ্যা সাকুল্যে চারশর বেশি হবে না, এবং তাদের প্রায় সকলেই মুসলমান চাষী। চুন-টুন তৈরি হয় না সেখানে। গাঁয়ের কেউ কোনোকালে চুনের ব্যবসা করেছে বলেও শোনা যায়নি।
  • I | 14.99.91.65 | ০৪ নভেম্বর ২০১১ ০০:৩৪504828
  • চলছে চলুক !
  • achintyarup | 59.93.246.0 | ০৭ নভেম্বর ২০১১ ০৫:০১504830
  • আমতা থানা থেকেও উত্তর এল। সাব-ইন্সপেক্টর ও বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন থানা থেকে বায়ুকোণে আড়াই মাইল মত দূরে একটি গ্রাম আছে, যার নাম রসপুর-কলিকাতা। দামোদর নদের উত্তর তীরে সেই গ্রাম। লোকসংখ্যা হাজারখানেক। বেশিরভাগই চাষীবাসী মানুষ। শামুক পুড়িয়ে চুন সেখানে তৈরি হয়। বেশ ভালমতই হয়। তিনটি চুনুরি পরিবারের কথাও বাঁড়ুজ্জেমশাই লিখেছিলেন তাঁর চিঠিতে।

    সুনীতিবাবুর বক্তব্য ছিল, চুন শিল্পের সূত্রেই এ জায়গার নাম হয়েছিল কলিকাতা। এবং সুতানুটী-কলিকাতার ক্ষেত্রেও সে সূত্র প্রযোজ্য। অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত চুন ব্যবসার রমরমা ছিল আজকের শহর কলিকাতায়। সে গাঁয়ের (বা উঠতি শহরের) পুব থেকে পশ্চিমে চলে গেছে বৈঠকখানা স্ট্রীট -- এলাকার প্রধান রাস্তা। তার আশেপাশের কয়েকটি অঞ্চল এবং পথের নামের মধ্যে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে চুন শিল্পের স্মৃতি। বৌবাজার স্ট্রীটের উত্তরে চুনাগলি একসময় ছিল কালা ফিরিঙ্গিদের আড্ডা। তারপর চিত্তরঞ্জন অ্যাভেন্যু যেখানে বৌবাজার স্ট্রীটকে কেটে চলে গেছে, সে চৌমাথার উত্তরে, চিৎপুর আর ছাতাওয়ালা গলির পুবে এবং কলেজ স্ট্রীটের পশ্চিমে যে এলাকা, সেখানে ছিল চুনারিটোলা। পুরোনো ম্যাপে আর কাগজপত্রে এখনো তার হদিশ পাওয়া যায়। সেখানেই ছিল চুনাগলি রোড (থ্যাকারের ডিরেক্টরিতে নাম লেখা চুনম গলি)। সে গলির নাম পরে পাল্টে হয় ফিয়ার লেন। তাছাড়া আছে চুনাপুকুর লেন। চুনারিটোলার একটু পুব দিকে, লেডি ডাফরিন হসপিটালের কাছে, কলেজ স্ট্রীট আর আমহার্স্ট স্ট্রীটের মাঝামাঝি জায়গায় বৌবাজার স্ট্রীট থেকে বেরিয়েছে সেই গলি। এইসব এলাকায় ছিল চুনুরিদের বাস, শামুক পুড়িয়ে চুন তৈরি করত তারা। অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত সে শিল্পের বেশ বাড়বাড়ন্ত ছিল সে অঞ্চলে, এবং তার থেকেই গাঁয়ের নাম হয় কলিকাতা, লিখেছেন ভাষাচার্য।

    সুনীতিবাবুর বক্তব্য খণ্ডনের চেষ্টা করতে গিয়ে বিপ্লবী রাধারমণ মিত্র তাঁর প্রবন্ধে চুন তৈরির কথা লিখেছেন। লিখেছেন, কলকাতার পাশে ধাপা বা লবণহ্রদে ও সুন্দরবনে বড় বড় শামুক ও ঝিনুক প্রচুর হয়। শুনেছি একসময়ে এই দুই জায়গার শামুক ও ঝিনুক পোড়া চুন কলকাতায় আমদানি হত। পূর্ব দিক থেকে আসত বলে এই চুনের প্রবেশদ্বার ছিল বেলেঘাটা। তাই বেলেঘাটা বহুকাল থেকেই চুনের আড়তের জন্য বিখ্যাত।

    এই প্রসঙ্গে তারাপদ সাঁতরা লিখলেন, বেলেঘাটাতে এই সেদিনও, ১৯৫৬ সাল নাগাদ শামুকপোড়া চুন তৈরি হত। ওই সময়ে আমার (মানে তারাপদবাবুর) একবার বেলেঘাটায় Calcutta Improvement Trust নির্মিত বাসভবনগুলির কাছে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। সে সময় এই ভবনগুলির কাছেই রাশিকৃত শামুক ও ঝিনুকের খোলা যেমন নজরে পড়েছিল, তেমনি চুন তৈরির জন্য শামুক পোড়ানো হচ্ছিল এও লক্ষ করেছিলাম। চুন তৈরির জন্য দেশীয় প্রথায় যেমন শুকনো কাঠের জ্বালানি ব্যবহার করা হত, বেলেঘাটায় কাঠের বদলে কয়লার ব্যবহার হওয়ায় তার ধোঁয়া ও তৎসহ গন্ধ এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের যে কষ্টের কারণ হয়েছিল, তাও ওই সময় বাসিন্দাদের অনেকেই জানিয়েছিলেন।
  • achintyarup | 115.111.248.6 | ০৭ নভেম্বর ২০১১ ১৮:১৮504831
  • রাধারমণবাবু এই চুন সংক্রান্ত তঙ্কÄকে একেবারে অস্বীকার করতে চেয়েছেন, তবে সুনীতিবাবুর লেখায় তাতে বিশেষ চুনা লাগেনি।
  • achintyarup | 115.111.248.8 | ০৯ নভেম্বর ২০১১ ১৭:৫০504832
  • শঙ্কর চুনুরীকে পাওয়া গেল অগ্রগতি ক্লাবে ঢুকতে ঢুকতে। ক্লাব নয়, আসলে এনজিও। ওইটুকু গাঁ, তাতে এত্তবড় এনজিও। তারা ছোটদের ইস্কুল চালায়, প্রাইমারি টিচার্দের ট্রেনিং দেয়, শহর থেকে যাওয়া কৌতূহলী সাংবাদিকদের পাত পেড়ে দুপুরে খাওয়ায়। আরও কি কি করে তার হিসেব আমার কাছে নেই। দামোদরের ঠিক পাড়টিতে তাদের দুখানা তিনতলা বাড়ি, দুই বাড়ির মাঝে বড় আঙ্গিনা, সেখানে ছোটবড় গাছের বাগান, নদীর ধার ঘেঁষে বাচ্চাদের খেলাধুলো করার একফালি জায়গা, সেখানে আছে দোলনা, সড়াৎ করে পিছলে নামার স্লিপ, বড় খাঁচায় একলা ময়ূর।

    চুন এখন আর তৈরি হয় না। সে হত এককালে। সে আর বলার মত কি কথা? বছর পনের-কুড়ি আগে চুন তৈরির কাজে বাবাকে সাহায্য করেছি আমি। চুন পোড়ানোর ভাঁটি বানাতে হত, ইঁটের পাঁজা যেমন। প্রথমে ধরুন মাটির ওপরে এই অতটা জায়গা জুড়ে মোটা করে খড় পাতা হত। তার ওপর ঘুঁটে বিছনো হত। তার ওপর দেওয়া হত কয়লা। সেই কয়লার ওপর শামুকের খোলা দেওয়া হত। তার ওপর আবার কয়লা দেওয়া হত, তার ওপর আবার এক প্রস্থ শামুক। এমনি করে করে প্রায় এক মানুষ সমান উঁচু হয়ে যেত। তারপর, রাত্তির বেলা নিচের দিকে খড়ে আগুন দেওয়া হত। রাত্তিরে কেন? সে যা ধোঁয়া আর গন্ধ হত সে আর কি বলব। গন্ধে নাড়ি উলটে আসত। তাই দিনের বেলা ভাঁটিতে আগুন দেওয়ার নিয়ম ছিল না। রাত্তিরে খাওয়া দাওয়া সেরে ভাঁটি জ্বালিয়ে ঘুমুতে চলে যাওয়া হত। সকালের মধ্যে পোড়া শেষ। তারপর সবাই মিলে ছাই সরিয়ে কয়লা বেছে চুন বের করা হত। সেই চুন থেকে ময়লা চেলে পরিস্কার করা হত। তারপর বিক্কিরি করা হত।

    কিন্তু চুন তৈরি ছেড়ে দিলেন কেন? কেন ছাড়লাম? ও আর পোষায় না। খরচা অনেক। কয়লা-ঘুঁটের দাম বেড়েছে... তার চেয়ে অনেক সস্তায় বাজারে চুন পাওয়া যায় এখন। হ্যাঁ, কোয়ালিটি তত ভাল হয় না। তা ছাড়া আপনার ওই শামুক-ঝিনুকের খোলা যোগাড় করা, সে বড় নোংরা কাজ। একবার মনে আছে এক বাড়িতে শামুক কিনতে গেছি, একটা মেয়েলোক বলল নিবে, শামুক নিবে? আমরা বলি হ্যাঁ। দরদাম করছি, এদিকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই মেয়েটা কাপড়টা একটু তুলে পেচ্ছাব করে দিল খোলাগুলোর ওপরে। তারপর আর তাতে হাত দিতে কারো ইচ্ছে করে? আমরা ফিরে চলে আসছি, তো জিগ্যেস করছে, কি হল নিবে না? আমরা বলি, আজ থাক, কাল নিয়ে যাব। শামুক রাখা হত বাড়ির সবচেয়ে নোংরা জায়গাতে। তার ওপর বাচ্ছা ছেলের গু-মুত থেকে শুরু করে ঘরের নোংরা সব ফেলা হত। বলে নোংরা জায়গাতেই রাখতে হয় শামুক। বড় নোংরা কাজ বাবু। ও আর করিনি তাই। এখন কি করেন তাহলে? কি আর করব? এই ভ্যান টানি, কি একটু চাষবাসের কাজ করি... এই করেই চালিয়ে নিতে হয়।
  • I | 14.96.105.72 | ০৯ নভেম্বর ২০১১ ২৩:২৮504833
  • বেলেঘাটার চুনের কথায় মনে পড়ে গেল। এই কিছুদিন আগেও (মানে তিন-চার বছর আগে) শ্বশুরবাড়ি গিয়ে এক রাতে বিশ্রী একটা গন্ধ পাই; দূর থেকে হাওয়ায় ভেসে আসছিল। জিগ্যেস করে জানা গেল, সেটা শামুক পোড়ানোর গন্ধ, চুন তৈরী হচ্ছে। আমার শ্বশুরবাড়ি বাইপাসের ধারে মেট্রোপলিটান হাউজিং, সেখান থেকে বেলেঘাটা একদম কাছে।
  • achintyarup | 59.93.247.46 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ০৫:৩৯504834
  • কার্তিক মাসের মাঝামাঝি দুপুরের রোদ মিঠে নয়, কিন্তু চড়চড়ে ভাব কম। রোগাপাতলা দামোদরের ওপর দিয়ে হাওয়া ভেসে এলে তাতে হাল্কা ঠাণ্ডার আমেজ। শরীর জুড়োয়। সবজেটে জলের ওপর দিয়ে হাল্কা ডানার ঝাপটে বক উড়ে যায়। ডানার ওপরের দিকের পালকগুলো হাল্কা বাদামী, নিচের দিকের গুলো ধবধবে। সাদা ছায়া জলে ভেসে যায়, এপার থেকে ওপারে।

    বড় আমগাছতলায় লাল সিমেণ্ট বাঁধিয়ে গোল বেদী করা হয়েছিল কোনো কালে। গাছ বড় হয়েছে, শিকড়বাকড় এদিক ওদিক নিজেদের রাস্তা খুঁজতে গিয়ে ফাটিয়ে দিয়েছে শক্ত সিমেণ্টের গাঁথনি। ইঞ্চিটাক মোটা ফাটলের মধ্যে দিয়ে ঘাসের মাথা উঁকি মারে। ঝিম-ধরা দুপুরে বেদীর ওপরে বসে আনমনে বিড়িতে টান দেন দেয়াশীবাবু। বেতাই বন্দরের খোঁজ নিতে গেলে ইঁটের টুকরো দিয়ে সিমেণ্টে দাগ টেনে বুঝিয়ে দেন কোথা দিয়ে পৌঁছতে হবে সেখানে। বলেন ব্যাতাই বন্দর। এখন তো আর বন্দরও নেই, ঘাটও নেই। পাকা বিরিজ হয়ে গেছে। একটা দুটো নৌকো দেখতে পাবেন হয়ত। লোকে নিজেদের দরকারে রাখে। আগে অধিকারীমশাইয়ের কাছে গল্প শুনেছি, হাটের দিন সন্ধেবেলা দু-চারটে থলে ভরে যেত পারানির খুচরো পয়সায়। গ্রাম থেকে লোক নিয়ে যেতে হত সেই পয়সার বস্তা মাথায় করে আনতে। এখন আর সেদিন নেই।

    কয়েকশ বছর আগে নাকি বেশ বড়সড় বন্দর ছিল বেতাই। প্রচুর বড় নৌকো, ছোট নৌকো, ডিঙি-পিনিসে জমজম করত জায়গাটা। ব্যস্ত ব্যাপারীরা দৌড়োদৌড়ি করত ঘাট থেকে উঠে আসা পেছল পথ। কারও মাথায় হাঁড়ি, কারও ঝুড়ি, কেউ খালি-হাত। গ্রাম কলিকাতার পশ্চিমে রায়ঘাট। বেতাইয়ের ঘাটে ব্যবহৃত বড় বড় নৌকোর মালিক আর মাঝিদের অনেকেই ছিল কলিকাতার বাসিন্দা। কাছাকাছি আরও একখানি ছোট বন্দর ছিল -- থলিয়া। মাঝিরা নৌকো নিয়ে বেতাই কি থলিয়া যাওয়ার পথে রায়ঘাট হয়ে যেত। কিম্বা হয়ত রায়ঘাট থেকেই রওয়ানা হত তাদের নৌকো। এখনও কলকাতার বেশ কিছু বাড়িতে পুরোনো নৌকোর জিনিসপত্র দেখা যায়। রতিকান্ত মণ্ডলের ছেলে পবন বলে তাদের দু-দুখানা বাইশশো বাইশ নৌকো ছিল। বাইশশো বাইশ কিসের মাপ সে জিগ্যেস করোনা। জবাব নেই। নৌকোগুলিও নেই। তবে নৌকোর মোটা মোটা শিকলি আর নোঙর রয়ে গেছে। আজিত মাঝি বলে তার বাপ কানাইলাল ছিল নামকরা মাঝি। বড় বড় নৌকো তৈরিও করত। নৌকো তৈরির সে সব যন্ত্রপাতি নাকি এখনও আছে তাদের বাড়িতে।
  • Somnath2 | 76.116.65.19 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ১০:২৮504835
  • এই টইটা বেড়ে হয়েছে । অচিন্ত্যরুপ কে অনেক ধন্যযোগ অজানা, নতুন তথ্য এতো সহজ ভাবে গল্পের ছলে তুলে ধরার জন্য । আপনার ম্যাক্লাস্কিগঞ্জের লেখাটাও দারুন লেগেছিলো .. ওটা যদি সমাপ্ত না হয়ে থাকে মাঝে মাঝে চালিয়ে যাবেন । সঙ্গে আছি ।
  • I | 14.99.27.132 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ১৩:৩৫504836
  • এই লোকটা একদম ছবি লেখে !
  • kiki | 59.93.201.8 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ২২:১০504837
  • ডাগতারকে ক্ক।

    আর ডাগতার লিখে ছবি আঁকে।:)

    চিন্টুবাবু তোমার গগন রায় কি শেষ হয়ে গেলো?
  • Nina | 12.149.39.84 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ২২:২৬504838
  • চিন্টুবাবুর জয় হো!
  • pi | 128.231.22.133 | ১২ নভেম্বর ২০১১ ০০:০৮504839
  • লেখাটা তো ছবি হচ্ছে। কিন্তু ফোটুক দেখতেও একটু মন্‌চায় যে !
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন