এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • শুশুনিয়াকথা

    SEPA লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৮ অক্টোবর ২০১৩ | ১০৩৪ বার পঠিত
  • শুশুনিয়াকথা
    ______

    [থিয়েট্রিক্স-সেপার এবারের ওয়ার্কশপ]

    (১)
    যেখানে ছিলাম তার ঠিক পেছনের দিকটায় একটা পাহাড় উঠে গিয়েছে ঢেউ খেলানো মালভূমির জমি ফুঁড়ে। সারা গায়ে তার গাছের পোশাক। সবুজ আর সবুজ। তার মাথার উপর দিয়ে সীমানাহীন একটা আকাশ ঝুলে আছে, খুব লঘু হয়ে যেন। দেখতে চেয়েছে আমাদের খেলাধূলো। যখন যেমন আমরা বদলাচ্ছি সেও বদলাচ্ছে তার মেজাজ। ভোরের ঘুম জড়ানো ভার কাটিয়ে দিনের মধ্যে প্রখর হয়ে উঠছে। তার ঘুমের আলস্যর পাশ দিয়ে ছেলেমেয়েরা হেঁটে গিয়েছে পাহাড়ের চূড়োয়। বেশ কিছুটা নিয়মিত পায়ে চলার পথের হালকা খাড়াই একটা সময় তীব্র হয়েছে। বেড়েছে দিনের রোদও। নামার পথে অনেকের বুক কেঁপেছে। একটু এদিক ওদিক হলেই ঠিকরে একেবারে নীচে। বন্ধু কেমন যেন শত্রু হয়ে উঠছে! চেনা কেমন অচেনা হয়ে উঠছে! তবু তাকে পেরিয়েই নেমে আসা। সকালের জলখাবারের শেষে নাট্য মহড়ার শুরু। একদল মহড়ায়। অন্যদল অন্যান্য আয়োজনে ব্যাস্ত। রোদ তীব্র হতে হতে হঠাৎ ভারী মুখ নিয়ে বসে পড়লো থেবড়ে আকাশজুড়ে, মেঘ হয়ে। আমরা কেন তাকে দেখছি না এমন এক শিশুর অভিমানে! আমরা শুধুই ব্যাস্ত আমাদের কাজ নিয়ে। তখন মুখ ফেরাতেই হয়। মহড়ার পালা শেষ করে নেমে পড়তে হয় জলে। জলের মধ্যে এসে পড়েছে পাহাড়ের ছায়া। মাথার উপরে টাঙানো আকাশ তার সঙ্গে কে বড় কে বড় খেলছে! আমরা জলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত সাঁতারে, ডুবে, খেলায়। সময় ঘুড়ির মত ভোঁ-কাট্টা হয়ে যাচ্ছিল আর কি! তখন, ঠিক তখন খিদে, আদিম খিদে জানিয়ে দেয় তার অস্তিত্ব আমাদের।

    জল ছেড়ে জলপিপিপনা ছেড়ে আমরা খাবার ঘরে। ভাত, ডাল, আলুসেদ্ধ মাখা, পোস্তর বড়া। পাশে স্যালাড, লঙ্কা আর বিটনুন। শেষ করার জন্য হাপিত্যেস করে আছে ডিমের ঝোল। পোস্তর স্বাদ জিভ ছাড়াতে না ছাড়াতেই তার ঝাঁপ। একটু আটকে যেতে হয়। কেমন একটা বালি উঠে আসে প্রত্যেক গরসে। বালি কেন খাবারে? ভাতে নেই, ডালে ছিল না তত, তাহলে ডিমের ঝোলে কেন? রহস্যটা পরিস্কার হবে ফেরার দিন রাতে। হলুদ ক্ষেত থেকে তুলে তার তৈয়ারী হয়। বালিমাটির বালি মিশে যায় সেই হলুদে। তার কিছু উঠে আসে আমাদের মুখে। আপনমনেই মুচকি হাসি। তিনদিনে আমার খেতে কি অস্বস্তি, আর এই খেয়েই চলছে এখানে বছরগুলো। বিকেল গড়িয়ে আসে। খোলা মাঠের মধ্যে আমরা নেমে পড়ি। সকাল থেকে চিতি সাপের আনাগোণা চলছে সেখান দিয়ে। বিষ আছে। কামড়ালে সাত থেকে বারো ঘন্টার মধ্যে হাড়ের গাঁটগুলো ও পাকস্থলীতে দারুণ ব্যাথা শুরু হবে। সঙ্গে পেট কামড়ানোও। তো, তার মধ্যে যদি অ্যান্টি ভেনাম না জোটে তাহলে...!

    ফলে বাগানের আশেপাশে খানিক দাপিয়ে নিয়ে শুরু হয়ে যায় বৈদিক একটি নাট্যের অংশপাঠ ও প্রশিক্ষণ। ঋগ্‌বেদের নাট্যাংশ এটি। যাঁরা তখন কাজটা করতেন তাঁদের তো অরণ্যের মধ্যেকার আশ্রমেই করতে হত। সাপ কি সিংহ তা নিয়ে খুব বিলাসিতার সুযোগ ছিল না। ধীরে ধীরে বেদের ছান্দস আর তার বাংলা অর্থ বোঝার পালার মধ্যেই সূর্য লাল হয়ে ওঠে। তার এবারে যাবার সময়। সন্ধে নেমে আসে বনবাংলোর আশেপাশে। মন্ত্রীর গাড়ি, এস এল আর-ধারী দেহরক্ষী, উর্দি পরা বনবিভাগের কর্মচারী, অনতিদূরের স্পঞ্জ আয়রণ কারখানার অবিশ্বাস্য দূষণ, আশেপাশের একটি বর্ধিষ্ণু আর অন্য সব হত দরিদ্র অথচ সুন্দর পরিচ্ছন্ন গ্রামগুলোর মাথার উপরে কালো রং এঁকে দেয় কেউ যেন। সব সমান, সবাই সমান!

    সব সমান? সবাই সমান? আমরা বলি। আধুনিক ও প্রগতিশীল আমরা বলি। সঙ্গোপনে সকলে মানি না। প্রকাশ্যে কেউ কেউ মানেন না। সে সব থাক! যা মানা না মানার বাইরে তা হল মানুষ অন্যান্য জন্তুদের মতনই একটি জন্তু। তার মানুষ বলে যে স্বপরিচিয় তা অর্জন করতে হয়। সে অর্জন তো একদিনে সম্ভব না। অনিচ্ছেতেও সম্ভব না। ইচ্ছেতেই আমরা এমন কর্মশিবির সাজিয়েছি। সেখানেও মাপকাঠি থাকে। থাকবেই। কে কতদূর 'আমিত্ব' আর 'মনুষত্ব'-র ফারাক রেখাটি টানবে। তাই কিছু ঠিক হবে, কিছু ভুল। হবেই। ভুলগুলোকে বুঝে তাকে পেরোলে, ঠিকের সংখ্যা কিছু বাড়ে। এবং আজ যা ঠিক তা কালকের ভুলে পরিণত হবে সে কথাটাও কিছুটা বোঝা যায়। বোঝার জন্য আমরা একটা নাট্যানুষ্ঠান করবো। রাত্রে। গভীর, গহীন রাত্রে। পাহাড় আর জঙ্গলের মধ্যে প্রাথমিক অর্জনগুলোকে সম্বল করে করবো। তার আগে সন্ধের মহড়া চলবে অন্য একটি প্রসেনিয়াম প্রযোজনার। রাত ঘনাক, আমরা ফিরে আসবো আমাদের শুশুনিয়া কথায়। বাকী অর্জন আর বাকী শিক্ষা নিয়ে ফিরে আসবো। আজ, কাল বা পরশু হবে সেই জঙ্গল-পাহাড় আর বৈদিক নাট্যের কথা।

    (২)

    যখন আমরা বাঁকুড়া স্টেশনে নেমেছিলাম তখন ভোর হবে হবে করছিল। গাড়ি নিয়ে একপ্রস্থ দরাদরির পরে রওনা হওয়া গেল যখন তখন থেকেই আমাদের চিন্তা-চেতনায় ছিল শুশুনিয়া আর সামনের দিনকালগুলো। রাস্তাজুড়ে ছিল কাশের সারি। শরত সাজতে বসেছিল আমাদের জন্য। যে সম্পদ সে পথে পথে ছড়িয়ে রেখেছিল সেই সম্পদ কুড়িয়ে নিতে নিতে কেউ কেউ যাচ্ছিল। কেউ তখনো মগ্ন মাথার ভেতরের ফেলে আসা শহরের অভ্যাসে। এই করতে করতেই এক সময়ে পৌঁছে গেছিলাম বন বাংলোয়। পাহাড়ে গেলো কেউ কেউ, কেউ কেউ চলে গেল মহুয়া আর হাঁড়িয়ার খোঁজে। সামনের শুশুনিয়া গ্রামের থেকে এসেছিলেন আমাদের এক বন্ধু। পর্বতারোহী তিনি। পার্থ কর্মকার। সেই বন্ধুটি আমাদের আঞ্চলিক গাইড ও সহযোগী হয়ে উঠলেন। তাঁর নিবাস যে গ্রামে সেই গ্রামটি পাথরের কাজের জন্য ভারতবর্ষে বিখ্যাত। সে গ্রামের ৯০% মানুষ পাথরের মূর্তি তৈরী করেই জীবিকানির্বাহ করেন। মূলত সে সমস্ত মূর্তি হিন্দু দেবদেবীর। বেশ কিছু শিল্পী আছেন যাঁরা রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত। ঘুরে এসেছি তাঁদের কর্মশালাও। উপার্জন বেশ ভালই হয়েছে তাঁদের। অন্যান্য গ্রামগুলির তুলনায় ওখানকার গ্রামে পাকা বাড়ির সংখ্যা অনেক বেশী। কম করেও ৮০% বাড়িই পাকা এবং দোতলা-তিনতলা বাড়ি বেশ সংখ্যায় রয়েছে। আগে শুশুনিয়ার থেকে আনা পাথরে তাঁরা মূর্তি বানাতেন। কিন্তু এখন সেখান থেকে পাথর আনা আইনত দণ্ডণীয়। তবু কি পাথর আসে না? আইনী পথে রাজস্থান থেকেও আসে মার্বেল পাথর। কিন্তু শুশুনিয়ার থেকেও আসে। বনবাংলোর গা ঘেঁষে যে পাহাড় উঠে গিয়েছে তার নীচের ঝিলটির কথা বলেছিলাম। সেই ঝিলের ঠিক পেছন দিয়েই চলে গিয়েছে সরু একচিলতে জঙ্গুলে পথ। দু পাশের জঙ্গলে ঢাকা থাকে বলে প্রায় দেখা যায় না। সেই পথ দিয়ে পাহাড়ের উপরে উঠে যান স্থানীয় শ্রমিকরা। তাঁরা হাতুড়ি আর ছেনি দিয়ে পাথর কাটেন। যখন যেমন লাগে। কখনো ছোট পাথর, যা দু জনে বয়ে আনা যায়। কখনো এক পাথরে গড়া বড় মূর্তির জন্য বিরাট পাথর, বয়ে নিয়ে আসেন আট-দশজনে। নিঃশব্দে কাজটা হয়ে যায়।

    এর আরেকটা দিকও আছে। দিকটা হল ধর্মের। শুশুনিয়া গ্রাম সংলগ্ন অঞ্চলে ধর্মীয় বিধিনিষেধ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পাহাড়ের ঠিক নীচেই পাহাড়ের মাটি ফুঁড়ে উঠে এসেছে একটি প্রস্রবণ। ভূস্তরের নীচ থেকে আসা সেই প্রস্রবণের জল নানা খনিজে সমৃদ্ধ। সে জল পান করলে হজম সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা মিটে যায়। যাই খাওয়া যাক না কেন তা হজম করিয়ে দেবার মতন ক্ষমতা এই জল রাখে। সে কারণে অঞ্চলের লোকেরা এই জলকে অত্যন্ত পবিত্র মনে করে থাকে। সেখানে ধীরে ধীরে মন্দিরও গড়ে উঠেছে। তার সেবায়েতও রয়েছেন। প্রতি শনি বা রবিবার সেখানে বেশ একটা বড় ভীড় হয়। কখনো কখনো পনেরো-বিশ হাজার লোকেরও সমাগম হয়। জেলা উন্নয়ন সমিতি জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতি বোতল জল পিছু দুটাকা করে নিলেও অঞ্চলের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য সাধারণের ব্যবহার্য্য শৌচালয় বা অরণ্য অঞ্চলকে ঠিকভাবে পরিস্কার রাখার কাজে চিরকালই গাফিলতি দেখাচ্ছে। আবার ঠিক উল্টোদিকেই রয়েছে মাংস সংক্রান্ত নানা নিষেধাজ্ঞা। শূয়োরের বা গরুর মাংস নিয়ে বেশ একটা ট্যাবু দারুণভাবে প্রচলিত সেখানে। রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুপ্রবেশও বেশ দেখার মতন। হিন্দুত্বের অ্যাজেণ্ডাটা ওখানে হোটেল মালিক, পাথরের মূর্তি গড়ার কারিগরদের যোগসাজশে বেশ বিস্তৃত হয়েছে। যাঁরা দেবদেবীর মূর্তি বানান তাঁদের দেবভক্তি বজায় রাখার দায় আছে। যাঁরা হোটেল চালান তাঁদের দায় আছে প্রতি শনি-রবিবারের যে জল নিয়ে মেলা হয় সেই মেলাকে চালিয়ে রাখার। দুপক্ষই এখানে উপকৃত। সুতরাং বিধান বেশ কড়া। আর সেই বিধানের চাপে পিষ্ট হচ্ছেন দলিত মানুষজন। নাচ-কাঠির এক শিল্পি অত্যন্ত কুন্ঠার সঙ্গে জানালেন তাঁরা এখনো প্রায় জল-অচল। সরকারের একশো দিনের কাজের প্রকল্পের সুবাদে কোনো রকমে কাজ পেয়ে টিকে আছেন সেখানে। কিন্তু স্থায়ী হবার সম্ভাবনা বেশ কম। আর তাঁদের অনুষ্ঠানও কমে গিয়েছে। যেমন নাকি মূলবাসীদের শিকার উৎসব ঘিরে শুরু হয়েছে অসংখ্য কড়াকড়ি। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন যাতে তারা না ভাঙে তার জন্য পুলিশি পাহাড়ায় পাহাড় ঘিরে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে শিকার উৎসবের দিনে। বুনো শূয়োর, কখনো কখনো দাঁতাল হাতি, কালেভদ্রে চিতা, বনরুই, নানা পাখির প্রজাতি এখনো রয়েছে পাহাড় ও তার পাদদেশে। মূলবাসীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও তাঁদের গ্রাম সভার দখল নেই। সুতরাং অরণ্যের অধিকার আইনের ব্যবহার তাঁরা করতে পারছেন না। শিকার যেমন তাঁরা করতেন তেমনই অরণ্য ও পশু সংরক্ষণও তাঁদের মাধ্যমেই বহু অরণ্যে বেশ ভালই ঘটেছে। গোটা পৃথিবীজুড়েই এই পরীক্ষা অনেক বেশী সাফল্য পেয়েছে পুলিশ পাহারার চেয়েও। তবু ওখানে এখনো তার প্রয়োগ তেমন করে শুরু হয়নি বলেই দেখে এলাম। এই ধর্ম, অরণ্য সম্পদের দখল এবং মানুষের অধিকারকে মাথায় রেখেই যাবার পথেই আমরা প্রযোজনার বিষয় নির্বাচন করেছিলাম। বেদ মানেই শুধু ধর্মাচরণ না, বেদ মানে এক সামাজিক ইতিহাসও বটে, দলিলও। ঋগ্‌বেদের যম-যমী সূক্তটি দেব-দেবীর আখ্যান বিহীন এক সাধারণ মানুষের কথা, যা তার কামনা-বাসনা-সম্পদের চলন ও সমাজ গঠনের পরম্পরার দলিল। পরের পর্বে লিখবো সেই নাট্য প্রযোজনার অভিজ্ঞতা।

    (৩)

    এখানে আসার পথে ভাবছিলাম ধর্ম নিয়ে। মানুষের, মানে হোমো স্যাপিয়েন্স আর নিয়েনডারটালের ডি এন এ তো আলাদা হয়ে গিয়েছে ৫ লক্ষ বছর আগে। হোমো স্যাপিয়েন্স কথাটার ল্যাটিনে 'বিবেচক মানুষ' অর্থ। তো সেই বিবেচক মানুষ ধর্মের বিবেচনা কেন করলো? মুখ্যত কারণটা গোষ্ঠীবদ্ধ জীবনের শৃঙ্খলা। তার আগে নানান শক্তি সম্বন্ধে তার ভয়ের উদ্ভব হয়েছে। রীতি-নীতি-প্রথা একটু একটু করে তৈরী হয়েছে। এটা অনেকটা আজকের দিনের প্রথার মতন। ধরুন আমি আজকে একটা নীল জামা পরে বেরিয়েছিলাম, কিছু কাজ ছিল। সেগুলো বেশ ভাল হল। এর আগে অব্দি আমার তেমন ভাল হচ্ছিল না। কাল খয়েরী জামায় হল না। পরশু আবার নীল জামায় হল। তখন মনে হবে যেন নীল জামাটাই আসলে একটা বড় ফ্যাক্টর। ভেতরে একটা বিশ্বাস তৈরী হয় অনেকের। এই করে ঘড়ি পরা থেকে কলম বা মোবাইল নেওয়া, পায়ের জুতো সবেতেই চলে আসে। সে সময়েও তাই হয়েছে। এমন কিছু সমাপতনকে বাড়িয়ে বাড়িয়ে তৈরী হয়েছে রীতি-নীতি-প্রথা। কিন্তু তাকে ধর্ম বলার মতন সংগঠন অর্জন সে করেনি তখনো। করলো যখন সম্পদের অবস্থান সুনিশ্চিত হল সমাজ জীবনে। ধর্ম তো শুধু ঈশ্বর ভাবনা না, সে আসলে এক ধরণের সমাজ সংগঠন। সে অনেক ক্ষেত্রেই একটা পিরামিডাকার ব্যবস্থা যার শীর্ষে শক্তির উৎস হিসেবে ঈশ্বর আছে। সেই কারণেই ধর্মীয় টেক্সটগুলোতে সমাজবিধির নানা বিধান রয়েছে।

    ঋগ্‌বেদেও রয়েছে। আমাদের এই উপমহাদেশের গ্রন্থিত নাট্যঐতিহ্যের আদি কয়েকটি নাট্য, অসম্পূর্ণ হলেও, নাট্য সংগঠনের ভাবনা হিসেবে পরিস্কার, রয়েছে ঋগ্‌বেদের দশম মণ্ডলে। এক একটি শ্লোককে বলে ঋক্‌ বা স্তুতিমন্ত্র। একগুচ্ছ ঋক্‌ মিলে এক একটি কবিতা বা সূক্ত। এগুলো দশটি অধ্যায়ে বিভক্ত ঋগ্‌বেদে। অধ্যায়গুলোকে বলে মণ্ডল। তার মধ্যে দশম মণ্ডলের পনেরোটি সূক্ত নাট্যগুণসম্পন্ন। প্রাচীনরা একে অনেক সময় কখনো ইতিহাস কখনো আখ্যান বলেছেন। যাস্ক তাঁর নিরুক্তে এবং শৌনক তাঁর সংহিতায় একে বলেছেন সংবাদ-সূক্ত। পন্ডিতেরা অনেক কথা বলেন। বলেন সোমযজ্ঞের সময় এগুলো গীত হত। প্রাকৃতিক পরিবেশে বৈদিকরা নাচতেন এর সঙ্গে। কেউ কেউ বলেন এর মধ্যেই ছিল গদ্য সংলাপ, যা বেদে গ্রথিত হয়নি। কালের প্রকোপে গিয়েছে হারিয়ে। তা সে যাই হোক, আমরা আমাদের কাজের জন্য বেছে নিয়েছিলাম যম-যমী সংবাদ।

    প্রস্তুতির কথা এর আগে অল্প-বিস্তর বলেছি। এবারে বলি কেন বাছলাম তার কথা! যম-যমী সংবাদ ঋগ্‌বেদের অনুবাদে বারেবারে অশ্লীলতার জন্য খুব কষ্ট করে প্রকাশিত হয়েছে। নানান রকমের আড়াল-আবডাল রেখে প্রকাশ করা হয়েছে। রমেশচন্দ্র দত্ত অনুবাদ করার সময়ে একে দিবা ও রাত্রর কথা বলে-টলে শাক দিয়ে অনেক মাছ ঢেকেছেন। কিন্তু কেন? কেন না ভাই-বোনের সঙ্গম আজকের সামাজিক চোখে অবৈধ। কেন না এখন আমাদের কাছে বেশ কিছু স্টাডি রিপোর্ট আছে যা বলছে ইনব্রীডিং ক্ষতিকারক শিশুর পক্ষে। কিন্তু এ যে সময়ের কথা সে সময় তো এই তথ্য ছিল না। সে সময় গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাহ অত্যন্ত প্রচলিত বিষয় কোথাও কোথাও। নর্স মিথোলজি, ব্যাবিলনিয়ান কাহিনীগুলো এই সম্পর্কের অজস্র প্রমাণ বহন করছে। কিম্বা ইন্দো-ইরাণীয় পুরালোকগাথায় য়িম ও য়িমেহ যমজ ভাইবোন, যাদের গর্ভে প্রথম মানুষের জন্ম। আদতে যম-যমী সংবাদে যম যদি নতুন সমাজের প্রতীক হয় তাহলে যমী পুরাতন সমাজের প্রতিনিধি। নতুন সমাজ সমস্ত কিছুর মতন যৌনতাকেও এক বিধিতে বাঁধতে চাইছে। পুরাতন চাইছে অবাধ যৌন সম্পর্ক। এমন কনফ্লিক্ট বাকী কোনো নাট্যগুণভূষিত কাহিনীতে ছিল না।

    রাত গভীর হল শুশুনিয়াতে। দিনের বেলায় যে কাঠকুটো জড় করা হয়েছে তা কেটেছেঁটে তৈরী হল মশাল ও যজ্ঞের কাঠকুটো। অভিনেতাদের কস্টিউম তৈরী হচ্ছিল। সাধারণ এবং হাতের কাছে থাকা জিনিসপত্র দিয়েই সব হচ্ছিল। এক অভিনেত্রীর সঙ্কোচ ছিল কাঁধ উন্মুক্ত করে গামছাকে কাঁচুলির মতন বাঁধতে। সে বাঁধা পেরোনো গেল। গামছা পরার পরে কিছুক্ষণ চলাফেরার পরে যখন দেখলেন যে এর জন্যে তাঁকে যৌন অবজেক্ট বলে মনে হচ্ছে না, বা কোনো অশ্লীল ভাবনার উদ্রেক হচ্ছে না তখন তিনি বললেন যে এবারে এমন অবস্থায় তিনি যে কোনো কাজ করতে পারেন। ইনি জীবনে কখনো এ ভাবে অভিনয় করেননি। আসলে বাধা পেরোনোটাই থিয়েটারের কাজ। জীবনকে স্বচ্ছ ও স্বচ্ছন্দ করাটাই একটা বড় কাজ।

    আগুণ জ্বলে উঠলো। পাহাড়ের গায়ে ধাপ কাটা সিঁড়িতে সারি দিয়ে দাঁড়ালেন অভিনেতারা। উঁচু থেকে তাঁরা সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসবেন সমতল ক্ষেত্রে। কিছুটা মিছিল করে চলার পরে একটি ঢালু জমিতে হবে নাট্যাভিনয়। মিছিল শুরু হল। বেজে উঠলো মাদল। ঝিঁ ঝিঁ-র আওয়াজ ছাড়া যেখানে আর কোনো প্রাকৃতিক শব্দ ছিল না সেখানে পাহাড় ভরে উঠলো এক রহস্যময় মাদলের দ্রিম দ্রিম শব্দে। প্রকৃতির বুকে, স্বল্প অবলম্বনে অভিনেতারা চললেন, সঙ্গে দর্শকরাও। মাদলের সঙ্গে মিশে গেল বৈদিক ছান্দসের বহুকন্ঠে উচ্চারিত এক গম্ভীর সুর। পাহাড়টা জেগে উঠলো। অজস্র বছর পরে তার নীচে এমন এক কাণ্ড ঘটছে। এর আগে কয়েক শত বছর বা হাজার বছর আগে কিছু মানুষ হয়তো এমনভাবেই ঘোর রাত্রে নাচতো-গাইতো। আজ আবার হচ্ছে এমন কাণ্ড!

    যেখানে গিয়ে পৌঁছলাম সেখানে একটি ঝিল থেকে জল বেরিয়ে পরছে একটি নালাতে। জলের কুলকুলধ্বনি মিশে গেল মাদলের শব্দে। বেজে উঠলো আরেকটি লোক সাঙ্গীতিক যন্ত্র। একতারা। রহস্য গাঢ় হয়ে এল। জ্বলে উঠলো যজ্ঞের আগুণ। মন্ত্রোচ্চারণে বিরতি নেই। সকল অভিনেতা এখন যাজ্ঞিক। সোমযজ্ঞ হচ্ছে। তার হবন হচ্ছে। সেই যজ্ঞের মধ্যেই একসময় উঠে দাঁড়ালেন দুই অভিনেতা-অভিনেত্রী। তাঁরা প্রকৃত প্রস্তাবে স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু গত দুই রাত্রি তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে এক শয্যায় শুতে যাননি। দিন কাটিয়েছেন নিতান্ত ভাই বোনের মতন। এখন তাঁরা অভিনয় করছেন আদিম দুই ভাই বোনের চরিত্রে। এক বোন যে ভাইকে আকাঙ্খা করছে, সঙ্গমের অনুরোধ করছে। আরেক ভাই যে সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করছে সমাজনীতি ও দেবতাদের রোষের কথা বলে। নাটক ঘন হতে থাকলো। ঘন হতে থাকলো রাত। আগুণ পলে পলে বেড়ে উঠছে। যাজ্ঞিকরা সম্পৃক্ত। মাদল বেজে চলেছে রাত্রি চিরে। সঙ্গতে একতারা।

    বহু বহু দূরের গ্রামের মানুষ পরের দিন ফিরে আসার সময়ে আমাকে বলেছিলেন গভীর রাত্রেও তাঁরা সেই মাদল আর মন্ত্রোচ্চারণের সুর শুনেছেন। ঘোর লেগেছিল তাঁদের। ঘোর লেগেছিল আমাদের অভিনেতাদেরও। ঘোর লেগেছিল আমাদের দর্শকদেরও। পাহাড়, বনভূমি, ঝিল, মাথার উপরে তারা ঝলমলে আকাশ অনেক অনেকদিন আগের এক স্মৃতি ফিরে পেয়ে কিছুক্ষণ নিশ্চই থম মেরে বসেছিল। আমাদের ত্রুটিতে ঠোঁট টিপে হেসেওছিল হয়তো। ভেবেছিল মানুষের এমন দিনও তো ছিল, তারা যার সব কিছু জানে, মানুষ ভুলে গিয়েছে শুধু। আর তারাও বলবে না। শুশুনিয়া পাহাড়ের উল্টো পিঠে চন্দ্র রাজার পাথর খোদাই ভাবছিলো যে কেন এখানে এ সব হচ্ছে! তারপরে হেসেছিল। সে তো সেই চতুর্থ খ্রীষ্টাব্দ থেকে আছে। প্রাকৃত আর সংস্কৃততে খোদাই করা অক্ষর নিয়ে। সে জানে বাগদী, বাউড়ি, জেলে, হাড়ি, ডোম, কূড়মালি, মাল পাহাড়ির দেশকে ঐতরেয় উপনিষদ বলেছে অসুরদের দেশ। এখনো কত গ্রামের নাম অসুরদের নামে। সেখানে এক গন্ধর্ব আর অপ্সরার পুত্র-কন্যার কাহিনীই তো হতে পারে। যাদের মধ্যে পুত্রটি পুরাণ মতে পৃথিবীর প্রথম মানব যে মরণশীল ছিল। ফলত সেই প্রথম মৃত পৃথিবীতে। তার সমাজায়ন, আর্যায়নের কাহিনীই তো আসলে বিবর্তনের এক উপাখ্যান, যা নাচকাঠির দলিত শিল্পীর মাথায় ব্রাহ্মণের পা তুলে দিয়েছে। সেই পাথরে খোদাই হেসেছিল বিষণ্ণতায়। এই তো সে দেখে এসেছে এতকাল!

    [সঙ্গের ছবির লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/suddhasatya/media_set?set=a.680075182020719.1636945753&type=3]
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৮ অক্টোবর ২০১৩ | ১০৩৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ০৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৪৩46933
  • এতে থিয়েটারের কৌশলটা ঠিক বোঝা গেলনা। কিন্তু ব্যাপারটা চমৎকার লাগল। :)
  • শুদ্ধ | 126.193.140.115 (*) | ০৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:০৮46934
  • ঈশান, লেখাটা আরেকটু বড় হলে বোধহয় বোঝাতে পারতাম আরেকটু। একটা ভিডিও হয়েছে কোনো রকমে। যদি টেকনিক্যাল সমস্যাগুলো সমাধান করা যায় তাহলে দেখানো যাবে কিছুটা। চেষ্টা করছি। :(
  • Lama | 126.193.137.147 (*) | ০৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:১৫46935
  • ছবির লিংকটা দেখা যাচ্ছে না ফ্রেন্ড লিস্টে না থাকলে (ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছি একটা)। ওটা পাবলিক করে দেওয়া যায় না?
  • i | 147.157.8.253 (*) | ০৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৩৯46936
  • পর্ব তিনের আরও বিস্তার আকাঙ্খিত। শুধু এই প্রযোজনার অভিজ্ঞতা নিয়েই একটা সম্পূর্ণ লেখা পড়তে চাইছি।
  • দেবজ্যোতি | 132.163.47.238 (*) | ০৯ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৩৪46937
  • এ এক অনন্য সাধারণ অভিজ্ঞতা । ক্রমশ আমাদের একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে , ঐক্যের আহ্বানে বাঁচতে শেখা । থিয়েটার তো শুধু থিয়েটার নয় , একটা জীবন দর্শন । আমাদের শুশুনিয়া ভ্রমণ সেই জীবন দর্শনের সহজপাঠ ।
  • sosen | 24.139.199.11 (*) | ০৯ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৫৮46938
  • শুদ্ধ, পড়ছি।
  • SEPA | 126.193.143.74 (*) | ০৯ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৫৫46939
  • লামা, ছবির লিঙ্কটা পাবলিক করে দেওয়া হয়েছে। :)

    i, চেষ্টায় আছি লিখে ফেলার।

    sosen, অগাধ আনন্দ পেলাম। :)
  • Ranjan Roy | 24.99.117.243 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৩ ০২:৪৪46940
  • শুদ্ধ,
    ["দেবীগর্জন"এর কথা মাথায় আছে তো? ভুলে যাওনি ? ]
    আশা রাখি, কখনো এমন নাট্য ওয়ার্কশপের দর্শক-সঙ্গী হওয়ার।
    আর ছোট আইয়ের সঙ্গে কন্ঠ মেলালাম। ওয়ার্কশপটি নিয়ে এক পূর্ণাংগ লেখা চাই।
  • শুদ্ধ | 113.24.85.82 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০২:৩৯46941
  • ভুলিনি রঞ্জনদা। লেখাটা নিয়ে চেষ্টা করছি। :)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন