এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ধর্ষণের কথা

    suddhasatya
    অন্যান্য | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ | ১৬২৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • suddha | 117.194.246.216 | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ২২:৩১529554
  • কদিন ধরেই পড়ছি আলোচনাটা। লিখতে ইচ্ছে করছিল না। কত কত ধর্ষণ আর তা নিয়ে আলোচনা দেখলাম এতগুলো বছরে যে কিছু বলতে ইচ্ছে করে না। ইচ্ছে করে না, কারণ ধর্ষণ একটি সামাজিক ক্ষমতায়ণের প্রক্রিয়া। একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়াও বটে। এবারে সেই প্রক্রিয়াকে কেউ থামাবে কি করে? সামাজিক মননের পরিবর্তন না হলে সম্ভব? না। কিন্তু সে পরিবর্তন আসবে কোন পথে? অনেকদিন আগে এক নারীর কথা পড়েছিলাম, যিনি তাঁর ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো কেস-ও করতে চাননি। না ভয় পেয়ে না। স্রেফ অবজ্ঞায়। বলেছিলেন, ধর্ষণ তাঁর শরীরকে আক্রমণ করেছে, তাঁর আত্মকে না। তাকে ছুঁতে পারার মতন হিম্মতই নেই এই জঘণ্য প্রক্রিয়ার। মাথা নীচু হয়ে গেছিল ওনার কথা শুনে। একটা নরকের মতন দেশে একজন মানুষ বলতে পারছেন যে শরীরকেও অতিক্রম করা যায়? আসলে যে অস্ত্রটা নারীর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয় সেই অস্ত্রটাকেই তিনি এক থাপ্পড়ে ভোঁতা করে দিয়েছিলেন। আমাদের সকলকে থাপ্পড় মেরেছিলেন। কিন্তু আমরা বদলাই নি। আমরা বদলাব কি করে?

    আমরা বাস করি ক্ষমতাতন্ত্রের মধ্যে। না এ শুধু পুরুষতন্ত্র না, এ হল ক্ষমতাতন্ত্র। তাই এখানে ব্যাক্তি লিঙ্গবিভেদে কিচ্ছু যায় আসে না। এর আগের সকল প্রসিদ্ধ মুখ্যমন্ত্রীদের সুউক্তি আমি ভুলি নি। ভুলিনি মাননীয় অনিল বিশ্বাস মশাই-এর ধর্ষিতার চরিত্র বিশ্লেষণ। ভুলিনি তাঁর চরিত্রহননকরার সাংবাদিক সন্মেলন। আজকে মদনবাবুর কথায় তাই চমকে উঠিনা। উঠিনা মমতা দেবীর কথাতেও। ভুলিনি চম্পলা সর্দারের কথাও। বানতলা, ধানতলা, নন্দীগ্রাম কিচ্ছু ভুলিনি। তখন অনেক বলেছি। আজ আর বলতে ইচ্ছে করে না কিছু। কেন? কারণটা অতি সহজ। ক্ষমতাতন্ত্রকে পালটে দেবে এমন ব্যাক্তি হতেই পারে না। কারণ এ একা কোনো ব্যাক্তির কাজ না। কাজটা সমষ্টির। কাজটা আদর্শের। বরং ব্যাক্তিকে বারেবারেই পালটে নিয়েছে ক্ষমতাতন্ত্র। এবারে আসল প্রশ্নটা হচ্ছে একে কে পাল্টাবে? এ কি শুধুই মহাকরণে বা রাজনৈতিক দলেদের দলীয় আঙিনায় সীমাবদ্ধ। আমরা ক্ষমতাতন্ত্রের মুখ নই? আমরা শিখেছি শিষ্টাচার? আমরা শিখেছি লিঙ্গরাজনীতির উর্ধে উঠে দাঁড়াতে?

    সাধারণভাবে দেখি একবার ঘটনাটা? উনি আক্রান্ত হলেন একরাতে। সেদিন গেলেন না থানায়। আক্রমণ যারা করলো তারা নাম ভাঁড়িয়ে করলো। থানায় উনি গেলেন না, কারণ আগের অভিজ্ঞতা থেকে উনি জানেন না গেলে উনি ঠিক কতটা ভরসা পাবেন। এরা নাম ভাঁড়ালো, কারণ এরা জানে এভাবে ঠকানো যায়। তারা ঠকিয়ে থাকেই। তারা ধরাও পরে না তাতে। তার সঙ্গেই এরা ধর্ষণ করলো। মূর্খ নয় এরা। জানে আছে সিসিটিভি। জানে থাকতে পারে প্রত্যক্ষদর্শী। তবু করলো। কারণ এরা আগের অভিজ্ঞতায় জানে এটা করলে শাস্তির সম্ভাবনা বিরাট নেই। কারণ নারীটির লোকলজ্জা থাকবে। থাকবে সমাজে alienated হয়ে যাওয়ার ভয়। না হলেও এদের হাতে আছে পেশীশক্তি। পুলিশ বা আইন সারাজীবন নিরাপত্তা দেবেনা ওনাকে। তাহলে ভয় পাবে না নারীটি? পেতেই হবে এরা জানে। তার সঙ্গে আরো জানে পুলিশ আমাদের মতন দেশে শুধু ক্ষমতার পা চেটে থাকে। কাজেই ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে ছাড় পাওয়া যায়। তারপরে যদি ধরা পরে তাহলে আছে আদালত। সেখানে বিচার-অবিচারের পাল্লা দেখলে দ্বিতীয়টিই ভারী। অর্থ যার আছে সে বিচার কেনে। বঙ্কিমের আমল থেকে আজ, খুব বদলেছে কি? কি বলছে আইনী ব্যবস্থার ইতিহাস? কি বলছে কোর্টে কোর্টে মামলা জমে থাকার বহর? কি বলছে কোর্টে কোর্টে বিচারপতি না থাকা? কি বলছে বিচারপতিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া? তার স্বচ্ছতা কেমন? কি বলছে আইনব্যবসায়ীদের অর্থগৃধ্‌নুতা? ফ্যালাসির উপরে ভর করে কত কত মামলা জেতা যায়? কত কত মামলাকে শুধু ডেটের পর ডেট আর কোর্টের পর কোর্ট করে খতম করে দেওয়া যায়? অভিযুক্ত মরে যায়, অভিযোগকারী মরে যায়, বিচার তামাদি দলিল! নেই এই প্রক্রিয়ার প্রভাব এই ছেলেদের মানসিকতার উপরে? এই প্রক্রিয়ার সংশোধন কি?

    এর পরে একদিন উনি গেলেন অভিযোগ করতে। থানায় যেমন হয় তেমনই হল বলে অভিযোগ। এমনই হয় কেন? কারণ শুধু রাজনীতির দুর্বত্তায়ণই না, কারণ সামাজিক মনন। আমার পাড়ার ছেলেদের শিক্ষা কি? তারা কি ভীষণ সচেতন? পাড়ার বুড়োদের শিক্ষা কি? এই আমার বা আপনার পাড়া থেকেই ছেলেপুলেরা যায় পুলিশে। তারা যে মানসিকতা বহন করে নিয়ে যায় সেখানেই আছে তো এই নোংরামোর বীজ। শরীর নিয়ে ছ্যুঁতমার্গকে আমরা এমন সযত্নে রক্ষা করেছি যে সারাক্ষণ আমাদের নজর পরে থাকে শরীরেই। সুন্দর শরীর যে গর্বের বিষয়, সুন্দর শরীর যে ভোগের বিষয় তা আমরা বুঝেছি শুধু। বুঝিনি শরীর আসলে সুন্দর হয় মন-ও সুন্দর হলে। যৌনতা নিয়ে ভন্ড নীতি শিক্ষার মধ্যে লুকিয়ে নেই সর্বনাশের বীজ? তার কি নিদান? নেই। এবারে এরা যখন যায় পুলিশ ফোর্সে তখন এই সব অশিক্ষা নিয়েই যায়। সেখানেও তাদের আলাদা শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা নেই। সারাক্ষণ একটি প্রায়ান্ধকার জগতের সঙ্গে বসবাস করতে হয় এদের। সেই জগত যাকে আমরাই লালসায়, লোভে, অর্থের এবং ক্ষমতার বিকৃতিতে তৈরী করেছি এবং গর্বের সঙ্গে অপরাধ জগত বলে ছাপ মেরে নিশ্চিন্তে পুলিশের হাতে বন্দুক দিয়ে ঘুমোতে চলে গেছি। যেন সেই বন্দুক, স্বয়ংসম্পূর্ণ। সে চলে না কেউ চালায়? যে চালায় তার চোখের সামনে সারাক্ষণ থাকবে বিকৃতি আর সে অপূর্ব মানুষ হয়ে দাঁড়াবে? এ কি মজা হচ্ছে নাকি? দাঁড়ায়না, দাঁড়ায়নি। এবং সোজা কথা হচ্ছে হাজার পুলিশের শাস্তি হলেও দাঁড়াতে পারে না।

    এর পরে গোয়েন্দা দপ্তর কাজ করলেন। মন্ত্রীরা যথারীতি পিঠ বাঁচাতে এবং মুখরক্ষা করতে তেতো তঙ্কÄ গিলিয়ে দিতে চাইলেন। এ কি নতুন কিছু? এই মুখ্যমন্ত্রীই একদিন জ্ঞানেশ্বরী সিপিএমের কাজ বলাকে মৌন সমর্থন দিয়েছিলেন, আবার ক্ষমতায় এসে পেলেন মাওবাদী যোগ। চম্পলা সর্দার নিয়ে তোলপাড় তুলে ভুলে গেছিলেন তাঁকে। হাজারো এমন স্ববিরোধিতা আছে যা দেখানো যায়। কিন্তু লাভ কি? আগেও তো এমনই হত। ক্ষমতার কেন্দ্রস্থলে বসলে ক্রমশ জনগণের সঙ্গে সম্পর্কচ্যুতি ঘটবেই। পচনন্দা, বা অন্য কেউ যা জানাবেন তাই ধ্রুব বাক্য হবে। সমালোচকরা অপ্রিয় হবে। তাদের সমঝে দেবার প্রক্রিয়া চলবে। স্তাবকরা মাথায় চড়বে। তারস্বরে শুদ্ধিকরণের কথা সকল রাজনৈতিক দল বলবে এবং বলতে থাকবে আর হবে আদতে ঘন্টা। অনিলবাবুর ফেলে আসা জুতোয় পা দিলেন মদনবাবু। এমনই হয়। আগেই বলেছি, এই হল ক্ষমতাতন্ত্র। কথা হচ্ছে তাহলে গোয়েন্দারা কাজ করলেন কি করে? মজার কথা। এ কাজ তো তাঁদের করারই কথা, সে কথা কি আমরা ভুলে গিয়েছি? দময়ন্তী সেন-এর একার কৃতিত্বে হয়নি। এবং ওনাকেই বা আলাদাকরে মহান ভাবার কারণ কি? রিজওয়ানুরের মামলায় যখন অভিযুক পুলিশেরা বেল পেলেন সেদিন ইনিই তো ছিলেন কোর্টের মধ্যে এবং বাইরে মহা আনন্দকারী পুলিশ দলে? জাভেদ শামিম ছিলেন তো বাম রাজত্বের শেষের দিকে এই গোয়েন্দা দপ্তরে? যা যা হয়েছিল তার সবটার প্রকৃত তদন্ত করেছিলেন কি? আমার মনে পড়ে না। আমি বুঝি এঁরা কাজ না করলে এই কেস যেত কোর্টে। কোর্ট নিজের আয়ঙ্কেÄ রেখে তদন্ত করাতো। মানুষজন নড়াচড়া করছেন। বিতর্ক হচ্ছে। সরকার জানে। আদালতও জানে। কাজেই খুব সহজ হয় না এমন অবস্থায় সব ধামাচাপা দেওয়া। এত এত মামলা করে আসা মমতা দেবীরা জানেন না নাকি এ কথা? তাঁরা বিষয়টিকে আর বাড়তে দিতে চান না নিজেদের অসুবিধে বুঝে এবং পরিস্কার করে দেখাতে যান এখন পুলিশ কতটা নিয়ন্ত্রণমুক্ত, তাই তদন্তের পথে দাঁড়াননি বাধা হয়ে। মানে হল, সঙ্কটের নেগেটিভ পরিস্থিতি থেকে নিজেদের সুবিধার জন্য পজিটিভ বস্তু বার করে আনা। রাজনৈতিক দলগুলো এমন কাজ করেই থাকেন। বুদ্ধবাবুরাও করতেন। তখন খবর প্রচার হত দল চাইলেও উনি চাননি বলে শেষে তদন্ত হল। মমতা দেবীর এই দ্বৈত-শাসনের সুবিধা নেই। তাই ওনার অনুগামীরাই ভরসা। কিন্তু মজার কথা হচ্ছে, সকলে জানার পরে সকলের টনক নড়ে কেন? আরে প্রথমেই তদন্ত হবে না কেন? ঐ যে! হয় না বলে।

    এখানে ফাঁকতালে একটা প্রশ্ন সেরে রাখি। এই ঘটনা যদি আলপনা কুন্ডু বা কৃষ্ণা টুডুর সঙ্গে ঘটে তাহলেও একই রকম ঝড় দেখবো তো ফেসবুকে? আমি নিশ্চিত নই বলে প্রশ্নটা রেখে গেলাম। ঝড় উঠলে সকলে নড়েচড়ে উঠবে। উঠতে বাধ্য। ঝড় ওঠা সবসময়ে ভাল লক্ষণ। সমাজের চাপ না থাকলে রাষ্ট্র-ব্যবস্থা একটি অবাধ্য ঘোড়া। কিন্তু যে সমাজ ঝড় তুলবে সে নিজেকে পাল্টাচ্ছে কি? পারিপার্শ্বকে পাল্টাচ্ছে কি? এমন না তো যে আমার ঘরের মধ্যে অন্ধকার থাকছে আর আমি বাইরে ছড়াচ্ছি আলো? ঘরের মধ্যে, পাড়ার মধ্যে নারী-পুরুষের বৈষম্যকে ঠেকাতে আমার লড়াই জারী আছে তো? আমাদের লড়াই? আমার সামান্য ব্যাক্তি অভিজ্ঞতা বলছে তা এত দুর্বল যে কহতব্য নয়। তাই কথা বলতে ইচ্ছে করে না। আমাদের আলোচিত নারী সুবিচার পান এমন আশাই থাকলো। কিন্তু সঙ্গে যদি আমি নিতান্ত মূর্খ না হই তাহলে এটাও জানা রইলো আজ, কাল, পরশু ধর্ষণ চলছে এবং চলবে। কারণ ধর্ষক আলাদা কোনো গর্ভে জন্মায় না। ধর্ষক হয়ে কেউ জন্মায় না। আমাদের মতন সমাজ এবং রাষ্ট্রপরিবেশ ধর্ষকের গড়ে ওঠাকে সাহায্য করে, সমর্থনও করে। রেগে যাবেন না বন্ধুরা, রেগে গেলে একবার গোটা পশিমবঙ্গ এবং ভারতবর্ষের পরিস্থিতিটা দেখে নিন। গত কিছুকালের মধ্যেই বেশ কিছু খবর রয়েছে। চরিত্রহীনা বলে নারীকে মাথা মুড়িয়ে নগ্ন করে ঘোরানোর সামাজিক শাস্তি থেকে শুরু করে, পুরুষের অপরাধে স্ত্রী-কে থানায় নিয়ে গিয়ে বিবস্ত্র করা এমন অনেক। আর যা খবর হয় না? তার কথা ভারতবর্ষের লজ্জিত ভূখন্ডই রাখে মাত্র। আমরা কেউ জানি না।

    [কদিন আগে লিখে ফেলেছিলাম ক্লান্তি, বিরক্তি সব মিলিয়ে। ফেসবুকেই। দিয়ে ফেললাম এখানে। ভাবনাটা ভাগ করার জন্য। খারাপ লাগাটাও।]
  • pi | 128.231.22.249 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০০:৩৫529560
  • শুদ্ধদার শেষ অনুচ্ছেদের প্রশ্নের কিছুটা উত্তর হয়তো ফলতার ঘটনায়।

    যৌথবাহিনীর নির্যাতনগুলো নিয়ে, না: কোন ঝড়ই প্রায় ওঠেনি। এনিয়ে ওখানকার মানুষের ক্ষোভকেও আমরা মাওবাদীদের উস্কানি ভাবতে কম্ফর্টেবল ফিল করেছি।
  • Mmu | 93.9.77.175 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০১:২১529561
  • suddha ,
    অসাধারন লেখা। ১০০% সমর্থন করলাম । এরকম লেখা আরো লিখুন।
  • aranya | 144.160.226.53 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০৩:৩২529562
  • কলকাতা থেকে ফলতা কত দূর জানি না, মনে হয় অন্য গ্রহের কথা পড়ছি। একটা ১৩ বছরের বাচ্চাকে ১১ দিন ধরে পাঁচ জন মিলে রেপ করেছে। বমি পায়। অসুস্থ লাগে।
    চল্লিশ দিন কেটে গেছে, অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়, পুলিশ ধরতে পারে না। ফলতায় কোন দময়ন্তী সেন নেই। গরিব ঘরের মেয়েটার জন্য মিডিয়াও নেই।
  • aranya | 144.160.226.53 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০৩:৪৯529563
  • শুদ্ধ-র প্রতিটা শব্দ আমারও মনের কথা। আলপনা কুন্ডু বা কৃষ্ণা টুডু-রা ধর্ষিতা হলে ঝড় কখনো ওঠে নি, ওঠে না।
  • Jhiki | 219.83.85.197 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০৮:০৮529564
  • :ঝড় উঠত যদি তাঁরা খোদ কলকাতার রাস্তায় ধর্ষিতা হতেন। এখানে টুডু কি মুর্মু বিচার্য্য নয়, বিচার্য্য হয় স্থান। যারা ফেসবুকে বিচরণ করে তাদের কজন ফলতায় বা জঙ্গলমহলে থেকেছে? কিন্তু পার্ক স্ট্রীটে মাঝরাত্তিরে এরা অনেকেই গেছে, তাই তারা পার্ক স্ট্রীটের সাথে সহজেই নিজেদের identify করতে পারে।

    আমি নিজের কথা বলছি..... পার্ক স্ট্রীটের ঘটনায় আমি ততটা আলোড়িত হই নি, যতটা গতকালের বর্ধমানের ঘটনার জানার পর থেকে হয়েছি। যেখানে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা আমার বাড়ীর খুব কাছে.... আমি অনেকবার সেখান দিয়ে যাতায়াত করেছি....... সেখানে কোন মানুষকে থেঁতলে মারা হচ্ছে....... যতবার ভাবছি শিউরে উঠছি।
    কিছু লোক সবসময় নিজেদের প্রতিবাদী ভাবমুর্তি দেখানোর জন্য (অনেকক্ষেত্রে তার সাথে কোন না কোন স্বার্থও জড়িয়ে থাকে) প্রতিবাদ করে, বাকি যারা করে তারা করে সম্পূর্ণ আবেগ থেকে। কাজেই তুমি এখানে প্রতিবাদ করছ আর এখানে কেন করছনা এই চিন্তাটাই ভুল।
  • Du | 117.194.194.1 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০৮:৩০529565
  • কালকে ধরেছে অপরাধীকে। ভাগ্যে আজকালে বেরিয়েছে, পুলিশে না গিয়ে লোককে আগে প্রেসে যেতে হবে এমনই অবস্থা।
  • IB | 117.214.6.48 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৪:৪৯529566
  • দারুন লেখা শুদ্ধ,অবশ্য তোমার সব লেখাই খুব ভালো যতটা পড়ি।

    সমস্যাট কোথায়? এ ক্ষেত্রে কেন প্রতিবাদ হোলো , নাকি অন্যগুলোয় কেন হলোনা ? কোনটা ?।অ।

    ভাই এক্ষত্রে আমি বলতে পারি ১)জায়গাটা পার্কস্ট্রীট ,কলকাতা বলে

    ২)আমাদের সংবেদনশীল মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর পেয়াদা কমিশনার ওরকম ফালতু কথা বললেন বলে

    ৩)সবথেকে বড় যেটি , সেটিহোলো যে মহিলার প্রতি অপরাধ সংগঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁর অদম্য সাহস ও লড়াই

    মুলত: এগুলোর জন্যই আজ এটি একটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে পশ্চিমবণ্নগে । এখান "এটা কেন ওটা কেন নয়" বলে সৌখিন সমালোচনা করা বোধহয়

    অর্থহিন। ভাই রাজধানীর গুরুত্বই আলাদা , দ্যাখোনা , যতক্ষন না বাগদাদ দখল হলো ততক্ষন কি বলা গেছিলো ইরাকযুদ্ধ জেতা গেলো!!

    আর মিডিয়ার মুল ভরকেন্দ্র কলকাতাতেই ,তাই কুকুর মরলেও খবর হয় আর এটাতো...তায়ে আবার সি এম -সি পি র অমুল্য মন্তব্য ।
  • siki | 155.136.80.36 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৫:০২529567
  • আইবি ঠিকই বলেছেন। আমি পার্ক স্ট্রিট থেকেও যতটা দূরে থাকি, ফলতা থেকেও ততটাই দূরে। দুটো ঘটনাই আমার কাছে জানা খবরের কাগজের দৌলতে। বিশেষত ফলতার ঘটনা গুরুচন্ডালিতে পড়ে তারপরে আমি খবরের কাগজে খুঁজে পাই।

    মিডিয়া কোন খবরকে কী গুরুত্ব দিচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করেই আমাদের নাচের স্পিড বাড়ে বা কমে। :)
  • suddha | 117.194.227.203 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৯:৪৩529555
  • ঠিকই। কলকাতা আমাদের মুখ। তাই কলকাতায় হলেই কথা বলি। ফেসবুকে থাকা লোকেরাও অনেকেই কলকাতাই চেনেন। কিন্তু আসলে আমার লেখার মধ্যে একটা ছোট্ট জায়গা আছে। সেটা হচ্ছে class এবং state। ধর্ষণ নিয়ে কথা বলি যখন তখন কি এটাও কাজ করেনা?
    আর আমি শুধু ওটা নিয়েই লিখিনি। সহজ কথায় লিখেছি। কিন্তু লিখতে চেয়েছি জটিলের কথা। ধর্ষণ নিয়ে আমরা যখন প্রতিবাদ করি তখন আমাদের ঠিক কি কি ভাবনা কাজ করে সেটাও ভেবে দেখার দরকার আছে বই কি! দেখুন, এখানে মুখ্যমন্ত্রী আর পাইক-পেয়াদার জন্য এত কথা এসেছে। আবার পাল্টাটা উঠে যখন এসেছে তখন এসেছে নাইটক্লাবে যাওয়া মহিলাদের অসতর্কতার বিরুদ্ধে উদাহরণ হিসেবে। এই কারণে আসেনি শুধু যে ধর্ষণ বস্তুটাই কুৎসিত। নইলে যে কোনোদিন কাগজ খুললেই এমন হাজারো ঘটনা পাওয়া যাবে। আরো হাজারো বা লাখো পাওয়া যাবে না। তাহলে আমরা আলোচনা করছি বা কথা বলছি যখন তখন কি খন্ডিত হয়ে কথা বলছি না? আমাদের ফোকাস বানাচ্ছে মিডিয়া। মিডিয়া চলে মালিকের পয়সায়। কিন্তু কথা হচ্ছে আমাদের ফোকাস মিডিয়াকে বানাতে দিচ্ছি কেন? খবরই শুধু দেখছি আমরা? চারপাশকে দেখছি না? আমরা নিজেরা কেন বেছে নিচ্ছি না প্রায়োরিটি?

    ধর্ষণের প্রতিবাদ করার সময়ে আমরা সকলেই একই কারণে করছি কি? ভেবে দেখুন যদি কেউ প্রতিবাদ করেন নারীর সতীত্ব রক্ষার জন্য, তাহলে সেই প্রতিবাদ প্রতিবাদ হলেও কতটা কাজের হবে? রাস্তায় হলে তিনি প্রতিবাদ করবেন যেমন তেমনই তিনি আবার ঘরের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ ঘটলে তাকেই পবিত্র বলবেন না কি? কারণ পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভারয়্যা ইত্যাদি। তাহলে লাভ? আমাদের কি ধর্ষণের ঘটনায় শুধু চোখ রাখা দরকার নাকি চোখ রাখা দরকার তার পিছনের কারণগুলোর সমাধানের চেষ্টার দিকে? সেই সমস্যার নারী বনাম পুরুষের আদিম শ্রেণীযুদ্ধ থেকে শুরু করে ধনের বৈষম্য এবং রাষ্ট্রিক বা সামাজিক মদতের দিকে চোখ রাখা উচিত নয় কি? ধারাবাহিক ভাবে আমরা যদি নজরে রাখি একে এবং প্রতিনিয়ত একে আক্রমণ করে যেতে পারি, চাপ সৃষ্টি করতে পারি তাহলেই এর সমাধান কোনোদিন হতেও পারে। না হলে হবে কি? এই সব ভাবনা থেকে লেখা। তাতেই প্রশ্নটা চলে এসেছে। আরো লিখলে ফোকাসের প্রশ্নটাও আরো আসবে। মূল সূত্র খবরের আমার ইন্দ্রিয়গুলো এবং মানুষ। সেইখান থেকে সরে গেছি বলেই না মিডিয়া সেই প্রবাদের ভয়ংকর জীব হতে পেরেছে! আমার লেখার মূল কথাটাই ছিল তাই অসচেতনতার বিরুদ্ধে। যদি কিছু বোঝাতে পেরে থাকি তাহলে ভাল, না হলে আমারই অক্ষমতা এ!
  • pi | 128.231.22.249 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০৭:৩৭529557
  • এরকম ঘটনাগুলো,মানে এরকম ঝুপড়িবাসী মহিলাদের ধর্ষণ কি আগেও হত, মিডিয়ায় আসতো না ?
  • Tim | 98.249.6.161 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০৭:৪৪529558
  • সেই নীলকমলের কেসটা মনে আছে। বহু বছর আগে। সেটা নিয়ে হইচই হয়েছিলো কারণ পুলিশের কাজ।
  • ranjan roy | 14.97.119.221 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০০:২৫529559
  • শুদ্ধসঙ্কেÄর দুটো লেখারই, এবং বিশেষ করে দুটোরই শেষ প্যারাগুলোর বক্তব্যের সঙ্গে একাত্ম বোধ করছি।
    প্রশ্নটা শুধু কোন কোন সরকারের বা মুখ্যমন্ত্রীর
    সংবেদনশীলতার অভাবের মধ্যে সীমিত করে দেখে নিশ্চিন্ত হওয়া যায় না। যেটা দরকার সেটা শুদ্ধ বলেছেন।
    আমার চেনা একটি মেয়ে নিজের ল' পরীক্ষার জন্যে ফিল্ড স্টাডি করার সময় বিষয় বেছে নিয়েছিল-- ডোমেস্টিক রেপ।
    তাতে ও পুলিশ অফিসার, উকিল সবার সঙ্গে কথা বলে। এদের মধ্যে মহিলাও ছিলেন।
    কি আশ্চর্য্য! এঁরা " ডোমেস্টিক রেপ' ব্যাপারটা মানতেই চান না।
    ওদের বক্তব্য কাঁচা ভাষায় যা বলেছিলেন তার নিগলিতার্থ--- কোন মেয়ে বছরে ৩৬৪দিন একটি পুরুষের সঙ্গে শুয়েছে, আর ৩৬৫তম দিনে বলবে আমার সঙ্গে জোরজবরদস্তি করা হয়েছে, এ আবার হয় নাকি? হলেও রেপ নয়।
    মেয়েটি বলল,-- আপনাদের কথা মেনেও ওই একটি দিন মেয়েটির ইচ্ছে নাও হতে পারে, শরীর খারাপ হতে পারে, বাপের বাড়ির জন্যে মন কেমন করতে পারে বা অজানা কোন কারনে একা থাকার ইচ্ছে হতে পারে। সেই ইচ্ছার কোন সম্মান আপনারা দেবেন না? শরীর মেয়েটির, তার ব্যবহারে তার ইচ্ছে-অনিচ্ছের কোন দাম নেই? কোন একদিন না করলে বলবেন ন্যাকামি! নখরেওয়ালি?
    অর্থাৎ আমরা মেনে নেই যে নারী শরীরে পুরুষের অধিকার একেবারে ফার্স্ট প্রিন্সিপল,axiomatic
    এই মানসিকতাটই জড়, বাকি আইনি রেপ তো এই কনসেপ্টের একস্টেনশন মাত্র। তাই আমরা অনিচ্ছুক বিবাহিতা কন্যাকে
    বুঝিয়ে সুজিয়ে মানিয়ে নিতে ফেরত পাঠাই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন