এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • "ভালোবাসার তুমি কি জান"?

    ranjan roy
    অন্যান্য | ০৬ মে ২০১৫ | ৩৪২১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • lcm | 118.91.116.131 | ০৬ মে ২০১৫ ১১:২১677979
  • সিনেমা রিভিউ নাকি?
  • ranjan roy | 24.96.74.143 | ০৬ মে ২০১৫ ১১:২১677990
  • "ভালোবাসার তুমি কি জান"!
    [ এই সিরিজের সমস্ত কাহিনী ও চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তবে কারো সাথে মিল চোখে পড়লে বুঝতে হবে তা নেহাতই কাকতালীয়।]

    গল্প--১
    =====
    কয়েক দশক আগের কথা। তখনও দেশের রাজনৈতিক আকাশে রাজীব গান্ধী নামক নক্ষত্রের উদয় হয় নি। স্যাম পিত্রোদা কোন গোকুলে একটু একটু করে বেড়ে উঠছেন। ট্রাই -বিপ্লব ভবিষ্যতের গর্ভে ভ্রুণ মাত্র।
    তখন ট্রাংককল হত তিন রকমের । সাধারণ কলে সারাদিন বসে থাকতে হত-- সকালে বুক করলে লাইন পেতে পেতে সন্ধে। এক্সপ্রেস বুক করলে আধা-এক ঘন্টা আর লাইটনিং কল করলে এক থেকে পাঁচ মিনিটে লাইন।
    সেই সময়ে ছত্তিশগড়ের এক উঠতি শিল্পনগরীতে বিপদে পড়লে অগতির গতি মধুসূদন দাদা ছিলেন আমাদের ভটচাজ জেঠু। হিন্দিভাষীদের জিভে 'দাদা ভট্টাচারি'। কারও কোন এমার্জেন্সিতে পতিতপাবন হরি হয়ে ভট্টাচারি দাদাকে ধরলেই হল। ওনার নাম করে নাগপুর অব্দি বিশেষ লাইনে ফোন লাগালে বিদ্যুতের গতিতে কল লেগে যেত।
    এইসব কাজে ওঁর আমদানী হত লোকের কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসা। বিজনেস ম্যাগনেটদের জন্যে উনি থাকতেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু মধ্যবিত্ত আকুলচিত্তদের দেখলে উনি গলে যেতেন।
    ওঁর এই দিব্যশক্তির উৎস আস্তে আস্তে বুখতে পারলাম। পেশায় একটি পাবলিক সেক্টর কোম্পানির টেলিকম ইঞ্জিনিয়র হয়েও উনি আর একটি গোপন পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। তাহল কেন্দ্রীয় সরকারের কোন গুপ্তচর সংস্থাকে নিয়মিত খবর সরবরাহ করা। বিনিময়ে পেতেন খামবন্ধ নিশ্চিত পারিশ্রমিক।
    ওঁর বিনোদন ছিল পুলিশ অফিসারদের মেসে মদ্যপান ও তাসের বাজি। বড় বড় পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে 'ইয়ারানা-দোস্তানা' ছিল দেখবার মত। কোথাও কোন আন্তঃরাজ্য অপরাধ সংঘটিত হলে বিশেষ তদন্তকারী দলের সঙ্গে ওনাকে যেতে হত। উনি নাকি টায়ারের দাগ ধরে অপরাধীরা কোন দিক থেকে এসে কোন দিকে গেছে সেসব চিহ্নিত করতে দক্ষ ছিলেন।
    কে জানত ওনার দিব্যশক্তির সাহায্য একদিন আমাকেও নিতে হবে!

    তখন ইন্দিরা গান্ধী গোটা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। চারদিকে বিরোধী দলের নেতা ও কর্মীদের জেলে পোরা হল। জর্জ ফার্নান্ডেজের মত দু'এক জন ছাড়া সবাই লৌহশলাকার পেছনে।
    এবার সমর্থকদের পালা।
    আমার মাসতুতো দাদা তখন আন্ডারগ্রাউন্ড অবস্থায়। গতমাসে একরাত আমাদের বাড়িতে কাটিয়ে সামান্য কিছু টাকাপয়সা ও জামাকাপড় নিয়ে গেছেন। কিন্তু কে- দেখেছে- কে-দেখেছে-দাদা-দেখেছে কেস হল।
    এক বিকেলে একটি কালোগাড়ি এসে বাড়ির বাইরে থামল। আর তার থেকে একজন উর্দিপরা অফিসার সঙ্গে জনা দুই সাদা পোষাকের লোক নেমে এসে বাবাকে কিসব জিজ্ঞেস করল। সামান্য কথা কাটাকাটি।
    তারপর যা হল তা একেবারে সাঁওতাল পল্লীর উৎসবের কেষ্টযাত্রার রকমফের।
    ( বৃন্দাবন থেকে দূত এসেছে মথুরার রাজা কৃষ্ণকে ফেরত নিয়ে যাবে বলে।
    দূত-- হাঁ হে কৃষ্ণ, তু কে যাইতে হবেক।
    কৃষ্ণ--- যাবক নাই।
    দূত--যাবি না?
    কৃষ্ণ-- না, যাবক নাই।
    দূত--তুই যদি না যাবি তো তুকে প্রেমডোরে বাইন্ধে হড়হড়ায়ে টাইনে হুই বৃন্দাবন লিয়ে যাব।)

    বাবা বুঝলেন ডাক এসেছে।
    পুলিশ অফিসারকে সবিনয়ে বললেন-- শেভ টেভ করে ফিটফাট হয়ে নিই?
    তারপর দাড়ি কাটতে কাটতে আমাকে নীচুগলায় বললেন-- কালো গাড়ি আমাকে নিয়ে চলে গেলে পাঁচমিনিটের মধ্যে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়বি। মিঃ ভটচাজকে সব খুলে বলবি।
    গাড়িতে ওঠার সময় মাকে বললেন-- ভেব না, আজই ফিরে আসব। এঁরা একটু জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডেকেছেন। কাজ মিটে গেলে পৌঁছে দেবেন।
    পুলিশ অফিসারের গোঁফের ফাঁকে মুচকি হাসি মায়ের চোখ এড়ায় নি।

    প্রায় দশ মিনিট হল কালোগাড়ি চলে গেছে। আমি সাইকেল চালাচ্ছি প্রাণপণে। খাড়া প্যাডল মারছি রিকশাওয়ালাদের মত। ভটচাজ জেঠ্যুর বাড়ির দুরত্ব যে চার কিলোমিটারের মত। খাড়াই রাস্তা।
    হাঁফাতে হাঁফাতে ওঁর ডুপ্লে কোয়ার্টারের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম। উনি অবিন্যস্ত বিছানায় আধশোয়া হয়ে একা একা পেশেন্স খেলছেন। পাশের ছোট টেবিলে একটি আধখাওয়া রামের বোতল।
    আমার একশ্বাসে বলা রিপোর্টিং শুনে উনি ক্লান্তস্বরে বললেন-- বাবা, আমার আজ জ্বর হয়েছে। ১০১ ডিগ্রি। আমি তো এখন সিটি কোতওয়ালি তে যেতে পারব না। ফোন করে দিচ্ছি, মনে হয় কাজ হয়ে যাবে। তুমি ভেব না, বাড়ি যাও। বৌদিকে বল চিন্তা না করতে।

    অগত্যা।
    বাড়ি ফিরছি। এবারে রাস্তাটা উতরাই। কিন্তু আমি সাইকেল চালাচ্ছি দায়সারা ভাবে। আর কোথায় কোথায় যেতে পারি? এ লাইনে তো কাউকেই জানি না। উকিলের কাছে যাব? কিন্তু এমার্জেন্সিতে নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। উকিলদের পেশা তো বন্ধ হওয়ার মুখে! তবে?
    সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে কখন বাড়ি পৌঁছে গেছি। সাইকেলটা বাগানের পেয়ারা গাছের নীচে দাঁড় করাই।
    মাকে কী বলে বোঝাব? আমি পারলাম না? এখনও যথেষ্ট বড় হইনি?
  • lcm | 118.91.116.131 | ০৬ মে ২০১৫ ১১:২৪678001
  • তাপ্পর?
  • ranjan roy | 24.96.74.143 | ০৬ মে ২০১৫ ১১:৫১678011
  • পা টেনে টেনে তিন ধাপ সিঁড়ি ভেঙে বারান্দায় উঠে একমিনিট দাঁড়িয়ে থাকি। তারপর নিতান্ত অনিচ্ছায় হাত বাড়িয়ে কলিং বেলে চাপ দিই।
    দরজা খুলে যায়।
    দরজার ফ্রেমে দাঁড়িয়ে বাবা। হাতে জ্বলন্ত সিগারেট।
    --আয়, ভেতরে আয়। ওভাবে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবি?
    -- কখন এলে?
    --এই মিনিট পাঁচেক হবে।

    মার হাতের ট্রে তে ধোঁয়া ওঠা তিন কাপ চা। বাবা বলতে থাকেন।
    -- বুঝলি, আমাকে অপমান করার জন্যে কালো ডগ্গাটা গোটা বাজারে ঘোরাল। তারপর মদের দোকানে দাঁড় করিয়ে মদ কিনে টিনে আরো দুটো চোর-ছ্যাঁচড়কে তুলে কোতওয়ালি থানায় নিয়ে গিয়ে বারান্দায় বসিয়ে রাখল।
    আমি থানার স্টেশন অফিসারের সঙ্গে দেখা করতে চাইলাম তো খেঁকিয়ে উঠল-- এটা আপনার অফিস নয় যে যা বলবেন তাই হবে। চুপচাপ বসে থাকুন, সময়ে দেখা হবে।
    মনে হল দু'একদিন শ্রীঘরে রেখে তোদের থেকে পয়সাকড়ি চাইবে।
    এমন সময় তোর ভটচাজ জেঠুর ফোন এল। কী কথা হল জানিনে।
    আমাকে ডেকে বলল-- যান, বাড়ি যান। আর আজেবাজে লোকজন এলে ঘরে জায়গা দেবেন না। আমাদের খবর দেবেন।
    আমি বাইরে এসে রিকশা নিয়ে ফিরে এলাম।

    সেদিন থেকে জেঠু আমার মনে স্থায়ী জায়গা করে নিলেন।ওঁর আসন ভগবানের ঠিক পরেই।

    আমাদের কোয়ার্টারের পাশে একটি সাপ্তাহিক হাট বসে। তাতে নদীর টাটকা মাছ ওঠে। মাঝে মাঝে জেঠু এসে মাকে বলতেন-- বৌদি, একটা থলি দিন তো! মাছের থলিটা আনা হয় নি। মা দিতেন সবচেয়ে ভাল থলিটা। সে থলি আর কখনও ফেরত আসত না। সে নিয়ে মা একবার বাবার কাছে অনুযোগ করায় শুনতে হল- তোমার মন এত ছোট কেন? একটা সামান্য মাছের থলি!
    বাবা-মার কথা কাটাকাটিতে আমি বরাবর মায়ের পক্ষে থেকেছি। ফিস ফিস করে প্রম্প্ট করেছি- আরে এই পয়েন্টটা বল। উঃ, ওটা ভুলে গেলে?
    কিন্তু ভটচাজ জেঠুর ব্যাপারে কোন কথা উঠলে আমি ওঁর পক্ষে দাঁড়িয়ে গোটা দুনিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে তৈরি।
  • sosen | 24.139.199.11 | ০৬ মে ২০১৫ ১১:৫৩678012
  • তার্পর?
  • ranjan roy | 24.96.74.143 | ০৬ মে ২০১৫ ১২:১৫678013
  • উনি আমাদের বাড়িতে আসতেন ধূমকেতুর মত। এসেই হৈ-চৈ বাধিয়ে দিতেন।
    -- বৌদি, এসে গেছি। এবার --।
    মা হাসি মুখে পর পর দুকাপ কড়া লিকার চা দিত। বাবার সিগারেটের টিন থেকে অনায়াসে তুলে নিতেন সিগারেট। বয়স্ক মানুষটির মুখে লেগে থাকত এক অনাবিল হাসি। তারপর খুলে বসতেন অদ্ভূত সব গল্পের ঝাঁপি।
    হয়ত আমাকে জিগ্যেস করতেন-- কী পড়ছ বাবা?
    -- ডোভার বীচ কবিতাটার নোটস তৈরি করছি, সামনে পরীক্ষা।
    না, উনি ম্যাথু আর্নল্ড নিয়ে কোন প্রশ্ন করতেন না। সমাজে কবিতা কা ক্যায়া কাম হ্যায় জিজ্ঞেস করে বিব্রত করতেন না।
    বলতেন,--তা ডোভার বীচ দেখেছ বাবা?
    যাচ্চলে! আমি কোত্থেকে দেখব! হাসিমুখে মাথা নাড়ি।
    পরক্ষণেই উনি ডুবে যান ডোভার বীচ কবে গেছলেন, কার কার সঙ্গে , সেইসব মজাদার গল্পে। সেখানে আমার কবিতার ডোভার বীচ কোথায় হারিয়ে যায়! জেগে ওঠে এক জীবনপিয়াসী আমুদে মানুষের ছবি।
    জেঠুকে হিংসে করতে থাকি। জানতে পারি, উনি বহুদিন ইংল্যান্ডে কাটিয়েছেন। না, প্রথাগত কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নেই, কিন্তু সেখানকার কোন শহরে জর্জ টেলিগ্রাফ না অমনি কী এক ইন্স্টিটুটের ডিপ্লোমা আছে। আর আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে ইংরেজ ফৌজের টেলিকমুনিকেশনে কাজের অভিজ্ঞতা। সেই পুঁজির জোরে উনি আজ এই পাবলিক সেক্টর কোম্পানির টেলিকম ইঞ্জিনিয়র।
    স্বাধীন ভারতের নামী কলেজগুলোর থেকে ডিগ্রি পাওয়া তরুণ প্রজন্মের প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে উনি সমানে সমানে পাল্লা দিচ্ছেন এতে বেশ গর্ব অনুভব করতাম।
    আর টের পেতাম বৃটিশ ফৌজের টেকনিশিয়ান থেকে স্বাধীন ভারতে পাবলিক সেক্টরে প্রযুক্তিবিদের চাকরি করার সুবাদে আমার বাবার সঙ্গে ওঁর একটা আলাদা বন্ডিং গড়ে উঠেছে।
    উনি মাঝে মাঝেই গুনগুন করতেন--উই আর ইন দ্য সেম বোট ব্রাদার!
    বাবার মুচকি হেসে মার উদ্দেশে গলা চড়াতেন-- কই গো! আর এক রাউন্ড চা হইব নি?
  • ranjan roy | 24.96.74.143 | ০৬ মে ২০১৫ ১২:৪৭678014
  • আমার সবচেয়ে ভাল লাগত শিকারের গল্প। মধ্যপ্রদেশের গোন্ডিয়া-বালাঘাটের জঙ্গল বা মহাকোশল অঞ্চলের জবলপুর-শাহডোল জেলার জঙ্গলে শিকার। তাতে চিতল হরিণ, সম্ভর, গউর, লেপার্ড আর নানারকম পাখি শিকার। কখনও বুনো শুয়োরের আক্রমণ কখনও দাঁতাল হাতির ঝুন্ড। আর কখনও উইনচেস্টার বা ম্যানলিকারের লক্ষ্য ফস্কে যাওয়া।
    অধিকাংশ গল্পই কয়েক দশক আগের। তখনও কান্হা-কিশলী বা বান্ধবগড়ের বিখ্যাত অভয়ারণ্য গড়ে ওঠেনি আর বন্যপ্রাণী শিকার নিয়ে এত কড়াকড়ি ছিল না।
    উনি এসেছেন টের পেলেই আমি কলেজের পড়ার বই খোলা ফেলে গুটি গুটি বাইরের ঘরে এসে চেয়ার টেনে নিয়ে বসে পড়তাম। বাবা দেখেও দেখতেন না আর মার কড়া চোখের দিকে আমি তাকাতাম না।
    কিন্তু খারাপ লাগত একটা জিনিস। উনি স্ত্র্রীকে ডাকতেন 'কালা' বলে।
    আমি ভাবতাম জেঠিমা বোধহয় কালো। বাড়ি থেকে বিশেষ বেরোন না। মা নেমন্তন্ন করলে একবার এলেন।
    আরে! উনি তো টকটকে ফর্সা,বেশ ব্যক্তিত্বসম্পন্না; হুগলী জেলার বনেদি পরিবারের মেয়ে।বেশ ।
    পরে বুঝলাম জেঠিমা কানে কম শোনেন। তাই জেঠু হরদম ওঁকে নিয়ে তামাশা করেন।
    -- আজকে একটা ব্যাপার হয়েছে। কালা ধান শুনতে কান শোনে। কিছুতেই কানে যন্তরটা লাগাবে না। ফলে আজ--।
    এইসব।
    ওঁদের দুই ছেলে একমেয়ে বাবা-মার টকটকে রং ও হাইট পেয়েছে। বড়ছেলেকে গ্র্যাজুয়েট হতেই চাকরিতে লাগিয়ে দিয়েছেন। মেয়ের বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে।

    এমন সময় নকশাল আন্দোলনের ঢেউ মধ্যপ্রদেশেও এসে পৌঁছল। একদিন স্থানীয় হিন্দি দৈনিকের প্রথম পাতায় আমাদের শহরের পাঁচজন কর্মচারিকে ভোররাতে গ্রেফতার করার খবর বেরোল। শহরে তুমুল হৈ-চৈ। ওরা নাকি তত নিরীহ নয়। একজন বাইরের নেতাগোছের লোকও নাকি ধরা পড়েছে।

    'গোপন রাতে অচলগড়ে নফর যারে এনেছে ধরে
    বন্দী তিনি আমার ঘরে শিরোহীপতি সুলতান'।
  • ranjan roy | 24.96.55.135 | ০৬ মে ২০১৫ ১৪:৫৫678015
  • বাবা সন্ধ্যেবেলায় অফিস থেকে ফিরে জানালেন যে ওই অপারেশনটি নাকি ভটচাজ্জি জ্যেঠুর ব্রেন-চাইল্ড!
    রোববারের দিন জ্যেঠু এলে যথারীতি আমিও বাইরের ঘরে হাজির। অ্যান্টি-নকশাল অপারেশনের গল্প শুনবো। কিন্তু বাবা একটু কড়া সুরে বললেন-- যাও, ও ঘরে গিয়ে পড়তে বস। সামনে পার্ট ওয়ান পরীক্ষা না?
    পা টেনে টেনে ফিরে গেলাম বটে কিন্তু পড়াতে মন বসে কই! দরজাটা খোলাই রেখেছিলাম, পর্দাটা ফেলে দিয়ে তার আড়ালে কান খাড়া করে দাঁড়িয়ে পড়লাম। বললে পেত্যয় যাবেন না, গোটা জীবনে ওই একবারই আড়ি পেতেছি।

    -- কী বলব ভাই! এই সব ছেলেছোকরাগুলো যেন বিপ্লব বিপ্লব খেলা পেয়েছে। পুলিশের সঙ্গে মাজাখি! হে পুলিশ তোর জলকে নেমেছি ?
    -- হয়েছেটা কী ?
    -- কী আর হবে? ওই প্রবীর সমাদ্দার! যদি আগুন নিয়ে খেলবি তো বিয়ে করতে গেলি কেন? গত মাসে?
    -- সে কী?
    -- হ্যাঁ, ভাল ঘরের মেয়ে মশায়। বয়েস প্রায় আমার মেয়ের মতই।ভোর চারটেয় যখন দরজা ভেঙে ঢুকলাম তক্ষুণি উল্টো পায়ে বেরিয়ে আসতে হল। নতুন বিয়ে,-- স্বামী স্ত্রী যেভাবে শুয়েছিল--বুঝলেন কি না! ওকে হাতকড়া লাগিয়ে গাড়িতে তুলতে কালঘাম ছুটে গেল।
    আর আমি বাঙালী বুঝতে পেরে মেয়েটি আমার পা জড়িয়ে ধরল। সে কি কান্না মশাই! কাকু, ওকে ছেড়ে দিন। ও সব ছেড়ে দেবে। আমি ঠিক বুঝিয়ে সুজিয়ে নেব।আর কক্ষণো জদি ওসব রেইড এ যাই!
  • ঐশিক | 24.140.33.186 | ০৬ মে ২০১৫ ১৫:০৩678016
  • রঞ্জনদা পড়ে ফেললাম, এর পর ?????
  • ranjan roy | 24.99.27.149 | ০৬ মে ২০১৫ ১৬:০৬677980
  • কেটে গেছে আরও বছর ছয়। আমি কলেজ পেরিয়ে চাকরি সূত্রে অন্য জেলায়। মাসের গোড়ায় মাইনে পেয়ে একবার বাড়ি আসি। সংসারের দায়িত্ব একটু একটু করে আমার কাঁধে চেপে বসছে। বাবা আগামী বছর রিটায়ার করবেন।
    জেঠুর সঙ্গে কালেভদ্রে দেখা হয়।
    উনি রিটায়ার করেছেন তিন বছর আগে। হ্যাঁ, মেয়ে এবং বড় ছেলের বিয়ে দিয়েছেন, ছোটটি এখনও নিজের পায়ে দাঁড়ায় নি। জ্যেঠিমা বাতে শয্যাগত। কিন্তু জেঠুর কথা ওঠায় মা একটু মুখ বেঁকালেন।
    -- জানিস, প্রত্যেক মাসে তোর বাবার থেকে টাকা নেয়, আমাকে লুকিয়ে।
    বাবা অপ্রস্তুত।
    --আহা, সে তো ধার নেন। হাত হাওলাত।
    -- বাজে কথা বল না। ধার? কোন দিন একপয়সা ফেরত দিয়েছেন? বরাবর অমন ইল্লুতে স্বভাব। পরের পয়সায় মদ গেলা।
    --- কেন বাবা? উনি তো পুলিশ অফিসার্স মেসে মদ খেতে যেতেন।
    বাবা অন্যদিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে বল্লেন-- কী জানিস, সব দিন সমান যায় না তো। এখন উনি কেন্দ্রীয় সরকারের সেই কাজটা থেকেও ছুটি পেয়েছেন। সবকিছুরই একটা বয়েস আছে তো! এখন কেউ ওঁকে কোন তদন্তে ডাকে না। ওঁর সময়ের অফিসাররাও হয় রিটায়ার্ড, নয় বদলি হয়ে গিয়েছে। এখনকার ছোকরারা কেউ 'দাদা ভট্টাচারি' বললে চিনতে পারে না। তাই উনি পুলিশ অফিসার্স মেসেও পার্সোনা নন গ্রেটা!
    -- কিন্তু বড় ছেলে তো চাকরি করে।আর ওঁর পেনশন ?
    -- সে হিসেবে কোন বড় দায়িত্ব নেই বটে, কিন্তু সেভিংস বলতে বিশেষ কিছুই নেই। আমাদের কোম্পানিতে পেনশন নেই। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সামান্য মাসোহারা পান। অসুস্থ স্ত্রীর জন্যে নার্স রাখতে হয়েছে।আর সারাজীবনের মদের নেশা কি এককথায় ছাড়া যায়? না ওর জন্যে ছেলের কাছে হাত পাতা যায়?
  • de | 24.139.119.173 | ০৬ মে ২০১৫ ১৬:২৭677981
  • পড়ছি!
  • ranjan roy | 24.99.27.149 | ০৬ মে ২০১৫ ১৬:২৮677982
  • সেদিনটা ছিল রোববার।
    আমি বাজার করে গলদঘর্ম হয়ে হাতের ব্যাগ মাত্র নামিয়েছি; মা মাছের আর তরকারির থলে আলাদা করে গুছিয়ে রাখছেন-- এমন সময় জ্যেঠুর আবির্ভাব।
    আবির্ভাবই বটে।
    কচি কলাপাতা রঙের বাফতার শার্ট, মাখন জিনের সাদা প্যান্ট। টাকমাথায় সামান্য চুলগুলো বেশ কায়দা করে ছাঁটা।
    -- কী ভায়া! তৈরি তো? আর দু'ঘন্টার মধ্যে জীপ এসে পড়বে।
    আমরা অবাক , বাবা মাথা চুলকোচ্ছেন।
    মা মুখ খুললেন,-- কী ব্যাপার দাদা? কোথায় যাচ্ছেন?
    -- সে কি বৌদি! ও আপনাকে কিছু বলে নি? আপনার কত্তাটিকে দিন তিনেকের জন্যে বোম্বাই নিয়ে যাচ্ছি। উড়োজাহাজে করে। সব খরচ আমার, যাতায়াত-থাকা-খাওয়া সব।
    কিছুই বুঝলাম না। বাবার দিকে মা তাকাতেই বাবা গড়গড় করে তোতাপাখির মত বলে চললেন।
    -- ইংল্যান্ড থেকে ওঁর পুরনো বন্ধু এসেছেন, উঠেছেন বোম্বাইয়ের হোটেলে। উনি দাদার সঙ্গে দেখা করতেই সাতসমুদ্দূর পাড়ি দিয়ে এসেছেন। দাদার বয়স হয়েছে দেখে সঙ্গী হিসেবে আমার জন্যেও প্লেনের টিকিট পাঠিয়ে দিয়েছেন। আমি তিনদিনের ক্যাজুয়াল লীভ নিয়েছি।
    মার অপ্রসন্ন মুখ।
    --সব বুঝলাম। তলে তলে সব গোছানো হয়েছে। কিন্তু আমাকে কিছু বলা হয় নি কেন?
    বাবা বাগানের গেটের বোগেনভিলিয়ার পাতা গুণছেন।
    হা-হা করে হেসে উঠলেন জেঠু।
    -- ওর দোষ নেই বৌদি।আমার ওই বিলিতি বন্ধুটি একজন বুড়ি মেমসায়েব। ভায়া একটু বেম্মজ্ঞানী টাইপের তো,বলতে লজ্জা পেয়েছে।

    মায়ের মুখের মেঘ কাটল না।
  • ranjan roy | 24.99.27.149 | ০৬ মে ২০১৫ ১৬:৪৬677983
  • পরের রোববারে আমি আবার হাজির।
    জেঠুর বুড়ি মেমসায়েবের গল্প শুনবো। ইংল্যান্ড থেকে কেন এসেছিলেন? জেঠুকে কিছু সম্পত্তি-টম্পত্তি দিতে চান নাকি? আমাদের চোখে তো সায়েব-মেমসায়েব সবই বিরাট পয়সাওলা।
    আমি কথা তুলতেই মা মুখ ঝামটা দিয়ে উঠলেন।
    -- ও আবার শোনার মত নাকি? যত সব ইল্লুতে হাঘরে স্বভাব!
    বাবা নতুন সিগ্রেট খেতে শেখা ছেলেদের মত ছাদের দিকে ধোঁয়ার রিং ছাড়ছেন?

    বিকেলবেলা । বাবা ছেলে চা নিয়ে বসেছি।মা সেজেগুজে মজুমদার কাকিমার বাড়ি হয়ে আসছি বলে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বাবার দিকে তাকিয়ে অর্থপূর্ণ ঢঙে মাথা নাড়লেন। বাবার চোখের পাতা কাঁপল, স্পষ্ট দেখলাম।
    -- শোন, দেখলাম সেই বিলিতি মেমসায়েব মহিলাকে। ন্যান্সি ইভান্স। একমাথা সাদা চুল। চোখে চশমা। অত্যন্ত ডিগনিফায়েড চেহারা। আলাপ পরিচয়ের পর আমি বললাম-- আপনারা পুরনো বন্ধু, কথা বলুন। কত কথা জমে আছে। আমি একটু কোলাবার দিকে আমার এক আত্মীয়ের বাড়িতে একটু দেখা করে আসি।
    ইচ্ছে করে সন্ধ্যে নাগাদ ফিরলাম। রাত্তিরের প্লেন।
    ফিরে দেখি তোর জেঠু লাউঞ্জে বসে আছেন। মেমসায়েবের রুমের দরজা বন্ধ।
    আমরা ফিরে এলাম।
    বাকিটা আমার ফেরার পথে ভটচাজদার মুখ থেকে শোনা। তোকে যা বলছি শুনে ভুলে যাস কিন্তু।
  • d | 144.159.168.72 | ০৬ মে ২০১৫ ১৬:৫৬677984
  • এই খেয়েছে! তারপর?
  • ranjan roy | 24.99.27.149 | ০৬ মে ২০১৫ ১৭:১২677985
  • বঙ্গদেশের নৈহাটি-ভট্টপল্লি এলাকার বৈদিক ব্রাহ্মণ কুলের বিশিষ্ট পন্ডিত বংশে জন্মানো দিব্যজ্যোতি ভট্টাচার্যের বিদ্যাস্থানে বিরাট ঢ্যাঁড়া কেটে রেখেছিলেন।
    ছোটবেলা থেকেই গঙ্গার পাড়ে জেলেবস্তির ডানপিটে ছেলেদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো, নৌকো খুলে নিয়ে ভেসে পড়া, মাছ চুরি, মারপিট করে পোক্ত দেবুর স্কুলে যেতে ইচ্ছে করে না।
  • ranjan roy | 24.99.224.102 | ০৬ মে ২০১৫ ১৮:১৫677986
  • *' বিধাতা' শব্দটি প্রথম বাক্যের গোড়ায় বসবে।
  • ranjan roy | 24.99.224.102 | ০৬ মে ২০১৫ ১৮:১৬677987
  • ধেত্তেরি! 'বিধাতা' বিরাট শব্দের আগে বসবে।
  • ranjan roy | 24.99.224.102 | ০৬ মে ২০১৫ ১৮:৩৫677988
  • পিতৃদেব সত্যধন ভট্টাচার্যি বিশুদ্ধ গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকার অনুমোদিত পন্ডিতমন্ডলীর একজন। উনি পূর্বজন্মের কর্মফলে বিশ্বাসী। ছেলেকে বকাঝকা না করে তার হস্তরেখা অভিনিবেশ সহকারে দেখে বল্লেন- নিয়তি কেন বাধ্যতে! এ আমাদের মত টুলো পন্ডিত হবে না। একে জীবন নিজের হাতে গড়ে পিটে নেবে।
    সে যা হোক , এই অবাধ্য একবগ্গা অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় দিব্যজ্যোতি বা দেবু ভটচাজ প্রথম সুযোগেই বাড়ি থেকে পালালেন। কোলকাতা-খিদিরপুর ডকে মালজাহাজের খালাসী; শেষে ভেসে পড়লেন কোন গোরাজাহাজে।
    ভাগ্যের থাপ্পড় খেয়ে লিভারপুলের রাস্তায় ঠান্ডায় অচেতন হয়ে পড়ে থাকা কপর্দকহীন দেবুকে হাসপাতালে দিয়ে বাঁচিয়ে তুললেন এক দয়াবতী।ন্যান্সি ইভান্স। বয়সে বছর তিন বা আরো একটু বড়। মধ্যবিত্ত। সন্তানহীন ডিভোর্সি।
    স্নেহে ভালোবাসায় বুনো পশুও বশ মানে।
    এই নারীকে ফ্রেন্ড ফিলজফার গাইড হিসেবে পেয়ে দেবুর জীবন বদলে গেল।
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে।
    জর্জ টেলিগ্রাফ বা অমনি কোন প্রফেশনাল ইনস্টিট্যুট থেকে টেলিকম ডিপ্লোমা প্রাপ্ত ডেভ ভট্টার সহজেই বৃটিশ আর্মির টেকনিক্যাল কোরে চাকরি পেলেন। পোস্টিং মধ্যপ্রাচ্যে। মরুভূমির যুদ্ধে রোমেলের মহড়া নেওয়া বৃটিশ বাহিনীর অধীনে। কীভাবে ওকে বৃটিশ ইনটেলিজেন্স গুপ্তচরবৃত্তিতে নিযুক্ত করল, প্রশিক্ষণ দিল-- সে গল্প কোনদিনই জানা যাবে না।
  • Manish | 127.200.87.13 | ০৬ মে ২০১৫ ১৮:৪৬677989
  • তারপার
  • ranjan roy | 24.99.224.102 | ০৬ মে ২০১৫ ১৯:২৪677991
  • যুদ্ধ শেষ।
    দিব্যজ্যোতি ফিরে এলেন ভারতে।দেশ স্বাধীন হয়েছে। অনেক কিছু বদলে গেছে। নৈহাটি রয়ে গেছে বঙ্কিমের 'রাজমোহনস্‌ ওয়াইফ' এর যুগেই।
    পিতা গত হয়েছেন। ভাটপাড়ার ব্রাহ্মণ সমাজে ম্লেচ্ছ আচার-বিচারে অভ্যস্ত দেবুর স্থান প্রান্তিক। আঁতে ঘা লাগল।
    নৈহাটির সঙ্গে সব সম্পর্ক চুকিয়ে দেবু এলেন মধ্যপ্রদেশের ওই পাবলিক সেক্টর কোম্পানির টেলিকম ইঞ্জিনিয়ারের চাকরিতে।
    কিন্তু লিভারপুলের একটি অধ্যায় সবার কাছে গোপন রয়ে গেল।

    ন্যান্সি সবই জানতেন। দেবুর নিজের দেশে ফিরে যাওয়া, সংসার পেতে বসা এর মধ্যে কোন অসংগতি দেখেন নি উনি। মেনে নিয়েছেন বিধাতার বিধান। কিন্তু খবর রাখতেন। সময় অসময়ে অর্থসাহায্যও করেছেন গোপনে।
    আজ জীবন সায়াহ্নে এসে ডেকে পাঠালেন ডেভ ভট্টারকে , বোম্বাইয়ের এক হোটেলে, প্লেনের টিকিট ও আনুষঙ্গিক খরচা সমেত।দেবু যেন কুলীন ব্রাহ্মণ।
    -- ডেভ, তোমার চেহারায় একটা প্রশান্তি, একটা পীস দেখতে পাচ্ছি। সব কিছুই পেয়েছ।
    -- হ্যাঁ, ন্যান্সি। বাই দ্য গ্রেস অফ গড।
    -- বেশ, আমার কথাটা মনে আছে তো? যে কথা দিয়েছিলে?
    দেবু চুপ।
    -- ভুলে গেলে? তোমার ছেলে মেয়েদের বিয়ে থা দিয়ে নিজের পায়ে দাঁড় করিয়ে আমার সঙ্গে যাবে? কথা দিয়েছিলে না?
    -- হ্যাঁ, দিয়েছিলাম।
    -- সেসব টাস্ক তো কম্প্লিট, Isn't it?
    -- ও ইয়েস, ন্যান্সি, বাই দ্য গ্রেস অফ গড।
    -- তবে চল আমার সঙ্গে, বাকি জীবনটা বুড়োবুড়ি একসঙ্গে কাটাব।
    -- তা হয় না ন্যান্সি।
    -- কেন? কেন হয় না? আমি যে সারাজীবন অপেক্ষায় আছি।
    -- তোমাকে বোঝাতে পারব না, হয় না-ব্যস্‌!
    - ইজ ইট? সো? আচ্ছা, এক কাজ কর। তোমার ছোট ছেলেটিকে আমায় দাও। ওকে তেমনি করে দাঁড় করিয়ে দেব, যেমন কয়েক যুগ আগে করেছিলাম।
    -- তাও হয় না।
    -- হয় না? হয় না ডেভ?
    - নো নো। ইট ইজ ইম্পসিবল। আই কান্ট ইম্পোজ ইট অন মাই সন।
    -- বেশ, লেট দ্য ম্যাটার এন্ড হিয়র। এই আংটিটা ফেরত নাও।

    পরের দিন বোম্বাইয়ের সব ইংরেজি পত্রিকায় ছোট করে একটি খবর বেরোল।
    গতকাল মিডল্যান্ড হোটেলের একটি সুইটে এক বয়স্কা বিদেশি মহিলাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পাসপোর্ট অনুযায়ী তিনি লিভারপুল নিবাসী ন্যান্সি ইভান্স। মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাক বলে ডাক্তারেরা মনে করছেন।
    দেহটি বৃটিশ হাই কমিশনকে সঁপে দেওয়া হয়েছে।
    (সমাপ্ত)
  • Phaltu | 118.171.130.168 | ০৭ মে ২০১৫ ২০:২৩677992
  • হুমমম।
    বেশ।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ মে ২০১৫ ০১:০৩677993
  • পরে মন দিয়ে পড়ব।
  • ranjan roy | 24.98.65.83 | ১৫ মে ২০১৫ ০৫:১৫677994
  • গল্প-২

    টাইটানিকের খোঁজে
    =============
    (১)
    টাইটানিকরে খুঁজতি যাবা?
    কোন টাইটানিক, হুই জাহাজ?
    হ', জাহাজই বটে। যে সে না, এক বিশাল জাহাজ, যার ভিতরে আশ্রয় লয় হাজার নারীপুরুষ। তারা ভবসাগর পাড়ি দিবে।
    ক্যানে?
    তারা বিশ্বাস করে ওই জাহাজ ডোবে না, ডুবতি পারে না।
    তারপর ?
    তারপর একদিন টাইটানিক ডুবে যায়।
    কোথায় ডোবে?
    কোতায় ডোবে! আরে ও কি তোর আমার মত খালে বিলে নদীনালায় ডুববে? ও ডোবে অতল এক মহাসাগরে।
    ক্যানে?
    এক গোপন হিমশৈলের ঘায়ে তলা ফুটো হয়ে।
    কী যে বল কাকা! সে গল্প তো জানি। সিনিমায় দেখিচি। রোজ বলে একটা রাজার ঘরের মেয়ে আর জ্যাক বলে একটা মজুর ছেলের প্রেম-পীরিতির গল্প। অমন ঢের ঢের গল্প জানি। ওর আবার খোঁজাখুঁজির কি আছে?
    বেশ, আমি এই কুলুপ আঁটলেম।
    রাগ কর না কাকা! আমি শুনব। ওই আঁটকুড়োর ব্যাটার কথায় কি্ছু মনে কর না। ওর বৌ চলে গেছে ক্ষেতের ছোকরা মুনিষের সঙ্গে । গেছে তো গেছে, তিনবছরের বাচ্চাটাকেও নিয়ে গেছে। ওর এখন প্রেম-পীরিতির কথা শুনলেই মাথায় আগুন জ্বলে।
    না, না। আমি ওই জ্যাক আর রোজের ভালবাসার গল্প বলছিলাম না। সে তো সবাই জানে। আমি বলছিলাম টাইটানিকের কথা। সেই বিশাল জাহাজ, যার সম্বন্ধে সবার ভরসা ছিল যে ডুববে না।
    সে গল্প তো আরও পুরনো, বাসি ঠোঙা হয়ে গেছে।
    দূর! আমি যে টাইটানিকের কথা বলছিনু সে হল মানুষ, গায়ে গতরে বিশাল নয়। বুকটা, বুকটা তার বিশাল। চাঁদপানা মুখ। চোখে স্বপ্ন ভাসে। কিন্তু সে আমাদের মইধ্যে টাইটানিক। তার বুকে আশ্রয় পায় অনেক নারীপুরুষ।
    সে আজ কোথায়?
    সব টাইটানিক যেখানে যায়, তলিয়ে যায়, সমুদ্রে। অনন্ত দুঃখের সমুদ্রে।
    তারে ঘায়ল করল কিসে? কোন চোরা হিমশৈলে?
    সে চোরার নাম ভালবাসা। আমার টাইটানিক মইরেছে ভালবাসায়।
    তার গল্প বল, শুনব।
    আমার ফালতু সময় নাই। তারে খুঁজতে যেতি হবে। যেতি যেতি গল্প হবী। খপর এসেছে তারও বেশি সময় নাই। তাই এত তাড়া।
    কোথায় যাব?
    সুন্দরবনে, জায়গাটার নাম হিঙ্গলগঞ্জ। এর বেশি জানি না। আমি চললেম।
    খালি আমরা তিনজন, ব্যস?
    ক্যানে? আমরাই ব্রহ্মা-বিষ্ণূ-মহেশ্বর। এই গানটা শোনঃ
    " সেই বাগানের তিনজন মালী,
    একজন উড়ে, এক্জন খোট্টা, একজন বাঙালী।
    তারা তিনজনেতে যতন করে গাছ উঠে তাই আসমানে,
    কৃষ্ণ অনুরাগের বাগানে।"
  • ranjan roy | 192.69.134.43 | ১৬ মে ২০১৫ ০৭:৩২677995
  • (২)
    দক্ষিণ কোলকাতার একটি মিউজিক স্কুলের হলঘর। আজ রোববার। তেড়ে রিহার্সাল চলছে। হলের মাঝখানের স্পেসটায় নাচছে জনা সাতেক ছেলে ও তিনটি মেয়ে। মিউজিক। আলোর স্ক্রিপ্ট হাতে একটি রোগামত ছেলে। শার্ট খুলে রেখে শুধু গেঞ্জি আর ট্রাউজার্স।ওর চোখে একাগ্রতা, ওর স্বরে উৎকন্ঠা। পাশের সহকারী ছেলেটিকে ফিসফিস করে কিসব বলে চলেছে। আর সে বাধ্য ছাত্রের মত একটা বাঁধানো এক্সারসাইজ খাতায় টুকে রাখছে।
    চাপ তো সবারই।
    তিনদিন পরে পাবলিক হলে শো, রীতিমত টিকিট বিক্রি করে। প্রচারপত্র ছাপানো এবং বিলি করা শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু তাতে লেখা আছে আলোকসম্পাতে জয় সেন।
    জয় জানে যে প্রবাদপ্রতিম তাপস সেনের ছেলে বলে ওর কাছে সবাই অনেক কিছু প্রত্যাশা করে। এটা ঠিক যে ও বাবার মতই থিয়েটারকে ঘর বানাতে চায়। আলোর মায়াবী হাতছানি তাকেও জাদু করেছে। কিন্তু এই মুহুর্তে ওর চাপ হল কাজটা পরিচালক টাইটানিকের পছন্দ হবে তো! এই দেশি ব্যালে গোছের ব্যাপারটায় ও উত্তেজিত। একেবারে নতুন রকম।
    ও কোন পয়সা নিচ্ছে না। আসলে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত কেউই পয়্সা নেবে না। সবার ভরসা টাইটানিকের ওপর। টাইটানিককে ভাসাতে হবে। টাইটানিক ভাসলে ওরা সবাই ভাসবে!
    --- দাঁড়াও কাকা, দাঁড়াও। টুকুন জিরিয়ে নাও আর বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া দাও। কি বল্লে? জয় সেন? যিনি কয়েকমাস আগে স্বগ্গে গেছেন? তেনাকে এর মধ্যে আনলে কেন? মিনিমাগনা কাজ করবে জয়বাবু? পাবলিক স্টেজে? আরে ঘোড়া ঘাসের সঙ্গে দোস্তি করলে খাবে কী?
    -- না, আমার ভীমরতি ধরে নি। গপ্পোটা সত্তরের দশকের প্রথম দিকের। তখনও জয় এত বড় শিল্পী হয় নি। আর ও ভালবাসত টাইটানিককে, বাকি সবার মত ।
    -- উঃ, যেথা আছে শুধু ভালবাসাবাসি সেথা যেতে প্রাণ চায় মা।
    --- এই ফুট কাটিস না তো! তুমি বল কাকা। কিন্তু তোমার তিনি কোথায়? সেই টাইটানিক? যাকে সবাই ভরসা করে, ভক্তিচ্ছেদ্দা করে? যার মন পেতে চাইছে আমাদের জয় সেন?
    --- ওই তো! হলের এক কোণে একটা সতরঞ্চির ওপর কালো প্যান্ট পরে আদুল গায়ে ঝাঁকড়াচুলো যে ছেলেটা উবু হয়ে সাঁতার কাটার ভঙ্গিতে শুয়ে নাচটাকে দেখছে।
    -- হরি হরি! ওই যাত্রাদলের টেরিকাটা বখা ছোকরার মত দেখতে ওটা? আমি তো ভাবছিলাম একটু পরে আমাদের চা দিয়ে যেতে বলব কি না !
    --- ফের! তা এই টাইটানিক দ্যাবতাটি এখানে করছেন কী? মানে উনি করেন কী?
    --- ও পেট চালায় জীবন বীমা অফিসে ক্লার্কের কাজ করে। আর ও হল একাধারে নাটকখেপা আর নাচের কোরিওগ্রাফার।
    --- বড় কঠিন কঠিন শব্দ বল। আমাদের হিসেবে ও হল যাত্রাদলের মোশন মাস্টার আর নাচের মাস্টার। কিন্তু ও এখানে পৌঁছল কী করে সেটা বল। মানে টাইটানিক তো একদিনে তৈরি হয় নি। অনেক কাঠকুটো, দড়িদড়া, লোহালক্কড় লেগেছে। সব রকম মিস্তিরি লেগেছে। তাই বলছিলাম কি--।
  • roma | 184.93.134.193 | ১৬ মে ২০১৫ ০৯:১২677996
  • কিকরে লিখব ?
  • AS | 125.187.59.133 | ১৬ মে ২০১৫ ১৫:০৪677997
  • কেন এই তিনটে ক্থা যে ভাবে লিখলেন
  • ranjan roy | 192.69.134.43 | ১৭ মে ২০১৫ ০০:২২677998
  • হ্যাঁ, টাইটানিক একদিনে তৈরি হয় নি, হতে পারে না। আমাদের টাইটানিকের নাম সুপ্রতীক, মা রেখেছিলেন সাধ করে।
    দক্ষিণ কোলকাতার শহরতলীর উদ্বাস্তু কলোনিতে বড় হয়ে ওঠা সুপ্রতীক আরো দশটা ছেলের মতই স্কুলে কবিতা আবৃত্তি, নাটক এসবে অংশগ্রহণ করত, তবে বিশেষ দাগ কাটতে পারে নি।
    পরিবর্তন এল ১৪ বছর বয়সে। ওর গলার স্বর ভাঙল না, বরং আওয়াজে এল এক ধরণের চড়া পর্দা, একটু মেয়েলি ধাঁচের। আর চোখ হয়ে উঠল ঘন কালো। শুধু পাশের বাড়ির নয়, পাড়ার অন্য কিশোরী মেয়ের দল ওকে অন্য চোখে দেখতে লাগল। বন্ধুদের মধ্যেও তার উপস্থিতির সহজ স্বীকৃতি। এ নিয়ে ও খুব ভাবার সময় পায় নি। কারণ ও সচেতন হয়ে উঠেছে আর একটি ব্যাপারে। ওর শরীরে জেগেছে এক আশ্চর্য স্পন্দন।কোথাও গানের ছন্দে বা পথে ঘাটে ব্যান্ড বা তাসাপার্টির বাজনা শুনলেই ওর অবস্থা হয় ছন্দে ছন্দে দুলি আনন্দে। শরীর দোলে, পা দোলে , হাত বেঁকে ওঠে আশ্চর্য সব মুদ্রায়, ওর অজান্তে। ও অবাক হয়, মুগ্ধ হয়। আর নিজের ঘরে একটা বড় সড় আয়না এনে দরজা বন্ধ করে নিজেই মেতে ওঠে।
    তখন দূরদর্শন শব্দটি জন্মায় নি। কোলকাতার ঘরে ঘরে ছাদে দেখা যায় রেডিওর এরিয়েলের জাল।
    কিন্তু পাড়ায় পাড়ায় গজিয়েছে নাচ ও গানের স্কুল। ও দাঁড়িয়ে পড়ে পাড়ার সঙ্গীত বিদ্যালয়ের দোরগোড়ায়, উৎকর্ণ হয়ে শোনে নাচের বোল। উঁকি ঝুকি মেরে দেখার চেষ্টা করে মুদ্রাগুলো, মনে মনে মিলিয়ে নেয়।
    বন্ধুদের দরবারে চালু ফিল্মি গান বা রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে নেচে দেখিয়ে বাহবা কুড়োয়। পাড়ার ফাংশানে দেখা নটীর পূজার " নম হে নম, ক্ষম হে ক্ষম' অবিকল অভিনয় করে ওদের দেখায়। একটি ছেলে ওকে চেপে ধরে চুমো খায়; ও লজ্জায় গুটিয়ে যায়।
    ইতিমধ্যেই পার্কসার্কাসের কোন মঞ্চে ও দেখেছে চিত্রেশ দাসের কত্থক।ওর অপরাধবোধ কেটে যায়। না, নাচে ছেলে মেয়ে সবার সমান অধিকার, গানের মতই। উদয়শঙ্কর কোন ব্যতিক্রমী পুরুষ নন।
    এবার ওর সঙ্গীত বিদ্যালয়ের পাশে ঘোরাফেরা ও উঁকিঝুকির পালা বেড়ে যায়। আর একদিন এ নিয়ে বিশাল বাওয়াল হয়। গানের স্কুলের কিছু মেয়েদের কম্প্লেনের ফলশ্রুতিতে জনা দুই শিক্ষক ও দারোয়ান তক্কে তক্কে থেকে ওকে হাতে নাতে ধরে ফেলে। টানতে টানতে নিয়ে যায় প্রিন্সিপাল দিদিমণির ঘরে।
    ,মেয়েদের স্কুলের আড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ও উঁকিঝুঁকি মারার অভিযোগ অস্বীকার করার উপায় নেই। ও মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।
    শেষে যখন ওর বাড়িতে গিয়ে ওর বদমাইশির খতিয়ান পেশ করার কথা উঠল তখন ও উশখুশ করতে লাগল।
    -- কী? তোমার লজ্জা করে না? ভাল ঘরের ছেলের একী প্রবৃত্তি? কেন এই সব করে বেড়াও? এখানকার ছাত্রীরা তোমার বোনের মত না? তোমার বোনের সঙ্গে কেউ এমন করলে?
    -- আমার -- আমার কোন --- খারাপ মতলব ছিল না। আমি-- আমি আসলে নাচ শিখতে চাই। সাহস পাচ্ছিলাম না।
    --- কী--ঈ-ঈ--ঈ!
    --হ্যাঁ, আমি একটু আধটু নাচতে পারি। মানে আমার ভাল লাগে। লজ্জাও করে। কিন্তু শিখতে চাই। আর কোথায় যাব?
    -- কী সব বলছ!
    ও তখন মরিয়া।
    -- দেখবেন? আমি খুব খারাপ নাচি না।
    "মম চিত্তে নিতিনৃত্যে--
    তা-তা-থৈ-থৈ"।
    মেয়েরা মুখ টিপে হাসে ওর অশিক্ষিত পটুত্বে, মাস্টারমশায়রা তাকিয়ে থাকেন। কিন্তু ও সফল হয়। মাসিক দশটাকা ফীসে ও ভর্তি হয়ে যায়।
    সেই প্রথম তার যুদ্ধে জেতা।
  • ranjan roy | 192.69.134.43 | ১৭ মে ২০১৫ ১০:২৫677999
  • ৩)
    গড়ে উঠছে টাইটানিক, আস্তে আস্তে আকার ধারণ করছে। এসে গেছে কিছু কাঠ, নাট-বল্টু, চেন, লোহালক্কড়। এক এক করে জুটছে নানান ধাঁচের নানান জাতের মিস্তিরিরা। প্রযুক্তিবিদ, নকশাবিদ। নকশার বদলও হচ্ছে। তবে মানতেই হবে, কাজ এগুচ্ছে। একটু এঁকে বেঁকে,, কখনও হোঁচট খেয়ে -- তা হোক গে'।
    সঙ্গীত বিদ্যালয়টির বার্ষিক উৎসবে শকুন্তলা নৃত্যনাট্যে রাজা দুষ্মন্তর নাচ অনেকের চোখে পড়ল। ঘটনাচক্রে সেদিন উপস্থিত ছিলেন যুগান্তর পত্রিকার কলা সমালোচক। ছোট রিপোর্ট, দুটো ছবি আর ছোট্ট ইন্টারভিউ। এই বা কম কি!
    ঠোঁট ফোলালো শকুন্তলা। ও তো স্কুলের মালিকের মেয়ে। উড়ে এসে জুড়ে বসা দুষ্মন্তর এতটা স্পেস নেওয়া!
    এর পর চিত্রাঙ্গদার অর্জুন, শ্যামার বজ্রসেন। এখন শুধু যুগান্তর নয়, অনেকগুলো দৈনিকে খবর, অনেক ম্যাগাজিনে ছবি।
    সুপ্রতীক ডাক পায়, দু-একটি বড় দল থেকে। তাতে নাচের করিওগ্রাফি করে দেওয়া বা নটের ভূমিকায় অভিনয়। কিন্তু ওর পা মাটিতে, চোখে হাওয়ায় ওড়ার স্বপ্ন।
    কিন্তু জীবন তো সরলরেখায় চলে না। মালিকের মেয়ে জিদ ধরেছে। ওকে তাড়িয়ে দাও। ও আসলে আমাদের বিদ্যায়তনের নাম ভাঙিয়ে খাচ্ছে। ওর কোন নিজস্ব এলেম নেই। মালিক বুঝলেন। সুপ্রতীককে ডাকলেন এবং কোন ঢাক ঢাক গুড় গুড় না করে বললেন যে ওঁর একমাত্র মেয়ে। সুপ্রতীকক পাত্র হিসেবে কর্তাগিন্নির অপছন্দ নয়। অর্থাৎ, ঘরজামাই হতে হবে।
    কিন্তু ওর মধ্যে যে আস্তে আস্তে মাথা তুলছে টাইটানিক। ও একদিন সমুদ্রে পাড়ি দেবে। টালিনালায় নৌকাবিহারে ওর রুচি নেই।
    ফলে সুপ্রতীককে সঙ্গীত বিদ্যায়তন ছাড়তে হয়। কিন্তু ছাড়ার মুখে ওর মুখে লেগে যায় ভুসো কালি। ও নাকি ঘরজামাই হবার লোভে মালিকের মেয়ে স্কুলের প্রাইমা ডোনাকে সিডিউস করার তালে ছিল!
  • | 213.99.211.18 | ১৮ মে ২০১৫ ১২:২৬678000
  • রঞ্জন দা, প্রথম গল্প টা পড়ছি। খুব ভালো লাগছে।
  • ranjan roy | 192.69.134.43 | ১৮ মে ২০১৫ ১৩:৫৯678002
  • থ্যান্কুস!!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন