এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • বেনামী | 24.99.195.175 | ০৩ জুলাই ২০১৫ ১৯:৩৮681143
  • ২০১২’তে গুরুচণ্ডালীর ‘অন্য যৌনতা’ বিভাগের একটি লেখার লেখিকা ‘বেনামী’ আর এই বেনামী-একই ব্যক্তি। মেইল না করে, গুরুচণ্ডালীর কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি নিয়ে, এখানেই তুলে দিলাম।
    বক্তব্য সম্পূর্ণ নিজস্ব।
    বানান ভুলের জন্য আগাম ক্ষমা প্রার্থী।
  • বেনামী | 24.99.195.175 | ০৩ জুলাই ২০১৫ ১৯:৩৯681154
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেকটি স্টেট সমকামী বিবাহ’কে আইনের মাধ্যমে স্বীকৃতি দিল। এ নিয়ে অনেক হৈ হৈ চলছে সারা ওয়েব দুনিয়ায়। কিন্তু অ্যামেরিকায় কি হচ্ছে না হচ্ছে তাতে আমাদের কী? এর আগেও অনেক দেশে, সমকামীরা নিজেদের মাটি পেয়েছে আর সেই মাটি রক্ষা করবার শক্তিও পেয়েছে। এত আলোচনা সেই সময় হয়নি যা ইদানীং চলছে। এমনকি, এই মরশুমে যারা সমকামিতার বা সমকামিদের অধিকারের স্বপক্ষে/বিপক্ষে চিৎকার করে দিনরাত এক করে যাচ্ছেন, তারা ঐ দেশ গুলোর ভিতর কটার নাম বলতে পারবেন! একটা সাম্রাজ্যবাদী দেশ, যে নিজের স্বার্থে অন্য দেশের নাগরিকদের মানবাধিকার দূর, বাঁচার অধিকারের বাবা-মা-মাসি-কাকা এক করে চলেছে, তারা নিজেদের জন্য কী আইন প্রণয়ন করলো বা না করলো তা নিয়ে কিছুটা আলোচনা চললেও বেশী হ্যাজানো মানায় না। হু হু বাওয়া, দেশটা অ্যামেরিকা। কত শ্রেণী সংগ্রামীরা গ্রিন কার্ড পাওয়া ছেলে পিলেদের জন্য কত মন্দির মসজিদের উঠনে কপাল ঠুকছেন! ছোট বেলায় দেখেছি যারা দেওয়ালে দেওয়ালে কাস্তে হাতুড়ি তারা এঁকে, আধ-পেট খেয়ে দিনরাত শুকনো গলায় অ্যামেরিকার গুষ্টির ষষ্টি পূজো করছে, তারা সারা পাড়ায় গরম গরম রসগোল্লা বিলিয়েছেন ছেলের অ্যামেরিকার ভিসা পাওয়ার খুশীতে। ইউ ক্যান লাভ অ্যামেরিকা, ইউ ক্যান হেট অ্যামেরিকা বাট, ইউ ক্যান্ট ইগ্নোর অ্যামেরিকা। আর সমকামিতার টপিক তো লালু বাবুর ভাষায় শীতের সকালে হট কচুরি।
    না, আলোচনা হওয়া ভালো। তা সে অ্যামেরিকার আইন হোক কিংবা রাশিয়ার। অন্তত আর পাঁচটা লোকের কাছে ‘সমকামী’ শব্দটা পৌঁছাবে।

    আমি গুরুচণ্ডালীর একটিভ সদস্য নোই, বলা ভালো নীরব পাঠক একজন। আমার যত ভাট তা ছিল মুখবই’তে, এখন সেখানেও বন্ধ। নীরব থেকে গুরুর সাথে আমার পরিচয় প্রায় পাঁচ বছর। তবে এই নীরবতার মধ্যে দিয়ে বেশ একটা চমৎকার পরিবর্তন ঘটেছিল আমার ভিতর। এক হোমোসেক্সুয়াল হোমোফবিক নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে শিখেছিল।
    ‘হোমোসেক্সুয়াল হোমোফবিক’ কথাটা কেমন হ-য-ব-র-ল টাইপের! কিন্তু আমি এমন একজন ‘হোমোসেক্সুয়াল যে এককালে হোমোফবিক ছিল। নিজেকে অস্বীকার করা, ঘেন্না করা আর অন্যদের সাথে অহরহর নিজেকে মেপে চলা। ছোটবেলায় বেশ ফরশা হওয়ার সখ ছিল আমার। আমাদের সমাজে ফরশাদের কতটা কদর আর আদর আছে তা এই একবিংশ শতাব্দীতেও নতুন করে বলার দরকার নেই। তাই এই কালো রং দূর করতে গিয়ে হলুদবাটা থেকে ফেয়ার এন্ড লাভ্লি হোক কিংবা সকালবেলা খালি পেটে মধু খেয়ে ভ্যারাইটি রকমের সাবান ঘষা, সব কিছুই ট্রাই করেছি। আর এই হোমোসেক্সুয়ালিটি দূর করতে গিয়ে দুম করে কারো গলায় ঝুলে পড়ে নিজের পা’য়ে আর ‘তার’ গলায় কুড়ুলটা মারি নি, এই রক্ষে। একটা ওপেন ফোরাম, যেখানে ‘চুপ... এ সব কথা মুখে আনতি নাই’ ব্যাপার নিয়ে কোনও রাখ-ঢাক না করে বাংলায় সহজ সরল ভাষায় ডিবেট চলছে দিনরাত্রি। সময় নিয়ে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে যুক্তি-তক্ক-গপ্পের মধ্যে দিয়ে ধাপে ধাপে নিজেকে বুঝেছিলাম। বুঝেছিলাম, না ভাই কোনও গণ্ডগোল নেই। আমি শুধু মাইনরিটি। একসেপ্ট করো, খুশী থাকো। রোজ স্নান করো, সাবান মাখও তবে ফরশা হওয়ার জন্য নয়, নিজে পরিষ্কার রাখার জন্য। খুশীর চোটে দুম করে গুরুতে মেইল’ও দিয়ে দিলাম একদিন।

    কামিং আউট-

    না, এ কোনও কামিং আউটের গল্প নয়। সাম্প্রতিক গুরুর এক সদস্য নিজের ‘একটি’ পরিচয় দিলেন। তাঁকে অনেক অনেক অভিনন্দন। তাঁর আগামীকালের জন্য শুভেচ্ছা কামনা করেও, করলাম না। দরকার নেই। আমার মতে এই ধর্মভীরু, অতি সরলীকরণ দোষে দুষ্ট তৃতীয় বিশ্বের সমাজে, সকলের সামনে যারা নিজের সেক্সুয়ালিটির পরিচয় দিতে পারেন, তাদের গুড লাক বলার দরকার নেই। এখন তারা হয়তো আই এস’এর সামনেও নির্ভয়ে দাড়াতে পারবেন।
    আগেই বলেছি, উনি নিজের ‘একটি’ পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর অনেক পরিচয়ের ভিতর একটি পরিচয়। আসলে ‘সমকামী’, ‘উভকামী’ শব্দ গুলো বেশ কাঁটা গেলা টাইপের। যদিও কিছু মানুষ এই শব্দ গুলোর মধ্যে দিয়ে নিজের ‘গোটা’ পরিচয় পায়। হ্যাঁ, ‘গোটা’ পরিচয় বা তার জীবনের ‘একটাই চাহিদা’র প্রকাশ পায়। একটা জলজ্যান্ত মানুষ যখন বলে সে সমকামী/উভকামী, তখন তার বাকি পরিচয় গুলো, ইচ্ছে গুলো বা চাহিদা গুলো অটোমেটক্যালি আউট অফ ফোকাসে চলে যায়। মানে, ধরুন একটি ছেলে (বা মেয়ে) বলল সে ঐ মেয়ে (বা ছেলে)টিকে পছন্দ করে, বিয়ে করতে চায় বা একসাথে থাকতে চায়। তালে জনগণের মনে কীসের ভাবনা আসে? আহ, তার ভালো চাকরি- নিজস্ব বাড়ি গাড়ি (না থাকলে তার এখন আদাজল খেয়ে চাকরি খুঁজতে উঠেপড়ে লেগে যাওয়া উচিৎ), এবার সে তার বাকি জীবনে চলার সঙ্গী পেয়ে গেছে। সুখে, দুঃখে, হেসে, খেলে, ঝগড়া, মারপিট করে,উইক এন্ডে সিনেমা দেখে বা রেস্ট্রুডেন্টে খেয়ে আর কোনও ভ্যাকেশানে গিয়ে একসাথে ওয়াইন হাতে সানসেট দেখে, বা বৃষ্টির দিনে কাক-ভেজা হয়ে গঙ্গার ধারে কোনও চায়ের দোকানে গরম গরম পিঁয়াজি সহযোগে চা খেয়ে তারা বাকি রাস্তাটা একসাথে পার করে দেবে। কিন্তু আমি যদি কাউকে বলি আমার ঐ মেয়েটিকে ভালো লাগে, তালে? –তার মানে আমি ঐ মেয়েটির সাথে ‘ইয়ে’ করতে চাই, আর কিচ্ছু না। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে রাত্রিবেলা ঘুমাতে যাওয়া অবধি ‘ইয়ে’ দিয়েই পার করে দেবো গোটা জীবন।

    আমি যে কখনো ‘নিজের লোকদের সামনে’ বেরিয়ে আসার চেষ্টা করিনি, তা নয়। প্ল্যান করেছি বহুবার, তবে কিছুই হয়নি। প্ল্যান না করেই পরিস্থিতির চাপে, চার বার প্রায় হয়ে গেছিলো।

    প্রথমবার- কলেজ বেরিয়ে বহুকাল। কেরিয়ারের দৌড়ঝাঁপের মাঝে চলে যাচ্ছে মাসের পর মাস, গড়িয়ে যাচ্ছে বছর। বান্ধবীরা পটাপট ছাদনা তলায় বসছে। এরই ভিতর কলেজের গ্রুপের একটা ছোট্ট রি-উনিয়ান। ময়দানে বসে ঝালমুড়ি সহযোগে ঘাস ছিঁড়তে ছিঁড়তে চলছে বন্ধু সুলভ ইয়ার্কি ফাজলামি। বন্ধুরা সবাই দোকা, আমি একা। চুলচেরা বিশ্লেষণ, সবার ফোকাস পয়েন্ট আমার দিকে। আড্ডায় অদ্ভুত লাগলো, এতো বিশ্লেষণ হওয়া সত্ত্বেও কেউ ‘সমকামী’ শব্দটা তুলল না। নাহ, আমরা কেউই সাধু নয়। যারা একে অপরকে পানুর সাইট রেকম্যান্ড করতে পারে তারা গে, লেসবিয়ান কাকে বলে, খায় না মাথায় দেয়?- জানে না, তা মানা মুশকিল। অন্য সময় এড়িয়ে যেতাম, তবে এবার সাহস করে পুরো সোজাসাপ্টা বলে ফেললাম, ‘দেখ, বিয়ে চাইলেও হবেনা, আমি লেসবিয়ান। তোরা ছেলে খোঁজা বন্ধ করে মেয়ে খোঁজ’। উত্তর পেলাম, ‘ঠিক আছে, বিয়ে যখন করবি না তা তোর ব্যাপার। তাই বলে ফ্রাস্টু খেয়ে আলফাল বকিস না’। তারপর সবাই অন্য টপিক।
    দুর্ভাগ্য দুম করে বলা সত্যি কথা অনেকে বিশ্বাস করে না।

    দ্বিতীয়বার- এ ঘটনা আমার কাছে ভয়ংকর। দাদার বিয়ে। আমি, মা, দাদা, বৌদি রিস্পেপশানের নিমন্ত্রণ পত্রের লিস্ট করছি। লিস্ট শেষ হয়ে রি-ভিউ করবার পালা। নাম গুলো পড়তে পড়তে একটা নামে মা বলে উঠলেন, ‘এই লোকটি কেন যে তার মেয়ের বিয়েতে আমাদের ডাকল না, বুঝলাম না। আমরা তো সব অনুষ্ঠানে ওনাদের বলি’। দাদা পাশ থেকে হাসতে হাসতে বলল, ‘তুমি জানো না! ওনার মেয়ে তো একটা মেয়ে কে বিয়ে করেছে’! হঠাৎ সব কিছু তালগোল পাকিয়ে আমার হাত-পা পেটের ভিতর যেন ঢুকে যাচ্ছে। দিদিটিকে ভালোই চিনি। সে যে লেসবিয়ান তার এক বিন্দুও টের পাইনি কখনও। সে রীতিমত বিয়ে করে থাকতে শুরু করে দিল, আর আমি কাউকে নিজের কথা বলতেই পারলাম না! এই সমস্ত কথা যখন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন শুনলাম বৌদি বলছে, ‘এদের কি মাথায় ছিট ভর্তি? পাগলামির লিমিট থাকা উচিৎ’। মা’ও হাউ মাউ করছেন। মাথাটা গরম হয়ে গেলো। নিজেকে ঠিক রেখে কাঁপা গলায় বললাম ‘হোমোসেক্সুয়ালিটি বলে একটা ব্যাপার আছে’। ঐ প্রথম কেউ ‘হোমোসেক্সুয়াল’ শব্দটা আমাদের বাড়িতে তুলেছিল। কিন্তু বৌদির ঐ এক ভাঙ্গা টেপরেকর্ডার। একে ঐ খবরে এক অদ্ভুত অনুভূতিতে আমার হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে শরীরটা থরথর করে কাঁপছিল, তার ভিতর ‘মানসিক রুগী’ তাচ্ছিল্য শুরে আখ্যা। প্রায় গলার কাছে চলে এসেছিলো সব কিছু। চিৎকার করে বলতে যাচ্ছিলাম ‘আমাকে দেখ। ছোটবেলা থেকেই দেখছিস। আমিও ঐ দিদিটার মতন এক মানসিক রুগী’। ঠিক সেই সময় দাদা বলল, ‘তুই যে এই সব লেসবিয়ান, গে বলছিস, এসব কিছু ব্যাপার না। এক একটা মানুষর একেক রকম দেখার ধরন। এক জনের কাছে যে সন্ত্রাসবাদী, অন্যজনের কাছে সে বিপ্লবী’। আমি চুপ। সন্ত্রাসবাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি আর সমকামিতার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি একপাত্রে চলে আসলে আমার মতন স্বল্প বিদ্যাধরীদের চুপ না হওয়া ছাড়া গতি নেই। আর এই চুপ’এর উপরে তালা ঝুলিয়ে দিল মা, ‘এসব আমাদের সমাজে চলে না। অপর্ণা সেন এ সব বিয়ে করতে পারে, তবে আমরা না’।
    অ্যাঁ, অপর্ণা সেন!! আমি ‘হা’ হয়ে গেলাম।
    দাদা বৌদি হেসে উঠল। আমি স্বশরীরে নিস্তব্ধে উঠে চলে গেলাম।

    (অপর্ণা সেন মানে এলিট সোসাইটি। আর হ্যাঁ, সেই দিদিটি কোনও মেয়েকে বিয়ে করেনি। প্রেম করে একটি ছেলের সাথেই কোর্ট ম্যারেজ করেছে। তার সম্বন্ধে ছড়ানো ঘটনাটা গুজব কেবল। তার এক ভালো বন্ধু ছিল, আমি সেই বন্ধুটিকে অনেকবার দেখেছি। রূপান্তরকামি। বাইক নিয়ে ঘুরে বেড়াত। সেই দিদিটির বাড়িতে খুব যাতায়াত ছিল। কি অদ্ভুত তাই নয়! এক জন ‘নর্মাল’ মানুষের সাথে যদি কোনও সম/উভ/রূপান্তরকামির ভালো বন্ধুত্ব থাকে তালে কীভাবে সেই ‘নর্মাল’ মানুষটিকে ‘অ্যাব নর্মাল’ বানিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কেন সিংহভাগ সমাজ হোমোদের দেখে দূর পালাবে না)!

    তৃতীয়বার- সেই বন্ধুদের সামনে বৃথা চেষ্টা।

    চতুর্থ বার- ফেসবুকে, গুরুচণ্ডালীর গ্রুপে। একটা আলোচনায়। একটা অসম্ভব খিল্লি করা আলোচনায় নিজের সম্বন্ধে বিশাল বড় একটা রচনা লিখে পোস্ট করতে গিয়ে ডিলিট করে দিলাম। মুক্তমনা, সমকামী সমর্থক বা সমকামীদের অধিকারে সমর্থক বা অন্তত যারা সমকামীদের মানুষ বলে মনে করেন (তাদের কথা অনুযায়ী) তাদের সমকামী’ শব্দটা নিয়ে খিল্লির সিজন চলছিল তখন।

    যারা হোমোফবিক নন-

    আমার হোমোফবিকদের বেশ ভালো লাগে। ইয়ার্কি নয়, সত্যিই ভালো লাগে। তারা সৎ হয়, মনে যা মুখেও তা। তারা সামনে দিয়ে মারবে, পিছনে ছুরি মারে না। ‘টোপ’ ফেলে সমকামীদের তুলে খ্যাদাবে। কিন্তু সমকামীদের ‘টোপ’ হিশাবে ব্যাবহার করে কারা? ছোটবেলায় কেঁচো নিয়ে খেলতাম। বর্ষা কালে বড়শিতে কেঁচো গেঁথে পুকুর ঘাটে যেতাম মাছ ধরতে। নিজের ধরা কৈ মাছ শুধু নুন আর লেবু দিয়ে ভেজে খেতে যে মজা লাগতো তা ঐ বাজার থেকে কেনা, দারুণ ভাবে রান্না করা মাছের মধ্যে থাকতো না। মাছ ভালো, কারণ টোপটা ছিল লোভনীয়।
    সমকামিদের এই রকমই টোপ হিশাবে কারা ব্যবহার করে?
    (লিখতে গিয়ে খেয়াল হল, আমি যে ৫/৬ জনকে নিজের পরিচয় দিয়েছি, তারা ঠিক আমার নিজের লোক না, কাছের বন্ধু বা আত্মীয় না। কিছু কলিগ আর তারা আসলে হোমোফবিক)।

    ভোগিনী নিবেদিতা ও মা সারদার মধ্যে লেসবিয়ান সম্পর্ক। যারা মোটামুটি ফেসবুক ফলো করছেন, তাদের কাছে এই টপিকটা নিশ্চয় কোনও আশ্চর্যের বিষয় হিশাবে নতুন করে প্রকাশ পাবে না, জানেন তারা। যিনি এই টপিকটি খুলেছিলেন ওনার অন্যান্য লেখা বা কথাবার্তা পড়ে মনে হয় উনি একজন নারীবাদী বা বলা ভালো নারীদের অধিকারের সমর্থক, সেই সঙ্গে সমকামিদের অধিকারের সমর্থক। আপাতত আমি সেটাই মনে করতাম। আমি ছিলাম ঐ পোস্টের নীরব পাঠক। যারা ঐ পোস্টটিকে বিনা বাক্যে সমর্থন জানিয়ে গেছেন, লাইকে আর কমেন্টে কমেন্টে হিট থ্রেড করে দিলেন (হোমোফবিকদের বাদ দিয়ে) তারা আজ প্রচণ্ড ভোকাল সমকামিদের জন্য। হোমোফবিকদের গালাগালি দিয়ে তাঁরা ফবিয়া তাড়াতে(!) ব্যস্ত। জনতে ইচ্ছা করে আপনারা সমকামিদের ঠিক কী ধরণের মানুষ মনে করেন? আদৌ কি কিছু মনে করেন? আমি বুঝলাম না উনি কোন তত্ত্ব ও তথ্যের ভিত্তিতে এই আলোচনার সূত্রপাত ঘটালেন, কেন করলেন! রিকি মারটিন যখন বেরিয়ে আসলেন তখন যা হল, এবার বাঙলায় সেটা হবে, সেই আশায়! প্রাইড প্যারেডে সারদা এবং নিবেদিতার ছবি নিয়ে সবাই মার্চ করবে! ঐ আলোচনায় কোনও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ ছিল কি? আমি পাই নি। যা সমস্ত রেফারেন্স যে ভাবে দিয়ে নিজের বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করবার চেষ্টা হল তা অনেকটা রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়র লেখা পড়ে রবীন্দ্রনাথের সম্বন্ধে পি এইচ ডি করবার মতন। অদ্ভুত যুক্তি একটার পর একটা।
    অফিস থেকে ফিরে আবার অফিসের কাজ নিয়ে বসতে গেলে মুডের পারদ থাকে একদম উপরে। অনেক সময় আমার মা এসে আমার মাথায়-গা’য়ে হাত বুলিয়ে দিয়ে গেছেন। এক অদ্ভুত ব্যাপার ঘটে ঐ ছোঁয়াতে তখন। সারা দিনের ক্লান্তি, টেনশন এক নিমেষে উধাও হয়ে গিয়ে পুরো ফ্রেস হয়ে যাই, রিভাইটালের দরকার হয় না, নতুন এনার্জি চলে আসে ম্যাজিকের মতন। আমি একজন সমকামী। এটা পড়ে ওনার এবং যারা ওনাকে চোখ বন্ধ করে সমর্থন জানিয়ে গেছেন তাদের মতে, আমার সাথে আমার মা’র লেসবিয়ান সম্পর্ক আছে। তাই নয় কি?
    থ্রেডটা খিল্লির থ্রেড। চাড্ডি ব্যাশিং’এর থ্রেড। অনেকের মতে আই ওপেনার। সমস্ত চাড্ডি/ছাগু (চাড্ডি/ছাগু মানে হিন্দু/মুসলমান মৌলবাদী), সেক্সিস্ট, হোমোফবিক এক এক করে বেরিয়ে আসছে। অনেক প্রতিবাদ এসেছে, তবে ঐ সব চাড্ডি/ছাগু’দের। যারা ঐ থ্রেডটিকে সমর্থন করেছিলেন বা সহজ ভাবে বললে খুব এঞ্জয় করেছিলেন (যারা আজ হোমোফবদের চুটিয়ে গালি দিচ্ছেন, হোমোফবিক জোক দেখলে হারে রে রে করছেন) একবারও ভেবেছেন, ‘সমকামী’রা কতটা এঞ্জয় করেছে? ২২ হাজারের গ্রুপে আমি ছাড়া অনেক সমকামী আছেন। আমি অন্যদের মুখপাত্র নোই, তাই আমার কথাই বলি, আমি কতটা এঞ্জয় করেছি। বর্ষাকালে কারো বড়শিতে গাথা কেঁচো যতটা এঞ্জয় করে, ঠিক ততটা। যাকে টোপ করে চাড্ডি/ছাগু ধরে লেবু নুন মাখিয়ে ফ্রাই করে তৃপ্তি করে খাওয়া হচ্ছে।
    কাল যদি কেউ ‘ঐ ছেলেটা আসলে একটা মেয়ে। সে ঐ ভাবে হাটে বা ঐ ভাবে কথা বলে। ‘ঐ’ ভাবে কেবল মেয়েরাই কথা বলে। ঐ ছেলেটিকে পুরুষ না বলে, লেডিস বলা উচিৎ, তার শাড়ি চুড়ি পরা উচিৎ’- লিখে পোস্ট খোলে! তখন এটাও একটা আই ওপেনারের থ্রেড হবে তো! কোনও নারী বিদ্বেষীর ‘মেয়ে’ সেক্স/জেন্ডারটা’কে হীন শব্দে ব্যবহার করে অপরকে আক্রমণ করবার পোস্ট- হবে না তো!
    না হবে না, কারণ, দেখা হবে ‘কে’ পোস্ট করেছে। আর ‘কে’ কে জানলেই ‘সে’ ‘কি’ বলছে না বলছে, সেই ‘বক্তব্য’এর ভিত্তিতে তাঁকে আর মাপা চলবে না। কারণ যারা চেনেন তাঁদের কাছে তো সে কোনও নারী বিদ্বেষী নন, নিশ্চয় কিছু কারণ আছে এই পোস্টের, জাস্ট ‘মেয়ে’ শব্দটা ‘টোপ’ করা হয়েছে, তাই না! আর যাকে চেনেন না সে যদি ঠিক এই রকম একটা পোস্ট খোলে তালে তো... থাক।

    হোমোফবিকদের সাথে যখন হোমোসেক্সুয়ালিটি নিয়ে তর্ক চলে, অনেকে এসে বেশ ভালো ভালো অ্যাকাডেমিক আরটিক্যাল বা রিসার্চের লিংক দেন। আর কিছু জাস্ট খিস্তি, খিস্তি ছাড়া সমকামীদের স্বপক্ষে কিছু বলার থাকে না এদের। খিস্তি দিয়েই আমরা করবো বিশ্বজয়। প্রায় সব হোমোফবিকরা, সমকামীদের স্বপক্ষে কথা বলা লোকদের দাগিয়ে দেন ‘এরা সমকামী’ বলে। অবাকের কিছু নেই ‘সমকামী’ শব্দটা তাঁদের কাছে গালি, আর এই দাগিয়ে দেওয়াটা তাঁদের কাছে অপরকে আঘাত করবার অস্ত্র। কিন্তু যখন কোনও সমকামীদের স্বপক্ষে তর্ক করা ব্যক্তি কোনও হোমোফবিককে বলেন ‘ক্লোজেস্ট গে’ তখন! হ্যাঁ, অনেক হোমোসেক্সুয়ালরা হোমোফবিক হয়।( আমি নিজেই ছিলাম)। তবে সবাই না। এই যে কাউকে ‘ক্লোজেস্ট গে, ভয় পাবেন না-বেরিয়ে আসুন, বলে দেওয়া; সেটা কি সম্পূর্ণভাবে সেই হোমোফবিককে ব্যক্তির সেক্সুয়ালটি সম্বন্ধে সুনিশ্চিত হয়ে, আশা দিয়ে ভরসা দিয়ে বলা! নাকি এখানেও সমকামী শব্দ/সম্পর্কে অস্ত্র হিশাবে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে টাইট করা!

    ‘গ্রুপের সমকামী বন্ধুরা, হোমোফবিকদের ইনবক্সে প্রপোজ করুন, সিডিউস করুন’- একটা ছাড়া আর কোনও প্রতিবাদ পড়ল না। আবারও চলল সমকামীদের অধিকার সমর্থন করা সমর্থকদের খিল্লি। বলেই দেওয়া হল হোমোফবিকদের ভয় দেখানোর পোস্ট।
    ভয় দেখিয়ে ভয় তাড়ানো। যৌন সন্ত্রাস। খাইসে, হোমোরা আইসে। না ভাই, হোমোদের নিয়া কোনও কটূ কথা কমু না। কে আইসা কোথায় কামড় দ্যায়, কে জানে!
    যদি উলটো ঘটে, আমার ইনবক্সে হোমোফবিকরা এসে আমাকে সিডিউস করে যায়! অনেককেই করা হয়েছে। এতটাই বাড়াবাড়ি হয়ছে যে তাঁদের মধ্যে কিছু জন নিজেদের অ্যাকাউন্ট ডি-একটিভেট করে দিয়েছেন।
    ইদানীং পেপারে দেখা যায় সমকামিতা দূর করবার জন্য বাবা-মা’রা নিজের ছেলে মেয়েদের ধর্ষণ করছে। একটা ছেলেকে একটা মেয়ের স্বাদ বা ভাইস-ভারসা দিলে সমকামী রোগ সব দূর হয়ে যাবে। ঠিক তেমনি এক হোমোফবিক কোনও হোমোসেক্সুয়ালের দারা সিডিউস হলে বা প্রপোজ পেলে (ভাগ্যিস বলেন নি ‘ধর্ষণ’ করুন) তার ফবিয়াও দূর হয়ে যাবে। আমার দাদা সন্ত্রাসবাদী প্রসঙ্গ তুলে এক সময় আমাকে চুপ করিয়ে দিল। এবার এক ব্যক্তি (যদিও পোস্টের লাইক আর কমেন্টে খিল্লি দেখে, এক’এর বদলে বহুবচন) সমকামী বন্ধুদের(!) যৌন সন্ত্রাসী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মজা লুটলেন। আমার একরাশ ঘেন্না চলে আসলো।
    ভাবছি একটা আহ্বান জানাই। আসুন আমার নারী বন্ধুরা, যত নারী বিদ্বেষী পেজ আছে, সেই পেজের সমর্থকদের আমরা সিডিউস করি, প্রপোজ করি।
    হোমোফবিক কাদের বলে? ক্লোজেস্ট হোমোফবিক?

    আসলে এই এল.জি.বি.টি গোষ্ঠীর লোকদের জনগণ ঠিক বোঝে না। শুধুমাত্র হোমোফবিক না, নন-হোমোফবিকরাও ঠিক বোঝেন না। তারা বলে তাঁদের অনেক লেসবিয়ান/গে বন্ধুরা আছে, কিন্তু তবুও কোথায় যেন একটা খামতি থাকে। মোটা মোটা রিসার্চ পেপার পড়ে হয়তো সমকামিতা কিছুটা জানা যায়, তবে সমকামিদের চেনা যায় কি? আর এই কারনেই হয়তো কেউ সমকামিদের বেডরুমের কথা জানতে চান, কেউ টোপ করে চাড্ডি ছাঁকেন, কেউ তুই শালা ক্লোজেস্ট গে বলে ভাবেন ‘দেখ কেমন দিলাম’, কেউ বা সিডিউস করার জন্য ডাকেন।

    সমকামিরা কেমন হয়? কেমন করে প্রেম করে? তাদের রাগ অনুরাগ পূর্বরাগ বিরাগ বলে কিছু কি আছে? তাদের এই অদ্ভুত জীবনটা হয় কেমন?
    অন্যদের কথা জানি না, নিজের কথা বলি। নিজের কথা ভাবতে গিয়ে খুঁজে পেলাম আমার সাথে বিসমকামিদের (দুঃখিত, শুধুমাত্র যৌনতার বৈশিষ্ট নিয়ে কারু গোটা পরিচয় দিতে চাই না। কিন্তু টপিকটাই এমন যে আমরা-ওরা চলে আসছে) সাংঘাতিক অমিল রয়ছে। এক্কেবারে উত্তর মেরু- দক্ষিন মেরু। আমার বয়স প্রায় তিরিশ। আর এই তিরিশ বছরে আমার সাথে ঘটে যাওয়া ও ঘটে চলা, বিশেষ করে, মনে দাগ ফেলে যাওয়া অনেক ঘটনা পেলাম যে ঘটনা গুলো কখনো কোনও বিসমকামি ভোগ করেননি, করবেনও না। হলপ করে বলতে পারি।

    আমার জীবনে দুটো প্রেম, যেগুলো শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেছে।
    স্কুলের এক সিনিয়ার। যাকে দেখলেই পেটের ভিতর গুড়গুড়। তাকে নিয়ে প্রথম কবিতা লেখা, পাতার পর পাতা ভরিয়ে দেওয়া। ‘তুমি কেন বোঝো না’ শুনে রাতের পর রাত জেগে কাটিয়ে চোখ লাল করা। তার দেখা একবার পেলে পুরো দিনটা যেন বসন্ত, সে কোন দিন অ্যাপসেন্ট করলে ‘কী হল, তার কী হল চিন্তায়’ চুল ছেড়া। লুকিয়ে, এর ওর কাছ থেকে সুকৌশলে তার ছবি জোগাড় করা। সে ছিল স্কুল ক্যাপ্টেন। আমাকে ডেকে কোনো কাজ দিলে সুনামি আসলেও ঐ কাজ কমপ্লিট আমি করবোই করবো। তার পাড়া তীর্থস্থান, কলকাতার সমস্ত শুদ্ধ অক্সিজেন যেন সেখানেই পাওয়া যায়। আর যদি দেবীর দর্শন পাওয়া যায়, তালে...। তখন আমি নবম শ্রেণী, তখন আমি শাড়ি। ব্লাউজের হাতাটা ঠিক যতটা হাত ঢাকে সেখানে সযত্নে ব্লেড দিয়ে কাঁটা যাতে কেউ জানতে না পারে (না, আমি কোনও কাটার নই। ওটাই প্রথম, ওটাই শেষ)। যার জন্য কেটেছিলাম সে এসমস্ত ব্যাপার জেনেও, কিছুই জানতো না। তারপর সময় বদলে গেলো।

    কলেজে ফাইনাল ইয়ার। আমি তখন সমকামী রোগ সারাতে ব্যস্ত। হঠাৎ এক ময়লা রঙের চার চক্ষু, হার্ডকোর এয়ার টেল সাপোর্টার রমণী, যার ওড়না সব সময় ধুলোয় লোটায়, একঝাক ঠাণ্ডা হাওয়া নিয়ে আসলো। আবার আমার পেট গুড়গুড়। হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। সে সামনে আসলে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে ক্যাবলা হয়ে যাই, আর উল্টো দিকে দৌড়াই। আকর্ষণকে বিকর্ষণ করে, তার দেওয়া এয়ার টেলের সিম ট্রেনের তলায় চ্যাপ্টা করে, আমি রোগ সারাতে ব্যস্ত। শেষ দেখা ফাইনাল পরীক্ষার শেষ দিন। রমণী দাড়িয়ে বাস স্ট্যান্ডে, আমিও ধরবো সেখান থেকে বাস। ধুলোয় লোটা ওড়নার একঝলক দেখে আর কোনো দিকে না তাকিয়ে আমি দিলাম উল্টো দিকে হাটা।
    এখন ফেসবুকের সার্চ অপশানে তার নাম লিখে যাই, নেই নেই সব ধুলোয়।

    সমকামিদের জীবনে যতগুলো কাঁটা আসে, সেগুলোও হয় সম্পূর্ণ আলাদা। বিসমকামিদের জীবনে সচরাচর এসব দেখা যায় না। আমার পুরো কলেজ লাইফটাও গেছে কাঁটার উপর বসে। উচ্চমাধ্যমিকের মুখে হঠাৎ কোনো আগাম বার্তা ছাড়া বাবা মারা গেলেন। মা হয়ে পড়লেন অসুস্থ, চূড়ান্ত ফিন্যানশিয়াল প্রবলেম, এর ভিতর দাদা নিজের দিকটা গোটাতে শুরু করে দিল। সমস্ত দায় দায়িত্ব এক ঝটকায় চলে আসলো আমার উপর আর আমি নিজেকে আবিষ্কার করলাম এক গোয়াল হারা দিকভ্রান্ত গরু রূপে। যাদের এককালে কাছের লোক বলে মনে হত, তাদের মুখোশ গুলো এক এক করে ঝড়ে পড়তে লাগলো। বুঝতে শুরু করলাম আমরা বাস্তবে সবাই একা। আর এই ‘একা’ ব্যাপারটা অনেক সময় খুব বড় হয়ে মাথায় মনে চেপে বসছে। সময়টা যেন এমন একটা ঘড়ির উপর ভর করে চলেছে যার বড় কাঁটাটা যেন এগতেই চায় না, সব কিছু থমকে গেছে। আমার মধ্যে আস্তে আস্তে জমতে শুরু করেছে সুইসিডাইল টেন্ডেন্সি। তখন সাংঘাতিক ভাবে চাইতাম কেউ আসুক, কেউ তো আসুক। ভিতরে জমতে থাকা অনেক কথা দম বন্ধ করে দিচ্ছে। কারু সামনে বিনা বাধায় সেগুলো বমি করি।

    রিসেন্টলি জুন মাসে আমার এক দূর সম্পর্কের নিকটাত্মীয় মারা গেলেন। দূর সম্পর্ক, আমার বাবার মামাতো ভাই। নিকটাত্মীয়, আমদের পাশেই বাড়ি। বয়স চল্লিশ কি পঁয়তাল্লিশ। হাট্টা গট্টা, হেসে খেলে সবার সাথে মজা মশকরা করে চলেন। হঠাৎ ধরা পড়ল ব্ল্যাড ক্যানসার, লাস্ট ষ্টেজ। দু’মাস আগে যার সাথে ইয়ার্কি মেরে বিনা অকেশানে পিকনিক করেছি তার প্রায় কংকাল হয়ে যাওয়া ফ্যাকাশে প্রাণহীন দেহটা দেখলাম এক ঘণ্টা ধরে। কোনও কান্না ফান্না পেলো না, শুধু ভিতর দিয়ে কিছু একটা দুমড়ে মুচড়ে গেলো। আরও একজন দূর সম্পর্কের নিকটাত্মীয় ভুগছে চোখের সামনে। বয়সও প্রায় ঐ একই। দুটো বাচ্চা ছেলে মেয়ে, ফিন্যানশিয়াল প্রবলেম, তাদেরও জীবনটা চলছে ঐ কাঁটা না এগোনো ঘড়ির উপর ভর করে।

    আপাতত এটাই আমার, এক সমকামির পেরিয়ে আসা এবং এই সময়ের মধ্যে দিয়ে চলা রাগ অনুরাগ পূর্বরাগ বিরাগ ছোট্ট একটু বিবরণ। বিসমকামিদের সাথে কি কোনও মিল আছে! কত্ত কত্ত পার্থক্য। বিসমকামিরা কি কখনো ‘একা’ হয়ে যাওয়ার ভয় পায়! প্রিয় জনকে হারালে তাদের কি ভিতরে কিছু মোচড় দেয়! দম বন্ধ করা কথা কাউকে বলার-শ্বাস নেওয়ার জন্য কি কখনো বিসমকামিরা কাউকে খোজে! সময়ের সাথে লড়াই করতে গিয়ে কখনো কি চিৎকার করতে ইচ্ছা করে! আবার কিছু সময় কারু দেখা পেলে এক বারও কি মনে হয়, সময়টা থেমে যাক!

    কিছু জনকে বাদ দিয়ে, শেষে আমার একটাই বক্তব্য- আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ সমকামিদের হয়ে এগিয়ে আসার জন্য। ভারতে ৩৭৭ আবার জীবন ফিরে পেলেও এল.জি.বি.টি গোষ্ঠীর সদস্যারা আশা হারিয়ে ফেলেন নি, ভেঙ্গে পড়েননি বা কোনও ভুল সিদ্ধান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন না তার সব চাইতে বড় কারণ এল.জি.বি.টি গোষ্ঠীর বাইরের সদস্যদের, আপনাদের, অগুনতি- অসংখ্য হাত।
  • সে | ০৩ জুলাই ২০১৫ ২১:১৯681165
  • পড়লাম। মন্তব্য করবার ভাষা নেই।
  • সিকি | ০৩ জুলাই ২০১৫ ২৩:১৭681176
  • বেনামী,

    এক নিশ্বাসে পড়লাম। আরো লেখা পড়তে চাই।
  • Ekak | 24.99.220.220 | ০৪ জুলাই ২০১৫ ০০:৩৪681187
  • কিচ্ছু বুঝলুম না । এই ঘটনা গুলো বিষমকামী মানুষের জীবনে ঘটেনা বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন । প্রেমে পরা অংশ বাদদিয়ে ।
  • | 183.17.193.253 | ০৪ জুলাই ২০১৫ ০২:০১681192
  • বিসমকামিদের সাথে কি কোনও মিল আছে! কত্ত কত্ত পার্থক্য। বিসমকামিরা কি কখনো ‘একা’ হয়ে যাওয়ার ভয় পায়! প্রিয় জনকে হারালে তাদের কি ভিতরে কিছু মোচড় দেয়! দম বন্ধ করা কথা কাউকে বলার-শ্বাস নেওয়ার জন্য কি কখনো বিসমকামিরা কাউকে খোজে! সময়ের সাথে লড়াই করতে গিয়ে কখনো কি চিৎকার করতে ইচ্ছা করে! আবার কিছু সময় কারু দেখা পেলে এক বারও কি মনে হয়, সময়টা থেমে যাক!

    আপনার এই বক্তব্যের মানে বুঝতে পারলাম না।

    এই সব কিছু যে কোনো 'মানুষ'এর হয় বলেই জানি।
  • - | 109.133.152.163 | ০৪ জুলাই ২০১৫ ০২:৪৩681193
  • আহা, উনি তো বলেইছেন "অগোছালো" কথা। এরপরেও যুক্তি-ভাবনার পারম্পর্য আশা করছেন কেন আপনারা?
  • sosen | 50.128.208.34 | ০৪ জুলাই ২০১৫ ০৫:০৩681194
  • বেনামী, এই সমস্ত অগোছালো ঘটনা যে কোনো মানুষের জীবনে ঘটে। যৌন পরিচয়ই তো মানুষের একমাত্র পরিচয় নয়। মেরুকরণের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়, করেই যেতে হয় মানুষকে শেষ পর্যন্ত। কিন্তু আমি বোধহয় আপনার কথা বুঝতে পারছি। কিছু উভকামী বন্ধুদের চিনি যারা কলেজ জীবনে প্রায় ঘোষিত সমকামী হলেও, আজ বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে বিয়ে করে ভালো-ই আছে-বাইরে থেকে। তারা নিশ্চয় ঐ রাস্তাটা অনেক চিন্তা ভাবনা করেই বেছেছিলো। সকলেরি যে এই ছোট্ট জীবনে শেষ অব্দি লড়ে যাওয়ার ইচ্ছে থাকবে তা-ও নয়। এই বেছে নেওয়ার স্বাধীনতাটুকু সকলের থাকুক, না থাকলেই এমন দমবন্ধ হওয়ার দিন আসে। কিন্তু নিশ্চয়ই ঐ দমবন্ধের দিনগুলো পেরিয়ে যাবে, একদিন।

    নিজেকে স্বীকার করাটাই বোধহয় আসল, তারপর বাকিটুকু ।
  • বেনামী | 24.99.87.183 | ০৪ জুলাই ২০১৫ ০৭:৪৩681195
  • তাড়াহুড়োতে ঠিক মতন গোছাতে পারি নি। ওটা একটু ব্যঙ্গ করে লেখা। বলতে চাইছিলাম, আমাদের ভিতর ঐ 'যৌনতা' ছাড়া আর কিসেরই বা পার্থক্য। অনুভূতি, আবেগ, ইচ্ছা সবই তো এক। উপরিউক্ত সময় গুলো তো 'যে কোন ব্যক্তির সাথেই ঘটতে পারে। কিন্তু ঐ আমি 'সমকামী' বললে অনেকের কাছে সমস্ত কিছু আউট অফ ফোকাস চলে যায়। 'সমকামি'দের জীবনে 'কাম' ছাড়া আর কিছু নেই!
  • san | 113.240.239.25 | ০৪ জুলাই ২০১৫ ০৯:৪৭681144
  • বেনামী , আরো লিখুন।
  • 0 | 132.163.22.94 | ০৪ জুলাই ২০১৫ ১৭:৫৬681145
  • ভালো ও জরুরী লেখা।

    ১১/১২/'১৩র এপেক্স্‌ কোর্টের রায় যে সংবিধান বিরোধী [আর্টিকল্‌ ১৫(১)] ছিল সেটা আগেই অনেকেই বলেছেন। সেকশন ৩৭৭'এর কুখ্যাত অবৈজ্ঞানিক শব্দবন্ধ 'against the order of nature'-কে অপসারণের জন্যে PIL শিগগীরি আসছে। IMA'এর রিপোর্ট সহ।
  • pi | 83.197.98.233 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ০৪:০৫681146
  • বেনামী, আরো লেখ। লেখাটা তেমন অগোছালো লাগেনি, ঐ কথাগুলো তির্যক ভাবে বলা সেটা বুঝতে তেমন অসুবিধে হচ্ছে না। এনিয়ে বেশ কিছু কথা লেখার আছে, পরে লিখছি। আপাতত একটা দুটো কথা। ঐ হোমোফোবিককে আপনি ক্লোজেট গে না তো বলা দেখে আমিও চমকে গেছিলাম, আপত্তিও করেছিলাম, সে পোস্ট যে দিয়েছিল সে ভুল স্বীকার করে পরে মুছেও দেয়। আর হোমোফোবিকদের প্রোপোজ করার প্রস্তাবটাও বাজে লেগেছিল এক ঝলক দেখে। অনিয়মিত থাকায় কিছু বলা হয়ে ওঠেনি। তবে তথাকথিত সমকামী অধিকারের সমর্থকদের এহেন আচরণ আরো চোখে লাগে, সেকথা ঠিকই, এখানেই লিখেছিলাম, লেবু বলে রেফা করা পড়ে চমকে গেছিলাম, দুজনের মধ্যে লেসবিয়ান সম্পর্ক হতে পারে এই নিয়ে ইঙ্গিত করে হাসাহাসি, সে যতই ইয়ার্কির ছলে হোক না কেন, সে দেখেও। সারদা নিবেদিতার কেসটা মনে নেই ঠিক। কিন্তু সেখানে সমকামী মানে শুধুই কাম , প্রেম্ম নেই এরকম কথাও বলা হয়েছিল কি , নাকি আপত্তি অন্য কোন সম্পর্ক আছে এরকম ইঙ্গিত দেওয়াতেই, আর সেটা তথ্যপ্রমাণ ছাড়া দেওয়াতে ? তবে সেক্ষেত্রে বলবো, এরকম ইঙ্গিত তো বি-সমকামী সম্পর্ক নিয়েও দেওয়া হয়, মানে গসিপ চলে, বিশেষ করে সেলিব্রিটিদের নিয়ে, সেটা আপত্তির হতেই পারে, কিন্তু আলাদা করে সমকামিতা নিয়ে আপত্তি কেন ? ঐ নিয়ে আলোচনায় কী বলা হয়েছিল কিছু খেয়াল নেই।
  • পারমিতা | 111.221.130.7 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৩:৩৪681147
  • ভাল লাগল লেখাটা,খুব স্বতস্ফুর্ত।
  • রৌহিন | 233.223.134.75 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৩:৫৯681148
  • ম বা অন্য কেউ কেউ বক্তব্যের মানে বুঝতে পারলেন না কেন সেটা আমিও ঠিক বুঝলাম না। ওটা যে সারকাজম, বলতে চাওয়া যে আসলে কোন পার্থক্যই নেই ওই 'যৌনবোধ'টুকু ছাড়া, সেটা বুঝতে কি এতই অসুবিধা হচ্ছে?
    এবং লেখকের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। যতই সমর্থক হই এই ধরণের খিল্লিতে কয়েকবার আমি নিজেও অংশ নিয়েছি - স্পষ্ট মনে পড়ছে। যেগুলি উল্লেখ করলেন সেগুলিতেও। না বুঝে বলব না - বরং এটা পড়ার পর বুঝলাম আমার বোধশক্তিতে কোথাও ঘাটতি থেকে গেছিল অবশ্যই - বাইরে থেকে সমর্থন করেছি, আপনা(দে)র জায়গায় নিজেকে বসিয়ে ভাবার চেষ্টা করিনি। আশা করি ভবিষ্যতে এ লঘুতা আর করব না।
    যত দিন যাচ্ছে ক্রমশঃ মনে হচ্ছে 'খিল্লি' ব্যপারটা একটু বেশিই করছি আমরা - প্রায় প্রতিটি সিরিয়াস বিষয় নিয়ে। কাজের কাজ করার বদলে। আবার ভাবতে বসার সময় হয়েছে।
  • janmajur | 117.77.92.78 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৪:১১681149
  • অগোছলো কিছু কথা-র মূল বক্তব্য বুঝতে পারলাম না।
  • পল্লবী | 126.203.145.231 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৪:১৩681150
  • বিসমকামীরা নিকটাত্মীয়ের, বাবার মৃত্যুতে একা হয়ে যায় না? তাদের কাঁধে পরিবারের দায়িত্ব এসে চাপে না? :)
  • সুশ্রুত সরখেল | 212.54.102.201 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৪:২৫681151
  • ক বাবু/বিবি সমকামী কি বিসমকামী তা তার সাথী ছাড়া অন্য কারু জানার কথা নয়। এ নিয়ে এত কথার কি আছে এআমার মাথায় আসেনা। বিয়ের ব্যাপারটা আলাদা হতে পারে যদি ওর সাথে অন্য সুযোগ সুবিধে জড়িয়ে থাকে।
  • pi | 83.197.98.233 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৪:২৬681152
  • পল্লবী, ওপরেই তো লেখা আছে, ওগুলো তির্যক ভাবে লেখা। পড়লেও দিব্বি বোঝা যাচ্ছে।

    আর তোমার ঐ প্রোপ্রোজ করার প্রোপোজাল নিয়ে সমকামী কারুর মতামত নিয়ে তোমার মতামত জানতে পারলে ভাল হত।
  • অভিজিৎ | 213.147.88.86 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৪:৫৪681153
  • লেখাটা পড়লাম আমার ধারনা আপনি বিষমকামিদের কে নিজের থেকে আলাদা করার চেষ্টা করছেন, আমিও ১২ক্লাসে প্রেমে ব্যাথা খাই, আমার জীবনেও চড়াই উৎরাই গেছে, আমিও যখই কাউকে আঁকরে ধরতে চেয়েছি, সেও বন্ধু বিদায় জানিয়েছে।
    না এগুলো আপনাকে আমাকে আলাদা করেনা। তবে রোগ সারান থামানর চেষ্টা যে করেছেন এটা পড়ে ভাল লাগল।
    সমকামি প্রেম আমি বড় একটা দেখিনি সত্যি তাই স্পষ্ট করে আলাদা করতে পারব না, তবে ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড বেশি হয় এটা জানি, জানিনা কেন এই ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগে।
  • তাতিন | 127.194.213.187 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৫:১২681155
  • লেখাটা ভালো, নাজানা কিছু ভিউ পেলাম। তবে সবাই সব পোস্ট ও কথাবার্তায় মূহুর্মূহু অন্যে কি ভেবে ফেলবেন সেইটা নিয়ে ভেবে যাবেন এ আশা করা শিশুসুলভ। আপনি দেখে কী ভাববেন ভেবে আমি অটোসেন্সর মোডে থাকব, এ বোধহয়, হয় না।
  • পল্লবী | 126.203.149.87 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৫:৫১681156
  • pi, বেনামীর কমেন্ট আগে পড়িনি। না পড়লে ওগুলো ব্যঙ্গাত্মক কথা বুঝতাম না। আমার সুতোর বিষয়ে সুতর এসে আলোচনা করুন। দরকারে ফেক প্রোফাইল থেকেই নাহয় আসুন।
  • 0 | 132.163.53.15 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৬:৪৭681157
  • নাজ ফাউন্ডেশন কেসের রায় থেকে নানান ধর্মীয় সংস্থাগুলোর উকিলদের বক্তব্য পড়ুন। re: http://tinyurl.com/NAZfoundation-case-11-12-2013

    হিন্দু সংস্থা -
    Shri Sushil Kumar Jain, counsel for the appellant - Kranthikari Manuvadi Morcha Party [(SLP(C) No.36216/2009)], argued that the High Court was not at all justified in striking down Section 377 IPC on the specious grounds of violation of Articles 14, 15 and 21 of the Constitution and submitted that the matter should have been left to Parliament to decide as to what is moral and what is immoral and whether the section in question should be retained in the statute book. Shri Jain emphasized that mere possibility of abuse of any particular provision cannot be a ground for declaring it unconstitutional.

    মুসলিম সংস্থা -
    Shri Huzefa Ahmadi, appearing for All India Muslim Personal Law Board [(SLP(C) No. CC425/2010)], submitted that the right to sexual orientation can always be restricted on the principles of morality and health. He referred to the constitutional assembly debates on Article 15 to show that the inclusion of sexual orientation in the term ‘sex’ was not contemplated by the founding fathers. Shri Ahmadi also referred to the dissenting opinion given by Justice Scalia and Justice Thomas in Lawrence v. Texas wherein it was stated that promotion of majoritarian sexual morality was a legitimate state interest. Shri Ahmadi stressed that Courts, by their very nature, should not undertake the task of legislating. He submitted that the Delhi High Court was not clear if it was severing the law, or reading it down. He argued that if the language of the section was plain, there was no possibility of severing or reading it down.

    খ্রিস্ঠান সংস্থা -
    senior Shri K. Radhakrishnan, learned counsel appearing for intervener in I.A. No.7 – Trust God Missionaries, argued that Section 377 IPC was enacted by the legislature to protect social values and morals. He referred to Black’s Law Dictionary to show that ‘order of nature’ has been defined as something pure, as distinguished from artificial and contrived. He argued that the basic feature of nature involved organs, each of which had an appropriate place. Every organ in the human body has a designated function assigned by nature. The organs work in tandem and are not expected to be abused. If it is abused, it goes against nature. The code of nature is inviolable. Sex and food are regulated in society. What is pre-ordained by nature has to be protected, and man has an obligation to nature. He quoted a Sanskrit phrase which translated to “you are dust and go back to dust”. Learned senior counsel concluded by emphasising that if the declaration made by the High Court is approved, then India’s social structure and the institution of marriage will be detrimentally affected and young persons will be tempted towards homosexual activities.
  • বেনামী | 24.99.213.131 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৮:২৬681158
  • ফেসবুক থেকে কিছু কমেন্ট পড়ে- (আমার কোনও ফেক আকাউন্ট নেই, তাই এখানেই দিলাম, কেউ একটু জানিয়ে দিলে আগাম ধন্যবাদ)।

    সোমনাথ দা, তোমাকে আমি সিরিয়াসলি নিই। বিশ্বাস করো। তাছাড়া তোমার মতন একজন অ্যানাচারিস্ট, ডেভিলস অ্যাডভোকেট, একটা সুস্থ মানুষকে গালাগালি না দিয়ে তার মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অবধি জ্বালিয়ে দেওয়ার মতন ক্ষমতাধারীর প্রতি একটু দুর্বলতাও আছে। কিন্তু তোমার কাছে ‘সিম্প্যাথি সিকার’ এধরনের ধারণা, আশা করি নি। ভাবছিলাম কোনও ঝাঁট জ্বালানো হোমোফবিক প্রশ্ন করবে, যেটার কোনও যুক্তিপূর্ণ উত্তর দিতে চাইব, কিন্তু কিছু না পেয়ে মনে মনে তোমাকে গালি মারব। সিম্প্যাথি চাওয়ার সখ থাকলে ‘হোমোফব’দের উদ্দেশ্য করে লিখতাম, যারা সমর্থন করছেন, তাঁদের না। বলার উদ্দেশ্য ছিল আর পাঁচ দশটা লোকের সাথে আমার রোজনামচার কোনও পার্থক্য নেই। যতক্ষণ না আমি নিজে আমার ‘ঐ একটি’ পরিচয় দেবো, কেউ বুঝবে না। তা সত্ত্বেও যারা সমর্থক তাঁদের কাছ থেকে অনেক সময় কিছু বিশেষ ট্রিটমেন্ট পাওয়া যায় সমকামী সত্ত্বার জন্য। যার মধ্যে কিছু কিছু বিশেষ করে পল্লবীর থ্রেড’এ। ঐ থ্রেডটা না থাকলে হয়তো আমি এটা লিখতামও না।

    রৌহিন, শঙ্খ শুভ্র (যারা খুব টেনশানে পড়ে গেছেন) সেই সঙ্গে সোমনাথ দা- আরে বাবা ইয়ার্কি কেনও মারবেন না! ইয়ার্কি, মজা মশকরা লাইফ থেকে চলে গেলে থাকলটা কী! আমি নিজেই সমকামিতা নিয়ে বা সেক্সিস্ট জোক করি। সে দিন দেখলাম একটা পেইজ গ্রাফিক্স করে লিখেছে পশ্চিমবঙ্গে ছেলেরা ছেলেরা বিয়ে করলে জামাই ষষ্টি কোন বাড়ি হবে। আমি ওটাতে মজাই পেয়েছি, খারাপ কিছুই লাগেনি। যতক্ষণ না একটা জোকে একটা পুরো একটা শ্রেণীকে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে বা হিংসা ছড়ানো হচ্ছে, ততক্ষণ আমি সেখানে কোনও দোষ খুঁজে পাই না। সবাইকে পলিটিক্যালি কারেক্ট হতে হবে, একথা আশা করা সত্যিই শিশুসুলভ। আমি নিজেই নোই।

    অভিজিৎ- গুছিয়ে লিখতে পারিনি বলে আপনার বুঝতে অসুবিধা হয়েছে। লেখাটার নিচে একটা কমেন্টেই বলেছি।

    পাই দি- প্রথমে আমিও ভেবেছিলাম ওটা গসিপ। পরে সবার কমেন্ট পড়ে মনে হল, না ওটা চাড্ডি ব্যাশিং। ‘লেসবিয়ান’ সম্পর্ক নিয়ে এসে যতটা ঝাঁট জ্বালানো যাবে, তা অন্য কিছুতে হবে না। কোথায় কি রকম বাজার আছে, তা বুঝে পোস্ট করা (অন্য একটা থ্রেড’এ ‘এই থ্রেডের আলোচনা প্রসঙ্গে উনি বলেছিলেন)।
    শুধুমাত্র সায়ন্তনী না, অনেককে দেখেছি একটা ডিবেটের ভিতর প্রতিপক্ষকে ‘গে’ বলে দাগিয়ে দিয়ে চুপ করাতে চাইছে।

    শুভায়ুন- আজব কথা বললেন ভাই। সুইসাইড নিয়ে মজা করা আর সমকামিরা ওদের সিডিউস করুন’ বলে মজা করা এক হয়ে গেলো! আপনার কোনও বন্ধুর (পুরুষ) কোনও মেয়ের সাথে মত বিরোধ ঘটলে আপনি মজা করে অনুরধ করেন- যা গিয়ে মেয়েটার পিছনে লাগ! এমন ভাবে ভয় দেখা যাতে তোর পিছনে আর না লাগে! মজা করে বলে দেন।
    এই লেখাটা লিখেছিলাম এই টুকু বলতে সমকামিরা তাদের সমলিঙ্গের লোকদের দেখলে লাল ঝোরায় না। তারা আর পাঁচ দশটা লোকের মতনই হয়। তাদের অনুভূতি আবেগ অন্যদেরই মতন হয়। তালে কেন ‘সমকামিদের ডাকা হচ্ছে (মজা করেই) অন্যদের সেক্সুয়াল আবিউস করার জন্য!
    সমকামিরা সবাই সাধুপুরুষ হয় না, অনেকেই আবিউজার হয়, সবাই না। ঠিক যেমন অনেক পুরুষ ধর্ষণ করে কিন্তু সবাই ধর্ষক না।

    (গ্রুপের পুরুষ/নারী বন্ধুরা হোমোফবদের দেখলে তাঁদের সিডিউস করুন বলা হলে আমি আমার প্রফাইল নিয়ে গ্রুপেই প্রতিবাদ করতাম ভার্চুয়াল সেক্সুয়াল আবিউসের বিরোধিতায়)।
  • a x | 60.171.26.111 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২০:৩৭681159
  • বেনামী, আপনি যাদের নাম করে লিখছেন, তাদের অনেকেই এখানে কিছু লেখেনি। তাই এখানের অনেকে যারা ফেবু গুরু পড়েনা, তারা আপনার তরফের মন্তব্যই খালি পড়ছে। এতে ভুল বোঝাবুঝি বাড়বে ও সেটা ঠিক ফেয়ারও না। আপনি ওখানের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া আপনার চেনা বন্ধু কাউকে ইনবক্স করে তাকে পেস্ট করতে বলতে পারেন।
  • তাপস | 190.215.75.144 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২০:৪৫681160
  • এখানে অনেকে ফেসবুকে লেখে না, আবার ফেসবুকের অধিকাংশই এখানে লেখে না। সেটা একটু মাথায় রাখলে ভালো হয়। যেমন আমি একটা তর্ক এই সূত্রেই ফেসবুক গুরুতে চালানোর চেষ্টা করছি, সে নিয়ে এখানে কিছু বলছি না। ফেসবুকের প্রতিক্রিয়া এখানে জানালে একটু অসম্পূর্ণ থাকছে।
  • তাপস | 190.215.75.144 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২০:৫০681161
  • ফেসবুকের লিংকটা এখানে দিয়ে যাই। যদিও গুরুর সবাই ফেবু গুরুর মেম্বার নন। তবু।

    https://www.facebook.com/groups/guruchandali/permalink/1034116719939607/
  • বেনামী | 24.96.113.4 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২০:৫৫681162
  • কী মুশকিল। ফালতু ফালতু পাই দি টারগেক হচ্ছে। এটা ওপেন ফোরাম, এখানে আসতে কোনও আকাউন্ট লাগে না। যে আই পি দেখা যায় সেটা মাস্ক। যাঁদের নাম উল্লেখ করে কমেন্ট করেছি (লেখায় না কমেন্টে) তাঁদের মধ্যে অনেকে এখানে এসে কমেন্ট করবার পর।ওখানে কিছু কিছু কমেন্টে এই লেখার উপরে/আমাকে কিছু বলার জন্য কমেন্ট পড়েছে, তাই। আগের পোস্ট টা ওখানে বলতে বলেছিলাম যাতে বাকিরা এখানে এসে বলেন। কাউকে পোস্ট মাস্টার করার উদ্দেশ্য না, জাস্ট জানানো, আমার ফেক আকাউন্ট নেই এখানে ওনারা আসলে সুবিধা হয়। এখানে তো কোনও আলাদা করে আকাউন্ট করার দরকার নেই। যাক, ফেসবুকের উত্তর দিব না।

    পাই দি, সরি। ফালতু ক্যাচাল পাকলো।
  • | 183.17.193.253 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২১:০০681163
  • রৌহিন, কোন জায়গাটা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে জানিয়েছি, আরো অনেকেই জানিয়েছেন দেখছি- লেখক ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন,সেটাই যথেষ্ট।

    কেন বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে- ধরে নিন আমার স্বল্প বুদ্ধিঃ)
  • 0 | 123.21.66.102 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২১:২৫681164
  • ট্রাস্ট গড মিশনারিজের উকিল রাধাকৃষ্ণনের আপাত ভাবে যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য বুঝিয়ে দেয় অজ্ঞতা, ফোবিয়া, এসব কোন পর্যায়ে আছে।

    "...the basic feature of nature involved organs, each of which had an appropriate place. Every organ in the human body has a designated function assigned by nature. The organs work in tandem and are not expected to be abused. If it is abused, it goes against nature. The code of nature is inviolable.... if the declaration made by the High Court is approved, then India’s social structure and the institution of marriage will be detrimentally affected and young persons will be tempted towards homosexual activities..."
  • Sankha | 233.223.147.132 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২৩:৪৪681166
  • আমার একটা অনুরোধ লেখিকার কাছে , গুরুর ফেসবুক গ্রুপ এ একটি আলোচনা চলছে ,,, সেখানে আপনার সরাসরি না হলেও অন্ততঃ পরোক্ষভাবে উপস্থিতি কিছুটা আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কাটাতে সাহায্য করবে ,,, দেখুন সবার লক্ষ্য যখন একটাই তখন আমরা সবাইই বন্ধু ,,, আমাদের নিজেদের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে মান অভিমান মত্যন্তর হলে সেটা সরাসরি কথা বলে মিটিয়ে নেয়াই ভালো ,,, যারা সমকামীদের আঘাত করার কথা সপ্নেও ভাবেন না তাদের কোনো কাজে কথায় কেউ আহত হলে তারা সেটা নিয়ে নিজদের স্ট্যান্ড পয়েন্ট ক্লিয়ার করবার অধিকার রাখেন ,,, বন্ধুত্বের দাবি থেকেই এই অধিকার। কাজেই আমার অনুরোধ ওখানে ঘটে চলা আলোচনা নিয়ে আপনি কিছু বক্তব্য রাখুন এবং আরো একটু গুছিয়ে আপনার কথাগুলো (প্রয়োজন হলে আরো সময় নিয়ে ) লিখুন,,, !! আপনার বক্তব্য আমাদের নিজদের ভুল গুলো যেমন শোধরাতে সাহায্য করবে তেমনি আপনার বন্ধুদের চিনতে আপনার একটু সুবিধে হবে।।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন