এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মরালমেসো, মরালমাসিমা এবং প্রাতঃকৃত্য

    সিকি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৪ এপ্রিল ২০১৬ | ৪২২৮ বার পঠিত
  • অস্বীকার করবার প্রায় কোনও জায়গাই নেই যে ছোটবেলায় আমাদের অনেকেই প্রায় নিয়ার-পারফেক্ট শুদ্ধাচারী ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতিতে বড় হয়েছিলাম। হিন্দি গান শোনা ছিল মহাপাপ, গাওয়া তো উচ্ছন্নে যাওয়ার স্পষ্ট লক্ষণ ছিল। ছোটখাটো বিচ্যুতি, এই যেমন অনুপ জালোটা, মান্না দে এটুকু বাদ দিলে বাংলাময় ছিল আমাদের জীবন। পাড়া কালচারে বড় হয়েছি আমরা। গ্রাম নয়, আবার পুরোদস্তুর শহরও নয়, মফস্বল সংস্কৃতিতে কাজ করত পাড়া-কালচার। শুভানুধ্যায়ী কাকু-জেঠিমা-মোড়ের সিগারেটের দোকানের স্বপনদা, এঁদের স্নেহদৃষ্টির ছায়াতেই আমরা বড় হয়েছি। প্রায়শই খবর এসে যেত বাড়িতে, কবে যেন আমি খুউব স্পীডে সাইকেল চালিয়েছি, কবে যেন বিকেলের দিকে আমার পাশে পাশে একটা মেয়েও সাইকেল চালাচ্ছিল। কেউ কেউ ভালোবাসার চোটে আমায় এক দুবার সিগারেট খেতেও দেখে ফেলেছিলেন এবং বাড়িতে রিপোর্ট করেছিলেন - যদিও জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত আমি বিড়ি-সিগারেট-গাঁজা কোনওটাই ছুঁই নি।

    তো, এবংবিধ মরালমেসো এবং মরালমাসিমাদের স্নেহচ্ছায়া থেকে বেরিয়ে আমি যখন বাইরে পড়তে গেলাম, তখন বুঝলাম স্বাধীন জীবনের কী মানে। আঠেরো বছর বয়েস, কাউকে জবাবদিহি করতে পছন্দ করে না।

    সময় পাল্টেছে। যুগ পাল্টেছে। আমাদের আঠেরো বছর বয়েসে টিভিতে আসত কুল্লে দুটো চ্যানেল, ডিডি ওয়ান আর ডিডি মেট্রো। এখন দেড়শোটা আসে। সমাজ অনেকটা বিবর্তিত হয়েছে, সামনের দিকে না পেছনের দিকে - সে কথা অবশ্য ভবিষ্যতের ইতিহাস লিখবে, কিন্তু বাঙালিদের এই টিপিকাল শুদ্ধাচারী রক্ষণশীল বেম্মো সংস্কৃতি সেই অর্থে বিবর্তিত হয় নি। যেমন বদলায় নি আঠেরো বছরের স্পর্ধাও। প্রেসিডেন্সির মেয়েটির ধিঙ্গিপনা অত্যন্ত বিচলিত করেছিল শৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়, তাঁর বাবা কমল গঙ্গোপাধ্যায় এবং মা-কে। "চোখে দেখা যায় না" - বলেছেন শৌভিকের মা। রাণিকুঠি এলাকা "আমাদের পাড়া" - সেখানে কেউ এমন বেলেল্লাপনা করবে, এমন জিনিস মরালমেসো আর মরালমাসিমা মেনে নেন কী করে? তাই পিতামাতাপুত্র মিলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ছাত্রীটির ওপর। মেয়েটির বোধ হয় আঠেরো কি উনিশ বছর বয়েসই হবে। তার অপরাধ ছিল একটা নয়, তিনটে। সন্ধ্যেবেলায়, হাফপ্যান্ট পরে মেয়েটি ধূমপান করছিল প্রকাশ্যে। ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, আমরা সকলেই জানি, কিন্তু শারীরিক নিরাপত্তার পক্ষেও যে ক্ষতিকর, এটা সেইভাবে আমার জানা ছিল না। নৈতিক গার্জেনগিরি কী করে মেনে নেয় এতটা অসভ্যতা? তাই মার, চুলের মুঠি ধরে। "আমাদের এলাকা"।

    আমাদের এলাকা। তাই আমরা ঠিক করে দেব মেয়েটি হাফপ্যান্ট পরে সিগারেট খাবার দুঃসাহস দেখাতে পারবে কিনা, আমরা ঠিক করে দেব সুজেট জর্ডান একা একা নাইটক্লাবে গেলে তাঁকে "খানকি মাগি" বলা হবে কিনা, আমরা ঠিক করে দেব আমাদের প্রতিবেশির ফ্রিজে কোন প্রাণীর মাংস থাকবে, আমরা ঠিক করে দেব এ তল্লাটের বাসিন্দারা কোন চিহ্নে ভোট দেবে। আমরা ঠিক করে দেব ইনটলারেন্সের প্রতি তুমি টলারেন্ট থাকবে কিনা, নাকি আমার ডেফিনিশনে তুমি ইনটলারেন্সের অস্তিত্ব অস্বীকার করবে।

    মহানগরের বুকে কয়েক মাস আগে একটা সিনেমার শো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, কতিপয় মরালমেসোর হস্তক্ষেপে। জল তার পরে বেশ কিছুদূর গড়িয়েছিল, এবং কথায় বার্তায় দেখেছিলাম, কিছু বাঙালি এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছিলেন "আফটার অল, নতুন প্রজন্মের বাঙালিদের কালচারালি প্রটেক্ট করার দায়িত্ব আমাদের, আমরা আমাদের শিশুমনকে বিষিয়ে যেতে দিতে পারি না"। কে যে তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেটা আর জানা হল না।

    রুচিবোধ, শালীনতাবোধ, সংস্কৃতিবোধ - এগুলো কিছুটা আপেক্ষিক বিষয়, এর কোনও নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয় না। আপনার চোখে যা নান্দনিক, আমার চোখে তা-ই নিদারুণ অশ্লীল হতেই পারে। যে ইলিশ খায় যে তার স্বাদগন্ধের জন্য খায়, আবার অনেকেই আছেন ইলিশের গন্ধ সহ্য করতে পারেন না। এই পর্যন্ত ঠিক আছে। কেউ হিন্দি গান ভালোবাসেন না, কেউ হাফপ্যান্ট ভালোবাসেন না, কেউ নন-ভেজ খাওয়াও ভালোবাসেন না। হতেই পারে। ভিন্নরুচির্হি লোকাঃ। এই পর্যন্ত সমস্যা নেই, সমস্যা তৈরি হয় যখন লোকে নিজের মত, নিজের পছন্দ, নিজের ধারণা নিয়ে অন্য লোকের ঘাড়ে চেপে বসে এবং জোর গলায় বলে, ব্যাটা, আমার মতটাই শ্রেষ্ঠ, তোকে এটাই মানতে হবে, না মানবি তো ...

    এই হোলিয়ার দ্যান দাউ অ্যাটিটিউডেই তৈরি হয় সমস্যা। আমার ধর্ম তোমার ধর্মের থেকে ভালো। আমার রাজনৈতিক চিন্তাধারা তোমার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গীর থেকে ভালো। আমার শালীনতার সংজ্ঞা, তোমার সংজ্ঞার থেকে ভালো। অতএব, তোমাকে আমার ধর্মটাই মেনে চলতে হবে, আমার চিন্তাধারাতেই সাবস্ক্রাইব করতে হবে, নইলে শালা তোমায় ক্যালাবো, প্রকাশ্যে হিউমিলিয়েট করব, তোমাকে খুন করব, খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তোমার চোখদুটোকে কোটর থেকে বের করে আনব, তোমার বাড়িতে ছেলে ঢুকিয়ে মেয়েদের রেপ করে দেব।

    রেপ করে দেব। বিধবা বানিয়ে দেব। মাগীর রাতদুপুরে বেরনোর দরকার কী? মেয়েটার নির্জন রাস্তায় একা একা হাঁটবার কী দরকার পড়েছিল? মহিলাটি অচেনা লোকেদের কাছে কেন লিফট নিয়েছিল? মেয়েটা হাফপ্যান্ট পরবে কেন? - হাজারো প্রশ্ন ঘুরে বেড়ায় বাতাসে, আমাদের চারপাশে। মেয়েদের আমরা একটি "বিশেষ" ক্যাটেগরি" মনে করি, খুব সহজেই তাদের অসম্মান করা যায়, বুকের খাঁজ দেখা গেলেই তাদের বুকের দিকে হাত বাড়ানো যায়, মেয়েদের "সম্মান" করা এমন একটা হট্‌কে ব্যাপার যে দিল্লির বেশির ভাগ অটো, ট্যাক্সির পেছনের কাঁচে স্টিকার সাঁটা থাকে - মেরা ইমান, নারী কা সম্মান। উচ্চকিতভাবে প্রদর্শন না করলে নারীর সম্মান না রাখাটাই এই শহরের, এই দেশের দস্তুর।

    এই সার্বিক মানসিকতা আমাদের ভাবায়। চিন্তায় ফেলে। আমরা কেউ লেখালিখি করি, কেউ মিছিলে দু-পা হাঁটি, কেউ মানিয়ে নিই।

    কেউ অন্য কিছু ভাবে। সেই ভাবনার নিদর্শন দেখতে হাজির হয়েছিলাম দিল্লির কামানি অডিটোরিয়ামে, একুশে এপ্রিল। ডান্স ড্রামা, কিন্তু ঠিক ডান্স ড্রামা নয় - নাম, প্রাতঃকৃত্য। কলকাতায় বেশ কয়েকটি সফল মঞ্চায়নের পরে তারা এসেছে দিল্লিতে একটিমাত্র শো করতে। টিকিটের কোনও মূল্য নেই, আপনি যা দেবেন, সেটাই টিকিটের মূল্য। এক টাকা, এক হাজার টাকা - যা ইচ্ছে। তমোঘ্ন আর শারদ্বতের আহ্বানে আমিও নামমাত্র মূল্যে টিকিট কেটে আমার সীট সিকিওর করে রাখলাম। একুশ তারিখে পৌঁছে গেলাম কামানি অডিটোরিয়ামে, সন্ধ্যে সওয়া সাতটার মধ্যে। যা দেখলাম, তা ভাষায় বর্ণনা করা খুব কঠিন, তবে যে হেতু খুব কম লোক দেখেছেন, এবং দিল্লিতে আর শো হবার কোনও সম্ভাবনা নেই, তাই ভাবলাম যারা দেখেন নি, তাদের জন্য সামান্য হলেও চেষ্টা করি।

    প্রথম বেল পড়ার পরে হল-এ ঢুকতে পেলাম, এবং দেখলাম পাঁচটি মূর্তি স্টেজের ওপর দাঁড় করানো আছে, পাঁচটি স্পটলাইট এসে পড়েছে তাদের ওপর। খুব বেশি যে হেতু ভিড় ছিল না, তাই একেবারে সামনের রো-তে গিয়েই বসতে পেলাম, এবং দেখলাম, মূর্তি নয়, পাঁচটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কমবয়েসী, এবং বেশ কম জামাকাপড়ে। পরনে বাচ্চাদের টেপজামার মত একটা ছোট হাতকাটা পোশাক, যা উরুসন্ধির ঠিক নিচে এসে শেষ হচ্ছে। শান্ত, দুটি হাত দু পাশে রাখা, মুখে কোনও এক্সপ্রেশন নেই, কিংবা ছিল হয় তো, স্পটলাইট ওপর থেকে পড়ছে, মুখে পুরো আলো পড়ে নি, আর তা ছাড়া পাপী পুরুষের চোখ বারে বারে চলে যাচ্ছিল তাদের অনাবৃত পায়ের দিকে। সুন্দর পাঁচজোড়া পা, আর মাথার ওপরে খোলা একরাশ চুল - চোখ টানছিল খুব।

    অন্ধকারে চোখ সইতে দেখলাম, পেছনদিকটাতে অনেক বাদ্যযন্ত্র রাখা রয়েছে। ড্রাম, ঢাক, তবলা, ঢোলক, গীটার।

    মেয়েগুলি নড়েও না, চড়েও না। চোখের পাতাও পড়ে না। স্থানু মূর্তি পাঁচটি।

    ভেতরে ঢোকার সময়ে একটা করে লিফলেট ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেইটা পড়লাম। নামকরণের সার্থকতা টাইপের একটা কিছু লিখতে চেয়েছিলেন বোধ হয়, নির্দেশক, কিন্তু লেখাটুকু আমার সার্থক মনে হল না। উনি প্রাতঃকৃত্য শব্দটিকে প্রাত্যহিক কৃত্য বলে দাবি করেছেন, যদিও প্রাতঃকৃত্যের আসল মানে না নয়, ওটি প্রাতঃকাল, অর্থাৎ সকালবেলার কৃত্য, সেই অর্থে প্রাতঃকৃত্য। এইটুকু ভুল ছাড়া বাকি বক্তব্যের সাথে একমত হতে খুব একটা বাধা ছিল না।

    আবছা শুনতে পেলাম, সেকেন্ড বেল পড়ল। হল ভরে আসছে ধীরে ধীরে। চেনা মুখ একটিও দেখি না এ তল্লাটে। একমাত্র নাজেস আফরোজকে দেখলাম, তাঁর সঙ্গে সামান্যই আলাপ হয়েছে ইতিপূর্বে।

    মেয়েগুলি নড়ছে না। স্থানু। স্থির।

    ঘোষিকা উঠে এলেন স্টেজের কিনারায়। অল্প কথায় বললেন, মেয়েদের সম্মান রক্ষার নামে যে ঘটনা ঘটে চলেছে সারা দেশ জুড়ে, তার বৃহত্তর আবহে যে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ ছড়িয়ে পড়ছে, ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, তার প্রতিবাদ হিসেবেই এই ডান্স-ড্রামা, প্রাতঃকৃত্য। আজ সন্ধ্যের এই শো উৎসর্গ করা হচ্ছে জ্যোতি সিং এবং সোনি সোরিকে।

    ঠিক সাড়ে সাতটায় তৃতীয় বেল পড়ল। তবু মঞ্চের মেয়েগুলির মধ্যে কোনও চাঞ্চল্য নেই। ওরা কি সারা সন্ধ্যে এইভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে এসেছে নাকি?

    খুব ধীরে ধীরে একজন বয়স্ক ব্যক্তি প্রবেশ করলেন স্টেজে। পেছনে বাদ্যযন্ত্রগুলোর মধ্যে অন্ধকারে বসে পড়লেন, তুলে নিলেন একটা কুঁজোর মত যন্ত্র - ঘট্টম বোধ হয়। হালকা চারমাত্রার ছন্দে মৃদু বোল তুললেন ঘট্টমের গায়ে। বাজাতে থাকলেন, বাজিয়েই চললেন।

    মেয়েগুলি স্থির। স্থানু। একচুলও নড়ছে না।

    আরও খানিক পরে একজন প্রবেশ করল, হাতে তুলে নিল একটা গীটার। অদ্ভূত কিছু শব্দ বেরোতে লাগল তার গীটার থেকে, তালের বাইরে যদিও নয়, কিন্তু ঠিক তালের মধ্যেও নয়। কেমন একটা আনক্যানি, ভয়াল আবহ তৈরি হচ্ছে বাজনার মধ্যে দিয়ে, ধীরে ধীরে।

    এক মুখ দাড়ি, হুড-লাগানো পুলওভার, জিনসের প্যান্ট আর হাইহিল স্নিকার্স পরা একটা লারেলাপ্পা টাইপের ছেলে এসে উদয় হল স্টেজের মাঝখানে। চোখে গগলস, মুখে সিগারেট, তার থেকে ধোঁয়া বেরিয়েই চলেছে। সে এসে মেয়েগুলোর মাঝে ইতিউতি ঘুরে বেড়াল খানিক, ওপর থেকে নিচ অবধি "মাপতে" লাগল মেয়েগুলোকে, আধা অন্ধকার গলিপথে লোলুপ চোখেরা যেমন মেপে নেয় নারীশরীর।

    আমরাও কি মাপছি না? আমরাও কি শরীর দেখছি না?

    ছেলেটি চলে গেল।, ইতিমধ্যে পেছনের সারিতে আরও কিছু যন্ত্রীর আগমন হয়েছে। আমার কি দৃষ্টিবিভ্রম হয়েছে? অনেকক্ষণ অন্ধকারের মধ্যে থেকে কি অল্প আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে? মেয়েগুলো যেন ঠিক সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নেই, একটু বাঁ দিকে হেলে আছে না? ... নাঃ, সবাই নয়, সামনের দিকে দুই প্রান্তের দুটো মেয়ে সোজাই দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু বাকি তিনজন স্পষ্ট বাঁদিকে হেলে আছে। আবার খানিক বাদেই মনে হল, না না, বাঁদিকে তো নয়, ডানদিকে হেলে আছে বোধ হয়।

    এবার বোঝা গেল, মেয়েগুলি, সামনের দুজন বাদে খুব ধীরে ধীরে পেন্ডুলামের মত দুলছে। তাদের দোলা আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে। পেছনের বাদ্যযন্ত্রীদের সারি এখন ভরে গেছে। এর পর সমবেত বাজনার সঙ্গে শুরু হল, ঠিক কখন যে শুরু হল তাদের নাচ, বুঝতে পারলাম না। প্রথমে মনে হল মেয়েগুলো স্টেজের মধ্যে এলোমেলো হেঁটে বেড়াচ্ছে, ব্রাউনিয়ার মোশন। ফলে মাঝেমধ্যেই একে অন্যের সাথে ধাক্কা খাচ্ছে, আর ধাক্কা খেতেই দুজন বাঁই করে তিনশো ষাট ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে আবার চলা শুরু করছে। আস্তে আস্তে চলায় প্যাটার্ন এল, স্টেজের সামনের দিক থেকে পেছনের দিকে, তিনটে সারিতে। চলা, ধাক্কা, ঘুরে যাওয়া, আবার চলা, আবার ধাক্কা - চলতে থাকল যতক্ষণ না একজন ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেল।

    না, পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেব না এই ডান্স ড্রামার। তাতে পারফরমেন্সটির প্রতি জাস্টিস করা হবে না। মোদ্দা কথা, বিভিন্ন মুদ্রায় বিভিন্ন ভাবে তুলে ধরা হচ্ছিল মেয়েদের স্বাধীনতার চেষ্টা, নিজের মতন করে ভালো থাকার, ভালোবাসার চেষ্টা, এবং স্পষ্টভাবে সেই চেষ্টাকে বার বার প্রতিহত করছিল দুজন মেয়ে, যাদের উরুতে একটু আগেই সেই লারেলাপ্পা টাইপের দেখতে গগলস পরা ছেলেটা এসে, মার্কার পেন দিয়ে এঁকে দিয়ে গেছিল পদ্মফুল। সুস্পষ্ট ইঙ্গিত।

    এর পর সবচেয়ে রোগা মেয়েটি এগিয়ে এল, পূজার ভঙ্গিতে বসল এবং অদ্ভূত ভঙ্গিতে হাত ঘোরাতে ঘোরাতে শুরু করল সংস্কৃত স্তোত্রপাঠ।

    ওয়েট! প্রথমে সংস্কৃত স্তোত্র মনে হলেও আস্তে আস্তে বোঝা গেল এটি আসলে সংঘ দলের প্রতি একটি তীব্র খিল্লি, সংস্কৃতের ঢং মেশানো নিখাদ বাংলা ভাষায়। পুরো স্তোত্রটা তো মনে নেই, কোথাও পেলে লিখে দেব আবার এই লেখাতেই - শুরুটা এই রকমের ছিলঃ

    দলিতস্য প্রাণম গচ্ছম।
    সংঘপরিবার সেনা মণিপুরম।।
    সর্ব জনগণ উৎকৃষ্ট ভৃত্য।
    প্রাত্যহিকী করেব্য প্রাতঃকৃত্য।।
    না হোমে না যজ্ঞে লাগম্‌।
    নরেন্দ্র মোদীস্য পোঁদে লাগম্‌।।

    হাসি চেপে রাখা দায় হয়ে দাঁড়াচ্ছিল।

    এর পরে আবার নাচ। বিভিন্ন ভঙ্গিমায়, বিভিন্ন প্রেক্ষিত তুলে আনা। ওই স্তোত্রটুকু ছাড়া গোটা পারফরমেন্সে কোথাও কোনও কথা নেই। কীভাবে যে সোয়া এক ঘণ্টা পেরিয়ে গেল টের পাই নি। নাচ ধীরে ধীরে উদ্দাম থেকে উদ্দামতর হচ্ছে। সামনের সীটে বসে আমি তাদের শ্বাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম, এতটাই নিস্তব্ধ মন্ত্রমুগ্ধ ছিল পুরো অডিটোরিয়াম। কথা ছাড়াই তারা তুলে ধরছিল অসম প্রেমের বিরুদ্ধাচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, মেয়েদের অবজেক্টিফাই করার মানসিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, মনুবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, নব্য হিন্দুত্বের সংজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।

    আস্তে আস্তে ঢাকী যিনি, তিনি ঢাক নিয়ে চলে এসে ঢাক বাজাতে শুরু করতেই একজন মেয়ে থামিয়ে দিল তাঁকে, ঢাকের গায়ে হাত রেখে। নাচের ভঙ্গিমায় ঢাকীর গা থেকে ছাড়িয়ে আনল তাঁর পৈতে। ধীরে ধীরে বাকি বাজনার তেজ কমে এল।

    হাতে পৈতে নিয়ে মেয়েটি এগিয়ে এল স্টেজের একদম সামনে। পৈতের একপ্রান্ত জড়ালো ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে, অন্যপ্রান্ত বাম হাতের তর্জনীতে।

    তার পর? তার পর কী হল?

    না, আমি আর বলব না। সব বলে দিলে আপনারা আর দেখবেন না। বাকিটুকু দেখার জন্য আপনাদের যোগাযোগ করতেই হবে টিম প্রাতঃকৃত্যের সঙ্গে। খুব সুন্দর, সুচিন্তিত, এবং একই সঙ্গে দুঃসাহসী উপস্থাপনা। এতটা ম্যাচিওরড একটা প্রেজেন্টেশনের আরও আরও বেশি পাবলিসিটি হওয়া উচিত, আরও বেশি করে শো হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

    দেখুন। ভাবুন। এটুকু বলতে পারি, না দেখলে পস্তাবেন।
































    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৪ এপ্রিল ২০১৬ | ৪২২৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সিকি | 132.177.13.75 (*) | ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:১৫52927
  • এটা দেবায়ুধের রিভিউ। এখানে কপি করে দিলাম।

    প্রাতঃকৃত্য কথা

    আমার এই লেখাটি পক্ষপাতিত্বে ভর্তি হতে পারে কারণ ট্রুপের অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে আমার বন্ধু কিম্বা পরিচিত, জয়রাজের সঙ্গে আলাপের অনেক আগে থেকেই আমি ওর কাজের ভক্ত। থিয়েটার বুঝি, এমন দাবী করব না, কিন্তু সাধারণ দর্শক হিসেবে বিগত একুশে এপ্রিল কামানি অডিটোরিয়ামে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণ নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার আছে। আমার সৌভাগ্য, আমি ওই বিস্ফোরণের সাক্ষী ছিলাম। সাক্ষী ছিল কানায় কানায় ভর্তি হল, তাদের জবানবন্দী উঠে এসেছিল স্বতঃস্ফূর্ত স্ট্যান্ডিং ওভেশান ও হাততালিতে। আমার আরেক বন্ধু পারফর্মেন্সটির ব্যাপারে তার মতামত জানাতে লিখেছেন যে দর্শকের আসনে সেদিন ছিলেন উচ্চশিক্ষিত ইন্টেলেকচুয়াল ক্লাসের লোকজন যাদের পরিণত মস্তিষ্ক ও ভাবধারার কাছে উন্মচিত যৌনচঞ্চল নারীদেহ শক অথবা মুগ্ধতা কোনো অভিঘাতই আনবে না। তার মতে পারফর্মেন্সটি হওয়া উচিৎ ছিল খোলা রাস্তায় অথবা জেএনইউয়ে, নিদেনপক্ষে গোলমার্কেটের মুক্তধারায় যেখানে দর্শক হিসেবে আসেন দিল্লির ছাপোষা মধ্যবিত্ত মানসিকতার বংসন্তানকূল। রীতিমত যুক্তিপূর্ণ অবসারভেসন। কিন্তু তিনটি প্রশ্ন থেকেই যায়।
    ১) যারা মুক্তধারায় আসতেন, তারা কি কামানিতে আসতে পারতেন না? বিশেষত যখন পাসের কোনো নির্দিষ্ট মূল্য নেই আর যখন মুক্তধারা এবং কামানির দূরত্ব মাত্র তিনটি মেট্রো স্টেশন, তাও একই লাইনে?
    ২) প্রোডাকশানটা মুক্তধারায় হলে যারা কামানিতে এক সন্ধ্যার কাজ ফেলে ভিড় করেছিলেন, তারা কি গোলমার্কেট অবধি যেতে পারতেন না? যারা খেঁচার দৃশ্য দেখে ফিলিম বন্ধ করে দেয়, সেই সমস্ত সাংস্কৃতিক ফ্যাসিস্টরা কিভাবে প্রাতঃকৃত্যকে গ্রহণ করবে, তা জানার আগ্রহ আমারও ছিল। দিল্লির বাঙালি অ্যাসোসিয়েশানের পেজে পারফর্মেন্সটির খবর শেয়ারও করেছিলাম। কিন্তু তারা আসে নি। তারা না দেখার গনতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে আমাদের এবং নিজেদের, উভয়কেই বাঁচিয়েছে। তাদের ধন্যবাদ।
    ৩) পারফর্মেন্সটি বাংলায় ছিল না। একমাত্র একটি নন্সেন্স প্যারডি বাদ দিলে, যে ভাষাটি তার সমস্ত ডায়ালেক্ট সমেত ব্যবহৃত হয়েছে, তা বাদ্যসম্বলিত নৃত্য। শারীরিক অভিঘাত এবং উন্মোচনের একটি নির্দিষ্ট লিঙ্গুইস্টিক তাৎপর্য থাকে যা বাংলা-হিন্দি-ইংরিজি-সংস্কৃতের ঊর্ধ্বে। লক্ষ করেছি, সেদিন যতজন বাঙালি ছিলেন, ততজন, হয়ত তার বেশীই ছিলেন, এমন মানুষ যাদের মাতৃভাষা বাংলা নয়। কাজেই সিআর পার্কের গাম্বাট উচ্চবিত্ত বংবাবাজিদের জন্যই যে এই নাটক, তা বললে ভুল হবে।
    প্রতিটি স্টেজ এবং প্রতিটি দর্শকের আসন, দুইই যাকে বলে ফ্লুয়িড এন্টিটি। কে কখন কিভাবে তার দখল নেবে কেউ জানে না।
    প্রাতঃকৃত্য এমনই একটি টেক্সট, যার বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন প্রসেনিয়ামের ফর্ম। প্রাতঃকৃত্য যেভাবে আলো এবং মঞ্চকে ব্যবহার করেছে, তার জন্য দরকার আকাদেমি, জিডি বিড়লা কিম্বা কামানির আকাউস্টিক্স এবং অন্যান্য সুযোগসুবিধা, এ টেক্সট খোলা রাস্তায় পারফর্ম করা যেত না। আমার সীমিত জ্ঞান অনুযায়ী নুক্কাদ এবং প্রসেনিয়াম, দুটি ভিন্ন এবং স্বতন্ত্র মেডিয়াম। নুক্কাদকে প্রসেনিয়ামে কিম্বা প্রসেনিয়ামকে নুক্কাদে নামালে তা জগাখিচুড়ি হতে পারে, কতটা পারফর্মেন্স হবে জানা নেই। দুটি মেডিয়ামের নিজস্ব আদর্শ এবং উদ্দেশ্য আছে, তা গোলালে চলবে না। এখন বিচার করা দরকার, প্রাতঃকৃত্য প্রসেনিয়ামকে কিভাবে ব্যবহার করেছে এবং এই ব্যবহারের মাধ্যমে কতটা তার রাজনৈতিক এবং শৈল্পিক দায়বদ্ধতার প্রতি সৎ থাকতে পেরেছে।
    প্রাতঃকৃত্যের অর্থহীনতাই তার অন্তর্নিহিত অর্থের ধারক ও বাহক, নৃত্যশিল্পীর প্রতিটি শারীরিক স্টেটমেন্টের যে একটি বিশেষ মানে থাকতে হবে তার কোনো মানে নেই। একইরকমভাবে মানে নেই প্রতিটি স্টেটমেন্ট একত্রিত করে তার মধ্যে একটি লিনিয়ার বা নন-লিনিয়ার ন্যারেটিভ খোঁজার। কিন্তু প্রাতঃকৃত্য নির্মাণ করার চেষ্টা করেছে একটি ছিন্নভিন্ন বৃত্ত যেখানে চক্রাকারে ফিরে এসেছে মেল গেজ ও সিগারেটের ধোঁয়া, ক্ষমতার বিরুদ্ধে বিরচিত অর্থহীন স্তোত্রবন্দনা, এবং স্বাতন্ত্রের দাবীতে মুখর নারী শরীরের নগ্ন উন্মাদ অভিঘাত। সে শরীর কখনও সমকাম চায়, কখনও নির্ভেজাল দৈহিক লড়াই, সে শরীরে কখনও আগুন জ্বলে, কখনও জেগে ওঠে স্নিগ্ধ সমুদ্রের শান্ত হিল্লোল। এ হেন শক্তি প্রদর্শনের মধ্যে কোহেরেন্স নেই, থাকার কথাও নয়। বরং কোহেরেন্সের পিঞ্জর ভেঙে শারীরিক অভিঘাতকে মুক্ত করতে চাওয়াই যে পারফর্মেন্সের অন্যতম উদ্দেশ্য, তাকে কোহেরেন্স এবং গতানুগতিক থিয়েট্রিক্সের জালে ফেলে উপলব্ধি করা যাবে না।
    কোহেরেন্স এবং ইনকোহেরেন্সের মধ্যবর্তী লিমিনাল স্পেসে, আইডিয়া এবং রিয়েলিটির মাঝবরাবরই ছায়াটা এসে পড়ে। অন্তঃসারশূন্য মানুষের সভ্যতায় অন্তত এলিয়ট এই বাণীই আমাদের শুনিয়ে গেছেন আজ থেকে প্রায় এক শতাব্দী আগে।
    প্রাতঃকৃত্য চেয়েছে এলিটিজম এবং অর্থনীতি থেকে প্রসেনিয়ামকে মুক্ত করতে। প্রাতঃকৃত্য চেয়েছে অর্থকে বিনির্মাণ করতে, প্রাতঃকৃত্য চেয়েছে একটি টেক্সটের সুবিস্তৃত ফ্র্যাগমেন্টেশান। এর মধ্যে দুটি অংশ নির্দিষ্ট অর্থ বহন করে।
    ১) নরেন্দ্র মোদীস্য পোঁদেপুরম
    ২) ক্লাইম্যাক্সে ঢাকির পৈতে ছিঁড়ে ছুঁড়ে ফেলা
    আমাদের সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে দুটোই রীতিমত জরুরি এবং সহজবোধ্য, বিশেষত দ্বিতীয়টা। দুইয়েরই ব্যাখ্যা যে যার নিজের মতো করতে পারবেন, আমি এর মধ্যে ঢুকবো না। আমার ব্যাখ্যাও আলাদা কিছু নয়, এবং আমার মতে এর চেয়েও জোরালো অথচ অদৃশ্য স্টেটমেন্ট এ টেক্সটে বর্তমান, কিন্তু ব্রাহ্মন্যবাদী রাষ্ট্রের সদর দপ্তর যে শহর, সেখানে পৈতে ছেঁড়ার সিম্বলিক দুঃসাহসকে জয় ভীম লাল সেলাম।
    এ কাজটা রাস্তাতে করলে হয়ত আরো দুঃসাহসী হত, কিন্তু প্রাতঃকৃত্য রাস্তাকে নিজের মেডিয়াম হিসেবে বেছে নেয় নি। এটা তার চয়েস। রাস্তাই প্রতিবাদের একমাত্র রাস্তা নয়। রাস্তার বাইরেও সুদৃঢ় প্রতিরোধ নির্মাণের অনেক রাস্তা আছে। প্রাতঃকৃত্য তার একটিকেই বেছে নিয়েছে। যুদ্ধে সমস্ত রেজিমেন্টকে এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া কোনো কৌশল নয়, চারদিকে ছড়িয়ে দিয়ে শত্রুকে উত্তরদক্ষিণ পূর্বপশ্চিম থেকে ঘিরে ফেলে চেকমেট করতে হয়। সব প্রতিবাদ তাই পথনাটিকা হবার যোগ্য নয়, জরুরিও নয়। যেমন জরুরি নয় সব অঙ্কনের মুরাল হয়ে ওঠা। বরং পাসের দাম ১ থেকে অনন্তের রেঞ্জে রেখে প্রাতঃকৃত্য প্রেক্ষাগৃহের দরজা সবার জন্য খুলে দিয়েছে, রাস্তা এবং ক্যাম্পাস এসে দখল নিয়েছে প্রসেনিয়ামের।
    মানুষের চোখ এসএলআর ক্যামেরার মতো, এক জায়গায় ফোকাস করলে ফ্রেমের বাকি অংশ ব্লারড থাকে। আমার চোখ তাই অনেকটা সময়ই আটক করেছিল শতাক্ষী এবং সৃজিতা। এটা আমার বায়াস, অন্য তিন শিল্পীর অদক্ষতা নয়। যে কোনো টিমগেমেই ম্যাচ জেতানোর নায়ক হন মুষ্টিময় এক দু'জন। বাকিরা তাদের জেতানোর প্রেক্ষাপট নির্মাণে সাহায্য করেন। এই জন্যই তা টিমগেম, ইন্ডিভিজুয়াল স্টান্ট নয়।
    তাই প্রাতঃকৃত্য কার্নিভালেস্ক হয়ে উঠেছে একগুচ্ছ বাদ্যশিল্পীর সমেবত সংগীতময় ক্যাকোফনিতে। ট্রাম্পেট ও ট্যাম্বোরিন, বেস ও ঢোলের ঢোলের কোরাসেও সেই অদমনীয় মুক্তিস্পৃহার আবহসঙ্গীত। অনুব্রত মণ্ডলের আগেই প্রাতঃকৃত্য চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজালো দিল্লি-কলকাতার মর্মকেন্দ্রে। নির্বাচন জয়ের সাফল্যে নয়, স্বাধীনতার ইস্তেহার ঘোষণার দৃপ্ততায়।
    যা লিখলাম, এইটুকুর জন্যই আমি মুগ্ধ, এইটুকুর জন্যই গত তিনরাত কর্মঅন্তে জয়েন্ট ধরিয়ে যতবার নিজের বিছানায় শুয়েছি, ততবারই আমার চোখে ভেসেছে লাল ফিল্টারের জ্যোৎস্নায় মাদক কামানি অডিটোরিয়ামের মঞ্চ, তাতে পাঁচ বঙ্গবালার স্বেদসিক্ত হুংকার। ততবারই আমি চোখ বন্ধ করে ভাবার চেষ্টা করেছি। আমার মতো অজ্ঞ অপদার্থকে ভাবা প্র্যাকটিস করতে বাধ্য করাই এই পারফর্মেন্সের সাফল্য বলে আমার মনে হয়। অনেকে আমার সঙ্গে হয়ত একমত হবেন না, কিন্তু একুশ তারিখ এই চিন্তার রসদ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারাই আমার প্রাপ্তি। তার জন্য ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন, গান স্যালুট ও গার্ড অফ অনার জানাই প্রাতঃকৃত্যকে।

    পারফর্মেন্স শেষ। আলোচনা এবং তর্ক দীর্ঘজীবী হোক। আমেন।
  • সিকি | 132.177.13.75 (*) | ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:৪৯52923
  • -
  • ধুর! | 132.177.13.75 (*) | ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:৫৩52924
  • একটা বেম্মো সেই রয়েই গেল। যাগ্গে, ওটা ইগনোর করে নেবেন।
  • ranjan roy | 24.99.126.180 (*) | ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৪৫52925
  • দিল্লিতে এই শো আর হবে না?

    প্রস্তুতির মাঝখানে ফোটো তুললে খুব বিরক্ত হই। কিন্তু এই ছবিগুলোর জন্যে সিকিকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
  • সিকি | 132.177.13.75 (*) | ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:১০52926
  • না। কেউ নিমন্ত্রণ না করলে এই শো আর করা সম্ভব নয়। অর্থাভাব। তুমুল অর্থাভাব।

    ছবি একটাও আমার তোলা নয়। কিছু প্রাতঃকৃত্য টিমের প্রোমো পেজ থেকে নেওয়া, কিছু অন্যদের তোলা ছবি, যাঁরা ইভেন্ট পেজে পোস্ট করেছেন।

    আর, না, ছবি তোলার জন্য শো-এর চার্ম একটুও নষ্ট হয় নি।
  • Heh! | 202.42.116.16 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০২:১৬52935
  • হেগে-মুতে-চুদে বিপ্লব আনবে!
  • সায়রা বানো | 74.233.173.181 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪৬52936
  • পৈতে ছিড়ে ফেলল বেশ, ফেজ টুপি বা পাগড়ি চিহ্ন গুলো কি হবে ?
  • avi | 213.171.241.254 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৫৭52937
  • পৈতে ছেঁড়ার কথায় জনতা দেড়শ বছর আগে রেগে যেত। এখনো যায়, এটা মজাদার। আচ্ছা, এই ব্রাহ্মণত্বের চিহ্ন বা আচার বর্জনে গর্বিত অব্রাহ্মণ হিন্দুদের রেসপন্স কিরকম?
  • ranjan roy | 24.99.12.239 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০০52938
  • ১ "হেগে-মুতে-চুদে বিপ্লব আনবে!"

    ২"পৈতে ছিড়ে ফেলল বেশ, ফেজ টুপি বা পাগড়ি চিহ্ন গুলো কি হবে ?"

    ---সেগুলোও ছেঁড়া হবে; সঠিক পরিপ্রেক্ষিতে এবং সময়ে।
    যেমন হাগা-মোতা ও চোদা একই সময়ে একই মুহুর্তে হতে পারেনা! ঠিক তেমনি।
  • sm | 53.251.91.253 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২৪52939
  • এতো অসব্য শব্দ একসঙ্গে দৃষ্টিকটু লাগে।কিন্তু এই নাটকের উদ্দেশ্য টাই তো বুঝতে পারলাম না। প্রায় সক্কলে যখন, অহো,আহা করছে তখন ভালো তো বটেই। আপনি (RR )একটু সংক্ষেপে নিজের উপলব্ধি টুকু বুঝিয়ে বলুন না, পিলিজ।
  • T | 24.100.134.34 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩২52940
  • সিকি, একটা ইহার মানে ইহা জাতীয় মেড ইজি লিখে ফেলুক। :)
  • pi | 192.66.45.222 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৩52941
  • শো টা কখনো দেখার খুব ই্চ্ছে রইলো। সিকিকে অনেক ধন্যবাদ, লেখাটার জন্য।

    দুটো ছোট বক্তব্য ছিল।

    'একা একা নাইটক্লাবে গেলে তাঁকে "খানকি মাগি" বলা হবে কিনা,' র থেকেও বেশি আপত্তিকর হল, যে কেউ একা একাঅ নাইট ক্লাবে গেলে আদৌ কোনো আপত্তি তোলা এবং তিনি খানকি মাগি হলেও।

    আরেকটা কথা সম্মান নিয়ে।

    'মেয়েদের আমরা একটি "বিশেষ" ক্যাটেগরি" মনে করি, খুব সহজেই তাদের অসম্মান করা যায়, বুকের খাঁজ দেখা গেলেই তাদের বুকের দিকে হাত বাড়ানো যায়, মেয়েদের "সম্মান" করা এমন একটা হট্‌কে ব্যাপার যে দিল্লির বেশির ভাগ অটো, ট্যাক্সির পেছনের কাঁচে স্টিকার সাঁটা থাকে - মেরা ইমান, নারী কা সম্মান। উচ্চকিতভাবে প্রদর্শন না করলে নারীর সম্মান না রাখাটাই এই শহরের, এই দেশের দস্তুর।
    '
    এটাতে একটু ঘেঁটে গেছি। মেয়েদের আলাদা ক'রে সম্মান করা কি দরকার ? অসম্মানটা না করলেই হল। বরম মেয়ে বলে আলাদা করে সম্মান অস্বস্তিকর ও আপত্তিকরও কিছুটা। ঐ আসলি মর্দওয়ালা কিছুটা পিতৃতন্ত্রগন্ধী সম্মান, রক্ষা এসবও তার হাত ধরে চলে আসতে পারে মনে হয়। মানে উচ্চকিত প্রদর্শনটাও তো অনভিপ্রতই নয় কি ?

    তবে এই লাইনটা বুঝিনি,
    'মেয়েদের সম্মান রক্ষার নামে যে ঘটনা ঘটে চলেছে সারা দেশ জুড়ে, তার বৃহত্তর আবহে যে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ ছড়িয়ে পড়ছে, ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, তার প্রতিবাদ হিসেবেই এই ডান্স-ড্রামা, প্রাতঃকৃত্য।'

    -মেয়েদের সম্মান রক্ষার নামে কী হচ্ছে ?
  • সুনীল | 119.163.234.7 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৯52942
  • ২০১৬তে পৈতে ছিঁড়ে বিপ্লব হচ্ছে ? নাদের আলি, এরা আর কবে বড় হবে ?
  • d | 144.159.168.72 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১৭52928
  • হুম।
    কখনই দেখা হবে না সম্ভবতঃ
  • সিকি | 192.69.194.82 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:৪৪52943
  • "এটাতে একটু ঘেঁটে গেছি। মেয়েদের আলাদা ক'রে সম্মান করা কি দরকার ? "

    দরকার নেই তো! কিন্তু দিল্লিতে এইটা একটা হট্‌কে ব্যাপার বলে বিবেচিত হয়। সেইজন্যেই তো লিখলাম - উচ্চকিতভাবে প্রদর্শন না করলে নারীর সম্মান না রাখাটাই এই শহরের, এই দেশের দস্তুর। মেয়েদের এখানে সত্যিই একটা আলাদা ক্যাটেগরি হিসেবে দেখা হয়।

    ----------
    -মেয়েদের সম্মান রক্ষার নামে কী হচ্ছে ?

    দাউ শ্যাল্ট নট হচ্ছে। তুমি জিনস পরবে না। তুমি মোবাইল রাখবে না। তুমি অমুকের সাথে ঘুরবে না। তুমি রাতের বেলা ফাঁকা রাস্তায় ঘুরবে না একা একা। তুমি প্রকাশ্যে হাফপ্যান্ট পরে ঘুরবে না। তুমি শরীর ঢেকে রাখবে। তুমি প্রকাশ্যে সিগারেট খাবে না। তুমি পুরুষ অভিভাবকের হ্যাঁ-তে হ্যাঁ বলবে, নিজে সাবালিকা হয়ে গেলেও।

    এইসব। মেয়েদের সম্মন রক্ষার নামে মনুস্মৃতি প্রোমোট করা হচ্ছে, বোরখা চাপানো হচ্ছে। উত্তর ভারতে আরও অনেক কিছু হয়। মেয়ে চাকরি করবে শুধু তার হাতখরচের টাকা জোগাড়ের জন্য। মেয়ের চাকরির টাকায় সংসার চালানো যাবে না। অভিভাবকের পছন্দ করে দেওয়া ছেলেকেই বিয়ে করতে হবে, বিয়ে করতে না চাইলেও। অন্য ছেলে, অন্য জাত, অন্য ধর্ম - একেবারে নয়।

    সুনীল, পৈতে ছেঁড়াটা সিম্বলিক। প্রতিবাদটা নিও-হিন্দুত্ব এবং ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে, সেটার রূপায়ণ হয়েছে পৈতে ছিঁড়ে। পৈতে যাঁরা পরেন, তাঁদের জিজ্ঞেস করতে পারেন পৈতে ছেঁড়ার ইমপ্যাক্ট কতটা।

    ব্রাহ্মণ হবার হিসেবমত, পৈতে কোনও কারণে গা থেকে খুলে গেলে, বা ছিঁড়ে গেলে ব্রাহ্মণটির কথা বলা বারণ। স্পেসিফিক মন্ত্র পড়তে পড়তে নতুন পৈতে বানিয়ে সেটিকে কাঁধে না চড়ানো পর্যন্ত কথা বলা যায় না, এবং ড্যামেজড পৈতেটিকে গঙ্গায় বা অনুরূপ কোনও হোলি ওয়াটারে বিসর্জন দিয়ে আসতে হয়। ইত্যাদি।
  • ranjan roy | 24.99.12.239 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:২৫52944
  • বঙ্গদেশই গোটা ভারত নয়। অনেক বড় অংশ হিন্দিবলয়। সেখানে পৈতে এবং তার উৎসব খুব বড় ইমোশনাল ব্যাপার।
    ছতিশগড়ের বিলাসপুরে একবার সিটিজেন্স ফোরাম থেকে জাতপাত নিয়ে একটা প্যানেল ডিস্কাশনের আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে যজ্ঞোপবীত বিসর্জন দেওয়ার কথায় এক ঘোষিত বামপন্থী ব্রাহ্মণ ট্রেড ইউনিয়নিস্ট উত্তেজিত হয়ে ডায়াসে চলে এলেন।
    বললেন-- এটা কোন কাজের কথা হল না। তারচেয়ে সবাই উপবীত ধারণ করুক। উপবীতের অনেক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে, উপকারিতা আছে; ইত্যাদি।
  • সিকি | 116.219.52.218 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৪৪52931
  • অভ্যু ফেসবুকের লিং দিচ্ছে? অ্যাকাউন্ট খুলেছে নাকি?
  • Abhyu | 78.117.213.118 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৫২52945
  • name: একক mail: country:

    IP Address : 53.224.129.54 (*) Date:25 Apr 2016 -- 11:40 PM

    এই দেহনাট্য নিয়ে আমার একটা বাল্যকালের হাস্যকরুণ গল্প আছে । সিকির টই পড়ে ও ছবি দেখে মনে পরে গ্যালো । তো সেবার পুজোতে তুহিনাভ দা "প্রেমে -অপ্রেমে " বলে একটা নাটক নাবালো । সে বিলা নাটক । কেলাস এইটে পড়ি । আর তুহিনাভদা সবে পুনে থেকে পাশ করে গ্যাছে । উষা গাঙ্গুলির সঙ্গে ওঠাবসা । "রাম কে নাম " এনে প্রজেক্টরে দেখিয়েছে আমাদের | কাজেই আমাদের ছেলে ছোকরাদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় ।

    টানা তিন মাস হাউসিন্গের মাঠে ধুন্ধুমার রিহার্সাল । ভল্ট দেওয়া , বডি ব্যালান্স , এক্রোব্যাট সবই চলছে । সংলাপ বিশেষ নেই । অভিনেতাদের মূল বিষয় বুঝিয়ে বলা আছে নিজের মত করে মুহূর্ত জেনেরেট কর । বেশ নতুন রকম ব্যাপার আর কি , আগে এরকম দেখিনি ।

    যথারীতি সে নাটক মঞ্চস্থ হলো । মেয়েরা কালো চাপা পোশাক । ছেলেরা খালি গা । জমাট পারফরম্যান্স । আর ওই গান টা ছিলো "কাল রাতে জো হিল কে স্বপ্নে দেখেছি , আমি বলি জো তুমি বহুকাল মৃত , জো বলে মরিনি আমি " । আমি তো সিওর এই নাটক টাই এবার ফার্স্ট হবে ।

    দশমীর দিন সকালে নাটক বাছাই এ বসলুম । চারজন কাকু । আমি পঞ্চম ও সর্বকনিষ্ঠ । একজন একটু ইতসতত করে বললেন : ঠিকই আছে , তবে কোনো স্টোরি লাইন নেই তো ! বলে ভুরু কুঁচকে চুপ ।
    আরেকজন খানিক আঁতেল । তিনি একটু সিগারেটে টান দিয়ে বললেন : ভালই চেষ্টা করেছে , তবে বাদল বাবুর মত তো হয়নি !! যেন বাদল বাবু এই পুরস্কারের অন্যতম দাবিদার ।

    তৃতীয়জন একেবারে কানকাটা । একটা বাদুরমার্কা হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন : সেকি তুমি তো অরুণ বরুন কিরণমালা কে লিস্ট এই রাকোনি ! কি সোন্দর নাটক । বাচ্চারা কতদিন ধরে রিয়াসসাল করেচে । কত ভীর হইচিলো দেকতে !

    আমি আমার লিস্ট টা ধরিয়ে কেটে পড়লুম । যথারীতি প্রেমে অপ্রেমে কোনো স্থান পায়নি । অরুণ বরুন সেকেন্ড । ভুশুন্দী ফার্স্ট আর কে একটা থার্ড । গোটা প্রাইজ সেরেমনি আমি চোয়াল শক্ত করে দাঁড়িয়ে রইলুম । সেই কিরণমালা স্পেশালিস্ট এর মেয়ে দাঁত বের করে প্রাইজ দেখিয়ে গ্যালো । এই করুণ গল্পের উপসংহার এইটুকুই যে , হঠাত নাটক -গান -আবৃত্তির প্রাইজ দেওয়ার শেষে শুনি বিশেষ পুরস্কার পাচ্ছে "প্রেমে অপ্রেমে " দর্শক দের তরফ থেকে | খোঁজ নিয়ে দেখি যে ভদ্রলোক পুরস্কার অফার করেছেন তাঁকে কস্মিনকালে তুহিনাভদার সঙ্গে বাতচিত করতে দেখিনি । উল্টে রাত অবধি ওই গ্রুপে আড্ডা দেবার কারণে তিরস্কার করতে ওস্তাদ ।সম্পর্কে বাবা হন কি আর বলবো :|
  • Ekak | 53.224.129.44 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ১২:০১52932
  • এরকম নাটকে ছবি তোলার একশো মজা । এক্সপ্রেশন -মুভমেন্ট কে নিজের মত করে ধরার চ্যালেঞ্জ। ফ্ল্যাশ তো লাগবেনা , যথেষ্ট আলো আছে ।
  • de | 69.185.236.55 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ১২:২৫52933
  • নাটকটা দেখতে যাবার এতো ইচ্ছে হচ্চে ঃ((

    এখানে কি আর আসবে? কালীবাড়ি আর অমাবস্যা পুজোর বাজেট করেই প্রবাসী বাঙালী অ্যাসোসিয়েশনগুলো ব্যস্ত। এঁদের আনার জন্য কেউ বাজেট দেবেনা!

    আমার একটা জেনারাল অবসারভেশন - প্রবাসী বাঙালীগুলো, বিশেষত যাঁরা দুত্তিন জেনারেশনের, সবাই বিজেপি-শিবসেনা সাপোর্টার। অত্যন্ত অর্থোডক্স। এইসব নাটক তাদের দেখালে কেউ অ্যাপ্রিসিয়েট তো করবেই না, বরং উল্টো ফল হবে!
  • Abhyu | 81.12.144.20 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ১২:৩৯52934
  • না না, গুগুল করে পেলাম!
  • ... | 74.233.173.185 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪৩52956
  • ∆∆ Arafat Rahmaan er kache nicher jannati meyegulir photo kemin laage?

  • ... | 74.233.173.181 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৫০52957


  • sm | 53.251.91.113 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:১৫52946
  • ব্রাহ্মণ হবার হিসেবমত, পৈতে কোনও কারণে গা থেকে খুলে গেলে, বা ছিঁড়ে গেলে ব্রাহ্মণটির কথা বলা বারণ। স্পেসিফিক মন্ত্র পড়তে পড়তে নতুন পৈতে বানিয়ে সেটিকে কাঁধে না চড়ানো পর্যন্ত কথা বলা যায় না, এবং ড্যামেজড পৈতেটিকে গঙ্গায় বা অনুরূপ কোনও হোলি ওয়াটারে বিসর্জন দিয়ে আসতে হয়। ইত্যাদি।
    ---
    কিছু মনে করবেন না; এই বাক্য দুটি একেবারে মনগড়া মনে হলো। আমি নিজে ও বহু ব্রাম্হন পরিবারের সংস্পশে এসে(অন্তত বাঙালিদের মধ্যে) এমন কড়া নিদান দেখিনি।বরঞ্চ পৈতে পড়া নিয়ে উপহাস করতে অনেক কে দেখেছি। ব্রাম্হন্যবাদ যেন বেঁড়ে শালা।
    পৈতে ছেঁড়া আর সত্তরের দশকে প্রতিমা বেদির নারী মুক্তি আন্দোলন এক ই রকম মনে হচ্ছে।দুটি সমান ইম ম্যাচিওর ।ওই একটাই কথা, নাদের আলী, সুনীল; ইত্যাদি।
  • সিকি | 192.69.194.82 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২৪52958
  • পৈতে ছিঁড়ে গেলে বা গা থেকে খুলে গেলে পরের পৈতে না চড়ানো পর্যন্ত কথা বলা যায় না - এটা অনেকেই জানেন না দেখে আশ্চর্য হলাম। আমি জানতাম, এমনকি এর ওপর একটা হাসির গল্পও পড়েছিলাম, নারায়ন গঙ্গো না হিমানীশ গোস্বামী এখন আর মনে নেই, সেই কার যেন গা থেকে পৈতে টেনে খুলে নিয়ে গেছিল হনুমান, নিয়ে গাছের মগডালে ঝুলিয়ে দিয়েছিল। পিসেমশাই তার নতুন পৈতে বানাচ্ছেন, আর সে পাবলিক, কথা তো বলা নিষেধ, তাই মুখ বেঁকিয়ে অ্যা-উ ভাবভঙ্গী করে হনুমানকে ভ্যাংচাচ্ছে, প্রত্যুত্তরে হনুমানও গাছের ডাল থেকে তাকে ভেংচি কাটছে।

    যাক গে, এগুলো টিপিকাল লোকাচার, হয় তো সকলে ফলো করেন না, তবে পৈতে ছেঁড়ার অভিনয়টুকু সিম্বলিক, বেসিকালি ওগুলো ব্রাহ্মণ্যবাদের সিম্বল হিসেবেই ছেঁড়া হয়েছে। পৈতে জড়িয়ে ব্রহ্মশাপ দেওয়া টেওয়া হয়, মোদ্দা কথা ব্রাহ্মণ্য়্বাদের হিসাবকিতাবে পৈতের বেশ গুরুত্ব আছে।

    কানহাইয়ার স্লোগানে ব্রাহ্মণ্যবাদ সে আজাদি শুনে প্রথমে একটু চমকে গেছিলাম। পরে বুঝেছিলাম, এগুলো আসলে ব্রাহ্মণ্যবাদের নামে উচ্চবর্ণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জ্ঞাপন।

    অ্যানেকডোট, তামিলনাড়ুতে প্রায় সবাইই কালোকুলো, কিন্তু বামুনরা হেব্বি ফর্সা হয়, এবং ওখানে বামুনরা খুব রিলিজিয়াসলি তাদের এথনিক পিওরিটি বজায় রাখে।
  • avi | 213.171.241.254 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৮52959
  • এক্ষেত্রে কি বাংলার মত এরকম ব্যাপার আছে যে ব্রাহ্মণেরা সকলেই উত্তরাপথ আগত? অগস্ত্যের উত্তরাধিকার। এবং যার জন্য তাদের মধ্যে আর্য গায়ের রং আর ফিচার বর্তমান। আর তারা সেই 'বিশুদ্ধতা' বরাবর যতটা পারা যায় বজায় রেখে গেছে।
  • pi | 192.66.34.25 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪২52960
  • আরাফত রহমানের ফেক নিকটা কোন চাড্ডি নিল ? নিজের নামে রাগ উগরানোর সাহস নেই, সেই টিপিক্যাল ফেক ফোটোশপবাজির মত ফেক মুসলিম সেজে বক্তব্য রাখা ?

    এনিওয়ে, পোস্টটা খুব আপত্তিজনক।
  • নাদের আলী | 69.160.210.3 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৫১52948
  • গোটা দেশটার বয়স কমতির দিকে হলে কী করবে? বেশি ম্যাচুরিটি দেখাতে গেলে ট্যান ও নয়, সোজা মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কী লাভ? নাটক (বা যাই হোক)-এর টিকিটের সাথে ডাইজিন দিতে হবে।

    গত সংখ্যার "দেশ"এ রাহুল গাঁধীর ছবি দিয়ে "২০১৯?" লিখেছিল কভারে। তাইতেই বইয়ের সাথে ডাইজিন ফ্রি দিয়েছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন