এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • বড়কত্তা বনাম ছোটোকত্তা

    Somen Dey
    গান | ২৭ জুন ২০১৪ | ৫১৩৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ জুন ২০১৪ ১৬:২০640664
  • ২৯শে ছোটোকত্তর জন্মদিন না?
  • Somen Dey | 126.193.143.142 | ২৭ জুন ২০১৪ ১৬:২১640675
  • শ্বেতপাথরের মেঝের উপর ফরাসপাতা |তার উপর একপাশে পাশবালিশে হেলান দিয়ে বসে বড়কত্তা ‚ অন্য পাশে বাবু হয়ে বসে ছোটোকত্তা | বড়কত্তার পাশে পিকদানি | পান চিবোতে চিবোতে মাঝে মাঝে পিক ফেলছেন| ছোটো কত্তা মাঝে মাঝে বাথরুম যাবার নাম করে একটু ফুঁকে আসছেন|
    বড়কত্তা পরে আছেন সাদা সিল্কের লুঙ্গি আর গেরুয়া পাঞ্জাবী ‚ আর ছোটো কত্তা লাল লুঙ্গি আর চকরবকর ফতুয়া |বড়কত্তার ঈষৎ তোবড়া গাল‚ চোখে রিমলেশ ‚ কপালে ভাঁজ ‚ মুখ গম্ভীর | ছোটো কত্তার চোখে কালো মোটা ফ্রেম‚ ফোলা ফোলা গাল‚চওড়া কপাল ‚ মুখে দুষ্টুমি ভাব |
    ওঁরা তাশ খেলছেন | আর একটু সামনে গিয়ে দেখতে পেলাম সম্ভবত তিনপাত্তি খেলছেন | সামনে ডাঁই করা টাকার পাহাড় | দু জনে ব্লাইন্ড দান দিয়ে যাচ্ছেন | কো ই কিসিসে কম নহি | টাকা জমছে তো জমছে |
    শেষে বড় কত্তা একটু বিরক্ত স্বরে বললেন শো কর |

    ছোটো কত্তা সেই দুস্টুমি দুস্টুমি মুখ করেই তাশ নামালেন - একি ! ওঁর তো তিনটি টেক্কা |
    ছোটোকত্তা টাকাগুলো টেনে নিতে হাত বাড়াতেই বড়কত্তা বলে উঠলেন আরে দাঁড়া ‚ আমার তাশ গুলান তো দেইখ্যা নে |

    সে কি ! আমি ভাবছি তিন টেক্কার উপরে আবার কি তাশ দেখাবেন বড়কত্তা |
    উনিও এক এক করে নামালেন তিনটে টেক্কা | এ কেমন করে হয় !

    আরো একটু কাছে গিয়ে দেখি দু জনেরই টেক্কা ট্রাও কিন্তু তাশ গুলো যেন একটু অন্যরকম |

    বড় কত্তার তিনটি টেক্কার নাম -

    প্যায়াসা ‚ গাইড ‚ অভিমান

    ছোটো কত্তার তিনটি টেক্কার নাম -

    তিসরি মঞ্জিল ‚ অমর প্রেম ‚ কটি পতঙ্গ

    আমি দাঁড়িয়ে ভাবছি তাই তো কার তাশ বড় ‚ কে পাবে টাকা ‚ কিভাবে হবে মীমাংসা ?

    হটাৎ বড় কত্তা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন - এই যে তুমি হইলে গিয়া পাবলিক ‚ তুমি কও দেহি কার কার তাশের পয়েন্ট বেশি ?

    একি গেরো রে বাবা | আমাকে প্রশ্ন করছেন | এ কি আমার কম্ম | খুব নার্ভাস লাগছে | ঘেমে উঠেছি |
    এমন সময়ে ভাগ্যিস ঘুমটা ভেঙ্গে গেল |
    **********

    ঘুম তো ভেঙ্গে গেল | কিন্তু ভাবনাটা তো যাচ্ছে না | কেন যে আমি বড় কত্তা আর ছোটো কত্তার মাঝে হটাৎ ' বনাম ' শব্দটা লাগাতে গেলাম | আমাদের সঙ্গীত তো গুরু শিষ্য পরম্পরার ঐতিহ্য | আর এখানে তো বাপ বেটা | হাফিজ আলি খাঁ - আমজাদ আলি খাঁ ‚ আলাউদ্দিন খাঁ- আলি আকবর এদের মাঝে কি বনাম বসাবো ?কখনো ই না | তাহলে এ ক্ষেত্রে কেন বসালাম |

    আসলে এখানে একটু অন্যরকম | দুজনেই প্রায় একই মাঠে খেলছেন | এফ এম ‚ টিভি ইত্যাদি থেকে দুজনেরই গান আমাদের কানে এন্তার ভেসে আসছে ‚ হয়তো একজনের পরে পরেই আর এক জনের গান | কিশোর কুমারের- মানা জনাব নে পুকারা নহী এর পরেই -এ শ্যাম মস্তানী – লতাজীর রঙিলারে তেরে রঙ মে ইউঁ রঙ্গা হ্যায়- তার পরেই – রয়না বীত যায় ,রফি সাহেবের- হম বেখুদী মে তুম কো এর পরে -দিওয়ানা মুঝসে নহী, আশাজীর –তুঝে মিলি রোশনি মুঝকো অন্ধেরা - এর পর - মেরা কুছ সামান , মান্না দের – পুছো ন ক্যায়সে ম্যায়নে রয়েন বিতায়ে এর পর আয়ো কঁহাসে ঘনশ্যাম , এ রকম তো চলতেই থাকে। কখনো বড়কত্তায় মজে যাই আর কখনো ছোটো কত্তায় |দুজনেই আমাদের স্মৃতি‚ সত্তা ‚ চেতনায় অনেকটা করে জায়গা দখল করে বসে আছেন | আর দুজনেই তো আমাদের কাছে প্রবল ভাবে বেঁচে আছেন । তাই কোথাও একটা তূলনা এসেই যায় | আর আমরা বাঙ্গালিতো - স্বভাবদোষে একটা বনাম না লাগালে আমাদের আলোচনা গুলো জমে না | তা বনাম যখন লিখেই ফেলেছি ‚ সে ভাবেই এগোবার চেষ্টা করা যাক |
    ********

    কুমার শচীন্দ্র দেব বর্মন | ত্রিপুরার রাজ পরিবারে জন্ম |কিছুই না করে রাজকীয় হালেই কাটাতে পারতেন | কিন্তু সঙ্গীত মাথায় সওয়ার হল অল্প বয়সেই | কোলকাতায় আগমন | সেখানে দেখা হল কৃষ্ন চন্দ্র দে‚ ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় ‚ কাজি নজরুল ইসলামের সঙ্গে | অনেক আদান প্রদান হল | সঙ্গীত শিখলেন উস্তাদ বদল খান ‚ উস্তাদ আলাউদ্দিন খানের কাছে | কিন্তু তাঁর দুর্বলতা লোকগানের উপর | তার কারন ছোটোবেলায় কুমিল্যার গ্রামে গ্রামে ঘুরে মাঝি মালাদের সঙ্গে হুঁকো খেয়ে উনি তাদের গান শুনতেন | ভাটিয়ালি‚‚ সারি গানের সুর শুনে বড় মজা পেতেন |

    ক বছর কোলকাতায় চুটিয়ে গান গাইলেন | হিমাংশু দত্তের গান ‚ কাজী নজরুলের গান ‚ সেইসঙ্গে নিজেও সুর দিতে লাগলেন |বেশ কিছু বাঙ্গলা সিনেমাতেও সুর দিলেন | তবে বেশি দিন নয় | ১৯৪৪ সালে বোম্বাই পাড়ি দিলেন | ইতিমধ্যে তিনি বিবাহ করেছেন শান্তিনিকেতনের ছাত্রী মীরা দশগুপ্তকে ‚ পাত্রী রাজ পরিবারের বাইরের বলে এ বিবাহ রাজ পরিবার অনুমোদন করে নি | কুমার শচীন দেব এই আপত্তি গ্রাহ্য না করে রাজ পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন | আর হ্যাঁ ‚ ১৯৩৯ সালে তাদের একটি পুত্র সন্তানও হয়েছে | ইনিই কালক্রমে আমার এই রচনার ছোটো কত্তা হয়ে উঠবেন |

    বড় কত্তা বোম্বাই এসেই চমকে দিলেন সিনেমা জগত কে | প্রথম পাঁচ ছ বছরের মধ্যেই তিনি সেই সময়ে যারা প্লে ব্যাক করছেন প্রত্যেকের থেকে নিংড়ে নিয়ে তাদের কন্ঠের খুবিয়াঁ টুকু বের করে নিলেন | যে গান গুলি এই সব গায়ক গায়িকাদের সারা জীবনের শ্রেষ্ঠগানগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে রয়ে গেল |
    যেমন
    তালাত মেহমুদ - যায়েঁ তো যাঁয়ে কঁহা ‚ জ্বলতে হ্যায় জিসকে লিয়ে
    হেমন্ত কুমার - ইয়ে রাত ইয়ে চাঁদনি ‚ জানে য়ো ক্যায়সে লোগ থে জিনকো
    মহ রফি - হম বেখুদি পে তুমকো কো পুকারকে ‚
    কিশোর কুমার -জীবন কি সফর মে রাহি ‚হাল ক্যয়সে হ্যায় জনাব কা
    লতা মঙ্গেসকর - ঠান্ডি হাওয়ায়েঁ/ তুম না জানে কিস জঁহা মে খো গয়ে
    গীতা দত্ত - মেরা সুন্দর স্বপ্না বীত গয়া ‚ ওয়ক্ত নে কিয়া ‚
    আশা ভোঁসলে -কালি ঘটা ছায়েঁ
    মান্না দে - উপর গগন বিশাল
    লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই ভিন্ন জাতের গান গুলির মধ্যে বড় কত্তার এক ধরনের সাংগীতিক দর্শন প্রতিফলিত হয় । অরকেস্ট্রার ন্যুনতম ব্যবহার , সুরে সহজতা , অনবদ্য ভোকাল মেলডি এবং তাঁর অস্থি মজ্জার মধ্যে নিয়ে আসা বাংলা গানের লালিত্য ।

    এবার একটু ছোটো কত্তার সলতে পাকানোর দিন গুলো তে চোখ ফেরাই |
    ছোটো কত্তার জন্ম কলকাতায় । বাবা যেমন ত্রিপুরা কুমিল্লার মাঠে ঘাটে মাঝিমাল্লাদের কাছে গানের খোঁজে ঘুরে বেড়াতেন , ছোট কত্তা জন্মেই ঘরের বিছানায় শুয়ে শুয়েই শুনতে পাচ্ছেন বাবা ও মায়ের বিশুদ্ধ সুরে গানের রেওয়াজ । তাই হয়ত এই বিশুদ্ধ স্বর শুনাতে শুনাতে তার কান্নাতেও লেগে যেত পঞ্চম সুর । তাই তার দিদিমার দেওয়া টুবলু নামটা কবে যেন বদলে হয়ে গেল পঞ্চম । কলকাতায় কয়েক বছর সেন্ট জেভিয়ারস স্কুলে পড়ার পর বড় কত্তা বুঝতে পারলেন এ ছেলের গানের কান টা বড় জব্বর । তাকে নিয়ে চললেন বোম্বে । তাকে আলি আকবরের কাছে সরোদ আর শামতা প্রসাদের কাছে তবলা শেখার জন্যে পাঠিয়ে দিলেন । এ সবের সঙ্গে সে নিজে নিজেই হারমনিকা বাজাতো নিজের মনে । আর বাবার কাছে তো তখন যাওয়া কেমন আসা করত তাবড় তাবড় শিল্পীরা । বাবা তাদের গান তোলাতেন আর ছোট্ট পঞ্চম বসে বসে হাঁ করে শুনত । সেই সঙ্গে মাঝে মাঝে ঢুঁ মারত সলিল চৌধুরীর কাছে । তার কেমন যেন মনে হোতো সলিল চৌধুরী যেমন অনেক রকম দেশি বিদেশি যন্ত্র সঙ্গীতের মূর্ছনা কে মিলিয়ে সৃষ্টি করতেন অনবদ্য সব গানের প্রিলিউড ইন্টারলিউড , সেও ঠিক ওই ভাবেই তার নিজের সঙ্গীত কে সাজাতে চায় । বড় কত্তা ঠাট্টা করে সলিল চৌধুরী কে বলতেন – পঞ্চম আমার পোলা কিন্তু তোমার চেলা ।
    পঞ্চম বাবার মত ভাটিয়ালি , ঝুমুর , সারিগানের জগতটাকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পায়নি । সে বড় হতে থাকল আরবান আবাহাওয়ায় ।ধ্রুপদ সঙ্গীত শেখার সঙ্গে লুকিয়ে চুরিয়ে শুনতে থাকল পাশ্চাত্য সঙ্গীত ।সে ছোটবেলা থেকেই তার লক্ষ্য স্থির করে ফেলে । তাকে কম্পোজার হতে হবে ।
    ন বছরের পঞ্চম খেলতে খেলতে একটি সুর রচনা করেছিলেন । বড় কত্তার সুরটি বেশ পছন্দ হয় । তিনি তখন দেবানন্দের ফান্টুশ নামে একটি ছবির সুর করছিলেন । তার একটি গানে লাগিয়ে দিলেন সে সুর । এয় মেরে টোপি পলট কে আ । গান্ টি হিট হয়ে যায় এবং পঞ্চমের কানে আসে । পঞ্চম বেশ অভিযোগের সুরে বাবাকে প্রশ্ন করে এটা তো আমার সুর । বাবা হেসে বলেন আসলে আমি দেখছিলাম তোর সুরটা পাবলিক কেমন নেয় । তা দেখলাম ভাল ই লেগেছে পাবলিকের ।
    বড়কত্তা বুঝে ফেলেছিলেন যে এ ছেলে সুরকার হবার জন্যেই জন্মেছে । ১৯৫৫ সালে গুরু দত্তের প্যায়াসা ছবিতে পঞ্চম সহকারী হলেন বাবার ।
    তার পর বাবার সঙ্গে থেকে কখনো কোন গানের মুখড়া কোন গানের অন্তরা সুর করেন ।কখনো একটা মিউসিক পিস বাজিয়ে দেন । বাবার পছন্দ হলে সেটা ই রেখে দিয়েছেন । যেমন সোলোয়া সাল ছবির হেমন্তের গাওয়া হ্যায় অপনা দিল তু আওয়ারা গানে সেই অবিস্মরনীয় হারমনিকায় বাজান প্রিলিউড মিউজিক টি বালক পঞ্চমের অবদান ।
    এ ভাবে প্রস্তুতি চলতে চলতে মেহমুদের ছোটে নবাব ছবি তে পেলেন স্বাধীন ভাবে । ছবির গান তেমন হিট না হলেও কিছু গানের সুরে তাঁর স্বকীয়তা লক্ষ করার মত । লতা দিয়ে মালগুঞ্জি রাগের একটি গান ‘ঘর আ যা ঘির আয়ে বদরা ‘ তে তিনি জাত চিনিয়ে দিলেন ।আরেকটি কান্ড হল । সে সময় বড়কত্তার সঙ্গে লতা মঙ্গেস্করের কিছু মনমালিন্য চলছিল । দু জনে এক সঙ্গে কাজ করা বন্ধ হয়ে গেছল । পঞ্চম এর সুরে এই গান্ টি গেয়ে বরফ গলে গেল । বড় কত্তার সুরে আবার লতা গাইতে শুরু করলেন ।
    প্রথম পাঁচ বছরে পঞ্চম সুর করলেন ভুত বাংলো , পতি পত্নি , তিসরা কউন এবং তিসরি মঞ্জিল । ভুত বাংলো তে মান্না দেকে দিয়ে একটি ওয়েস্টারন পপ সুরে গান গাইয়ে চমক লাগিয়ে দিলেন । গানটি সুপার হিট হল বটে । তবে গান টির সুর Chubby checker এর come lets twist again এর হুবহু অনুকরন ।
    তবে তিসরি মঞ্জিল ছবিতে পঞ্চম নিজের স্বকীয়তা মেলে ধরলেন । উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া মেলডির সৃষ্টির স্বাভাবিক দক্ষতার সঙ্গে তাঁর প্রাচ্য সঙ্গীতের জ্যাজ , পপ । রক , ব্লুস গানের রিদম মিলিয়ে দিয়ে বলিয়ুডের গানে নিয়ে একেবারে অন্য ধরনের মিউজিক্যাল সাউন্ড । বুঝিয়ে দিলেন বাবার ঘরানা থেকে তিনি বেরিয়ে আসবেন ।অবশ্য রফি সাহেব আর আশা ভোসলের কন্ঠের যাদুকে চমৎকার ভাবে কাজে লাগালেন , যেমন ভাবে লাগাতেন বড়কত্তা । এ সিনেমার ছটি গান ই সুপার হিট । সুতরাং ছোটকত্তার আর পিছনে ফিরে দেখতে হয়নি ।

    বড়কত্তা বিশ্বাস করতেন সঙ্গীতের মূল ঈশ্বরদত্ত শক্তি লুকান থাকে গায়ক/গায়িকার ভোক্যাল কর্ডের অন্তরস্তলে । তাকে নিংড়ে নিয়ে এসে কি ভাবে মেলডি সৃষ্টি করতে হয় তিনি খুব জানতেন । তাই তিনি বলতেন ‘ আমারে একখান হারমনিয়াম , এক্ খান তবলা আর এক খান লোতা দাও , আমি তোমারে একখান স্মরনীয় গান দিয়া দিমু । ‘
    কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন যেদিন বড়কত্তার সুরে তাঁর রেকরডিং হবার কথা থাকতো তার আগের দিন রাত্রে বড় কত্তা ফোন করে অনেক ক্ষণ গপ্প করতেন । আসলে তিনি দেখে নিতেন কিশোরের গলা ঠিকা ঠাক বশে আছে কি না ।
    গানে যন্ত্র সঙ্গীতের ব্যাবহারের ব্যাপারে তাঁর স্বভাব-কৃপনতার সঙ্গে তূলনা করা যেতে পারে গান্ধিজীর কৃচ্ছসাধিত জীবনযাপনের সঙ্গে ।
    ষাটের দশকে যখন সলিল চৌধুরী , শঙ্কর জয়কিশনের মত সঙ্গীতকাররা শতাধিক হ্যান্ডস নিয়ে গান রেকর্ড করা শুরু করেছেন , বড়কত্তা তখনো তাঁর ten-piece orchestra theory তে অগাধ বিশ্বাস রেখে চলেছেন ।
    শুধু আড়বাঁশির অনুচ্চ ইন্টারলিউড দিয়ে কি যাদু টাই তিনি সৃষ্টি করতে পারতেন । সেই প্যায়াসা ছবির ‘জানে কেয়া তুনে কহি’ গান্ টির অন্তরার দুটি কলির মাঝে একটি অস্ফুট বংশি ধ্বনি আজও আমাদের হৃদয় মুচড়ে দেয় । কিম্বা অভিমান ছবির ‘ পিয়া বিনা, বাঁশিয়া বাজে না ‘ গানে অসাধারন বাঁশির ব্যাবহার গানটি কে একেবারে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায় ।
    বড়কত্তা তাঁর গানে কখন সময়ের সিলমোহর লাগাতে দিতেন না । মানব কন্ঠ হল ঈশ্বরের বাদ্য যন্ত্র । তাই এর শব্দ কোনোদিন পুরনো হবেনা । এটাই তাঁর বিশ্বাস ছিল ।
    ওনার সঙ্গীত জগত ছিলো আদি অকৃত্তিম দেশজ । ভারতীয় মেলডি , ভারতীয় ধ্রুপদ সঙ্গীত ও ভারতীয় লোকায়াত গান , এই তিন ভুবন থেকে রত্ন্ররাজি আবিস্কার করে এনে ভরেছেন তাঁর দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনের অনন্য সম্ভার । কখনো সখনো সিনেমার স্থান কাল পাত্রের দাবীতে নিতে হয়েছে বিদেশি কিছু সুরের থেকে একটু আধটু সাহায্য । যেমন চলতি কা নাম গাড়ি সিনেমায় প্রধানত কিশোর কুমারের উৎসাহে দুটি গানে দুটি জনপ্রিয় ইংরেজি গানের সুর ভেঙ্গে রচনা করেন দুটি গান । টেনেসি এরনি ফোরডের sixteen ton আর The watermelon song দুটি গান থেকে – এক লড়কী ভিগি ভাগি সি আর হম থে ওহ থী আউর সমা রঙ্গিন ‘ ।
    তবে মূল গান দুটির পাশে হিন্দি গান দুটি শুনলে বোঝা যায় , কিশোর আর শচীন কত্তা মিলে এমন দুটি প্রাণবন্ত গান সৃষ্টি করেছেন যার মধ্যে স্বকীয়তা এবং অভিনবত্ব দুই আছে । The bridge on the river Kwai একটি মারচিং মিউজিক থেকে ‘ এ দিল না হতা বেচারা’ , Mexican hat dance থেকে ‘ জীবন কে সফর মে রাহী ’ , একটি ইটালিয়ান গান chella lia থেকে ‘সালা ম্যায় ত সাহব বন গয়া ’ এ রকম কিছু গানে বিদেশি সুরের ছায়া আছে । কিন্তু গান গুলির আঙ্গিক এমন ভাবে দেশীয়করন করা হয়েছে যে এ গুলি কখনই ‘ lifted ’ ছাপ দেওয়া যায় না ।
    দীর্ঘ তিরিশ বছরের বলিয়ুডে তিনি prince of melody হয়ে রাজত্ব করেছেন । সহস্রাধিক গানে সুর দিয়েছেন ।
    লতা মঙ্গেস্করের ‘ তুম না জানে কিস জঁহা মে খো গয়া ’ থেকে ‘রুলাকে গয়া সপ্না মেরা ’ এই বিশাল যাত্রাপথে লতাজীর গলার টিম্বার অনেকটাই পালটে গেছে , কিন্তু এই সব গানে শচীন কত্তার সিগ্নেচার টি পাল্টায় নি ।
    ‘দুখী মন মেরে’ তে কিশোর কুমারএর কন্ঠ কিছুটা আনুনাসিক , কিছুটা সায়গল-প্রভাবিত , তিন দশক পেরিয়ে ‘বড়ি শুনি শুনি হ্যায়’ তে কিশোর কন্ঠ অনেক জলদ গম্ভীর , পালটে গেছে গলার pitch . তবু শচীন কত্তা কে চিনতে কোনো ভুল হয় না । আশা ভোঁসলে যখন বড় দিদির আকাশ ছাওয়া প্রতিভার নিচে চাপা পড়ে তেমন সুযোগ পাচ্ছেন না , তখন শচীন কত্তাই তাঁকে দিয়ে গাইয়েছেন ‘কালি ঘটা ছায় মোরা ’ এর মত গান আবার বহু বছর পেরিয়ে আশা জী যখন রাহুলদেবের সঙ্গে থেকে গলাতে আনতে শিখেছেন শিখেছেন western falsetto তখন তাঁকে দিয়ে গাইয়েছেন – রাত অকেলি হ্যায় , বুঝ গয়া দিয়া’ র মত গান ।
    প্রায় কোনো যন্ত্র সঙ্গীতের সাহায্য ছাড়া রফি সাহেবকে দিয়ে গায়িয়েছেন ‘ ইয়ে মহলো ইয়ে তখতো , ‘ইয়ে তাজো কি দুনিয়া’ , ‘বিছড়ে সভি বারি বারি’ র মত গান । সেখানে যেমন কন্ঠের জাদু আজ ও আমাদের মুগ্ধ করে তেমনি ‘দিন ঢল যায়ে হায় রাত না যায়ে ’ র বিষণ্ণতা আমাদের হৃদয়ে মোচড় দেয় ।
    বলিয়ুডের স্বর্ণ যুগের সব প্রবাদ প্রতিম কন্ঠ শিল্পীরা তাদের কন্ঠের আসল সম্পদ টুকু কে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারার জন্যে যদি কোনো একজন সঙ্গীত স্রস্টার কাছে ঋণ স্বীকার করতে চান তবে তিনি নিঃসন্দেহে কুমার শচীন দেব বর্মণ ।রফি-কিশোর-লতা-আশা-মুকেশ-হেমন্ত তো বটেই , এমন কি মান্না দে , তালাত মামুদ্‌ , সামসাদ বেগম , গীতা দত্ত যারা প্লে ব্যাক গানের প্রথম ব্র্যাকেটে পড়তেন না , তাঁদের দিয়েও কি অসাধারন সব কাজ করিয়ে নিয়েছেন । কিশোরকুমার কে পুত্রবৎ ভালো বাসতেন । যখন অন্যান্য পরিচালকরা (নউশাদ, ও পি নইয়ার , মদন মোহন ) বিশেষ কিশোর কুমার কে গান দিতেন না , তখনও কিশোর কুমার কে দিয়ে অনবদ্য সব গান গাইয়েছেন । তবে সেই সঙ্গে রফি কে দিয়েও প্রায় সমান সংখ্যক গান গাইয়ে গেছেন । শেষ দিন অবধি সুর সৃষ্টি করে গেছেন অক্লান্ত ভাবে ।জীবনের শেষ কটি ছবির গান ও সমান ভাবে জনপ্রিয় হয়েছে । একেবারে শেষ দিকের ছবি - তেরে মেরে সপ্নে , শরমিলী , অভিমান , প্রেম নগর , সাগিনা , ছুপকে ছুপকে আর মিলি । সৃষ্টিশীলতাএকটুও ভাটা পড়েনি শেষের দিন গুলিতেও । মিলি ছবির গান – বড়ি শুনি শুনি হ্যায় – কিশোরকুমার কে দিয়ে গান্ টির রিহারসাল করাতে করাতে বড়কত্তার স্ট্রোকে আক্রান্ত হন । হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় কিশোর কুমার অচেতন বড়কত্তা কে চেঁচিয়ে বলতে থাকেন ঘাবড়িওনা না দাদা , কাল খুব ভাল করে রেকরডিং হয়ে যাবে । সে আশ্বাস বড়কত্তার কানে পৌঁছেছিলো কিনা জানা নেই , তবে কিশোর কথা রেখেছিলেন । পরের দিন রেকরডিং এ তিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়ে গেয়েছিলেন –
    কভি ম্যায় ন শোয়া , কঁহি মুঝসে খোয়া
    সুখ মেরা এইসে
    পতা নাম লিখকর কঁহি ইউহিঁ রখকর
    ভুলে কোই জ্যায়সে
    অজব দুখ ভরি হ্যায় ইয়ে বেবসি বেবসি
    বড়ি শুনি শুনি হ্যায় জিন্দগী এ জিঙ্গেগী ......... ।

    তিন দশক ধরে নব্বই টির মতো সিনেমায় সুরারোপ করেছেন । হিট গানের সংখ্যা অসংখ্য । আর হিট গানের বিচার ইউ টিউবের লাইকের সংখ্যা গুনে নয় ।যেগুলি সত্যি করে প্রায় চার দশক ধরে মানুষের মুখে মুখে ফিরে কালজয়ী হয়েছে ।

    আগামী পৃথিবী কান পেতে শুনে যাবে সেই সব গান , যতদিন ‘মেলডি’ কথাটা তামাদি না হয়ে যায় , যতদিন গান কান দিয়ে ঢুকে মরমে প্রবেশ করার রাস্তা খুঁজবে ।
    *****
    ছোট কত্তা ছিলেন সৃষ্টি সুখের উল্লাসে চঞ্চল এক শব্দ-খ্যাপা মানুষ । পাখির ডাক , ইঞ্জিনের হুইসিল , তীর ভাঙ্গা ঢেউ , জানলার শার্সিতে বৃষ্টির আঘাত এই সব শব্দ থেকে খুঁজতেন বিশুদ্ধ সঙ্গীত । এই দেশ মহাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বসঙ্গীত নিয়ে ছিল তার গভীর আগ্রহ ।‘ যে ধ্রুবপদ দিয়েছ বাঁধি বিশ্ব তানে , মিলাব তাই জীবন গানে ’ এ গান হয়ত পঞ্চম শোনেন নি । তবু কোথাও একটা এ রকম প্যাশন কাজ করত তার মধ্যে ।
    শামতাপ্রসাদের কাছে ধ্রুপদী তবলা শিক্ষা ,সেই সঙ্গে পাগলের মত ওয়েস্টারন মিউজিকে বুঁদ হয়ে থাকা এই দুইএর সংমিশ্রনে তৈরি হয়েছিল তাঁর তালের জগৎ , বিটের দুনিয়া ।
    বড় কত্তা মোটামুটি দাদরা-কাহারবা তেই পেয়ে যেতেন তার অভীষ্ট রিদম ।
    ছোট কত্তা তাঁর গানে রিদমে এক ধরনের বিপ্লব ঘটিয়ে দিলেন ।বিটসের প্রচলিত ছক গুলে বদলে নিয়ে এলেন একেবারে অন্য রকমের বিটস । এমন কি এক গানেও বসালেন দু রকমের বিটস । তুম বিন যায়ে কঁহা , গুম হ্যায় কিসি কা প্যার মে , ও মেরে দিল কে চৈন ’ এসব গানে দেখালেন গিটারে নতুন ধরনের কর্ড স্ট্রাকচার আর অন্য রকমের রিদম । ব্যবহার করলেন সব সিনেমা সঙ্গীতে অপ্রচলিত সব তাল বাদ্য । ডুগি , মাদল , কাস্টানেট , কোবেশ , সেকারস ইত্যাদি কে নতুন ভাবে ব্যাবহার করলেন । এ ছাড়াও নানা রকম যন্ত্র পাতি দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে অদ্ভুত সব শব্দ তৈরি করে অসাধারন ভাবে ব্যাবহার করেছেন ।
    ‘ সামনে ওহ কউন আয়া , দিল মে হুয়ি হলচল ’ গানে মটকা নামক গ্রাম্য তালবাদ্যের সঙ্গে প্যাডেল লাগিয়ে এক অভিনব রিদম সৃষ্টি করলেন ।
    ‘ইয়ে দিন তো আতা হ্যায় একদিন জোয়ানি মে ’ গানে একটি কাঁসর কে জলে ডুবিয়ে বাজিয়ে এক অদ্ভুত সাউন্ড বার করলেন । ‘সামানেয়ালি খিড়কি মে’ এর সঙ্গে বাঁশ দিয়ে একটি তালবাদ্য নিজেই বানিয়ে নিয়ে ছিলেন ।
    আমেরিকান পপ জ্যাজ রক এ সব তো ছিলই , সেই সঙ্গে ল্যাটিন আমেরিকা, আজারবাইজান , ইজিপ্সিয়ান , ইরানিয়ান সমস্ত সঙ্গীত থেকে আহরন করেছেন কখনো মুখড়া কখনো অন্তরা , কখনো রিদম , কখনো তাল , কখনো প্রিলিউড-ইন্টারলিউডের অংশ । যেমন – ‘জীবন কে হর মোড় পে , মিল জায়েঙ্গে হমসফর ’ গান্ টি Gulsemin নামক একটি আজারবাইজান সঙ্গীত থেকে নেওয়া । ‘দেখতা হুঁ কোই লড়কি হসীন’ গান টি ‘মুস্তাফা মুস্তাফা’ নামের একটি ইজিপ্সিয়ান গান থেকে নেওয়া । ‘আজা মেরে রাজা’ একটি জাপানি গান থেকে নেওয়া । এ রকম – আব্বা , এল্ভিস প্রেসলি , ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা , পল ম্যাকারটনি , বিটলস , ক্রিসমাস ক্যারল ইত্যাদি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রচুর গান রচনা করেছেন , কিন্তু সব গুলিতেই তাঁর কিছুটা নিজস্বতা মিলিয়ে দিয়েছেন খুব সুন্দর ভাবে ।
    কিন্তু তাই বলে যে ভারতীয় সঙ্গীত কে অবহেলা করেছেন এমনটা মোটেই নয় । ধ্রুপদ সংগীত থেকে নির্যাস টূকু নিয়ে কি ভাবে সিনেমার গানে মেলডি আনা যায় সেটা বাবার কাছে শিখেছিলেন খুব মন দিয়ে ।
    তাই ভারতীয় রাগ রাগিনী থেকে রচনা করেছেন বহু অনবদ্য গান । যেমন –
    মাল গুঞ্জী রাগে আধারিত – ঘর আয়ে , ঘির আয়ে , আলাইলা বিলায়ল রাগে আধারিত ‘ সারে কে সারে গামা কো লেকর ’ , ভৈরবী তে আধারিত – হমে তুমসে প্যার কিতনা ’ , রাগ বেহাগে আধারিত – জীন্দগীকে সফরমে গুজর যাতে হ্যায় যো মোকাম/ পিয়া বাউরী ‘ , রাগ চারুকেশী তে আধারিত – একেলে হুঁ , চলে আও , রাগ কেদারে আধারিত –আপকি আঁখোমে কুছ , টোডি ও খামাজে –রায়না বিত যায়ে ’ , রাগেশ্রী তে আধারিত – ‘মিতয়া বোলে মিঠে বয়েন’ , শিবরঞ্জনীতে আধারিত – ‘মেরে নয়না শাওন ভাদো’ , ইমন কল্যানে ‘বিতে না বিতায়ে রয়না ’ রাগ জোগিয়াতে ‘ ও গঙ্গা মাইয়া ’ কলাবতীতে ‘ হ্যায় অগর দুশমন ’, আশাবরী তে – ‘হমে আউর জীনে কি ’, খামাজ রাগে আধারিত –‘আও কহাঁসে ঘনশ্যাম ’ , ইত্যাদি ।

    অরকেস্ট্রা ব্যবহারে বড়কত্তার স্টাইল কে যদি ব্যায়কুন্ঠতা বিশেষণে ভূষিত করি তা হলে ছোটকত্তার অরকেস্ট্রার ব্যবহারের স্টাইল ছিল অমিতব্যয়িতা । অনেক সময় তিনি কন্ঠের শব্দ আর যন্ত্রের শব্দ কে মিলিয়ে এক ধরনের তৃতীয় শব্দ সৃষ্টি করেছেন । কিন্তু অরকেস্ট্রার বেশি ব্যাবহার কখনই কোলাহল বা ক্যাকফনি হয়ে ওঠেনি । গান ও বাজনা একে অন্যের পরিপুরক হয়ে উঠেছে সব সময়েই । বড়কত্তা সমসাময়িকতা কে বিশেষ পাত্তা দিতেন না । অনেক সময় এক ই গানের তাঁর নিজের করা দুটি সুর নিয়ে সংশয় দেখা দিলে বাড়ির চাকর কে বা স্টুডিওর চা ওয়ালাকে শুনিয়ে জিগ্যেস করে নিতেন কোন টা বেশি ভাল লাগছে । অর্থাৎ সাধারন শ্রোতাদের গ্রহন যোগ্যতা কে মাথায় রাখতেন ।সাধারন মানুষের হৃদয় কে ছুঁতে পারলে সে গান রয়ে যাবে , এটি তাঁর বিশ্বাস ছিল ।
    পঞ্চম বুঝে ছিলেন সময়টা খুব দ্রুত পাল্টাচ্ছে । বিশ্বায়ন কথাটা তখন প্রচলিত না হলেও তিনি বুঝেছিলেন ভারতীয় সঙ্গীত কে আন্তর্জাতিক হতে হবে । তাই জানতেন তাঁর মিউজিক এরেঞ্জমেন্টের নতুন চেহারাটা শ্রোতাদের কানে সেই সময়ে একটু ধাক্কা দিলেও আগামী পৃথিবী পেয়ে যাবে এগিয়ে চলার একটা নতুন দিশা । নতুন সঙ্গীত শুধু আর নিভৃতের হৃদিরঞ্জন হয়ে থাকবেনা । রিদমের বাহুল্যে , ইলেক্ট্রনিক মিউজিকের প্রাধান্যে গানের শব্দ কে এক মাত্রিক থেকে তিন মাত্রিক হয়ে উঠতে হবে ।
    বড় কত্তা খুব কাছের লোকেদের কাছে বলতেন – পঞ্চম বড় জোরে ছুটছে , ওকে বারন কর । কিন্তু পঞ্চম তার সময় থেকে অনেকটা এগিয়ে যেতে চাইত । এবং তা পেরেও ছিলো ।

    আরাধনা ছবির মিউজিক করার সময় বড়কত্তা কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন । সে সময় পঞ্চম অনেকটাই সাহাজ্য করে দেন বড়কত্তা কে । ‘মেরে সপনো কে রানী কব আওগী তু ’ গানের যন্ত্রানুসঙ্গ যে পঞ্চমের করা তা বেশ পরিস্কার বোঝা যায় । কিন্তু- গুন গুনা রহা ভ্রমর - গানে আবার বড় কত্তার সিগনেচার । আরাধনা তাই আমাদের কাছে রিলে রেসের ব্যটন দেওয়া নেওয়ার ছবি হয়ে বলিয়ুডের ইতিহাসে উজ্জল হয়ে থাকবে । সেই ব্যাটন নিয়ে নতুন করে দৌড় শুরু করলেন ছোটকত্তা । সে এক লম্বা দৌড় । পিছনে ঐতিহ্যের সারি সারি সুরম্য প্রাসাদ আর সামনে বিশ্ব সঙ্গীতের সহস্রধারার হাতছানি । সে প্রাসাদ গুলির নাম নউশাদ , মদন মোহন , ও পি নইয়ার , শঙ্কর জয়কিশান , সলিল চৌধুরী এবং অবশ্যই শচীন দেব বর্মণ।
    পঞ্চম প্রায় ২২৫ টি ছবির সুর করেছেন । হিট গানের সংখ্যা কয়েক শত ।
    আশির দশকে কিছুটা একলা হয়ে পড়েছিলেন । পুরনো বন্ধুরা অনেকেই ছেড়ে গেছেন ।তাঁর সব চেয়ে প্রিয় পুরুষ কন্ঠ , তাঁর পাগলামির দোশর , তাঁর প্রিয় বন্ধু- কিশোর কুমার অকালে চলে গেলেন ।রফি সাহেব , মুকেশজী আগেই চলে গেছেন । মিডিওকার সস্তা কপিক্যাট সঙ্গীত পরিচালক রা বলিয়ুড দখল করে ফেলছে । পুরনো বন্ধু প্রডিউসার দের কেন যেন মনে হোল , আর ডি ফুরিয়ে গেছে । তারাও তাঁকে ছেড়ে গেলেন ।
    তখন মাত্র ৪৫ বছর বয়স । পঞ্চমের উদ্দামতা খানিকটা স্তিমিত হয়ে এসেছে ঠিক ই ,কিন্তু ভারতীয় মেলোডি তে আরো রিদ্ধ হয়ে উঠেছেন । কিন্তু বাজারে তখন কপি গানের রমরমা । পঞ্চম সেখানে মানাতে পারছেন না ।
    আবার যেন বাবার মত করে , যাকে বলে চিরন্তন কন্ঠপ্রধান মেলডি ও ‘ঠহরাও’এর গভীরতায় তে ফিরতে চাইছেন ,আর ঠিক তখনই অকালে তাঁর হৃদয় থমকে গেল চিরকালের জন্যে । আরো অনেক কিছু দেওয়া বাকি রয়ে গেল ।
    বাবার মতো করে কখনও রবীন্দ্রনাথের গান থেকে কিছু সরাসরি নেন নি । কিন্তু তাঁর শেষ কাজ – ১৯৪২ – এ লভ স্টোরি তে যেন সেই রবীন্দ্রনাথকে ছুঁয়ে পৌঁছে গেলেন বাবার সান্নিধ্যে , পাড়ি দিলেন গানের ওপারে এক অমৃতলোকে ,যেখানে মৃত্যু রাস্তা আটকায় না , যেখানে সময় চোখ রাঙ্গায় না ।
    সেখানে ধীর লয়ে গুঞ্জরিত হয় -
    ‘সময় কা এ পল থমসা গয়া হ্যায়
    আউর ইস পল মে কোই নহি হ্যায়
    বস এক ম্যায় হুঁ
    বস এক তুম হো ......... । ’
    শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতকার হিসেবে তৃতীয় বারের ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার টি তাঁর নামে দিয়ে যখন বলিয়ুড মেনে নিল পঞ্চম ফুরিয়ে যায়নি , তখন সেই অভিমানী ক্ষণজন্মা জিনিয়াস টি তাঁর এই দুনিয়ার দৌড় থামিয়ে আরেক দুনিয়ায় বিশ্রাম নিতে চলে গেছেন ।
    *********
  • Somen Dey | 126.193.143.142 | ২৭ জুন ২০১৪ ১৬:৩০640686
  • ছোট কত্তার জন্মদিন আজ ।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ জুন ২০১৪ ১৬:৩৩640691
  • হ্যাঁ তাইত!
    শুভ জন্মদিন রাহুল দেববর্মন।
  • | ২৭ জুন ২০১৪ ১৬:৪৫640692
  • ওয়াহ!
    এই টইটা পছন্দ হল খুব।
  • porompora | 125.112.74.130 | ২৭ জুন ২০১৪ ১৭:১৬640693
  • কভি ম্যায় ন শোয়া , কঁহি মুঝসে খোয়া
    সুখ মেরা এইসে
    পতা নাম লিখকর কঁহি ইউহিঁ রখকর
    ভুলে কোই জ্যায়সে
    অজব দুখ ভরি হ্যায় ইয়ে বেবসি বেবসি
    বড়ি শুনি শুনি হ্যায় জিন্দগী

    মন দিয়ে শুনলে মনে হবে কিশোর গাইতে গাইতে কাঁদছেন কিন্তু বুঝতে দিচ্ছেন না ।

    অনবদ্য লেখা সোমেন বাবু । বড়ে মিয়া তো বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া সুহান আল্লা ।
  • b | 135.20.82.164 | ২৭ জুন ২০১৪ ১৭:২৫640694
  • দারুণ। থ্যাংকু।
  • lcm | 60.242.74.27 | ২৭ জুন ২০১৪ ২০:৩৬640695
  • বেড়ে লিখেছে সোমেন।
  • ranjan roy | 24.99.214.236 | ২৮ জুন ২০১৪ ০১:৩০640696
  • সোমেন,
    সেবার অল্পক্ষণের জন্যে আমার বাড়িতে এসেছিলেন শিবাংশুর সাথে। লাজুক মুখে প্রায় চুপচাপ বসে ছিলেন। ঠিকমত আলাপ হয়ে ওঠেনি।
    আজ এই অনবদ্য লেখার সুবাদে আমার ও আমার স্ত্রীর স্ট্যান্ডিং ইন্ভাইটেশন স্বীকার করুন।
    কোলকাতায় আসলে আমার বাড়িতে এসে আড্ডা দিয়ে যাবেন অনুরোধ।
  • কল্লোল | 111.63.192.123 | ২৮ জুন ২০১৪ ১০:১৯640665
  • ওঃ। আজ সক্কালে ভগবানের নাম বার বার। সোমেনবাবু আমার আভূমি সলাম নেবেন। আপনার সাথে আলাপ করার ইচ্ছে রইলো কখনো। দেখা হয়ে যাবে। হবেই। যদি শিবাংশুর ভুবনেশ্বরের বাসায় হয়ে যায় তো ক্যাবাৎ।
  • b | 135.20.82.164 | ২৮ জুন ২০১৪ ১১:৩৬640666
  • "যেন সেই রবীন্দ্রনাথকে ছুঁয়ে পৌঁছে গেলেন বাবার সান্নিধ্যে ,"

    এটা একটু ব্যাখ্যা করবেন সোমেনবাবু? রবীন্দ্রনাথের কনটেক্সট কি ভাবে আসছে এই গানে?
  • PM | 220.24.116.88 | ২৮ জুন ২০১৪ ১১:৪০640667
  • ১৫ দিনের ওপোর বিনা নোটিসে প্রবাসে। তার ওপোর হোটেলের ওআই ফাই থেকে গুরু বা আনন্দবাজার দুটৈ খোলে না। জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছিলো।

    আজ হোটেল পাল্টে প্রথম আপনার লেখাটাই পড়লাম। এই মেঘলা দিনেও মন ভালো হয়ে গেলো আচমকা। যেনো এক ঝলক টাটকা হাওয়া।
    অনেক ধন্যবাদ। আরো লেখা চাই। শিবাংশুবাবু, কাল্লোলদা ছাড়া আরেকজনকে পেয়ে আমরা সত্যি সমৃদ্ধ হলাম।
  • kumu | 52.104.26.39 | ২৮ জুন ২০১৪ ১২:৪১640668
  • পিএমকে অনুরোধ একবার ভাট থেকে ভার্চুয়াল টই দেখবেন,সময় করে।
  • PM | 220.24.116.88 | ২৮ জুন ২০১৪ ১৭:১৩640669
  • ভাট আর টই তো জানি। "ভার্চুয়াল টই " কি নতুন কিছু?
  • a x | 86.31.217.192 | ২৮ জুন ২০১৪ ২১:১১640670
  • ভালো লাগল। "লোতা" কী? তানপুরা?
  • সিকি | ২৮ জুন ২০১৪ ২১:৫৭640671
  • ভালো লাগল।
  • Somen Dey | 53.252.249.233 | ২৯ জুন ২০১৪ ১২:৩৪640672
  • রঞ্জন বাবু ও কল্লোল বাবু

    অনেক ধন্যবাদ ।সামনা সামনি আড্ডা দেবার ইচ্ছে রইল । দেখা যাক কবে কোথায় হয়ে যায় ।

    পি এম , দ , আই সি এম , এ এক্স , বি, সিকি সবাইকে ধন্যবাদ ।

    শচীন কত্তা লতা কে লোতা উচ্চারন করতেন ।
    ১৯৪২ র গানের সুরে , বিশেষ করে কুছ না হো এবং প্যারা হুয়া চুপকে সে রবীন্দ্রনাথ এবং শচীন দেবের নিজের গাওয়া গানের কিছুটা প্রচ্ছন্ন প্রভাব আছে । পরে বিশদে লিখবার ইচ্ছে রইল ।
  • pi | 24.139.209.3 | ২৯ জুন ২০১৪ ১২:৪৫640673
  • প্যার হুয়া চুপকেসে তে এসো শ্যামলসুন্দরের ছায়া না ?
  • b | 24.139.196.6 | ২৯ জুন ২০১৪ ২০:০৪640674
  • প্রিলিউড না ইন্টার্লুড ছিলো কোন গানে যেন, 'বন্ধু রঙ্গিলা রঙ্গিলা'-র সুরে? ১৯৪২-তেই তো?
  • buro | 127.194.45.117 | ২৯ জুন ২০১৪ ২০:০৭640676
  • দারুন হচ্ছে । শচীন কত্তার সুরে রফির এই গান টা আপনার জন্যে
  • buro | 127.194.45.117 | ২৯ জুন ২০১৪ ২০:১৭640677

  • শচীন কত্তার এই গান টায় রবীব্দ্রসঙ্গীতের প্রভাব পাওয়া যায় - আমার ভাঙ্গা পথের রাঙ্গা ধুলায় পড়েছে তার পায়ের চিন্হ
  • a x | 86.31.217.192 | ২৯ জুন ২০১৪ ২০:৩৫640678
  • ও হো ঃ-)
  • Somen Dey | 53.252.251.245 | ৩০ জুন ২০১৪ ০০:০৭640679
  • রঙ্গিলা রঙ্গিলা রঙ্গিলা রে - এই শচীন কত্তার সুর করা ও গাওয়া গান্ টি র ছায়া আছে ছোট কত্তার সুরে ১৯৪২ র গান -কুছ না কহো গান টিতে ।
    আর এসো শ্যামল সুন্দর এই দেশ রাগ আধারিত রবীন্দ্র সঙ্গীত টির প্রভাব আছে – ছোটো কত্তার প্যার হুয়া চুপকে সে – গানে ।
  • aka | 34.96.239.132 | ৩০ জুন ২০১৪ ০১:২২640680
  • এইত্তো হেব্বি হয়েছে।

    সোমেন একটা উদাহরণ দিনতো কোথায় একই গানে দুরকম তাল ব্যবহার হয়েছে। সিকির মুখে ছুঁড়ে মারি। এককালে আমাকে যাস্ট চেঁচিয়ে থামিয়ে দিয়েছিল। আমার থিওরী নেই কিন্তু কান আছে। কিন্তু কান দিয়ে তো আর তক্কো জেতা যায় না।
  • lcm | 138.32.84.27 | ৩০ জুন ২০১৪ ০২:৫২640681
  • আর বড় কত্তার, তেরে মেরে মিলন কি ওয়ে র‌্যায়না - রোবিন্দো থেকে
  • nina | 78.37.233.36 | ৩০ জুন ২০১৪ ০৮:০৮640682
  • এই চাচা ভাতিজা টিম--লাজবাব !!
    সোমেনবাবু আর একবার কুর্ণিশ---
  • সিকি | 135.19.34.86 | ৩০ জুন ২০১৪ ০৯:৪৩640683
  • বড়কত্তার বেশ কিছু গান রবীন্দ্র অনুপ্রাণিত। তেরে মেরে মিলন কি ইয়ে র‌্যয়না - যদি তারে নাই চিনি গো সে কী, ছুঁ কর মেরে মন কো - তোমার হল শুরু, জায়ে তো জায়ে কঁহা - হে ক্ষণিকের অতিথি, এবং আরও বেশ কিছু।

    কিন্তু আকার কী দাবি? তালফেরতা নিয়ে তো এখানে কথা হয় নি!

    যাই হোক, সোমেনবাবুর কাছে আরও লেখার দাবি রইল। বড় ভালো হয়েছে লেখাটা।
  • lcm | 118.91.116.131 | ৩০ জুন ২০১৪ ১০:৫৮640684
  • ছুঁ কর মেরে মন কো - বড়ে মিঞা বা ছোটে মিঞার নয়, ওটি রাজেশ রোশন।
  • Somen Dey | 53.252.248.134 | ৩০ জুন ২০১৪ ১২:২৬640685
  • নিনা ,
    আপাতত এইটে মনে পড়ছে ।দি ট্রেন সিনেমার – মেরি জান ম্যায়নে কহা

  • Somen dey | 53.252.248.134 | ৩০ জুন ২০১৪ ১২:৪৬640687
  • Gregory D. Booth
    নামের এক সাহেব এই গান্ টির বিট পরিবর্তন সম্মন্ধে যা বলেছেন সেটা তুলে দিলাম।
    while Burman may have known Helen would feature when he set out to compose the scene, the details of her response to this music could only have been worked out once the song was recorded. I concernmyself only with the initial 20 seconds of the song’s introductory passage.“Action” music precedes the song, which begins with four unaccompanied “beats” played on the
    electric bass. A low brass chord precedes (and distracts from) the entrance of the rhythm section (drumset, plus two side percussionists) on the first clearly articulated “down-beat” of the song. The percussion-ists set up a clear four-beat meter (beat = 176 bpm)
    2, with a strong “off-beat” accent on the second of each beat-group in typical rock ‘n’ roll fashion. Over the initial four repetitions of the four-beat groups— subdivided by a chord change on the third and fourth repetitions—the brass repeat their accents on the“1” of each group and are answered by the saxophones over the remaining three beats of the group. Thechoreography at this point illustrates the way Burman’s music provided opportunities for dramatic move-ment. Helen uses large, sweeping leg movements that cause her skirts to flare dramatically and that aretimed to coincide with, and intensify, the overall effect of the strong brass accents.After a snatch of “action music”, this musical section is repeated to different choreography,
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন