এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে - গুজরাট

    স্বাতী
    অন্যান্য | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | ২৬৭৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • স্বাতী | 127.194.40.49 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১০:১৫727969
  • গুজরাট - প্রথম পর্ব ( ডিসেম্বর ২০১৬)

    From the land of the great Calcutta killing to the land of Godhra. State sponsored terrorism. কারোর কারোর মতে সবথেকে ঘৃণ্য হিংসা। আমরা মেয়েরা যারা ছোটবেলায় বাড়ির ঘেরাটোপে abused হই বা প্রথম যৌবনে বাপ দাদার সন্মান বজায় রাখতে গিয়ে হনার কিলিং এর মুখোমুখি হই বা বিয়ের পরে ম্যারিটাল রেপের স্বীকার হই, তারা মনে মনে হাসি. আমরা আসলে জেনে গেছি যে সুরক্ষা একটা illusion মাত্র। আসলে সুরক্ষা বলে কিছু হয় না। এটাই মনে হচ্ছিল আজ ভুজ শহরে পা দিয়ে।

    বহুদিন আগের একটা স্মৃতি মনে পরে গেল। বছর আটেক আগের কথা। সিডনি শহরে এক দুপুরে হোটেলে ফিরে এসেছি. জামা বদল করে আবার তখনই বেরোব। ঘরে পৌঁছে দেখি ঘরটি হাউসকিপিং এর দখলে। এক দশভুজা কন্যা কাজ সারছেন। আমি মেয়েটির অনুমতি নিয়ে ঝটাকসে বাথরুমে ঢুকে গেলাম। বেরিয়ে এসে ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছি। মেয়েটি হঠাৎ প্রশ্ন করল, madam are you from Pakistan? আমি সালওয়ার কামিজ পরে ছিলাম। তাই প্রশ্নে অবাক হলাম না। হেসে বললাম বললাম No, Indian. বলতে বলতে মেয়েটিকে দেখলাম ভাল করে. শ্যামলা , একটু মোটাসোটা ভালমানুষ চেহারা। ঠিক খুব নাগরিক স্মার্ট মুখশ্রী নয়। এ আমার উপমহাদেশের না হয়েই যায় না। প্রতি প্রশ্ন করলাম, and you? সে বলল, I am also from India. একটু মিষ্টি কথার আদানপ্রদান হল। তারপর আমি একটু অন্য পাশে গিয়ে জিনিস গোছাচ্ছি আর মেয়েটি বিছানা ঠিকঠাক করছিল। হঠাৎ শুনি মৃদু ফোঁপানি। ঘুরে দেখি মেয়েটি কাঁদছে। খুব embarassing অবস্থা. ওকে জল খাইয়ে সুস্থ করে পাশে বসিয়ে অনেক প্রশ্ন করে একটি চিরন্তন গল্প শুনলাম... প্রেমে পড়ে কাজিন কে বিয়ে করেছিল মেয়েটি। বাড়ি থেকে আর মুখ দেখে নি। ছেলেটির বাড়িতেও খুব খুশী মনে মানে নি। তারপর নতুন দেশে এসে নতুন ভাবে সুখের ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দেয় দুজনে। ছেলেটি নতুন করে পড়াশোনা শুরু করে স্কলারশিপ নিয়ে। দীর্ঘ কোর্সের স্কলারশিপের বাইরের খরচ জোগাড় করতে ছেলেটি, মেয়েটি দুজনেই এটা ওটা কাজ ধরে। আমার সঙ্গে যখন দেখা তখন ছেলেটি কোর্স শেষ হব হব করছে। এবার ওদের সুখী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই শেষ ধাপে অঙ্কে ভুল হল। ছেলেটি ওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেছে, দু একবার গায়েও হাত তুলেছে (যদিও তারপর সরিও বলেছে ), কানাঘুষোতে মনে হচ্ছে যে খুব সম্ভবত সে অন্য কারোর প্রেমে পড়েছে. মেয়েটির কর্মক্ষেত্রেও কিছু বিপত্তি চলছে। সিডনি শহরে ওর যা পরিচিতি তারা সবই বরের কলেজবান্ধব। তাদের কাছে ও এসব বলতে পারছে না। সব মিলিয়ে ওর এক দিশেহারা অবস্থা....আমি কি বলব বুঝতে পারছিলাম না। জানতে চাইলাম আমি কোনভাবে হেল্প করতে পারি কিনা। চোখ মুছে বলল, না না আমি কোন সাহায্যের জন্য বলি নি। আসলে তুমি আমার দেশের মেয়ে শুনে খুব emotional হয়ে পড়লাম। তুমি মন দিয়ে শুনলে এটাই কত ভাল লাগল. ....কিছু আর বলার নেই। বেরিয়ে এলাম ঘর থেকে। শুধু দেশের মেয়ে বলে মন উজাড় করে নিজের কথা বলতে চাওয়াটা যে অসহায়তা থেকে আসে, সেই অসহায়তাটুকু আমারও ভিতরে চারিয়ে গেল। কিচ্ছু করার নেই। মেয়েটির দেশের বাড়ি ছিল ভুজ শহরে। আজ সেখানে পা দিয়ে অবধি মেয়েটির আমাকে আঁকড়ে ধরে কান্নাটুকু মনে পড়ছে।

    ভুজ. কচ্ছের শহর। সৌকার্যে, লোক সংস্কৃতিতে, হস্তশিল্পে এদেশ বিরাট বড়। সাত সকালে এসে নেমেছি ট্রেন থেকে। ঝটিকা সফরে স্বামীনারায়ণ মন্দির, হামিসার লেক দেখেছি। আয়না মহল, প্রাগ মহলেও গেলাম। কিন্তু তাদের দুয়ার বন্ধ। খুলবেন আরো এক ঘটিকারও পরে। আর অপেক্ষা করা গেল না। অতএব চরৈবেতি। কালা ডুঙ্গারের দত্তাত্রেয় মন্দির চলো। কচ্ছের সবথেকে উঁচু জায়গা। ভিড়ে থিকথিক সে জায়গা অবশ্য বিশেষ ভাল লাগল না ... আসলে জনজোয়ারে প্রকৃতিকে ঠিক নিজের করে পাওয়া গেল না। বরং বেশি ভাল লাগল India bridge। ফাঁকা রাস্তায় জল চিকচিকে মরীচিকা দেখতে দেখতে গিয়ে পৌঁছান bsf প্রহরিত ব্রীজের প্রান্তে। হাসিখুশি বাচ্চা বাচ্চা ছেলেগুলির উপর পাহারার দায়িত্ব। কি মিষ্টি হেসে টা টা করল আমাদের চলে আসার সময়। মনে পড়ল আমাদের টাকির পথের খ্যাকখেঁকে সিপাহীদের।

    তারপর সোজা জনমানবহীন ননের রাশির মাঝ দিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে এলাম ধোরদো ..the tent city. White run resort। বেশ ভাল ব্যবস্থা। বিকালে appointment ছিল সানগডের সাথে। দেখা করতে গেলাম প্রথমে বাস, তারপর ঘোড়ার গাড়ী চড়ে। আদিগন্ত সাদা নুনের রাশির মধ্যে মোলাকাত হল. তিনি তখনো দিগন্তের বেশ কিছুটা উপরে। যদিও তার সঙ্গী আলোকরাশিরা নীচের উষ্ট্রপদে সঞ্চিত জলে ছুটোছুটি লুকোচুরি খেলতে ব্যস্ত। ভদ্রলোক বেশ ছিলেন। হঠাৎ একটু মুখ ঘুরিয়েছি, ফিরে দেখি তিনি হাওয়া। একটু পরে দেখি আবছা আভায় আকাশ আর চিকচিকে নুনের রাশিকে এক অর্ধস্বচ্ছ কাঁচের আধা-গোলকের মত মনে হচ্ছে ..আর আমরা যেন সে পেপারওয়েটের মধ্যে থাকা আলোকবিন্দু।

    আরো পরে যখন আমরা ঘরে ফেরার পথ ধরেছি, তখন দেখি ওই উট-ঘোড়ার মালিকেরা রওনা দিয়েছে বাড়ির পথে. সারাদিনের রোজগার ৮০০ বা ১০০০ টাকা. তাও বা বছরে কদিনই বা হয় সেই রোজগার. বাড়ি ফিরবে সেই সব গ্রামে যেখানে আজো লোকে সারাদিন পরিশ্রমের পরেও জোড়া বাঁশি বাজিয়ে বিনোদনের ব্যবস্থা করে. সেই গ্রামে যেখানে আজো মনসুর আলিরা নিজের ঘোড়ার নাম রাখে শিবাণী.
  • | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১২:৫৫727980
  • বাহ বাহ
  • pi | 192.66.51.175 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৩:৫৭727991
  • ভাল লাগছে। তারপর ?
    ছবিও চাই।
  • Swati | 113.197.80.88 | ০২ মার্চ ২০১৭ ২৩:১০728002
  • গুজরাট - দ্বিতীয় পর্ব

    ছবি কি করে দিতে হয় টা জানা ছিল না বলে গণ্ডগোল :D এতদিনে জানা হয়েছে। এই রইল প্রথম দিনের ছবি। https://postimg.org/image/dz1iobh75/

    দিনান্তরে যাওয়ার আগে আরেকটা কথা না বললে অন্যায় হবে। প্রথম সন্ধ্যায় ছেলে-মেয়েরা সারা দিনের ধকলে ক্লান্ত, ঘুমে কাতর। ওদের ঘরে পুরে দিয়ে আমরা কর্তা- গিন্নি একটু পাড়া টহল দিতে বেরিয়েছিলাম। আমাদের রিসোর্ট চত্ত্বর থেকে বেরিয়েই সামনে রান উৎসবের বিরাট মাঠ। সেখানে কালচারাল প্রোগ্রাম দেখে সময় কাটল কিছুক্ষণ। ফেরার সময় দেখি আমাদের রিসোর্টে ঝকমকে সাজগোজ করা মেয়ে-পুরুষের একটি ছোট দল এসে ঢুকছে। মনে পড়ল আমাদের এখানেও কালচারাল প্রোগ্রাম হওয়ার কথা। রান উৎসবের যে প্রোগ্রাম হচ্ছিল সেটা পাড়ার জলসার থেকে বেশি উন্নতমানের মনে হয় নি। সেই রকমই কিছু একটা হবে ধরে নিয়ে ছিলাম। যা হোক গুটি গুটি পায়ে গিয়ে বসে পড়লাম মণ্ডপের সামনে। ততক্ষণে কনকনে হাওয়া দিচ্ছে। শীতের জামা কাপড় সব ঘরে রয়েছে, বেশ কাঁপুনি ধরেছে তখন। ভাবলাম এই শুরুটা হোক, তারপরই ঘরে গিয়ে কম্বলের তলায় ঢুকব। কিন্তু ওমা! শুরু যে হল, আর পা টা কেমন ওইখানেই সেঁটে গেল।

    যে মেয়েটি ঘোষিকার দায়িত্ব নিয়েছিল, তাঁর কথা একটু বিশেষ উল্লেখের দাবী রাখে। সে আমাদের রিসোর্টের কর্মী বলে জেনেছিলাম পরে। কি অসীম মমতায় সে পুরো অনুষ্ঠানটি চালাচ্ছিল, শিল্পীদের সাহায্য করছিল, উৎসাহ দিচ্ছিল, দর্শকদের জন্য অজস্র তথ্য সুন্দর ভাবে তুলে ধরছিল! আর বারে বারে দর্শকদের বকা খেতে হয়েছিল করতালির কৃপণতার জন্যে। অপেশাদার শিল্পীদের জীবন যে হিমালয়ের চুড়ো ছোঁয় দর্শকের হাততালিতে। গোটা অনুষ্ঠানটি যে এতো মনে ধরেছিল, তার একটা সিংহভাগ মেয়েটির প্রাপ্য।

    বিভিন্ন লোকনৃত্য আর লোকসঙ্গীতের পরিবেশনা। শোনা গেল কচ্ছের একজন স্কুলের হেডমাস্টারমশাই সম্পূর্ণ একার উদ্যোগে স্কুলের পরে ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে লোকনৃত্যের সংরক্ষণের তাগিদে নাচের তালিম শুরু করেন। আজ তাঁর চেষ্টার ফল ফলেছে। কচ্ছের বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিভিন্ন ধরণের নৃত্য আজ রয়েছে এই দলটির সংগ্রহে। মাথায় কলসী নিয়ে বা উলটানো কলসীর উপরে উঠে নাচ - তারও কি সাবলীল ছন্দ। আহা!

    গান / বাদ্যযন্ত্র যারা শোনালেন, জানা গেল তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছেন। গান আমি বিশেষ ভালো বুঝি না, কিন্তু খোলা মাঠের মাঝে ঠিক সুরটি যখন লাগে, আমার মত বেরসিকও কেয়াবাত বলে ওঠে। আর বাদ্যযন্ত্রের তালিকাটিও ভারী মনোগ্রাহী। সেই ভুতের রাজা দিল বরের শুরুর নেশা ধরানো সুরটি মনে আছে? কি যন্ত্রে বাজান হয়েছিল জানেন? আমি তো আনপড়ের মত চিরকাল ভেবে এসেছি যে হবে কোন রাজস্থানী যন্ত্র! সেদিন গুজরাতে বসে মোরচাং এ অবিকল সেই সুর শুনে ভুল ভাঙল। জোড়া বাঁশি ( jodia pawa) র সুরের সঙ্গে সঙ্গতে বসে উলটান মাটির ঘড়া আর স্টিলের বাটিতে তোলা বোল আর সাথ দেয় ছোট্ট ছেলের কর্তাল। দিনের শেষটা বড্ড ভালো হল।

    https://postimg.org/image/etltevt6x/
  • | ০৫ মার্চ ২০১৭ ১৯:৩৬728011
  • প্রথম ছবিটা দেখতে পেলাম না।
    দ্বিতীয়টা এসেছে দিব্বি। এই যে এমনি করে চিপকে দিতে হয়।



    তারপর?
  • সিকি | ০৫ মার্চ ২০১৭ ২৩:৩৭728012
  • স্বাতী,

    ছবির সেই লিংক এখানে দেবে যেটা শেষ হচ্ছে .jpg বা ঐ রকম কিছু ইমেজ ফাইলের এক্সটেনশন দিয়ে। তবেই এখানে ছবি আসবে।
  • d | 144.159.168.72 | ০৬ মার্চ ২০১৭ ১৩:৩৬728013
  • আচ্ছা এই স্বাতী কি সেইই স্বাতী?
  • সিকি | ০৬ মার্চ ২০১৭ ১৫:২৮728014
  • না, এটা অন্য স্বাতী। :)
  • Swati | 127.223.218.240 | ০৭ মার্চ ২০১৭ ২১:৪৮728015
  • কি বখেড়া! একেই একে- ওকে তেল-টেল মেরে ছবি জোগাড় করলুম, তারপর ছবি আছে তবু দেখাচ্ছে না ' র চক্করে পড়ে বড় দুঃখে ছিলাম। সিকিকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।



    আবার ১ নম্বর ছবি টা দেওয়ার চেষ্টা করছি! এবারও যদি না হয়, তাহলে আগামী জীবনটা ছবি হীন :D
  • Swati | 69.97.218.129 | ১১ মার্চ ২০১৭ ১২:২৪727970
  • #গুজরাট - ( ডিসেম্বর ২০১৬ - ২য় দিন )
    নিরোনা গ্রাম. ধোরদো থেকে ভুজের পথে আধাঘন্টা মত দূরে। এক ভারী আশ্চর্য জগৎ। কোন প্ল্যান ছিল না সেখানে যাওয়ার। পথে হঠাৎই থামা। রোগান আর্টের নাম দেখে গ্রামের ভিতর ঢোকা। গাছের আঠার সঙ্গে রং মিশিয়ে কাপড়ের উপর তুলে ধরছে intricate design. শোনা গেল মোটে দুটি পরিবার নাকি এই কাজে দক্ষ। সূক্ষ ডিজাইনের সঙ্গে সুচারু রং এর মিশেলে অসামান্য চিত্রণ। তাই দিয়ে তৈরী হয়েছে ওয়াল হ্যাঙিং, শাল এমনকি শেরওয়ানিও। দামটা একটু বেশি বটে কিন্তু শিল্প হিসেবে অনবদ্য। কলকাতায় শুধু এই শিল্পের নামই শুনেছি। চাক্ষুষ দেখার সৌভাগ্য হয় নি আগে। দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। সরকারী গুজরাট এম্পরিয়ামেও চোখে পড়ে নি। ওঁরা বললেন যে ওঁরা নাকি কলকাতার কোন এক দোকানে শিল্পদ্রব্য পাঠান। কিন্তু নাম বলতে পারলেন না। এদিকে একটু সরকারী-বেসরকারী নজর না পড়লে ভবিষ্যতে শিল্পটি হারিয়ে যেতে পারে। সেটা হলে কি শুধু ওই পরিবারেরই লোকসান? গ্রামেই একটি দুটি পরিবার কপারের পাত দিয়ে ঘন্টা তৈরী করেন। আবার কাঠের উপর ল্যাকার পেন্টিং এর কাজও করেন কয়েকজন। আর সব থেকে ভাল লাগল প্রত্যেকে কিভাবে কাজটি করেন সেটা দেখাতে উৎসুক। এই প্রথাটি কখনো দেখি নি কলকাতার আশেপাশে, এক কৃষ্ণনগরের পটুয়াপাড়া ছাড়া। বড্ড ভাল লাগল।


    তারপর মাতা নু মঠ। আশাপুরা দেবীর মন্দির। মন্দির টি ছোটখাটো। দুপুরবেলা বন্ধ। খানিকটা আমাদের ড্রাইভার বিজয় সিংজী জোর করে নিয়ে গেলেন প্রসাদ নেওয়াতে। মায়ের প্রসাদে না বলতে নেই নাকি। শুধু এই কথাটাই এক রাশ তিক্তভাব মনে সঞ্চার করে। ছোটবেলায় এই এক কথা অনেক তীব্র অপছন্দের খাবার খেতে বাধ্য করেছে। একটা কঠিন ভাবে "না' বলতে যাচ্ছিলাম। শুধু বিজয় সিংজীর আশাভরা মুখের দিকে তাকিয়ে না বলতে পারলাম না। খুবই বিরক্তির সঙ্গে গেলাম। কিন্তু গিয়ে বুঝলাম না এলে একটা অভিজ্ঞতার থেকে বঞ্চিত হতাম। মুগ্ধ হলাম বললে কম বলা হয়। খাবার আয়োজন ভাল। হালুয়া, ভাত, পুরি, ডাল আর তরকারি। সুন্দর রান্না আর কি অসম্ভব পরিচ্ছন্ন। অবশ্য শুধু খাওয়ার জায়গা নয়, গোটা মন্দির চত্ত্বর এমনকি টয়লেট পর্যন্ত কি পরিস্কার! অভাবনীয়। প্রসাদ দেওয়া হয় সকল অভ্যাগতকে, ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে। শুনলাম ওখানকার পুরোন রাজা এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে। দেবী অন্নপূর্ণার রাজ্যে কেউ যেন অভুক্ত না থাকে তাই এই ব্যবস্থা। রাজাকে আন্তরিক অভিনন্দন এত সুন্দর ভাবে সব চালানর জন্য।

    মাঝে আমরা ঢুঁ মেরে ছিলাম একটি ছোট ব্যক্তিগত উদ্যোগে চালান এক ফসিল পার্কে। মোহন সোধা র তৈরী। ছোটর মধ্যে বেশ। তবে সেখানকার ভারপ্রাপ্ত মানুষটি তখন না থাকায় জানা যায় নি বিশেষ কিছু। তবে এই অঞ্চল থেকে যে প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর ফসিল পাওয়া গেছে এটা জানা ছিল। ভাল করে না জানতে পারার দুঃখটা রইল।

    পরের স্টপ লখপত ফোর্ট। দুর্গের পাঁচিলের ত্রিশ কিলোমিটারের মধ্যে পাকিস্তানের সীমানা। সেকারণে এই ফোর্টের পজিসন খুব স্ট্রাটেজিক। বিশাল বড় আর পুরোন এই ফোর্টের ইতিহাস খুব interesting। ভুজের রাজা লখাজী প্রথম এই বিশাল পাঁচিল তৈরি শুরু করেন। সিন্ধুর রাজার আক্রমনের থেকে এই অঞ্চলকে বাঁচানোর জন্য। পরে ফতে মহম্মদ একে বাড়িয়ে আজকের ৭ কিমি লম্বা পাঁচিল তৈরি করেন। যে টুকু গল্প শুনলাম তাতে কিন্তু এই লখাজী বেশ cultivate করার মতন চরিত্রে। বাবাকে বন্দী করে রাজা হন। এঁর আমলেই কচ্ছের নিজস্ব মুদ্রা কড়ি চালু হয়। এই মুদ্রা কিন্তু ব্রিটিশ আমলেও বজায় ছিল। শেষে স্বাধীন ভারতে এসে উঠে যায়। লখাজীর সময়ে সিন্ধু নদী বইত আজকের লখপত ফোর্টের গা বেয়ে। তখন এখানে প্রচুর চাল হত। শুধু চালের থেকেই আট লাখ কড়ি বছরে আয় হত। আর হত সামুদ্রিক ব্যবসা। দেশ-বিদেশ থেকে সামগ্রী এসে পৌঁছত এই বন্দরে, তারপর এখান থেকে ছড়িয়ে পড়ত গুজরাট, রাজস্থানের অন্দরে। দিনে নাকি প্রায় লাখ টাকার কাস্টমস ট্যাক্স আদায় হত। পরে ভুমিকম্প হয়ে সিন্ধু নদী দূরে সরে যায় আর সেই সঙ্গে অস্ত যায় লাখপত দুর্গের সৌভাগ্য। এ সব আমাদের গাইডের মুখে শোনা কথা। ভাল একজন গাইডও জুটে গিয়েছিল কপাল করে. বৈষ্ণব বাড়ির ছেলে. ওদের বংশ নাকি রাজার গুরুবংশ। তবু কি অসীম মমতায় আমাদের খোশ মহম্মদের tomb দেখাল। গোটা গুজরাট জুড়েই চোখে পড়েছে হিন্দু- মুসলমানের সহাবস্থান। সেই একত্র জীবনযাপন কতটা সত্যি সত্যি বন্ধুত্বপূর্ণ, কতটা হিংসাভরা সেটা আমি বাইরের মানুষ হয়ে বিচার করে উঠতে পারি নি। তবে যে দেশের ইতিহাসে দুই সম্প্রদায়েরই এতো অবদান, সেখানে দুজনকে পাশাপাশি বাঁচতে দিলেই ভাল হয়। লাখপত দুর্গের জমিতে ছড়ান একরকম চালের দানার মত ফসিল। গাইড এবং আমাদের বিজয় সিংজীর হিন্দিতে আলোচনার থেকে আমি আমার হিন্দির সামান্য জ্ঞানে যা উদ্ধার করলাম যে এখান থেকে যারা "মরুতীর্থ" হিংলাজ মাতার মন্দিরে যান তারা নাকি এই রাইস ফসিল নিয়ে যান সঙ্গে করে, মাকে নিবেদন করবেন বলে। পরে জিওলজিসট বন্ধুরা বললেন যে গোটা কচ্ছ এলাকা সমুদ্রের তলা থেকে উঠে আসা বলে ভূবিজ্ঞানীদের স্বর্গ! দুর্গে আজো রয়েছে সেই কাস্টমস হাউজের ভাঙ্গা বাড়ি, সৈয়দ পীর শাহের অসম্ভব সুন্দর কাজ করা দরগা ( ছবি রইল), পুরনো লাইব্রেরির ধ্বংসাবশেষ। আর আছে একটি গুরুদ্বার। সেখানে গুরু নানক মক্কা যাবার পথে এসে ছিলেন। সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের একটা ছোট খাট চেহারা দেখাল এই ভেঙ্গে যাওয়া দুর্গ।



    নারায়ণ সরোবর। প্রায় জলহীন সরোবর যদিও। মন্দিরের পিছনদিকের অনতিগভীর পুকুরেও কিছু পরিযায়ী পাখি এসেছে এঁটাই আশ্চর্য।
    আজকের শেষ দর্শন কোটেশ্বরের। সমুদ্রের মধ্যে ঢুকে যাওয়া একফালি স্থলভূমির রেখা। সুজ্জিমামা তখন ডুবি ডুবি করছেন। বিএসএফের জাহাজ ঘুরছে জলে। আর ঘুরছে কিছু পাখী। সারস, সীগাল আরও কিছু নাম না জানা পাখির রাজকীয় ওড়া দেখতে সময় চলে গেল হু----শ করে।
    আমাদেরও সময় শেষ হল। এবার ফেরার পালা। সিমেন্টের কারখানা, অনেক অনেক উইন্ডমিল পেরিয়ে, চলে এলাম মান্ডবী। দিন শেষ। ইতিহাস, ভূগোল সংস্কৃতি আর মানুষ - সব মিলিয়ে দিনটি বেশ মনে ছাপ রেখে গেল।
  • | ১১ মার্চ ২০১৭ ১৪:৩০727971
  • বেশ।
    তারপর?
  • শঙ্খ | 57.15.6.178 | ১১ মার্চ ২০১৭ ১৮:২৮727972
  • পড়ছি। ভালো লাগছে
  • pi | 233.176.111.137 | ১১ মার্চ ২০১৭ ১৯:৫৭727973
  • আমারো ভাল লাগছে।
  • Manish | 113.242.199.189 | ১২ মার্চ ২০১৭ ১০:৩৮727974
  • ভালো লাগছে
  • pi | 57.29.130.199 | ১২ মার্চ ২০১৭ ১১:১৮727975
  • রোগান আর্টের কথা আগে শুনিনি। খুব সুন্দর লাগল। দরগার দরজাও। কী সূক্ষ্ণ কাজ ! এটা কোন ঘরানার কাজ ?
  • i | 131.44.64.82 | ১২ মার্চ ২০১৭ ১১:৪৫727976
  • খুব ভালো লাগছে পড়তে। সাধারণ ভ্রমণকাহিনীর থেকে স্বতন্ত্র।
  • swati | 127.194.35.159 | ১৮ মার্চ ২০১৭ ০০:০১727977
  • @pi ... কোন ঘরানার কাজ জানি না। তবে সৈয়দ পীর শাহ আবু তরব মারা গেছেন ১৮১৬ সাল নাগাদ। এই দরগা তারপরে বানান। আর ইন্দো- ইসলামিক আরকিটেকচারে এমন জালি দেখা যায় - তাই অনুমান করছি সেই ঘরানার ই হবে। তবে কেউ ঠিক মত আলোকপাত করলে খুব খুশি হব।
  • swati | 127.194.35.159 | ১৮ মার্চ ২০১৭ ০০:০২727978
  • সবাই কে অনেক ধন্যবাদ !
  • Swati | 127.194.35.159 | ১৮ মার্চ ২০১৭ ০২:০২727979
  • #গুজরাট ( ডিসেম্বর ২০১৬ - ৩য় দিন)

    আজকের হাইলাইট "যারা পরিযায়ী". ইয়ে মানে ডানাওয়ালা পরিযায়ীদের ( যেমন হেরন, এগরেট, ফ্লামিংগো ) সঙ্গে সেই সব দোপেয়ের কথাও ধরবেন - সেই সব ভদ্রলোকরা যারা লাটসাহেবের সঙ্গে সঙ্গে বাক্সপ্যাঁটরা গুছিয়ে দিল্লি-সিমলা করতেন। তাদেরও আশা করি পরিযায়ীই বলা যায় এক অর্থে। এরকমই এক মানুষ ছিলেন কচ্ছের রাজা বিজয়রাজজী. ক্রিকেটার অজয় জাডেজা এঁর বংশেরই উত্তরপুরুষ। তাঁর যাতায়াত ছিল ভুজ টু মান্ডবী। রাজা গজা মানুষ বলে কথা। এতো আর আমার আপনার গরমের ছুটিতে বেড়াতে যাওয়া না। তাই তার জন্য কয়েক একর জমিতে রুক্ষ মরুভূমিপ্রায় এলাকায় তৈরী হয় হরিৎ উদ্যান। ৫০ হাজার নারিকেল গাছ শোভিত বাগানের মাঝে এক গ্রীষ্মাবাস। বিজয়বিলাস প্যালেস। নাঃ ভিতরটা বিশেষ আলাদা কিছু না। সেসময়ে ইংরেজ আধিপত্য মেনে নিয়ে যারা সুখী রাজার রোলে জীবন কাটিয়েছেন, সেই আর দশজন রাজস্থান গুজরাটের ভূস্বামীর মতই বাড়ি। এঁরা নিজস্ব বুদবুদেই তৃপ্ত ছিলেন। ভারতের প্রথম আড়াই কোটি টাকার মার্সিজিড কেনার আনন্দেই খুশী। সেই শিকারের পশুর স্টাফ্ড দেহ আর বিলাসী সোফা সেট - এসব আমার মন টানে না। বিলাসী অলংকরণ আর আসবাবের মধ্যে বিশেষ কিছুই দেখার পাই না, তা যতই তিনি ত্রিপুরার রাজকন্যা বিয়ে করুন না কেন! যেটা ভাল লাগল তা হল বাড়ির আর্কিটেকচার - রাজস্থানী মিনারের সঙ্গে বাঙালী আটচালার মিল - আগেও দেখেছি , বোধহয় দীঘ প্যালেসে। দুয়ের মিলে বেশ একটা মধুর ব্যাপার. তেমনি সূক্ষ্ম কাজে ভরা ছত্রী ( gazebo). বেশ ভাল লাগল।

    তবে বিলাসের ধর্মই হল তাকে মানুষ নিজের করে দখল নিতে চায়। নাহলে সে তৃপ্তি দেয় না। প্রকৃতি এর ঠিক বিপরীত। সবার সঙ্গে ভাগ করে নিলেও তার স্বাদ কমে না। ঠিক সেটাই মনে হল গোটা মান্ডবী থেকে ঢোলাভিরা প্রায় তিনশ কিমি যাত্রাপথে। অবশ্য মান্ডবীতে সকালবেলার সমুদ্রও সেই প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপের অংশ। সকালের অস্ফুট আলোয় স্যান্ডপাইপারদের (এরই কি বাংলা বালিপাখি?) ভেজাতটে লুটোপুটি খেলা আর সীগালের দীর্ঘ ফ্লাইট - সঙ্গে উটের গায়ে জল লাগায় তার গা ঝাড়া দেওয়া - সব মিলিয়ে এক সরল সুন্দর জীবনের ছবি।

    মান্ডবীর শিপইয়ার্ডটিও এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতা। কাঠের জাহাজ তৈরী হচ্ছে। দুবছর লাগবে নাকি তৈরী হতে - তারপর জমিতে খাল কেটে তাকে ভাসান হবে জলে। হ্যাচরপ্যাচর করে খাড়া মই বেয়ে সেই জাহাজের ভিতর ঢোকা আবার নামা...আমার মত আনফিট মানুষের জন্য সে এক কঠিন পরীক্ষা। তবু দেখার আশা মেটাতেই হয়, যতই মই বেয়ে নামতে গিয়ে বাপঠাকুরদা বা মা- দিদিমার নাম ভুলে যাবার জোগাড় হোক না কেন! নদীর ধারে ওই জাহাজ কারখানার পাশটিতেই চোখে পড়ল রাশি রাশি ফ্লেমিংগো, আইবিস, সীগাল আর হেরন - একেবারে আকাশ সাদা করে উড়ে বেড়াচ্ছে সীগালেরা। এমন দৃশ্য আমার মত ক্যালকেশিয়ানের কাছে অভূতপুর্ব।



    মান্ডবী থেকে রপার এক মোটামুটি শহুরে উন্নয়নের ছবি। আগের দিন লাখপত ফোরটে যাওয়ার সময় হঠাৎ রাস্তায় চোখে পড়েছিল একটি বোর্ড - সেখান দিয়ে নাকি কর্কটক্রান্তি রেখা গেছে। ব্যাপারটা বুঝে " গাড়ি থামাও, গাড়ি থামাও" বলে চেঁচিয়ে উঠতে উঠতেই গাড়ি গড়গড়িয়ে এগিয়ে গেল এক কিলোমিটার। আজ তাই চোখ বড় বড় করে খুলে রেখেছিলাম। ছোট্টবেলা থেকে ভূগোল বইতে পড়া আমার কর্কট ক্রান্তি আর বাড়ির অন্য সকলের tropic of cancer কে আজ আর পেলে ছাড়বো না। কিন্তু আজ আর তিনি দেখাই দিলেন না। বুঝলাম আছেন তিনি, অন্তরালে। তার বদলে দেখলাম চওড়া, ঝাঁ চকচকে রাস্তা আর বহু দূর ছড়ান উড়ালপথ। যোজন পথ পেরিয়ে যায় নিমেষে। এমন পথ দিয়েই বুঝি লালকমল নীলকমল তেপান্তরে পাড়ি দিত!

    এই যাত্রাপথের কয়েকটি জিনিষ না বললে ভুল হবে। আমাদের সারথি বিজয় সিংজীকে বিবিধ ভাবে ঠারে ঠোরে বোঝান হচ্ছে যে আমরা ঠিক ভক্তিমান মানুষ নই, মন্দিরে আমাদের ততটা আসক্তি নই। তবু তিনি সে কথা বুঝতে নারাজ। খানিকটা জোর করে আমাদের ঠেলে পাঠালেন, ভদ্রেশ্বরে এক জৈন মন্দির দেখতে। বিশাল বড় মন্দির কমপ্লেক্স। ঝকঝকে তকতকে। ঘন সবুজ না হলেও এখানে ওখানে গাছেরা ছায়া দিচ্ছে। আর সেই বিশাল চত্ত্বরের মাঝে এক অপরূপ জৈন মন্দির। মার্বেলে, লাল পাথরে এক তুলিতে আঁকা ছবি যেন। মূল মন্দির আর তার চারপাশ দিয়ে ঘেরা ছোট ছোট মন্দির। তাতে নাকি ৫০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের পার্শ্বনাথের মূর্তি আছে। আমাদের হাতে সময় ছিল কম। আর সামনে দীর্ঘ যাত্রাপথ। তাই তাড়াহুড়ো করে দেখে বেড়িয়ে এলাম। ইতিহাসটা তখন জানতাম না, পরে জানলাম যে এই শহর নাকি মহাভারতের আমলের। তখন এর নাম ছিল ভদ্রাবতী। পরে নাম পালটে ভদ্রেশ্বের হয়। লোকে এও নাকি বলে যে ওই মন্দিরের আদি অংশ নাকি আড়াই হাজার বছর আগে মহাবীর মারা যাওয়ার পর পরই তৈরি হয়। একদম বিশ্বাস হয় নি মশাই! আমাদের বাংলা দেশে পঞ্চাশ বছর আগে তৈরি হওয়া বাড়িতে জায়গায় জায়গায় ফাটল ধরে, নোংরার চোটে পা ফেলা যায় না- আর সেখানে নাকি একটা আড়াই হাজার বছরের পুরোন মন্দির অমন চক চক করছে! ছবি তুলতে দিল না, এই যা দুঃখ!

    তবে মন্দিরের থেকেও যেটা বেশি আকর্ষণীয় লেগেছিল, সেটা বলি। আমরা যখন মন্দিরে ঢুকছি, তখন এক মাঝবয়সী সম্ভ্রান্ত চেহারার ভদ্রলোক ভদ্রমহিলা এসে মন্দিরের বিগ্রহের সামনে বসলেন। ভদ্রলোক ধুতি পরে, উর্দ্ধাঙ্গ চাদরে ঢাকা। মহিলা ঘাঘরা, ওড়না গায়ে। মহিলার হাতে একটি বাক্স। ভদ্রলোকের হাতে একটি ছোট পিঁড়ি। দুজনের সামনে পিঁড়িটি পাতলেন। তারপর সঙ্গের বাক্সটি থেকে একটি চৌকো আয়না বার করলেন। এরপর আয়নার উপরে একমুঠি চাল দিলেন। দুজনে সেই আয়না ধরে কিছু প্রার্থনা করলেন. তারপর সেই চাল ঢেলে দিলেন সামনের পিঁড়ির উপর। আচার্যহীন এই নিজস্ব পুজো পদ্ধতিটি বড় অভিজাত লাগল। খুব ইচ্ছে হচ্ছিল ওঁদের সঙ্গে কথা বলি, জেনে নেই ওঁদের বিশ্বাস সম্বন্ধে। কিন্তু নাগরিক মন জেগে উঠে বাধা দিল। যদি ওঁরা আমাকে ওঁদের ব্যক্তিগত গণ্ডীতে অনুপ্রবেশকারী বলে ভাবেন!

    আর যেটা না বললে আমাকে বাঙ্গালী নামের কলঙ্ক বলে ভাববেন সবাই, সেটা হল দুপুরের খাওয়ার গল্পটা। সেদিন ঠিক হয়েছিল গুজরাটি থালি খাওয়া হবে। বিজয় জীকে বলতে অনেক গুগল ম্যাপ দেখে নিয়ে গেলেন গান্ধিগ্রামের হোটেল শিব রিজেন্সিতে। বাইরে থেকে দেখেই ভাবলাম যাহ বাবা, এতো পকেটে একটা গভীর ফুটো হবে। অনেক বেলা হয়েছে, তাই আর না ভেবে ঢুকেই পড়লাম। এক বেশ বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ। খাতিরদারি শুরু হল খুব। শুরুতেই একটা ছাচ। দারুণ খেতে। চটাপট পদ আসছে। কত যে পদ একসময় কাউনট হারিয়ে গেল। খেয়ে ফুরতে পারছি না। পাশে একজন দাঁড়িয়েই আছে। আর দুজন ছোটাছুটি করে রান্নাঘর থেকে খাবার আনা নেওয়া করছে। ছোট্ট ছোট্ট বাজরার রুটি ঘি মাখিয়ে দিচ্ছে - পাতে আর পড়তে পায় না, এত সুস্বাদু! আমার পুণার হোস্টেলে এক সময় মেনু তে ভাকড়ী থাকলে আমরা নো মিল করে দিতাম। তাই শুনে আমার কলিগ আশু বলেছিল, সেকি তোমরা ভাকড়ি ভালোবাস না! আম্মরা তো বাড়ি শুদ্ধ সবাই খুব ভালবাসি খেতে - মা উনুন থেকে নামিয়ে ঘি মাখিয়ে গরমাগরম এনে দেন আর আমরা এক নিমেষে শেষ করি। সেই কথাটাই মনে পড়ল ওই শিব রিজেন্সী তে খেতে বসে। সত্যিই অমৃত। চেটেপুটে থালা শেষ করে তখন সবার খেয়াল হল , ইস এত ভালো ভালো খাবারের ছবি তোলা হল না! আর কিনা এতো খাবারের পর বিল এল মাত্র হাজার টাকা। চারজনের জন্য।

    রপারের পর থেকে চারপাশের ছবি পালটে আবার রুক্ষ মরুভূমির চেহারা নিতে থাকল। আমরা আবার রাণে ঢুকছি। আমার সমান লম্বা মনসার ঝোপ। মাঝে মাঝে আকন্দ আর বাবুলের (acacia) ঝোপ। আর তারপর সেই অপার্থিব দৃশ্য। দিগন্ত ব্যাপী নাবাল জমিতে চিকচিকে নুনের রাশির মধ্যে দিয়ে রাস্তা চলেছে কাদির বেটের দিকে। আর তার মাঝে এসে নেমেছে হেরনের দল। এই ছবি চোখে নিয়ে পৌঁছে গেলাম ধোলাভিরা। একরাতের গ্রাম্যজীবন । বহুদিন পরে আবার একটা রাত কাটবে তারা দেখে আর টেলিভিশন হীন পারিবারিক সঙ্গের অনুভবে।

  • de | 192.57.89.126 | ১৮ মার্চ ২০১৭ ২৩:৩৪727981
  • খুব ভালো লেখা হচ্ছে - আপনি কি গুজরাত উৎসবের সময় গেছিলেন?
  • swati | 127.223.216.13 | ১৯ মার্চ ২০১৭ ০১:০৭727982
  • অনেক ধন্যবাদ। আমরা গিয়েছিলাম ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে। তখন রাণ উৎসব চলছে। যদিও একটা আশা মেটে নি। শুনেছি জ্যোৎস্নারাতে রানের রূপ অপার্থিব। সে দেখার সৌভাগ্য হয় নি।
  • S | 184.45.155.75 | ২১ মার্চ ২০১৭ ১৫:০৩727983
  • আরো ছবি চাই।
  • S | 184.45.155.75 | ২১ মার্চ ২০১৭ ১৫:১৫727984
  • তুল্লাম।
  • swati | 192.69.231.120 | ২৩ মার্চ ২০১৭ ০০:২০727985
  • এই রে!আমি তো আবার এই তুললাম এর মানে বুঝলাম না!
  • swati | 127.194.38.110 | ২৫ মার্চ ২০১৭ ২৩:৪৪727986
  • #গুজরাট ( ডিসেম্বর ২০১৬ - ৪রথ দিন)

    ছোট্টবেলায় একটা বই হাতে এসেছিল "সে অনেক কালের কথা" । পাতলা চটি বই , NBT র। হরপ্পা মহেনজোদারোর যুগের কথা গল্প করে করে বলা। সেখানে একটি ছোট ছেলে ছিল যার বাবা দেশে বিদেশে বাণিজ্য করেন। সেই ছেলেটির চোখ দিয়েই দেখে ওর আশেপাশের দুনিয়ার গল্প বলা ছিল। আজ ধোলাভিরার আর্কিওলজিক্যাল সাইটে দাঁড়িয়ে আমি যেন ওই ছেলেটিকে দেখতে পাচ্ছিলাম। ইতিহাসের পাতায় যেটুকু সিন্ধু সভ্যতার কথা পড়েছি সে নেহাতই সামান্য। তাও পড়েছি তো শুধু হরপ্পা আর মহেঞ্জোদারোর কথা। নিজের দেশের মধ্যে গুজরাটে যে খনন করে সেই আমলের সভ্যতার এতো কিছু নিদর্শন পাওয়া গেছে সে কিন্তু কোন ইতিহাস বই বলে নি। অবশ্য ঘরের কাছের মোগলমারির কথাও যখন সেই ইতিহাস বই বলে নি, তখন আর আশ্চর্য কি!



    ধোলাভিরার আর্কিওলজিক্যাল সাইট এক বিশাল অঞ্চল জুড়ে। অগোছালো ভাবে বেড়ে ওঠা শহর নয়, রীতিমত প্ল্যান করে তৈরি শহর। সুন্দর ভাবে পরিকল্পনা করা নিকাশী ব্যবস্থা, জলাধার, জল পরিশোধনের উপায়, শস্যাগার, কেন্দ্রীয় উপাসানাগার, স্নানাগার, দুর্গ, আলাদা আলাদা ভাগে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেনির মানুষের বাস - সবই এক বৃহত্তর নগর পরিকল্পনার অংশ। এখানেই নাকি পাওয়া গেছে পৃথিবীর প্রাচীনতম সাইন বোর্ড ( প্রায় তিন মিঃ লম্বা ) - দশটি অক্ষরে রাজার নাম, উপাধি লেখা। সাতটি সময়কালের মনুষ্যবাসের হদিস মিলেছে এখানে। কেন যে এ শহর পরিত্যক্ত হয়েছিল তার কোন নির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা নেই। একটি থিয়োরি হল যে এখানকার এত কঠিন জলবায়ুতে থাকা দুস্কর হয়ে ওঠায় ধীরে ধীরে লোকে আরও পূর্ব দিকে চলে যেতে থাকে। তখন এই শহর গুরুত্ব হারিয়ে ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

    হরপ্পান সভ্যতার অসম্ভব উন্নত শহর প্ল্যানিং নিয়ে আমার আর নতুন করে কিছু বলার নেই। আমার যেটা খুব অবাক লাগে জীবনযাপনের মূল ধারাটি এই সাড়ে তিনহাজার বছরেও পাল্টানো না। সেই একই ডিজাইনের বাসনপত্র, খেলনা আজও চলছে। সেই বাহ্যিক সজ্জার প্রতি আকর্ষণ - পুঁতির, দামী পাথরের, শঙ্খের গহনা তখনো মেয়েদের চোখের মণি ছিল। আজও কি আর সেই আকর্ষণ কমেছে এতটুকুও? বদলায় নি সেই ক্ষমতায়নের নীতি ও প্রয়োগ, সেই সামাজিক শ্রেণীবিভাগ .... সেই ট্র্যাডিসন সমানে চলিতেছে।





    ওখানেই একটি ছোট মিউজিয়াম আছে - সেখানে এক ঝলক চোখ বোলাতে মন্দ লাগে না। আমাদের গাইড বললেন যে ওখানে নাকি আরেকটি সাইট আছে যেখানে খনন করে আরো অনেক কিছু পাওয়া গেছে। কিন্তু সেখানে নাকি কোন দেখানর ব্যবস্থাই নেই। কেন এতো অবহেলা কে জানে! তবে একটা কথা না বলে পারছি না। আমরা যখন বেড়াতে গেছি তার দুমাস আগেই হয়েছে ডিমানিটাইজেসন। কথা প্রসঙ্গে আমাদের সেই গুজরাটি গাইড এই সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে প্রায় তুলোধুনে ছেড়ে দিলেন। ওঁদের নাকি নিকটতম ব্যাঙ্ক হচ্ছে রপারে, প্রায় ৯০ কিমি দূরে। যেতে আসতে গোটা দিন লাগে। কাজেই অবস্থাটা সহজেই অনুমেয়। ভাবলাম আমাদের সব থেকে প্রগতিশীল রাজ্যেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে তো বাকী দেশের কথাই নেই। গ্রামীন অঞ্চলের সুযোগ সুবিধা যদি শহরের কাছাকাছি না হয় তাহলে গ্রাম থেকে শহরে এক্সোডাস কখনোই বন্ধ হবে না। শুধু শহর ভিত্তিক হলে সভ্যতা কি দাঁড়াবে?

    ধোলাভিরা. অর্থাৎ সাদা কুয়ো। যদিও এখানকার মাটির রং অদ্ভুত গোলাপি। কেন জানি না, ছিলাম ট্যুরিজম সেন্টারে - একদম পছন্দ হয় নি জায়গাটা। বোধহয় ছোট জায়গায় বেশি লোকের ভিড়ের জন্যই. আর অসম্ভব indifferent আর ক্যালাস আতিথ্যবোধের জন্য। এক রাত্তির কাটান যায় এই আর কি। কিন্তু আসা যাওয়ার পথের সৌন্দর্য অসামান্য। ফেরার পথে white rann র সব টুকু সৌন্দর্য শুষে নিতে নিতে চলে এলাম "লিটল রান অব কচ্ছ"। জোগদের eco tour camp।

    Internet র দৌলতে সন্ধান পেয়েছিলাম এই জায়গাটার। ক্যাম্প চালান দেবজীভাই ধামেচা বলে এক ভদ্রলোক. তিনি একজন ইকোলজিস্ট এবং wild life ফটোগ্রাফার। প্রোফাইলটি পড়ে খুব interesting লেগেছিল। তাই বুক ঠুকে অগ্রিম বুক করে দিয়েছিলাম। শুনেছিলাম স্থানীয় সল্ট ওয়ার্কাররা ক্যাম্প চালায়। তাই সাধারণ গুজরাটি খাবার আর সিম্পল জীবনের বাইরে কিছু যেন আশা না করা হয় এটা আগেই বলা ছিল। কিন্তু এসেই আন্তরিক অভ্যর্থনায় প্রাণ ভরে গেল। পৌঁছানর ঠিক পরেই বেরিয়ে গেলাম সাফারিতে। সঙ্গী হলেন দেবজীভাইএর বড়ছেলে অজয়। যিনি নিজেও একজন খুব ভালো ফটোগ্রাফার। বিখ্যাত wild ass sanctuary । আসার আগে প্ল্যানিং পর্বে যখন বোঝা গেল যে আমরা সৌরাষ্ট্র আর কচ্ছ একসঙ্গে কিছুতেই দেখে উঠতে পারব না এত কম সময়ে, তখন আমরা গিরের বদলে LRK বেছে নিয়েছিলাম। এটা যেই শুনেছে সেই অবাক হয়েছে। আজ সাফারির পরে বুঝলাম একদম ঠিক সিদ্ধান্ত। নিজের এলাকায় একটি গাধাও যে এত রাজকীয় হয় তা এই wild ass sanctuary না দেখলে বুঝতাম না। গাধা ছাড়াও দেখলাম নীলগাই। তাদেরও প্রাণে ভয়ডর নেই মোটে। আর রাশি রাশি পাখি তো আছেই - হেরন, স্পুনবিল, সাদা পেলিক্যান, ডালমেসিয়ান পেলিকান, এগরেট, পেইন্টেড স্টর্ক, কমন ক্রেন, গ্রে হেরন, লার্ক, gadwal আরও কত কি! আমি মোটেই পক্ষীবিদ নই। কাক আর চড়ুই ছাড়া বিশেষ একটা দেখে চিনিও না। কিন্তু খুব ভাল লাগে পাখিদের নির্ভয়ে স্বচ্ছন্দ বিচরণ দেখতে। পড়ন্ত সূর্যের আলোয় পাখিদের দলবেঁধে ওড়া দেখতে দেখতে যখন ফিরে আসছি, দেখি বাবুল গাছের সামনে ঘাসের বিছানায় বসে আমাদের দিকে টুকুর টুকুর তাকিয়ে আছে শেয়াল মশাই। ভয় ডর নেই কো প্রাণে মোটেই - জিপ নিয়ে আরো কাছে যেতে তিনি উঠে ঝামর ঝমর লেজটি দুলিয়ে দুলকি চালে হাঁটা দিলেন গাছের আড়ালে।

  • i | 134.171.21.221 | ২৬ মার্চ ২০১৭ ০২:৩১727987
  • খুব ভালো লাগছে আপনার এই লেখা।
    কালই পড়ছিলাম ১৭ ই মার্চের দেশে গ্রেট রন অফ কছ নিয়ে লেখা ভ্রমণ কথা-দিকশূণ্যপুর ও কালো ডুঙ্গর। ছোটো লেখা, ছবি রয়েছে বেশ কিছু। একবার মনে হল, ঐ লেখক আর আপনি একই ব্যক্তি কী না। তারপর মনে পড়ল আপনি লিখেছেন রনে জ্যোৎস্নারাত আপনার অদেখা রয়ে গেছে। দেশের লেখায় কিছুটা বর্ণনা পেলাম সেই চন্দ্রমার।

    আপনি লিখুন। খুবই ভালো লাগছে-আবারও বলি।
  • swati | 127.194.38.110 | ২৬ মার্চ ২০১৭ ০৯:৩৮727988
  • অনেক অনেক ধন্যবাদ।

    দেশের লেখাটা আমিও পড়েছি। খুব সুন্দর লেখা।
  • Pi | 57.29.242.16 | ২৬ মার্চ ২০১৭ ১৬:২৭727989
  • পড়তে খুব ভাল লাগছে। কত কিছু জানিনা।
    পরের কিস্তি কই ?

    আর মোগলমারির কথাও শুনতে চাই কখনো।
  • de | 192.57.69.229 | ২৬ মার্চ ২০১৭ ২০:৪৫727990
  • দেশের লেখাটা আমিও পড়ে আপনার কথাই ভাবছিলাম -
    তবে জোৎস্নারাতের ছবি ওখানেও নেই।
  • swati | 127.194.45.12 | ২৭ মার্চ ২০১৭ ২৩:২৩727992
  • থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু! পরের কিস্তি লিখছি! ... মোগলমারি নিয়ে লেখার শখ অনেক দিনের। কিন্তু একটু বৌদ্ধ যুগের ইতিহাস পড়তে হবে তার আগে, সময় লাগিব যে।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন